أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٢٤٩)-৪৫১
www.motaher21.net
সুরা: আল-আনয়াম
৯৩-৯৪ নং আয়াত:-
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللّهِ كَذِبًا
আর ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক অত্যাচারী কে হতে পারে যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে?
And who can be more unjust than he who invents a lie against Allah?
وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَوۡ قَالَ اُوۡحِیَ اِلَیَّ وَ لَمۡ یُوۡحَ اِلَیۡہِ شَیۡءٌ وَّ مَنۡ قَالَ سَاُنۡزِلُ مِثۡلَ مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ ؕ وَ لَوۡ تَرٰۤی اِذِ الظّٰلِمُوۡنَ فِیۡ غَمَرٰتِ الۡمَوۡتِ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ بَاسِطُوۡۤا اَیۡدِیۡہِمۡ ۚ اَخۡرِجُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اَلۡیَوۡمَ تُجۡزَوۡنَ عَذَابَ الۡہُوۡنِ بِمَا کُنۡتُمۡ تَقُوۡلُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ غَیۡرَ الۡحَقِّ وَ کُنۡتُمۡ عَنۡ اٰیٰتِہٖ تَسۡتَکۡبِرُوۡنَ ﴿۹۳﴾
আর ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক অত্যাচারী কে হতে পারে যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে? অথবা এরূপ বলেঃ আমার উপর অহী নাযিল করা হয়েছে, অথচ তার উপর প্রকৃত পক্ষে কোন অহী নাযিল করা হয়নি এবং যে ব্যক্তি এও বলেঃ যেরূপ কালাম আল্লাহ নাযিল করেছেন, তদ্রুপ আমিও আনয়ন করছি। আর তুমি যদি দেখতে পেতে (ঐ সময়ের অবস্থা) যে সময় যালিমরা হবে মৃত্যু সংকটে (পরিবেষ্টিত); আর মালাইকা/ফেরেশতারা হাত বাড়িয়ে বলবেঃ নিজেদের প্রাণগুলি বের কর, আজ তোমাদেরকে সেই সব অপরাধের শাস্তি হিসাবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দেয়া হবে যা তোমরা আল্লাহর উপর মিথ্যা দোষারোপ করে অকারণ প্রলাপ বকেছিলে এবং তাঁর আয়াতসমূহ কবূল করা হতে অহংকার করেছিলে।
وَ لَقَدۡ جِئۡتُمُوۡنَا فُرَادٰی کَمَا خَلَقۡنٰکُمۡ اَوَّلَ مَرَّۃٍ وَّ تَرَکۡتُمۡ مَّا خَوَّلۡنٰکُمۡ وَرَآءَ ظُہُوۡرِکُمۡ ۚ وَ مَا نَرٰی مَعَکُمۡ شُفَعَآءَکُمُ الَّذِیۡنَ زَعَمۡتُمۡ اَنَّہُمۡ فِیۡکُمۡ شُرَکٰٓؤُا ؕ لَقَدۡ تَّقَطَّعَ بَیۡنَکُمۡ وَ ضَلَّ عَنۡکُمۡ مَّا کُنۡتُمۡ تَزۡعُمُوۡنَ ﴿٪۹۴﴾
আর তোমরা আমার কাছে নিঃসঙ্গ এসেছ, যেভাবে প্রথমবার আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলাম, আর যা কিছু আমি তোমাদেরকে দিয়েছিলাম তা তোমরা নিজেদের পশ্চাতেই ছেড়ে এসেছ, আর আমিতো তোমাদের সাথে তোমাদের সেই সুপারিশকারীদেরকে দেখছিনা যাদের সম্বন্ধে তোমরা দাবী করতে যে, তারা তোমাদের কাজকর্মে (আমার) শরীক; বাস্তবিকই তোমাদের পরস্পরের সম্পর্কতো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, আর তোমরা যা কিছু ধারণা করতে তা সবই আজ তোমাদের নিকট থেকে উধাও হয়ে গেছে।
৯৩-৯৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
যারা আল্লাহ তা‘আলার ওপর মিথ্যারোপ করে তারা দাবী করে আল্লাহ তা‘আলা কোন মানুষকে রাসূল হিসেবে পাঠাননি অথবা দাবী করে যে আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি ওয়াহী নাযিল করেছেন অথচ কিছুই নাযিল করা হয়নি।
কাতাদাহ ও ইকরিমা (রহঃ) বলেন: এ অংশটুকু মুসায়লামাতুল কাযযাব-এর ব্যাপারে নাযিল হয়।
অথবা তার ব্যাপারে যে দাবী করে যে, আল্লাহ তা‘আলা যে কুরআন নাযিল করেছেন অনুরূপ কুরআন আনতে সে সক্ষম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَإِذَا تُتْلٰي عَلَيْهِمْ اٰيٰتُنَا قَالُوْا قَدْ سَمِعْنَا لَوْ نَشَا۬ءُ لَقُلْنَا مِثْلَ هٰذَآ لا إِنْ هٰذَآ إِلَّآ أَسَاطِيْرُ الْأَوَّلِيْنَ)
“যখন তাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা তো শ্রবণ করলাম, ইচ্ছা করলে আমরাও অনুরূপ বলতে পারি; এগুলো, সেকালের লোকেদের উপকথা ছাড়া কিছুই নয়।’(সূরা আনফাল ৮:৩১) এদের চেয়ে বড় জালিম দুনিয়াতে আর নেই।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা এসব জালিমদের মৃত্যুকালীণ যন্ত্রণা ও কিয়ামতের যে অবমাননাকর শাস্তি দেয়া হবে সে সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন।
(وَلَقَدْ جِئْتُمُوْنَا فُرَادٰي)
‘তোমরা অবশ্যই আমার নিকট নিঃসঙ্গ অবস্থায় এসেছ’অর্থাৎ কিয়ামতের দিন পৃথক পৃথকভাবে একজন একজনকে আল্লাহ তা‘আলার সামনে ডেকে আনা হবে। সেদিন সাথে কোন সম্পদ, সন্তান-সন্ততি ও বাতিল মা‘বূদ থাকবে না, যাদেরকে সাহায্যকারী হিসেবে আহ্বান করত। আল্লাহ তা‘আলা সেদিন তাদেরকে ভর্ৎসনা করে এ কথা বলবেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِذْ تَبَرَّأَ الَّذِيْنَ اتُّبِعُوْا مِنَ الَّذِيْنَ اتَّبَعُوْا وَرَأَوُا الْعَذَابَ وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ الْأَسْبَابُ)
“(কি করুণ অবস্থা হবে তখন) যখন অনুসরণীয় নেতারা অনুসারীদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে তখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে ও তাদের সকল সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।”(বাক্বারাহ ২:১৬৬)
সুতরাং কিয়ামতের সেই কঠিন মুহূর্তের আগেই আমাদের সাবধান হওয়া উচিত। সেদিন কেউ কারো কোন উপকারে আসবে না। উপকারে আসবে শুধু ঈমান ও আমল।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার ওপর মিথ্যারোপ করা সবচেয়ে বড় জুলুম।
২. কাফিরদের যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুর প্রমাণ পেলাম।
৩. অহংকারের পরিণতি ভয়াবহ।
৩. কিয়ামতের দিন সকল বাতিল মা‘বূদ পলায়ন করবে, তারা কারো কোন উপকারে আসবে না।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Anam
Verses :- 93-94
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللّهِ كَذِبًا
And who can be more unjust than he who invents a lie against Allah?
None is Worse Than One who Invents a Lie Against Allah and Claims that Revelation Came to Him
Allah said,
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللّهِ كَذِبًا
And who can be more unjust than he who invents a lie against Allah,
Therefore, none is more unjust than one who lies about Allah claiming that He has partners or a son, or falsely claiming that Allah sent him as a Prophet;
أَوْ قَالَ أُوْحِيَ إِلَيَّ وَلَمْ يُوحَ إِلَيْهِ شَيْءٌ
or says:”I have received inspiration,” whereas he is not inspired with anything;
Ikrimah and Qatadah said that;
this Ayah was revealed about Musaylimah Al-Kadhdhab.
وَمَن قَالَ سَأُنزِلُ مِثْلَ مَا أَنَزلَ اللّهُ
and who says, “I will reveal the like of what Allah has revealed.”
This refers to he, who claims that the lies he invents rival the revelation that came from Allah.
In another Ayah, Allah said,
وَإِذَا تُتْلَى عَلَيْهِمْ ايَاتُنَا قَالُواْ قَدْ سَمِعْنَا لَوْ نَشَاء لَقُلْنَا مِثْلَ هَـذَا
And when Our verses (of the Qur’an) are recited to them, they say:”We have heard this (the Qur’an); if we wish we can say the like of this.” (8:31)
The Condition of These Unjust People Upon Death and on the Day of Resurrection
Allah, the Most Honored, said,
وَلَوْ تَرَى إِذِ الظَّالِمُونَ فِي غَمَرَاتِ الْمَوْتِ
And if you could but see when the wrongdoers are in the agonies of death…
suffering from the hardships, agonies and afflictions of death,
وَالْمَليِكَةُ بَاسِطُواْ أَيْدِيهِمْ
while the angels are stretching forth their hands…
beating them.
Allah said in other Ayat:
لَيِن بَسَطتَ إِلَىَّ يَدَكَ لِتَقْتُلَنِى
If you do stretch your hand against me to kill me.. (5:28)
and,
وَيَبْسُطُواْ إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ وَأَلْسِنَتَهُمْ بِالسُّوءِ
And stretch forth their hands and their tongues against you with evil. (60:2)
Ad-Dahhak and Abu Salih said that,
`stretch forth their hands,’ means, `with torment’.
In another Ayah, Allah said,
وَلَوْ تَرَى إِذْ يَتَوَفَّى الَّذِينَ كَفَرُواْ الْمَلَـيِكَةُ يَضْرِبُونَ وُجُوهَهُمْ وَأَدْبَـرَهُمْ
And if you could see when the angels take away the souls of those who disbelieve they smite their faces and their backs. (8:50)
Allah said,
وَالْمَليِكَةُ بَاسِطُواْ أَيْدِيهِمْ
(while the angels are stretching forth their hands),
beating them, until their souls leave their bodies, saying,
أَخْرِجُواْ أَنفُسَكُمُ
(“Deliver your souls!”),
When the disbeliever is near death, the angels will convey the `good news’ to him of torment, vengeance, chains, restraints, Hell, boiling water and the anger of the Most Beneficent, Most Merciful. The soul will then scatter in the body of the disbeliever and refuse to get out of it. The angels will keep beating the disbeliever until his soul exits from his body,
أَخْرِجُواْ أَنفُسَكُمُ الْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُونِ بِمَا كُنتُمْ تَقُولُونَ عَلَى اللّهِ غَيْرَ الْحَقِّ
(Saying):”Deliver your souls! This day you shall be recompensed with the torment of degradation because of what you used to say about Allah other than the truth.”
This Ayah means, today, you will be utterly humiliated because you used to invent lies against Allah and arrogantly refused to follow His Ayat and obey His Messengers.
وَكُنتُمْ عَنْ ايَاتِهِ تَسْتَكْبِرُونَ
And you used to reject His Ayat with disrespect!”
There are many Hadiths, of Mutawatir grade, that explain what occurs when the believers and disbelievers die, and we will mention these Hadiths when explaining Allah’s statement,
يُثَبِّتُ اللّهُ الَّذِينَ امَنُواْ بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الاخِرَةِ
(Allah will keep firm those who believe, with the word that stands firm in this world, and in the Hereafter). (14:27)
Allah said next
وَلَقَدْ جِيْتُمُونَا فُرَادَى كَمَا خَلَقْنَاكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ
And truly you have come unto Us alone as We created you the first time.
and this statement will be said on the Day of Return.
In another Ayah, Allah said,
وَعُرِضُواْ عَلَى رَبِّكَ صَفَا لَّقَدْ جِيْتُمُونَا كَمَا خَلَقْنَـكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ
And they will be set before your Lord in rows, (and Allah will say):”Now indeed, you have come to Us as We created you the first time.’ (18:48),
meaning, just as We started your creation, We brought you back, although you used to deny Resurrection and reject its possibility. Therefore, this is the Day of Resurrection!
Allah said,
وَتَرَكْتُم مَّا خَوَّلْنَاكُمْ وَرَاء ظُهُورِكُمْ
You have left behind you all that which We had bestowed on you.
The wealth and the money that you collected in the life of the world, you left all this behind you.
It is recorded in the Sahih that Allah’s Messenger said,
يَقُولُ ابْنُ ادَمَ مَالِي مَالِي وَهَلْ لَكَ مِنْ مَالِكَ إِلاَّ مَا أَكَلْتَ فَأَفْنَيْتَ أَوْ لَبِسْتَ فَأَبْلَيْتَ أَوْ تَصَدَّقْتَ فَأَمْضَيْتَ وَمَا سِوَى ذَلِكَ فَذَاهِبٌ وَتَارِكُهُ لِلنَّاس
The Son of Adam says, `My money, my money!’ But, what part of your money do you have, other than what you eat of it and is thus spent, what you wear and tear and what you gave in charity and thus remains (in the record of good deeds). Other than that, you will depart and leave it to the people.
Al-Hasan Al-Basri said,
“On the Day of Resurrection, the Son of Adam will be brought, as if he were a golden chariot and Allah, the Most Honored, will ask, `Where is what you collected?’
He will reply, `O Lord! I collected it and left it as intact as ever.’
Allah will say to him, `O Son of Adam! Where is what you sent forth for yourself (of righteous, good deeds),’ and he will realize that he did not send forth anything for himself.”
Al-Hasan then recited the Ayah,
وَلَقَدْ جِيْتُمُونَا فُرَادَى كَمَا خَلَقْنَاكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ وَتَرَكْتُم مَّا خَوَّلْنَاكُمْ وَرَاء ظُهُورِكُمْ
And truly you have come unto Us alone as We created you the first time. You have left behind you all that which We had bestowed on you.
Ibn Abi Hatim recorded this statement.
Allah said;
وَمَا نَرَى مَعَكُمْ شُفَعَاءكُمُ الَّذِينَ زَعَمْتُمْ أَنَّهُمْ فِيكُمْ شُرَكَاء
We see not with you your intercessors whom you claimed to be your partners.
This chastises and criticizes the disbelievers for the rivals, idols and images that they worshipped in this life, thinking they will avail them in this life and upon Resurrection, if there is Resurrection, as they thought. On the Day of Resurrection, all relationships will be cut off, misguidance will be exposed, and those whom they used to call upon as gods will disappear from them. Allah will then call them, while the rest of creation is listening,
أَيْنَ شُرَكَايِيَ الَّذِينَ كُنتُمْ تَزْعُمُونَ
(Where are My (so-called) partners whom you used to assert! (28:62)
And,
وَقِيلَ لَهُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ تَعْبُدُونَ
مِن دُونِ اللَّهِ هَلْ يَنصُرُونَكُمْ أَوْ يَنتَصِرُونَ
And it will be said to them:”Where are those that you used to worship. Instead of Allah! Can they help you or help themselves!” (26:92-93)
Allah said here,
وَمَا نَرَى مَعَكُمْ شُفَعَاءكُمُ الَّذِينَ زَعَمْتُمْ أَنَّهُمْ فِيكُمْ شُرَكَاء
(We see not with you your intercessors whom you claimed were partners).
meaning partners in worship. That is, partners in a share of your worship.
لَقَد تَّقَطَّعَ بَيْنَكُمْ
Now you and they have been cut off,
or, the Ayah is recited with the meaning:all connections,
means, and ties between you and them have been severed.
وَضَلَّ عَنكُم
and vanished from you,
you have lost,
مَّا كُنتُمْ تَزْعُمُونَ
all that you used to claim) of hope in the benefit of the idols and rivals (you worshipped with Allah).
Allah said in other Ayat,
إِذْ تَبَرَّأَ الَّذِينَ اتُّبِعُواْ مِنَ الَّذِينَ اتَّبَعُواْ وَرَأَوُاْ الْعَذَابَ وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ الاٌّسْبَابُ
وَقَالَ الَّذِينَ اتَّبَعُواْ لَوْ أَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَتَبَرَّأَ مِنْهُمْ كَمَا تَبَرَّءُواْ مِنَّا كَذَلِكَ يُرِيهِمُ اللَّهُ أَعْمَـلَهُمْ حَسَرَتٍ عَلَيْهِمْ وَمَا هُم بِخَـرِجِينَ مِنَ النَّارِ
When those who were followed, declare themselves innocent of those who followed (them), and they see the torment, then all their relations will be cut off from them. And those who followed will say:”If only we had one more chance to return, we would disown them as they have disowned us.”
Thus Allah will show them their deeds as regret for them. And they will never get out of the Fire. (2:166-167)
and,
فَإِذَا نُفِخَ فِى الصُّورِ فَلَ أَنسَـبَ بَيْنَهُمْ يَوْمَيِذٍ وَلَا يَتَسَأءَلُونَ
Then, when the Trumpet is blown, there will be no kinship among them that Day, nor will they ask of one another. (23:101)
and,
إِنَّمَا اتَّخَذْتُمْ مِّن دُونِ اللَّهِ أَوْثَـناً مَّوَدَّةَ بَيْنِكُمْ فِى الْحَيَوةِ الدُّنْيَا ثُمَّ يَوْمَ الْقِيَـمَةِ يَكْفُرُ بَعْضُكُمْ بِبَعْضٍ وَيَلْعَنُ بَعْضُكُمْ بَعْضاً وَمَأْوَاكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُمْ مِّن نَّـصِرِينَ
You have taken (for worship) idols instead of Allah, and the love between you is only in the life of this world, but on the Day of Resurrection, you shall disown each other, and curse each other, and your abode will be the Fire, and you shall have no helper. (29:25)
and,
وَقِيلَ ادْعُواْ شُرَكَأءَكُمْ فَدَعَوْهُمْ فَلَمْ يَسْتَجِيبُواْ لَهُمْ
And it will be said (to them):”Call upon your partners”, and they will call upon them, but they will give no answer to them. (28:64)
and,
وَيَوْمَ نَحْشُرُهُمْ جَمِيعًا
ثُمَّ نَقُولُ لِلَّذِينَ أَشْرَكُواْ
And the Day whereon We shall gather them all together, then We shall say to those who committed Shirk… (10:28) until,
وَضَلَّ عَنْهُم
مَّا كَانُواْ يَفْتَرُونَ
(And their invented false deities will vanish from them). (10:30)
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
৯৩-৯৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপকারীদের চেয়ে বড় অত্যাচারী আর কে আছে? সে তাঁর শরীক স্থাপন করছে বা বলছে যে, তাঁর সন্তান রয়েছে, কিংবা দাবী করছে যে, আল্লাহ তাকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন, অথচ তাকে পাঠানো হয়নি। এ জন্যেই আল্লাহ পাক বলেন, সে বলছে যে, তার কাছেও অহী পাঠানো হয়েছে, অথচ তার কাছে তা পাঠানো হয়নি। ইকরামা ও কাতাদা বলেন যে, এই আয়াতটি মুসাইলামা কাযযাবের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়।
আর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে আছে যে বলে, আল্লাহ যেমন কুরআন অবতীর্ণ করেছেন আমিও দ্রুপ অবতীর্ণ করতে পারি। অর্থাৎ সে দাবী করছে যে, আল্লাহর মত অহী সেও অবতীর্ণ করতে পারে। (লুবাব গ্রন্থে রয়েছে- ইবনে জারীর হতে তাখরীজ করা হয়েছে যে, (আরবী) -এই আয়াতটি মুসাইলামার ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। আর (আরবী)-এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয় আব্দুল্লাহ ইবনে সা’দের ব্যাপারে। সুদ্দী (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে সা’দ বলতোযদি মুহাম্মাদ (সঃ)-এর কাছে অহী করা হয়ে থাকে তবে আমার কাছেও অহী করা হয়ে থাকে। আর যদি আল্লাহ তাঁর কাছে (কুরআন) অবতীর্ণ করে থাকেন তবে আমিও তদ্রুপ অবতীর্ণ করতে পারি। মুহাম্মাদ (সঃ) বলেনঃ (আরবী) আর আমি (আরবী) বলি) যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যখন তাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তারা বলে- আমরা শুনলাম এবং ইচ্ছা করলে আমরাও এরূপ বলতে পারি।” (৮:৩১)
(আরবী) অর্থাৎ হে নবী (সঃ)! যদি তুমি ঐ সময়ের অবস্থা দেখতে, যে সময় যালিমেরা মৃত্যু যন্ত্রণায় পরিবেষ্টিত হবে! (আরবী) অর্থাৎ ফেরেশতারা মারবার জন্যে হাত উঠাবে। যেমন মহান আল্লাহ এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “(হে কাবীল। আমাকে হত্যা করার জন্যে) যদি তুমি আমার দিকে হাত উঠাও। (৫:২৮) আর এক জায়গায় তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “(হে নবী সঃ) তারা তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্যে ও ভালমন্দ বলার জন্যে তোমার দিকে হাত ও জিহ্বা প্রসারিত করে।” (৬০:২) যহ্হাক (রঃ) ও আবু সালিহ (রঃ) বলেন যে, এখানে ভাবার্থ হচ্ছে শাস্তির জন্যে হাত উঠানো। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “(হে মুহাম্মাদ সঃ)! যদি তুমি দেখতে যখন মৃত্যুমুখী কাফিরদেরকে ফেরেশতারা তাদের চেহারায় ও পিঠে মারতে রয়েছে!” এজন্যেই আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ ঐ ফেরেশতারা তাদের দেহ থেকে প্রাণ বের করার জন্যে তাদের দিকে তাদের হস্ত প্রসারিত করবেন। তারা তাদেরকে বলবেন, তোমরা তোমাদের প্রাণগুলো বের করে দাও। যখন কাফিরদের মৃত্যুর সময় নিকটবর্তী হবে তখন ফেরেশতারা তাদেরকে শাস্তি, শৃংখল, জাহান্নাম, গরম পানি এবং আল্লাহর গযবের সংবাদ প্রদান করবেন। তখন তাদের আত্মাগুলো বেরিয়ে আসতে অস্বীকার করবে এবং তাদের দেহের মধ্যে ফিরতে থাকবে। সেই সময় ফেরেশতারা তাদেরকে প্রহার করতে থাকবেন যে পর্যন্ত না তাদের আত্মাগুলো বেরিয়ে আসে। আর তারা বলবেন, নিজেদের প্রাণগুলো বের করে দাও। তোমরা যে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করতে তারই শাস্তি স্বরূপ আজকে তোমাদেরকে অপমানজনক আযাব প্রদান করা হবে। মুমিন ও কাফিরদের মৃত্যু সম্পকীয় বহু হাদীস এসেছে।
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “মুমিনদেরকে আল্লাহ পার্থিব জগতে ও পরকালে সঠিক কথার উপর অটল রাখবেন।” ইবনে মিরদুওয়াই (রঃ) এখানে গারীব সনদে একটি সুদীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে বলে কথিত আছে। ইরশাদ হচ্ছে – (আরবী) অর্থাৎ “তোমরা আমার কাছে এককভাবে এসেছো, যেভাবে আমি প্রথমবার তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলাম।” একথা তাদেরকে কিয়ামতের দিন বলা হবে। যেমন আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “(হে নবী সঃ)! তাদেরকে তোমার প্রভুর সামনে সারিবদ্ধভাবে পেশ করা হবে, (তাদেরকে আল্লাহ বলবেন) তোমরা আমার কাছে এককভাবে এসেছো, যেভাবে আমি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম। আর তোমরা এটা অস্বীকার করতে এবং এই কিয়ামতের দিনকে বহু দূরের ব্যাপার মনে করতে। এটাই হচ্ছে পুনরুত্থানের দিন।” (১৮:৪৮) তিনি আরও বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি তোমাদেরকে দুনিয়ায় যে নিয়ামত ও মালধন দান করেছিলাম তা তোমরা শুধু জমা করেই রেখেছিলে, ওগুলো দুনিয়ায় তোমাদের পিছনে ছেড়ে এসেছো।” সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “ইবনে আদম (আদম সন্তান) বলে- আমার মাল, আমার মাল। অথচ তোমার মাল তো এতটুকুই যা তুমি খেয়ে শেষ করছো, যা পরিধান করে পুরানা করেছে এবং যা দান-খয়রাত করে বাকী রেখেছো, এ ছাড়া তোমার সমস্ত সম্পদ অন্যের জন্যে। (তুমি রেখে গেলে)।”
আল্লাহ পাক আদম সন্তানকে জিজ্ঞেস করবেনঃ “তুমি যা জমা করেছিলে তা আজ কোথায়? সে উত্তরে বলবেঃ “হে আমার প্রভু! আমি দুনিয়াতে জমা করেছিলাম, বাড়িয়ে ছিলাম এবং তা সেখানেই ছেড়ে এসেছি।” অতঃপর তিনি বলবেনঃ “তোমরা যাদেরকে আমার শরীক মনে করতে তোমাদের সেই সব সুপারিশকারী কোথায়? এখন তারা সুপারিশ করছে না কেন?” এর দ্বারা তাদেরকে ভৎসনা ও তিরস্কার করা হচ্ছে। কেননা, তারা দুনিয়ায় মূর্তির পূজা করতো এবং মনে করতো যে, ওগুলো পার্থিব জীবনে ও পারলৌকিক জীবনে তাদের জন্যে উপকারী হবে। কিন্তু কিয়ামতের দিন সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। পথভ্রষ্টতা শেষ হয়ে যাবে, মূর্তিগুলোর রাজত্বের অবসান ঘটবে এবং আল্লাহ পাক লোকদেরকে সম্বোধন করে বলবেনঃ “যেসব মূর্তিকে তোমরা আমার শরীক মনে করতে সেগুলো আজ কোথায়?” তাদেরকে আরও বলা হবে- “এখন তোমাদের মিথ্যা মা’বুদগুলো কোথায়? তারা কি এখন তোমাদের কোন সাহায্য করতে পারবে, বা তোমরাই তাদেরকে কোন সাহায্য করতে পারবে কি?” এজন্যেই তিনি বলেনঃ “আমি তো তোমাদের সাথে তোমাদের সেই সুপারিশকারীদেরকে দেখছি না যাদের সম্বন্ধে তোমরা দাবী করতে যে, তারা তোমাদের কাজেকর্মে আমার শরীক। বাস্তবিকই তোমাদের পরস্পরের সম্পর্ক তো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে!” বায়নাকুম শব্দটিকে যদি (আরবী) দিয়ে অর্থাৎ বায়নুকুম পড়া যায় তবে অর্থ হবে- তোমাদের দলগুলো ভেঙ্গে দেয়া হবে। আর যদি (আরবী) দিয়ে পড়া হয় তবে ভাবার্থ হবে- তোমাদের পরস্পরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে এবং মূর্তিগুলোর নিকট থেকে তোমরা যা কিছু পাওয়ার আশা করতে সে আশা গুড়ে বালি।
যেমন তিনি বলেনঃ “যখন মাতব্বরগণ তাবেদারগণ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হয়ে যাবে এবং সবাই শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, আর তাদের যে পারস্পরিক সম্পর্ক ছিল তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আর এই তাবেদারগণ বলবে-যদি আমরা একটু (দুনিয়ায়) ফিরে যেতে পারতাম, তবে আমরাও তাদের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হতাম যেমন (আজ) তারা আমাদের থেকে পরিষ্কারভাবে পৃথক হয়ে পড়েছে। আল্লাহ এরূপই তাদেরকে তাদের কুকর্মগুলো নিষ্ফল আকাংখারূপে দেখিয়ে দিবেন, আর তাদের জাহান্নাম থেকে বের হওয়া কখনও নসীবে ঘটবে না।” মহান আল্লাহ আর এক জায়গায় বলেনঃ “যখন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে তখন তাদের পারস্পরিক বংশ সম্পর্ক কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না এবং তারা একে অপরের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদও করবে না। তিনি অন্য জায়গায় বলেনঃ “তোমরা দুনিয়ায় যে তাদের পূজা-অর্চনা করতে তা শুধুমাত্র পাথিব জীবনে মহব্বত ও ভালবাসার খাতিরে। কিন্তু কিয়ামতের দিন তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করে বসবে এবং একে অপরকে তিরস্কার করতে থাকবে, সেদিন তোমাদের আশ্রয়স্থল হবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কেউ সাহায্যকারী হবে না।” আর এক স্থানে আল্লাহ পাক বলেনঃ “তাদেরকে বলা হবে-তোমাদের শরীকদেরকে (যাদেরকে তোমরা আল্লাহর সাথে শরীক বানিয়ে নিয়েছিলে তাদেরকে) ডাক, তারা তখন তাদেরকে ডাকতে থাকবে, কিন্তু তারা তাদেরকে কোন উত্তর দেবে না।” কুরআন কারীমে এ সম্পর্কীয় বহু সংখ্যক আয়াত বিদ্যমান রয়েছে।