أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٣٣٥) -৫৩৮
www.motaher21.net
সুরা: আল্ আরাফ
সুরা:৭
১৫৯ নং আয়াত:-
وَ مِنۡ قَوۡمِ مُوۡسٰۤی اُمَّۃٌ یَّہۡدُوۡنَ بِالۡحَقِّ وَ بِہٖ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱۵۹﴾
মূসার সম্প্রদায়ের মধ্যে এমন একদল রয়েছে যারা (অন্যকে) ন্যায় পথ দেখায় ও ন্যায় বিচার করে।
১৫৯ নং আয়াতের তাফসীর:-
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
সংবাদ দেয়া হচ্ছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা সঠিক ও সত্য কাজের অনুসরণ করে, নির্ভুল পথ প্রদর্শন করে এবং বিচার-আচার সত্য ও ন্যায়কে সামনে রেখে করে থাকে। যেমন মহান আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেনঃ “আহলে কিতাবের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা রাত্রিকালে আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে থাকে ও সেজদায় পতিত হয়। অন্যত্র বলেনঃ “আহলে কিতাবের মধ্যে এমনও লোক আছে যারা আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখে, আর তোমাদের উপর যা অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং তাদের উপর যা অবতীর্ণ করা হয়েছে সবগুলোর উপরই বিশ্বাস স্থাপন করে, আর তারা আল্লাহর সামনে বিনয় প্রকাশ করে থাকে। অন্যান্য আহলে কিতাবের মত তারা আল্লাহর আয়াতগুলোকে টাকা পয়সার লোভে বিক্রী করে না। আল্লাহর কাছে তাদের প্রতিদান রয়েছে। আল্লাহ শীঘ্রই হিসাব গ্রহণকারী।” আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ “যাদেরকে আমি ইতিপূর্বে কিতাব দিয়েছিলাম তারা ওর উপর ঈমান আনে, যখন তাদের সামনে আমার আয়াতগুলো পাঠ করা হয় তখন তারা বলেআমরা এখনও মুসলমান এবং এর পূর্বেও মুসলমান ছিলাম। তাদেরকে তাদের সবরের দু’বার প্রতিদান দেয়া হবে।” মহান আল্লাহ আর এক জায়গায় বলেনঃ “যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, ওকে ওরা যথাযযাগ্য পাঠ করে, ওরাই হচ্ছে মুমিন।” আরও বলেনঃ “যাদেরকে ইতিপূর্বে ইলম অর্থাৎ কিতাব দেয়া হয়েছে, যখন এই কিতাব তাদেরকে পাঠ করে শুনানো হয় তখন তারা মাথার ভারে সিজদায় পড়ে যায় এবং সিজদায় তাদের বিনয় ও নম্রতা বহুগুণে বেড়ে যায়।”
বানী ইসরাঈল যখন নবীদেরকে হত্যা করে ফেলে এবং কুফরী অবলম্বন করে তখন তাদের বারোটি দল ছিল। ওগুলোর মধ্যে একটি দল অবশিষ্ট এগারোটি দলের আকীদায় অসন্তুষ্ট ছিল এবং তারা তাদের প্রতি সম্পূর্ণরূপে বিমুখ ছিল। তারা আল্লাহ তা’আলার নিকট আবেদন করেছিল, “হে আল্লাহ! আমাদের ও তাদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা আনয়ন করুন।” তখন আল্লাহ তা’আলা তাদের জন্যে যমীনের মধ্যে একটি সুড়ঙ্গ করে দেন। তারা তার ভিতর চলা ফেরা করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তারা ঐ সুড়ঙ্গ পথে চীনে প্রবেশ করে, সেখানে একত্ববাদী মুসলমান বিদ্যমান ছিল, যারা আমাদেরই কিবলার দিকে মুখ করে নামায পড়তো। ইরশাদ হচ্ছে-এরপর আমি বানী ইসরাঈলকে বললামঃ “এখন যমীনে বসবাস কর। অতঃপর যখন আখিরাতের ওয়াদা এসে পড়বে তখন আমি তোমাদেরকে হাজির করবো। কথিত আছে যে, সুড়ঙ্গের মধ্যে তারা দেড় বছর ধরে বসবাস করেছিল।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Araf
Sura:7
Verses :- 159
وَ مِنۡ قَوۡمِ مُوۡسٰۤی اُمَّۃٌ یَّہۡدُوۡنَ بِالۡحَقِّ وَ بِہٖ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱۵۹﴾
Allah says;
وَمِن قَوْمِ مُوسَى أُمَّةٌ يَهْدُونَ بِالْحَقِّ وَبِهِ يَعْدِلُونَ
And of the people of Musa there is a community who lead (the men) with truth and establish justice therewith.
Allah stated that of the Children of Israel there are some who follow the truth and judge by it, just as He said in other Ayat,
مِّنْ أَهْلِ الْكِتَـبِ أُمَّةٌ قَأيِمَةٌ يَتْلُونَ ءَايَـتِ اللَّهِ ءَانَأءَ الَّيْلِ وَهُمْ يَسْجُدُونَ
A party of the people of the Scripture stand for the right, they recite the verses of Allah during the hours of the night, prostrating themselves in prayer. (3:113)
وَإِنَّ مِنْ أَهْلِ الْكِتَـبِ لَمَن يُوْمِنُ بِاللَّهِ وَمَأ أُنزِلَ إِلَيْكُمْ وَمَأ أُنزِلَ إِلَيْهِمْ خَـشِعِينَ للَّهِ لَا يَشْتَرُونَ بِـَايَـتِ اللَّهِ ثَمَناً قَلِيلً أُوْلـيِكَ لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ إِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ
And there are, certainly, among the People of the Scripture, those who believe in Allah and in that which has been revealed to you, and in that which has been revealed to them, humbling themselves before Allah. They do not sell the verses of Allah for a small price, for them is a reward with their Lord. Surely, Allah is Swift in account. (3:199)
الَّذِينَ ءَاتَيْنَـهُمُ الْكِتَـبَ مِن قَبْلِهِ هُم بِهِ يُوْمِنُونَ
وَإِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ قَالُواْ ءَامَنَّا بِهِ إِنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّنَأ إنَّا كُنَّا مِن قَبْلِهِ مُسْلِمِينَ
أُوْلَـيِكَ يُوْتُونَ أَجْرَهُم مَّرَّتَيْنِ بِمَا صَبَرُواْ
Those to whom We gave the Scripture before it, they believe in it (the Qur’an). And when it is recited to them, they say:”We believe in it. Verily, it is the truth from our Lord. Indeed even before it we have been from those who submit themselves. These will be given their reward twice over, because they are patient. (28:52-54)
and,
قُلْ ءَامِنُواْ بِهِ أَوْ لَا تُوْمِنُواْ إِنَّ الَّذِينَ أُوتُواْ الْعِلْمَ مِن قَبْلِهِ إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ يَخِرُّونَ لِلٌّذْقَانِ سُجَّدًا
وَيَقُولُونَ سُبْحَانَ رَبِّنَأ إِن كَانَ وَعْدُ رَبِّنَا لَمَفْعُولاً
وَيَخِرُّونَ لِلٌّذْقَانِ يَبْكُونَ وَيَزِيدُهُمْ خُشُوعًا
Verily, those who were given knowledge before it, when it (this Qur’an) is recited to them, fall down on their faces in humble prostration. And they say:”Glory be to our Lord! Truly, the promise of our Lord must be fulfilled.” And they fall down on their faces weeping and it increases their humility. (17:107-109).
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
এই দল থেকে ঐ কয়েকজন মানুষকে বুঝানো হয়েছে, যাঁরা মুসলমান হয়ে গিয়েছিলেন। যেমন, আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) প্রমুখ।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
* মূল আলোচনা চলছিল বনী ইসরাঈল সম্পর্কে। মাঝখানে প্রসঙ্গক্রমে আলোচ্য বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নবুওয়াতে মুহাম্মাদীর প্রতি ঈমান আনার দাওয়াত দেয়া হয়েছে। এখান থেকে আবার বক্তৃতার ধারা পরিবর্তন করে আগের আলোচনায় ফিরে আসা হয়েছে।
* অধিকাংশ অনুবাদক এ আয়াতের অনুবাদ এভাবে করেছেন-“মূসার জাতির মধ্যে এমন একটি দল আছে যারা সত্য অনুযায়ী পথনির্দেশ দেয় ও ইনসাফ করে।” অর্থাৎ তাদের মতে কুরআন নাযিল হবার সময় বনী ইসরাঈলীদের যে নৈতিক ও মানসিক অবস্থা বিরাজমান ছিল তারই কথা এ আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু পূর্বাপর আলোচনা বিশ্লেষণ করে আমরা এ মতটিকেই অগ্রাধিকার দিতে চাই যে, এখানে হযরত মূসার সময় বনী ইসরাঈলীদের যে অবস্থা ছিল তারই কথা বর্ণনা করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে এ বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে যে, এ জাতির মধ্যে যখন বাছুর পূজার অপরাধ অনুষ্ঠিত হয় এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তার ওপর পাকড়াও করা হয়, তখন সমগ্র জাতি গোমরাহ ছিল না। বরং তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ তখনো সৎ ছিল।