(বই#৮৭৯) সুরা: আল্ বনি‌ ইসরাইল সুরা:১৭ ১০৭-১০৯ নং আয়াত:- [ إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ তাদের নিকট যখন এটা পাঠ করা হয়, ] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৮৭৯)
সুরা: আল্ বনি‌ ইসরাইল
সুরা:১৭
১০৭-১০৯ নং আয়াত:-
[ إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ
তাদের নিকট যখন এটা পাঠ করা হয়, ]
www.motaher21.net
قُلۡ اٰمِنُوۡا بِہٖۤ اَوۡ لَا تُؤۡمِنُوۡا ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ مِنۡ قَبۡلِہٖۤ اِذَا یُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ یَخِرُّوۡنَ لِلۡاَذۡقَانِ سُجَّدًا ﴿۱۰۷﴾ۙ
তুমি বল, ‘তোমরা কুরআনে বিশ্বাস কর অথবা না কর, যাদেরকে এর পূর্বে জ্ঞান দেওয়া হয়েছে তাদের নিকট যখন এটা পাঠ করা হয়, তখনই তারা চেহারা লুটিয়ে সিজদায় পড়ে।
وَّ یَقُوۡلُوۡنَ سُبۡحٰنَ رَبِّنَاۤ اِنۡ کَانَ وَعۡدُ رَبِّنَا لَمَفۡعُوۡلًا ﴿۱۰۸﴾
এবং বলে, আমাদের প্রতিপালক পবিত্র, মহান! অবশ্যই আমাদের প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি কার্যকর হয়েই থাকে।
وَ یَخِرُّوۡنَ لِلۡاَذۡقَانِ یَبۡکُوۡنَ وَ یَزِیۡدُہُمۡ خُشُوۡعًا ﴿۱۰۹﴾ٛ
আর তারা কাঁদতে কাঁদতে ভূমিতে চেহারা লুটিয়ে (সিজদা) দেয় এবং এ (কুরআন) তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে।’ (সিজদাহ-৪)

১০৭-১০৯ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে‌ হাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
১০৭-১০৯ নং আয়াতের তাফসীর:

এখানে মু’মিনদের কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হচ্ছে যে, তারা আল্লাহ তা‘আলার প্রতিটি কাজে পূর্ণ বিশ্বাসী। তারা আল্লাহ তা‘আলার প্রতিটি আদেশ ও নিষেধ যথাযথভাবে পালন করে। আল্লাহ তা‘আলা র বিধানের কখনো নাফরমানী করে না।

(قُلْ اٰمِنُوْا بِه۪ٓ أَوْ لَا تُؤْمِنُوْا)

অর্থাৎ তোমরা যারা কুরআনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন কর বা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও, তোমরা ঈমান আনয়ন কর আর নাই কর তাতে আল্লাহ তা‘আলার কিছু আসে যায় না। তবে যারা সত্যের ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান রাখে, ইতোপূর্বে আসমানী কিতাব তেলাওয়াত করেছে তারা কুরআনের তেলাওয়াত শুনে আল্লাহ তা‘আলার জন্য সিজদায় লুটে পড়ে এবং এর প্রতি ঈমান আনে।

(أُوْتُوا الْعِلْمَ مِنْ قَبْلِه۪ٓ)

অর্থাৎ সেই আলেমগণ যারা কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে বিগত কিতাবগুলো পড়েছেন এবং তারা ওয়াহীর প্রকৃত তত্ত্ব ও রিসালাতের নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। তারা এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে ক্রন্দনরত অবস্থায় সিজদায় পড়ে যায় যে, তিনি তাদেরকে শেষ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে চেনার তাওফীক দান করেছেন এবং কুরআন ও রিসালাতের ওপর ঈমান আনার সৌভাগ্য দান করেছেন। এদের অধিকাংশই আহলে কিতাব যেমন আব্দুল্লাহ বিন সালাম।

(إِنْ كَانَ وَعْدُ رَبِّنَا)

অর্থাৎ কিয়ামত ও পুনরুত্থানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা অবশ্যই সংঘটিত হবে।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. প্রকৃত সত্য অনুধাবন করতে পারে এমন ব্যক্তিরাই সঠিক পথের পথিক হয়।
২. আল্লাহ তা‘আলার অমিয়বাণী শুনে কাদঁতে কাঁদতে সিজাদায় লুটিয়ে পড়া মু’মিনদের বৈশিষ্ট্য ।
৩. পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব প্রাপ্তরাও জানত যে, কিয়ামত অবশ্যই ঘটবে।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন‌্য বলেছেন :-
#যে আহলি কিতাব গোষ্ঠী আসমানী কিতাবসমূহের শিক্ষা সম্পর্কে অবগত এবং যারা তার বাচনভংগীর সাথে পরিচিত।

# কুরআন শুনার সাথে সাথেই তারা বুঝতে পারে, যে নবীর আগমনের প্রতিশ্রুতি পূর্ববর্তী নবীগণের সহীফাসমূহে দেয়া হয়েছিল তিনি এসে গেছেন।
# আহিল কিতাবদের সত্যনিষ্ঠ ও সৎকর্মশীল লোকদের এ মনোভাব ও প্রতিক্রিয়ার কথা কুরআন মজীদের বহু জায়গায় বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন আলে ইমরান ১২রুকূ’ ও ২০ রুকূ’ এবং আল মায়েদার ১১ রুকূ’ দেখুন।

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-
# (আয়াত ১০৭) এটা যেন বিবেককে নাড়া দেয়ার মতাে একটা জীবন্ত দৃশ্য। এই দূশ্যে আমরা খোদায়ী জ্ঞান প্রাপ্ত পূর্ববর্তী ধর্মের কিছুসংখ্যক অনুসারীদেরকে দেখতে পাচ্ছি যারা পবিত্র কোরআনের মধুরবাণী শুনে ভক্তিতে মহান আল্লাহর সম্মুখে সিজদায় পড়ে যায়, তারা আত্মহারা হয়ে পড়ে, ভয় ও ভক্তির আতিশয্যে নিয়ন্ত্রণহারা হয়ে পড়ে। ফলে কেবল সিজদাই নয়, বরং নতমস্তকে ভূমিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর মহান আল্লাহর বড়ত্ব এবং তার ওয়াদার সত্যতা সম্পর্কে তাদের মনের গভীরে লুকায়িত অনুভূতি ভাষার রূপ ধারণ করে তাদের কন্ঠে এইভাবে উচ্চারিত হয়। (আয়াত ১০৮) তারা এতে প্রভাবিত হয়ে পড়ে, এতােই বিমােহিত হয়ে পড়ে যে, কেবল ভাষার মাধ্যমেই নিজেদের হৃদয়ের আকুতি জানিয়ে ক্ষান্ত হচ্ছে না, কারণ মনের এই অনুভূতি এই আকুতি ভাষায় ব্যক্ত করার মতাে নয়। তাই তাদের চোখ বেয়ে অশ্রুধারা নেমে আসছে ওই অব্যক্ত অনুভূতি ব্যক্ত করার প্রয়াসে। ভূমিতে লুটিয়ে পড়ে কেঁদে কেঁদে নিজেদের মনের অবস্থা ব্যক্ত করছে ওরা। ফলে ওদের ভয় ও ভক্তি আরাে বৃদ্ধি পাচ্ছে, ওদের গােটা সত্তাকে প্লাবিত করে তুলছে। এটা একটা অভাবনীয় দৃশ্য যার মাধ্যমে হৃদয়ের দু’কুল ছাপিয়ে ওঠা বাঁধনমুক্ত অনুভূতি চিত্রায়িত হয়েছে। এই হৃদয়স্পর্শী দৃশ্যের মাধ্যমে সংশয় ও দ্বিধামুক্ত মনের ওপর পবিত্র কোরআনের বিস্ময়কর প্রভাবের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রভাব কেবল সেই সকল লােকদের ওপরই হতে পারে যারা জ্ঞানের অধিকারী। যারা ঐশী বাণীর মর্ম বুঝে, যারা এর মূল্য বুঝে। তবে জ্ঞান বলতে যে কোনাে জ্ঞান নয় বরং ঐশী জ্ঞানকে বুঝানাে হয়েছে। কারণ, এই জ্ঞান হচ্ছে আল্লাহপ্রদত্ত। কাজেই তা নির্ভুল ও সত্য। পূর্ববর্তী জ্ঞানপ্রাপ্ত লােকদের এই দৃশ্যের বর্ণনা এসেছে পবিত্র কোরআনকে বিশ্বাস করা বা না করার স্বাধীনতা প্রদানের বক্তব্যের পর।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
১০৭-১০৯ নং আয়াতের তাফসীর

মহান আল্লাহ বলেনঃ (হে কাফিরের দল!) তোমাদের ঈমান আনয়নের উপর কুরআনের সত্যতা নির্ভরশীল নয়। তোমরা একে মানো বা না-ই মানো, এতে কোন কিছু যায় আসে না। কুরআন যে নিজে আল্লাহর কালাম এবং সত্য গ্রন্থ এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। সদা সর্বদা প্রাচীন ও পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহে এর বর্ণনা চলে আসছে। যে সব আহলে কিতাব সৎ ও আল্লাহর কিতাবের উপর আমলকারী এবং যারা পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে কোন পরিবর্তন ও পরিবর্ধন আনয়ন করেন নাই তারা তো এই কুরআন শোনা মাত্রই আবেগ উদ্বেলিত হয়ে সিজদায়ে শুকর আদায় করে থাকেন এবং বলেনঃ “হে আল্লাহ! আপনার শুকর যে আপনি আমাদের বর্তমানেই এই রাসূলকে (সঃ) পাঠিয়েছেন এবং এই কালাম অবতীর্ণ করেছেন। আর তারা আল্লাহর পূর্ণ ও ব্যাপক শক্তির কারণে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহিমা প্রকাশ করে থাকেন; তাঁরা জানতেন যে, আল্লাহর ওয়াদা সত্য-মিথ্যা নয়। আজ তার ওয়াদা পূর্ণ হতে দেখে তারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান এবং তাদের প্রতিপালকের তাসবীহ পাঠে রত থাকেন, আর তার প্রতিশ্রুতির সত্যতা স্বীকার করে নেন। তারা অত্যন্ত বিনয়ের সাথে কাঁদতে কাঁদতে তাঁদের প্রতিপালকের সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়েন। ঈমান, আল্লাহর কালাম এবং তাঁর রাসূলের (সঃ) কারণে তাঁদের ঈমান, ইসলাম, হিদায়াত, তাকওয়া, এবং ভয়-ভীতি আরো বৃদ্ধি পায়। এই সংযোগ সিফাত বা বিশ্লেষণের উপর বিশ্লেষণের সংযোগ ‘যাত’ বা সত্তার উপর সত্তার সংযোগ নয়।

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#879)
Sura:17
Sura: Bony Israyel.
Ayat: 107-109
[ إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ

When it is recited to them,]
www.motaher21.net
17:107

قُلۡ اٰمِنُوۡا بِہٖۤ اَوۡ لَا تُؤۡمِنُوۡا ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ مِنۡ قَبۡلِہٖۤ اِذَا یُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ یَخِرُّوۡنَ لِلۡاَذۡقَانِ سُجَّدًا ﴿۱۰۷﴾ۙ

Say, “Believe in it or do not believe. Indeed, those who were given knowledge before it – when it is recited to them, they fall upon their faces in prostration,

17:108

وَّ یَقُوۡلُوۡنَ سُبۡحٰنَ رَبِّنَاۤ اِنۡ کَانَ وَعۡدُ رَبِّنَا لَمَفۡعُوۡلًا ﴿۱۰۸﴾

And they say, “Exalted is our Lord! Indeed, the promise of our Lord has been fulfilled.”

17:109

وَ یَخِرُّوۡنَ لِلۡاَذۡقَانِ یَبۡکُوۡنَ وَ یَزِیۡدُہُمۡ خُشُوۡعًا ﴿۱۰۹﴾ٛ

And they fall upon their faces weeping, and the Qur’an increases them in humble submission.

 

 

 

Tafsir Ibne Kasir Said:-

Those Who were given Knowledge before truly admit the Qur’an

Allah says to His Prophet Muhammad:

قُلْ

Say,

O Muhammad to these disbelievers concerning what you have brought to them of this Glorious Qur’an:

امِنُواْ بِهِ أَوْ لَا تُوْمِنُواْ

“Believe in it (the Qur’an) or do not believe (in it).

meaning, it is all the same whether you believe in it or not, for it is true in and of itself. It was revealed by Allah, Who mentioned it previously in the Books that He revealed to other Messengers.

Hence He says:

إِنَّ الَّذِينَ أُوتُواْ الْعِلْمَ مِن قَبْلِهِ

Verily, those who were given knowledge before it,

meaning righteous people among the People of the Book, who adhered to their Books and appreciated them without distorting them.

إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ

when it is recited to them,

means, when this Qur’an is recited to them,

يَخِرُّونَ لِلَذْقَانِ سُجَّدًا

fall down on their chins (faces) in humble prostration.

means, to Allah, in gratitude for the blessing He has bestowed on them by considering them fit to live until they met this Messenger to whom this Book was revealed.

Hence

وَيَقُولُونَ سُبْحَانَ رَبِّنَا

And they say:Glory be to our Lord!,

meaning, they extol and glorify their Lord for His perfect power and for not delaying the fulfillment of the promise which He made through His earlier Prophets, that He would send Muhammad. Hence they said:

سُبْحَانَ رَبِّنَا إِن كَانَ وَعْدُ رَبِّنَا لَمَفْعُولاً

Glory be to our Lord! Truly, the promise of our Lord must be fulfilled

 

وَيَخِرُّونَ لِلَذْقَانِ يَبْكُونَ

And they fall down on their chins (faces) weeping,

means, in submission to Allah, may He be glorified, and in expression of their belief and faith in His Book and His Messenger.

وَيَزِيدُهُمْ خُشُوعًا

and it increases their humility.

means, it increases them in faith and submission.

As Allah says:

وَالَّذِينَ اهْتَدَوْاْ زَادَهُمْ هُدًى وَءَاتَـهُمْ تَقُوَاهُمْ

While as for those who accept guidance, He increases their guidance and bestows on them their Taqwa. (47:17)

وَيَخِرُّونَ
(And they fall down),

is a description rather than an action (i.e., this is a further description of their humility as referred to in Ayah 107; it does not imply that they prostrate twice)

For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran

Leave a Reply