أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৯৬০)
[ بِہٖ سٰمِرًا تَہۡجُرُوۡنَ
অর্থহীন গল্প-গুজবে রাত মাতিয়ে কথা বলতে। ]
সূরা:- আল্-মুমিনূন।
সুরা:২৩
পারা:১৮
৬২-৬৭ নং আয়াত:-
www.motaher21.net
২৩:৬২
وَ لَا نُکَلِّفُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَہَا وَ لَدَیۡنَا کِتٰبٌ یَّنۡطِقُ بِالۡحَقِّ وَ ہُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۶۲﴾
আমি কাউকেও তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পণ করি না এবং আমার নিকট আছে এক গ্রন্থ; যা সত্য ব্যক্ত করে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না ।
২৩:৬৩
بَلۡ قُلُوۡبُہُمۡ فِیۡ غَمۡرَۃٍ مِّنۡ ہٰذَا وَ لَہُمۡ اَعۡمَالٌ مِّنۡ دُوۡنِ ذٰلِکَ ہُمۡ لَہَا عٰمِلُوۡنَ ﴿۶۳﴾
বরং এই বিষয়ে তাদের অন্তর অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন, এ ছাড়া আরো (মন্দ) কাজ আছে যা তারা করে থাকে।
২৩:৬৪
حَتّٰۤی اِذَاۤ اَخَذۡنَا مُتۡرَفِیۡہِمۡ بِالۡعَذَابِ اِذَا ہُمۡ یَجۡـَٔرُوۡنَ ﴿ؕ۶۴﴾
শেষ পর্যন্ত যখন আমরা তাদের বিলাসী ব্যাক্তিদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করি তখনই তারা আর্তনাদ করে উঠে।
২৩:৬৫
لَا تَجۡـَٔرُوا الۡیَوۡمَ ۟ اِنَّکُمۡ مِّنَّا لَا تُنۡصَرُوۡنَ ﴿۶۵﴾
তাদেরকে বলা হবে, ‘আজ আর্তনাদ করো না, তোমাদেরকে তো আমাদের পক্ষ থেকে সাহায্য করা হবে না।’
২৩:৬৬
قَدۡ کَانَتۡ اٰیٰتِیۡ تُتۡلٰی عَلَیۡکُمۡ فَکُنۡتُمۡ عَلٰۤی اَعۡقَابِکُمۡ تَنۡکِصُوۡنَ ﴿ۙ۶۶﴾
আমার আয়াত তো তোমাদের কাছে তিলাওয়াত করা হত , কিন্তু তোমরা উল্টো পায়ে পিছনে সরে পড়তে—
২৩:৬৭
مُسۡتَکۡبِرِیۡنَ ٭ۖ بِہٖ سٰمِرًا تَہۡجُرُوۡنَ ﴿۶۷﴾
দম্ভভরে এই নিয়ে অর্থহীন গল্প-গুজব করতে করতে।
৬২-৬৭ নং আয়াতের তাফসীর:
ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-
। *দ্বীন সম্পর্কে উদাসীনতা ও তার কারণ : উদাসীন লােকেরা উদাসীন হয়ই শুধু এই কারণে যে, তারা প্রকৃত সত্য সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে এবং এ ব্যাপারে জ্ঞান অর্জনে বিরত থাকার কারণে এ সংক্রান্ত জ্ঞানের আলাে তাদেরকে স্পর্শ করে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘বরং এই সত্য সম্পর্কে তাদের মন অচেতন…’ (আয়াত ৬৩-৬৭) অর্থাৎ তাদের বর্তমান নিষ্ক্রিয়তার কারণ এটা নয় যে, তাদের ওপর তাদের ক্ষমতা বহির্ভূত কোনাে দায়িত্ব চাপানাে হয়েছে বরং এর কারণ হলাে তাদের মনের অচেতনতা ও অজ্ঞতা। কোরআন যে সত্য ও সঠিক বার্তা এনেছে, তা তারা জানতে সচেষ্ট নয়। তারা বরং অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকে। ‘এ ছাড়া তারা অন্যান্য বহু কাজে ব্যস্ত থাকে।’ এরপর আকস্মিকভাবে যখন কোনাে দুর্যোগ তাদের ওপর এসে পড়ে তখন তাদের কী দশা হয়ে থাকে, তার বিবরণ দেয়া হয়েছে, ‘অবশেষে যখন তাদের মধ্যকার ধনাঢ্যদেরকে আমি আযাব দিয়ে পাকড়াও করি, তখন তারা বিলাপ করতে থাকে।’ আসলে ধনাঢ্য লােকেরাই অধিকতর ভােগবিলাসে ও দুস্কর্মে লিপ্ত থাকে এবং পরিণাম সম্পর্কে অচেতন থাকে। এদের ওপর আকস্মিক আযাবও এসে থাকে এবং আযাব এলেই তারা দিশেহারা হয়ে বিলাপ ও চিৎকার করে সাহায্য ও করুণা ভিক্ষা করে থাকে। ভােগ বিলাস, উদাসীনতা, অহংকার ও দাম্ভিকতার বিপরীতে এই সময়ে তারা নিম্নরূপ ধমক খায়, আজ তােমরা বিলাপ করাে না। তােমরা আমার পক্ষ থেকে কোনাে সাহায্য পাবে না।’ এরপরই সেই দৃশ্যটা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে তারা সর্বদিক থেকে শুধু ধমক খাবে এবং সকল সহায়তাকারীর কাছ থেকে নৈরাশ্যজনক জবাব পাবে। আর তাদেরকে তাদের সেই উদাসীনতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হবে, যখন তারা আখেরাতের কথা ভুলে কেবল দুনিয়ার ভােগবিলাসে মত্ত ছিলাে। তােমাদেরকে আমার আয়াতগুলাে পড়ে শােনানাে হতাে, কিন্তু তােমরা পেছনের দিকে সরে যেতে।'(আয়াত ৬৬-৬৭) অর্থাৎ তােমরা এমনভাবে পেছনে সরে যেতে, যেন তােমাদের সামনে যে ওহী পড়িয়ে শােনানাে হয়েছে, তা কোনাে ভয়ংকর বিপজ্জনক জিনিস, যা থেকে তােমরা আত্মরক্ষার চেষ্টা করছো। অথচ তােমরা অহংকারের সাথে সত্যকে অস্বীকার করে চলেছো। সেই সাথে গল্প গুজবের আড্ডায় তােমরা রসূল(স.) ও ওহী সম্পর্কে নানা রকমের কটুক্তিও করে থাকো। রসূল(স.) ও কোরআনের বিরুদ্ধে তারা এই কটুক্তি ও অশালীন উক্তি নিজেদের বৈঠকাদিতেও করতাে, আবার পবিত্র কাবার চত্বরে মূর্তিগুলাের পাশে বসে আড্ডা দেয়ার সময়ও করতাে। তাদের এই আচরণের বদলা কিভাবে নেয়া হবে, কোরআন এখানে সেই দৃশ্যের ছবি তুলে ধরেছে। সেদিন তারা বিলাপ করবে এবং সাহায্য চাইবে। কোরআন তাদের সেই অশালীন আড্ডাবাজি ও কুরুচিপূর্ণ কটুক্তিগুলাের কথা এমনভাবে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যেন সব ঘটনা এই মুহূর্তেই ঘটছে এবং সেগুলাে তারা দেখছে ও উপভােগ করছে। এভাবে কেয়ামতের দৃশ্যগুলােকে জবলজ্যান্ত চলতি ঘটনার আকারে অংকিত করে দেখানাে কোরআনের কুশলী বর্ণনা ভংগিরই বৈশিষ্ট্য ও কৃতিত্ব। মােশরেকদের নিজস্ব বৈঠকাদিতে ও আড্ডাখানাগুলােতে রসূল(স.) ও কোরআনের বিরুদ্ধে কুৎসিত আক্রমণ পরিচালনার উদ্দেশ্য ছিলাে তাদের জাহেলিয়াতসুলভ দাম্ভিকতার প্রকাশ ঘটানাে। এই দাম্ভিকতা তাদের বােধশক্তিকে বিকৃত ও অন্তর চক্ষুকে অন্ধ করে দিয়েছিলাে বিধায় তারা সত্যের মূল্য মর্যাদা উপলব্ধি করতে পারতো না। তাই তারা সত্যের বিরুদ্ধে উপহাস ও ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে ও নানা রকমের অভিযােগ তুলে মনের ঝাল ঝাড়তাে। সকল যুগেই এ ধরনের লােকের সাক্ষাত পাওয়া যায়। আরবের জাহেলিয়াত অতীতের অন্যান্য জাহেলিয়াতের নমুনা ছিলাে মাত্র। এখানে মাঝে মাঝে এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর তাদেরকে আখেরাতের হুমকি ও ধমকের দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে নিয়ে পুনরায় দুনিয়ার দৃশ্যপটে হাযির করা হয়েছে। তারপর তাদের সম্পর্কে প্রশ্ন তােলা হয়েছে ও তাদের আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে, ‘তারা কি এই বাণী সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে না? না তাদের কাছে এমন অভিনব কিছু এসেছে, যা তাদের পূর্ব পুরুষদের কাজে আসেনি?
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন্য বলেছেন :-
# এ প্রেক্ষাপটে এ বাক্যটি গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। একে ভালোভাবে বুঝার চেষ্টা করতে হবে। আগের আয়াতগুলোতে বলা হয়েছে। তারা প্রকৃত কল্যাণ আহরণকারী। কারা অগ্রবর্তী হয়ে তা অর্জন করে এবং তাদের গুনাবলী কি কি। এ আলোচনার পর সঙ্গে সঙ্গেই একথা বলা হলো, আমি কখনো কাউকে তার সামর্থ্যের বাইরে কষ্ট দেই না। আর এ দাঁড়ায় যে, এ চরিত্র, নৈতিকতা ও কার্যক্রম কোন অতি মানবিক জিনিস নয়। তোমাদেরই মতো রক্ত-মাংসের মানুষেরাই এ পথে চলে দেখিয়ে দিচ্ছে। কাজেই তোমরা একথা বলতে পারো না যে, তোমাদেরকাছে এমন কোন জিনিসের দাবী জানানো হচ্ছে যা মানুষের সাধ্যের বাইরে। তোমরা যে পথে চলছো তার ওপর চলার ক্ষমতা যেমন মানুষের আছে তেমনি তোমাদের নিজেদের জাতির কতিপয় মু’মিন যে পথে চলছে তার ওপর চলার ক্ষমতাও মানুষের আছে। এখন এ দু’টি সম্ভাব্য পথের মধ্যে কে কোন্টি নির্বাচন করে, শুধুমাত্র তার ওপরই ফয়সালা নির্ভর করে। এ নির্বাচনের ক্ষেত্র ভুল করে যদি তোমরা আজ তোমাদের সমস্ত শ্রম ও প্রচেষ্টা অকল্যাণ সাধনে নিয়োজিত করো এবং কল্যাণ থেকে বঞ্চিত থেকে যাও তাহলে আগামীতে নিজেদের এ বোকামির দণ্ড নিতেই হবে। সে দন্ড থেকে এ খোঁড়া অজুহাত তোমাদের বাঁচাতে পারবে না যে, কল্যাণ পর্যন্ত পৌঁছা তোমাদের সামর্থ্যের বাইরে ছিল। তখন এ অজুহাত পেশ করলে তোমাদের জিজ্ঞেস করা হবে, এ পথ যদি মানুষের সামর্থ্যের বাইরে থেকে থাকে তাহলে তোমাদেরই মতো অনেক মানুষ তার ওপর চলতে সক্ষমত হলো কেমন করে?
# কিতাব বলে এখানে আমলনামাকে বুঝানো হয়েছে। প্রত্যেক ব্যক্তির এ আমলনামা পৃথক পৃথকভাবে তৈরী হচ্ছে। তার প্রত্যেকটি কথা, প্রত্যেকটি নড়াচড়া এমনকি চিন্তা-ভাবনা ও ইচ্ছা-সংকল্পের প্রত্যেকটি অবস্থা পর্যন্ত তাতে সন্নিবেশিত হচ্ছে। এ সম্পর্কেই সূরা কাহ্ফে বলা হয়েছেঃ ————- “আর আমলনামা সামনে রেখে দেয়া হবে। তারপর তোমরা দেখবে অপরাধীরা তার মধ্যে যা আছে তাকে ভয় করতে থাকবে এবং বলতে থাকবে, হায়, আমাদের দুর্ভাগ্য! এ কেমন কিতাব, আমাদের ছোট বা বড় এমন কোনো কাজ নেই যা এখানে সন্নিবেশিত হয়নি। তারা যে যা কিছু করেছিল সবই নিজেদের সামনে হাজির দেখতে পাবে। আর তোমার রব কারোর প্রতি জুলুম করেন না।” ( ৪৯ আয়াত ) কেউ কেউ এখানে কিতাব অর্থে কুরআন গ্রহণ করে আয়াতের অর্থ উল্টে দিয়েছে।
# কারোর বিরুদ্ধে এমন কোন দোষারোপ করা হবে না যে জন্য সে মূলত দায়ী নয়। কারোর এমন কোন সৎকাজ গ্রাস করে ফেলা হবে না যার প্রতিদানের সে প্রকৃতপক্ষে হকদার। কাউকে অনর্থক শাস্তি দেয়া হবে না। কাউকে সত্য অনুযায়ী যথার্থ পুরস্কার থেকে বঞ্চিত রাখা যাবে না।
# যা কিছু তারা করছে, বলছেও চিন্তা-ভাবনা করছে –এসব কিছু অন্য কোথাও সন্নিবেশিত হচ্ছে এবং এর হিসেব হবে না, এ ব্যাপারে তারা বেখবর।
# শব্দের অনুবাদ এখানে করা হয়েছে “বিলাসপ্রিয়”। “মুতরফীন” আসলে এমনসব লোককে বলা হয় যারা পার্থিব ধন-সম্পদ লাভ করে ভোগ বিলাসে লিপ্ত হয়েছে এবং আল্লাহ ও তাঁর সৃষ্টির অধিকার থেকে গাফিল হয়ে হয়ে গেছে। “বিলাসপ্রিয়” শব্দটির মাধ্যমে এ শব্দটির সঠিক মর্মকথাপ্রকাশ হয়ে যায়, তবে এ ক্ষেত্র শর্ত হচ্ছে একে শুধুমাত্র প্রবৃত্তির খায়েশ পূর্ণ করার অর্থে গ্রহণ করা যাবে না বরং বিলাস প্রিয়তার ব্যাপকতার অর্থে গ্রহণ করতে হবে। আযাব বলতে এখানে সম্ভবত আখেরাতের আযাব নয় বরং দুনিয়ার আযাবের কথা বলা হয়েছে। জালেমরা দুনিয়ায়ই এ আযাবের মুখোমুখী হয়।
# মূলে—–শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অত্যাধিক কষ্টের মধ্যে গরুর মুখ দিয়ে যে আওয়াজ বের হয় তাকে ‘জুআর’´বলে। এ শব্দটি এখানেই নেহাত ফরিয়াদ ও কাতর আর্তনাদ অর্থে ব্যবহৃত হয়নি বরং এমন ব্যক্তির আর্তনাদ ও ফরিয়াদ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে যে কোনো প্রকার করুণার যোগ্য নয়। এর মধ্যে ব্যাংগ ও তাচ্ছিল্যভাব প্রচ্ছন্ন রয়েছে। এর মধ্যে এ অর্থ লুকিয়ে রয়েছে যে, “বেশ, এখন নিজের কৃতকর্মের মজা টের পাওয়ার সময় এসেছে, তাই তো জোরে জোরে চিৎকার করছো।”
# তাঁর কথা শুনতেই তো প্রস্তুত ছিলে না। তাঁর আওয়াজ কানে পড়ুক এতটুকুও সহ্য করতে না।
# মূলে—–শব্দ ব্যবহা করা হয়েছে।—–মানে রাতের বেলা কর্থাবর্তা বলা গপ্প করা, কথকতা করা ও গল্প-কাহিনী শুনানো। গ্রামীন ও মফ স্বল শহুরে জীবনে সাধারণত এ রাত্রিকালের গপ্সপ্ হয় বৈঠক খানা ও দহলিজে বসে। মক্কাবাসীদের রীতিও এটাই ছিল।
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
৬২-৬৭ নং আয়াতের তাফসীর:
(وَلَا نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا)
এখানে বলা হচ্ছে যে, আল্লাহ তা‘আলা মানুষের সাধ্যাতীত কোন বিষয় চাপিয়ে দেন না। বরং মানুষের পক্ষে যতটুকু সম্ভব ততটুকুই তার ওপর অর্পণ করা হয়। এ সম্পর্কে সূরা বাকারার শেষ আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
(وَلَدَيْنَا كِتٰبٌ يَّنْطِقُ….)
‘এবং আমার নিকট আছে এক কিতাব যা সত্য ব্যক্ত করে’ এখানে কিতাব বলতে মানুষের আমলের কিতাব বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ মানুষরা দুনিয়াতে যা আমল করে তা একটি কিতাবে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়। কিয়ামতের দিন সে কিতাব মানুষের আমল সম্পর্কে কথা বলবে। আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(هٰذَا كِتٰبُنَا يَنْطِقُ عَلَيْكُمْ بِالْحَقِّ ط إِنَّا كُنَّا نَسْتَنْسِخُ مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ)
“এ হল আমার কিতাব, এটা তোমাদের বিরুদ্ধে সত্য বলবে। তোমরা যা করতে তা আমি অবশ্যই লিপিবদ্ধ করিয়েছিলাম।” (সূরা জাসিয়া ৪৫:২৯)
সুতরাং মানুষের কোন আমল সেদিন লুক্কায়িত থাকবে না। তারা যা আমল করেছে, তাই সেখানে প্রকাশ পাবে, আর ঐ ভিত্তিতেই তাদেরকে প্রতিফল দেয়া হবে। কারো প্রতি কোন প্রকার জুলুম করা হবে না ।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করেন, তাদেরকে যে সকল বিধি-বিধান দেয়া হয়েছে এসব থেকে জ্ঞানহীনতার কারণে তারা বিরত থাকে এবং এর পরিবর্তে তারা আরো অন্যায় কাজে লিপ্ত হয়। তারা একটু চিন্তা-ভাবনা করে দেখে না, কী করছে। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَذَرْنِيْ وَالْمُكَذِّبِيْنَ أُولِي النَّعْمَةِ وَمَهِّلْهُمْ قَلِيْلًا - إِنَّ لَدَيْنَآ أَنْكَالًا وَّجَحِيْمًا)
“ছেড়ে দাও আমাকে এবং প্রাচুর্য্যবান মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদের; আর কিছুকালের জন্য তাদেরকে অবকাশ দাও। নিশ্চয়ই আমার নিকট আছে শক্ত বেড়ী ও জ্বলন্ত আগুন।” (সূরা মুযযামমিল ৭৩:১১-১২)
مُتْرَفِيْهِمْ অর্থ নেতৃস্থানীয়, ক্ষমতাসীন। আযাব নেতৃস্থানীয় ও ক্ষমতাহীন সবার ওপরে আসবে। কিন্তু এখানে নেতৃস্থানীয়দের বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে কেন? কারণ সাধারণত সমাজের নেতৃত্ব এদের হাতেই থাকে। এরা যেভাবে চায় জাতির মুখ ফেরাতে পারে। যদি তারা আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতার পথ অবলম্বন করে ও তার ওপর অবিচল থাকে, তাহলে তাদের দেখা-দেখি সমাজের মানুষও তাদের অনুসরণ করে এবং তওবা ও অনুশোচনার পথ ধরে না। এখানে নেতৃত্ব বলতে সে সব কাফিরদেরকে বুঝানো হয়েছে, যাদেরকে ধন-দৌলতের প্রাচুর্য ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সমৃদ্ধ করে অবকাশ দেয়া হয়েছে। যেমন এ শ্রেণির কিছু আয়াত পূর্বেও উল্লিখিত হয়েছে।
এমনকি যখন তাদেরকে তাদের এ সকল অপরাধের কারণে শাস্তি প্রদান করা হবে তখন তারা তথায় চিৎকার করতে থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(كَمْ أَهْلَكْنَا مِنْ قَبْلِهِمْ مِّنْ قَرْنٍ فَنَادَوْا وَّلَاتَ حِيْنَ مَنَاصٍ)
“তাদের পূর্বে আমি বহু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি; তখন তারা আর্তনাদ করেছিল, কিন্তু তখন মুক্তি লাভের কোন সময় ছিল না।” (সূরা স্ব-দ ৩৮:৩)
তখন তাদেরকে নিষেধ করা হবে যে, আজকের দিনে তোমরা চিৎকার আর্তনাদ কর না। এখন চিৎকার করে কোনই লাভ নেই। কারণ তোমাদের নিকট আমার বিধি-বিধান আলোচনা করা হত, আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হত, তখন তোমরা তা থেকে বিমুখ ছিলে এবং এ বিষয়ে তোমরা অহঙ্কার করতে। সুতরাং আজকের দিনে আর্তনাদ করে কোনই লাভ হবে না। আজকে বরং এর জন্য তোমাদেরকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। কারণ তোমরা গর্ব-অহঙ্কার করে আল্লাহ তা‘আলার আয়াতকে অস্বীকার করতে। আর আজকের দিনে তোমাদের এ শাস্তি কমানোও হবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সাধ্যের বাইরে মানুষকে আল্লাহ তা‘আলা কোন কাজ চাপিয়ে দেন না।
২. মৃত্যুর পর অনুশোচনা করে কোন লাভ হবে না।
৩. গর্ব-অহঙ্কার করা যাবে না, তা করলে সৎ আমল নষ্ট হয়ে যায়।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৬২-৬৭ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, তিনি শরীয়তকে সহজ করেছেন। তিনি বান্দাদেরকে এমন কাজের হুকুম দেন না যা তাদের সাধ্যের অতিরিক্ত। অতঃপর কিয়ামতের দিন তিনি তাদের কাজের হিসেব গ্রহণ করবেন। ওগুলো তারা পুস্তিকাকারে লিখিতরূপে বিদ্যমান পাবে। এই আমলনামা সঠিকভাবে তাদের এক একটি কাজের কথা প্রকাশ করে দেবে। কারো উপর কোন প্রকারের যুলুম করা হবে না। কারো পুণ্য কমিয়ে দেয়া হবে না। তবে অধিকাংশ মুমিনের পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে।
ইরশাদ হচ্ছেঃ বরং এই বিষয়ে তাদের অন্তর অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন, এ ছাড়া আরো কাজ আছে যা তারা করে থাকে, যেমন শিরক ইত্যাদি। এ সবকিছু তারা নির্ভয়ে করে চলেছে। মৃত্যু পর্যন্ত তারা এসব মন্দ কাজ করতেই থাকবে যাতে তারা সমস্ত শাস্তির হকদার হয়ে যায়। যেমন ইতিপূর্বে হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণিত হয়েছেঃ “যিনি ছাড়া কোন মা’বুদ নেই তাঁর শপথ! কোন লোক জান্নাতের কাজ করতে করতে জান্নাত হতে মাত্র এক হাত দূরে রয়ে যায়, অতঃপর তার তকদীরের লিখন তার উপর বিজয়ী হয় এবং সে জাহান্নামীদের কাজ করতে শুরু করে দেয়। পরিণামে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে।”
মহান আল্লাহর উক্তিঃ আর আমি যখন তাদের ঐশ্বর্যশালী ব্যক্তিদেরকে শাস্তি দ্বারা ধৃত করি তখনই তারা আর্তনাদ করে উঠে। সূরায়ে মুযযামিলে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “ছেড়ে দাও আমাকে এবং বিলাস সামগ্রীর অধিকারী সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদেরকে, আর কিছুকালের জন্যে তাদেরকে অবকাশ দাও। আমার নিকট আছে শৃংখল, প্রজ্বলিত অগ্নি।” (৭৩:১১-১২) অন্য জায়গায় আছেঃ (আরবী) অর্থাৎ তাদের পূর্বে আমি কত জনগোষ্ঠী ধ্বংস করেছি; তখন তারা আচষ্কার করেছিল। কিন্তু তখন পরিত্রাণের কোনই উপায় ছিল না।” (৩৮:৩) এখানে বলা হচ্ছেঃ আজ তোমরা চীৎকার করছো কেন? কেন আজ আর্তনাদ করছো? আজ এসবের কিছুই তোমাদের কাজে আসবে না। তোমাদের উপর আল্লাহর শাস্তি এসে পড়েছে। এখন চীৎকার আর্তনাদ সবই বৃথা। এমন কে আছে যে তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে?
এরপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ আমার আয়াত তো তোমাদের নিকট আবৃত্তি করা হতো, কিন্তু তোমরা পিছনে ফিরে সরে পড়তে দম্ভভরে।
(আরবী) তাদের সত্য হতে সরে পড়া ও সত্যকে অস্বীকার করা হতে (আরবী) হয়েছে যে, তারা ঐ সময় অহংকার করতো এবং সত্যপন্থীদেরকে তুচ্ছ জ্ঞান করতো। এই অর্থ হিসেবে (আরবী) এর (আরবী) সর্বনামটি হয়তো বা (আরবী)-এর দিকে অর্থাৎ মক্কার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে যে, তারা সেখানে বাজে ও অর্থহীন গল্প-গুজব করতো। কিংবা ওর (আরবী) হবে কুরআন, যাকে তারা উপহাসের বস্তু বানিয়ে নিয়েছিল। কখনো ওটাকে কবিতা বলতো, কখনো বলতো ভবিষ্যৎ কথন ইত্যাদি। অথবা এর (আরবী) স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সঃ)। রাত্রিকালে অযথা বসে থেকে তাদের গল্প-গুজবের মধ্যে তারা তাকে কখনো কবি বলতো, কখনো বলতো যাদুকর, কখনো বলতো, মিথ্যাবাদী এবং কখনো পাগল বলতো। অথচ ‘হারাম’ আল্লাহর ঘর, কুরআন তাঁর কালাম এবং মুহাম্মাদ (সঃ) তাঁর রাসূল, যাকে তিনি সাহায্য করেছেন এবং মক্কার উপর বিজয়ী করেছেন। মুশরিকদেরকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত অবস্থায় সেখান থেকে বের করিয়েছেন। আবার ভাবার্থ এও বলা হয়েছে যে, তারা বায়তুল্লাহর কারণে গর্ব করতো। তারা ধারণা করতো যে, তারা আল্লাহর বন্ধু ও প্রিয়পাত্র। অথচ ওটা ছিল তাদের অলিক ধারণা মাত্র। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, কুরায়েশ মুশরিকরা বায়তুল্লাহর উপর ফখর করতো এবং নিজেদেরকে ওর ব্যবস্থাপক এবং মুতাওয়াল্লী মনে করতো। অথচ না তারা ওটা আবাদ করতো না ওর আদব করতো। ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) এখানে অনেক কিছু লিখেছেন যেগুলোর মূল বক্তব্য এটাই।
أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#960)
[ بِہٖ سٰمِرًا تَہۡجُرُوۡنَ
Conversing by night, speaking evil.]
Sura:23
Para:18
Sura: Al-Muminoon.
Ayat: 62-67
www.motaher21.net
23:62
وَ لَا نُکَلِّفُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَہَا وَ لَدَیۡنَا کِتٰبٌ یَّنۡطِقُ بِالۡحَقِّ وَ ہُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۶۲﴾
And We charge no soul except [with that within] its capacity, and with Us is a record which speaks with truth; and they will not be wronged.
The Justice of Allah and the Frivolity of the Idolators
Allah tells;
وَلَا نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا
And We task not any person except according to his capacity,
Allah tells us of His justice towards His servants in this world, in that He does not task any person except according to his capacity, i.e., He does not burden any soul with more than it can bear. On the Day of Resurrection He will call them to account for their deeds, which He has recorded in a written Book from which nothing is omitted.
He says:
وَلَدَيْنَا كِتَابٌ يَنطِقُ بِالْحَقِّ
and with Us is a Record which speaks the truth,
meaning, the Book of deeds
وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ
and they will not be wronged.
means, nothing will be omitted from their record of good deeds. As for evil deeds, He will forgive and overlook many of them in the case of His believing servants.
Then Allah says, denouncing the disbelievers and idolators of the Quraysh
23:63
بَلۡ قُلُوۡبُہُمۡ فِیۡ غَمۡرَۃٍ مِّنۡ ہٰذَا وَ لَہُمۡ اَعۡمَالٌ مِّنۡ دُوۡنِ ذٰلِکَ ہُمۡ لَہَا عٰمِلُوۡنَ ﴿۶۳﴾
But their hearts are covered with confusion over this, and they have [evil] deeds besides disbelief which they are doing,
بَلْ قُلُوبُهُمْ فِي غَمْرَةٍ
Nay, but their hearts are covered,
meaning because of negligence and misguidance,
مِّنْ هَذَا
from this.
means, the Qur’an which Allah revealed to His Messenger.
وَلَهُمْ أَعْمَالٌ مِن دُونِ ذَلِكَ هُمْ لَهَا عَامِلُونَ
and they have other deeds, besides which they are doing.
Al-Hakam bin Aban narrated from Ikrimah, from Ibn Abbas that;
وَلَهُمْ أَعْمَالٌ
(and they have other deeds),
means, evil deeds apart from that, i.e., Shirk,
هُمْ لَهَا عَامِلُونَ
(which they are doing),
means, which they will inevitably do.
This was also narrated from Mujahid, Al-Hasan and others.
Others said that this phrase
وَلَهُمْ أَعْمَالٌ مِن دُونِ ذَلِكَ هُمْ لَهَا عَامِلُونَ
(And they have other deeds, besides which they are doing), means:
It was decreed that they would do evil deeds, and they will inevitably do them before they die, so that the word of punishment may be justified against them.
A similar view was narrated from Muqatil bin Hayyan, As-Suddi and Abdur-Rahman bin Zayd bin Aslam.
This is a clear and appropriate meaning. We have already quoted from the Hadith of Ibn Mas`ud:
فَوَ الَّذِي لَا إِلهَ غَيْرُهُ إِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلاَّ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ فَيَدْخُلُهَا
By Him besides Whom there is no other God, a man may do the deeds of the people of Paradise until there is no more than a forearm’s length between him and it, then the decree will overtake him and he will do the deeds of the people of Hell, then he will enter Hell…
حَتَّى إِذَا أَخَذْنَا مُتْرَفِيهِم بِالْعَذَابِ إِذَا هُمْ يَجْأَرُونَ
23:64
حَتّٰۤی اِذَاۤ اَخَذۡنَا مُتۡرَفِیۡہِمۡ بِالۡعَذَابِ اِذَا ہُمۡ یَجۡـَٔرُوۡنَ ﴿ؕ۶۴﴾
Until when We seize their affluent ones with punishment, at once they are crying [to Allah ] for help.
Until when We seize those of them who lead a luxurious life with punishment; behold, they make humble invocation with a loud voice.
means, when the punishment and vengeance of Allah comes to those who are living a happy life of luxury in this world and overtakes them,
إِذَا هُمْ يَجْأَرُونَ
(behold, they make humble invocation with a loud voice).
means, they scream their calls for help.
This is like the Ayat:
وَذَرْنِى وَالْمُكَذِّبِينَ أُوْلِى النَّعْمَةِ وَمَهِّلْهُمْ قَلِيلً
إِنَّ لَدَيْنَأ أَنكَالاً وَجَحِيماً
And leave Me Alone (to deal) with the beliers, those who are in possession of good things of life. And give them respite for a little while. Verily, with Us are fetters, and a raging Fire. (73:11-12)
كَمْ أَهْلَكْنَا مِن قَبْلِهِم مِّن قَرْنٍ فَنَادَواْ وَّلَاتَ حِينَ مَنَاصٍ
How many a generation have We destroyed before them! And they cried out when there was no longer time for escape. (38:3)
لَاا تَجْأَرُوا الْيَوْمَ إِنَّكُم مِّنَّا لَاا تُنصَرُونَ
23:65
لَا تَجۡـَٔرُوا الۡیَوۡمَ ۟ اِنَّکُمۡ مِّنَّا لَا تُنۡصَرُوۡنَ ﴿۶۵﴾
Do not cry out today. Indeed, by Us you will not be helped.
Invoke not loudly this day! Certainly you shall not be helped by Us.
means, no one is going to save you from what has happened to you, whether you scream aloud or remain silent. There is no escape and no way out. It is inevitable:the punishment will surely come to you.
Then Allah mentions the greatest of their sins:
قَدْ كَانَتْ ايَاتِي تُتْلَى عَلَيْكُمْ فَكُنتُمْ عَلَى أَعْقَابِكُمْ تَنكِصُونَ
23:66
قَدۡ کَانَتۡ اٰیٰتِیۡ تُتۡلٰی عَلَیۡکُمۡ فَکُنۡتُمۡ عَلٰۤی اَعۡقَابِکُمۡ تَنۡکِصُوۡنَ ﴿ۙ۶۶﴾
My verses had already been recited to you, but you were turning back on your heels
Indeed My Ayat used to be recited to you, but you used to turn back on your heels.
meaning, when you were called, you refused and resisted.
ذَلِكُم بِأَنَّهُ إِذَا دُعِىَ اللَّهُ وَحْدَهُ كَـفَرْتُمْ وَإِن يُشْرَكْ بِهِ تُوْمِنُواْ فَالْحُكْمُ للَّهِ الْعَلِـىِّ الْكَبِيرِ
“This is because, when Allah Alone was invoked, you disbelieved, but when partners were joined to Him, you believed! So the judgment is only with Allah, the Most High, the Most Great!” (40:12)
مُسْتَكْبِرِينَ بِهِ سَامِرًا تَهْجُرُونَ
23:67
مُسۡتَکۡبِرِیۡنَ ٭ۖ بِہٖ سٰمِرًا تَہۡجُرُوۡنَ ﴿۶۷﴾
In arrogance regarding it, conversing by night, speaking evil.
In pride, talking evil about it by night.
refers to the arrogant pride which the Quraysh felt because they believed themselves to be the guardians of the Ka`bah, when in fact this was not the case.
As An-Nasa’i said in his Tafsir of this Ayah in his Sunan:
Ahmad bin Sulayman told us that Ubaydullah told us from Isra`il, from Abdul-A`la that he heard Sa`id bin Jubayr narrating that Ibn Abbas said,
“Talking by late night became disapproved of when this Ayah was revealed:
مُسْتَكْبِرِينَ بِهِ سَامِرًا تَهْجُرُونَ
In pride, talking evil about it by night.
He said,
“They boasted about the Ka`bah and said, `We are its people who stay up talking at night.’
They used to boast and stay up and talk at night around the Ka`bah. They did not use it for the proper purpose, and so in effect they had abandoned it.”
For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran