أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৯০৫)
সূরা:- মরিয়ম।
সুরা:১৯
৮১- ৮৭ নং আয়াত:-
[ لَاا يَمْلِكُونَ الشَّفَاعَةَ
কারো সুপারিশ করবার ক্ষমতা থাকবে না।…]
www.motaher21.net
১৯:৮১
وَ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ اٰلِهَةً لِّیَكُوْنُوْا لَهُمْ عِزًّاۙ
এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে নিজেদের কিছু খোদা বানিয়ে রেখেছে, যাতে তারা এদের পৃষ্ঠপোষক হয়।
১৯:৮২
كَلَّا١ؕ سَیَكْفُرُوْنَ بِعِبَادَتِهِمْ وَ یَكُوْنُوْنَ عَلَیْهِمْ ضِدًّا۠
কেউ পৃষ্ঠপোষক হবে না। তারা সবাই এদের ইবাদতের কথা অস্বীকার করবে৫০ এবং উল্টো এদের বিরোধী হয়ে পড়বে।
১৯:৮৩
اَلَمْ تَرَ اَنَّاۤ اَرْسَلْنَا الشَّیٰطِیْنَ عَلَى الْكٰفِرِیْنَ تَؤُزُّهُمْ اَزًّاۙ
তুমি কি দেখো না আমি এ সত্য অস্বীকারকারীদের উপর শয়তানদের ছেড়ে রেখেছি, যারা এদেরকে (সত্য বিরোধিতায়) খুব বেশী করে প্ররোচনা দিচ্ছে?
১৯:৮৪
فَلَا تَعْجَلْ عَلَیْهِمْ١ؕ اِنَّمَا نَعُدُّ لَهُمْ عَدًّاۚ
বেশ, তাহলে এখন এদের উপর আযাব নাযিল করার জন্য অস্থির হয়ো না, আমি এদের দিন গণনা করছি।
১৯:৮৫
یَوْمَ نَحْشُرُ الْمُتَّقِیْنَ اِلَى الرَّحْمٰنِ وَفْدًاۙ
সেদিনটি অচিরেই আসবে যেদিন মুত্তাকীদেরকে মেহমান হিসেবে রহমানের সামনে পেশ করবো।
১৯:৮৬
وَّ نَسُوْقُ الْمُجْرِمِیْنَ اِلٰى جَهَنَّمَ وِرْدًاۘ
এবং অপরাধীদেরকে পিপাসার্ত পশুর মতো জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবো।
১৯:৮৭
لَا یَمْلِكُوْنَ الشَّفَاعَةَ اِلَّا مَنِ اتَّخَذَ عِنْدَ الرَّحْمٰنِ عَهْدًاۘ
সে সময় যে রহমানের কাছ থেকে পরোয়ানা হাসিল করেছে তার ছাড়া আর কারো সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকবে না।
৮১- ৮৭ নং আয়াতের তাফসীর:
ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-
এরপর কাফের ও শিরকের বৈশিষ্ট্যগুলাের পর্যালােচনা অব্যাহত রয়েছে, ‘তারা আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্যান্য উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করলাে যাতে তারা তাদের সম্মানকারী হয়।'(আয়াত ৮১-৮৭) অর্থাৎ আল্লাহর আয়াতগুলােকে অস্বীকারকারী এইসব লােক আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্যদেরকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করে তাদের কাছ থেকে সম্মান, সাহায্য ও বিজয় লাভের উদ্দেশ্যে, তাদের মধ্যে কেউ ফেরেশতাদেরকে, কেউবা জ্বিনদেরকে পূজা করে তাদের কাছ থেকে সাহায্য ও শক্তি লাভের আশায়। অথচ সে আশা কখনো পূর্ণ হবার নয়। কেননা জ্বিনেরা ও ফেরেশতারা তাদের পূজা উপাসনাকে প্রত্যাখ্যান করবে, তার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করবে এবং আল্লাহর কাছে এ সবের দায় দায়িত্বও অস্বীকার করবে এবং তারা তাদের বিরােধী হয়ে যাবে, অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দান ও তাদের দায় দায়িত্ব অস্বীকার করার মাধ্যমে তাদের বিরােধী হয়ে যাবে। শয়তানদের গােষ্ঠী মানুষকে পাপাচারে লিপ্ত হবার প্ররােচনা দিয়ে থাকে। তাদের ওপর শয়তানদের আধিপত্য বিস্তৃত থাকে এবং তাদের ব্যাপারে ইবলীসের অবাধ ক্ষমতা লাভের পর থেকে মানুষকে পথভ্রষ্ট করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ‘অতএব, তাদের ব্যাপারে তাড়াহুড়াে করাে না।’ তাদের ব্যাপারে তুমি বিব্রত বােধ করে না। কেননা তাদেরকে সীমিত মেয়াদ পর্যন্ত অবকাশ দেয়া হয়েছে, তাদের প্রতিটা কাজের হিসাব নেয়া হবে, তাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ডের রেকর্ড রাখা হচ্ছে। এখানে এমন শব্দ চয়ন করা হয়েছে, যা কেয়ামতের হিসাব নিকাশের নিপুণতা ও সূক্ষ্মতার ছবি এঁকে দেখায়, আমি তাদের সব কিছু গুণে রাখি। বস্তুত এক আতংকজনক দৃশ্য । আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং যার গুনাহ গুণে গুণে রাখেন, তার পরিণতি যে কেমন ভয়াবহ হতে পারে এবং তার হিসাব-নিকাশ যে কতাে কঠিন হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যে ব্যক্তি বুঝতে পারে যে, তার ইহকালীন নেতা বা প্রভু তার কার্যকলাপ নিজেই সরাসরি তদারক করেন, সে সর্বদা ভয়ে তটস্থ থাকে এবং তার প্রতিটা মুহূর্ত কাটে প্রচন্ড উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায়। আর মহা পরাক্রান্ত তীব্র প্রতিশোধ গ্রহণে সক্ষম আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং যদি ওই ভূমিকা পালন করেন, তা হলে উপায়? এরপর কেয়ামতের একটা দৃশ্য বর্ণনার মধ্য দিয়ে হিসাব নিকাশের শেষ ফল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এ পর্যায়ে প্রথমে মােমেনদের প্রতিদান বর্ণনা করা হয়েছে এভাবে, ‘যেদিন আমি আল্লাহভীরুদেরকে দয়াময়ের কাছে সংঘবদ্ধভাবে একত্রিত করবাে…’ পক্ষান্তরে কাফেরদের সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তাদেরকে আমি পশুর পালের মতাে তাড়িয়ে নিয়ে যাবো ‘আমি অপরাধীদেরকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাবাে জাহান্নামের দিকে।’ সৎ কাজ করে যাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করা ছাড়া আর কোনােভাবেই সেদিন কোনাে সুপারিশ করানাে যাবে না। যারা ঈমানদার ও সৎকর্মশীল, তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা উপযুক্ত পুরস্কার দেয়ার ওয়াদা করেছেন এবং আল্লাহ তায়ালা কখনাে ওয়াদা ভংগ করেন না।
তাফসীরে হাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
৮১-৮৭ নং আয়াতের তাফসীর:
উক্ত আয়াতগুলোতে বলা হচ্ছে, কাফির-মুশিরকরা আল্লাহ তা‘আলাকে ব্যতীত যাদের উপাসনা করে এ মনে করে যে, ঐ মা‘বূদরা তাদের সাহায্য করবে। যেমন সূরা যুমারের ৩ নং আয়াত ও সূরা ইউনুসের ১৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে তাদের এ ভ্রান্ত ধারণার জবাবে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা সাহায্য করার পরিবর্তে তাদের ইবাদত অস্বীকার করবে এবং তারা তাদের শত্র“ হয়ে যাবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَّدْعُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَنْ لَّا يَسْتَجِيْبُ لَه۫ٓ إِلٰي يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَنْ دُعَا۬ئِهِمْ غٰفِلُوْنَ، وَإِذَا حُشِرَ النَّاسُ كَانُوْا لَهُمْ أَعْدَا۬ءً وَّكَانُوْا بِعِبَادَتِهِمْ كٰفِرِيْنَ)
“সে ব্যক্তির চেয়ে বেশি গোমরাহ আর কে হতে পারে, যে আল্ল¬াহকে বাদ দিয়ে এমন কাউকে ডাকে, যে কিয়ামতের দিন পর্যন্তও সাড়া দেবে না। বরং তারা তাদের আহ্বান সম্পর্কে গাফেল। (হাশরের ময়দানে) যখন সব মানুষকে একত্রিত করা হবে তখন তারা যাদেরকে ডাকত তারা তাদের দুশমন হয়ে যাবে এবং তাদের ইবাদতকে অস্বীকার করবে ।”(সূরা আহকাফ ৪৬:৫-৬)
আর আল্লাহ তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন জাহান্নামের শাস্তি। আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(نُمَتِّعُهُمْ قَلِيْلًا ثُمَّ نَضْطَرُّهُمْ إِلٰي عَذَابٍ غَلِيْظٍ)
“আমি অল্প সময়ের জন্য তাদেরকে সুখ-সম্ভোগ দেব, পুনরায় তাদেরকে বাধ্য করব কঠিন শাস্তি ভোগ করতে।” (সূরা লুক্বমান ৩১:২৪)
সেদিন কেউ কারো কোন উপকার করতে পারবে না এবং কেউ কারো জন্য কোন সুপারিশও করতে পারবে না। তবে আল্লাহ তা‘আলা যাকে অনুমতি দান করবেন সে ব্যতীত। সুতরাং সেদিন কোন ভ্রান্ত মা‘বূদ আল্লাহ তা‘আলার দরবারে কোন কিছুই করতে পারবে না। বরং তারা আরো ঐ ভক্তদের কথা তথায় অস্বীকার করবে। তাই প্রতিটি মানুষের উচিত দুনিয়াতে ব্যক্তিপূজা পরিহার করে, কেবল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দেখানো পদ্ধতিতে আল্লাহ তা‘আলার জন্য আমল করা। কোন ইমাম, ওলী-আওলীয়ার পথ নির্দেশ অনুসরণ করে ইবাদত করা যাবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সেদিন কেউ কারো কোন উপকার করতে পারবে না।
২. শয়তান মানুষের মন্দকর্ম সুন্দর করে দেখায় যার ফলে মানুষ ঐ মন্দ কর্মটিকে ভাল মনে করে করে থাকে। কিন্তু সে বুঝে না।
৩. মুত্তাকীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা তথায় সম্মানের সাথে উপস্থিত করবেন।
৪. জাহান্নামীরা সেখানে পিপাসার্ত হবে।
৫. তথায় কেউ আল্লাহ তা‘আলার অনুমতি ছাড়া কারো জন্য কোন শাফায়াত করতে পারবে না।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন্য বলেছেন :-
# মূলে عِزًّا শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ তারা এদের জন্য ইজ্জাত ও মর্যাদার কারণ হবে। কিন্তু আরবী ভাষায় “ইজ্জাত” মানে হচ্ছে, কোন ব্যক্তির এত বেশী শক্তিশালী ও জবরদস্ত হয়ে যাওয়া যার ফলে তার গায়ে কেউ হাত দিতে না পারে। আর এক ব্যক্তির অন্য ব্যক্তির জন্য ইজ্জতের কারণে পরিণত হওয়ার অর্থ এ হয় যে, প্রথম ব্যক্তি দ্বিতীয় ব্যক্তির এমন সহায়ক হবে যার ফলে তার কোন বিরোধী তার দিকে চোখ তুলে তাকাতে না পারে।
# তারা বলবে, আমরা কখনো এদেরকে বলিনি আমাদের ইবাদাত করো এবং এ আহাম্মকের দল যে, আমাদের ইবাদাত করছে তাও তো আমরা জানতাম না।
# এর মানে হচ্ছে, এদের বাড়াবাড়ির কারণে তোমরা বে-সবর হয়ো না। এদের দুর্ভাগ্য ঘনিয়ে এসেছে। পাত্র প্রায় ভরে উঠেছে। আল্লাহর দেয়া অবকাশের মাত্র আর ক’দিন বাকি আছে। এ দিনগুলো পূর্ণ হতে দাও।
# যে পরোয়ানা হাসিল করে নিয়েছে তার পক্ষেই সুপারিশ হবে এবং যে পরোয়ানা পেয়েছে সে-ই সুপারিশ করতে পারবে। আয়াতের শব্দগুলো দু’দিকেই সমানভাবে আলোকপাত করে।
সুপারিশ কেবলমাত্র তার পক্ষেই হতে পারবে যে রহমান থেকে পরোয়ানা হাসিল করে নিয়েছে, একথার অর্থ হচ্ছে এই যে, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় ঈমান এনে এবং আল্লাহর সাথে কিছু সম্পর্ক স্থাপন করে নিজেকে আল্লাহর ক্ষমার হকদার বানিয়ে নিয়েছে একমাত্র তার পক্ষেই সুপারিশ হবে। আর সুপারিশ একমাত্র সে-ই করতে পারবে যে পরোয়ানা লাভ করবে, একথার অর্থ হচ্ছে এই যে, লোকেরা যাদেরকে নিজেদের সুপারিশকারী মনে করে নিয়েছে তাদের সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকবে না বরং আল্লাহ নিজেই যাদেরকে অনুমতি দেবেন একমাত্র তারাই সুপারিশ করার জন্য মুখ খুলবেন।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৮১-৮৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা কাফির ও মুশরিকদের সম্পর্কে খবর দিচ্ছেন তারা ধারণা করছে যে, আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য যে সব মাবুদের তারা উপাসনা করছে তারা তাদের সহায়ক ও সাহায্যকারী হবে। কিন্তু এটা তাদের সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। তাদের পূর্ণ মুখাপেক্ষিতার দিন অর্থাৎ কিয়ামতের দিন তারা এদের উপাসনাকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে বসবে এবং তাদের শত্রু হয়ে যাবে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “তার চেয়ে বেশী পথভ্রষ্ট আর কে আছে যে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্যদেরকে আহবান করে; যারা কিয়ামতের দিন তার ডাকে সাড়া দেবে না এবং তারা তার আহবান থেকে সম্পূর্ণ উদাসীন থাকবে। যখন লোকদেরকে একত্রিত করা হবে তখন উপাস্যরা উপাসকদের শত্রু হয়ে যাবে। এবং তাদের উপাসনাকে অস্বীকার করে বসবে।”
(আরবী) এর আর একটি কিরআত (আরবী) ও রয়েছে। সেই দিন এই কাফিররা নিজেরাও আল্লাহ ছাড়া অন্যান্যদের ইবদিতকে অস্বীকার করবে। এই সব উপাস্য ও উপাসক জাহান্নামী হবে। তারা একে অপরের উপর লানত। করবে এবং পরস্পর একে অপরের উপর দোষারোপ করবে। সেইদিন তারা। পরস্পরে কঠিন ঝগড়ায় লিপ্ত হয়ে পড়বে। তাদের পরস্পরের সম্পর্ক সেই দিন ছিন্ন হয়ে যাবে। একে অপরের চরম শত্রুতে তারা পরিণত হবে। সাহায্য করা তো দূরের কথা, সেদিন তাদের মানবতাবোধও থাকবে না। উপাস্যরা উপাসকদের জন্যে এবং উপাসকরা উপাস্যদের জন্যে দুঃখ ও আফসোসের কারণ হবে।
মহান আল্লাহ বলেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি কি লক্ষ্য কর না যে, আমি কাফিরদের জন্যে শয়তানদেরকে ছেড়ে রেখেছি? তারা সব সময় তাদেরকে মন্দকর্মে বিশেষভাবে প্রলুব্ধ করতে রয়েছে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদেরকে উস্কানী দিতে আছে। তাদেরকে তারা বিদ্রোহী ও উদ্ধত করে তুলছে। যেমন আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলা বলেনঃ “যে ব্যক্তি দয়াময়ের যিকর হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার উপর শয়তানের আধিপত্য বিস্তার করি এবং সে। তার সঙ্গী হয়ে যায়।”
মহান আল্লাহ স্বীয় নবীকে (সঃ) বলেন :তুমি তাদের বিষয়ে তাড়াতাড়ি করো না এবং তাদের জন্যে বদ দুআ করো না। আমি ইচ্ছা করেই তাদেরকে অবকাশ দিয়ে রেখেছি। তাদের পাপকার্য বৃদ্ধি পেতে থাকুক। তাদেরকে পাকড়াও করার দিন ও কাল আমি গণনা করে রেখেছি। যখন ঐ নির্ধারিত কাল এসে যাবে, তখন আমি তাদেরকে পাকড়াও করবো এবং কঠিন শাস্তি দেবো। আমি যালিমদের কৃতকর্ম হতে উদাসীন নই। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যালিমরা যা করছে তার থেকে তুমি আল্লাহকে উদাসীন ও অমনোযোগী মনে করো না।” (১৪:৪২) আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “অতএব কাফিরদেরকে অবকাশ দাও; তাদেরকে অবকাশ দাও কিছুকালের জন্যে।”(৮৬:১৭) আর এক জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি অবকাশ দিয়ে থাকি যাতে তাদের পাপ বৃদ্ধি পায়।” (৩:১৭৮) অন্যত্র বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি তাদেরকে অল্পদিনের জন্যে সুখ ভোগ করাবো, অতঃপর তাদেরকে ভীষণ শাস্তির দিকে আসতে বাধ্য করবো।” (৩১:২৪) আর এক স্থানে বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে নবী (সঃ)! তুমি বলে দাওঃ “তোমরা উপকার ও সুখভোগ করে নাও, তোমাদের প্রকৃত ঠিকানা জাহান্নামই বটে।” (১৪:৩০)
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ আমি তো গণনা করছি তাদের নির্ধারিত কাল। অর্থাৎ আমি তাদের বছর, মাস, দিন এবং সময় গণনা করতে রয়েছি। নির্ধারিত সময় এসে গেলেই তাদের উপর শাস্তি এসে পড়বে।
৮৫-৮৭ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা তার সংযমী বন্ধু বান্দাদের সম্পর্কে খবর দিচ্ছেন যে, যারা আল্লাহর কথার উপর ঈমান এনেছে, নবীদের সত্যতা স্বীকার করেছে,
আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলেছে, পাপকার্য থেকে দূরে রয়েছে এবং অন্তরে আল্লাহর ভয় রেখেছে তারা আল্লাহর সামনে সম্মানিত মেহমানরূপে। হাজির হবে। তারা জ্যোতির্ময় উষ্ট্রীয় সওয়ারীর উপর আরোহণ করে আসবে এবং আল্লাহর অতিথিশালায় সম্মানের সাথে প্রবেশ করবে। পক্ষান্তরে আল্লাহর অবাধ্য, পাপী ও রাসূলদের শত্রুদেরকে উল্টো মুখে টেনে হেঁচড়ে জাহান্নামের পার্শ্বে নিয়ে আসা হবে। ঐ সময় সে পিপাসায় কাতর হয়ে থাকবে। এখন বলতো, মর্যাদা সম্পন্ন কে এবং উত্তম সঙ্গী বিশিষ্ট কে? মুমিন তার কবর। হতে মুখ উঠিয়ে দেখবে যে, তার সামনে একজন সুদর্শন লোক পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন ও পবিত্র পোষাক পরিহিত হয়ে এবং সুগন্ধ ছড়িয়ে উজ্জ্বল চেহারা নিয়ে পঁড়িয়ে রয়েছে। সে জিজ্ঞেস করবেঃ “আপনি কে?” উত্তরে সে বলবেঃ “আমাকে চিনতে পারছেন না? আমি তো আপনার সৎ আমলেরই দেহাকৃতি। আপনার আমল ছিল জ্যোতির্ময়, সুন্দর ও সুগন্ধযুক্ত। আসুন, এখন আপনাকে আমি আমার কাঁধে উঠিয়ে সসম্মানে হাশরের মাঠে নিয়ে যাবো। কেননা, পার্থিব জীবনে আমি আপনার উপর সওয়ার হয়ে ছিলাম।” সুতরাং মু’মিন আল্লাহ তাআলার নিকট সওয়ারীর উপর সওয়ার হয়ে যাবে। তার সওয়ারীর জন্যে উজ্জ্বল উটও প্রস্তুত থাকবে। এসব মুমিন আনন্দের সাথে ও সসম্মানে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
হযরত আলী (রাঃ) বলেনঃ “প্রতিনিধিদের জন্যে এই নিয়মই নেই যে, তারা পদব্রজে আসবে। এই খোদাভীরু লোকেরা এমন জ্যোতির্ময় উস্ত্রীর উপর সওয়ার হয়ে আসবে যে, সৃষ্টজীবের চোখে এর চেয়ে সুন্দর ও উত্তম সওয়ারী কখনও পড়ে নাই। ওগুলির জিন হবে সোনার। এই লোকগুলি জান্নাতের দরজা পর্যন্ত এই সওয়ারীগুলিরই উপর আরোহণ করে পৌঁছবে। ঐ উষ্ট্রীগুলির লাগাম হবে পোকরাজ পান্নার। (এটা একটি মারফু রিওয়াইয়াত। কিন্তু হাদীসটি খুবই গরীব বা দুর্বল)
হযরত আলী (রাঃ) বলেনঃ “একদা আমি রাসূলুল্লাহর (সঃ) নিকট বসে ছিলাম। তার সামনে আমি (আরবী) এই আয়াতটি তিলাওয়াত করি এবং বলিঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! প্রতিনিধি তো সওয়ারীর উপর সওয়ার হয়ে এসে থাকে। তিনি বললেনঃ “যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তার শপথ! যখন তারা তাদের কবর থেকে বের হবে তখন সাদা রঙ-এর জ্যোতির্ময় উষ্ট্রীগুলির উপর সোনার জিন থাকবে। ওগুলির পা হতে জ্যোতি উপরের দিকে উথিত হতে থাকবে। ঐ উষ্ট্রীগুলির এক একটি কদম এতো দূরের ব্যবধানে থাকবে যতদূরে দৃষ্টি যাবে। তারা ওগুলির উপর সওয়ার হয়ে একটি জান্নাতী বৃক্ষের নিকট পৌঁছবে। সেখান থেকে দুটি নহর প্রবাহিত হতে তারা দেখতে পাবে। তার একটির পানি পান করবে, যার ফলে তাদের অন্তরের সব কালিমা দূর হয়ে যাবে। দ্বিতীয়টিতে তারা গোসল করবে। এর ফলে তাদের দেহ আলোকময় হয়ে যাবে আর তাদের মাথার চুল পরিপাটি হয়ে যাবে। এরপরে তাদের চুল আর কখনো এলোমেলো ও অপরিষ্কার হবে না। তাদের চেহারা হয়ে যাবে আলোকোজ্জ্বল। তারপর তারা জান্নাতের দরজায় পৌছে যাবে। স্বর্ণের দরজার উপর লাল ইয়াকৃত বা মণি মাণিক্যের হলকা থাকবে। তাতে তার করাঘাত করবে। এর ফলে একটা সুমধুর স্বর বের হবে এবং হৃরেরা বুঝতে পারবে যে, তাদের স্বামীরা এসে গেছে। জান্নাতের রক্ষক আসবে এবং দরজা খুলে দেবে। তারা তার জ্যোতির্ময় ও পরিচ্ছন্ন চেহারা দেখে সিজদায় পতিত হওয়ার ইচ্ছা করবে, কিন্তু তৎক্ষণাৎ সে বলে উঠবেঃ “আমি তো আপনাদেরই অনুগত এবং আপনাদের আদেশ পালন করতে বাধ্য। তারা তখন তার সাথে চলতে থাকবে। তাদের হুরগুলি আর সহ্য করতে না পেরে তাবু থেকে বেরিয়ে পড়বে এবং তাদের সাথে কোলাকুলি করবে। অতঃপর তারা বলবেঃ “আপনারা তো আমাদের মাথার মুকুট। আপনারা আমাদের প্রেমিক এবং আমরা আপনাদের প্রেমিকা। আমরা চিরস্থায়ী জীবনের অধিকারিণী। আমাদের মৃত্যু নেই। আমরা শান্তি দায়িণী এবং এটা কখনো শেষ হবার নয়। আমরা সব সময় সন্তুষ্ট থাকবে এবং কখনো অসন্তুষ্ট হবে না। আমরা সদা এখানে অব স্থান করবো, কখনো বিচ্ছিন্ন হবো না। তারা ভিতরে প্রবেশ করে দেখবে যে, শত গজ উচু প্রাসাদ রয়েছে। ওর দেয়ালগুলি মণিমুক্তা এবং হলদে লাল ও সবুজ রঙ বিশিষ্ট সোনা দ্বারা নির্মিত। প্রত্যেকটি দেয়াল পরস্পর সাদৃশ্যযুক্ত। প্রত্যেক ঘরে রয়েছে সত্তরটি সিংহাসন, প্রতিটি সিংহাসনে রয়েছে সত্তরটি হাশিয়া, প্রতিটি হাশিয়ায় রয়েছে সত্তরটি হুর, প্রত্যেক জ্বরের উপর রয়েছে সত্তরটি জোড়া। তথাপি, তাদের পায়ের গোছার ঝলক দেখা যায়, তাদের সহবাসের পরিমাণ হবে দুনিয়ার পূর্ণ একটি রাত্রির সমান। সেখানে নির্মল পানি খাটি দুধের যা জন্তু হতে দোহনকৃত নয়, উত্তম, সুস্বাদু, ক্ষতিকারক নয়। এইরূপ পবিত্র মদের এবং মৌমাছির পেট হতে নির্গত নয় এইরূপ খুঁটি মধুর নহর প্রবাহিত হবে। ফল দানকারী বৃক্ষ ফলের ভরে ঝুঁকে পড়বে। ইচ্ছা হলে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ফল ছিড়বে, ইচ্ছা হলে বসে বসে এবং ইচ্ছা হলে শুয়েশুয়ে ফল ছিড়ে নেবে। সবুজ ও সাদাপাখী উড়তে থাকবে।
যেটারই গোশত খাওয়ার ইচ্ছা হবে তা নিজে নিজেই হাজির হয়ে যাবে। যেখানকার গোশত খাওয়ার ইচ্ছা হবে তাই খেয়ে নিবে। তারপর ঐ পাখি মহান আল্লাহর ক্ষমতা বলে পুনরায় জীবিত হয়ে উড়ে যাবে। চতুর্দিক থেকে ফেরেশতাগণ আসতে থাকবেন এবং সালাম করবেন। আর তাদেরকে শুভ সংবাদ জানিয়ে বলবেনঃ “আপনাদের উপর সালাম বর্ষিত হোক। এটা ঐ জান্নাত যার শুভসংবাদ আপনাদেরকে দেয়া হতো। আজ আপনাদেরকেও ওর মালিক বানিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা হলো বিনিময় আপনাদের সেই ভাল কাজের যা আপনারা দুনিয়ায় করতেন। তাদের হুরসমূহের কোন একটি হৃরের একটি চুল যদি দুনিয়ায় প্রবেশ করে দেয়া হয়, তবে সূর্যের আলো অস্পষ্ট বিবর্ণ হয়ে পড়বে।” (এ হাদীসটি মার’রূপে বর্ণিত হয়েছে। তবে এতে বিস্ময়ের কিছুই নেই যে, এটা মাওকুফই হবে। যেমন হযরত আলীর (রাঃ) নিজের উক্তি দ্বারাও এটা বর্ণিত আছে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন) ঠিক এর বিপরীত পাপী লোকেরা উল্টো মুখে শৃংখলে আবদ্ধ অবস্থায় জন্তুর মত ধাক্কা খেয়ে জাহান্নামের নিকট একত্রিত হবে। ঐ সময় পিপাসায় তাদের ওষ্ঠাগত প্রাণ হবে। তাদের জন্যে কোন সুপারিশকারী এবং তাদের পক্ষে একটা ভাল কথা উচ্চারণ করার কেউ থাকবে না। মুমিনরা তো একে অপরের জন্যে সুপারিশ করবে। কিন্তু এই হতভাগ্যরা এর থেকে বঞ্চিত থাকবে। তারা নিজেরাই বলবেঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমাদের জন্যে কোন সুপারিশকারী নেই এবং সুহৃদ বন্ধুও নেই।” (২৬:১০০-১০১)।
তবে যে দয়াময়ের নিকট প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছে সে ব্যতীত। এটা ‘ইসতিসনা মনকাতা। এই প্রতিশ্রুতি দ্বারা আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্যদান এবং ওর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকাই উদ্দেশ্য। অর্থাৎ যারা শুধুমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করে, অন্যান্যদের ইবাদত হতে বেঁচে থাকে, তারই কাছে সাহায্যের আশা রাখে এবং তারই কাছে সমস্ত আশাপূর্ণ হওয়ার বিশ্বাস রাখে তাদেরকেই বুঝানো হয়েছে।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ যে একত্ববাদীরা আল্লাহর ওয়াদা লাভ করেছে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ “যাদের সাথে আমার ওয়াদা রয়েছে তারা দাড়িয়ে যাক।” জনগণ বললোঃ “হে আবু অবিদির রহমান (রাঃ)! আমাদেরকে ওটা শিখিয়ে দিন।” তিনি বললেনঃ তোমরা বলঃ (আরবী) অন্য রিওয়াইয়াতে এর সাথে নিম্নের কথাগুলি রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে আল্লাহ! হে আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা! হে অদৃশ্য ও দৃশ্যের খবরজ্ঞাতা! আমি আপনার নিকট এই পার্থিব জগতে প্রতিশ্রুতি নিচ্ছি যে, আপনি আমাকে আমার এমন কাজ হতে দূরে রাখবেন যা আমাকে মন্দের নিকটবর্তী করবে ও ভাল হতে আমাকে দূরে রাখবে। আমি আপনার র হমতের উপর ভরসা রাখি। সুতরাং আপনি আমার জন্যে আপনার নিকট অঙ্গীকার রাখুন যা আপনি কিয়ামতের দিন পূর্ণ করবেন, নিশ্চয় আপনি ওয়াদা খেলাফ করেন না।” “আমি আপনাকে ভয় করি, আপনার নিকট (শাস্তি হতে) রক্ষা পাওয়ার আবেদন জানাই, আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থী এবং আপনার প্রতিই আগ্রহ প্রকাশকারী।”
أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#905)
Sura:19
Sura: Maryam.
Ayat: 81-87
[ لَاا يَمْلِكُونَ الشَّفَاعَةَ
None shall have the power of intercession,…]
www.motaher21.net
19:81
وَ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اٰلِہَۃً لِّیَکُوۡنُوۡا لَہُمۡ عِزًّا ﴿ۙ۸۱﴾
And they have taken besides Allah [false] deities that they would be for them [a source of] honor.
The Idols of the Polytheists will deny Their Worship
Allah says:
وَاتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ الِهَةً لِّيَكُونُوا لَهُمْ عِزًّا
And they have taken gods besides Allah, that they might give them honor, power and glory.
Allah, the Exalted, informs about the disbelievers who associate partners with their Lord, that they have taken gods besides Allah, so that these gods may be a source of honor and might for them. They think that these gods give them power and make them victorious.
Then, Allah mentions that the matter is not as they claim, and it will not be as they hope.
He says
19:82
کَلَّا ؕ سَیَکۡفُرُوۡنَ بِعِبَادَتِہِمۡ وَ یَکُوۡنُوۡنَ عَلَیۡہِمۡ ضِدًّا ﴿٪۸۲﴾
No! Those “gods” will deny their worship of them and will be against them opponents [on the Day of Judgement].
كَلَّ سَيَكْفُرُونَ بِعِبَادَتِهِمْ
Nay, but they will deny their worship of them, (on the Day of Judgement).
وَيَكُونُونَ عَلَيْهِمْ ضِدًّا
and will become their adversaries.
This means that they will be foes in a state other than what they think about these gods.
This is similar to Allah’s statement,
وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّن يَدْعُو مِن دُونِ اللَّهِ مَن لاَّ يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَـمَةِ وَهُمْ عَن دُعَأيِهِمْ غَـفِلُونَ
وَإِذَا حُشِرَ النَّاسُ كَانُواْ لَهُمْ أَعْدَاءً وَكَانُواْ بِعِبَادَتِهِمْ كَـفِرِينَ
And who is more astray than one who calls upon, besides Allah, such as will not answer him till the Day of Resurrection, and who are (even) unaware of their calls to them And when mankind are gathered, they will become their enemies and will deny their worshipping. (46:5-6)
As-Suddi said,
كَلَّ
سَيَكْفُرُونَ بِعِبَادَتِهِمْ
(Nay, but they will deny their worship of them),
“This means their worshipping of the idols. ”
Allah said,
وَيَكُونُونَ عَلَيْهِمْ ضِدًّا
and will become their adversaries,
contrary to what they hoped for from these gods.
As-Suddi said,
“They will be in severe opposition and argument.”
Ad-Dahhak said,
“This means enemies.”
The Power of the Devils over the Disbelievers
Concerning Allah’s statement,
أَلَمْ تَرَ أَنَّا أَرْسَلْنَا الشَّيَاطِينَ عَلَى الْكَافِرِينَ تَوُزُّهُمْ أَزًّا
19:83
اَلَمۡ تَرَ اَنَّـاۤ اَرۡسَلۡنَا الشَّیٰطِیۡنَ عَلَی الۡکٰفِرِیۡنَ تَؤُزُّہُمۡ اَزًّا ﴿ۙ۸۳﴾
Do you not see that We have sent the devils upon the disbelievers, inciting them to [evil] with [constant] incitement?
See you not that We have sent the Shayatin against the disbelievers to push them to do evil.
Ali bin Abi Talhah said that Ibn Abbas said,
“They will lead them astray with temptation.”
Al-Awfi said that Ibn Abbas said,
“They will incite them against Muhammad and his Companions.”
Qatadah said,
“They will harass them and disturb them until they disobey Allah.”
Abdur-Rahman bin Zayd said,
“This is similar to Allah’s statement,
وَمَن يَعْشُ عَن ذِكْرِ الرَّحْمَـنِ نُقَيِّضْ لَهُ شَيْطَاناً فَهُوَ لَهُ قَرِينٌ
And whosoever turns away blindly from the remembrance of the Most Gracious, We appoint for him a Shaytan to be a companion for him.” (43:36)
Concerning Allah’s statement
19:84
فَلَا تَعۡجَلۡ عَلَیۡہِمۡ ؕ اِنَّمَا نَعُدُّ لَہُمۡ عَدًّا ﴿ۚ۸۴﴾
So be not impatient over them. We only count out to them a [limited] number.
فَلَ تَعْجَلْ عَلَيْهِمْ
So make no haste against them; We only count out to them a (limited) number.
This means, “Do not be hasty with the punishment that is going to befall them, O Muhammad.”
إِنَّمَا نَعُدُّ لَهُمْ عَدًّا
We only count out to them a number.
This means, “We are only delaying them for a fixed appointment whose time is numbered. They are destined for that and there is no escaping the torment of Allah and His exemplary punishment.”
Allah says,
وَلَا تَحْسَبَنَّ اللَّهَ غَـفِلً عَمَّا يَعْمَلُ الظَّـلِمُونَ
And consider not that Allah is unaware of that which the wrongdoers do. (14:42)
And He says,
فَمَهِّلِ الْكَـفِرِينَ أَمْهِلْهُمْ رُوَيْداً
So give a respite to the disbelievers; deal gently with them for a while. (86:17)
And Allah says,
إِنَّمَا نُمْلِى لَهُمْ لِيَزْدَادُواْ إِثْمَاً
We postpone the punishment only so that they may increase in sinfulness. (3:178)
نُمَتِّعُهُمْ قَلِيلً ثُمَّ نَضْطَرُّهُمْ إِلَى عَذَابٍ غَلِيظٍ
We let them enjoy for a little while, then in the end We shall oblige them to (enter) a great torment. (31:24)
قُلْ تَمَتَّعُواْ فَإِنَّ مَصِيرَكُمْ إِلَى النَّارِ
Say:”Enjoy! But certainly, your destination is the (Hell) Fire.” (14:30)
As-Suddi said,
إِنَّمَا نَعُدُّ لَهُمْ عَدًّا
(We only count out to them a (limited) number),
means years, months, days and hours.
19:85
یَوۡمَ نَحۡشُرُ الۡمُتَّقِیۡنَ اِلَی الرَّحۡمٰنِ وَفۡدًا ﴿ۙ۸۵﴾
On the Day We will gather the righteous to the Most Merciful as a delegation
The Condition of the Righteous and the Criminals on the Day of Resurrection
Allah informs:
يَوْمَ نَحْشُرُ الْمُتَّقِينَ إِلَى الرَّحْمَنِ وَفْدًا
وَنَسُوقُ الْمُجْرِمِينَ إِلَى جَهَنَّمَ وِرْدًا
19:86
وَّ نَسُوۡقُ الۡمُجۡرِمِیۡنَ اِلٰی جَہَنَّمَ وِرۡدًا ﴿ۘ۸۶﴾
And will drive the criminals to Hell in thirst
The Day We shall gather those with Taqwa unto the Most Gracious (Allah), like a delegation. And We shall drive the criminals to Hell, in a thirsty state.
Allah, the Exalted, informs about His righteous friends, who feared Him in the life of this world. They followed His Messengers and believed in what the Messengers told them. They obeyed them in what they commanded them and abstained from that which they prohibited.
Allah explains that He will gather these people on the Day of Resurrection like a delegation that has come to Him.
A Wafd (delegation) is a group that arrives while riding and from it comes the word Wufud (arriving).
They will come riding upon noble steeds of light from the riding animals of the Hereafter. They will arrive before the Best Receiver of delegations at the abode of His honor and pleasure.
In reference to the criminals, who denied the Messengers and opposed them, they will be driven violently to the Hellfire.
Allah says,
وِرْدًا
(In a thirsty state),
This means parched and thirsting for drink.
This was stated by `Ata’, Ibn `Abbas, Mujahid, Al-Hasan, Qatadah and many others.
Here it will be said,
أَىُّ الْفَرِيقَيْنِ خَيْرٌ مَّقَاماً وَأَحْسَنُ نَدِيّاً
Which of the two groups is best in Maqam (position) and the finest Nadiyyan (meeting place). (19:73)
Ibn Abi Hatim reported from Amr bin Qays Al-Mula’i, who reported from Ibn Marzuq that he said,
يَوْمَ نَحْشُرُ الْمُتَّقِينَ إِلَى الرَّحْمَنِ وَفْدًا
(The Day We shall gather those with Taqwa unto the Most Gracious, like a delegation),
“When the believer comes forth from his grave, he will meet the most handsome form he has ever seen and it will have the nicest fragrance. He will say, `Who are you?’
The being will reply, `You do not know me!’
The believer will say, `No, but Allah has made you sweet smelling with a handsome face.’
The being will say, `I am your righteous deeds. This is how you use to beautify and apply fragrance to your deeds in the worldly life. I was riding upon you in the entire length of your worldly life, so will you not ride upon me now!’
So the believer will therefore mount the creature.
This is the meaning of Allah’s statement,
يَوْمَ نَحْشُرُ الْمُتَّقِينَ إِلَى الرَّحْمَنِ وَفْدًا
The Day We shall gather those with Taqwa unto the Most Gracious, like a delegation.”
Ali bin Abi Talhah reported that Ibn `Abbas said,
يَوْمَ نَحْشُرُ الْمُتَّقِينَ إِلَى الرَّحْمَنِ وَفْدًا
(The Day We shall gather those with Taqwa unto the Most Gracious, like a delegation).
“Riding.”
His saying,
وَنَسُوقُ الْمُجْرِمِينَ إِلَى جَهَنَّمَ وِرْدًا
And We shall drive the criminals to Hell, in a thirsty state.
This means parched and thirsty
19:87
لَا یَمۡلِکُوۡنَ الشَّفَاعَۃَ اِلَّا مَنِ اتَّخَذَ عِنۡدَ الرَّحۡمٰنِ عَہۡدًا ﴿ۘ۸۷﴾
None will have [power of] intercession except he who had taken from the Most Merciful a covenant.
لَاا يَمْلِكُونَ الشَّفَاعَةَ
None shall have the power of intercession,
There will be no one who can intercede for them like the believers who intercede for each other.
Allah says about them,
فَمَا لَنَا مِن شَـفِعِينَ
وَلَا صَدِيقٍ حَمِيمٍ
Now we have no intercessors, nor a close friend. (26:100-101)
Allah said,
إِلاَّ مَنِ اتَّخَذَ عِندَ الرَّحْمَنِ عَهْدًا
but such a one as has received permission (or promise) from the Most Gracious.
This is a separate exclusion, which means, “But those who have taken a covenant with the Most Beneficent.”
This covenant is the testimony that none has the right to be worshipped but Allah, and upholding of its rights and implications.
Ali bin Abi Talhah reported that Ibn Abbas said,
إِلاَّ مَنِ اتَّخَذَ عِندَ الرَّحْمَنِ عَهْدًا
(but such a one as has received permission (or promise) from the Most Gracious).
“The promise is the testimony that none has the right to be worshipped but Allah, that the person accepts that all power and strength belong to Allah and he only places his hope with Allah alone.
For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran