أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٢٤٣)-৪৪৫
www.motaher21.net
সুরা: আল-আনয়াম
৭০ নং আয়াত:-
وَذَرِ الَّذِينَ اتَّخَذُواْ دِينَهُمْ لَعِبًا
যারা নিজেদের দীনকে খেল-তামাশার বস্তুতে পরিণত করেছে তুমি তাদেরকে বর্জন করে চলবে,
Leave alone those who take their religion as play and amusement,
وَ ذَرِ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا دِیۡنَہُمۡ لَعِبًا وَّ لَہۡوًا وَّ غَرَّتۡہُمُ الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا وَ ذَکِّرۡ بِہٖۤ اَنۡ تُبۡسَلَ نَفۡسٌۢ بِمَا کَسَبَتۡ ٭ۖ لَیۡسَ لَہَا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَلِیٌّ وَّ لَا شَفِیۡعٌ ۚ وَ اِنۡ تَعۡدِلۡ کُلَّ عَدۡلٍ لَّا یُؤۡخَذۡ مِنۡہَا ؕ اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ اُبۡسِلُوۡا بِمَا کَسَبُوۡا ۚ لَہُمۡ شَرَابٌ مِّنۡ حَمِیۡمٍ وَّ عَذَابٌ اَلِیۡمٌۢ بِمَا کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ ﴿٪۷۰﴾
যারা নিজেদের দীনকে খেল-তামাশার বস্তুতে পরিণত করেছে তুমি তাদেরকে বর্জন করে চলবে, পার্থিব জীবন যাদেরকে সম্মোহিত করে ধোঁকায় নিপতিত করেছে, কুরআন দ্বারা তাদেরকে উপদেশ দিতে থাক, যাতে কোন ব্যক্তি স্বীয় কাজ দোষে ধ্বংস হয়ে না যায়। আল্লাহ ছাড়া তার কোন বন্ধু, সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী থাকবে না, আর যেন এই অবস্থার সম্মুখীন না হয় যে, দুনিয়ার সমস্ত কিছুর বিনিময় দিয়েও মুক্তি পেতে চাইলে সেই বিনিময় গ্রহণ করা হবেনা। তারা এমনই লোক যারা নিজেদের কর্মদোষে আটকা পড়ে গেছে; তাদের কুফরী করার কারণে তাদের জন্য ফুটন্ত গরম পানীয় এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ তা’আলা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে সম্বোধন করে বলেনঃ যারা দ্বীনকে খেল-তামাশার বস্তু বানিয়ে নিয়েছে তুমি তাদেরকে ছেড়ে দাও। কেননা, তারা ভয়াবহ শাস্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্যেই মহান আল্লাহ বলেনঃ তুমি কুরআন কারীমের মাধ্যমে তাদেরকে উপদেশ দিতে থাক, আল্লাহর আযাব থেকে ভয় প্রদর্শন কর, যাতে তাদেরকে তাদের দুষ্কার্যের কারণে ধ্বংস করে দেয়া না হয়। যহ্হাক (রঃ) (আরবী) শব্দকে (আরবী) অর্থে ব্যবহার করেছেন। অর্থাৎ যেন সঁপে দেয়া না হয়। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে- যেন তাকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত না করা হয়। কাতাদা (রঃ) বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে- যেন তাকে আটকিয়ে দেয়া না হয়। আর মুররা (রঃ) ও ইবনে যায়েদ (রঃ) এর অর্থ নিয়েছেন ‘পাকড়াও করা’। এই সমুদয় উক্তির ভাবার্থ প্রায় একই। মোটকথা এই যে, ধ্বংসের জন্যে ছেড়ে দেয়া, কল্যাণ থেকে বিমুখ করা, উদ্দেশ্য সফল না করা ইত্যাদির প্রায় একই অর্থ। যেমন মহান আল্লাহ এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “প্রত্যেক ব্যক্তি স্বীয় কৃতকর্মের জন্যে আটককৃত, শুধু যার ডান হাতে আমল নামা দেয়া হবে সে নয়।” (৭৪:৩৮)
আল্লাহ পাকের উক্তিঃ (আরবী) অর্থাৎ “আল্লাহ ছাড়া তার কোন বন্ধু ও সুপারিশকারী থাকবে না। যেমন মহান আল্লাহ আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী)অর্থাৎ “(মানুষের সাবধান হওয়া উচিত) এমন দিন আসার পূর্বে যেই দিন না ক্রয়-বিক্রয় চলবে, না বন্ধুত্ব থাকবে, না সুপারিশ চলবে, কাফিররা পূর্ণরূপে অত্যাচারী।” আল্লাহ তাআলার উক্তিঃ (আরবী) অর্থাৎ আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে যদি সে দুনিয়াভর বিনিময় বস্তুও দিতে চায় তথাপি তা গ্রহণ করা হবে না। যেমন তিনি অন্যত্র বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই যারা কাফির হয়ে থাকা অবস্থাতেই মারা গেল, যদি তারা (বিনিময় হিসাবে) দুনিয়াভর সোনাও প্রদান করে তথাপি তা কখনও গ্রহণ করা হবে না।” (৩:৯১)
এরপর ঘোষিত হচ্ছে। তারা এমনই লোক যে, তারা নিজেদের কর্মদোষে আটকা পড়ে গেছে, তাদের জন্যে রয়েছে ফুটন্ত গরম পানীয় এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Anam
Verses :- 70
وَذَرِ الَّذِينَ اتَّخَذُواْ دِينَهُمْ لَعِبًا
Leave alone those who take their religion as play and amusement,
Allah said,
وَذَرِ الَّذِينَ اتَّخَذُواْ دِينَهُمْ لَعِبًا وَلَهْوًا وَغَرَّتْهُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا
And leave alone those who take their religion as play and amusement, and are deceived by the life of this world.
The Ayah commands to leave such people, ignore them and give them respite, for soon, they will taste a tremendous torment.
This is why Allah said,
وَذَكِّرْ بِهِ
But remind with it,
meaning, remind the people with this Qur’an and warn them against Allah’s revenge and painful torment on the Day of Resurrection.
Allah said;
أَن تُبْسَلَ نَفْسٌ بِمَا كَسَبَتْ
lest a soul Tubsal for that which one has earned,
meaning, so that it is not Tubsal.
Ad-Dahhak from Ibn Abbas, Mujahid, Ikrimah, Al-Hasan and As-Suddi said that;
Tubsal means, be submissive.
Al-Walibi said that Ibn Abbas said that;
Tubsal means, `be exposed’.
Qatadah said that;
Tubsal means, `be prevented’.
Murrah and Ibn Zayd said that;
it means, `be recompensed’.
Al-Kalbi said,
`be reckoned’.
All these statements and expressions are similar, for they all mean exposure to destruction, being kept away from all that is good, and being restrained from attaining what is desired.
Allah also said;
كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ
إِلاَّ أَصْحَـبَ الْيَمِينِ
Every person is restrained by what he has earned. Except those on the Right. (74:38-39)
and,
لَيْسَ لَهَا مِن دُونِ اللّهِ وَلِيٌّ وَلَا شَفِيعٌ
when he will find for himself no protector or intercessor besides Allah.
and,
وَإِن تَعْدِلْ كُلَّ عَدْلٍ لاَّ يُوْخَذْ مِنْهَا
and even if he offers every ransom, it will not be accepted from him.
meaning, whatever the ransom such people offer, it will not be accepted from them.
Allah said in a similar statement,
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ وَمَاتُواْ وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَن يُقْبَلَ مِنْ أَحَدِهِم مِّلْءُ الاٌّرْضِ ذَهَبًا
Verily, those who disbelieved, and died while they were disbelievers, the (whole) earth full of gold will not be accepted from anyone of them. (3:91)
Allah said here,
أُوْلَـيِكَ الَّذِينَ أُبْسِلُواْ بِمَا كَسَبُواْ لَهُمْ شَرَابٌ مِّنْ حَمِيمٍ وَعَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُواْ يَكْفُرُونَ
Such are they who are given up to destruction because of that which they have earned. For them will be a drink of boiling water and a painful torment because they used to disbelieve.
তাফসীরে আবুবকর যাকারিয়া বলেছেন:-
[১] আয়াতের অর্থ হচ্ছে, আপনি তাদেরকে পরিত্যাগ করুন, যারা দ্বীনকে ক্রীড়া ও কৌতুক করে রেখেছে। এর দুটি অর্থ হতে পারেঃ (এক) তাদের জন্য সত্য দ্বীন ইসলাম প্রেরিত হয়েছে; কিন্তু একে তারা ক্রীড়া ও কৌতুকের বস্তুতে পরিণত করেছে এবং একে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে। (দুই) তারা আসল দ্বীন পরিত্যাগ করে ক্রীড়া ও কৌতুককেই দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করেছে। উভয় অর্থেরই সারমর্ম প্রায় এক।
[২] এখানে বলা হয়েছে যে, দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবন তাদেরকে ধোকায় ফেলে রেখেছে। এটিই তাদের ব্যাধির আসল কারণ। অর্থাৎ তাদের যাবতীয় লম্ফঝম্ফ ও ঔদ্ধত্যের আসল কারণই হচ্ছে, তারা দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবন দ্বারা প্রলোভিত এবং আখেরাত বিস্মৃত। আখেরাত ও কেয়ামতের বিশ্বাস থাকলে তারা কখনো এরূপ কাণ্ড করতো না। এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাধারণ মুসলিমদেরকে দুটি নির্দেশ দেয়া হয়েছেঃ (এক) উল্লেখিত বাক্যে বর্ণিত লোকদের কাছ থেকে দূরে সরে থাকা এবং মুখ ফিরিয়ে নেয়াই যথেষ্ট নয়, বরং ইতিবাচকভাবে তাদেরকে কুরআন দ্বারা উপদেশ দান করা এবং (দুই) আল্লাহ্ তা’আলার আযাবের ভয় প্রদর্শন করা।
[৩] আয়াতের শেষে আযাবের বিবরণ দিয়ে বলা হয়েছে যে, তাদের এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে তারা স্বয়ংকুকর্মের জালে আবদ্ধ হয়ে যাবে। আয়াতে (اَنْ تُبْسَلَ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ আবদ্ধ হয়ে যাওয়া এবং জড়িত হয়ে পড়া। কোন ভুল কিংবা কারো প্রতি অত্যাচার করে বসলে তার সম্ভাব্য শাস্তির কবল থেকে আত্মরক্ষার জন্য মানুষ দুনিয়াতে তিন প্রকার উপায় অবলম্বন করতে অভ্যস্ত। স্বীয় দলবল ব্যবহার করে অত্যাচারের প্রতিশোধ থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হলে প্রভাবশালীদের সুপারিশ কাজে লাগায়। এতেও উদ্দেশ্য সিদ্ধ না হলে শাস্তির কবল থেকে আত্মরক্ষার জন্য অর্থ-সম্পদ ব্যয় করার চেষ্টা করে। আল্লাহ তা’আলা আলোচ্য আয়াতে বলেছেন যে, আল্লাহ অপরাধীকে যখন শাস্তি দেবেন, তখন সে শাস্তির কবল থেকে উদ্ধার করার জন্য কোন আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব এগিয়ে আসবে না, আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কারো সুপারিশ কার্যকর হবে না এবং কোন অর্থ-সম্পদ গ্রহণ করা হবে না। যদি কেউ সারা বিশ্বের অর্থ-সম্পদের অধিকারী হয় এবং শাস্তির কবল থেকে আত্মরক্ষার জন্য তা বিনিময়স্বরূপ দিতে চায়, তবুও এ বিনিময় গ্রহণ করা হবে না।
[৪] বলা হচ্ছে, এরা ঐ সব লোক, যাদেরকে কুকর্মের শাস্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে জাহান্নামের ফুটন্ত পানি পান করার জন্য দেয়া হবে। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে যে, “এ পানি তাদের নাড়িভূড়িকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেবে ” [সূরা মুহাম্মাদ: ১৫] এ পানি ছাড়াও অন্যান্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হবে, তাদের কুফর ও অবিশ্বাসের কারণে।