(বই#৮৮২) সূরা:- আল-কাহাফা। সুরা:১৮ ০৬-০৮ নং আয়াত:- [ فَلَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ তাহলে দুশ্চিন্তায় তুমি হয়তো নিজের প্রাণটি খোয়াবে! ] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৮৮২)
সূরা:- আল-কাহাফা।
সুরা:১৮
০৬-০৮ নং আয়াত:-
[ فَلَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ
তাহলে দুশ্চিন্তায় তুমি হয়তো নিজের প্রাণটি খোয়াবে! ]
www.motaher21.net
সুরা: আল-কাহাফ
আয়াত নং :-০৬
فَلَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ عَلٰۤى اٰثَارِهِمْ اِنْ لَّمْ یُؤْمِنُوْا بِهٰذَا الْحَدِیْثِ اَسَفًا

হে মুহাম্মাদ! যদি এরা এ শিক্ষার প্রতি ঈমান না আনে, তাহলে দুশ্চিন্তায় তুমি হয়তো এদের পেছনে নিজের প্রাণটি খোয়াবে।
সুরা: আল-কাহাফ
আয়াত নং :-০৭

اِنَّا جَعَلْنَا مَا عَلَى الْاَرْضِ زِیْنَةً لَّهَا لِنَبْلُوَهُمْ اَیُّهُمْ اَحْسَنُ عَمَلًا

আসলে পৃথিবীতে এ যা কিছু সাজ-সরঞ্জামই আছে এগুলো দিয়ে আমি পৃথিবীর সৌন্দর্য বিধান করেছি তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য যে, তাদের মধ্য থেকে কে ভাল কাজ করে।

সুরা: আল-কাহাফ
আয়াত নং :-৮

وَ اِنَّا لَجٰعِلُوْنَ مَا عَلَیْهَا صَعِیْدًا جُرُزًاؕ

সবশেষে এসবকে আমি একটি বৃক্ষ-লতাহীন ময়দানে পরিণত করবো।

০৬-০৮ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন‌্য বলেছেন :-

# নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মধ্যে সে সময় যে মানসিক অবস্থার টানাপোড়ন চলছিল এখানে সেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ থেকে পরিষ্কার জানা যায়, তাঁকে ও তাঁর সাথীদেরকে যেসব কষ্ট দেয়া হচ্ছিল সেজন্য তাঁর মনে কোন দুঃখ ছিল না। বরং যে দুঃখটি তাঁকে ভিতরে ভিতরে কুরে কুরে খাচ্ছিল সেটি ছিল এই যে, তিনি নিজের জাতিকে নৈতিক অধঃপতন, ভ্রষ্টাচার ও বিভ্রান্তি থেকে বের করে আনতে চাচ্ছিলেন এবং তারা কোনক্রমেই এ পথে পা বাড়াবার উদ্যোগ নিচ্ছিল না। তাঁর পূর্ণ বিশ্বাস ছিল, এ ভ্রষ্টতার অনিবার্য ফল ধ্বংস ও আল্লাহর আযাব ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি তাদেরকে এ পরিণতি থেকে রক্ষা করার জন্য দিনরাত প্রাণান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তারা আল্লাহর আযাবের সম্মুখীন হবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম নিজেই তাঁর এ মানসিক অবস্থাকে একটি হাদীসে এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ

“আমার ও তোমাদের দৃষ্টান্ত এমন এক ব্যক্তির মতো যে আলোর জন্য আগুন জ্বালালো কিন্তু পতংগরা তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে শুরু করলো পুড়ে মরার জন্য। সে এদেরকে কোনক্রমে আগুন থেকে বাঁচাবার চেষ্টা করে কিন্তু এ পতংগরা তার কোন প্রচেষ্টাকেই ফলবতী করতে দেয় না। আমার অবস্থা অনুরূপ। আমি তোমাদের হাত ধরে টান দিচ্ছি কিন্তু তোমরা আগুনে লাফিয়ে পড়ছো।” (বুখারী ও মুসলিম। আরও তুলনামূলক আলোচনার জন্য সূরা আশ্ শু’আরা ৩ আয়াত দেখুন)

এ আয়াতে বাহ্যত শুধু এতটুকু কথাই বলা হয়েছে যে, সম্ভবত তুমি এদের পেছনে নিজের প্রাণটি খোয়াবে। কিন্তু এর মাধ্যমে সূক্ষ্মভাবে নবীকে এ মর্মে সান্তনাও দেয়া হয়েছে যে, এদের ঈমান না আনার দায়-দায়িত্ব তোমার ওপর বর্তায় না, কাজেই তুমি কেন অনর্থক নিজেকে দুঃখ ও শোকে দগ্ধীভূত করছো? তোমার কাজ শুধুমাত্র সুখবর দেয়া ও ভয় দেখানো। লোকদেরকে মু’মিন বানানো নয়। কাজেই তুমি নিজের প্রচারের দায়িত্ব পালন করে যাও। যে মেনে নেবে তাকে সুখবর দেবে এবং যে মেনে নেবে না তাকে তার অশুভ পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দেবে।

সুরা: আশ-শুআরা
আয়াত নং :-০৩

لَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ اَلَّا یَكُوْنُوْا مُؤْمِنِیْنَ

হে মুহাম্মাদ! এ লোকেরা ঈমান আনছে না বলে তুমি যেন দুঃখে নিজের প্রাণ বিনষ্ট করে দিতে বসেছ।

তাফসীর :
তাফহীমুল কুরআন:

# কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ অবস্থার উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সূরা কাহফে বলা হয়েছেঃ

فَلَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَفْسَكَ عَلَى آثَارِهِمْ إِنْ لَمْ يُؤْمِنُوا بِهَذَا الْحَدِيثِ أَسَفًا

“এরা এ শিক্ষার প্রতি ঈমান না আনলে সম্ভবত তুমি এদের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে ও আক্ষেপ করতে করতে মারা যাবে।” ( ৬ আয়াত )

আবার সূরা ফাতের-এ বলা হয়েছেঃ

فَلَا تَذْهَبْ نَفْسُكَ عَلَيْهِمْ حَسَرَاتٍ

-“তাদের অবস্থার প্রতি দুঃখ ও আক্ষেপ করে যেন তোমার প্রাণ ধ্বংস না হয়ে যায়।” ( ৮ আয়াত)

এ থেকে সে যুগে নিজের জাতির পথভ্রষ্টতা, তার নৈতিক অবক্ষয় ও গোয়ার্তুমি শুধরানোর জন্য তাঁর সকল প্রচেষ্টার প্রবল বিরোধিতা দেখে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেমন হৃদয় বিদারক ও কষ্টকর অবস্থায় তাঁর দিবা-রাত্র অতিবাহিত করতেন তা আন্দাজ করা যায়। بخع শব্দের প্রকৃত অর্থ হচ্ছে, পুরোপুরি জবেহ করা। بَاخِعُ نِفْسُكَ এর আভিধানিক অর্থ হয়, তুমি নিজেই নিজেকে হত্যা করে ফেলছো।

# প্রথম আয়াতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করা হয়েছিল। আর এ দু’টি আয়াতে কাফেরদেরকে উদ্দেশ্য করে কথা বলা হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একটি সান্তনা বাক্য শুনিয়ে দেবার পর এখন তাঁর অস্বীকারকারীদেরকে সরাসরি সম্বোধন না করেই একথা শুনানো হচ্ছে যে, পৃথিবী পৃষ্ঠে তোমরা এই যেসব সাজ-সরঞ্জাম দেখছো এবং যার মন ভুলানো চাকচিক্যে তোমরা মুগ্ধ হয়েছো, এতো নিছক একটি সাময়িক সৌন্দর্য, নিছক তোমাদের পরীক্ষার জন্য এর সমাবেশ ঘটানো হয়েছে। এসব কিছু আমি তোমাদের আয়েশ-আরামের জন্য সরবরাহ করেছি, তোমরা এ ভুল ধারণা করে বসেছো। তাই জীবনের মজা লুটে নেয়া ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যের প্রতি তোমরা কোন ভ্রুক্ষেপই করছো না। এজন্য কি তোমরা কোন উপদেশদাতার কথায় কান দিচ্ছো না। কিন্তু আসলে তো এগুলো আয়েশ-আরামের জিনিস নয় বরং পরীক্ষার উপকরণ। এগুলোর মাঝখানে তোমাদের বসিয়ে দিয়ে দেখা হচ্ছে, তোমাদের মধ্যে কে তার নিজের আসল স্বরূপ ভুলে গিয়ে দুনিয়ার এসব মন মাতানো সামগ্রীর মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে এবং কে তার আসল মর্যাদার (আল্লাহর বন্দেগী) কথা মনে রেখে সঠিক নীতি অবলম্বন করছে। যেদিন এ পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে সেদিনই ভোগের এসব সরঞ্জাম খতম করে দেয়া হবে এবং তখন এ পৃথিবী একটি লতাগুল্মহীন ধূ ধূ প্রান্তর ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।

তাফসীরে‌ হাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

৬-৮ নং আয়াতের তাফসীর:

এখানে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন, কাফির-মুশরিকরা এ হাদীস তথা কুরআনের প্রতি ঈমান আনে না তাই বলে দুঃখ, দুশ্চিন্তা ও আফসোস করে নিজেকে ধ্বংস করে দিও না। হিদায়াতের মালিক তো আল্লাহ তা‘আলা তিনি যাকে হিদায়াত দিয়ে থাকেন তাকে পথভ্রষ্ট করার কেউ নেই, আর যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে হিদায়াত দেয়ার কেউ নেই। তোমার কাজ তাবলীগ করা, তা করে যাও।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(فَلَا تَذْھَبْ نَفْسُکَ عَلَیْھِمْ حَسَرٰتٍ)

“অতএব তুমি তাদের জন্য অনুতাপ করে নিজেকে ধ্বংস করবে না।” (সূরা ফাতির ৩৫:৮)

আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

(لَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ أَلَّا يَكُوْنُوْا مُؤْمِنِيْن) ‏

“তারা মু’মিন হচ্ছে না বলে তুমি হয়ত (মনোকষ্টে) প্রাণ বির্সজন করবে।” (সূরা শু‘য়ারা ২৬:৩)

সুতরাং তাদের ব্যাপারে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কোনই প্রয়োজন নেই। যারা সৎ আমল করবে তারা তাদের নিজেদের কল্যাণের জন্যই করবে। আর যারা মন্দ আমল করবে তারাও তাদের নিজেদের অকল্যাণের জন্যই করবে এবং তারা যা করবে তাই তথায় প্রাপ্ত হবে।

(زِيْنَةً لَّهَا) অর্থাৎ দুনিয়াতে যা কিছু আছে, গাছ-পালা, পশু-পাখি, ধন-সম্পদ সব কিছু দুনিয়ার সৌন্দর্য ও চাকচিক্যের জন্য। এসব দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা পরীক্ষা করবেন কারা দুনিয়ার সম্পদ ও ভোগবিলাসের মোহে পড়ে আল্লাহ তা‘আলার দীন থেকে সরে যায় আর দীন থেকে না সরে উত্তম আমল করে।

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, এই পৃথিবী এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে, এর শোভা-সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। ভূ-পৃষ্ঠ গাছ-পালাহীন সমতল ময়দানে পরিণত হবে। আর আখিরাতে যা আছে তা অবশিষ্ট থাকবে।

অতএব মানুষের উচিত এ ধ্বংসশীল দুনিয়ার মোহ পরিত্যাগ করে আল্লাহ তা‘আলা তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য উত্তম আমল করা।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. দুনিয়া পরীক্ষার জায়গা, আর আখিরাত ফলাফলের জায়গা।
২. দুনিয়া একদিন ধ্বংস হয়ে তরুলতাহীন মরুভূমিতে পরিণত হয়ে যাবে।
৩. কেউ মন্দ কাজ করলে তাকে সৎ কাজের দিকে আহ্বান করতে হবে। যদি সে ডাকে সাড়া না দেয় তাঁর জন্য তেমন আফসোস বা দুশ্চিন্তা করা যাবে না যাতে নিজের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যায়।

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-

পরবর্তী আয়াতে এমন ভাষায় রসুল (স.)-কে সম্বােধন করা হয়েছে, যা দ্বারা তার বর্তমান দুশ্চিন্তাকে অপছন্দ করা হয়েছে। রসূল(স.)-এর জাতি কর্তৃক কোরআনকে ক্রমাগত অস্বীকার ও অগ্রাহ্য করতে থাকায় এবং সুনিশ্চিত ধ্বংসের পথে ধাবিত হতে থাকায় তিনি এত মর্মাহত ছিলেন যে, তিনি যেন আত্মঘাতী হতে চলেছেন। এই অবস্থার প্রতি বিরাগ প্রকাশ করে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তবে মনে হয়, তুমি তাদের পেছনে ঘুরে ঘুরে আক্ষেপে নিজেকে ধ্বংস করে ছাড়বে, যদি তারা এই বাণীকে গ্রহণ না করে।’ অর্থাৎ মর্মবেদনায় ও দুঃখে তুমি বুঝি মরেই যাবে-যদি তারা কোরআনের প্রতি ঈমান না আনে। অথচ তাদের নিয়ে দুঃখ করা ও মর্মাহত হওয়া তােমার পক্ষে বেমানান। এটা তুমি বন্ধ করাে। কারণ আমি তাই পৃথিবীর যাবতীয় সহায় সম্পদ ও সন্তান সম্তুতিকে পরীক্ষার সামগ্রী হিসাবে সৃষ্টি করেছি। ৭ নং আয়াতটি লক্ষ্য করুন, ‘আমি পৃথিবীতে বিদ্যমান সব কিছুকে তার সৌন্দর্যেপকরণ হিসাবে বানিয়েছি, যাতে মানুষকে পরীক্ষা করতে পারি যে, কে বেশী সৎকর্মশীল।’ কে বেশী সৎকর্মশীল তা আল্লাহ তায়ালা এমনিই জানেন। কিন্তু তিনি তার বান্দাদেরকে শুধু সেই কাজের ফল দেন, যা তারা বাস্তবিক পক্ষেই করে। এখানে অসৎ কর্মশীলদের সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। কেননা না বললেও বিষয়টা সুস্পষ্ট। পৃথিবীর এই রূপসৌন্দর্য নিতান্তই ক্ষণস্থায়ী। পৃথিবী একদিন এসব হারিয়ে ফেলবে। কেয়ামতের আগে ভূ-পৃষ্ঠের সব কিছু ধ্বংস হয়ে তা একটা বিরান উন্মুক্ত প্রান্তরে পরিণত হবে। ৮নং আয়াতে একথাই বলা হয়েছে। ‘আর আমি ভূ-পৃষ্ঠকে একটা বিরান প্রান্তর বানাবাে।’ এ আয়াতের ভাষায় ও এতে উপস্থাপিত দৃশ্যে একটা ভয়াবহ অবস্থা ফুটিয়ে তােলা হয়েছে। ‘জুরুযান’ শব্দটার ধ্বনিগত ব্যঞ্জনা থেকেই একটা নির্জলা ভূমির দৃশ্য ফুটে ওঠে। আর ‘সঈদান’ শব্দটা থেকে ফুটে ওঠে সমতল ও প্রস্তরময় চিত্র।

 

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৬-৮ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবীকে সম্বোধন করে বলছেনঃ “হে নবী (সঃ)! মুশরিকরা যে তোমার নিকট থেকে পালিয়ে যাচ্ছে এবং ঈমান আনয়ন করছে না এতে তুমি মোটেই দুঃখ করো না।” এভাবে মহান আল্লাহ স্বীয় নবীকে (সঃ) সান্ত্বনা দিচ্ছেন। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ “তুমি তাদের কারণে এতো দুঃখ আফসোস করো না।” অন্য জায়গায় আছেঃ “তুমি তাদের কারণে এতো বেশী দুঃখিত ও চিন্তিত হয়ে পড়ো না।” আর এক আয়াতে আছেঃ “তাদের ঈমান না আনার কারণে তুমি নিজেকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ো না।”এখানেও তিনি বলেনঃ “তারা এই বাণী বিশ্বাস করছে না বলে তার পিছনে পড়ে তুমি দুঃখে আত্মবিনাশী হয়ে পড়ো না। তুমি তোমার কাজ চালিয়ে যাও। তাবলীগের কাজে অবহেলা করো না। যে সুপথ প্রাপ্ত হবে সে নিজেরই মঙ্গল সাধন করবে। আর যে পথভ্রষ্ট হবে সেও নিজেরই ক্ষতি করবে। প্রত্যেকের আমল তার সাথেই রয়েছে।”

এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ “দুনিয়া ধ্বংসশীল। এর শোভা সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। আর আখেরাত বাকী থাকবে। এর নিয়ামত চিরস্থায়ী।”

রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “দুনিয়া হচ্ছে মিষ্ট, সবুজ রঙ বিশিষ্ট। আল্লাহ তাতে তোমাদেরকে প্রতিনিধি বানিয়ে দেখতে চান, তোমরা কেমন আমল কর। সুতরাং তোমরা দুনিয়া হতে ও স্ত্রীলোকদের হতে বেঁচে থাকো।” বান্ ইসরাঈলের সর্বপ্রথম ফিত্রা ছিল নারীদের ফিত্না। এই দুনিয়া শেষ হয়ে যাবে এবং নষ্ট হয়ে যাবে। দনিয়ার ধ্বংস অনিবার্য। যমীন পতিত পড়ে থাকবে। তাতে কোন প্রকারের উদ্ভিদ থাকবে না। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ “মানুষ কি লক্ষ্য করে না যে, আমি অনাবাদী পতিত ভূমিতে পানি জমিয়ে থাকি? অতঃপর তা থেকে তারা ভূমিতে সেচন করে থাকে, তারা নিজেরা পান করে এবং তাদের পশুগুলিকে পান করিয়ে থাকে? তবুওকি তাদের চক্ষু খুলবে না?” যমীন ও যমীনে যা কিছু আছে সবই ধ্বংস হয়ে যাবে এবং সবকেই প্রকৃত মালিকের সামনে হাযির করা হবে। সুতরাং হে নবী (সঃ)! তুমি তাদের কাছে যা-ই শুননা কেন এবং তাদেরকে যে কোন অবস্থায় দেখো না কেন, মোটেই দুঃখ ও আফসোস করো না।

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#882)
Sura:18
Sura: Al-Kahf
Ayat: 06-08
[ فَلَعَلَّکَ بَاخِعٌ نَّفۡسَکَ
Then perhaps you would kill yourself!]
www.motaher21.net

18:6

فَلَعَلَّکَ بَاخِعٌ نَّفۡسَکَ عَلٰۤی اٰثَارِہِمۡ اِنۡ لَّمۡ یُؤۡمِنُوۡا بِہٰذَا الۡحَدِیۡثِ اَسَفًا ﴿۶﴾

Then perhaps you would kill yourself through grief over them, [O Muhammad], if they do not believe in this message, [and] out of sorrow.
18:7

اِنَّا جَعَلۡنَا مَا عَلَی الۡاَرۡضِ زِیۡنَۃً لَّہَا لِنَبۡلُوَہُمۡ اَیُّہُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ﴿۷﴾

Indeed, We have made that which is on the earth adornment for it that We may test them [as to] which of them is best in deed.

18:8

وَ اِنَّا لَجٰعِلُوۡنَ مَا عَلَیۡہَا صَعِیۡدًا جُرُزًا ؕ﴿۸﴾

And indeed, We will make that which is upon it [into] a barren ground.

Tafsir Ibne Kasir Said:-

Do not feel sorry because the Idolators do not believe

Allah consoles His Messenger for his sorrow over the idolators because they would not believe and keep away from him.

He also said:

فَلَ تَذْهَبْ نَفْسُكَ عَلَيْهِمْ حَسَرَتٍ

So destroy not yourself in sorrow for them. (35:8)

وَلَا تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ

And grieve not over them. (16:127)

لَعَلَّكَ بَـخِعٌ نَّفْسَكَ أَلاَّ يَكُونُواْ مُوْمِنِينَ

It may be that you are going to kill yourself with grief, that they do not become believers. (26:3)

meaning, maybe you will destroy yourself with your grief over them.

Allah says:

فَلَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ عَلَى اثَارِهِمْ إِن لَّمْ يُوْمِنُوا بِهَذَا الْحَدِيثِ

Perhaps, you would kill yourself in grief, over their footsteps, because they believe not in this narration.

meaning the Qur’an.

أَسَفًا

in grief.

Allah is saying, `do not destroy yourself with regret.’

Qatadah said:

“killing yourself with anger and grief over them.”

Mujahid said:

“with anxiety.”

These are synonymous, so the meaning is:

`Do not feel sorry for them, just convey the Message of Allah to them. Whoever goes the right way, then he goes the right way only for the benefit of himself. And whoever goes astray, then he strays at his own loss, so do not destroy yourself in sorrow for them.’
This World is the Place of Trial

Then Allah tells us that He has made this world a temporary abode, adorned with transient beauty, and He made it a place of trial, not a place of settlement. So He says:

إِنَّا جَعَلْنَا مَا عَلَى الاَْرْضِ زِينَةً لَّهَا لِنَبْلُوَهُمْ أَيُّهُمْ أَحْسَنُ عَمَلً

Verily, we have made that which is on earth an adornment for it, in order that We may test which of them are best in deeds.

Abu Maslamah narrated from Abu Nadrah from Abu Sa`id that the Messenger of Allah said:

إِنَّ الدُّنْيَا حُلْوَةٌ خَضِرَةٌ وَإِنَّ اللهَ مُسْتَخْلِفُكُمْ فِيهَا فَنَاظِرٌ مَاذَا تَعْمَلُونَ فَاتَّقُوا الدُّنْيَا وَاتَّقُوا النِّسَاءَ فَإِنَّ أَوَّلَ فِتْنَةِ بَنِي إِسْرَايِيلَ كَانَتْ فِي النِّسَاء

This world is sweet and green, and Allah makes you generations succeeding one another, so He is watching what you will do. Beware of (the beguilements of) this world and beware of women, for the first affliction that Children of Israel suffered from was that of women.

Then Allah tells us that this world will pass away and come to an end, as He says:

وَإِنَّا لَجَاعِلُونَ مَا عَلَيْهَا صَعِيدًا جُرُزًا

And verily, We shall make all that is on it bare, dry soil.

means, `after having adorned it, We will destroy it and make everything on it bare and dry, with no vegetation or any other benefit.’

Al-Awfi reported from Ibn Abbas that;

this means everything on it would be wiped out and destroyed.

Mujahid said:

“a dry and barren plain.”

Qatadah said,

“A plain on which there are no trees or vegetation.

For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran

Leave a Reply