أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৮৩০)
সুরা: আল্ বনি ইসরাইল
সুরা:১৭
০২-০৩ নং আয়াত:-
[ وَ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ
আমরা মুসাকে কিতাব দিয়েছিলাম।
We gave Moses the Scripture.]
www.motaher21.net
وَ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ وَ جَعَلۡنٰہُ ہُدًی لِّبَـنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ اَلَّا تَتَّخِذُوۡا مِنۡ دُوۡنِیۡ وَکِیۡلًا ؕ﴿۲﴾
আর আমরা মুসাকে কিতাব দিয়েছিলাম ও তাকে করেছিলাম বনী ইসরাঈলের জন্য পথনির্দেশক , যাতে ‘তোমরা আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে কর্মবিধায়করুপে গ্রহণ না করো।
And We gave Moses the Scripture and made it a guidance for the Children of Israel that you not take other than Me as Disposer of affairs,
ذُرِّیَّۃَ مَنۡ حَمَلۡنَا مَعَ نُوۡحٍ ؕ اِنَّہٗ کَانَ عَبۡدًا شَکُوۡرًا ﴿۳﴾
তাদের বংশধর , যাদেরকে আমরা নূহের সাথে আরোহণ করিয়েছিলাম , তিনি তো ছিলেন পরম কৃতজ্ঞ বান্দা ।
O descendants of those We carried [in the ship] with Noah. Indeed, he was a grateful servant.
www.motaher21.net
২-৩ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
(وَاٰتَيْنَا مُوْسَي الْكِتٰبَ….)
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (عليه السلام)-এর মর্যাদার বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যেমন ইসরা ও মি‘রাজ এর মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন তেমনি মূসা (عليه السلام)-কে ‘তাওরাত’ দ্বারা সম্মানিত করেছেন যা ছিল বানী-ইসরাইলের জন্য পথ-প্রদর্শক ও হিদায়াতস্বরূপ ছিল।
এ সম্পর্কে কুরআনে অনেক আয়াত রয়েছে, তন্মধ্যে অন্যতম হল:
(وَلَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسَی الْکِتٰبَ فَلَا تَکُنْ فِیْ مِرْیَةٍ مِّنْ لِّقَا۬ئِھ۪ وَجَعَلْنٰھُ ھُدًی لِّبَنِیْٓ اِسْرَا۬ءِیْلَﭦﺆوَجَعَلْنَا مِنْھُمْ اَئِمَّةً یَّھْدُوْنَ بِاَمْرِنَا لَمَّا صَبَرُوْاﺨ وَکَانُوْا بِاٰیٰتِنَا یُوْقِنُوْنَﭧ)
“আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি। অতএব তুমি তাঁর সাক্ষাত সম্পর্কে কোন সন্দেহ করবে না। আর আমি তাকে বাণী ইসরাঈলের জন্য পথপ্রদর্শনকারী করেছিলাম। আর আমি তাদের মধ্য থেকে নেতা নির্বাচন করেছিলাম, যারা আমার আদেশ অনুযায়ী পথনির্দেশ করত, যতদিন তারা ধৈর্যধারণ করেছিল। আর তারা আমার আয়াতসমূহে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করত।” (সূরা সাজদাহ ৩২:২৩-২৪)
(أَلَّا تَتَّخِذُوْا مِنْ دُوْنِيْ وَكِيْلًا)
অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে, তাঁর অভিমুখী হবে এবং সকল কাজে তাঁকে কর্মবিধায়ক হিসেবে গ্রহণ করবে, তাঁর উপরেই নির্ভর করবে। ইমাম কুরতুবী (عليه السلام) বলেন: وَكِيْلًا অর্থ শরীক, অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলাকে ছেড়ে অন্য কাউকে তাঁর শরীক হিসেবে গ্রহণ করো না।
আল্লাহ তা‘আলা কুরআনের অধিকাংশ স্থানে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াত ও মূসা (عليه السلام)-এর নবুওয়াত, কিতাব ও শরীয়তকে পাশাপাশি উল্লেখ করেছেন। কারণ এ দুটি (কুরআন ও তাওরাত) কিতাব উত্তম, এ দু’নাবীর শরীয়ত পরিপূর্ণ, তাদের নবুওয়াত অন্যান্য নাবীদের নবুওয়াতের চেয়ে অধিক মর্যাদাসম্পন্ন এবং এদের অনুসারীর সংখ্যাও অধিক।
(ذُرِّيَّةَ مَنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوْحٍ)
অর্থাৎ নূহ (عليه السلام)-এর প্লাবনের পর মানব বংশের উৎপত্তি নূহ (عليه السلام)-এর সে বংশধরদের থেকে হয়েছে যারা নূহ (عليه السلام)-এর সাথে কিশতীতে সওয়ার হয়েছিল এবং মহা প্লাবন থেকে রক্ষা পেয়েছিল। এ জন্য বানী ইসরাঈলকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে; তোমাদের পিতা নূহ (عليه السلام) আল্লাহ তা‘আলার একজন কৃতজ্ঞ বান্দা ছিলেন। অতএব তোমরাও তোমাদের পিতার ন্যায় কৃতজ্ঞতার পথ অবলম্বন কর এবং আমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছি তাকে অস্বীকার করে সে নেয়ামতের কুফরী করো না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মূসা (عليه السلام)-এর মর্যাদা জানতে পারলাম।
২. সকল নাবীকে এ মর্মে ওয়াহী করা হয়েছে যে, তারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না।
৩. মানুষের উচিত আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করা।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# মাত্র একটি আয়াতে মি’রাজের কথা আলোচনা করে তারপর হঠাৎ বনী ইসরাঈলের আলোচনা শুরু করে দেয়া হয়েছে। আপাতদৃষ্টে এটা যেন কেমন বেখাপ্পা মনে হবে। কিন্তু সূরার মূল বক্তব্য ভালভাবে অনুধাবন করলে এ বিষয়বস্তুর আভ্যন্তরীণ সংযোগ পরিষ্কার উপলব্ধি করা যাবে। সূরার মূল বক্তব্য হচ্ছে মক্কার কাফেরদেরকে সতর্ক করা। যাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য পেশ করা হয়েছে তাদের এ মর্মে জানিয়ে দেবার জন্য শুরুতে শুধুমাত্র এ কারণে মি’রাজের আলোচনা করা হয়েছে যে, একথাগুলো এমন এক ব্যক্তি বলছেন যিনি এইমাত্র মহান আল্লাহর বিরাট মহিমান্বিত নিদর্শনসমূহ দেখে আসছেন। এরপর বনী ইসরাঈলের ইতিহাস থেকে এ মর্মে শিক্ষা দেয়া হয় যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে কিতাব লাভকারীরা যখন আল্লাহর মোকাবিলায় ময়দানে নেমে পড়ে তখন তাদেরকে কেমন ভয়াবহ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেয়া হয়।
# অভিভাবক অর্থাৎ বিশ্বস্ততা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও ভরসার ভিত্তিস্বরূপ যার ওপর নির্ভর করা যায়। নিজের যাবতীয় বিষয় যার হাতে সোপর্দ করে দেয়া হয়। পথনির্দেশনা ও সাহায্য লাভ করার জন্য যার দিকে রূজু করা যায়।
# নূহ ও তাঁর সাথীদের বংশধর হবার কারণে একমাত্র আল্লাহকেই অভিভাবক করা তোমাদের জন্য শোভা পায়। কারণ তোমরা যার বংশধর তিনি আল্লাহকে নিজের অভিভাবক করার বদৌলতেই প্লাবনের ধ্বংসকারিতার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
২-৩ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআলা স্বীয় রাসূল হযরত মুহাম্মদের (সঃ) মিরাজের ঘটনা বর্ণনা করার পর তাঁর নবী হযরত মূসার (আঃ) আলোচনা করেছেন। কুরআন কারীমে প্রায়ই এই দু’জনের বর্ণনা এক সাথে এসেছে। অনুরূপভাবে তাওরাত ও কুরআনের বর্ণনাও মিলিত ভাবে এসেছে। হযরত মূসার (আঃ) কিতাবের নাম তাওরাত। এ কিতাবটি ছিল বাণী ইসরাঈলের জন্যে পথ প্রদর্শক। তাদের উপর এই নির্দেশ ছিল যে, তারা যেন আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকেও বন্ধু, সাহায্যকারী ও মা’রূদ মনে না করে। প্রত্যেক নবী আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত নিয়ে এসেছিলেন। এরপর তাদেরকে আল্লাহপাক বলেনঃ “হে ঐ মহান ও সম্রান্ত লোকদের সন্তানগণ! যাদেরকে আমি আমার অনুগ্রহ দ্বারা অনগহীত করেছিলাম এইভাবে যে, তাদেরকে আমি হযরত নহের (আঃ) তুফানের বিশ্বব্যাপী ধ্বংস হতে রক্ষা করেছিলাম এবং আমার প্রিয় নবী নূহের সাথে নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম, তাদের এই সন্তানদের উচিত আমার • কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। দেখো, আমি তোমাদের কাছে আমার আখেরী রাসূল হযরত মুহাম্মদকে (সঃ) পাঠিয়েছি।
বর্ণিত আছে যে, হযরত নূহ (আঃ) পানাহার করে, কাপড় পরিধান করে, মোট কথা সব সময় আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তন করতেন। এ কারণেই তাঁকে আল্লাহ তাআলা র কৃতজ্ঞবান্দা বলা হয়েছে।
মুসনাদে আহমদ প্রভৃতি হাদীসগ্রন্থে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তাআলা তাঁর ঐ বান্দাদের উপর অত্যন্ত খুশী হন যারা এক গ্রাস খাবার খেয়ে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং এক চুমুক পানি পান করেও তার শুকরিয়া আদায় করে।” এও বর্ণিত আছে যে, হযরত নূহ (আঃ) সর্বাবস্থাতেই আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে থাকেন। সহীহ্ বুখারী প্রভৃতি হাদীস গ্রন্থে রয়েছে যে, মানুষ যখন শাফাআতের জন্যে হযরত নূহের (আঃ) নিকট গমন করবে তখন তারা তাঁকে বলবেঃ “দুনিয়াবাসীর নিকট আল্লাহ তাআলা আপনাকেই সর্বপ্রথম রাসূল করে পাঠিয়েছিলেন এবং তিনি কৃতজ্ঞ বান্দারূপে আপনার নামকরণ করেছেন। সুতরাং আপনি আপনার প্রতিপালকের নিকট আমাদের জন্যে সুপারিশ করুন। (শেষ পর্যন্ত)।”
أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 830)
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Al- Boni Israyel
Sura: 17
Verses :- 02-03
[ وَ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ
We gave Moses the Scripture.]
www.motaher21.net
وَ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ وَ جَعَلۡنٰہُ ہُدًی لِّبَـنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ اَلَّا تَتَّخِذُوۡا مِنۡ دُوۡنِیۡ وَکِیۡلًا ؕ﴿۲﴾
And We gave Moses the Scripture and made it a guidance for the Children of Israel that you not take other than Me as Disposer of affairs,
ذُرِّیَّۃَ مَنۡ حَمَلۡنَا مَعَ نُوۡحٍ ؕ اِنَّہٗ کَانَ عَبۡدًا شَکُوۡرًا ﴿۳﴾
O descendants of those We carried [in the ship] with Noah. Indeed, he was a grateful servant.
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Al- Boni Israyel
Sura: 17
Verses :- 02-03
Musa and how He was given the Tawrah
When Allah mentions how He took His servant Muhammad, on the Journey by Night, He follows it by mentioning Musa, His servant and Messenger who also spoke with Him. Allah often mentions Muhammad and Musa together, may the peace and blessings of Allah be upon them both, and he mentions the Tawrah and the Qur’an together. So after mentioning the Isra’,
He says:
وَاتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ
And We gave Musa the Scripture,
meaning the Tawrah.
وَجَعَلْنَاهُ
and made it,
meaning the Scripture,
هُدًى
a guidance,
meaning a guide,
لِّبَنِي إِسْرَايِيلَ أَلاَّ تَتَّخِذُواْ
for the Children of Israel (saying):”Take none…”
means, lest they should take,
مِن دُونِي وَكِيلً
“… other than Me as (your) Wakil.”
means, `you have no protector, supporter or god besides Me,’ because Allah revealed to every Prophet that he should worship Him alone with no partner or associate.
Then Allah says
ذُرِّيَّةَ مَنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوحٍ
O offspring of those whom We carried (in the ship) with Nuh,
by addressing the descendants of those who were carried in the ship with Nuh there is a reminder of the blessings, as if Allah is saying:`O descendants of those whom We saved and carried in the ship with Nuh, follow in the footsteps of your father,
إِنَّهُ كَانَ عَبْدًا شَكُورًا
Verily, he was a grateful servant.
`Remember the blessing I have granted you by sending Muhammad.’
Imam Ahmad reported that Anas bin Malik said:
“The Messenger of Allah said:
إِنَّ اللهَ لَيَرْضَى عَنِ الْعَبْدِ أَنْ يَأْكُلَ الاَْكْلَةَ أَوْ يَشْرَبَ الشَّرْبَةَ فَيَحْمَدَ اللهَ عَلَيْهَا
Allah will be pleased with His servant if, when he eats something or drinks something, he praises Allah for it.”
This was also recorded by Muslim, At-Tirmidhi and An-Nasa’i.
Malik said about Zayd bin Aslam:
“He used to praise Allah in all circumstances.”
In this context, Al-Bukhari mentioned the Hadith of Abu Zar`ah narrating from Abu Hurayrah, who said that the Prophet said:
أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ ادَمَ يَوْمَ الْقِيَامَة
I will be the leader of the sons of Adam on the Day of Resurrection…
He quoted the Hadith at length, and in the Hadith, the Prophet said:
فَيَأْتُونَ نُوحًا فَيَقُولُونَ يَا نُوحُ إِنَّكَ أَنْتَ أَوَّلُ الرُّسُلِ إِلَى أَهْلِ الاَْرْضِ وَقَدْ سَمَّاكَ اللهُ عَبْدًا شَكُورًا فَاشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّك
They will come to Nuh and will say, `O Nuh, you were the first of the Messengers sent to the people of earth, and Allah called you grateful servant, so intercede for us with your Lord.’
And he quoted the Hadith in full.
www.motaher21.net