(বই#৮৮৬) সূরা:- আল-কাহাফা। সুরা:১৮ ৪৫-৪৬ নং আয়াত:- [ اَلْمَالُ وَ الْبَنُوْنَ زِیْنَةُ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا١ۚ ধনোশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা। ‌] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৮৮৬)
সূরা:- আল-কাহাফা।
সুরা:১৮
৪৫-৪৬ নং আয়াত:-
[ اَلْمَالُ وَ الْبَنُوْنَ زِیْنَةُ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا١ۚ
ধনোশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা। ‌]
www.motaher21.net
সুরা: আল-কাহাফ
আয়াত নং :-৪৫

وَ اضْرِبْ لَهُمْ مَّثَلَ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا كَمَآءٍ اَنْزَلْنٰهُ مِنَ السَّمَآءِ فَاخْتَلَطَ بِهٖ نَبَاتُ الْاَرْضِ فَاَصْبَحَ هَشِیْمًا تَذْرُوْهُ الرِّیٰحُ١ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَیْءٍ مُّقْتَدِرًا

আর হে নবী! দুনিয়ার জীবনের তাৎপর্য তাদেরকে এ উপমার মাধ্যমে বুঝাও যে, আজ আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করলাম, ফলে ভূ-পৃষ্ঠের উদ্ভিদ খুব ঘন হয়ে গেলো আবার কাল এ উদ্ভিদগুলোই শুকনো ভূষিতে পরিণত হলো, যাকে বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যায়। আল্লাহ সব জিনিসের ওপর শক্তিশালী।

সুরা: আল-কাহাফ
আয়াত নং :-৪৬

اَلْمَالُ وَ الْبَنُوْنَ زِیْنَةُ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا١ۚ وَ الْبٰقِیٰتُ الصّٰلِحٰتُ خَیْرٌ عِنْدَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَّ خَیْرٌ اَمَلًا

এ ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের একটি সাময়িক সৌন্দর্য-শোভা মাত্র। আসলে তো স্থায়িত্ব লাভকারী সৎকাজগুলোই তোমার রবের কাছে ফলাফলের দিক দিয়ে উত্তম এবং এগুলোই উত্তম আশা-আকাঙ্ক্ষা সফল হবার মাধ্যম।

৪৫-৪৬ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
দুনিয়া নষ্ট, ধ্বংস ও শেষ হওয়ার দিক দিয়ে আকাশের বৃমিত। এই বৃষ্টি যমীনের বীজ ইত্যাদির সাথে মিলিত হয়, ফলে হাজার হাজার চারা গাছ সবুজ-শ্যামল হয়ে ওঠে। প্রত্যেক জিনিসের উপর সজীবতার চিহ্ন পরিস্ফুট হয়, কিন্তু কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পরই সব শুকিয়ে যায় এবং এমন চূর্ণবিচূর্ণ হয় যে, বাতাস ওগুলিকে ডানে বামে উড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। পূর্বের ঐ অবস্থার উপর যিনি সক্ষম ছিলেন, তিনি এই অবস্থার উপরও সক্ষম। সাধাণতঃ দুনিয়ার দৃষ্টান্ত বৃষ্টির সাথেই দেয়া হয়ে থাকে। যেমন সূরায়ে ইউনূসের এক আয়াতে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ পার্থিব জীবনের দৃষ্টান্ত বৃষ্টিন্যায় যা আমি আকাশ হতে বর্ষণ করি।” (১০:২৪) সূরায়ে যুমারে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “তুমি কি এর প্রতি লক্ষ্য কর নাই যে, আল্লাহ আকাশ হতে পানি বর্ষণ করেছেন।” (২২:৬৩) সূরায়ে হাদীদে আছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “তোমরা জেনে রেখো যে, (পরলোকের তুলনায়) পার্থিব জীবন তো কখনও বাঞ্ছিত হওয়ার যোগ্য নয়। কেননা, এটা তো শুধু খেলা ও তামাশা এবং (একটা বাহ্যিক) জাকজমক এবং পরস্পর একে অন্যের প্রতি আত্মগর্ব করা, আর ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি সম্বন্ধে একে অন্য অপেক্ষা প্রাচুর্য বর্ণনা করা মাত্র; যেমন বৃষ্টি (বর্ষিত) হলে ওর উৎপন্ন ফল কৃষকদের ভালবোধ হয়।” (৫৭:২০)

সহীহ হাদীসে আছে যে, দুনিয়ার সবুজ রঙ মিষ্ট (শেষ পর্যন্ত)।” এরপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা। যেমন তিনি অন্য জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “সুশোভিত মনে হয় মানুষের নিকট লোভনীয় বস্তুর মুহব্বত, রমণী হোক, সন্তান-সন্ততি হোক, পুঞ্জীভূত স্বর্ণ এবং রৌপ্য হোক।” (৩:১৪)। অন্য আয়াতে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ তোমাদের মাল ও তোমাদের সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা স্বরূপ, আর আল্লাহ তাআলার নিকটই বড় পুরস্কার রয়েছে।” (৬৪:১৫) অর্থাৎ তারই দিকে ঝুঁকে পড়া এবং তারই ইবাদতে নিমগ্ন থাকা দুনিয়া অনুসন্ধান হতে উত্তম। এজন্যে এখানেও আল্লাহ তাআলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “চিরবিদ্যমান পুণ্যগুলি সবদিক দিয়েই উত্তম। যেমন পাচ ওয়াক্তের নামায (আরবী) এবং (আরবী) মুসনাদে আহমাদে রয়েছেঃ হযরত উছমানের (রাঃ) গোলাম বর্ণনা করেছে। যে, একদা হযরত উছমান (রাঃ) তাঁর সঙ্গীদের সাথে বসেছিলেন। এমন সময় মুআযযিন হাজির হন। হযরত উছমান (রাঃ) তখন পানি চেয়ে পাঠান। তখন তার কাছে একটি বরতনে তিন পোয়ামত পানি আনয়ন করা হয়। তিনি ঐ পানিতে অযু করে বলেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমার এই অযুর মত অযু করে বলেছিলেনঃ “যে ব্যক্তি আমার এই অযুর মত অযু করে যুহরের নামায আদায় করবে, ফজর থেকে নিয়ে যুহর পর্যন্ত তার যত গুনাহ্ ছিল সব মাফ হয়ে যাবে। তারপর এইভাবে আসরের নামায পড়লে যুহর হতে আসার পর্যন্ত যত পাপ সব। মাফ হয়ে যাবে। এরপর অনুরূপভাবে মাগরিবের নামায পড়লে আসর ও মাগরিবের মধ্যবর্তী সময়ের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। তারপর ঐভাবেই যদি সে এশার নামায আদায় করে, তবে মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সমস্ত পাপ মোচন হয়ে যাবে। অতঃপর রাত্রে ঘুমিয়ে যাবার পর ভোরে উঠে ফজরের নামায যদি সে পড়ে নেয় তবে এশা থেকে নিয়ে ফজর পর্যন্ত মধ্যবর্তী সমস্ত গুনাহ তার ক্ষমা করে দেয়া হবে।” এটাই হচ্ছে এমন পুণ্য যা পাপসমূহ দূর করে দেয়।” জনগণ জিজ্ঞেস করলোঃ “হে উছমান (রাঃ)! এগুলি তো হলো পুণ্য, এখন (আরবী) কি তা আমাদেরকে বলে দিন!” তিনি উত্তরে বললেন- (আরবী) হচ্ছে নিম্ন লিখিত কালেমাগুলি পাঠ করাঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করছি, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে, আল্লাহ সবচেয়ে বড় ও মহান, আল্লাহ ছাড়া কারো কোন শক্তি ও ক্ষমতা নেই, যে আল্লাহ উচ্চ ও মহান।”

হযরত সাঈদ ইবনু মুসাইয়া (রঃ) বলেন যে, (আরবী) হচ্ছে হযরত সাঈদ ইবনু মুসাইয়াব তার ছাত্র হযরত আম্মারা’কে (রঃ) জিজ্ঞেস করেনঃ “আচ্ছা, বল তো, (আরবী) কি? তিনি উত্তরে বলেনঃ “নামায ও রোযা।” হযরত সাঈদ (রঃ) তখন বলেনঃ “তোমার জবাব সঠিক হয় নাই।” তাঁর ছাত্র বললেনঃ “যাকাত ও হজ্ব।” তিনি বললেনঃ “উত্তর এখনও ঠিক হয় নাই। শুনো, ওটা হচ্ছে নীচের পাঁচটি কালেমঃ (আরবী) হযরত ইবনু আব্বাসকে (রাঃ) এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি (আরবী) ছাড়া বাকী চারটি কালেমার কথা বলেন। হযরত হাসান (রঃ) ও হযরত কাদাতাও (রঃ) এই চারটি কালেমাকেই (আরবী) বলেছেন। ইমাম ইবনু জারীর (রঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ (আরবী) হচ্ছে এই কালেমাগুলি।” অন্য একটি রিওয়াইয়াতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) জনগণকে বলেনঃ তোমরা। বেশী করো।” তারা জিজ্ঞেস করলোঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! (আরবী) কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ (আরবী) হযরত সালিম ইবনু আবদিল্লাহর (রঃ) গোলাম হযরত আবদুল্লাহ ইবনু আবদির রহমান (রঃ) বলেনঃ আমাকে হযরত সা’লিম (রঃ) হযরত মুহাম্মদ ইবনু কা’ব কারাযীর (রঃ) কাছে কোন একটি কার্য উপলক্ষে প্রেরণ করেন। তিনি আমাকে বললেনঃ “তুমি সালিমকে (রঃ) বলে দেবে যে, তিনি যেন অমুক কবরের পার্শ্বে আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন। তার সাথে আমার কিছু কথা আছে। সেখানে ঐ দুজনের সাক্ষাৎ হয়। সালাম বিনিময়ের পর হযরত সালিম (রঃ) হযরত মুহাম্মদ ইবনু কা’ব কারাযীকে (রঃ) জিজ্ঞেস করেনঃ “আপনার মতে (আরবী) কি?” উত্তরে তিনি বলেনঃ (আরবী) “হচ্ছে এই কালেমাগুলি।” হযরত সালিম (রঃ) তখন তাকে বললেনঃ “এই শেষের কালেমাটি আপনি কখন থেকে বাড়িয়ে দিয়েছেন?” উত্তরে হযরত কারাযী (রঃ) বলেনঃ “সব সময়ই আমি এই কালেমাকে গণনা করে থাকি।” দু’বার বা তিনবার এই প্রশ্ন ও উত্তরের আদান-প্রদান হয়। অবশেষে হযরত মুহাম্মদ ইবনু কা’ব (রঃ) হযরত সালিমকে (রঃ) জিজ্ঞেস করেনঃ “আপনি কি এই কালেমাটিকে অস্বীকার করছেন?” জবাবে হযরত সা’লিম (রঃ) বলেনঃ “হাঁ, আমি অস্বীকারই করছি বটে।” তখন তিনি বলেনঃ হলে শুনুন! আমি হযরত আবু আইয়ুব আনসারীর (রাঃ) নিকট থেকে শুনেছি এবং তিনি রাসূলুল্লাহকে (সঃ) বলতে শুনেছেনঃ “যখন আমাকে মি’রাজ করানো হয় তখন আমি অকিাশে হযরত ইবরাহীমকে (আঃ) দেখতে পাই। তিনি হযরত জিবরাঈলকে (আঃ) জিজ্ঞেস করেনঃ “আপনার সাথে ইনি কে? তিনি জবাবে বলেনঃ “ইনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সঃ)। তিনি তখন আমাকে মারহাবা বলে সাদর সম্ভাষণ জানালেন এবং আমাকে বললেনঃ “আপনি আপনার উম্মতকে বলুন যে, তারা যেন জান্নাতে নিজেদের জন্যে বহু কিছুর বাগান তৈরী করেন। ওর মাটি পবিত্র এবং ওর যমীন খুবই প্রশস্ত।” আমি প্রশ্ন করলামঃ সেখানে বাগান তৈরীর উপায় কি?” জবাবে তিনি বললেনঃ “তারা যেন (আরবী) এই কালেমাটি খুব বেশী বেশী করে পাঠ করে।”

হযরত নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাত্রে এশার নামাযের পর রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমাদের নিকট আগমন করেন। আকাশের দিকে তাকিয়ে তিনি দৃষ্টি নীচের দিকে নামিয়ে দেন। আমরা ধারণা করলাম যে, হয়তো আকাশে নতুন কিছু ঘটেছে। অতঃপর তিনি বলেনঃ “আমার পরে মিথ্যাবাদী ও অত্যাচারী বাদশাহদের আবির্ভাব ঘটবে। যারা তাদের মিথ্যাকে সত্যায়িত করবে এবং তাদের জুলুমের কাজে তাদের পক্ষপাতিত্ব করবে তারা আমার অন্তর্ভুক্ত নয় এবং আমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত নই। আর যারা তাদের মিথ্যাকে সত্যায়িত করবে না এবং তাদের জুলুমের কাজে তাদের পক্ষপাতিত্ব করবে না তারা আমার অন্তর্ভুক্ত এবং আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত। হে জনমণ্ডলী! তোমরা জেনে রেখো যে, (আরবী) এই কালেমাগুলি হলো অর্থাৎ চিরস্থায়ী ও চির বিদ্যমান পুণ্য। (এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হয়েছে)

বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “বাঃ! বাঃ! এমন পাঁচটি কালেমা রয়েছে যেগুলি মীযানে বা দাড়িপাল্লায় খুবই ওজন সই হবে। সেগুলি হচ্ছেঃ (আরবী) এবং ঐ শিশু যার মৃত্যুতে তার পিতা ধৈর্য ধারণ করেছে ও পুরস্কার কামনা করেছে। বাঃ! বাঃ! পাঁচটি জিনিস এমন রয়েছে যে, যারা ঐ গুলির উপর বিশ্বাস রেখে আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ করবে তারা নিঃসন্দেহে জান্নাতী। সেগুলি হচ্ছে এই যে, তারা বিশ্বাস রাখবে কিয়ামত দিবসের উপর, জান্নাতের উপর, জাহান্নামের উপর, মৃত্যুর পর পুনর্জীবনের উপর এবং হিসাবের উপর।” (এ হাদীসটিও ইমাম আহমাদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)

বর্ণিত আছে যে, হযরত শাদ্দাদ ইবনু আউস (রাঃ) এক সফরে ছিলেন। কোন এক জায়গায় অবতরণ করে স্বীয় গোলামকে বলেনঃ “ছুরি আন, খেলা করি।”

হাসান ইবনু আতিয়া (রাঃ) বলেনঃ আমি তখন বললামঃ আপনি এটা কি কথা বললেন? জবাবে তিনি বললেনঃ “সত্যিই, আমি এটা ভুলই করেছি। জেনে রেখো, যে ইসলাম গ্রহণের পর থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত আমার মুখ দিয়ে এমন কোন একটি কথা বের করি নাই যা আমার জন্যে লাগাম হয়ে যায়, শুধু এই একটি কথা ছাড়া। সুতরাং তোমরা এটা মন থেকে মুছে ফেল এবং আমি এখন যা বলছি তা মনে রেখো। আমি রাসূলুল্লাহকে (সঃ) বলতে শুনেছিঃ “যখন মানুষ স্বর্ণ-রৌপ্য জমা করতে উঠেপড়ে লেগে যাবে; তখন তোমরা নিম্নের কালেমাগুলি খুব বেশী পাঠ করবেঃ

অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে নিজের কাজের উপর স্থিরতা, পুণ্য কাজের প্রতি দৃঢ় সংকল্প ও আপনার নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের তাওফীক প্রার্থনা করছি এবং উত্তমরূপে আপনার ইবাদত করার তাওফীক কামনা করছি। আপনার কাছে প্রার্থনা করছি যে, আপনি আমাকে প্রশান্ত অন্তর ও সত্যবাদী যবান দান করুন! আপনার জ্ঞানে যা ভাল আমি তাই কামনা করছি এবং আপনার জ্ঞানে যা মন্দ তার থেকে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি এমন মন্দ হতে আপনার নিকট তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি যা আপনি মন্দ বলে জানেন, নিশ্চয় আপনি অদৃশ্যের খবর খুব ভালভাবেই জানেন।” (এটাও ইমাম আহমদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)

হযরত সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) বলেনঃ “আহলে তায়েফের মধ্যে সর্বপ্রথম আমি নবীর (সঃ) খিদমতে হাযির হই। আমার বাড়ী হতে আমি সকাল সকালই বেরিয়ে পড়ি এবং আসরের সময় মিনায় পৌছে যাই। পাহাড়ের উপর চড়ি এবং নেমে আসি। তারপর রাসূলুল্লাহর (সঃ) নিকট হাযির হই এবং ইসলাম গ্রহণ করি। তিনি আমাকে সুরায়ে (আরবী) ও (আরবী) শিখিয়ে দেন এবং নিম্নের কালেমা গুলির তালীম দেনঃ (আরবী) এবং বলেনঃ “এগুলো হলো চিরস্থায়ী পুণ্য।”

এই সনদেই বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি রাত্রে উঠে অযু করে, কুল্লী করে, অতঃপর এক শ বার (আরবী) পাঠ করে তার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায়। শুধু কাউকে হত্যা করার অপরাধ মাফ হয় না।

হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, (আরবী) হলো আল্লাহ তাআলার যিক্র এবং নিম্নের কালেমাগুলিঃ (আরবী) আর রোযা, নামায, হজ্ব, সাদা গোলাম আযাদ করা, জিহাদ করা, সিলারহমী করা এবং সমস্ত পুণ্যের কাজ হচ্ছে (আরবী) বা চিরস্থায়ী পূণ্য। এগুলির সওয়াব জান্নাতবাসীদেরকে তাদের দুনিয়ায় জীবিত থাকা পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা পৌঁছাতে থাকবেন। বলা হয়েছে যে, পবিত্র কথাও এর অন্তর্ভুক্ত। হযরত আবদুর রহমান (রঃ) বলেন যে, সমস্ত সৎকাজই এর অন্তর্ভুক্ত। ইমাম ইবনু জারীরও (রঃ) এটাকেই পছন্দ করেছেন।

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-

*ক্ষনিকের জীবন : এ দৃশ্যের মােকাবেলায় বর্ণনা করা হচ্ছে সমগ্র ইহকালীন জীবনের জন্যে আরেকটা উদাহরণ। এখানেও দেখানাে হয়েছে যে, ‘দুনিয়ার জীবন ওই বাগানের মতােই নিতান্ত ক্ষুদ্র, নগণ্য ও স্থিতিশীল। ‘তাদের কাছে দুনিয়ার জীবনের একটা উদাহরণ দাও…'(আয়াত ৪৫) এ দৃশ্যটা অত্যন্ত সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে, যাতে শ্রোতার মনে ধ্বংসের ছাপ বসে যায়। পানি বর্ষিত হয় আকাশ থেকে তা কোথাও প্রবাহিত হয় না। তবে তা পৃথিবীর উদ্ভিদের সাথে মিশ্রিত হয়। এ দ্বারা উদ্ভিদ বাড়েও না, পরিপক্কও হয় না। বরং তা শুকনাে খড়ে পরিণত হয়, যাকে বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে যায়। এই তিনটে ক্ষুদ্র বাক্যের মধ্যেই জীবনের টেপ শেষ হয়ে যায় । দৃশ্যগুলাে অতি সংক্ষেপে উপস্থাপনের জন্যে ‘ফা’ অর্থাৎ অতপর অব্যয়টি কয়েকবার ব্যবহৃত হয়েছে। বলা হয়েছে, তা খড়কুটোয় পরিণত হয়ে যায় যা বাতাসে উড়িয়ে নেয়। ‘আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি, অতপর তার সাথে পৃথিবীর উদ্ভিদ মিশ্রিত হয়, অতপর এভাবে বুঝানাে হয়েছে যে, পৃথিবীর জীবনটা কতাে ক্ষুদ্র এবং কতাে নগণ্য। ক্ষণস্থায়ী জীবনের দৃশ্য তুলে ধরার পর আয়াতে ইসলামী আদর্শের মানদন্ডে দুনিয়ার জীবনের মূল্য ও আখেরাতের চিরস্থায়ী জীবনের মূল্যায়ন করা হয়েছে এভাবে, ‘ধনসম্পদ ও সন্তান সন্তুতি দুনিয়ার জীবনের শােভা। আর চিরস্থায়ী সৎ কর্মগুলাে তােমার প্রভুর কাছে প্রতিদানের দিক দিয়ে উত্তম ও আশার দিক দিয়ে উকৃষ্টতর।'(আয়াত ৪৬) বস্তুত সম্পদ ও সন্তান জীবনের শােভা বটে। আর ইসলাম মানুষকে পবিত্র জিনিসের সীমার মধ্যে শােভা উপভােগ করতে নিষেধ করে না। তবে দুনিয়ার এসব শােভা স্থায়ীত্বের মাপকাঠিতে যতােটুকু মূল্য পাওয়ার যোগ্য, ঠিক ততােটুকু মূল্যই দেয় তার চেয়ে বেশী নয়। সন্তান ও সম্পদ শােভা ঠিকই, কিন্তু মানদন্ড নয় যে, তা দিয়ে মানুষের মর্যাদা নির্ণয় করা যাবে কিংবা মানুষ তার ভিত্তিতে দুনিয়ার জীবনের সব কিছুকে মূল্যায়ন করবে। প্রকৃত মূল্য হলাে শাশ্বত সৎ কাজের, সৎ কথার ও ইবাদাতের। যেহেতু সম্পদ ও সন্তানকে ঘিরেই মানুষ দুনিয়ায় আশার জাল বুনে থাকে, তাই তাকে জানিয়ে দেয়া হলাে যে, শাশ্বত সৎ কাজগুলাে যদি সে আন্তরিকতার সাথে, উচ্চ আশা ও পরকালের উত্তম প্রতিদান লাভের আশায় করে, তবে ওগুলােই সওয়াব ও আশার দিক দিয়ে উত্তম। আল্লাহর সন্তুষ্টির ঐকান্তিক উদ্দেশ্যে সকাল সন্ধ্যা আল্লাহকে আহ্বানকারী নিষ্ঠাবান মােমেন বান্দাদের সাথে ধৈর্যধারণ করে অবস্থান করা ও তাদেরকে কোরায়শ নেতাদের পরামর্শে দূর করে দেয়ার যে আদেশ দেয়া হয়েছে। সেই আদেশকে এভাবে দুই বাগানের কাহিনীর সাথে, দুনিয়ার জীবন সংক্রান্ত উদাহরণের সাথে এবং সর্বশেষে ইহকালীন ও পরকালীন মানদন্ডের সাথে সমন্বিত করা হয়েছে। এ সবগুলাের মূল বক্তব্য একটাই, আকীদা ও আদর্শের দাড়িপাল্লায় মেপে যাবতীয় মূল্যবােধ ও মানদন্ডকে সংশােধন করতে হবে। কোরআনের শৈল্পিক সময়ের মূলনীতি অনুযায়ী সূরার সমগ্র আলােচনাকেই সুসমন্বিত করা হয়েছে।

তাফসীরে‌ হাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
৪৫-৪৬ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে উম্মতের যারা নাবীর ওয়ারিশ হবে তাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, মানুষের কাছে দুনিয়ার প্রকৃত চিত্র তুলে ধর। মানুষের চোখের সামনে যখন দুনিয়া ও আখিরাতের চিত্র ফুটে উঠবে তখন সে বুঝতে পারবে, প্রকৃতপক্ষে দুনিয়া আখিরাতের তুলনায় কত নগণ্য। অত্র আয়াতে পার্থিব জীবনের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন: পার্থিব জীবনটা হল তেমন, যেমন আকাশ থেকে আমি পানি দিলাম, সে পানি দ্বারা জমিন জীবিত হয়ে সবুজ-শ্যামলে ভরে গেল, অতঃপর এমন একটা সময় আসল যখন সে সবুজ আর সবুজ থাকল না বরং পীত আকার ধারণ করে নষ্ট হয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল। দুনিয়ার জীবনটা তো এরকমই। এক সময় ছোট বাচ্চা ছিলে, সবাই দেখে আদর করত, আস্তে আস্তে বড় হলে, এক পর্যায়ে যুবক হলে। অনেক শক্তি ও ক্ষমতা ছিল কিন্তু কয়েকটি দিন অতিবাহিত হলেই আবার সেই ছোট বাচ্চার মত দুর্বল হয়ে গেলে, একাকি চলতে পারো না। অবশেষে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হল। এটা হল দুুনিয়ার জীবন। কিন্তু আখিরাত, সেখানে কোনদিন মৃত্যু হবে না। দুনিয়ার জীবনের এরূপ দৃষ্টান্ত সূরা ইউনুসের ২৪ নং আয়াতেও রয়েছে।

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি হল পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য। এরাও এক সময় থাকবে না। শুধুমাত্র অবশিষ্ট থাকবে আল্লাহ তা‘আলার নিকট যা আছে তা অর্থাৎ সৎ আমল। সূরা হাদীদের ২০ নং আয়াতেও এরূপ সুন্দর বর্ণনা রয়েছে।

সুতরাং আল্লাহ তা‘আলার নিকট যা আছে তা ব্যতীত সকল কিছু এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে। কোন কিছুই তাদের আর অবশিষ্ট থাকবে না। তবে সন্তান-সন্ততি যদি সৎ হয় তাহলে মৃত্যুর পর এরূপ সৎ সন্তান উপকারে আসবে, যা সৎ আমলেরই অন্তর্ভুক্ত। তাই আমাদের উচিত সৎ আমল করা আর অসৎ আমল বর্জন করা।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. পার্থিব জীবন ক্ষণিক সময় ব্যতীত কিছুই নয়, মারা গেলেই পার্থিব জীবন শেষ।
২. সৎ আমল ব্যতীত ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি আল্লাহর নিকট কোনই উপকারে আসবে না।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন‌্য বলেছেন :-

# তিনি জীবনও দান করেন আবার মৃত্যুও। তিনি উত্থান ঘটান আবার পতনও ঘটান। তাঁর নির্দেশে বসন্ত আসে এবং পাতা ঝরা শীত মওসুমও তাঁর নির্দেশেই আসে। আজ যদি তুমি সচ্ছল ও আয়েশ-আরামের জীবন যাপন করে থাকো তাহলে এ অহংকারে মত্ত হয়ে থেকো না যে, এ অবস্থার পরিবর্তন নেই। যে আল্লাহর হুকুমে তুমি এসব কিছু লাভ করেছো তাঁরই হুকুমে এসব কিছু তোমার কাছে থেকে ছিনিয়েও নেয়া যেতে পারে।

 

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#886)
Sura:18
Sura: Kahaf
Ayat: 45-46
[ اَلْمَالُ وَ الْبَنُوْنَ زِیْنَةُ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا١ۚ
Wealth and children are the adornment of the life of this world.]

www.motaher21.net

18:45

وَ اضۡرِبۡ لَہُمۡ مَّثَلَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا کَمَآءٍ اَنۡزَلۡنٰہُ مِنَ السَّمَآءِ فَاخۡتَلَطَ بِہٖ نَبَاتُ الۡاَرۡضِ فَاَصۡبَحَ ہَشِیۡمًا تَذۡرُوۡہُ الرِّیٰحُ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ مُّقۡتَدِرًا ﴿۴۵﴾

And present to them the example of the life of this world, [its being] like rain which We send down from the sky, and the vegetation of the earth mingles with it and [then] it becomes dry remnants, scattered by the winds. And Allah is ever, over all things, Perfect in Ability.

18:46

اَلۡمَالُ وَ الۡبَنُوۡنَ زِیۡنَۃُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ وَ الۡبٰقِیٰتُ الصّٰلِحٰتُ خَیۡرٌ عِنۡدَ رَبِّکَ ثَوَابًا وَّ خَیۡرٌ اَمَلًا ﴿۴۶﴾

Wealth and children are [but] adornment of the worldly life. But the enduring good deeds are better to your Lord for reward and better for [one’s] hope.

The Parable of the Worldly Life

Allah says:

وَاضْرِبْ لَهُم

And mention,

O Muhammad, to the people,

مَّثَلَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا

the parable of the worldly life,

its transient nature and how it will eventually cease and come to an end.

كَمَاء أَنزَلْنَاهُ مِنَ السَّمَاء فَاخْتَلَطَ بِهِ نَبَاتُ الاَْرْضِ

it is like the water which We send down from the sky, and the vegetation of the earth mingles with it,

It mingles with the seeds that are in the earth, so they grow and become good, producing bright, fresh flowers, then after that,

فَأَصْبَحَ هَشِيمًا

it becomes dry and broken pieces,

withered up,

تَذْرُوهُ الرِّيَاحُ

(which the winds scatter.) tossing them about right and left.

وَكَانَ اللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ مُّقْتَدِرًا

And Allah is able to do everything.

He has the power to do this and that.

In the Qur’an Allah often gives parables like this of the life of this world, as He says in Surah Yunus,

إِنَّمَا مَثَلُ الْحَيَوةِ الدُّنْيَا كَمَأءٍ أَنزَلْنَاهُ مِنَ السَّمَأءِ فَاخْتَلَطَ بِهِ نَبَاتُ الاٌّرْضِ مِمَّا يَأْكُلُ النَّاسُ وَالاٌّنْعَـمُ

The parable of the worldly life is but that of water which We send down from the sky so by it arises the intermingled produce of the earth of which men and cattle eat…. (10:24)

and in Surah Az-Zumar:

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ أَنزَلَ مِنَ السَّمَأءِ مَأءً فَسَلَكَهُ يَنَابِيعَ فِى الاٌّرْضِ ثُمَّ يُخْرِجُ بِهِ زَرْعاً مُّخْتَلِفاً أَلْوَانُهُ

See you not that Allah sends down water from the sky, and causes it to penetrate the earth, then out from it comes crops of different colors. (39:21)

and in Surah Al-Hadid:

اعْلَمُواْ أَنَّمَا الْحَيَوةُ الدُّنْيَا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَزِينَةٌ وَتَفَاخُرٌ بَيْنَكُمْ وَتَكَاثُرٌ فِى الاٌّمْوَلِ وَالاٌّوْلْـدِ كَمَثَلِ غَيْثٍ أَعْجَبَ الْكُفَّارَ نَبَاتُهُ

Know that the life of this world is only play and amusement, pomp and mutual boasting among you, and rivalry in respect of wealth and children. (It is) like the parable of vegetation after rain, thereof the growth is pleasing to the tiller… (57:20)

and in the Sahih Hadith:

الدُّنْيَا حُلْوَةٌ خَضِرَة

This world is sweet and green.
Between Wealth and Good Deeds

Allah says

 

 

الْمَالُ وَالْبَنُونَ زِينَةُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا

Wealth and children are the adornment of the life of this world.

This is like the Ayah:

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَتِ مِنَ النِّسَأءِ وَالْبَنِينَ وَالْقَنَـطِيرِ الْمُقَنطَرَةِ مِنَ الذَّهَبِ

Beautified for men is the love of things they covet; women, children, vaulted hoards of gold… (3:14)

Allah says:

إِنَّمَأ أَمْوَلُكُمْ وَأَوْلَـدُكُمْ فِتْنَةٌ وَاللَّهُ عِنْدَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ

Your wealth and your children are only a trial, whereas Allah! With Him is a great reward (Paradise). (64:15)

turning towards Allah and worshipping Him is better for you than keeping busy with them, and accumulating wealth for them and going to extremes in feeling pity and compassion for them.

Allah says:

وَالْبَاقِيَاتُ الصَّالِحَاتُ خَيْرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَخَيْرٌ أَمَلًا

But the good righteous deeds that last, are better with your Lord for reward and better for hope.

Ibn Abbas, Sa`id bin Jubayr and others among the Salaf said that;

the good righteous deeds that last are the five daily prayers.

Ata’ bin Abi Rabah and Sa`id bin Jubayr narrated from Ibn Abbas,

“The good righteous deeds that last are
Subhan Allah (glory be to Allah)’,
Al-Hamdu Lillah (praise be to Allah)’,
La ilaha illallah (there is none worthy of worship except Allah)’, and
Allahu Akbar (Allah is Most Great).'”

The Commander of the faithful, Uthman bin Affan was questioned,

“Which are the good righteous deeds that last”

He replied,

“They are:
La ilaha illallah,
Subhan Allah,
Al-Hamdu Lillah,
Allahu Akbar and
La hawla wa la quwwata illa billah hil-`Aliyil-`Azim (there is no strength and no power except with Allah the Exalted, the Almighty).”‘

This was recorded by Imam Ahmad.

Imam Ahmad also recorded from a freed slave of the Messenger of Allah that he said:

بَخٍ بَخٍ لِخَمْسٍ مَا أَثْقَلَهُنَّ فِي الْمِيزَانِ

لَاا إِلَهَ إِلاَّ اللهُ

وَاللهُ أَكْبَرُ

وَسُبْحَانَ اللهِ

وَالْحَمْدُ للهِ

وَالْوَلَدُ الصَّالِحُ يُتَوَفَّى فَيَحْتَسِبُهُ وَالِدُهُ

وَقَالَ بَخٍ بَخٍ لِخَمْسٍ مَنْ لَقِيَ اللهَ مُسْتَيْقِنًا بِهِنَّ دَخَلَ الْجَنَّةَ

يُوْمِنُ بِاللهِ

وَالْيَوْمِ الاْاخِرِ

وَبِالْجَنَّةِ وَالنَّارِ

وَبِالْبَعْثِ بَعْدَ الْمَوْتِ

وَبِالْحِسَاب

Well done! Well done for five things! (How heavy they will weigh in the balance!

“La ilaha illallah,
Allahu Akbar,
Subhan Allah, and
Al-Hamdu Lillah,” and

a righteous son who dies and his parents seek the reward of Allah.

And he said:(Well done! Well done for five things! Whoever meets Allah believing in them, he will enter Paradise; if he believes in:

Allah,

the Last Day,

Paradise and Hell,

resurrection after death, and

the Reckoning.

وَالْبَاقِيَاتُ الصَّالِحَاتُ

the good righteous deeds that last,

Ali bin Abi Talhah reported that Ibn Abbas said,

“This is the celebration of the remembrance of Allah, saying;
La ilaha illallah,
Allahu Akbar,
Subhan Allah,
Al-Hamdu Lillah,
Tabarak Allah,
La hawla wa la quwwata illa billah,
Astaghfirallah,
Sallallahu `ala Rasul-Allah’, and

fasting, prayer, Hajj, Sadaqah (charity), freeing slaves, Jihad, maintaining ties of kinship, and all other good deeds.

These are the righteous good deeds that last, which will remain in Paradise for those who do them for as long as heaven and earth remain.”

Al-Awfi reported from Ibn Abbas:

“They are good words.”

Abdur-Rahman bin Zayd bin Aslam said,

“They are all righteous deeds.”

This was also the view chosen by Ibn Jarir, may Allah have mercy on him

For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran

Leave a Reply