(বই#৮৯৯) সূরা:- মরিয়ম। সুরা:১৯ ৫১-৫৩ নং আয়াত:- [وَ اذۡکُرۡ فِی الۡکِتٰبِ مُوۡسٰۤی এই কিতাবে মূসার কথা বর্ণনা কর, ] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৮৯৯)
সূরা:- মরিয়ম।
সুরা:১৯
৫১-৫৩ নং আয়াত:-
[وَ اذۡکُرۡ فِی الۡکِتٰبِ مُوۡسٰۤی
এই কিতাবে মূসার কথা বর্ণনা কর, ]
www.motaher21.net
১৯:৫১
وَ اذْكُرْ فِی الْكِتٰبِ مُوْسٰۤى١٘ اِنَّهٗ كَانَ مُخْلَصًا وَّ كَانَ رَسُوْلًا نَّبِیًّا

আর এ কিতাবে মূসার কথা স্মরণ করো। সে ছিল এক বাছাই করা ব্যক্তি এবং ছিল রাসূল-নবী।
১৯:৫২
وَ نَادَیْنٰهُ مِنْ جَانِبِ الطُّوْرِ الْاَیْمَنِ وَ قَرَّبْنٰهُ نَجِیًّا

আমি তাকে তূরের ডান দিক থেকে ডাকলাম এবং গোপন আলাপের মাধ্যমে তাকে নৈকট্য দান করলাম।
১৯:৫৩
وَ وَهَبْنَا لَهٗ مِنْ رَّحْمَتِنَاۤ اَخَاهُ هٰرُوْنَ نَبِیًّا

আর নিজ অনুগ্রহে তার ভাই হারুণকে নবী বানিয়ে তাকে সাহায্যকারী হিসেবে দিলাম।

৫১-৫৩ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে‌ হাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

৫১-৫৫ নং আয়াতের তাফসীর:

(وَاذْکُرْ فِی الْکِتٰبِ مُوْسٰٓی… وَوَھَبْنَا لَھ۫ مِنْ رَّحْمَتِنَآ اَخَاھُ ھٰرُوْنَ نَبِیًّا)

উক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (عليه السلام)-কে তুর পর্বতের দক্ষিণ দিক হতে আহ্বান করেছিলেন এবং তাকে নাবী ও রাসূল হিসেবে মনোনিত করেছিলেন আর তাঁর ভাই হারূনকে সাথে সহযোগী হিসেবে দিয়েছিলেন সে সম্পর্কে আলোচনা পেশ করেছেন। এ সম্পর্কে সূরা ত্বা-হা-তে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ইনশা-আল্লাহ তা‘আলা।

(وَاذْکُرْ فِی الْکِتٰبِ اِسْمٰعِیْلَ…. وَکَانَ عِنْدَ رَبِّھ۪ مَرْضِیًّا)

অত্র আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (عليه السلام)-এর সন্তান ইসমাঈল (عليه السلام) সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। ইসমাঈল (عليه السلام) ছিলেন পিতা ইবরাহীম (عليه السلام) এর জ্যৈষ্ঠ পুত্র এবং মা হাজেরার গর্ভজাত একমাত্র সন্তান। ঐ সময়ে ইবরাহীমের বয়স ছিল ৮৬ বছর। (আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ১/১৭৯)

শিশু বয়সে তাঁকে ও তাঁর মাকে পিতা ইবরাহীম (عليه السلام) আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে মক্কার জনশূন্য ভূমিতে রেখে আসেন। সেখানে ইবরাহীমের দু‘আর বরকতে আল্লাহ তা‘আলার বিশেষ অনুগ্রহে যমযম কূপের সৃষ্টি হয়। অতঃপর ইয়ামেনের ব্যবসায়ী কাফেলা বুন জুরহুম গোত্র কর্তৃক মা হাজেরার আবেদনক্রমে সেখানে আবাদ শুরু হয়। ১৪ বছর বয়সে আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে মক্কার অনতিদূরে মিনা প্রাপ্তরে সংঘটিত হয় বিশ্ব ইতিহাসের বিস্ময়কর ত্যাগ ও কুরবানীর ঘটনা। পিতা ইবরাহীম কর্তৃক পুত্র ইসলামঈকে স্বহস্তে কুরবানীর উক্ত ঘটনায় শতবর্ষীয় পিতা ইবরাহীমের ভূমিকা যাই থাকুক না কেন চৌদ্দ বছরের তরুণ ইসমাঈলের ঈমান ও আত্মত্যাগের একমাত্র নমুনা ছিলেন তিনি নিজেই। তিনি স্বেছায় নিজেকে সমর্পণ না করলে পিতার পক্ষে পুত্র কুরবানীর ঘটনা ঘটানো সম্ভব হত কি-না সন্দেহ। তাই ঐ সময় নাবী না হলেও নাবীপুত্র ইসমাঈলের আল্লাহ তা‘আলাভক্তি ও দৃঢ় ঈমানের পবিচয় ফুটে উঠেছিল তাঁর কথায় ও কর্মে। এরপর পিতার সহযোগী হিসেবে তিনি কাবা গৃহ নির্মাণে শরীক হন এবং কাবা নির্মাণ শেষে পিতা-পুত্র মিলে যে প্রার্থনা করেন, আল্লাহ তা‘আলা তা পবিত্র কুরআনে বর্ণনা করে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন। (সূরা বাকারাহ ২:১২৭-১২৯).

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন‌্য বলেছেন :-
#মূলে مُخْلَصٌ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর মানে হচ্ছে, একান্ত করে নেয়া।” অর্থাৎ হযরত মূসা এমন এক ব্যক্তি ছিলেন যাকে আল্লাহ‌ একান্তভাবে নিজের করে নিয়েছিলেন।

# “রাসূল” মানে প্রেরিত। এই মানের দিক দিয়ে আরবী ভাষায় দূত, পয়গম্বর, বার্তাবাহক ও রাজদূতের জন্য এ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। আর কুরআনের এ শব্দটি এমন সব ফেরেশতার জন্যও ব্যবহার করা হয়েছে যাদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ কাজে নিযুক্ত করা হয় অথবা এমন সব মানুষকে এ নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে যাদেরকে আল্লাহ‌ সৃষ্টির কাছে নিজের বাণী পৌঁছাবার জন্য নিযুক্ত করেন।

“নবী” শব্দটির অর্থের ব্যাপারে অভিধানবিদদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ একে نَبَا শব্দ থেকে গঠিত বলেন। এক্ষেত্রে এর অর্থ হয় খবর। এই মূল অর্থের দিক দিয়ে নবী মানে হয় “খবর প্রদানকারী।” আবার কেউ কেউ বলেন, نَبُو ধাতু থেকে নবী শব্দের উৎপত্তি। এর অর্থ উন্নতি ও উচ্চতা। এ অর্থের দিক দিয়ে এর মানে হয় “উন্নত মর্যাদা” ও “সুউচ্চ অবস্থান।” আযহারী কিসায়ী থেকে তৃতীয় একটি উক্তি উদ্ধৃত করেছেন। সেটি হচ্ছে এই যে, এ শব্দটি মূলত نَبِى থেকে এসেছে। এর মানে হচ্ছে পথ। আর নবীদেরকে নবী এজন্য বলা হয়েছে যে, তাঁরা হচ্ছেন আল্লাহর দিকে যাবার পথ।

কাজেই কোন ব্যক্তিকে “রাসূল নবী” বলার অর্থ হবে “উন্নত মর্যাদাশালী পয়গম্বর অথবা”আল্লাহর পক্ষ থেকে খবর দানকারী পয়গম্বর” কিংবা “এমন পয়গম্বর যিনি আল্লাহর পথ বাতলে দেন।”

কুরআন মজীদে এ দু’টি শব্দ সাধারণত একই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই আমরা দেখি একই ব্যক্তিকে কোথাও শুধু নবী বলা হয়েছে এবং কোথাও শুধু রাসূল বলা হয়েছে আবার কোথাও রসূল ও নবী এক সাথে বলা হয়েছে। কিন্তু কোন কোন জায়গায় রসূল ও নবী শব্দ দু’টি এমনভাবেও ব্যবহৃত হয়েছে যা থেকে প্রকাশ হয় যে, এ উভয়ের মধ্যে মর্যাদা বা কাজের ধরনের দিক দিয়ে কোন পারিভাষিক পার্থক্য রয়েছে। যেমন সূরা হজ্জের ৭ রুকূ’তে) বলা হয়েছেঃ وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُولٍ وَلَا نَبِيٍّ إِلَّا……………………….. ()

“আমি তোমার আগে এমন কোন রসূলও পাঠাইনি এবং এমন কোন নবী পাঠাইনি, যে………….”

একথাগুলো পরিষ্কার প্রকাশ করছে যে, রসূল ও নবী দু‍‍’টি আলাদা পরিভাষা এবং এদের মধ্যে নিশ্চয়ই কোন আভ্যন্তরীণ পার্থক্য আছে। এরই ভিত্তিতে এ পার্থক্যের ধরনটা কি এ নিয়ে তাফসীরকারদের মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কিন্তু আসলে চূড়ান্ত ও অভ্রান্ত দলীল প্রমাণের সাহায্যে কেউই রসূল ও নবীর পৃথক মর্যাদা চিন্তিত করতে পারেননি। বড়জোর এখানে এতটুকু কথা নিশ্চয়তা সহকারে বলা যেতে পারে যে, রসূল শব্দটি নবীর তুলনায় বিশিষ্টতা সম্পন্ন। অর্থাৎ প্রত্যেক রসূল নবী হন কিন্তু প্রত্যেক নবী রসূল হন না। অন্যকথায়, নবীদের মধ্যে রসূল শব্দটি এমন সব নবীর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। একটি হাদীসও এ বক্তব্য সমর্থন করে। হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন ইমাম আহমদ হযরত আবু উমামাহ থেকে এবং হাকেম হযরত আবু যার (রা.) থেকে। এতে বলা হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রসূলদের সংখ্যার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, ৩১৩ বা ৩১৫ এবং নবীদের সংখ্যা জিজ্ঞেস করা হলে বলেন, এক লাখ চব্বিশ হাজার। যদিও হাদিসটির সনদ দুর্বল কিন্তু কয়েকটি সনদের মাধ্যমে একই কথার বর্ণনা কথাটির দুর্বলতা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।

#তূর পাহাড়ের ডান দিক থেকে বলতে পূর্ব পাদদেশ বুঝানো হয়েছে। যেহেতু হযরত মূসা (আ) মাদয়ান থেকে মিসর যাবার পথে এ তূর পাহাড়ের দক্ষিণ পাশের পথ দিয়ে এগিয়ে চলছিলেন এবং দক্ষিণ দিক থেকে কোন ব্যক্তি দূরকে দেখলে তার ডান দিক হবে পূর্ব এবং বাম দিক হবে পশ্চিম, তাই হযরত মূসার সাথে সম্পর্কিত করে তূরের পূর্ব পাদদেশকে “ডান দিক” বলা হয়েছে। অন্যথায় একথা সুস্পষ্ট যে, পাহাড়ের কোন ডানদিক বা বামদিক হয় না।
# অন্যান্য নবীদের ওপর যে পদ্ধতিতে অহী আসতো তা ছিল এই যে, একটি আওয়াজ আসতো অথবা ফেরেশতারা পয়গাম শুনাতেন এবং নবীগণ তা শুনতেন। কিন্তু মূসা আলাইহিস সালামের সাথে একটি বিশেষ ব্যবস্থা অবলম্বিত হয়। আল্লাহ‌ নিজে তাঁর সাথে কথা বলেন। আল্লাহ‌ ও বান্দার মধ্যে এমনভাবে কথাবর্তা হতো যেমন-দু’জন লোক সামনাসামনি কথা বলে থাকে। দৃষ্টান্ত স্বরূপ সূরা ‘তা-হা’য় উদ্ধৃত কথোপকথনের বরাত দেয়াই যথেষ্ট মনে করি। বাইবেলেও হযরত মূসার এই বৈশিষ্ট্যটির উল্লেখ এভাবেই করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছেঃ “যেমন কোন ব্যক্তি কথা বলে তার বন্ধুর সাথে, ঠিক তেমনি খোদাবন্দ মূসার সাথে সামনাসামনি কথা বলতেন।” (যাত্রা ৩৩: ১১)

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-
*হযরত মুসা(আ.)-এর ঘটনা : এরপর ইবরাহীম(আ.)-এর বংশে আগত আম্বিয়ায়ে কেরামের বর্ণনা পর্যায়ক্রমে এগিয়ে চলেছে। এদের মধ্য থেকে একটি সিড়ি আলাদা হয়ে গিয়ে ইসহাক(আ.)-এর বংশে জন্ম গ্রহণ করেছেন মূসা এবং হারুন(আ.)। এরশাদ হচ্ছে, ‘আর এ মহান কিতাবের মধ্যে স্মরণ করাে মূসাকে। সে ছিলাে বড়ই মােখলেস (নিষ্ঠাবান) এবং একই সাথে রসূল ও নবী, আর আমি তার সাথে গােপন ও রহস্যপূর্ণ কিছু বিষয় আলােচনা করার জন্যে পবিত্র তূর পর্বতের কাছে তাকে ডেকেছিলাম। আর আমার মেহেরবানীর দান হিসাবে তার ভাই হারুনকেও তার সাথে নবী বানিয়ে (তার সাথী করে) দিয়েছিলাম।’ এখানে মূসা(আ.)-এর বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হচ্ছে যে তিনি ছিলেন বড়ই নিষ্ঠাবান (মােখলেস), যাকে আল্লাহ তায়ালা বড় আদর করে কাছে টেনে নিয়েছিলেন এবং একমাত্র তার জন্যেই দাওয়াতী কাজ করার প্রেরণা তার মধ্যে আল্লাহ তায়ালা নিজেই দান করেছিলেন। তিনি রসূল ছিলেন নবীও ছিলেন। আর রসূল তাে হচ্ছে সেই ব্যক্তি যিনি নবীদের মধ্যে বিশেষভাবে আল্লাহর আহবানকে কার্যকরভাবে মানুষের কাছে পেীছে দেয়ার জন্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন। নবীরা সেটা পৌছে দেয়ার জন্যে একই মর্যাদায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নন তারা ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহর কাছে থেকে সঠিক পথপ্রাপ্ত। যাদেরকে দেখে মানুষ অনুপ্রাণিত হয়। বনী ইসরাঈল জাতির মধ্যে এই রকম সঠিক পথপ্রাপ্ত ভালাে মানুষ বহু ছিলেন, যারা মূসা(আ.)-এর আদর্শকে নিজেদের জীবনে যথাযথভাবে বহন করে মানুষের সামনে আদর্শ হয়ে ফুটে থাকতেন এবং আল্লাহর কাছ থেকে যে তাওরাত কিতাব মূসা(আ.)-এর ওপর নাযিল হয়েছিলাে তার বিধানকে তারা চালু রাখতেন। এ কথারই বহন করছে নীচের আয়াতটি। ‘আমি নাযিল করেছি তাওরাত- ত্যর মধ্যে রয়েছে সঠিক পথের দিশা (হেদায়াত) ও সঠিক পথকে বুঝার জন্যে সুস্পষ্ট যুক্তি (নুর আলাে) যার দ্বারা ওই নবীরা শাসনকার্য পরিচালনা করতাে, যারা নিজেরা আল্লাহর নির্দেশাবলী পুরােপুরি মেনে চলতাে, আর পরিচালনা করতাে তারাও যারা নিবেদিত প্রাণ মুসলমান (দরবেশ) ছিলাে এবং ওই সমাজের বিজ্ঞ আলেমরাও তাদেরকে সেইসব বিধান দ্বারা পরিচালনা করতাে যা তারা আল্লাহর কিতাব থেকে শিখে রেখেছিলাে, আর তারা নিজেরাও ওইসব হুকুম আহকাম পালনকারী ছিলাে।’ এর পর পবিত্র তুর পর্বতের কাছে থেকে মূসা(আ.)-কে আল্লাহ তায়ালা নিজে আহ্বান জানানাের কারণে, তার মর্যাদা বৃদ্ধির কথা জানানাে হচ্ছে, আল্লাহহর সাথে তাঁর প্রিয় মুসলিম বান্দা মুসা(আ.)-এর কথােপকথন অতি সংগােপনে অনুষ্ঠিত হয়েছিলাে যা আমাদের কারাে পক্ষে জানা সম্ভব নয়, আমরা জানি না কিভাবে এ কথােপকথন হয়েছিলাে এবং মূসা(আ.) কিভাবে এ কথাগুলো বুঝেছিলেন এসব কথা কি কোনাে আওয়ায ছিলাে, যা তার কান শুনতে পেয়েছিলাে অথবা এগুলাে ছিলাে কি এমন কোনাে কথা যা গােটা মানব জাতি শুনতে পেয়েছিলাে, আর আমরা এও জানি না যে মূসা(আ.) এ মানব দেহ নিয়ে বিশ্ব-স্রষ্টা চিরন্তন আল্লাহর কথা কিভাবে শুনতে পেয়েছিলেন। তবে আমরা বিশ্বাস করি যে অবশ্যই এসব কথােপকথােন হয়েছিলাে, আর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন চাইলে, তার পক্ষে, তার কোনাে বান্দার কাছে তার বার্তা পৌঁছে দেয়াটা মােটেই কোনাে দুরূহ ব্যাপার নয়। তাঁর উপায়সমূহের মধ্য থেকে যে কোনাে এক উপায়ে তিনি তা পৌছে দিতে পারেন। তবে মানুষের সকল বৈশিষ্ট্য নিয়ে অবশ্যই মুসা(আ.) ছিলেন একজন পরিপূর্ণ মানুষ, অপরদিকে ছিলাে সুমহান আল্লাহর মর্যাদাসিক্ত কথা তার প্রিয় নবীর কাছে পৌছে দেয়ার ব্যাপারটি । হাঁ এতে বিস্মিত হওয়ার কিছুই নেই, কারণ এর আগে, মানবতার জন্ম লগ্নে, আল্লাহর তরফ থেকে রূহ ফুকে দেয়ার ফলেই তো মাটির একটি কায়া মানুষের অস্তিত্ব লাভ করেছিলাে। অপরদিকে, মূসা(আ.)-এর আবেদনে হারুন(আ.)-কে আল্লাহ তায়ালা মেহেরবানী করে যে তার সংগী ও সহযােগী বানিয়ে দিয়েছিলেন, এখানে সে কথাটিও উল্লখ করা হয়েছে। এরশাদ হচ্ছে, ‘আর আমার ভাই হারুন সে আমার থেকেও স্পষ্টভাষী, সুতরাং হে পাক পরওয়ারদেগার, আমার সাহায্যকারী হিসাবে তাকে আমার সাথে পাঠিয়ে দাও যাতে করে সে আমার কথার সত্যতার সাক্ষ্য দিতে পারে, আমার খুব ভয় হয়, ওরা আমাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করার জন্যে প্রাণান্ত চেষ্টা করবে।’ আর সূরাটির সবটুকুর মধ্যে আল্লাহর রহমতের যে ছায়া বিরাজ করছে তারই মাধ্যমে সুশীতল ছায়া দান করেন সকল ছায়ার মালিক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বয়ং নিজে। এরপর সূরাটির আলােচ্য প্রসংগ ফিরে যাচ্ছে এ সূরার সর্বশেষ অধ্যায় ইবরাহীম(আ.)-এর বংশধরদের বর্ণনার দিকে।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৫১-৫৩ নং আয়াতের তাফসীর:

স্বীয় খলীলের (আঃ) বর্ণনার পর আল্লাহর স্বীয় কালীমের (অর্থাৎ মূসা কালীমুল্লাহর (আঃ) বর্ণনা শুরু করলেন।

(আরবী) এর দ্বিতীয় পঠন (আরবী) ও রয়েছে। অর্থাৎ হযরত মূসা (আঃ)। আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর ইবাদতকারী ছিলেন।

বর্ণিত আছে যে, হযরত ঈসাকে (আঃ) তাঁর অনুসারী হাওয়ারীরা প্রশ্ন করেছিলঃ “(হে রূহুল্লাহ (আঃ)! বলুন তো, ‘মুখলিস’ ব্যক্তি কে?” উত্তরে তিনি বলেছিলেনঃ “যে শুধু মাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে আমল করে। লোকে তার প্রশংসা করুক এটা তার উদ্দেশ্য থাকে না।” অন্য কিরআত (আরবী) রয়েছে। অর্থাৎ হযরত মূসা (আঃ) আল্লাহ তাআলার মনোনীত ও নির্বাচিত বান্দা ছিলেন। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি তোমাকে লোকদের উপর মনোনীত করেছি।”(৭:১৪৪) হযরত মূসা (আঃ) আল্লাহ তাআলার নবী ও রাসূল ছিলেন। পাঁচজন বড় মর্যাদাসম্পন্ন ও স্থির প্রতিজ্ঞ রাসূলদের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন। অর্থাৎ নূহ (আঃ), ইবরাহীম (আঃ), মূসা (আঃ), ঈসা (আঃ) এবং মুহাম্মদ (সঃ)। তাদের উপর এবং অন্যান্য সমস্ত ব্বীর উপর আল্লাহর দুরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক।

মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তাকে আমি আহবান করেছিলাম তুর পর্বতের দক্ষিণ দিক হতে এবং আমি গূঢ়তত্ত্ব আলোচনারত অবস্থায় তাকে নিকটবর্তী করেছিলাম। এটা ঐ সময়ের ঘটনা, যখন তিনি আগুনের সন্ধানে বের হয়ে তূর পাহাড়ের দিকে আগুন দেখতে পান এবং সেই দিকে অগ্রসর হন। হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) প্রভৃতি গুরুজন বলেনঃ তিনি এতো নিকটবর্তী হন যে, কলমের শব্দ শুনতে পান। এর দ্বারা তাওরাত লিখার কলমকে বুঝানো হয়েছে। সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, তিনি আকাশে যান এবং আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলার সাথে কথা বলেন। বর্ণিত আছে যে, তার সাথে আল্লাহ তাআলার যে সব কথোপকথন হয়েছিল তার মধ্যে এটাও ছিলঃ “হে মূসা (আঃ)! যখন আমি তোমার অন্তরকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী ও তোমার যবানকে আমার স্মরণকারী বানিয়ে দেবো, আর তোমাকে এমন স্ত্রী দান করবো যে পুণ্যের কাজে তোমার সহায়িকা হয়, তখন তুমি জানবে যে, তোমাকে আমি কোন কল্যাণই দান করতে ছাড়ি নাই। আর যাকে একটি জিনিস দান করি না, সে যেন মনে করে নেয় যে, তাকে আমি কোন কল্যাণই দান করি নাই। মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি মূসার (আঃ) উপর আর একটি অনুগ্রহ এই করেছিলাম যে, তার ভাই হারূণকে (আঃ) নবী করে তার সাহায্যার্থে তার সঙ্গী করেছিলাম। এটা সে আকাংখাও করেছিল ও প্রার্থনা জানিয়েছিল। যেমন মহান আল্লাহ তাঁর প্রার্থনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমার ভ্রাতা হারূণ (আঃ) আমা অপেক্ষা বাগ্মী; অতএব, তাকে আমার সাহায্যকারীরূপে প্রেরণ করুন!” (২৮:৩৪) অন্য আয়াতে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে মূসা (আঃ)! তোমার প্রার্থনা কবূল করা হলো।” (২০:৩৬) তার দু’আর শব্দ (আরবী) (২৬:১৩) এরূপও রয়েছে। অর্থাৎ “হারূণকেও (আঃ) রাসল বানিয়ে দিন।” বর্ণিত আছে যে, এর চেয়ে বড় প্রার্থনা এবং এরচেয়ে বড় সুপারিশ দুনিয়ায় কেউই কারো জন্যে করে নাই। হযরত হারূণ (আঃ) হযরত মূসার (আঃ) চেয়ে বড় ছিলেন। তাঁদের উভয়ের উপর আল্লাহর দুরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক।

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#899)
Sura:19
Sura: Maryam.
Ayat: 51-53
[وَ اذۡکُرۡ فِی الۡکِتٰبِ مُوۡسٰۤی

And mention in the Book, Musa. ]
www.motaher21.net

19:51

وَ اذۡکُرۡ فِی الۡکِتٰبِ مُوۡسٰۤی ۫ اِنَّہٗ کَانَ مُخۡلَصًا وَّ کَانَ رَسُوۡلًا نَّبِیًّا ﴿۵۱﴾

And mention in the Book, Moses. Indeed, he was chosen, and he was a messenger and a prophet.

 

Mentioning Musa and Harun

After Allah had mentioned Ibrahim, the Friend of Allah, and commended him, he next mentioned Al-Kalim (the one spoken to by Allah directly).

Allah said,

وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ مُوسَى إِنَّهُ كَانَ مُخْلَصًا

And mention in the Book, Musa. Verily, he was Mukhlasan,

Ath-Thawri reported from Abdul-Aziz bin Rafi`, from Abu Lubabah that he said,

“The Disciples (of `Isa) said, `O Spirit of Allah, inform us about the one who is Mukhlis (purely devoted) to Allah.’

He said, `That is one who does a deed solely for Allah and he does not like for the people to praise him.”‘

Others recited the word as Mukhlas,

which means that he was chosen.

This is as Allah says,

إِنْى اصْطَفَيْتُكَ عَلَى النَّاسِ

Verily, I have chosen you above men. (7:144)

Concerning Allah’s statement,

وَكَانَ رَسُولاً نَّبِيًّا

and he was a Messenger, (and) a Prophet.

Allah combined these two descriptions for him. For verily, he was one of the greatest Messengers and one of the five Messengers of Strong Will. They are;

Nuh,

Ibrahim,

Musa,

`Isa and

Muhammad.

May the blessings of Allah be upon them and all of the Prophets.

Allah said

19:52

وَ نَادَیۡنٰہُ مِنۡ جَانِبِ الطُّوۡرِ الۡاَیۡمَنِ وَ قَرَّبۡنٰہُ نَجِیًّا ﴿۵۲﴾

And We called him from the side of the mount at [his] right and brought him near, confiding [to him].

 

وَنَادَيْنَاهُ مِن جَانِبِ الطُّورِ

And We called him from the side of the Tur.

means Mount.

الاَْيْمَنِ

right.

It was on the right side of Musa when he went seeking a burning wood from that fire. He saw its glow in the distance, so he set out towards it and found it on the right side of the mountain from his direction, at the edge of the valley that he was in. This is when Allah, the Exalted, spoke to him and called out to him.

وَقَرَّبْنَاهُ نَجِيًّا

and made him draw near to Us for a talk with him.

Allah summoned him to come near and He conversed Ayah with him.

Concerning His statement,

وَوَهَبْنَا لَهُ مِن رَّحْمَتِنَا أَخَاهُ هَارُونَ نَبِيًّا
19:53

وَ وَہَبۡنَا لَہٗ مِنۡ رَّحۡمَتِنَاۤ اَخَاہُ ہٰرُوۡنَ نَبِیًّا ﴿۵۳﴾

And We gave him out of Our mercy his brother Aaron as a prophet.

 

And We granted him his brother Harun, (also) a Prophet, out of Our mercy.

This means, “We responded to his request and his plea on behalf of his brother and We made him a Prophet as well.”

This is as Allah says in another Ayah,

وَأَخِى هَـرُونُ هُوَ أَفْصَحُ مِنِّى لِسَاناً فَأَرْسِلْهِ مَعِىَ رِدْءاً يُصَدِّقُنِى إِنِّى أَخَافُ أَن يُكَذِّبُونِ

And my brother Harun he is more eloquent in speech than me:so send him with me as a helper to confirm me. Verily, I fear that they will belie me. (28:34)

Also, Allah said,

قَدْ أُوتِيتَ سُوْلَكَ يمُوسَى

(Allah said:) “You are granted your request, O Musa.” (20:36)

He also said,

وَيَضِيقُ صَدْرِى وَلَا يَنطَلِقُ لِسَانِى فَأَرْسِلْ إِلَى هَـرُونَ

وَلَهُمْ عَلَىَّ ذَنبٌ فَأَخَافُ أَن يَقْتُلُونِ

So send for Harun. And they have a charge of crime against me, and I fear they will kill me. (26:13-14)

Because of this, some of the Salaf (predecessors) said,

“No one in this life pleaded on behalf of someone else more than Musa pleaded for his brother to be a Prophet.”

Allah, the Exalted said,

وَوَهَبْنَا لَهُ مِن رَّحْمَتِنَا أَخَاهُ هَارُونَ نَبِيًّا

And We granted him his brother Harun, (also) a Prophet, out of Our mercy

For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran

Leave a Reply