أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৯০০)
সূরা:- মরিয়ম।
সুরা:১৯
৫৪-৫৫ নং আয়াত:-
[وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِسْمَاعِيلَ
এই কিতাবে ইসমাঈলের কথা বর্ণনা কর,]
www.motaher21.net
১৯:৫৪
وَ اذۡکُرۡ فِی الۡکِتٰبِ اِسۡمٰعِیۡلَ ۫ اِنَّہٗ کَانَ صَادِقَ الۡوَعۡدِ وَ کَانَ رَسُوۡلًا نَّبِیًّا ﴿ۚ۵۴﴾
এই কিতাবে ইসমাঈলের কথা বর্ণনা কর, সে ছিল একজন প্রতিশ্রুতি পালনকারী এবং সে ছিল রসূল, নবী।
১৯:৫৫
وَ کَانَ یَاۡمُرُ اَہۡلَہٗ بِالصَّلٰوۃِ وَ الزَّکٰوۃِ ۪ وَ کَانَ عِنۡدَ رَبِّہٖ مَرۡضِیًّا ﴿۵۵﴾
সে তার পরিজনবর্গকে নামায ও যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল তার প্রতিপালকের নিকট সন্তোষভাজন।
৫৪-৫৫ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে হাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
(وَاذْکُرْ فِی الْکِتٰبِ اِسْمٰعِیْلَ…. وَکَانَ عِنْدَ رَبِّھ۪ مَرْضِیًّا)
অত্র আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (عليه السلام)-এর সন্তান ইসমাঈল (عليه السلام) সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। ইসমাঈল (عليه السلام) ছিলেন পিতা ইবরাহীম (عليه السلام) এর জ্যৈষ্ঠ পুত্র এবং মা হাজেরার গর্ভজাত একমাত্র সন্তান। ঐ সময়ে ইবরাহীমের বয়স ছিল ৮৬ বছর। (আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ১/১৭৯)
শিশু বয়সে তাঁকে ও তাঁর মাকে পিতা ইবরাহীম (عليه السلام) আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে মক্কার জনশূন্য ভূমিতে রেখে আসেন। সেখানে ইবরাহীমের দু‘আর বরকতে আল্লাহ তা‘আলার বিশেষ অনুগ্রহে যমযম কূপের সৃষ্টি হয়। অতঃপর ইয়ামেনের ব্যবসায়ী কাফেলা বুন জুরহুম গোত্র কর্তৃক মা হাজেরার আবেদনক্রমে সেখানে আবাদ শুরু হয়। ১৪ বছর বয়সে আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে মক্কার অনতিদূরে মিনা প্রাপ্তরে সংঘটিত হয় বিশ্ব ইতিহাসের বিস্ময়কর ত্যাগ ও কুরবানীর ঘটনা। পিতা ইবরাহীম কর্তৃক পুত্র ইসলামঈকে স্বহস্তে কুরবানীর উক্ত ঘটনায় শতবর্ষীয় পিতা ইবরাহীমের ভূমিকা যাই থাকুক না কেন চৌদ্দ বছরের তরুণ ইসমাঈলের ঈমান ও আত্মত্যাগের একমাত্র নমুনা ছিলেন তিনি নিজেই। তিনি স্বেছায় নিজেকে সমর্পণ না করলে পিতার পক্ষে পুত্র কুরবানীর ঘটনা ঘটানো সম্ভব হত কি-না সন্দেহ। তাই ঐ সময় নাবী না হলেও নাবীপুত্র ইসমাঈলের আল্লাহ তা‘আলাভক্তি ও দৃঢ় ঈমানের পবিচয় ফুটে উঠেছিল তাঁর কথায় ও কর্মে। এরপর পিতার সহযোগী হিসেবে তিনি কাবা গৃহ নির্মাণে শরীক হন এবং কাবা নির্মাণ শেষে পিতা-পুত্র মিলে যে প্রার্থনা করেন, আল্লাহ তা‘আলা তা পবিত্র কুরআনে বর্ণনা করে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন। (সূরা বাকারাহ ২:১২৭-১২৯)
এভাবে ইসমাঈল স্বীয় পিতার ন্যায় বিশ্বের সমস্ত মু’মিন হৃদয়ে আসন লাভ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রশংসায় অত্র আয়াতে উল্লেখ করে বলেন, ‘তিনি ছিলেন ওয়াদা রক্ষায় সত্যাশ্রয়ী’ যা তিনি জবহের পূর্বে পিতাকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন,
(یٰٓاَبَتِ افْعَلْ مَا تُؤْمَرُﺑ سَتَجِدُنِیْٓ اِنْ شَا۬ئَ اللہُ مِنَ الصّٰبِرِیْنَ)
“হে আমার বাবা! আপনাকে যে আদেশ করা হয়েছে তা পূর্ণ করুন। ইন্শাআল্লাহ, আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।” (সূরা সাফফাত ৩৭:১০২)
অতঃপর কাবা নির্মাণকালে পিতা-পুত্রের দু‘আর বরকতে প্রথমতঃ কাবা গৃহে যেমন হাজার হাজার বছর ধরে চলছে তাওয়াফ ও সালাত এবং হাজ্জ ও ওমরাহ, তেমনি নেমেছে ঈমানদার মানুষের ঢল। দ্বিতীয়তঃ সেখানে সারা পৃথিবী থেকে সর্বদা আমদানী হচ্ছে ফল-ফলাদীর বিপুল সম্ভার। তাঁদের দু‘আর তৃতীয় অংশ মক্কার জনপদে নাবী প্রেরণের বিষয়টি বাস্তবায়িত হয় তাঁদের মৃত্যুর প্রায় আড়াই হাজার বছর পরে ইসমাঈলের বংশে শেষনাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আবির্ভাবের মাধ্যমে।
তাঁর এ সকল কাজের জন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট সন্তোষজনক পাত্র ছিলেন। আর তিনি ছিলেন একজন নাবী ও রাসূল। সুতরাং আমাদেরও উচিত ইসমাঈল (عليه السلام)-এর ন্যায় নিজ পরিবারকে সালাতসহ অন্যান্য সৎ কাজের প্রতি উৎসাহিত করা।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ওয়াদা করলে তা পূর্ণ করতে হবে। ভঙ্গ করা যাবে না।
২. নিজে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করতে হবে এবং পরিবারসহ মানুষকে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করার দিকে আহ্বান করতে হবে।
ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-
*হযরত ইসমাঈল(আ.)-এর ঘটনা : অতপর আরববাসীদের পরম শ্রদ্ধেয় পিতৃকুল ইসমাঈল(আ.)-এর বর্ণনা আসছে। এরশাদ হচ্ছে, ‘আর স্মরণ করাে এ মহান কিতাবের মধ্যে ইসমাঈলকে, অবশ্যই সে ছিলাে ওয়াদাকে সত্যে পরিণতকারী, একজন রসূল ও নবী। সে তার পরিবারকে নামায কায়েম করার ও যাকাত আদায় করার হুকুম দিতাে এবং সে ছিলাে তার পরওয়ারদেগারের নিকট পরম প্রিয় ও সন্তোষপ্রাপ্ত।’ এখানে ইসমাঈল(আ.)-এর গুণাবলীর দিকে বিশেষভাবে ইংগিত করতে গিয়ে বলা হচ্ছে যে, তিনি তার ওয়াদাকে সত্যে পরিণতকারী ছিলেন, আর যেহেতু ওয়াদা পূরণ করা প্রত্যেক নবী ও প্রত্যেক সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তির অনন্য বৈশিষ্ট্য, এজন্যে বলা হচ্ছে ইসমাঈল(আ.)-এর এ বেশিষ্ট্যের বহিপ্রকাশ ঘটেছিলাে অভূতপূর্ব এক ঘটনার মধ্য দিয়ে। এ কথা তাে সর্বজনবিদিত যে তিনি ছিলেন একজন রসূল। অতএব, প্রথম সারির সম্মানিত আরবদের কাছে তাঁর কথা ছিলাে অধিক গ্রহণযােগ্য, যেহেতু তিনি ছিলেন সকল আরববাসীর পূর্ব পুরুষ। অবশ্য এটাও সত্য যে, মুহাম্মদ(সা.)-এর রিসালাত পাওয়ার পূর্বে আরববাসীদের মধ্যে অনেকে একত্ববাদী ছিলাে, সুতরাং এতে বেশ বুঝা যাচ্ছে যে ইসমাঈল(আ.)-এর অনুসারীদের মধ্য থেকে কিছুসংখ্যক ব্যক্তি তখনও রয়ে গিয়েছিলাে যারা তার শিক্ষাকে একেবারে ভুলে যায়নি। প্রসংগক্রমে এখানে একথাও উল্লেখ করা যায় যে, ইসমাঈল(আ.)-এর আকীদার বহিপ্রকাশ ছিলাে নামায ও যাকাত। এই দুটি আনুষ্ঠানিক এবাদাত তার সম্পর্কে তার বশংধরদের মধ্যে কিছু না কিছু চেতনা তখনও অবশিষ্ট রয়ে গিয়েছিলাে। তারা জানতো ও স্বীকারও করতাে যে, তিনি তাঁর পরিবারবর্গকে এবং তার অনুসারীদেরকে নামায কায়েম ও যাকাত আদায়ের জন্যে নির্দেশ দিতেন এবং তাদের কাছ থেকে একথাও প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ইসমাঈল(আ.) তার রবের কাছে বড়ই প্রিয় ও সন্তোষজন ছিলেন। আর যেসব বৈশিষ্ট্য এ সূরার মধ্যে উল্লেখিত হয়েছে সেগুলাের মধ্যে ইসমাঈল(আ.)-এর প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এবং আল্লাহর এ সন্তোষ তার দয়া ও রহমতরূপে ঝরে পড়েছে তার ও তার বংশধরদের ওপর । সন্তোষ ও দয়া প্রদর্শনের গুণের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৫৪-৫৫ নং আয়াতের তাফসীর:
এখানে আল্লাহ তাআলা ইসমাঈল ইবনু ইবরাহীমের (আঃ) প্রশংসামূলক বর্ণনা দিচ্ছেন। তিনি সারা হিজাযের পিতা। তিনি যে নযর বা মানত মানতেন এবং যে ইবাদত করার ইচ্ছা করতেন তা তিনি পুরো করতেন। প্রত্যেক হক তিনি আদায় করতেন। একটি লোককে তিনি একদা ওয়াদা দিয়ে বলেনঃ “আমি তোমার সাথে অমুক জায়গায় সাক্ষাৎ করবো। তুমি সেখানে পৌঁছবে।” ওয়াদা মুতাবেক হযরত ইসমাঈল (আঃ) সেখানে হাজির হন। কিন্তু ঐ লোকটি আসে নাই। তার অপেক্ষায় তিনি সেখানে অবস্থান করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত পূর্ণ একদিন ও একরাত অতিবাহিত হয়ে যায়। পরে লোকটির ঐ কথা স্মরণ হলে সে সেখানে এসে দেখে যে, তিনি তার জন্যে অপেক্ষা করতে রয়েছেন। সে জিজ্ঞেস করেঃ “আপনি কি কাল থেকেই। এখানে অবস্থান করছেন? উত্তরে তিনি বলেনঃ “যখন ওয়াদা ছিল তখন অবস্থান না করে কি পারি?” লোকটি তখন ওর পেশ করে বলেঃ “জনাব ক্ষমা করবেন, আমি একেবারে ভুলেই গিয়েছিলাম।” সুফিয়ান সাওরী (রঃ) বলেন যে, তার অপেক্ষায় সেখানে তার পূর্ণ একটি বছর কেটে যায়। ইবনু শূযিব (রঃ) বলেন যে, সেখানে তিনি বাসস্থান বানিয়ে নিয়ে ছিলেন। আবুল হামসা’ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “নুবওয়াতের পূর্বে আমি রাসূলুল্লাহর (সঃ) সাথে কিছু বাণিজ্যিক লেন দেন করেছিলাম। আমি চলে যাই এবং তাঁকে বলে যাইঃ আপনি এখানেই অবস্থান করুন, আমি এখনই ফিরে আসছি। তারপর আমি সম্পূর্ণরূপে বেখেয়াল হয়ে যাই। এরপর ঐদিন কেটে যায় এবং ঐ রাতও কেটে যায়। তৃতীয় দিনে আমার ঐকথা স্মরণ হলো। আমি গিয়ে দেখি যে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। তিনি আমাকে দেখে শুধু এইটুকু বলেনঃ “তুমি আমাকে কষ্টে ফেলে দিয়েছে। আমি তিন দিন থেকে এখানেই তোমার জন্যে অপেক্ষা করছি।” (এটা ইমাম আবু দাউদ (রঃ) তাঁর সুনান গ্রন্থে এবং আবু বকর মুহাম্মদ ইবনু জাফর খারায়েতী (রঃ) তার মাকারিমূল আখলাক’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন) এটাও বলা হয়েছে যে, এটা তাঁর ঐ ওয়াদার বর্ণনা যা তিনি তাঁর যবাহর সময় তাঁর পিতার সাথে করেছিলেন। তিনি বলেছিলেনঃ “আব্বা! আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন।” সত্যিই তিনি তার ঐ ওয়াদা পুরো করেছিলেন এবং ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে কাজ করেছিলেন। ওয়াদা পুরো করা একটা ভাল কাজ এবং ওয়াদার খেলাফ করা অত্যন্ত খারাপ কাজ। কুরআন কারীমে ঘোষিত হচ্ছেঃ “হে মু’মিনগণ! এইরূপ কথা কেন বলছো যা (নিজেরা) কর না? আল্লাহর নিকট এটা অত্যন্ত অসন্তুষ্টির কারণ যে, এইরূপ কথা বলা যা (নিজেরা) কর না।”
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “মুনাফিকের লক্ষণ তিনটি। যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে এবং কিছু আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে। এসব আচরণ হতে মু’মিন মুক্ত ও পবিত্র হয়ে থাকে। ওয়াদার এই সত্যতাই হযরত ইসমাঈলের (আঃ) মধ্যে ছিল এবং এই পবিত্র বিশেষণ হযরত মুহাম্মদ মুস্তফার (সঃ) মধ্যেও ছিল। কারো সাথে তিনি কখনো ওয়াদা খেলাফ করেননি। একদা তিনি আবুল আস ইবনু রাবীর (রাঃ)। প্রশংসা করতে গিয়ে বলেনঃ “সে আমার সাথে যে কথা বলেছে সত্য বলেছে এবং আমার সাথে যে ওয়াদা করেছে তা পূর্ণ করেছে।” হযরত সিদ্দীকে আকবর (রাঃ) খিলাফতে নববীর (সঃ) উপর কদম রেখেই ঘোষণা করেনঃ “নবী (সঃ) কারো সাথে কোন ওয়াদা করে থাকলে আমি পুরো করার জন্যে প্রস্তুত আছি। আর রাসূলুল্লাহর (সঃ) উপর কারো কোন ঋণ থাকলে আমি তা আদায় করার জন্যে মওজুদ আছি।” তখন হযরত জাবির ইবনু আবদিল্লাহ (রাঃ) আর্য করেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমার সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, বাহরাইন হতে মাল আসলে তিনি আমাকে তিন লপ ভরে মাল দিবেন।” হযরত সিদ্দীকে আকবরের (রাঃ) নিকট বাাইন হতে যখন মাল আসলো তখন হযরত জাবিরকে ডেকে পাঠিয়ে বলেনঃ “হাতের দু’তালু ভরে মাল উঠিয়ে নাও।” এভাবে উঠিয়ে নিলে দেখা যায় যে, পাচশ দিরহাম (রৌপ্য মুদ্রা) উঠিয়ে এসেছে। তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) তাকে বলেনঃ “তিন লপের পনের শ’ দিরহাম নিয়ে নাও।”
অতঃপর আল্লাহ তাআলা বলেছেন যে, হযরত ইসমাঈল (আঃ) রাসূল ও নবী ছিলেন। অথচ হযরত ইসহাকের (আঃ) শুধু নবী হওয়ার কথা বলেছেন। এর দ্বারা ভাই-এর উপর হযরত ইসমাঈলের (আঃ) ফযীলত প্রমাণিত হচ্ছে। সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “ইবরাহীমের (আঃ) সন্তানদের মধ্যে আল্লাহ তাআলা হযরত ইসমাঈলকে (আঃ) পছন্দ করেছেন। তারপর তার আরো প্রশংসা করা হচ্ছে যে, তিনি আল্লাহ তাআলার আনুগত্যের উপর ধৈর্যশীল ছিলেন এবং নিজের পরিবারের লোকদেরকেও এই হুকুমই দিতে থাকতেন। এই হুকুমই আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবীকেও (সঃ) দিয়েছেন। তিনি বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তুমি তোমার পরিবারবর্গকে নামাযের হুকুম করতে থাকো এবং নিজেও ওর উপর দৃঢ়তার সাথে কাজ কারো। (২০:১৩২)
অন্য আয়াতে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিজনদেরকে সেই অগ্নি হতে রক্ষা করো যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে কঠোর স্বভাব, শক্তিশালী ফেরেশতারা (নিয়োজিত রয়েছে, তারা কোন বিষয়ে আল্লাহর নাফরমানী করে না, যা তাদেরকে আদেশ করেন, আর তাদেরকে যা আদেশ করা হয় তারা (তৎক্ষণাৎ) তা পালন করে। (৬৬:৬) সুতরাং মু’মিনদেরকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে, তারা যেন নিজেদের পরিবারবর্গকে ও আত্মীয় স্বজনকে ভাল কাজের আদেশ করে ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। তারা যেন তাদেরকে শিক্ষাহীনভাবে ছেড়ে না দেয়, অন্যথায় তারা জাহান্নামের গ্রাস হয়ে যাবে অর্থাৎ জাহান্নাম তাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে।
হাদীসে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “ঐ ব্যক্তির উপর আল্লাহ করুণা বর্ষণ করুন, যে রাত্রে (ঘুম থেকে জেগে) ওঠে এবং (তাহাজ্জুদের) নামায পড়ে। অতঃপর তার স্ত্রীকে জাগিয়ে তোলে এবং সে উঠতে অস্বীকার করলে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়। আল্লাহ ঐ স্ত্রী লোকের উপর দয়া করুন, যে রাত্রে (ঘুম হতে জেগে) ওঠে এবং (তাহাজ্জুদের) নামায পড়ে। অতঃপর তার স্বামীকে জাগ্রত করে এবং সে উঠতে অস্বীকার করলে তার চেহারায় পানি ছিটিয়ে দেয়।” (এ হাদীসটি ইমাম আবু দাউদ (রঃ) ও ইমাম ইবনু মাজাহ (রঃ) তাখরীজ করেছেন)
হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) ও হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেন, “যখন মানুষ রাত্রে ঘুম হতে জেগে ওঠে এবং তার স্ত্রীকেও জাগ্রত করে, অতঃপর তারা দু’রাকাআত নামায পড়ে নেয়, তখন আল্লাহর যিক্রকারী ও যিকরকারিণী পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে তাদের নাম লিখে নেয়া হয়।” (এহাদীসটি ইমাম আবু দাউদ (রঃ), ইমাম নাসায়ী (রঃ) ও ইমাম ইবনু মাজাহ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#900)
Sura:19
Sura: Maryam.
Ayat: 54-55
[وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِسْمَاعِيلَ
And mention in the Book, Ishmael.]
www.motaher21.net
19:54
وَ اذۡکُرۡ فِی الۡکِتٰبِ اِسۡمٰعِیۡلَ ۫ اِنَّہٗ کَانَ صَادِقَ الۡوَعۡدِ وَ کَانَ رَسُوۡلًا نَّبِیًّا ﴿ۚ۵۴﴾
And mention in the Book, Ishmael. Indeed, he was true to his promise, and he was a messenger and a prophet.
Mentioning Ismail
وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِسْمَاعِيلَ إِنَّهُ كَانَ صَادِقَ الْوَعْدِ
And mention in the Book, Ismail. Verily, he was true to what he promised,
Here Allah has commended Ismail, the son of Ibrahim, the Friend of Allah. He (Ismail) is the father of all of the Arabs of the Hijaz because he was true to what he promised.
Ibn Jurayj said,
“He did not make any promise to his Lord, except that he fulfilled it.”
He never obligated himself to do any act of worship with a vow, except that he fulfilled it and carried it out, giving it its full due.
Some said,
صَادِقَ الْوَعْدِ
((he was) true to what he promised),
“This was said about him because he said to his father,
سَتَجِدُنِي إِن شَاء اللَّهُ مِنَ الصَّابِرِينَ
(If Allah wills you will find me of the patient), (37:102). So he was truthful in that.”
Being true to one’s promise is one of the praiseworthy characteristics, just as breaking one’s promise is of the detested characteristics.
Allah, the Exalted, says,
يأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُواْ لِمَ تَقُولُونَ مَا لاأَ تَفْعَلُونَ
كَبُرَ مَقْتاً عِندَ اللَّهِ أَن تَقُولُواْ مَا لَا تَفْعَلُونَ
O you who believe! Why do you say that which you do not do! Most hateful it is with Allah that you say that which you do not do. (61:2-3)
The Messenger of Allah said,
ايَةُ الْمُنَافِقِ ثَلَثٌ
إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ
وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ
وَإِذَا ايْتُمِنَ خَان
The sign of the hypocrite is three things.
When he speaks, he lies;
when he promises, he breaks his promise; and
when he is entrusted with something, he is disloyal to his trust.
Thus, if these are the characteristics of the hypocrites, then behaving contrary to these is a characteristic of the true believer. For this reason, Allah commended His servant and Messenger Ismail, for he was true to his promise.
Likewise, the Messenger of Allah was true to his promise. He did not promise anyone anything, except that he fulfilled his promise to that person. He also commended Abu Al-`As bin Ar-Rabi, the husband of his daughter Zaynab, by saying,
حَدَّثَنِي فَصَدَقَنِي وَوَعَدَنِي فَوَفَى لِي
He spoke to me and he told me the truth, and he promised me and he fulfilled his promise to me.
When the Prophet died, the Khalifah (his successor), Abu Bakr As-Siddiq said,
“Whoever received any promise from the Messenger of Allah or was owed any debt by him, then let him come to me and I will fulfill it on his behalf.”
So Jabir bin Abdullah came and related that the Messenger of Allah said,
لَوْ قَدْ جَاءَ مَالُ الْبَحْرَينِ أَعْطَيْتُكَ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا
If the wealth of Bahrain comes (to me), then I would give you such and such and such.
This meant that he would fill his hands with wealth.
Therefore, when the wealth of Bahrain came (to them), Abu Bakr commanded Jabir to come and fill his hands from that wealth. Then, he commanded him to do so again, until he collected five hundred Dirhams.
Then, Abu Bakr gave him its double along with it. (i.e. one thousand extra Dirhams).
Concerning Allah’s statement,
وَكَانَ رَسُولاً نَّبِيًّا
and he was a Messenger, (and) a Prophet.
In this is a proof of Ismail’s favored status over his brother, Ishaq.
Ishaq was only described as being a Prophet, but Ismail was described with both Prophethood and Messengership.
It is confirmed in Sahih Muslim that the Messenger of Allah said,
إِنَّ اللهَ اصْطَفَى مِنْ وَلَدِ إِبْرَاهِيمَ إِسْمَاعِيل
Verily, Allah chose Ismail from the sons of Ibrahim…
Then, Imam Muslim mentions the rest of the Hadith in its entirety.
However, this statement proves the correctness of what we have said.
Allah said,
وَكَانَ يَأْمُرُ أَهْلَهُ بِالصَّلَةِ وَالزَّكَاةِ
وَكَانَ عِندَ رَبِّهِ مَرْضِيًّا
19:55
وَ کَانَ یَاۡمُرُ اَہۡلَہٗ بِالصَّلٰوۃِ وَ الزَّکٰوۃِ ۪ وَ کَانَ عِنۡدَ رَبِّہٖ مَرۡضِیًّا ﴿۵۵﴾
And he used to enjoin on his people prayer and zakah and was to his Lord pleasing.
And he would enjoin on his family and his people the Salah and the Zakah, and his Lord was pleased with him.
This is also a beautiful form of praise, a commendable quality, and and upright characteristic. He was commanded in this way because of his persistence in obedience of his Lord, and enjoining his family to do so.
This is as Allah said to His Messenger,
وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلوةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا
And enjoin the Salah on your family, and be patient with them. (20:132)
Also, Allah, the Exalted, said,
يأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُواْ قُواْ أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَاراً وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَـيِكَةٌ غِلأَظٌ شِدَادٌ لاأَّ يَعْصُونَ اللَّهَ مَأ أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُوْمَرُونَ
O you who believe! Protect yourselves and your families against a Fire (Hell) whose fuel is men and stones, over which are (appointed) angels stern (and) severe, who disobey not, (from executing) the commands they receive from Allah, but do that which they are commanded. (66:6)
This means to command them to do good, forbid them from evil and do not neglect them. If you do so, and they obey your command, the Fire (of Hell) will not devour them on the Day of Resurrection.
It has been reported in a Hadith from Abu Hurayrah that the Messenger of Allah said,
رَحِمَ اللهُ رَجُلً قَامَ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّى وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ فَإِنْ أَبَتْ نَضَحَ فِي وَجْهِهَا الْمَاءَ
رَحِمَ اللهُ امْرَأَةً قَامَتْ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّتْ وَأَيْقَظَتْ زَوْجَهَا فَإِنْ أَبَى نَضَحَتْ فِي وَجْهِهِ الْمَاء
May Allah have mercy upon a man who gets up at night to pray and he wakes his wife. If she refuses to get up, he sprinkles water in her face.
May Allah have mercy upon a woman who gets up at night to pray and she wakes her husband. If he refuses to get up, she sprinkles water in his face.
This Hadith was recorded by Abu Dawud and Ibn Majah
For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran