(বই#১০২২)   [   *বাতিল শক্তি মাকড়াশার মতাে দূর্বল :-  ‌‌] www.motaher21.net সূরা:- ২৯:আল-আনকাবুত পারা:২০ ৪১-৪৪ নং আয়াত:-

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#১০২২)
[   *বাতিল শক্তি মাকড়াশার মতাে দূর্বল :-  ‌‌]
www.motaher21.net
সূরা:- ২৯:আল-আনকাবুত
পারা:২০
৪১-৪৪ নং আয়াত:-
২৯:৪১
مَثَلُ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَوۡلِیَآءَ کَمَثَلِ الۡعَنۡکَبُوۡتِ ۖۚ اِتَّخَذَتۡ بَیۡتًا ؕ وَ اِنَّ اَوۡہَنَ الۡبُیُوۡتِ لَبَیۡتُ الۡعَنۡکَبُوۡتِ ۘ لَوۡ کَانُوۡا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۱﴾
যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে পৃষ্ঠপোষক বানিয়ে নিয়েছে তাদের দৃষ্টান্ত হলো মাকড়সা। সে নিজের একটি ঘর তৈরি করে এবং সব ঘরের চেয়ে বেশি দুর্বল হয় মাকড়সার ঘর। হায় যদি এরা জানতো!
২৯:৪২
اِنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُ مَا یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۴۲﴾
তারা আল্লাহ্ ছাড়া যা কিছুকে ডাকে, আল্লাহ্ তো তা জানেন। আর তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
২৯:৪৩
وَ تِلۡکَ الۡاَمۡثَالُ نَضۡرِبُہَا لِلنَّاسِ ۚ وَ مَا یَعۡقِلُہَاۤ اِلَّا الۡعٰلِمُوۡنَ ﴿۴۳﴾
মানুষের জন্য আমি এ সকল দৃষ্টান্ত দিয়ে থাকি, কিন্তু কেবল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই তা বুঝতে পারে।
২৯:৪৪
خَلَقَ اللّٰہُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ بِالۡحَقِّ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿٪۴۴﴾
আল্লাহ্ যথাযথভাবে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন ; এতে তো অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মুমিনদের জন্য।

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-

*বাতিল শক্তি মাকড়াশার মতাে দূর্বল : কাফের পাপাচারী, অত্যাচারী, স্বৈরাচারী ও আল্লাহদ্রোহীদের ধ্বংসের যুগ যুগান্তরের ইতিহাস এবং সূরার শুরুতে ঈমানের পরীক্ষার অনিবার্যতার কথা বর্ণনা করার পর এক্ষণে এমন একটা উদাহরণ দেয়া হয়েছে, যার ভেতর দিয়ে এসব যুদ্ধরত শক্তির প্রকৃত ক্ষমতা কতােখানি, তা স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে। এতে বলা হয়েছে, প্রকৃত ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর হাতে রয়েছে। এ ছাড়া যাবতীয় সৃষ্টির ক্ষমতা নিতান্তই ভংগুর ও দুর্বল। সৃষ্টির ক্ষমতার ওপর নির্ভরকারী বা আশ্রয় গ্রহণকারীর অবস্থা দুর্বল প্রাণী মাকড়সার মতাে। মাকড়সা নিজের সুতাের তৈরী ঘরে বাস করে। সেই ঘর যেমন দুর্বল, তেমনি তার ওপর নির্ভরকারী মাকড়সাও দুর্বল(আয়াত ৪১, ৪২ ও ৪৩) এখানে পৃথিবীর যাবতীয় শক্তির প্রকৃত ও নির্ভুল পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। মানুষ কখনাে কখনাে এই পরিচয় সম্পর্কে উদাসীন হয়ে যায়। ফলে তারা দুনিয়ার যাবতীয় মূল্যবােধ, মানদন্ড ও সম্পর্ক সম্বন্ধের ভুল মূল্যায়ন করে। তাদের লক্ষ্য কী এবং কোন জিনিস গ্রহণযােগ্য ও কোন জিনিস বর্জনীয়, তা তারা জানে না। এই অজ্ঞতার সুযােগ নিয়েই দুনিয়ার শাসক ও আধিপত্যবাদী শক্তিগুলাে মানুষকে প্রতারণা করে। মানুষ তাদেরই পৃথিবীর আসল নিয়ামক শক্তি ও ভাগ্যবিধাতা ভাবতে থাকে, তাদের ভীতি ও প্রলােভনে প্রভাবিত হয়। তাদের ভয়ে জড়সড় থাকে এবং তাদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে তাদের খুশী রাখে। পৃথিবীর বিত্তশালীরাও তাদের প্রতারিত করে। তারা ভাবে, এই বিত্তশালীরাই হচ্ছে মানুষের ভাগ্যবিধাতা ও মূল্যবােধের নিয়ামক। তারপর এই বিত্তশালীদের ভয়ে ও প্রলােভনে তাদের কাছে যায় এবং জনগণের প্রভু হবার অভিলাষে তারাও বিত্তশালী হবার চেষ্টা করে। অনুরূপভাবে পার্থিব জ্ঞান-বিজ্ঞানও তাদের প্রতারিত করে। তারা ভাবে, এসব জ্ঞান-বিজ্ঞানই যাবতীয় ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ও অর্থ সম্পদের উৎস। ফলে পার্থিব জ্ঞান বিজ্ঞান অর্জনের জন্যে তারা এতাে ব্যস্ত হয়ে পড়ে যেন তারা কোনাে উপাসানালয়ের সেবায়েত। এসব পার্থিব শক্তি কখনাে থাকে ব্যক্তির হাতে, কখনাে সমষ্টির হাতে এবং কখনাে রাষ্ট্রের হাতে। আর এগুলাে অর্জন করার জন্যে তারা এমনভাবে এগুলাের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে, যেমনভাবে কীটপতঙ্গ প্রদীপের ওপর ও আগুনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। অথচ যে মহাশক্তি এসব ক্ষুদ্র শক্তিকে | সৃষ্টি করেন, এগুলােকে পদানত ও বশীভূত করেন এবং এগুলাের মালিক যাকে যতােটা ইচ্ছা এগুলাে দান করেন, তা তারা ভুলে যায়। তারা ভুলে যায়, এসব শক্তির কাছে ধর্না দেয়া ও মুখাপেক্ষী হওয়া মাকড়সার জালের কাছে ধর্না দেয়া ও মুখাপেক্ষী হওয়ার মতাে এসব শক্তি কোনাে ব্যক্তি, সমষ্টি বা রাষ্ট্র- যার হাতেই কেন্দ্রীভূত থাক তাতে কিছু আসে যায় না। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, মাকড়সা এতাে দুর্বল একটা কীট যে, তার নরম জাল তাকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারে না, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারে একমাত্র মহান আল্লাহ। এই বিরাট ও অকাট্য সত্যটাই কোরআন মােমেনদের মনে বদ্ধমূল করতে চেয়েছিলাে। এটা বদ্ধমূল হবার পর মােমেনরা তাদের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী আল্লাহদ্রোহীদের চেয়েও শক্তিশালী হয়ে ওঠেছিলাে, পৃথিবীর সকল স্বৈরাচারীর দর্প চূর্ণ করেছিলাে এবং সকল ক্ষমতার দুর্গ ভেংগে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলাে। সকল মােমেনের মনে এ মহাসত্য বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছিলাে, তাদের রক্তের সাথে এটা মিশে গিয়েছিলাে এবং তাদের ধমনীতে এটা চালু হয়ে গিয়েছিলাে। ফলে কাউকে আর কিছু বুঝিয়ে বলতে হয়নি এবং কোনাে যুক্তি-প্রমাণ উপস্থাপনেরও দরকার পড়েনি। এ মহাসত্য তারা দিব্য সত্য হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং এর বিপরীত কোনাে কথা তাদের কল্পনায়ও আসেনি। বস্তুত আল্লাহর শক্তিই একমাত্র শক্তি, অন্য সকল শক্তি যতােই দর্প করুক, যতােই ঔদ্ধত্য দেখাক এবং মানুষের ওপর যুলুম নির্যাতন চালানাের যতাে উপকরণেরই অধিকারী হােক, আসলে তারা দুর্বল ও অক্ষম। বস্তুত সকল পার্থিব শক্তি মাকড়সা সদৃশ আর তার ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি মাকড়সার জাল সদৃশ। আর মাকড়সার ঘরই সবচেয়ে দুর্বল ঘর, যদি তারা জানতো! ইসলামী দাওয়াত ও আন্দোলনের পতাকাবাহীরা যারা যুলুম নিপীড়ন এবং প্রতারণা প্রলােভনের শিকার, তাদের উক্ত মহাসত্য সব সময় মনে রাখা উচিত এবং এক মুহূর্তের জন্যেও ভুলে যাওয়া উচিত নয়। নানা রকমের ইসলাম বিরােধী শক্তি তাদের নানা উপায়ে ধ্বংস করতে উদ্যত। কেউ তাদের শারীরিকভাবে খতম করে দিতে চায়। কেউ তাদের প্রলুব্ধ করে কিনে নিতে চায়। অথচ এ সবই আল্লাহ তায়ালার চোখে মাকড়সার জাল ছাড়া কিছু নয়। যাদের ঈমান বিশুদ্ধ ও মযবুত তাদের চোখে ইসলাম বিরােধীদের শক্তি, সম্পদ, প্রতাপ, দাপট, উপায় উপকরণ সবই মাকড়সার জালমাত্র । কেননা যাদের ঈমান বিশুদ্ধ ও মযবুত, তারা সকল শক্তির প্রকৃত পরিচয় জানে এবং সব কিছুর প্রকৃত মূল্য ও মান নির্ণয় করতে সক্ষম। ‘নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাদের উপাস্যদের প্রকৃত পরিচয় জানেন…’ অর্থাৎ তারা আল্লাহ তায়ালা ছাড়া যে সকল শক্তির সাহায্য চায় তাদের মান ও মুরােদ কতখানি, তা আল্লাহ তায়ালা ভালাে করেই জানেন। তাদের মুরােদ মাকড়সার সমান। তারা মাকড়সার মতাে এবং মাকড়সার জালেই তারা আশ্রয় নিয়েছে। ‘তিনি পরাক্রমশালী মহাকুশলী’ অর্থাৎ এই বিশ্বজগতের জন্যে তিনিই একমাত্র পরাক্রমশালী, সর্বময় ক্ষমতাধর, মহাকুশলী, সুদক্ষ পরিচালক। ওগুলাে হচ্ছে উদাহরণ, যা আমি মানব জাতির জন্যে উপস্থাপন করে থাকি, জ্ঞানী লােকেরা ছাড়া কেউ এগুলাে বােঝে না। মােশরেকদের একটা দল, যাদের বিবেক বুদ্ধি একেবারেই ভেঁতা হয়ে গেছে, তারা এ জাতীয় উদাহরণের তাৎপর্য উপলব্ধি করে না। বরং তারা রসূল(স.)-কে ব্যংগ বিদ্রুপ ও মস্করা করার উপকরণ হিসেবে এগুলােকে গ্রহণ করে। তারা বলতো, মােহাম্মদের প্রতিপালকের কান্ড দেখাে, মশামাছি ও মাকড়সা নিয়ে কথা বলে। অথচ মাকড়সার উদাহরণে যে চমকপ্রদ ছবি তুলে ধরা হয়েছে, তা তাদের চেতনায় আলােড়ন সৃষ্টি করে না। কারণ তারা নির্বোধ ও মূর্খ। ‘আর নির্বোধরা এগুলাে বােঝে না।’ এরপর মহান আল্লাহ এই মহাসত্যকে যুক্ত করেছেন সেই ন্যায়নিষ্ঠার সাথে, যাকে তিনি সমগ্র বিশ্বপ্রকৃতির পরিকল্পনায় ও সৃষ্টিতে নিয়ামক হিসেবে রেখেছেন। এটা কোরআনের একটা চিরাচরিত রীতি। আল্লাহ তায়ালা আকাশ ও পৃথিবীকে ন্যায়সঙ্গতভাবে সৃষ্টি করেছেন, এতে মােমেনদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# ওপরে যতগুলো জাতির কথা বলা হয়েছে তারা সবাই শিরকে লিপ্ত ছিল। নিজেদের উপাস্যের ব্যাপারে তাদের আকীদা ছিলঃ এরা আমাদের সহায়ক সাহায্যকারী ও পৃষ্ঠপোষক এরা আমাদের ভাগ্য ভাঙ্গা গড়ার ক্ষমতা রাখে। এদের পূজা করে এবং এদেরকে মানত ও নজরানা পেশ করে যখন আমরা এদের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করবো তখন এরা আমাদের কাজ করে দেবে এবং সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে আমাদের বাঁচাবে। কিন্তু যেমন ওপরের ঐতিহাসিক ঘটনাবলীতে দেখানো হয়েছে, মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে যখন তাদের ধ্বংসের ফায়সালা করা হয় তখন তাদের উপরোল্লিখিত সমস্ত আকীদা-বিশ্বাস ও ধারণা-কল্পনা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়। সে সময় তারা যেসব দেব-দেবী, অবতার, অলী, আত্মা, জ্বিন বা ফেরেশতাদের পূজা করতো তাদের একজনও তাদেরকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি এবং নিজেদের মিথ্যা আশার ব্যর্থতায় হতাশ হয়ে তারা মাটির সাথে মিশে গেছে। এসব ঘটনা বর্ণনা করার পর এখন মহান আল্লাহ‌ মুশরিকদেরকে সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, বিশ্ব-জাহানের প্রকৃত মালিক ও শাসনকর্তাকে বাদ দিয়ে একেবারে অক্ষম বান্দা ও সম্পূর্ণ কাল্পনিক উপাস্যদের ওপর নির্ভর করে যে আশার আকাশ কুসুম তোমরা রচনা করেছো তার প্রকৃত অবস্থা মাকড়শার জালের চাইতে বেশি কিছু নয়। মাকড়শার জাল যেমন আঙ্গুলের সামান্য একটি টোকাও বরদাশত করতে পারে না তেমনি তোমাদের আশার অট্টালিকাও আল্লাহর ব্যবস্থার সাথে প্রথম সংঘাতেই চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে। তোমরা যে কল্পনা বিলাসের এমন এক চক্করের মধ্যে পড়ে আছো, এটা নিছক তোমাদের মূর্খতার কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। সত্যের যদি সামান্যতম জ্ঞানও তোমাদের থাকতো, তাহলে তোমরা এসব ভিত্তিহীন সহায় ও নির্ভরের ওপর কখনো জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না। সত্য কেবলমাত্র এতটুকুই, এ বিশ্ব-জাহানে ক্ষমতার মালিক একমাত্র রব্বুল আলামীন ছাড়া আর কেউ নেই এবং একমাত্র তারই ওপর নির্ভর করা যেতে পারে।

فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى لَا انْفِصَامَ لَهَا وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

“যে ব্যক্তি তাগুতকে (আল্লাহ বিরোধী শক্তিকে) অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে সে মজবুত নির্ভরকে আঁকড়ে ধরেছে যা কখনো ছিন্ন হবার নয়। বস্তুত আল্লাহ‌ সব কিছু শোনেন ও জানেন।” (আল বাকারাহ ২৫৬ আয়াত।)

# যেসব জিনিসকে এরা মাবুদে পরিণত করেছে এবং যাদেরকে সাহায্যের জন্য আহ্বান করে তাদের প্রকৃত স্বরূপ আল্লাহ‌ ভালোভাবেই জানেন। তাদের কোন ক্ষমতাই নেই। একমাত্র আল্লাহই ক্ষমতার মালিক এবং তারই বিচক্ষণ কর্মকুশলতা ও জ্ঞান এ বিশ্ব-জাহানের ব্যবস্থা পরিচালনা করছে।

এ আয়াতের আর একটি অনুবাদ এও হতে পারে, “আল্লাহ খুব ভালোভাবেই জানেন, তাকে বাদ দিয়ে এরা যাদেরকে ডাকে তারা কিছুই নয় (অর্থাৎ ভিত্তিহীন ও ক্ষমতাহীন) এবং একমাত্র তিনিই পরাক্রম ও জ্ঞানের অধিকারী।
# বিশ্ব-জাহানের এ ব্যবস্থা সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত, মিথ্যার ওপর নয়। পরিষ্কার মন-মানসিকতা নিয়ে যে ব্যক্তিই এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে তার কাছে এ কথা সুস্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এ পৃথিবী ও আকাশ ধারণা কল্পনার ওপর নয় বরং প্রকৃত সত্য ও বাস্তব ঘটনার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। প্রত্যেক ব্যক্তি যা কিছু বুঝবে ও উপলব্ধি করবে এবং নিজের ধারণা ও কল্পনার ভিত্তিতে যে দর্শনই তৈরি করবে তা যে এখানে যথাযথভাবে খাপ খেয়ে যাবে, তার কোন সম্ভাবনা নেই। এখানে তো একমাত্র এমন জিনিসই সফলকাম হতে এবং স্থিরতা ও প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে, যা হয় প্রকৃত সত্য ও বাস্তব ঘটনার সাথে সামঞ্জস্যশীল। বাস্তব ঘটনা বিরোধী ধারণা ও অনুমানের ভিত্তিতে যে ইমারতই দাঁড় করানো হবে তা শেষ পর্যন্ত প্রকৃত সত্যের সাথে সংঘাত বাধিয়ে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। বিশ্ব-জাহানের এ ব্যবস্থা পরিষ্কার সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, এক আল্লাহ‌ হচ্ছেন এর স্রষ্টা, এক আল্লাহই এর মালিক ও পরিচালক। এ বাস্তব বিষয়টির বিরুদ্ধে যদি কোন ব্যক্তি এ ধারণা নিয়ে কাজ করতে থাকে যে, এ দুনিয়ার কোন আল্লাহ‌ নেই অথবা এ ধারণা করে চলতে থাকে যে, এর বহু খোদা আছে, যারা মানত ও নজরানার জিনিস খেয়ে নিজেদের ভক্ত-অনুরক্তদের এখানে সবকিছু করার স্বাধীনতা এবং নিশ্চিন্তে নিরাপদে থাকার নিশ্চয়তা দিয়ে দেয়, তাহলে তার এ ধারণার কারণে প্রকৃত সত্যের মধ্যে সামান্যতম পরিবর্তন ঘটবে না বরং সে নিজেই যে কোন সময় একটি বিরাট আঘাতের সম্মুখীন হবে।
# পৃথিবী ও আকাশের সৃষ্টির মধ্যে তাওহীদের সত্যতা এবং শিরক ও নাস্তিক্যবাদের মিথ্যা হবার ওপর একটি পরিষ্কার সাক্ষ্য-প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু এ সাক্ষ্য প্রমাণের সন্ধান একমাত্র তারাই পায় যারা নবীগণের শিক্ষা মেনে নেয়। নবীগণের শিক্ষা অস্বীকারকারীরা সবকিছু দেখার পরও কিছুই দেখে না।

তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
৪১-৪৪ নং আয়াতের তাফসীর:

যারা আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে অন্য মা‘বূদের ইবাদত করে, তাদেরকে ওলী হিসেবে গ্রহণ করে, তাদের কাছে সাহায্য চায়, সব কিছু পাওয়ার ভরসা করে তাদের দৃষ্টান্ত হল মাকড়সার ন্যায় যে নিজেকে গরম, ঠাণ্ডা ও বালা-মসিবত থেকে রক্ষা করার জন্য একটি ঘর তৈরি করে। কিন্তু সে ঘর বিপদাপদের সময় তার কোন উপকার করতে পারে না। অনুরূপভাবে যারা আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে অন্য মা‘বূদের ইবাদত করে, তাদেরকে ওলী হিসেবে গ্রহণ করে, তাদের কাছে সাহায্য চায়, সব কিছু পাওয়ার ভরসা করে, তারা কোন উপকার করতে পারবে না। পৃথিবীর বুকে মাকড়সার ঘর যেমন অতি দুর্বল তেমনি দুনিয়াতেও কিয়ামতের দিনে মানুষের বানানো মা‘বূদেরও কোন ক্ষমতা নেই এবং থাকবে না। তাদের জন্য এরূপ আরো দৃষ্টন্ত কুরআনের অনেক জায়গায় বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(فَمَثَلُه۫ كَمَثَلِ الْكَلْبِ ج إِنْ تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ أَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَثْ ط ذٰلِكَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِيْنَ كَذَّبُوْا بِاٰيٰتِنَا)

“তার উদাহরণ কুকুরের ন্যায়, তার ওপর তুমি বোঝা চাপালে (জিহ্বা বের করে) সে হাঁপাতে থাকে এবং তুমি বোঝা না চাপালেও (জিহ্বা বের করে) হাঁপায়। যে সম্প্রদায় আমার নিদর্শনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তাদের উদাহরণ এরূপ ।” (সূরা আ‘রাফ ৭:১৭৬)

এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সতর্ক করে বললেন, তারা আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে যাদেরকে আহ্বান করে তাদের সম্পর্কে তিনি অবগত। তাদের কি মা‘বূদ হওয়ার ক্ষমতা আছে, তারা কি অস্তিত্বশীল কোন জিনিস, না অন্য কিছু? অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(إِنْ هِيَ إِلَّآ أَسْمَا۬ءٌ سَمَّيْتُمُوْهَآ أَنْتُمْ وَاٰبَآؤُكُمْ مَّآ أَنْزَلَ اللّٰهُ بِهَا مِنْ سُلْطَانٍ ط إِنْ يَّتَّبِعُوْنَ إِلَّا الظَّنَّ وَمَا تَهْوَي الْأَنْفُسُ ج وَلَقَدْ جَا۬ءَهُمْ مِّنْ رَّبِّهِمُ الْهُدٰي)‏

“এগুলো কতক নাম মাত্র, যা তোমাদের পূর্বপুরুষরা ও তোমরা রেখেছ, এর সমর্থনে আল্লাহ তা‘আলা কোন দলীল প্রেরণ করেননি। তারা শুধু অনুমান এবং তাদের প্রবৃত্তি যা চায় তারই অনুসরণ করে, অথচ তাদের নিকট তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে হিদায়াত এসেছে।” (সূরা নাজম ৫৩:২৩)

পবিত্র কুরআনে এ সকল দৃষ্টান্ত বর্ণনা করার একটাই কারণ যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। কিন্তু শুধু জ্ঞানী বা আলেমরাই উপদেশ গ্রহণ করে থাকে। আর অন্যরা বিমুখ হয়ে যায়।

এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তিনিই আকাশ ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। যা আর কারো পক্ষে সম্ভব নয়।

সুতরাং যারা আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে অন্যান্য মা‘বূদের ইবাদত করে এ আশায় যে, তারা আখিরাতে আমাদের উপকার করবে, আমাদের জন্য শাফায়াত করবে তাদের এ উপমা থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত যে, তারা কোন উপকার করতে পারবে না।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. যারা আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে অন্যের ইবাদত করে তাদের ইবাদত কোন কাজে আসবে না।
২. আল্লাহ তা‘আলা মানুষের সর্বপ্রকার কর্মের খবর রাখেন।
৩. একমাত্র জ্ঞানীরাই কুরআনের উপদেশ গ্রহণ করে।
৪. আকাশ ও জমিনের সৃষ্টিকর্তা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৪১-৪৩ নং আয়াতের তাফসীর

যেসব লোক আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের পূজা-অর্চনা করে, তাদের পথভ্রষ্টতা ও অজ্ঞানতার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। তারা তাদের সাহায্য প্রার্থী হয় এবং বিপদ আপদে তাদের কাছে উপকার লাভের আশা করে। এদের দৃষ্টান্ত ওদের মত যারা মাকড়সার জালে বৃষ্টি, রৌদ্র ও ঠাণ্ডা হতে আশ্রয় পাওয়ার আশা করে থাকে। যদি তাদের জ্ঞান থাকতো তবে তারা সৃষ্টিকর্তাকে ছেড়ে সৃষ্টের কাছে কোন আশা করতো না। সুতরাং তাদের অবস্থা ঈমানদারদের অবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত। মুমিনরা এক মযবূত লৌহ-কড়াকে ধরে রয়েছে। পক্ষান্তরে এই মুশরিকরা মাকড়সার জালে নিজেদের মস্তক লুকিয়ে রেখেছে। মুমিনদের অন্তর আল্লাহর দিকে এবং তাদের দেহ সৎ আমলের দিকে লিপ্ত রয়েছে। আর এই কাফির ও মুশরিকদের অন্তর সৃষ্টবস্তুর দিকে এবং তাদের দেহ সৃষ্টবস্তুর উপাসনার দিকে আকৃষ্ট রয়েছে।

এরপর আল্লাহ তা’আলা মুশরিকদেরকে সতর্ক করে দিচ্ছেন যে, তারা আল্লাহর পরিবর্তে যা কিছুকে আহ্বান করে আল্লাহ তা অবগত আছেন। তিনি তাদেরকে তাদের দুষ্কর্মের স্বাদ গ্রহণ করাবেন। তিনি তাদেরকে যে অবকাশ দিচ্ছেন এতে তার যুক্তি ও নিপুণতা রয়েছে। তাদেরকে অবকাশ দেয়ার অর্থ এটা নয় যে, তিনি তাদের থেকে বে-খবর ।।

মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ মানুষের (বুঝের) জন্যে আমি এই সব দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে থাকি। কিন্তু শুধু (আমলকারী) আলেমরাই এটা অনুধাবন করে।

এই আয়াত দ্বারাই সাব্যস্ত হয় যে, আল্লাহ তাআলা কর্তৃক বর্ণিত দৃষ্টান্তগুলো বুঝে নেয়া সত্য ও সঠিক ইলমের প্রমাণ।

হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) বলেন, “আমি এক হাজার দৃষ্টান্ত রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট শিখেছি ও বুঝেছি।” (এটা ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)

হযরত আমর ইবনে মুররা (রাঃ) বলেনঃ “কুরআন কারীমের যে আয়াত আমি পাঠ করি এবং ওর অর্থ ও ব্যাখ্যা বুঝতে অপারগ হই তখন আমার মনে বড় দুঃখ হয় এবং অন্তরে খুব ব্যথা পাই ও ভীত হই যে, না জানি হয়তো আল্লাহ তা’আলার নিকট আমি মূর্খ বলে গণ্য হয়ে যাই। কেননা, আল্লাহ তাআলা তো বলেছেনঃ “মানুষের সামনে আমি এসব দৃষ্টান্ত পেশ করে থাকি, কিন্তু আলেমরা ছাড়া কেউই এগুলো বুঝতে পারে না।”
# আল্লাহ তা’আলার ব্যাপক শক্তির বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, তিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা। তিনি এগুলো খেল-তামাশার জন্যে ও অযথা সৃষ্টি করেননি। বরং তিনি এজন্যেই সৃষ্টি করেছেন যে, জনগণ এখানে বসতি স্থাপন করবে। আর তারা কি আমল করে তা তিনি দেখবেন। অতঃপর সঙ্কৰ্মশীলকে তিনি পুরস্কার প্রদান করবেন এবং দুষ্কর্মকারীকে শাস্তি দিবেন।

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#1022)
[The wrong Dower is weak as House of a Spider :-]
www.motaher21.net
Sura:29
Para:20
Sura: Al-Ankabut
Ayat: 41-44

29:41

مَثَلُ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَوۡلِیَآءَ کَمَثَلِ الۡعَنۡکَبُوۡتِ ۖۚ اِتَّخَذَتۡ بَیۡتًا ؕ وَ اِنَّ اَوۡہَنَ الۡبُیُوۡتِ لَبَیۡتُ الۡعَنۡکَبُوۡتِ ۘ لَوۡ کَانُوۡا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۱﴾

The example of those who take allies other than Allah is like that of the spider who takes a home. And indeed, the weakest of homes is the home of the spider, if they only knew.

 

Likening the gods of the Idolators to the House of a Spider

Allah tells:

مَثَلُ الَّذِينَ اتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ أَوْلِيَاء كَمَثَلِ الْعَنكَبُوتِ اتَّخَذَتْ بَيْتًا وَإِنَّ أَوْهَنَ الْبُيُوتِ لَبَيْتُ الْعَنكَبُوتِ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ

إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ

29:42

اِنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُ مَا یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۴۲﴾

Indeed, Allah knows whatever thing they call upon other than Him. And He is the Exalted in Might, the Wise.

 

The parable of those who seek protectors from other than Allah is that of a spider who builds a house; but indeed, the weakest of houses is the spider’s house — if they but knew.

Verily, Allah knows what things they invoke instead of Him. He is the All-Mighty, the All-Wise.

This is how Allah described the idolators in their reverence of gods besides Him, hoping that they would help them and provide for them, and turning to them in times of difficulties. In this regard, they were like the house of a spider, which is so weak and frail, because by clinging to these gods they were like a person who holds on to a spider’s web, who does not gain any benefit from that. If they knew this, they would not take any protectors besides Allah. This is unlike the Muslim believer, whose heart is devoted to Allah, yet he still does righteous deeds and follows the Laws of Allah, for he has grasped the most trustworthy handle that will never break because it is so strong and firm.

Then Allah warns those who worship others besides Him and associate others with Him that He knows what they do and the rivals they associate with Him. He will punish them for their attribution, for He is All-Wise and All-Knowing.

Then He says:

وَتِلْكَ الاَْمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ وَمَا يَعْقِلُهَا إِلاَّ الْعَالِمُونَ

29:43

وَ تِلۡکَ الۡاَمۡثَالُ نَضۡرِبُہَا لِلنَّاسِ ۚ وَ مَا یَعۡقِلُہَاۤ اِلَّا الۡعٰلِمُوۡنَ ﴿۴۳﴾

And these examples We present to the people, but none will understand them except those of knowledge.

 

And these are the examples We give for mankind; but none will understand them except those who have knowledge.

meaning, no one understands them or ponders them except those who are possessed of deep knowledge.

Ibn Abi Hatim recorded that `Amr bin Murrah said,

“I never came across an Ayah of the Book of Allah that I did not know, but it grieved me, because I heard that Allah says:

وَتِلْكَ الاَْمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ وَمَا يَعْقِلُهَا إِلاَّ الْعَالِمُونَ

And these are the examples We give for mankind; but none will understand them except those who have knowledge.

29:44

خَلَقَ اللّٰہُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ بِالۡحَقِّ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿٪۴۴﴾

Allah created the heavens and the earth in truth. Indeed in that is a sign for the believers.

 

Allah says:

خَلَقَ اللَّهُ السَّمَاوَاتِ وَالاَْرْضَ بِالْحَقِّ

Allah created the heavens and the earth with truth.

Allah tells us of His immense power, that He created the heavens and the earth with truth, meaning for a higher purpose than mere play,

لِتُجْزَى كُلُّ نَفْسٍ بِمَا تَسْعَى

that every person may be rewarded for that which he strives. (20:15)

لِيَجْزِىَ الَّذِينَ أَسَاءُواْ بِمَا عَمِلُواْ وَيِجْزِى الَّذِينَ أَحْسَنُواْ بِالْحُسْنَى

that He may requite those who do evil with that which they have done, and reward those who do good, with what is best. (53:31)

إِنَّ فِي ذَلِكَ لَايَةً لِّلْمُوْمِنِينَ

Verily, therein is surely a sign for those who believe.

meaning, there is clear evidence that Allah is alone in creating, controlling, and in His divinity.
The Command to convey the Message, to recite the Qur’an and to pray

Allah says

For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran

Leave a Reply