أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٢٩٥)-৪৯৮
www.motaher21.net
সুরা: আল্ আরাফ
সুরা:৭
২৭-৩০ নং আয়াত:-
یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ لَا یَفۡتِنَنَّکُمُ الشَّیۡطٰنُ
হে আদম সন্তান! শাইতান যেন তোমাদেরকে সেরূপ প্রলুব্ধ করতে না পারে:
Warning against the Lures of Shaytan :
یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ لَا یَفۡتِنَنَّکُمُ الشَّیۡطٰنُ کَمَاۤ اَخۡرَجَ اَبَوَیۡکُمۡ مِّنَ الۡجَنَّۃِ یَنۡزِعُ عَنۡہُمَا لِبَاسَہُمَا لِیُرِیَہُمَا سَوۡاٰتِہِمَا ؕ اِنَّہٗ یَرٰىکُمۡ ہُوَ وَ قَبِیۡلُہٗ مِنۡ حَیۡثُ لَا تَرَوۡنَہُمۡ ؕ اِنَّا جَعَلۡنَا الشَّیٰطِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ لِلَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۲۷﴾
হে আদম সন্তান! শাইতান যেন তোমাদেরকে সেরূপ প্রলুব্ধ করতে না পারে যেরূপ তোমাদের মাতা-পিতাকে (প্রলুব্ধ করে) জান্নাত হতে বহিস্কার করেছিল এবং তাদেরকে তাদের লজ্জাস্থান দেখানোর জন্য বিবস্ত্র করেছিল। সে (শাইতান) নিজে এবং তার দল তোমাদেরকে দেখতে পায়, অথচ তোমরা তাদেরকে দেখতে পাওনা। নিঃসন্দেহে আমি অবিশ্বাসীদের জন্য শাইতানকে বন্ধু ও অভিভাবক বানিয়ে দিয়েছি।
وَ اِذَا فَعَلُوۡا فَاحِشَۃً قَالُوۡا وَجَدۡنَا عَلَیۡہَاۤ اٰبَآءَنَا وَ اللّٰہُ اَمَرَنَا بِہَا ؕ قُلۡ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَاۡمُرُ بِالۡفَحۡشَآءِ ؕ اَتَقُوۡلُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۸﴾
যখন তারা কোন লজ্জাস্কর ও অশ্লীল আচরণ করে তখন তারা বলেঃ আমরা আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে এসব কাজ করতে দেখেছি এবং আল্লাহও আমাদেরকে এটা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তুমি বলঃ না আল্লাহ কখনও অশ্লীল ও লজ্জাস্কর আচরণের নির্দেশ দেননা, তোমরা কি আল্লাহ সম্পর্কে এমন সব কথা বলছ যে বিষয়ে তোমাদের কোন জ্ঞান নেই?
قُلۡ اَمَرَ رَبِّیۡ بِالۡقِسۡطِ ۟ وَ اَقِیۡمُوۡا وُجُوۡہَکُمۡ عِنۡدَ کُلِّ مَسۡجِدٍ وَّ ادۡعُوۡہُ مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ ۬ؕ کَمَا بَدَاَکُمۡ تَعُوۡدُوۡنَ ﴿ؕ۲۹﴾
তুমি বলঃ আমার রাব্ব ন্যায় বিচারের আদেশ দিয়েছেন এবং তোমরা প্রত্যেক সালাতে তোমাদের মনযোগ স্থির রেখ এবং তাঁর আনুগত্যে বিশুদ্ধ মনে একনিষ্ঠভাবে তাঁকেই ডাক; তোমাদেরকে প্রথম যেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে, তোমরা তেমনিভাবে ফিরে আসবে।
فَرِیۡقًا ہَدٰی وَ فَرِیۡقًا حَقَّ عَلَیۡہِمُ الضَّلٰلَۃُ ؕ اِنَّہُمُ اتَّخَذُوا الشَّیٰطِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ یَحۡسَبُوۡنَ اَنَّہُمۡ مُّہۡتَدُوۡنَ ﴿۳۰﴾
আল্লাহ এক দলকে সৎ পথে পরিচালিত করেছেন এবং অপর দলের জন্য সংগত কারণেই ভ্রান্তি নির্ধারিত হয়েছে,তারা আল্লাহকে ছেড়ে শাইতানকে অভিভাবক ও বন্ধু বানিয়েছিল এবং নিজেদেরকে সৎ পথগামী মনে করত।
২৭-৩০ নং আয়াতের তাফসীরঃ
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
মানুষ যেন তাদের আদি পিতা আদম (আঃ)-এর মত শয়তানের ধোঁকার মুখোমুখি না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَقُلْنَا يٰٓاٰدَمُ إِنَّ هٰذَا عَدُوٌّ لَّكَ وَلِزَوْجِكَ فَلَا يُخْرِجَنَّكُمَا مِنَ الْجَنَّةِ فَتَشْقٰي)
“অতঃপর আমি বললাম: ‘হে আদম! নিশ্চয়ই এ তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু, সুতরাং সে যেন কিছুতেই তোমাদেরকে জান্নাত হতে বের করে না দেয়, দিলে তোমরা বিপদগ্রস্থ হবে।” (সূরা ত্বহা ২০:১১৭)
(إِنَّه۫ يَرٰكُمْ هُوَ…. )
‘সে নিজে এবং তার দল তোমাদেরকে এমনভাবে দেখে…’ অর্থাৎ শয়তান ও তার অনুসারীরা তোমাদেরকে সর্বদা দেখে কিন্তু তোমরা দেখতে পার না। শয়তানের বন্ধু তারাই যারা ঈমান আনে না।
(وَإِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً)
‘যখন তারা (কাফিররা) কোন অশ্লীল কাজ করে’ অর্থাৎ কাফিররা যখন কোন খারাপ কাজ করে তখন বলে, এটাই সঠিক। কারণ বাপ-দাদাদেরকে এর ওপর পেয়েছি। তারা কি খারাপ কাজ করেছে? এরূপই হবে অমুসলিম ব্যক্তির যুক্তি ও দলীল। কিন্তু যিনি আল্লাহভীরু মুসলিম কখনও বাপ-দাদার দোহাই দিতে পারে না। বরং আল্লাহ তা‘আলার আদেশ-নিষেধ মান্য করাই হল তার একমাত্র কাজ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَكَذٰلِكَ مَآ أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ فِيْ قَرْيَةٍ مِّنْ نَّذِيْرٍ إِلَّا قَالَ مُتْرَفُوْهَآ لا إِنَّا وَجَدْنَآ اٰبَا۬ءَنَا عَلٰٓي أُمَّةٍ وَّإِنَّا عَلٰٓي اٰثٰرِهِمْ مُّقْتَدُوْنَ)
“অনুরূপভাবে তোমার পূর্বে কোন জনপদে যখনই কোন সতর্ককারী প্রেরণ করেছি তখন তার সমৃদ্ধশালী ব্যক্তিরা বলত: আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি এক মতাদর্শের ওপর এবং আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করছি।” (সূরা যুখরুফ ৪৩:২৩)
ইসলামের পূর্বে মুশরিকরা উলঙ্গ অবস্থায় বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করত এবং বলত, আমরা যেভাবে দুনিয়াতে আগমন করেছি সেভাবে তাওয়াফ করতে চাই। কেননা এ পোশাক পরিধান করে আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতার কাজ করেছি, তাই এ পোশাকে তাওয়াফ করা উচিত নয়। এ লজ্জাজনক কাজে বাপ-দাদার দোহাই দিত আর বলত, আল্লাহ তা‘আলাই আমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ধমক দিয়ে বলেন:
(وَإِذَا قِيْلَ لَهُمْ تَعَالَوْا إِلٰي مَآ أَنْزَلَ اللّٰهُ وَإِلَي الرَّسُوْلِ قَالُوْا حَسْبُنَا مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ اٰبَا۬ءَنَا ط أَوَلَوْ كَانَ اٰبَا۬ؤُهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ شَيْئًا وَّلَا يَهْتَدُوْنَ)
“যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দিকে ও রাসূলের দিকে আস, তারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাতে পেয়েছি তা-ই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাদের পূর্বপুরুষগণ কিছুই জানত না এবং সৎপথ প্রাপ্তও ছিল না, (তবুও কি তাদের অনুসরণ করবে?)।” (সূরা মায়িদা ৫:১৪)
بِالْقِسْطِ ‘ন্যায়পরায়ণতা’ বলতে
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ
অর্থাৎ তাওহীদ প্রতিষ্ঠা বুঝানো হয়েছে।
(وَاَقِیْمُوْا وُجُوْھَکُمْ)
‘তোমাদের চেহারা স্থির রাখবে’ ইমাম শাওকানী (রাঃ) এর অর্থ বর্ণনা করেছেন: তোমরা সালাতে চেহারাকে কেবলার দিকে করে নাও, যে মাসজিদেই থাক না কেন।
ইমাম ইবনু কাসীর এ ‘স্থির’ রাখা বলতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর আনুগত্য এবং পরবর্তী বাক্য থেকে আল্লাহ তা‘আলার জন্য নিষ্ঠাবান হওয়াকে বুঝিয়েছেন। তিনি বলেন: প্রত্যেক আমল কবূল হবার জন্য জরুরী হল শরীয়ত অনুযায়ী হওয়া এবং তা কেবল আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হওয়া। আয়াতে এ কথাগুলোর প্রতি তাকীদ করা হয়েছে। (ইবনু কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(کَمَا بَدَاَکُمْ تَعُوْدُوْنَ)
‘তিনি যেভাবে প্রথমে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তোমরা সেভাবে (পুনরুত্থানের জন্য) ফিরে আসবে।’ অর্থাৎ যেমন আমি প্রথমবার তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি তোমরা কিছুই ছিলে না। তিনি আবার তেমন ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(يَوْمَ نَطْوِي السَّمَا۬ءَ كَطَيِّ السِّجِلِّ لِلْكُتُبِ ط كَمَا بَدَأْنَآ أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيْدُه۫ ط وَعْدًا عَلَيْنَا ط إِنَّا كُنَّا فٰعِلِيْنَ)
“সে দিন আকাশমণ্ডলীকে গুটিয়ে ফেলবো, যেভাবে গুটানো হয় লিখিত দফতর; যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব; এ আমার ওয়াদা, আমি এটা পালন করবই।” (সূরা আম্বিয়াহ ৩১:১০৪)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَهُوَ الَّذِيْ يَبْدَؤُا الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيْدُه۫ وَهُوَ أَهْوَنُ عَلَيْهِ ط وَلَهُ الْمَثَلُ الْأَعْلٰي فِي السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ ج وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ)
“তিনি সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তিনিই আবার তা পুনরাবৃত্তি করবেন এটা তার জন্য খুবই সহজ। আসমান ও জমিনে সর্বোচ্চ বর্ণনা তাঁরই। আর তিনিই প্রতাপশালী মহাবিজ্ঞ।” (সূরা রূম ৩০:২৭)
(فَرِیْقًا ھَدٰی وَفَرِیْقًا حَقَّ عَلَیْھِمُ الضَّلٰلَةُ)
‘একদলকে তিনি সৎপথে পরিচালিত করেছেন এবং অপর দলের পথভ্রান্তি অবধারিত হয়েছে।’ অর্থাৎ বান্দাদেরকে দু‘দলে বিভক্ত করেছেন। একদলকে সঠিক পথে হিদায়াতের তাওফীক দান করেছেন। আরেক দলের ওপর পথভ্রষ্টতা আবশ্যক হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! কোন লোক জান্নাতীদের আমল করতে থাকে, এমন কি তার ও জান্নাতের মধ্যে মাত্র এক গজের ব্যবধান থেকে যায়। এমতাবস্থায় তাকদীরের লিখন জয় যুক্ত হয়ে যায়, ফলে সে জাহান্নামীদের আমল করতে শুরু করে এবং এর উপরেই মৃত্যু বরণ করে। সুতরাং সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। পক্ষান্তরে কোন লোক সারা জীবন ধরে জাহান্নামীদের আমল করতে থাকে এবং জাহান্নাম হতে মাত্র এক গজ দূরে অবস্থান করে। এমন সময় তার তাকদীর জয়যুক্ত হয়ে যায় ফলে সে জান্নাতীদের আমল শুরু করে দেয় এবং ঐ অবস্থায় মারা যায় আর জান্নাতে প্রবেশ করে। (সহীহ বুখারী হা: ৬৫৯৪)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. শয়তান যে কোন কৌশলে হোক প্রতারণায় ফেলার চেষ্টা করবে, সুতরাং শয়তানের প্রতারণা থেকে সাবধান থাকতে হবে।
২. আল্লাহ তা‘আলা সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ হতে নিষেধ করেন।
৩. বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে পরকালে মুক্তি পাওয়া যাবে না, সুতরাং বাপ-দাদার অনুসরণ বর্জন করে কুরআন-সুন্নাহর অনুসরণ করাটাই হল মুক্তির পথ।
৪. মানুষের পার্থিব জীবনই শেষ নয়। অবশ্যই পুনরুত্থান হবে, জীবনের ভাল-মন্দ সব কর্মের হিসাব হবে এবং প্রতিদান ও প্রতিফল ভোগ করতে হবে।
৫. ঈমান অবস্থায় মৃত্যু হওয়াটাই সৌভাগ্যের বিষয়। সুতরাং আল্লাহ তা‘আলার কাছে এ প্রার্থনা করতে হবে।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Araf
Sura:7
Verses :- 27-30
یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ لَا یَفۡتِنَنَّکُمُ الشَّیۡطٰنُ
Warning against the Lures of Shaytan :
Allah says;
يَا بَنِي ادَمَ لَا يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُم مِّنَ الْجَنَّةِ يَنزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْءَاتِهِمَا إِنَّهُ يَرَاكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ إِنَّا جَعَلْنَا الشَّيَاطِينَ أَوْلِيَاء لِلَّذِينَ لَا يُوْمِنُونَ
O Children of Adam! Let not Shaytan deceive you, as he got your parents out of Paradise, stripping them of their raiment, to show them their private parts. Verily, he and his tribe see you from where you cannot see them. Verily, We made the Shayatin friends of those who believe not.
Allah warns the Children of Adam against Iblis and his followers, by explaining about his ancient enmity for the father of mankind, Adam peace be upon him. Iblis plotted to have Adam expelled from Paradise, which is the dwelling of comfort, to the dwelling of hardship and fatigue (this life) and caused him to have his private part uncovered, after it had been hidden from him. This, indeed, is indicative of deep hatred (from Shaytan towards Adam and mankind).
Allah said in a similar Ayah,
أَفَتَتَّخِذُونَهُ وَذُرِّيَّتَهُ أَوْلِيَأءَ مِن دُونِى وَهُمْ لَكُمْ عَدُوٌّ بِيْسَ لِلظَّـلِمِينَ بَدَلاً
Will you then take him (Iblis) and his offspring as protectors and helpers rather than Me, while they are enemies to you! What an evil is the exchange for the wrongdoers. (18:50).
Disbelievers commit Sins and claim that Allah commanded Them to do so!
Mujahid said,
“The idolators used to go around the House (Ka`bah) in Tawaf while naked, saying, `We perform Tawaf as our mothers gave birth to us.’
The woman would cover her sexual organ with something saying, `Today, some or all of it will appear, but whatever appears from it, I do not allow it (it is not for adultery or for men to enjoy looking at!).”‘
Allah sent down the Ayah,
وَإِذَا فَعَلُواْ فَاحِشَةً قَالُواْ وَجَدْنَا عَلَيْهَا ابَاءنَا وَاللّهُ أَمَرَنَا بِهَا
And when they commit a Fahishah (sin), they say:”We found our fathers doing it, and Allah has commanded it for us.”
I say, the Arabs, with the exception of the Quraysh, used to perform Tawaf naked. They claimed they would not make Tawaf while wearing the clothes that they disobeyed Allah in. As for the Quraysh, known as Al-Hums, they used to perform Tawaf in their regular clothes. Whoever among the Arabs borrowed a garment from one of Al-Hums, he would wear it while in Tawaf. And whoever wore a new garment, would discard it and none would wear it after him on completion of Tawaf. Those who did not have a new garment, or were not given one by Al-Hums, then they would perform Tawaf while naked.
Even women would go around in Tawaf while naked, and one of them would cover her sexual organ with something and proclaim, “Today, a part or all of it will appear, but whatever appears from it I do not allow it.”
Women used to perform Tawaf while naked usually at night. This was a practice that the idolators invented on their own, following only their forefathers in this regard. They falsely claimed that what their forefathers did was in fact following the order and legislation of Allah. Allah then refuted them, Allah said,
وَإِذَا فَعَلُواْ فَاحِشَةً قَالُواْ وَجَدْنَا عَلَيْهَا ابَاءنَا وَاللّهُ أَمَرَنَا بِهَا
(And when they commit a Fahishah, they say:”We found our fathers doing it, and Allah has commanded it for us”).
Allah does not order Fahsha’, but orders Justice and Sincerity
Allah replied to this false claim,
قُلْ
Say, (O Muhammad, to those who claimed this),
إِنَّ اللّهَ لَا يَأْمُرُ بِالْفَحْشَاء
“Nay, Allah never commands Fahsha’…,”
meaning, the practice you indulge in is a despicable sin, and Allah does not command such a thing.
أَتَقُولُونَ عَلَى اللّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
“Do you say about Allah what you know not!”
that is, do you attribute to Allah statements that you are not certain are true.
Allah said next
قُلْ أَمَرَ رَبِّي بِالْقِسْطِ
Say:”My Lord has commanded justice, (fairness and honesty),”
وَأَقِيمُواْ وُجُوهَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ
“And that you should face Him only, in every Masjid, and invoke Him only making your religion sincere to Him…”
This Ayah means, Allah commands you to be straightforward in worshipping Him, by following the Messengers who were supported with miracles and obeying what they conveyed from Allah and the Law that they brought. He also commands sincerity in worshipping Him, for He, Exalted He is, does not accept a good deed until it satisfies these two conditions:being correct and in conformity with His Law, and being free of Shirk.
The Meaning of being brought into Being in the Beginning and brought back again
Allah’s saying
كَمَا بَدَأَكُمْ تَعُودُونَ
فَرِيقًا هَدَى وَفَرِيقًا حَقَّ عَلَيْهِمُ الضَّلَلَةُ
As He brought you in the beginning, so shall you be brought into being again. A group He has guided, and a group deserved to be in error;
There is some difference over the meaning of:
كَمَا بَدَأَكُمْ تَعُودُونَ
(As He brought you in the beginning, so shall you be brought into being again).
Ibn Abi Najih said that Mujahid said that it means,
“He will bring you back to life after you die.”
Al-Hasan Al-Basri commented,
“As He made you begin in this life, He will bring you back to life on the Day of Resurrection.”
Qatadah commented on:
“He started their creation after they were nothing, and they perished later on, and He shall bring them back again.”
Abdur-Rahman bin Zayd bin Aslam said,
“As He created you in the beginning, He will bring you back in the end.”
This last explanation was preferred by Abu Jafar Ibn Jarir and he supported it with what he reported from Ibn Abbas,
“The Messenger of Allah stood up and gave us a speech, saying,
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّكُمْ تُحْشَرُونَ إِلَى اللهِ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلاًا
O people! You will be gathered to Allah while barefooted, naked and uncircumcised,
كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ
As We began the first creation, We shall repeat it. (It is) a promise binding upon Us. Truly, We shall do it. (21:104)
This Hadith was collected in the Two Sahihs.
Ali bin Abi Talhah reported that Ibn Abbas commented on the Ayah,
كَمَا بَدَأَكُمْ تَعُودُونَ
فَرِيقًا هَدَى وَفَرِيقًا حَقَّ عَلَيْهِمُ الضَّلَلَةُ
As He brought you in the beginning, so shall you be brought into being again. A group He has guided, and a group deserved to be in error;
“Allah, the Exalted, began the creation of the Sons of Adam, some believers and some disbelievers, just as He said,
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ فَمِنكُمْ كَافِرٌ وَمِنكُم مُّوْمِنٌ
(He it is Who created you, then some of you are disbelievers and some of you are believers) (64:2). He will then return them on the Day of Resurrection as He started them, some believers and some disbelievers.
I say, what supports this meaning, is the Hadith from Ibn Mas`ud that Al-Bukhari recorded, that the Prophet said:
فَوَالَّذِي لَا إِلَهَ غَيرُهُ إِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلاَّ بَاعٌ أَوْ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ فَيَدْخُلُهَا
وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلاَّ بَاعٌ أَوْ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَدْخُلُ الْجَنَّة
By He, other than Whom there is no god, one of you might perform the deeds of the people of Paradise until only the length of an arm or a forearm would separate him from it. However, that which was written in the Book takes precedence, and he commits the work of the people of the Fire and thus enters it.
And one of you might perform the deeds of the people of the Fire until only the length of an arm or a forearm separates between him and the Fire. However, that which was written in the Book takes precedence, and he performs the work of the people of Paradise and thus enters Paradise.
We should combine this meaning — if it is held to be the correct meaning for the Ayah — with Allah’s statement:
فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفاً فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِى فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا
So set you your face towards the religion, Hanifan. Allah’s Fitrah with which He has created mankind, (30:30), and what is recorded in the Two Sahihs from Abu Hurayrah who said that the Messenger of Allah said:
كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ وَيُنَصِّرَانِهِ وَيُمَجِّسَانِه
Every child is born upon the Fitrah, it is only his parents who turn him into a Jew, a Christian or a Zoroastrian.
Muslim recorded that Iyad bin Himar said that the Messenger of Allah said,
يَقُولُ اللهُ تَعَالـى إِنِّي خَلَقْتُ عِبَادِي حُنَفَاءَ فَجَاءَتْهُمُ الشَّيَاطِينُ فَاجْتَالَتْهُمْ عَنْ دِينِهِم
Allah said, `I created My servants Hunafa (monotheists), but the devils came to them and deviated them from their religion.
The collective meaning here is, Allah created His creatures so that some of them later turn believers and some turn disbelievers. Allah has originally created all of His servants able to recognize Him, to single Him out in worship, and know that there is no deity worthy of worship except Him. He also took their covenant to fulfill the implications of this knowledge, which He placed in their consciousness and souls. He has decided that some of them will be miserable and some will be happy,
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ فَمِنكُمْ كَافِرٌ وَمِنكُم مُّوْمِنٌ
(He it is Who created you, then some of you are disbelievers and some of you are believers). (64:2)
Also, a Hadith states,
كُلُّ النَّاسِ يَغْدُو فَبَايِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا
All people go out in the morning and sell themselves, and some of them free themselves while some others destroy themselves.
Allah’s decree will certainly come to pass in His creation. Verily, He it is
وَالَّذِي قَدَّرَ فَهَدَى
(Who has measured (everything); and then guided) (87:3), and,
الَّذِي أَعْطَى كُلَّ شَيْءٍ خَلْقَهُ ثُمَّ هَدَى
(He Who gave to each thing its form and nature, then guided it aright). (20:50)
And in the Two Sahihs:
فَأَمَّا مَنْ كَانَ مِنْكُمْ مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَسَيُيَسَّرُ لِعَمَلِ أَهْلِ السَّعَادَةِ وَأَمَّا مَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الشَّقَاوَةِ فَسَيُيَسَّرُ لِعَمَلِ أَهْلِ الشَّقَاوَة
As for those among you who are among the people of happiness, they will be facilitated to perform the deeds of the people of happiness. As for those who are among the miserable, they will be facilitated to commit the deeds of the miserable.
This is why Allah said here,
فَرِيقًا هَدَى وَفَرِيقًا حَقَّ عَلَيْهِمُ الضَّلَلَةُ
(A group He has guided, and a group deserved to be in error;),
Allah then explained why,
إِنَّهُمُ اتَّخَذُوا الشَّيَاطِينَ أَوْلِيَاء مِن دُونِ اللّهِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُم مُّهْتَدُونَ
(because) surely, they took the Shayatin as supporters instead of Allah, and think that they are guided.
Ibn Jarir said,
“This is one of the clearest arguments proving the mistake of those who claim that Allah does not punish anyone for disobedient acts he commits of deviations he believes in until after knowledge of what is correct reaches him, then he were to obstinately avoid it anyway. If this were true, then there would be no difference between the deviations of the misguided group – their belief that they are guided – and the group that is in fact guided. Yet Allah has differentiated between the two in this noble Ayah, doing so in both name and judgement.
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ তা’আলা এখানে আদম সন্তানদেরকে ইবলীস ও তার সন্তানদের থেকে ভয় প্রদর্শন করে বলছেন- মানব-পিতা আদম (আঃ)-এর প্রতি ইবলীসের পুরাতন শক্রতা রয়েছে। এ কারণেই সে তাকে সুখময় স্থান জান্নাত থেকে বের করিয়ে কষ্টের জায়গা নশ্বর জগতে বসতি স্থাপন করিয়েছে। আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ)-এর আবৃত দেহ অনাবৃত হয়ে পড়ে। এসব ছিল তাঁর প্রতি চরম শক্রতারই পরিচায়ক। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তোমরা কি আমাকে ছেড়ে ইবলীস ও তার সন্তানদেরকে নিজেদের বন্ধু বানিয়ে নিচ্ছ? অথচ তারা তো তোমাদের শত্রু! অত্যাচারীদের জন্যে জঘন্য প্রতিদান রয়েছে।”(১৮:৫০)
২৮-৩০ নং আয়াতের তাফসীর:
আরবের মুশরিকরা উলঙ্গ হয়ে কা’বার তাওয়াফ করতো এবং বলতোঃ “জন্মের সময় আমরা যেমন ছিলাম তেমনভাবেই আমরা তাওয়াফ করবো।” স্ত্রীলোকেরা কাপড়ের পরিবর্তে চামড়ার কোন ছোট অংশ বা অন্য কোন বস্তু লজ্জাস্থানে বেঁধে নিতে এবং দেহের অবশিষ্ট অংশগুলো উলঙ্গই থাকতো। তাদেরকে বলা হতো- আজ দেহের কিছু অংশ অথবা সম্পূর্ণ অংশ খোলা রাখা হবে। কিন্তু যে অংশই খোলা থাকবে তা কারো জন্যে হালাল নয়। তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “এই লোকগুলো যখন কোন লজ্জাজনক কাজ করে তখন বলে-আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে এরূপই করতে দেখেছি এবং আল্লাহর নির্দেশ এটাই।” কুরাইশরা ছাড়া সারা আরববাসী তাদের দিন ও রাত্রির পোশাক পরিধান করে তাওয়াফ করতো না এবং এর কারণ বর্ণনা করতো যে, যে কাপড় পরিধান করে তারা পাপ কাজ করেছে, সে কাপড় পরে কি করে তারা তাওয়াফ করতে পারে? কিন্তু কুরাইশ গোত্র কাপড় পরেই কাবাঘর প্রদক্ষিণ করতো। স্ত্রীলোকেরাও প্রায় উলঙ্গ হয়েই তাওয়াফ করতো এবং তারা তাওয়াফ করতো রাত্রে। এগুলো তারা নিজেদের পক্ষ থেকেই আবিষ্কার করে নিয়েছিল এবং পূর্বপুরুষদের অনুসরণ করছিল। তাদের বিশ্বাস ছিল এই যে, তাদের পূর্বপুরুষদের এই কাজগুলো আল্লাহ তা’আলার হুকুমের ভিত্তিতেই ছিল। তাই মহান আল্লাহ তাদের এ দাবী খণ্ডন করে বলেনঃ হে মুহাম্মাদ (সঃ)!
তাদেরকে বলে দাও- তোমরা যে বেহায়াপনা, অশ্লীল ও অশোভনীয় কাজে লিপ্ত রয়েছে, আল্লাহ এ ধরনের কাজের কখনও হুকুম দেন না। তোমরা এমন বিষয়ে আল্লাহকে সম্বন্ধযুক্ত করছো যে বিষয়ে তোমাদের কোনই জ্ঞান নেই। হে নবী (সঃ)! তুমি ঘোষণা করে দাও- আমার প্রভু ন্যায় প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দিয়ে থাকেন এবং তিনি এই নির্দেশও দেন যে, তোমরা তাঁর ইবাদতের সময় তোমাদের মুখমণ্ডলকে স্থির রাখবে। এতেই রয়েছে রাসূলদের আনুগত্য, যারা আল্লাহর শয়ীয়ত পেশ করেছেন এবং মু’জিযা প্রদর্শন করে জোর দিয়ে বলেছেনঃ “এখন মনের বিশুদ্ধতা আনয়ন কর এবং যে পর্যন্ত এ দুটো অর্থাৎ শরীয়তের অনুসরণ ও ইবাদতে বিশুদ্ধ অন্তঃকরণ না হবে সে পর্যন্ত তোমাদের ইবাদত গৃহীত হবে না।
আল্লাহ তাআলার (আরবী) উক্তির অর্থের ব্যাপারে মুফাসসিরদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। অর্থাৎ মৃত্যুর পরে তিনি পুনর্জীবিত করবেন। তিনি দুনিয়ায় সৃষ্টি করেছেন এবং পরকালে উঠাবেন। যখন তোমরা কিছুই ছিলে না তখন তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমরা মরে যাবে, এরপর তোমাদেরকে তিনি পুনর্জীবিত করবেন।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) ওয়ায ও নসীহত করার জন্যে দাঁড়ালেন এবং জনগণকে সম্বোধন করে বললেনঃ “হে লোক সকল! তোমরা (কিয়ামতের দিন) উলঙ্গ ও খত্না না করা অবস্থায় উত্থিত হবে। কেননা, তোমরা জন্মগ্রহণের সময় এই রূপই ছিলে। এটা আমাদের উপর ফরয। যদি আমাদেরকে করতে হয় তবে এটাই করবো।” মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে- মুসলমানকে মুসলমান অবস্থায় এবং কাফিরকে কাফির অবস্থায় উঠানো হবে। আবুল আলিয়া (রঃ) বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে – আল্লাহর ইলম অনুযায়ী কিংবা যেরূপ তোমাদের আমল ছিল সে অনুযায়ী তোমরা উখিত হবে। মুহাম্মাদ ইবনে কা’ব (রঃ)-এর ধারণায় এর অর্থ হচ্ছে- যদি কারো জন্ম হয় দুর্ভাগ্যের উপর তবে তাকে দুর্ভাগা অবস্থায় এবং যদি সৌভাগ্যের উপর তার জন্ম হয়ে থাকে তবে ভাগ্যবান অবস্থায় সে উখিত হবে। যেমন হযরত মূসা (আঃ)-এর আমলের যাদুকরগণ সারা জীবন ধরে পাপিষ্ঠদের আমল করতে রয়েছিল, কিন্তু মানবের সৃষ্টি সৌভাগ্যের ভিত্তির উপর হয়েছিল বলেই ঐ ভিত্তির উপরই তার উত্থান হবে।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, আল্লাহ তা’আলা কাউকে মুমিন করে এবং কাউকে কাফির করে সৃষ্টি করেছেন। যেমন তিনি বলেছেন- (আরবী) অর্থাৎ “তিনিই আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ কাফির এবং কেউ মুমিন।” (৬৪:২)।
“যেভাবে তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে তেমনিভাবে তোমরা ফিরে আসবে।” আল্লাহ পাকের এই উক্তিরই সহায়ক হচ্ছে হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণিত সহীহ বুখারীর নিম্নের হাদীসটি –
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহর শপথ! কোন লোক জান্নাতীদের আমল করতে থাকে এমন কি তার ও জান্নাতের মধ্যে মাত্র এক গজের ব্যবধান থেকে যায়। এমতাবস্থায় তকদীরের লিখন তার উপর জয়যুক্ত হয়ে যায়, ফলে সে জাহান্নামীদের আমল করতে শুরু করে এবং ওর উপরই মৃত্যুবরণ করে। সুতরাং সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। পক্ষান্তরে কোন লোক সারা জীবন ধরে জাহান্নামীদের আমল করতে থাকে এবং জাহান্নাম হতে মাত্র এক গজ দূরে অবস্থান করে। এমন সময় আল্লাহর লিখন তার উপর জয়যুক্ত হয়, ফলে সে জান্নাতীদের আমল শুরু করে দেয় এবং ঐ অবস্থাতেই মারা গিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করে।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) আরও বলেছেনঃ “কোন লোকের আমল জনগণের দৃষ্টিতে জান্নাতীদের আমলরূপে পরিদৃষ্ট হয়, অথচ প্রকৃতপক্ষে সে জাহান্নামের অধিবাসী। অন্য একটি লোকের আমল জাহান্নামীদের আমলরূপে পরিলক্ষিত হয়, অথচ প্রকৃতপক্ষে সে জান্নাতের অধিবাসী।” সনদ বা দলীল তো হবে ঐ আমল যা শেষ সময়ে প্রকাশ পাবে এবং কালেমায়ে শাহাদাতের উপর প্রাণবায়ু নির্গত হবে। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ “মৃত্যুর সময় যেমন ছিল তেমনিভাবেই উথিত হবে।” এখন এই উক্তি ও (আরবী) এই আয়াতের মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপিত হওয়া জরুরী।
আল্লাহ পাকের উক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় নিম্নের হাদীসটিও রয়েছে- রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “প্রত্যেকটি শিশু ইসলামী স্বভাবের উপর জন্মগ্রহণ করে থাকে। কিন্তু তার পিতামাতাই তাকে ইয়াহুদী, খ্রীষ্টান এবং মজুসী (অগ্নিপূজক) বানিয়ে থাকে।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) আরও বলেছেন- আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “আমি আমার বান্দাদেরকে তো সৎ স্বভাবের উপরই সৃষ্টি করেছিলাম, কিন্তু শয়তানরাই তাদেরকে বিভ্রান্ত করে দ্বীন থেকে সরিয়ে দিয়েছে। মোটকথা, সামঞ্জস্য বিধানের উপায় হচ্ছে এইরূপঃ আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে, প্রথমে তো তারা মুমিনই হবে। কারণ, তাদের স্বভাবের মধ্যেই ঈমান রয়েছে। আবার তকদীরে এটাও লিপিবদ্ধ রয়েছে যে, পরে তারা কাফির হয়ে যাবে। যদিও সমস্ত মাখলুকের মধ্যে মারেফাত ও তাওহীদের স্বভাব রয়েছে, যেমন তাদের নিকট থেকে এরূপ অঙ্গীকারও নেয়া হয়েছিল এবং ওটাকে তাদের। স্বাভাবিক জিনিস বানানো হয়েছিল, তথাপি তাদের তকদীরে এটা লিখিত ছিল যে, তারা পাপিষ্ঠ হবে অথবা পুণ্যবান হবে। অন্য হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)বলেছেনঃ “মানুষ সকালে উঠে হয় তো বা স্বীয় প্রাণকে মুক্তির হাতে সোপর্দ করে, নয়তো ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়।” তার মুক্তিতে আল্লাহরই হুকুম প্রকাশ পায়। তিনিই আল্লাহ, (আরবী) অর্থাৎ যিনি এই মীমাংসা করে দিয়েছেন যে, সে হিদায়াত প্রাপ্ত হবে। (৮৭:৩) (আরবী) অর্থাৎ যিনি প্রত্যেক জিনিসকে ওর ‘খলকত’ প্রদান করেছেন, অতঃপর ওকে পথ দেখিয়েছেন। (২০:৫০)
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি সৎ ও ভাগ্যবান তার কাছে ভাগ্যবানদের আমল কঠিন অনুভূত হয় না। আর যে ব্যক্তি পাপিষ্ঠ ও হতভাগ্য তার কাছে হতভাগ্যদের আমল সহজ হয়ে যায়।” এ জন্যেই আল্লাহ পাক বলেনঃ ‘এক দলকে আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করেছেন এবং অপর দলের জন্যে সংগত কারণেই ভ্রান্তি নির্ধারিত হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ পাক এর কারণ বর্ণনায় বলেছেনঃ তারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে অভিভাবক ও বন্ধু বানিয়ে নিয়েছিল। এটা ঐ লোকদের ভুলের উপর স্পষ্ট দলীল যারা ধারণা করে থাকে যে, আল্লাহ কাউকেও নাফরমানীর কারণে বা ভুল বিশ্বাসের কারণে শাস্তি দিবেন না, যখন তার আমল সঠিক ও বিশুদ্ধ হওয়ার উপর তার পূর্ণ বিশ্বাস থাকবে। তবে যদি কেউ জ্ঞান ও বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও হঠকারিতা করে না মানে তাহলে তাকে শাস্তি দেয়া হবে। তাদের এ ধারণা ঠিক নয়। কেননা, যদি তাদের এ ধারণা ঠিক হয় তবে সেই পথভ্রষ্ট ব্যক্তি যে হিদায়াতের উপর আছে বলে বিশ্বাস রাখে এবং সেই ব্যক্তি, যে প্রকৃতপক্ষে ভ্রান্ত পথের উপর নেই, বরং হিদায়াতের উপর রয়েছে, এ দু’জনের মধ্যে কোনই পার্থক্য থাকে না। অথচ আল্লাহ তাআলা বলে দিচ্ছেন যে, এই দু’ব্যক্তির মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য রয়েছে।