(বই#৮৭৬) সুরা: আল্ বনি‌ ইসরাইল সুরা:১৭ ১০০- নং আয়াত:- [ اِذًا لَّاَمۡسَکۡتُمۡ خَشۡیَۃَ الۡاِنۡفَاقِ ؕ তবুও ‘ব্যয় হয়ে যাবে’ এ আশংকায় তোমরা তা ধরে রাখতে; ] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৮৭৬)
সুরা: আল্ বনি‌ ইসরাইল
সুরা:১৭
১০০- নং আয়াত:-
[ اِذًا لَّاَمۡسَکۡتُمۡ خَشۡیَۃَ الۡاِنۡفَاقِ ؕ
তবুও ‘ব্যয় হয়ে যাবে’ এ আশংকায় তোমরা তা ধরে রাখতে; ]
www.motaher21.net

قُلۡ لَّوۡ اَنۡتُمۡ تَمۡلِکُوۡنَ خَزَآئِنَ رَحۡمَۃِ رَبِّیۡۤ اِذًا لَّاَمۡسَکۡتُمۡ خَشۡیَۃَ الۡاِنۡفَاقِ ؕ وَ کَانَ الۡاِنۡسَانُ قَتُوۡرًا ﴿۱۰۰﴾٪
বল, ‘যদি তোমরা আমার প্রতিপালকের দয়ার ভান্ডারের অধিকারী হতে, তবুও তোমরা ব্যয় করে (নিঃস্ব) হয়ে যাবে এই আশংকায় তা ধরে রাখতে। আসলে মানুষ তো অতিশয় কৃপণ।’

১০০- নং আয়াতের তাফসীর:

আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

خَشْيَةَ الإِنْفَاقِ এর অর্থ, خَشْيَةَ أَنْ يُنْفِقُوْا فَيَفْتَقِرُوْا “এই ভয়ে যে, দান করলে ধন শেষ হয়ে যাবে এবং পরিশেষে নিঃস্ব হয়ে যাবে।” অথচ, এটা আল্লাহর ধন-ভান্ডার যা শেষ হওয়ার নয়। কিন্তু মানুষ সংকীর্ণ চিত্তের অধিকারী হওয়ায় কার্পণ্য করে। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, ﴿أَمْ لَهُمْ نَصِيبٌ مِنَ الْمُلْكِ فَإِذًا لا يُؤْتُونَ النَّاسَ نَقِيرًا﴾ অর্থাৎ, “এরা যদি আল্লাহর রাজত্বের কিছু অংশ পেয়ে যায়, তবে এরা মানুষদেরকে একটি তিল পরিমাণও কিছু দেবে না।” (সূরা নিসা ৪:৫৩ আয়াত) খেজুরের আঁটির পিঠে যে বিন্দু থাকে সেটাকে ‘নাক্বীর’ বলা হয়। অর্থাৎ, সামান্য পরিমাণও কিছুই দেবে না। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া যে, তিনি তাঁর ধন-ভান্ডারের মুখ মানুষের জন্য খুলে রেখেছেন। যেমন, হাদীসে আছে, “আল্লাহর হাত পরিপূর্ণ। তিনি রাত-দিন ব্যয় করেন, তবুও তা থেকে কিছুই কমে না। লক্ষ্য কর, যখন থেকে আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, তখন থেকে তিনি কতই না ব্যয় করেই যাচ্ছেন, তা সত্ত্বেও তাঁর হাতে যা কিছু আছে তা থেকে কিছুই কমে যায়নি।”

(বুখারীঃ কিতাবুত্ তাওহীদ, মুসলিমঃ কিতাবুয্ যাকাত)

 

For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran

 

তাফসীরে‌ হাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

১০০ নং আয়াতের তাফসীর:

উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা অধিকাংশ মানুষের একটি বদ-অভ্যাসের কথা বর্ণনা করছেন। মানুষ মনে করে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ধন সম্পদের অভাব নেই, তিনি তো আমাদেরকে অঢেল সম্পদ দিলেই পারেন। আমাদের দূরবস্থা ও অভাব অনটনে থাকতে হতো না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমার কাছে ধন-সম্পদের যে ভাণ্ডার রয়েছে যা কখনো ফুরিয়ে যাবে না, তা যদি তোমাদেরকে দেয়া হয় তাহলে তোমরা এ কথা জানা সত্ত্বেও মানুষকে দান করবে না এ আশংকায় যে, যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে আমরা অভাবে পড়ে যাব। অথচ আমি সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষকে ধন-সম্পদ ও নেয়ামত দান করেই আসছি।

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:

يَدُ اللّٰهِ مَلْأَي لاَ يَغِيضُهَا نَفَقَةٌ، سَحَّاءُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ، وَقَالَ: أَرَأَيْتُمْ مَا أَنْفَقَ مُنْذُ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ، فَإِنَّهُ لَمْ يَغِضْ مَا فِي يَدِهِ

আল্লাহ তা‘আলার হাত ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ, দিন-রাত ব্যয় করাতেও তা কমে না। তোমরা কি লক্ষ্য করেছ, আকাশ-জমিন সৃষ্টির পর থেকে কত ব্যয় করে আসছেন, কিন্তু তার পরেও তাঁর হাতে যা রয়েছে তা কমে না। (সহীহ বুখারী হা: ৪৭১১) কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা পরিমিতভাবে দিয়ে থাকেন। অধিক দিলে ফাসাদ সৃষ্টি হবে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَلَوْ بَسَطَ اللہُ الرِّزْقَ لِعِبَادِھ۪ لَبَغَوْا فِی الْاَرْضِ وَلٰکِنْ یُّنَزِّلُ بِقَدَرٍ مَّا یَشَا۬ئُ اِنَّھ۫ بِعِبَادِھ۪ خَبِیْرٌۭ بَصِیْرٌ‏)‏

“আল্লাহ তাঁর (সকল) বান্দাদের রুযী বাড়িয়ে দিলে তারা পৃথিবীতে অবশ্যই সীমালঙ্ঘন করত; কিন্তু তিনি তাঁর ইচ্ছামত পরিমাণেই দিয়ে থাকেন। তিনি তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক জানেন ও দেখেন।” (সূরা শুরা ৪২:২৭)

(خَشْيَةَ الْإِنْفَاقِ) অর্থ- خشية ان ينفقوا فيفتقروا

অর্থাৎ এ ভয়ে যে, দান করলে ধন শেষ হয়ে যাবে, ফলে তারা নিঃস্ব হয়ে যাবে। মানুষ সংকীর্ণ চিত্তের অধিকারী হওয়ায় কার্পণ্য করে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(أَمْ لَهُمْ نَصِيْبٌ مِّنَ الْمُلْكِ فَإِذًا لَّا يُؤْتُوْنَ النَّاسَ نَقِيْرًا ‏)‏

“তাদের কি রাজত্বে কোন অংশ আছে? যদি তাদের কোন অংশ থাকত তাহলে লোকদের তিল পরিমাণও দিত না।” (সূরা নিসা ৪:৫৩)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:

(إِنَّ الْإِنْسَانَ خُلِقَ هَلُوْعًا لا إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوْعًا لا ‏ وَّإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوْعًا ‏)‏

“নিশ্চয়ই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে অস্থিরমনা রূপে; যখন তাকে বিপদ স্পর্শ করে তখন সে হয় হা-হুতাশকারী। আর যখন কল্যাণ তাকে স্পর্শ করে তখন সে হয় অতি কৃপণ।” (সূরা মাআ‘রিজ ৭০:১৯-২১)

সুতরাং আল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার আগে নিজের অবস্থানের দিকে লক্ষ্য করা উচিত।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. দান করার ব্যাপারে কোন কৃপণতা করা যাবে না। আল্লাহ তা‘আলা যা কিছু দিবেন তা থেকে সাধ্যমত দান করতে হবে।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন‌্য বলেছেন :-

#আয়াতে যে বিষয়বস্তুর অবতারণা করা হয়েছিল এখানে সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। মক্কার মুশরিকরা যেসব মনস্তাত্বিক কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত অস্বীকার করতো তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এ ছিল যে, এভাবে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব তাদের মেনে নিতে হতো। আর সাধারণত মানুষ সমকালীন ও কোন পরিচিত-সহযোগীর শ্রেষ্ঠত্ব খুব কমই মেনে নিতে প্রস্তুত হয়। এ প্রেক্ষিতে বলা হচ্ছে, যাদের কৃপণতার অবস্থা হচ্ছে এই যে, কারো যথার্থ মর্যাদার স্বীকৃতি দিতেও যারা মনে ব্যথা পায়, তাদের হাতে যদি আল্লাহ নিজের রহমতের চাবিগুলো দিয়ে দেন তাহলে তারা কাউকে একটি কানাকড়িও দেবে না।

 

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-

*কোরআনের কাঠগড়ায় নির্লজ্জজ ইহুদী জাতি : যারা রসূলুল্লাহ(স.)-কে মনি মুক্তা খচিত ঘর, খেজুর ও আঙুরের বাগান এবং প্রবল বেগে উৎসারিত ঝর্ণা সৃষ্টি করে দেখানাের মতাে আজগুবী প্রস্তাব পেশ করে থাকে, তারা কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত কৃপণ। এরা যদি আল্লাহর অনুগ্রহের ফলে গােটা খােদায়ী ভান্ডারের মালিকও হয়ে যায়, তবুও তারা নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার ভয়ে তা নিজেদের কাছে আটকিয়ে রাখবে, কুক্ষিগত করে রাখবে। অথচ আল্লাহর রহমতের ভান্ডার হচ্ছে বিশাল যার কোনাে শেষ নেই। সে কথাই নীচের আয়াতে বলা হয়েছে, ‘(হে নবী,) বলাে, আমার মালিকের দয়ার ভান্ডার যদি তােমাদের করায়ত্তে থাকতাে, তবে তা ব্যয় হয়ে যাবে এ ভয়ে তােমরা তা আকড়ে রাখতে চাইতে, (আসলে) মানুষ (স্বভাবগতভাবেই) অতিশয় কৃপণ'(আয়াত ১০০) আলােচ্য আয়াতে ওদের কার্পণ্যের চিত্রটি অত্যন্ত গভীরভাবে ফুটিয়ে তােলা হয়েছে। ওদের জানা উচিত যে, আল্লাহর রহমতের কোনাে সীমা নেই, কোনাে শেষ নেই। এই রহমতের কোনাে হ্রাস নেই, কোনাে ক্ষয় নেই। কিন্তু এ সত্তেও ওরা নিজেদের স্বভাবজাত কার্পণ্যের বশবর্তী হয়ে এই বিশাল রহমতের ভান্ডারও কুক্ষিগত করে রাখবে।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-

এখানে আল্লাহ তাআলা মানব প্রকৃতির অভ্যাস বর্ণনা করছেন যে, মানুষ যদি আল্লাহ তাআলার রহমত বা দয়ার ভাণ্ডারেরও অধিকারী হয়ে যেতো, যা কখনো কিছুই কম হবার নয়, তবুও খরচ হয়ে যাবে এই ভয়ে তারা তা ধরে রাখতো। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ “যদি তারা রাজ্যের কোন অংশের মালিক হয়ে যায় তবে তারা কাউকে এক কানা কড়িও দিবে না। এটাই হচ্ছে মানব প্রকৃতি। তবে হাঁ, আল্লাহর পক্ষ থেকে যারা হিদায়াত প্রাপ্ত হয় এবং উত্তম তাওফীক লাভ করে তারা এই বদ অভ্যাসকে ঘৃণা করে। তারা দানশীল হয় এবং অপরের কল্যাণ সাধন করে।

“মানুষ বড়ই তাড়াহুড়াকারী ও দুর্বল মনী। কষ্ট ও বিপদের সময় তারা একেবারে মুষড়ে পড়ে এবং আরাম ও সুখের সময় গর্বভরে ফুলে ওঠে। এ সময় তারা কাউকেও কিছুই দান করে না, বরং কার্পণ্য করে। তবে নামাযীরা ব্যতীত (শেষ পর্যন্ত)।” এই ধরনের আয়াত কুরআন কারীমের মধ্যে আরো বহু রয়েছে। এগুলি দ্বারা আল্লাহ তাআ’লরি ফযল ও করম এবং দান ও দয়ার পরিচয় মিলে।

সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ তাআলার হাত। পরিপূর্ণ রয়েছে। দিন রাত্রির খরচে তা হতে কিছুই কমে যায় না। শুরু থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত তিনি খরচ করে যাচ্ছেন, তথাপি তাঁর ভাণ্ডারের কিছুই কমে নাই।

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#876)
Sura:17
Sura: Bony Israyel.
Ayat: 100
[ اِذًا لَّاَمۡسَکۡتُمۡ خَشۡیَۃَ الۡاِنۡفَاقِ ؕ
Then you would surely hold back for fear of spending, ;]
www.motaher21.net

17:100

قُلۡ لَّوۡ اَنۡتُمۡ تَمۡلِکُوۡنَ خَزَآئِنَ رَحۡمَۃِ رَبِّیۡۤ اِذًا لَّاَمۡسَکۡتُمۡ خَشۡیَۃَ الۡاِنۡفَاقِ ؕ وَ کَانَ الۡاِنۡسَانُ قَتُوۡرًا ﴿۱۰۰﴾٪

Say [to them], “If you possessed the depositories of the mercy of my Lord, then you would withhold out of fear of spending.” And ever has man been stingy.

 

Holding back is Part of Man’s Nature

Allah says to His Messenger:

قُل لَّوْ أَنتُمْ تَمْلِكُونَ خَزَايِنَ رَحْمَةِ رَبِّي إِذًا لاََّمْسَكْتُمْ خَشْيَةَ الاِنفَاقِ

Say:”If you possessed the treasure of the mercy of my Lord, then you would surely hold back for fear of spending,

“Tell them, O Muhammad, even if you had authority over the treasures of Allah, you would refrain from spending for fear of exhausting it.”

Ibn Abbas and Qatadah said,

“This means for fear of poverty,”

lest it run out, despite the fact that it can never be exhausted or come to an end. This is because it is part of your nature.

So Allah says:

وَكَانَ الانسَانُ قَتُورًا

and man is ever miserly.

Ibn Abbas and Qatadah said:

“(This means) stingy and holding back.”

Allah says:

أَمْ لَهُمْ نَصِيبٌ مِّنَ الْمُلْكِ فَإِذاً لاَّ يُوْتُونَ النَّاسَ نَقِيراً

Or have they a share in the dominion Then in that case they would not give mankind even a Naqira. (4:53),

meaning that even if they had a share in the authority of Allah, they would not have given anything to anyone, not even the amount of a Naqira (speck on the back of a date stone).

Allah describes man as he really is, except for those whom Allah helps and guides. Miserliness, discontent and impatience are human characteristics, as Allah says:

إِنَّ الاِنسَـنَ خُلِقَ هَلُوعاً

إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوعاً

وَإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوعاً

إِلاَّ الْمُصَلِّينَ

Verily, man was created very impatient; irritable when evil touches him; and stingy when good touches him. Except those who are devoted to Salah (prayers). (70:19-22)

And there are many other such references in the Qur’an. This is an indication of the generosity and kindness of Allah.

In the Two Sahihs it says:

يَدُ اللهِ مَلَْى لَا يَغِيضُهَا نَفَقَةٌ سَحَّاءُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ أَرَأَيْتُمْ مَا أَنْفَقَ مُنْذُ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالاَْرْضَ فَإِنَّهُ لَمْ يَغِضْ مَا فِي يَمِينِه

Allah’s Hand is full and never decreases because of His giving night and day. Do you not see how much He has given since He created the heavens and the earth, yet that which is in His right hand never decreases.

For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran

Leave a Reply