(Book# 114/٢٧٥)-৪৭৭ www.motaher21.net সুরা: আল-আনয়াম সুরা:৬ ১৩৮-১৪০ নং আয়াত:- وَقَالُواْ هَـذِهِ أَنْعَامٌ وَحَرْثٌ حِجْرٌ আর তারা বলে থাকেঃ এই সব নির্দিষ্ট পশু ও ক্ষেতের ফসল সুরক্ষিত, (They say that such and such cattle and crops are Hijr),

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٢٧٥)-৪৭৭
www.motaher21.net
সুরা: আল-আনয়াম
সুরা:৬
১৩৮-১৪০ নং আয়াত:-

وَقَالُواْ هَـذِهِ أَنْعَامٌ وَحَرْثٌ حِجْرٌ
আর তারা বলে থাকেঃ এই সব নির্দিষ্ট পশু ও ক্ষেতের ফসল সুরক্ষিত,
(They say that such and such cattle and crops are Hijr),

সুরা: আল-আনয়াম
আয়াত নং :-১৩৮

وَ قَالُوْا هٰذِهٖۤ اَنْعَامٌ وَّ حَرْثٌ حِجْرٌ ط لَّا یَطْعَمُهَاۤ اِلَّا مَنْ نَّشَآءُ بِزَعْمِهِمْ وَ اَنْعَامٌ حُرِّمَتْ ظُهُوْرُهَا وَ اَنْعَامٌ لَّا یَذْكُرُوْنَ اسْمَ اللّٰهِ عَلَیْهَا افْتِرَآءً عَلَیْهِؕ سَیَجْزِیْهِمْ بِمَا كَانُوْا یَفْتَرُوْنَ

তারা বলে, এ পশু ও এ ক্ষেত-খামার সুরক্ষিত। এগুলো একমাত্র তারাই খেতে পারে যাদেরকে আমরা খাওয়াতে চাই। অথচ এ বিধি-নিষেধ তাদের মনগড়া। তারপর কিছু পশুর পিঠে চড়া ও তাদের পিঠে মাল বহন করা হারাম করে দেয়া হয়েছে আবার কিছু পশুর ওপর তারা আল্লাহর নাম নেয় না। আর এসব কিছু আল্লাহ‌ সম্পর্কে তাদের মিথ্যা রটনা। শীঘ্রই আল্লাহ‌ তাদেরকে এ মিথ্যা রটনার প্রতিফল দেবেন।

وَ قَالُوۡا مَا فِیۡ بُطُوۡنِ ہٰذِہِ الۡاَنۡعَامِ خَالِصَۃٌ لِّذُکُوۡرِنَا وَ مُحَرَّمٌ عَلٰۤی اَزۡوَاجِنَا ۚ وَ اِنۡ یَّکُنۡ مَّیۡتَۃً فَہُمۡ فِیۡہِ شُرَکَآءُ ؕ سَیَجۡزِیۡہِمۡ وَصۡفَہُمۡ ؕ اِنَّہٗ حَکِیۡمٌ عَلِیۡمٌ ﴿۱۳۹﴾
আর তারা এ কথাও বলে থাকে যে, এই সব বিশেষ পশুগুলির গর্ভে যা কিছু রয়েছে তা বিশেষভাবে তাদের পুরুষদের জন্য রক্ষিত, আর তাদের নারীদের জন্য ওটা হারাম; কিন্তু গর্ভ হতে প্রসূত বাচ্চা যদি মৃত হয় তাহলে নারী-পুরুষ সবাই তা ভক্ষণে অংশী হতে পারবে। তাদের কৃত এই সব বর্ণনার প্রতিদান অতি সত্ত্বরই আল্লাহ তাদেরকে দিবেন, নিঃসন্দেহে তিনি হচ্ছেন প্রজ্ঞাময়, সর্ববিদিত।

قَدۡ خَسِرَ الَّذِیۡنَ قَتَلُوۡۤا اَوۡلَادَہُمۡ سَفَہًۢا بِغَیۡرِ عِلۡمٍ وَّ حَرَّمُوۡا مَا رَزَقَہُمُ اللّٰہُ افۡتِرَآءً عَلَی اللّٰہِ ؕ قَدۡ ضَلُّوۡا وَ مَا کَانُوۡا مُہۡتَدِیۡنَ ﴿۱۴۰﴾٪
যারা নিজেদের সন্তানদেরকে মূর্খতা ও অজ্ঞানতার কারণে হত্যা করেছে আর আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে তাঁর প্রদত্ত রিয্ককে হারাম করে নিয়েছে, তারা নিশ্চিত রূপে পথভ্রষ্ট হয়েছে; বস্তুতঃ তারা হিদায়াত গ্রহণ করার পাত্রও ছিলনা।

আয়াতের ব্যাখ্যা :- ১৩৮-১৪০

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

টিকা:১১১) আরববাসীদের রীতি ছিল, তারা কোন কোন পশু বা কোন কোন ক্ষেতের উৎপন্ন ফসল এভাবে মানত করতোঃ এটি অমুক মন্দির, অমুক আস্তানা বা অমুক হযরতের নযরানা। এ নযরানা সবাই খেতে পারতো না। বরং এর সম্পর্কিত একটি বিস্তারিত বিধান তাদের কাছে ছিল। এ বিধান অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের লোকের জন্য বিভিন্ন নযরানা নির্দিষ্ট ছিল। তাদের এ কাজটিকে আল্লাহ কেবল মুশরিকী কাজ বলেই ক্ষান্ত হননি বরং এ ব্যাপারেও তাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এটি তাদের একটি মনগড়া বিধান। অর্থাৎ যে আল্লাহর প্রদত্ত রিযিকের মধ্যে এ নযরানাগুলো নির্দিষ্ট করা হয় এবং মানত মানা হয় তিনি এ নযরানা দেবার ও মানত মানার হুকুম দেননি এবং তিনি এগুলো ব্যবহার করার ওপর এ ধরনের কোন বিধি-নিষেধও আরোপ করেননি। এসব কিছুই এ অহংকারী ও বিদ্রোহী বান্দাদের মনগড়া রচনা।

টিকা:১১২) হাদীস থেকে জানা যায়, আরববাসীরা কিছু কিছু বিশেষ নযরানা ও মানতের পশুর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা জায়েয মনে করতো না। এ পশুগুলোর পিঠে চড়ে হজ্জ করাই নিষিদ্ধ ছিল। কারণ হজ্জের জন্য লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা বলতে হতো। অনুরূপভাবে এগুলোর পিঠে সওয়ার হবার সময় এদের দুধ দোয়ার সময়, যবেহ করার সময় অথবা এদের গোশ্‌ত খাওয়ার সময় আল্লাহর নাম যাতে উচ্চারিত না হয় তার ব্যবস্থা করা হতো।

টিকা:১১৩) অর্থাৎ এ নিয়মগুলো আল্লাহ‌ নির্ধারিত নয়। কিন্তু এগুলো আল্লাহ‌ নির্ধারিত করে দিয়েছেন এ মনে করেই তারা এগুলো মেনে চলছে। কিন্তু এ ধরনের কথা মনে করার স্বপক্ষে তাদের কাছে আল্লাহর হুকুমের কোন প্রমাণ নেই বরং কেবল বাপ-দাদাদের থেকে এমনটি চলে আসছে, এ সনদই আছে তাদের কাছে।

টিকা:১১৪) মানত ও নযরানার পশুর ব্যাপারে যে মন গড়া বিধান আরববাসীদের মধ্যে প্রচলিত ছিল তার একটি ধারা এও ছিল যে, এ পশুগুলোর পেট থেকে যেসব বাচ্চা জন্মায় কেবলমাত্র পুরুষরাই তাদের গোশ্‌ত খেতে পারে। মেয়েদের জন্য তাদের গোশ্‌ত খাওয়া নাজায়েয। তবে যদি সে বাচ্চা মৃত হয় অথবা মরে যায় তাহলে পুরুষরা ও মেয়েরা সবাই তার গোশ্‌ত খেতে পারে।

টিকা:১১৫) অর্থাৎ যদিও এ রীতি-পদ্ধতিগুলো যারা রচনা করেছিল তারা ছিল তোমাদের বাপ-দাদা, তোমাদের ধর্মীয় বুযর্গ, তোমাদের নেতা ও সরদার কিন্তু এসত্ত্বেও সত্য যা তা চিরকালই সত্য। তারা তোমাদের পূর্বপুরুষ এবং তোমাদের ধর্মীয় বুযর্গ ছিল বলেই তাদের উদ্ভাবিত ভুল পদ্ধতিগুলো সঠিক ও পবিত্র হয়ে যাবে না। যেসব জালেম সন্তান হত্যার মতো জঘন্য ও নিষ্ঠুর কাজকে রেওয়াজে পরিণত করেছিল, যারা আল্লাহর প্রদত্ত রিযিককে খামখা আল্লাহর বান্দাদের জন্য হারাম করেছিল এবং যারা আল্লাহর দ্বীনের মধ্যে নিজেদের পক্ষ থেকে নতুন নতুন কথা শামিল করে সেগুলোকে আল্লাহর কথা বলে চালিয়ে দিয়েছিল তারা কেমন করে সঠিক পথ পেতে ও সফলকাম হতে পারে? তারা তোমাদের পূর্বপুরুষ ও বুযর্গ হলেও আসলে তারা গোমরাহ ছিল। তাদের অবশ্যি নিজেদের গোমরাহীর অশুভ পরিণতির মুখোমুখি হতেই হবে।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Anam
Sura:6
Verses :- 138-140

وَقَالُواْ هَـذِهِ أَنْعَامٌ وَحَرْثٌ حِجْرٌ
(They say that such and such cattle and crops are Hijr),

The Idolators Forbade Certain Types of Cattle

Allah says;

وَقَالُواْ هَـذِهِ أَنْعَامٌ وَحَرْثٌ حِجْرٌ لاَّ يَطْعَمُهَا إِلاَّ مَن نّشَاء بِزَعْمِهِمْ

And according to their claim, they say that such and such cattle and crops are Hijr (forbidden), and none should eat of them except those whom we allow.

Ali bin Abi Talhah reported that Ibn Abbas said,

“Hijr refers to what they forbade, such as the Wasilah, and the like.”

Similar was said by Mujahid, Ad-Dahhak, As-Suddi, Qatadah, Abdur-Rahman bin Zayd bin Aslam and others.

Qatadah commented on,
وَقَالُواْ هَـذِهِ أَنْعَامٌ وَحَرْثٌ حِجْرٌ
(They say that such and such cattle and crops are Hijr),

“It is a prohibition that the Shayatin appointed for their wealth, and a type of exaggeration and extremism that did not come from Allah.”

Abdur-Rahman Ibn Zayd bin Aslam said that,

حِجْرٌ
(Hijr) refers to what the idolators designated for their deities.

As-Suddi said that the Ayah,
لااَّ يَطْعَمُهَا إِلااَّ مَن نّشَاء بِزَعْمِهِمْ
(And none should eat of them except those whom we allow, they claimed…),

means, “They said, only those whom we choose can eat of them, and the rest are prohibited from eating them.”

Similar to this honorable Ayah, Allah said,

قُلْ أَرَأَيْتُمْ مَّأ أَنزَلَ اللَّهُ لَكُمْ مِّن رِّزْقٍ فَجَعَلْتُمْ مِّنْهُ حَرَامًا وَحَلَلاً قُلْ ءَاللَّهُ أَذِنَ لَكُمْ أَمْ عَلَى اللَّهِ تَفْتَرُونَ

Say:”Tell me, what provision Allah has sent down to you! And you have made of it lawful and unlawful.”

Say:”Has Allah permitted you (to do so), or do you invent a lie against Allah!” (10:59)

and,

مَا جَعَلَ اللَّهُ مِن بَحِيرَةٍ وَلَا سَأيِبَةٍ وَلَا وَصِيلَةٍ وَلَا حَامٍ وَلَـكِنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ وَأَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ

Allah has not instituted things like Bahirah or a Sa’ibah or a Wasilah or a Ham. But those who disbelieve invent lies against Allah, and most of them have no understanding. (5:103)

As-Suddi said that;

cattle forbidden to be used for burden were the Bahirah, Sa’ibah, Wasilah and Ham, as well as cattle for which the idolators did not mention Allah’s Name when slaughtering them nor when they were born.

Abu Bakr bin Ayyash said that Asim bin Abi An-Najud said,

“Abu Wa’il said to me, `Do you know the meaning of the Ayah,

وَأَنْعَامٌ حُرِّمَتْ ظُهُورُهَا

وَأَنْعَامٌ لاَّ يَذْكُرُونَ اسْمَ اللّهِ عَلَيْهَا

And (they say) there are cattle forbidden to be used for burden, and cattle on which the Name of Allah is not pronounced.

I said, `No.’

He said, `It is the Bahirah, which they would not use to for Hajj (either by riding it or carrying things on it).”‘

Mujahid also said that;

they were some of the camels belonging to idolators on which Allah’s Name was not mentioned when riding, milking, carrying things, copulation or any other action.

افْتِرَاء عَلَيْهِ

lying against Him.

against Allah.

The idolators indeed lied when they attributed this evil to Allah’s religion and Law; He did not allow them to do that nor did He approve of it.

سَيَجْزِيهِم بِمَا كَانُواْ يَفْتَرُونَ

He will recompense them for what they used to fabricate.

against Him, and falsely attribute to Him.

Allah says;

وَقَالُواْ مَا فِي بُطُونِ هَـذِهِ الَانْعَامِ خَالِصَةٌ لِّذُكُورِنَا وَمُحَرَّمٌ عَلَى أَزْوَاجِنَا وَإِن يَكُن مَّيْتَةً فَهُمْ فِيهِ شُرَكَاء

سَيَجْزِيهِمْ وَصْفَهُمْ

And they say:”What is in the bellies of such and such cattle is for our males alone, and forbidden to our females, but if it is born dead, then all have shares therein.” He will punish them for their attribution (of such false orders to Allah).

Abu Ishaq As-Subayi narrated that Abdullah bin Abi Al-Hudhayl reported that Ibn Abbas said that,
وَقَالُواْ مَا فِي بُطُونِ هَـذِهِ الَانْعَامِ خَالِصَةٌ لِّذُكُورِنَا
(And they say:”What is in the bellies of such and such cattle is for our males alone…”),

refers to milk.

Awfi said that Ibn Abbas said about this Ayah,
وَقَالُواْ مَا فِي بُطُونِ هَـذِهِ الَانْعَامِ خَالِصَةٌ لِّذُكُورِنَا
(And they say:”What is in the bellies of such and such cattle is for our males alone…”),

“It is about milk, which they prohibited for their females and allowed only their males to drink. When a sheep would give birth to a male sheep, they would slaughter it and feed it to their males, but not to their females. If the newly born lamb was a female, they would not slaughter it, but if it was stillborn, they would share in it (with their females)! Allah forbade this practice.”

Similar was said by As-Suddi.

Ash-Shabi said,

“The Bahirah’s milk was only given to the men. But if any cattle from the Bahirah died, both men and women would share in eating it.” Similar was said by Ikrimah, Qatadah and Abdur-Rahman bin Zayd bin Aslam.

Mujahid commented;
وَقَالُواْ مَا فِي بُطُونِ هَـذِهِ الَانْعَامِ خَالِصَةٌ لِّذُكُورِنَا وَمُحَرَّمٌ عَلَى أَزْوَاجِنَا
(And they say:”What is in the bellies of such and such cattle is for our males alone, and forbidden to our females…”),

“It refers to the Sa’ibah and the Bahirah.”

Abu Al-Aliyah, Mujahid and Qatadah said that Allah’s statement,
سَيَجْزِيهِمْ وَصْفَهُمْ
(He will punish them for their attribution) means,

uttering such falsehood.

This is explained by Allah’s statement,

وَلَا تَقُولُواْ لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ الْكَذِبَ هَـذَا حَلَـلٌ وَهَـذَا حَرَامٌ لِّتَفْتَرُواْ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ إِنَّ الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ لَا يُفْلِحُونَ

And say not concerning that which your tongues falsely utter:”This is lawful and this is forbidden.” so as to invent lies against Allah. Verily, those who invent lies against Allah will never prosper. (16:116)

Allah said,

إِنَّهُ حِكِيمٌ

Verily, He is All-Wise,

in His actions, statements, Law and decree.

عَلِيمٌ

All-Knower.

in the actions of His servants, whether good or evil, and He will recompense them for these deeds completely.

Allah says that those who committed these evil acts have earned the loss of this life and the Hereafter

Allah says;

قَدْ خَسِرَ الَّذِينَ قَتَلُواْ أَوْلَادَهُمْ سَفَهًا بِغَيْرِ عِلْمٍ وَحَرَّمُواْ مَا رَزَقَهُمُ اللّهُ افْتِرَاء عَلَى اللّهِ

قَدْ ضَلُّواْ وَمَا كَانُواْ مُهْتَدِينَ

Indeed lost are they who have killed their children, foolishly, without knowledge, and (they) have forbidden that which Allah has provided for them, inventing a lie against Allah. They have indeed gone astray and were not guided.

As for this life, they lost when they killed their children and made it difficult for themselves by prohibiting some types of their wealth, as an act of innovation that they invented on their own. As for the Hereafter, they will end up in the worst dwellings, because they used to lie about Allah and invent falsehood about Him.

Allah also said,

قُلْ إِنَّ الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ لَا يُفْلِحُونَ

مَتَـعٌ فِى الدُّنْيَا ثُمَّ إِلَيْنَا مَرْجِعُهُمْ ثُمَّ نُذِيقُهُمُ الْعَذَابَ الشَّدِيدَ بِمَا كَانُواْ يَكْفُرُونَ

Say:”Verily, those who invent a lie against Allah will never be successful.” (A brief) enjoyment in this world! And then unto Us will be their return, then We shall make them taste the severest torment because they used to disbelieve. (10:69-70)

Al-Hafiz Abu Bakr bin Marduwyah recorded that Ibn Abbas commented,

“If it pleases you to know how ignorant the Arabs used to be, then recite the Ayat beyond Ayah one hundred and thirty in Surah Al-An`am,

قَدْ خَسِرَ الَّذِينَ قَتَلُواْ أَوْلَادَهُمْ.
وَمَا كَانُواْ مُهْتَدِينَ

Indeed lost are they who have killed their children, foolishly, without knowledge, and (they) have forbidden that which Allah has provided for them, inventing a lie against Allah. They have indeed gone astray and were not guided.”

Al-Bukhari also recorded this in the section of his Sahih on the virtues of the Quraysh.

আয়াতের ব্যাখ্যা ১৩৮-১৪০

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, (আরবী) শব্দের অর্থ হচ্ছে হারাম বা নিষিদ্ধ অর্থাৎ যাকে তারা ‘ওয়াসীলা’ রূপে হারাম করে নিয়েছিল। (এটা হচ্ছে মুজাহিদ (রঃ), যহহাক (রঃ), সুদ্দী (রঃ), কাতাদাহ (রঃ), ইবনে যায়েদ (রঃ) প্রমুখ গুরুজনের উক্তি) তারা বলতোঃ এই পশু, এই ক্ষেত্রের ফসল হারাম, আমাদের অনুমতি ছাড়া এটা কেউ খেতে পারে না। তারা যে নিজেদের উপর এভাবে হারাম করে নিতে এবং কাঠিন্য আনয়ন করতো এটা শয়তানের পক্ষ থেকে ছিল, আল্লাহর পক্ষ থেকে ছিল না। ইবনে যায়েদ (রঃ) বলেন যে, তারা তাদের দেবতাদের খাতিরেই ওগুলো নিজেদের উপর হারাম করে নিয়েছিল। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “তোমাদের কি হয়েছে যে, যেটাকে আল্লাহ তোমাদের জীবিকা বানিয়েছিলেন সেটাকে তোমরা হারাম করে নিয়েছে এবং হারামকে হালাল করে নিয়েছো? হে নবী (সঃ)! তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর-আল্লাহ কি তোমাদেরকে এই নির্দেশ দিয়েছেন, না তোমরা তাঁর উপর মিথ্যারোপ করছো?” অন্য জায়গায় তিনি বলেনঃ “আল্লাহর কাছে বাহীরা’, ‘সায়েবা,’ ‘ওয়াসীলা’ এবং ‘হাম’-এর কোন সনদ নেই, কিন্তু এই কাফিররা আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করেছে এবং তাদের অধিকাংশই কিছুই বুঝে না।” সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, ঐ পশুগুলোকে বাহীরা, সায়েবা, ওয়াসীলা এবং হাম বলা হতো যেগুলোর পিঠে সওয়ার হওয়াকে তারা নিজেদের উপর হারাম করেছিল, কিংবা ঐ পশুগুলোকে বলা হতো যেগুলোর উপর তারা আল্লাহর নাম নিতো না, ভূমিষ্ট হওয়ার সময়েও নয় এবং যবাই করার সময়েও নয়। আবূ ওয়াইল বলেনঃ “কতগুলো পশুর উপর সওয়ার হওয়া হারাম ছিল এবং কতগুলো পশুর উপর আল্লাহর নাম নেয়া হতো না।” এই আয়াতে কোন পশু হারাম হওয়ার কথা বলা হয়েছে তা কি আপনারা জানেন? এর দ্বারা বাহীরা পশুগুলোকে বুঝানো হয়েছে, যেগুলোর উপর সওয়ার হয়ে তারা হজ্বে যেতো না, ওগুলোর উপর সওয়ার হতো না, বোঝা উঠাতো না, ওগুলোর দুধ পান করতো না এবং ওগুলোর দ্বারা বংশ বৃদ্ধিও করতো না। এ সবই হচ্ছে আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ। আল্লাহর এটা হুকুমও নয় এবং এটা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমও নয়। অতএব আল্লাহ তাদেরকে এই মিথ্যা অপবাদের শাস্তি প্রদান করবেন।

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, কাফিররা যে বলতো, এই পশুগুলোর গর্ভে যা কিছু রয়েছে তা আমাদের পুরুষদের জন্যে নির্দিষ্ট।’ এর দ্বারা পশুর দুধ উদ্দেশ্য। তারা কোন কোন পশুর দুধ স্ত্রী লোকদের উপর হারাম করে দিতো এবং পুরুষেরা পান করতো। যদি বকরীর নর বাচ্চা পয়দা হতো তবে তা যবাই করে শুধু পুরুষ লোকেরাই খেতো, নারীদেরকে দিতো না। তাদেরকে বলতোঃ “তোমাদের জন্যে এটা হারাম।” মাদী বাচ্চা হলে ওটাকে যবাই করতো না, বরং পালন করতো। আর যদি মৃত বাচ্চা পয়দা হতো তবে পুরুষ নারী সবাই মিলিতভাবে খেতো। আল্লাহ এরূপ করতে নিষেধ করলেন।

শাবী (রঃ) বলেন যে, বাহীরা পশুর দুধ শুধুমাত্র পুরুষেরাই খেতো। কোন পশু মরে গেলে পুরুষদের সাথে নারীদেরকেও অংশ দেয়া হতো। তাই ইরশাদ হচ্ছে যে, তাদের কৃত এইসব বিশেষণের প্রতিদান অতিসত্বরই তাদেরকে প্রদান করা হবে। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ- (আরবী) অর্থাৎ “তোমাদের রসনা যে মিথ্যা বলছে তা তোমরা বলো না যে, এটা হালাল এবং এটা হারাম, এই উদ্দেশ্যে যে, তোমরা আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ দেবে, নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ দেবে তারা কখনও সফলকাম হবে না।” (১৬:১১৬)।

আল্লাহ পাক স্বীয় কাজে ও কথায় বড় বিজ্ঞানময় এবং তিনি স্বীয় বান্দাদের ভাল ও মন্দ কাজ সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল। সুতরাং তিনি তাদেরকে তাদের প্রতিদান পূর্ণরূপে প্রদান করবেন।

আল্লাহ পাক বলছেন যে, যারা এসব কাজ করে তারা ইহকালেও ক্ষতিগ্রস্ত এবং পরকালেও ক্ষতিগ্রস্ত। দুনিয়ার ক্ষতি এই যে, সন্তানদেরকে হত্যা করে তারা ধ্বংসের মুখে নিপতিত হলো, তাদের ধন-সম্পদে সংকীর্ণতা এসে গেল, আর নিজেদের পক্ষ থেকে তারা যে নতুন প্রথা চালু করলো তার ফলে ঐ উপকারী বস্তুগুলো হতে তারা বঞ্চিত হয়ে গেল। পরকালে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার স্বরূপ এই যে, তারা সবচেয়ে জঘন্য বাসস্থানের অধিকারী হলো। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ “নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়, তারা কখনও সফলকাম হবে না, অল্প কয়েকদিন তারা দুনিয়ায় মজা উপভোগ করবে, অতঃপর তাঁরই কাছে তাদেরকে ফিরে যেতে হবে, তারপর তাদের কুফরীর কারণে তাদেরকে কঠিন শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।” হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “যদি তোমরা আরবদের মূখ ও অজ্ঞতার পরিচয় লাভ করতে আগ্রহী হও তবে সূরায়ে আনআমের একশ’ ত্রিশ আয়াতের পরে পাঠ কর (আরবী)-এই আয়াত।” (এটা ইমাম বুখারী (রঃ) মানাকিব বা রাসূলুলাহ (সঃ)-এর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণের প্রশংসায় বর্ণনা করেছেন এবং ইবনে মিরদুওয়াই (রঃ) এই আয়াতের তাফসীরে এটা তাখরীজ করেছেন)

তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
১৩৮-১৪০ নং আয়াতের তাফসীর:

আলোচ্য আয়াতগুলোতে মুশরিকদের জাহিলী বিধান এবং ভ্রান্ত ধর্মের আরো কয়েকটি চিত্র বর্ণনা করা হচ্ছে। حِجْرٌ (অর্থ নিষেধ) এখানে محجور তথা নিষিদ্ধ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

তাদের ভ্রান্ত ধর্মের একটি চিত্র হল: অমুক পশু বা অমুক জমির ফসল ব্যবহার নিষিদ্ধ। এটা কেবল সেই খেতে পারবে যাকে আমরা অনুমতি দেব। আর এ অনুমতি মূর্তিদের খাদেম ও পুরোহিত পাণ্ডাদের জন্যই দেয়া হত।

আরেকটি চিত্র হল:

(وَأَنْعَامٌ حُرِّمَتْ ظُهُوْرُهَا)

“এ বিশেষ পশুগুলোর ওপর আরোহণ করা ও ভার বহন হারাম করা হয়েছে” অর্থাৎ তারা বিভিন্ন প্রকারের পশুকে মূর্তিদের নামে উৎসর্গ করে স্বাধীন ছেড়ে দিত। তাদের দ্বারা তারা বোঝা বহন অথবা সওয়ারীর কাজ নিত না। যেমন বাহীরাহ, সায়েবাহ ইত্যাদির আলোচনা পূর্বে হয়েছে।

আরেকটি চিত্র হল:

(وَأَنْعَامٌ لَّا يَذْكُرُوْنَ اسْمَ اللّٰهِ)

“আর কতকগুলো বিশেষ পশু রয়েছে যেগুলোকে যবাই করার সময় তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে না” অর্থাৎ তারা যবেহ করার সময় নিজেদের মূর্তিদের নাম নিত, আল্লাহ তা‘আলার নাম নিত না। কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন, এই পশুগুলোর ওপর সওয়ার হয়ে হজ্জে যেত না। মোটকথা তারা আল্লাহ তা‘আলার ওপর মিথ্যারোপ করত।

আরেকটি চিত্র হল:

(فَهُمْ فِيْهِ شُرَكَا۬ءُ)

“সকলে এতে অংশীদার”যে পশুগুলো মূর্তির নামে উৎসর্গ করত সেগুলোর মধ্য থেকে কোনটার ব্যাপারে তারা বলত যে, এদের দুধ এবং এদের পেট থেকে জন্মলাভকারী জীবন্ত বাছুর আমাদের পুরুষদের জন্য হালাল এবং মহিলাদের জন্য হারাম। তবে যদি বাচ্চা মৃত জন্ম নিত তাহলে তা খাওয়ার ব্যাপারে পুরুষ ও মহিলা সমান ছিল।

এসব কৃতকর্মের ফলাফল আল্লাহ তা‘আলা অচিরেই দেবেন।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুশরিকদের কয়েকটি শির্কী চিত্র জানতে পারলাম।
২. সন্তান হত্যা মহাপাপ, কিন্তু শয়তান মানুষের কাছে তা শোভনীয় করে তোলে।
৩. বিশ্বাস অনুযায়ী মানুষের কর্ম প্রকাশ পায়।

Leave a Reply