أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٣٥٩) -৫৬২
www.motaher21.net
সুরা: আল্ – আনফাল।
সুরা:৮
৫-৮ নং আয়াত:-
وَإِنَّ فَرِيقاً مِّنَ الْمُوْمِنِينَ لَكَارِهُونَ
অথচ বিশ্বাসীদের একদল এ পছন্দ করেনি,
A party among the believers disliked it,
کَمَاۤ اَخۡرَجَکَ رَبُّکَ مِنۡۢ بَیۡتِکَ بِالۡحَقِّ ۪ وَ اِنَّ فَرِیۡقًا مِّنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ لَکٰرِہُوۡنَ ۙ﴿۵﴾
یُجَادِلُوۡنَکَ فِی الۡحَقِّ بَعۡدَ مَا تَبَیَّنَ کَاَنَّمَا یُسَاقُوۡنَ اِلَی الۡمَوۡتِ وَ ہُمۡ یَنۡظُرُوۡنَ ؕ﴿۶﴾
وَ اِذۡ یَعِدُکُمُ اللّٰہُ اِحۡدَی الطَّآئِفَتَیۡنِ اَنَّہَا لَکُمۡ وَ تَوَدُّوۡنَ اَنَّ غَیۡرَ ذَاتِ الشَّوۡکَۃِ تَکُوۡنُ لَکُمۡ وَ یُرِیۡدُ اللّٰہُ اَنۡ یُّحِقَّ الۡحَقَّ بِکَلِمٰتِہٖ وَ یَقۡطَعَ دَابِرَ الۡکٰفِرِیۡنَ ۙ﴿۷﴾
لِیُحِقَّ الۡحَقَّ وَ یُبۡطِلَ الۡبَاطِلَ وَ لَوۡ کَرِہَ الۡمُجۡرِمُوۡنَ ۚ﴿۸﴾
(যুদ্ধলব্ধ সম্পদের ব্যাপারটা ওরা পছন্দ করেনি) যেমন তোমার প্রতিপালক তোমাকে তোমার গৃহ হতে ন্যায়ভাবে বের করেছিলেন অথচ বিশ্বাসীদের একদল এ পছন্দ করেনি।
সত্য স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হওয়ার পরও তারা তোমার সাথে বিতর্ক করছিল, (মনে হচ্ছে) তারা যেন মৃত্যুর দিকে চালিত হচ্ছে এবং তারা যেন তা প্রত্যক্ষ করছে।
আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেন যে, দুই দলের এক দল তোমাদের আয়ত্তাধীন হবে, অথচ তোমরা চাচ্ছ যে, নিরস্ত্র দলটি তোমাদের আয়ত্তাধীন হোক। আর আল্লাহ চাচ্ছিলেন যে, তিনি তাঁর বাণীদ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করবেন এবং অবিশ্বাসীদেরকে নির্মূল করবেন।
যাতে তিনি সত্যকে সত্যরূপে ও অসত্যকে অসত্যরূপে প্রতিপন্ন করেন, যদিও অপরাধিগণ তা অপছন্দ করে।
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
৫-৮ নং আয়াতের তাফসীর:
(আরবী) -এর মধ্যে (আরবী) শব্দটি আনার কারণ কি এ ব্যাপারে মুফাসসিরদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেন যে, এর দ্বারা পরহেজগারী ও রাসূল (সঃ)-এর আনুগত্যের ব্যাপারে মুমিনদের পারস্পরিক সন্ধি স্থাপনের সাথে সাদৃশ্য প্রতিপাদন করা হয়েছে। সুতরাং কথার ধরন হচ্ছে- যেমন তোমরা গনীমতের। মালের ব্যাপারে মতভেদ করেছিলে এবং তোমাদের মধ্যে বিবাদের সূচনা হয়েছিল, অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিয়েছিলেন এবং ঐ মাল বন্টনের হক তোমাদের নিকট থেকে ছিনিয়ে নিয়ে স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে প্রদান করেছিলেন, আর রাসূলুল্লাহ (সঃ) তোমাদের মধ্যে ওটা ইনসাফ ও সমতার সাথে বন্টন করে দিয়েছিলেন, এ সবগুলোই ছিল তোমাদের পূর্ণ কল্যাণের নিমিত্ত। দ্রুপ এই স্থলে যখন তোমাদেরকে শত্রুদের সাথে মুকাবিলার জন্যে মদীনা থেকে বের হতে হয়েছিল তখন সেই শান শওকত বিশিষ্ট বিরাট সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হওয়া তোমাদের জন্যে অপছন্দনীয় ছিল অর্থাৎ তাদের সাথে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হতে তোমাদের মন চাচ্ছিল না। এই বিরাট সেনাবাহিনী ওরাই ছিল যারা তাদের স্বধর্মীয় কাফিরদের ব্যবসায়ের মাল হিফাযত করার জন্যে মক্কা থেকে যাত্রা শুরু করেছিল, যে কাফিররা ব্যবসা। উপলক্ষে সিরিয়া গমন করেছিল। এই যুদ্ধকে অপছন্দ করার ফল এই দাঁড়ালো যে, আল্লাহ তা’আলা তাদের সাথে যুদ্ধ করতে তোমাদেরকে বাধ্য করলেন এবং পরিণামে তিনি তোমাদেরকে হিদায়াত দান করলেন, আর তোমাদেরকে সাহায্য করতঃ তাদের উপর জয়যুক্ত করলেন। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ “তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হচ্ছে, আর এটা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। অথচ যা তোমরা অপছন্দ কর, খুব সম্ভব তাতেই তোমাদের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। পক্ষান্তরে তোমরা কোন কাজকে পছন্দ কর, অথচ হয়তো তাতেই তোমাদের অমঙ্গল নিহিত আছে। কোনটা তোমাদের জন্যে কল্যাণকর তা আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না। কেউ কেউ এই সাদৃশ্য প্রতিপাদনের অর্থ বলেছেনযেমনভাবে তোমাদের প্রভু সত্যরূপে তোমাদেরকে মদীনার বাইরে আসায় সফলকাম করেছেন, অথচ কোন কোন মুমিন এই বের হওয়াতে অসম্মত ছিল, কিন্তু তাদেরকে বের হতেই হয়, অনুরূপভাবে তারা যুদ্ধ থেকে দূরে থাকতে চায় এবং তোমাদের সাথে মতবিরোধ করে, অথচ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর মতের সত্যতা তাদের উপর প্রকাশিতই ছিল। মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছেযেমনভাবে তোমরা বাধ্য হয়ে মদীনা হতে বের হয়েছে, তেমনিভাবে সত্যের বিষয়ে রাসূল (সঃ)-এর সাথে ঝগড়া করছে। সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, এ আয়াতটি বদরের যুদ্ধে বের হওয়ার ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। (আরবী) সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে- হে নবী (সঃ)! এই মুমিনরা তোমার সাথে ঝগড়া করার নিয়তে যুদ্ধলব্ধ সম্পদের ব্যাপারে প্রশ্ন উত্থাপন করছে, যেমনভাবে বদর দিবসেও তারা তোমার সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়েছিল এবং বলেছিলঃ “আপনি তো আমাদেরকে যাত্রীদলের পথরোধ করার জন্যে বের করেছিলেন। আমাদের ধারণাও ছিল না যে, আমাদেরকে যুদ্ধ করতে হবে এবং আমরা যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করেও বাড়ী থেকে বের হইনি।” আমি বলি যে, নবী (সঃ) আবু সুফিয়ানের যাত্রীদলের পথরোধ করার জন্যেই মদীনা থেকে বের হয়েছিলেন। কেননা, তার জানা ছিল যে, এই যাত্রীদল কুরায়েশের জন্যে প্রচুর মাল সম্ভার নিয়ে সিরিয়া থেকে মক্কার পথে ফিরে আসছিল। সুতরাং তিনি মুসলমানদেরকে উত্তেজিত করেন এবং তিনশ’ দশের কিছু অধিক লোক নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তিনি বদর কূপের পথে উপকূলের দিকে রওয়ানা হন। ঐ যাত্রীদলের নেতা আবু সুফিয়ান (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর এই উদ্দেশ্যের সংবাদ পেয়ে গিয়েছিলেন। তিনি যমযম ইবনে আমরকে মক্কা পাঠিয়ে মক্কাবাসীকে মদীনাবাসীদের উদ্দেশ্যের কথা জানিয়ে দেন। কাজেই মক্কাবাসীরা এক হাজার লোক নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। আবু সুফিয়ান (রাঃ) যাত্রীদলকে নিয়ে সাইফুল বাহারের দিক দিয়ে আসছিলেন। সুতরাং সেই যাত্রীদল মুসলমানদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়ে যায়। এখন মক্কার ঐ এক হাজার সৈন্য সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তারা বদর কূপের নিকটে এসে শিবির স্থাপন করে। এখন পূর্বের কোন দিন তারিখ ঘোষণা ছাড়াই মুসলমান ও কাফির সৈন্যদল পরস্পর যুদ্ধের সম্মুখীন হয়। কেননা, আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের প্রাধান্য বিস্তার করতে চেয়েছিলেন এবং হক ও বাতিলের মধ্যে ফায়সালাকারী যুদ্ধ ঘটিয়ে দেয়ার তার ইচ্ছা ছিল। যেমন এর বর্ণনা শীঘ্রই আসছে। মোটকথা, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন এ সংবাদ অবহিত হন যে, মক্কা থেকে এক বিরাট সেনাবাহিনী তাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্যে এগিয়ে আসছে তখন আল্লাহ তা’আলা তাঁর কাছে অহী পাঠালেনঃ “দুটোর মধ্যে একটা জিনিস তোমরা লাভ করবে। হয় তোমরা যাত্রীদলের মাল লুটে নিবে, না হয় ঐ সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করবে। দুটোই লাভ করতে পারবে না। সুতরাং যে কোন একটি গ্রহণ করে সফলকাম হয়ে যাও।” মুসলমানদের অধিকাংশের মত ছিল এই যে, তাঁরা যাত্রীদলকে আক্রমণ করবেন এবং বিনা যুদ্ধেই প্রচুর মাল তাঁদের হাতে এসে যাবে। যার বর্ণনা দিতে গিয়ে আল্লাহ পাক বলেনঃ “স্মরণ কর সেই সময়ের কথা যখন আল্লাহ তোমাদের কাছে অঙ্গীকার করেন- দু’দলের এক দল তোমাদের আয়ত্তাধীন হবে। কিন্তু নিরস্ত্র দলটি তোমাদের আয়ত্তাধীন হওয়া তোমরা পছন্দ করছিলে, আর আল্লাহ চাচ্ছিলেন তাঁর বাণী দ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং কাফিরদের মূল শিকড়কে (মূলশক্তিকে) কেটে দিতে।”
হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) বলেনঃ আমরা মদীনায় ছিলাম এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন- “আমি সংবাদ পেয়েছি যে, আবু সুফিয়ান (রাঃ) যাত্রীদল নিয়ে আসতে রয়েছে। তোমাদের মত কি? আমরা কি এই যাত্রীদলের পথরোধ করার জন্যে বেরিয়ে পড়বো? সম্ভবতঃ এতে তোমরা বহু কিছু মালধন লাভ করতে পারবে?” আমরা আরয করলাম, আমরা অবশ্যই বের হতে চাই। সুতরাং আমরা বেরিয়ে পড়লাম। আমরা দু’একদিন চলতে থাকলাম। অতঃপর তিনি বললেনঃ “আচ্ছা বল তো, এসব কাফিরের সাথে যুদ্ধ করা সম্পর্কে তোমাদের মতামত কি? তারা সংবাদ পেয়ে গেছে যে, তোমরা যাত্রীদলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছো!” মুসলমানরা উত্তরে বললোঃ “আল্লাহর কসম! শত্রুদের এতো বড় সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার শক্তি আমাদের নেই। আমরা তো শুধু যাত্রীদলের মালধন লুটবার জন্যে বের হয়েছি।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) দ্বিতীয়বার এ প্রশ্নই করেন। আমরা এবারও এ উত্তরই দিলাম। তখন হযরত মিকদাদ ইবনে আমর (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমরা এ স্থলে এমন কথা বলবো না যেমন কথা হযরত মূসা (আঃ)-কে তাঁর উম্মতরা বলেছিল। তারা তাকে বলেছিল, “হে মূসা (আঃ)! আপনি ও আপনার প্রভু যান এবং শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করুন, আমরা এখানে বসে থাকছি।” আমরা আনসার দল আশা পোষণ করলাম এবং বললামঃ হযরত মিকদাদ (রাঃ) যে কথা বললেন, আমরাও যদি ঐ কথাই বলতাম তবে এই যাত্রীদলের প্রচুর মাল লুট করা অপেক্ষা ওটাই আমাদের জন্যে অধিক পছন্দনীয় হতো! তখন (আরবী)-এই আয়াত অবতীর্ণ হয়।”
ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) সাহাবীদেরকে নিয়ে বদর অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন এবং রাওহা নামক স্থানে পৌছে লোকদের সামনে ভাষণ দান করেন। তিনি বলেনঃ “তোমাদের মত কি?” তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) উত্তরে বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমরা সংবাদ পেয়েছি যে, কাফিররা এই এই স্থান পর্যন্ত পৌছে গেছে।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) পুনরায় বলেনঃ “তোমাদের মত কি?” এবার হযরত উমার (রাঃ) হযরত আবূ বকর (রাঃ)-এর মতই জবাব দেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তৃতীয়বার এই প্রশ্ন করেন। তখন হযরত সা’দ ইবনে মুআয (রাঃ) বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনি আমাদেরকে লক্ষ্য করেই বলছেন! তাহলে শুনুন! যিনি আপনাকে মর্যাদা দান করেছেন এবং আপনার উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন তাঁর শপথ! আমরা না কখনও বারকুল গামাদ’ গিয়েছি, না ওর পথ আমাদের জানা আছে। কিন্তু তবুও যদি আপনি ইমায়ন থেকে হাবশের (আবিসিনিয়ার) বারকুল গামাদ পর্যন্তও গমন করেন তবে আমরাও আপনার সাথে গমন করবো এবং মূসা (আঃ)-এর উম্মতের মত বলবো নাঃ আপনি ও আপনার প্রভু যান ও যুদ্ধ করেন, আমরা এখানেই বসে থাকছি। হয়তো আপনি বের হবার সময় একটা উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বের হচ্ছেন, অতঃপর আল্লাহ অন্য অবস্থার সৃষ্টি করছেন। তখন আপনি যেটা ইচ্ছা সেটাই গ্রহণ করুন। যে আপনার সাথে থাকতে চায় থাকবে, যে সরে পড়তে চায় সে সরে পড়বে। যে আপনার বিরোধিতা করতে চায় সে বিরোধিতা করুক এবং যে সন্ধি করতে চায় সে সন্ধি করুক। আমাদের যা কিছু মাল রয়েছে তা আপনি নিয়ে নিতে পারেন।” হযরত সা’দ (রাঃ)-এর এই কথার পরিপ্রেক্ষিতেই (আরবী)-এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। (এ হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ) মুহাম্মাদ ইবনে আমর ইবনে আলকামা ইবনে আবি অক্কালসি লাইসীর (রঃ) হাদীস হতে তাখরীজ করেছেন। আবু লাইস (রঃ) তাঁর পিতা থেকে এবং তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেছেন)
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, নবী (সঃ) বদর যুদ্ধের ব্যাপারে পরামর্শ করেন, তারপর কুরায়েশের সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেন, তখন এই যুদ্ধ মুসলমানদের কাছে অপছন্দনীয় মনে হয়েছিল। এ জন্যেই (আরবী)-এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিল। অর্থাৎ “মুমিনদের একদল একে পছন্দ করতে পারেনি। তাদের কাছে এটা খুবই দুঃসহ ছিল। সত্য সুস্পষ্টরূপে প্রকাশ হওয়ার পর তারা তোমার সাথে তর্ক করছিল। তাদেরকে দেখে মনে হচ্ছিল যে, তারা যেন মৃত্যুর দিকে চালিত হচ্ছে এবং তারা তা প্রত্যক্ষ করছে।” মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, (আরবী) দ্বারা (আরবী) বুঝানো হয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (রঃ) বলেন যে, (আরবী) দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করা অপছন্দীয় হওয়া। সুন্দী (রঃ) বলেন যে, (আরবী) -এর ভাবার্থ হচ্ছে- তোমরা আল্লাহর হুকুম ব্যতিরেকে আর কোন কিছুকেই অগ্রাধিকার দেবে না এটা প্রকাশিত হয়ে যাবার পরেও আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর মতের বিরোধিতা করছো! ইবনে যায়েদ (রঃ) (আরবী)-এর সম্পর্কে বলেন যে, এর দ্বারা। মুশরিকদেরকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ এই মুশরিকরা সত্যের ব্যাপারে তর্ক করছে, যেন তাদেরকে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেয়া হচ্ছে। কারণ এই যে, মুমিনরা এরূপ নিন্দনীয় বিশেষণে ভূষিত হতে পারে না। এই বিশেষণ একমাত্র কাফিরদেরই হতে পারে। ইবনে জারীর (রঃ)-এর এই কথার উপর আপত্তি রয়েছে। তাঁর মতে ইবনে যায়েদ (রঃ)-এর এই উক্তির কোন গুরুত্ব নেই। কেননা, (আরবী)-এই শব্দগুলোর পূর্বে ইবারতের ধারা মুমিনদের সম্পর্কেই রয়েছে। সুতরাং যে। শব্দগুলো এর পরে রয়েছে তার এরই হওয়া প্রকাশমান। সত্য ব্যাপার তো এই যে, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর উক্তিই সঠিক। তা এই যে, এর দ্বারা মুমিনদেরকেই বুঝানো হয়েছে। ইবনে জারীর (রঃ) ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর এই উক্তিরই পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। এটাই সত্য এবং কালামের ধারা এরই পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন সফলতার সাথে বদর যুদ্ধ হতে অবকাশ লাভ করেন তখন তাকে বলা হয়ঃ “এখন আপনি মালধন আনয়নকারী যাত্রীদলের উপরও আক্রমণ চালিয়ে দিন। এখন তো আর কোন বাধা নেই।” তখন যুদ্ধবন্দীদের একজন হযরত আব্বাস বলেনঃ “এটা কখনও উচিত হবে না। কেননা, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আল্লাহ পাক তো আপনার সাথে দুটোর যে কোন একটার ওয়াদা করেছেন। আর একটা তো আপনি লাভ করেছেন। সুতরাং দ্বিতীয়টি লাভ করার আর কোন অধিকার নেই।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) তাখরীজ করেছেন। ইবনে কাসীর (রঃ) বলেন যে, এর ইসনাদ উত্তম। সিহাহ সিত্তাহর কোনটিতেই এটা তাখরীজ করা হয়নি)
(আরবী) অর্থাৎ তোমাদের অভিপ্রায় এই ছিল যে, যেন নিরস্ত্র দলটি তোমাদের আয়ত্তে এসে পড়ে। তাহলে কেউ প্রতিরোধ করবে না এবং যুদ্ধ করারও প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ আবু সুফিয়ানের যাত্রীদলকে লুটে নেয়া। কিন্তু আল্লাহ চাচ্ছিলেন তোমাদেরকে এমন এক দলের সাথে ভিড়িয়ে দিতে যাৱা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত, যেন তিনি স্বীয় নির্দেশাবলী দ্বারা সত্যকে সত্যরূপে প্রতিপন্ন করে দেন এবং সেই কাফিরদের মূলকে কর্তন করে ফেলেন। আল্লাহ ছাড়া কাজের পরিণাম সম্পর্কে কেউই অবহিত নয়। উত্তম তদবীরের তদবীরকারী একমাত্র তিনিই, যদিও মানুষ ঐ তদবীরের বিপরীত কামনা করে। যেমন তিনি বলেনঃ “তোমাদের উপর ফরয় করা হয়েছে আর ওটা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়, কিন্তু খুব সম্ভব তোমরা যা অপছন্দ কর ওতেই তোমাদের মঙ্গল নিহিত রয়েছে এবং তোমরা যা পছন্দ কর বা ভালবাস তাতেই তোমাদের অকল্যাণ নিহিত রয়েছে। নিম্নের হাদীসটিও বদর সম্পর্কীয় হাদীস যে, নবী (সঃ) যখন সিরিয়া হতে আবু সুফিয়ানের ফিরে আসার সংবাদ পেলেন তখন তিনি মুসলমানদেরকে ডেকে বললেনঃ “কুরায়েশের এই যাত্রীদলের সাথে প্রচুর মালপত্র রয়েছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে আক্রমণ কর। এতে বিস্ময়ের কিছুই নেই যে, আল্লাহ তা’আলা কাফিরদের গনীমতের মাল তোমাদেরকে প্রদান করবেন।” তাঁর এ কথা শুনে সাহাবীগণ রওয়ানা হয়ে গেলেন। তাঁদের কেউ কেউ হালকা অস্ত্র নিলেন এবং কেউ কেউ ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিলেন। তাঁদের এ ধারণা ছিল না যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যুদ্ধ করবেন। আবু সুফিয়ান যখন হিজাযের। নিকটবর্তী হলেন তখন তিনি গুপ্তচর ছেড়ে ছিলেন এবং প্রত্যেক গমনাগমন কারীদেরকে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সংবাদ জিজ্ঞেস করতে থাকলেন। অবশেষে তিনি জানতে পারলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যাত্রীদলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেছেন। সুতরাং তিনি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করলেন। তিনি তৎক্ষণাৎ যমযম ইবনে আমর গিফারীকে মক্কা পাঠিয়ে দিলেন যে, সে যেন কুরায়েশদের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদেরকে অবস্থা অবহিত করতঃ যাত্রীদলের হিফাযতের ব্যবস্থা করে আসে। কেননা, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যাত্রীদলকে আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেছেন। এদিকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় সাথীদেরকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন এবং যাফরান’ উপত্যকা পর্যন্ত পৌঁছে সেখানে অবস্থান করেছেন। ইতিমধ্যে তিনি সংবাদ পেলেন যে, কুরায়েশরা যাত্রীদলের হিফাযত ও মুসলমানদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে মক্কা থেকে যাত্রা শুরু করেছে। সুতরাং তিনি সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করলেন। তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং উত্তম কথা বললেন। অতঃপর হযরত উমারও (রাঃ) দাঁড়িয়ে ভাল কথা বললেন। তারপর হযরত মিকদাদ ইবনে আমর (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আল্লাহ আপনাকে যে আদেশ করেছেন তা আপনি পালন করুন। আমরা আপনার সাথেই রয়েছি। আল্লাহর শপথ! বানী ইসরাঈল যে কথা হযরত মূসা (আঃ)-কে বলেছিল সে কথা আমরা আপনাকে বলবো না। তারা মূসা (আঃ)-কে বলেছিলঃ “হে মূসা (আঃ)! আপনি ও আপনার প্রভু গমন করুন এবং যুদ্ধ করুন, আমরা এখানে বসে থাকছি।” আপনি যদি আমাদেরকে হাবশ পর্যন্ত নিয়ে যেতে চান তবে যে পর্যন্ত আপনি সেখানে না পৌছবেন সেই পর্যন্ত আমরা আপনার সাথ ছাড়বো না। হযরত মিকদাদ (রাঃ)-এর এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর কল্যাণের জন্যে দুআ করলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ “হে লোক সকল! তোমরা আমাকে পরামর্শ দান কর।” এ কথা তিনি আনসারদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন। একটা কারণ তো এই যে, আনসারগণ সংখ্যায় বেশী ছিলেন। দ্বিতীয় কারণ ছিল এটাও যে, আকাবায় যখন আনসারগণ বায়আত গ্রহণ করেন তখন তারা নিম্নরূপ কথার উপর তা গ্রহণ করেছিলেনঃ “যখন আপনি মক্কা ছেড়ে মদীনায় পৌছবেন তখন সর্বাবস্থাতেই আমরা আপনার সাথে থাকবো। অর্থাৎ যদি শত্রুরা আপনার উপর আক্রমণ চালায় তবে আমরা তাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো।” যেহেতু তাঁদের বায়আত গ্রহণের সময় এ কথা ছিল না যে, মুসলমানদের অগ্রগতির সময়ও তারা তাদের সাথে থাকবেন, সেই হেতু রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁদেরও মত জানতে চাচ্ছিলেন, যেন তাঁদের নিকট থেকেও অঙ্গীকার নিয়ে তাঁদেরও সাহায্য সহানুভূতি লাভ করতে পারেন। হযরত সা’দ (রাঃ) বললেনঃ “সম্ভবতঃ আপনি আমাদের উদ্দেশ্যেই বলছেন।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “হ্যাঁ, আমি তোমাদেরকে উদ্দেশ্য করেই বললাম।” তখন হযরত সা’দ (রাঃ) বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমরা আপনার উপর ঈমান এনেছি। আপনার আদেশ-নিষেধ মান্য করার বায়আত আমরা আপনার হাতে গ্রহণ করেছি। সুতরাং আমরা কোন অবস্থাতেই আপনার হাত ছাড়বো না। আল্লাহর শপথ! আপনি যদি সমুদ্র তীরে দাড়িয়ে তাতে ঘোড়াকে নামিয়ে দেন তাহলে আমরাও সমুদ্রে ঝাপিয়ে পড়বো। আমাদের মধ্যে কেউই এতে মোটেই দ্বিধাবোধ করবে না। যুদ্ধে আমরা বীরত্ব প্রদর্শনকারী এবং কঠিন বিপদ আপদে সাহায্যকারী । ইনশাআল্লাহ আপনি আমাদের উপর সন্তুষ্ট থাকবেন।” এই উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) অত্যন্ত খুশী হন। তৎক্ষণাৎ তিনি যাত্রা শুরু করার নির্দেশ দেন এবং বলেনঃ “আল্লাহ আমার সাথে দুটোর মধ্যে একটার ওয়াদা করেছেন এবং এতে বিস্ময়ের কিছুই নেই যে, ঐ একটি এই যুদ্ধই বটে। আমি যেন মুশরিকদের বধ্যভূমি এখান থেকেই স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছি।”
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Anfal
Sura:8
Verses :- 5-8
وَإِنَّ فَرِيقاً مِّنَ الْمُوْمِنِينَ لَكَارِهُونَ
A party among the believers disliked it.
Following the Messenger is Better for the Believers
Allah said,
كَمَا أَخْرَجَكَ رَبُّكَ مِن بَيْتِكَ بِالْحَقِّ وَإِنَّ فَرِيقاً مِّنَ الْمُوْمِنِينَ لَكَارِهُونَ
As your Lord caused you to go out from your home with the truth; and verily, a party among the believers disliked it.
After Allah described the believers as fearing their Lord, resolving matters of dispute between themselves and obeying Allah and His Messenger, He then said here,
“since you disputed about dividing war spoils and differed with each other about them, Allah took them away from you. He and His Messenger then divided them in truth and justice, thus ensuring continued benefit for all of you. Similarly, you disliked meeting the armed enemy in battle, who marched in support of their religion and to protect their caravan. You disliked fighting, so Allah decided that battle should occur and made you meet your enemy, without planning to do so on your part.’
This incident carried guidance, light, victory and triumph.
Allah said;
كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْيًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تُحِبُّواْ شَيْيًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
Jihad is ordained for you though you dislike it, and it may be that you dislike a thing which is good for you, and that you like a thing which is bad for you. Allah knows but you do not know. (2:216)
As-Suddi commented,
وَإِنَّ فَرِيقاً مِّنَ الْمُوْمِنِينَ لَكَارِهُونَ
(And verily, a party among the believers disliked) “to meet (the armed) idolators.”
يُجَادِلُونَكَ فِي الْحَقِّ بَعْدَمَا تَبَيَّنَ كَأَنَّمَا يُسَاقُونَ إِلَى الْمَوْتِ وَهُمْ يَنظُرُونَ
Disputing with you concerning the truth after it was made manifest, as if they were being driven to death, while they were looking (at it).
يُجَادِلُونَكَ فِي الْحَقِّ بَعْدَمَا تَبَيَّنَ
(Disputing with you concerning the truth after it was made manifest), Some have commented,
“(Allah says:) they ask and argue with you about Al-Anfal just as they argued with you when you went out for the battle of Badr, saying, `You marched with us to confiscate the caravan. You did not inform us that there will be fighting and that we should prepare for it.”‘
وَإِذْ يَعِدُكُمُ اللّهُ إِحْدَى الطَّايِفَتِيْنِ أَنَّهَا لَكُمْ وَتَوَدُّونَ أَنَّ غَيْرَ ذَاتِ الشَّوْكَةِ تَكُونُ لَكُمْ وَيُرِيدُ اللّهُ أَن يُحِقَّ الحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَيَقْطَعَ دَابِرَ الْكَافِرِينَ
لِيُحِقَّ الْحَقَّ وَيُبْطِلَ الْبَاطِلَ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ
And (remember) when Allah promised you (Muslims) one of the two parties, that it should be yours; you wished that the one not armed should be yours, but Allah willed to justify the truth by His Words and to cut off the roots of the disbelievers. That He might cause the truth to triumph and bring falsehood to nothing, even though the criminals hate it.
وَيُرِيدُ اللّهُ أَن يُحِقَّ الحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ
(but Allah willed to justify the truth by His Words),
Allah says,
`He willed for you to meet the armed enemy (rather than the caravan) so that He makes you prevail above them and gain victory over them, making His religion apparent and Islam victorious and dominant above all religions. He has perfect knowledge of the consequences of all things; you are surrounded by His wise planning, although people only like what appears favorable to them,’
كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْيًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تُحِبُّواْ شَيْيًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ
Jihad (fighting in Allah’s cause) is ordained for you (Muslims) though you dislike it, and it may be that you dislike a thing which is good for you and that you like a thing which is bad for you. (2:216)
Muhammad bin Ishaq reported that Abdullah bin Abbas said,
“When the Messenger of Allah heard that Abu Sufyan had left the Sham area (headed towards Makkah with Quraysh’s caravan), he encouraged the Muslims to march forth to intercept them, saying,
هَذِهِ عِيرُ قُرَيْشٍ فِيهَا أَمْوَالُهُمْ فَاخْرُجُوا إِلَيْهَا لَعَلَّ اللهَ أَن يُّنَفِّلَكُمُوهَا
This is the caravan of Quraysh carrying their property, so march forth to intercept it; Allah might make it as war spoils for you.
The people started mobilizing Muslims, although some of them did not mobilize, thinking that the Prophet would not have to fight.
Abu Sufyan was cautiously gathering information on the latest news spying on travelers he met, out of fear for the caravan, especially upon entering the area of Hijaz (Western Arabia). Some travelers told him that Muhammad had mobilized his companions for his caravan. He was anxious and hired Damdam bin Amr Al-Ghifari to go to Makkah and mobilize the Quraysh to protect their caravan, informing them that Muhammad had mobilized his Companions to intercept the caravan.
Damdam bin Amr went in a hurry to Makkah. Meanwhile, the Messenger of Allah marched with his companions until he reached a valley called Dhafiran. When he left the valley, he camped and was informed that the Quraysh had marched to protect their caravan.
The Messenger of Allah consulted the people for advice and conveyed the news about Quraysh to them. Abu Bakr stood up and said something good, and so did Umar.
Al-Miqdad bin Amr stood up and said,
`O Allah’s Messenger! March to what Allah has commanded you, for we are with you. By Allah! We will not say to you what the Children of Israel said to Musa,
فَاذْهَبْ أَنتَ وَرَبُّكَ فَقَاتِل إِنَّا هَـهُنَا قَـعِدُونَ
(“So go you and your Lord and fight you two, we are sitting right here”). (5:24)
Rather, go you and Your Lord and fight, we will be fighting along with you both. By He Who has sent you with Truth! If you decide to take us to Birk-ul-Ghimad, we will fight along with you until you reach it.’
The Messenger of Allah said good words to Al-Miqdad and invoked Allah for his benefit. The Messenger of Allah again said,
أَشِيرُوا عَلَيَّ أَيُّهَا النَّاس
Give me your opinion, O people!
wanting to hear from the Ansar. This is because the majority of the people with him then were the Ansar.
When the Ansar gave the Prophet their pledge of obedience at Al-Aqabah, they proclaimed, `O Allah’s Messenger! We are not bound by this pledge unless, and until, you arrive in our land. When you have arrived in our area, you are under our protection, and we shall protect you in the same manner we protect our children and wives.’
The Messenger of Allah feared that the Ansar might think that they are not obliged to support him except from his enemies who attack Al-Madinah, not to march with him to an enemy in other areas. When the Prophet said this, Sa`d bin Mu`adh asked him, `O Allah’s Messenger! Is it us whom you meant?’
The Prophet answered in the positive.
Sa`d said, `We have faith and believed in you, testified that what you brought is the truth, and gave you our pledges and promises of allegiance and obedience. Therefore, march, O Allah’s Messenger, for what Allah has commanded you. Verily, by He Who has sent you in Truth, if you decided to cross this sea (the Red Sea), we will follow you in it, and none among us would stay behind. We do not dislike that we meet our enemy tomorrow. Verily, we are patient in war, fierce in battle. May Allah make you witness what makes your eyes pleased with us. Therefore, march with us with the blessing of Allah.’
The Messenger of Allah was pleased with what Sa`d said and was encouraged by it. He proclaimed,
سِيرُوا عَلَى بَرَكَةِ اللهِ وَأَبْشِرُوا فَإِنَّ اللهَ قَدْ وَعَدَنِي إِحْدَى الطَّايِفَتَيْنِ وَاللهِ لَكَأَنِّي الاْنَ أَنْظُرُ إِلَى مَصَارِعِ الْقَوم
March with the blessing of Allah and receive the good news. For Allah has indeed promised me one of the two camps (confiscating the caravan or defeating the Quraysh army. By Allah! It is as if I am now looking at the demise of the people (the Quraysh).”
Al-Awfi reported similar from Ibn Abbas.
As-Suddi, Qatadah, Abdur-Rahman bin Zayd bin Aslam; and several others among the Salaf and later generations mentioned similarly, We have just summarized the story as Muhammad bin Ishaq briefed it.
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
৫-৮ নং আয়াতের তাফসীরঃ
(غَيْرَ ذَاتِ الشَّوْكَةِ)
‘নিরস্ত্র দলটি’ অর্থাৎ নিরস্ত্র বলতে এখানে আবূ সুফিয়ানের বাণিজ্যিক কাফেলাকে বুঝানো হয়েছে। النُّعَاسُ অর্থ, তন্দ্রা, شَا۬قُّوْا অর্থ, তারা বিরুদ্ধাচরণ করেছে।
এ আয়াতগুলোতে বদর যুদ্ধের প্রতি ঈঙ্গিত করা হয়েছে।
(وَإِنَّ فَرِيْقًا مِّنَ الْمُؤْمِنِيْنَ لَكَارِهُوْنَ)
‘অথচ মু’মিনদের এক দল এটা পছন্দ করেনি।’ মু’মিনদের এ অপছন্দনীয়তা শুধু কাফির সেনাদলের সাথে যুদ্ধ লিপ্ত হবার বিষয়ে ছিল। কিছু সাহাবী এ অপছন্দনীয় বিষয়ের কথা প্রকাশও করেছিলেন। কারণ তাদের সাথে কোন অস্ত্র ছিল না। মদীনা থেকে তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়নি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মদীনা থেকে বের হয়েছেন আবূ সুফিয়ানের কাফেলাকে ধরার জন্য যা শাম থেকে মদীনার পাশ দিয়ে মক্কায় ফিরছে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন: এটা হল কুরাইশদের কাফেলা। তাতে অনেক সম্পদ রয়েছে। অতএব তাদের দিকে বেরিয়ে পড়। আশা করা যায় আল্লাহ তা‘আলা আমাদের এ সম্পদগুলো দান করবেন। তাই তিনশ’র অধিক সাহাবী তেমন কোন অস্ত্র না নিয়ে সমুদ্রের উপকূলের দিকে বেরিয়ে পড়লেন। এ দিকে আবূ সুফিয়ান রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর বের হবার কথা জানতে পেরে যমযম বিন আমর নামক ব্যক্তিকে মক্কায় প্রেরণ করল এ কথা জানানোর জন্য যে, মুহাম্মাদ (সাঃ) ও তাঁর সঙ্গীরা কাফেলাকে আক্রমণ করার জন্য বের হয়েছে। এ খবর শুনে মক্কার এক হাজার সৈন্য অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেরিয়ে আসল, আর আবূ সুফিয়ান রাস্তা পরির্বতন করে অন্য রাস্তা দিয়ে চলে গেল। এদিকে মুসলিম বাহিনী ও কাফির বাহিনী বদর নামক জায়গায় মুখোমুখি হল। যার কারণে কিছু সাহাবীর মনে প্রশ্ন জাগে যে, বের হলাম কিসের জন্য আর হল কী?
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন ওয়াহী মারফত জানতে পারলেন, মক্কা থেকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে একদল কাফির বের হয়েছে, তখন আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাঃ)-কে দু’টি দলের (একটি হল আবূ সূফিয়ানের বাণিজ্যিক কাফেলা, অন্যটি হল কাফির সৈন্য বাহিনী) একটি আয়ত্ত করতে পারবে বলে প্রতিশ্র“তি দিলেন। হয় কাফির সেনাদলকে পরাজিত করবে অথবা কাফেলাকে দখল করতে পারবে। অধিকাংশ মুসলিমদের আশা ছিল যে কাফেলা দখলে আসুক; কেননা ঐ উদ্দেশ্যে তারা বের হয়েছেন। তাছাড়া কাফির সৈন্যদের সাথে যুদ্ধ করার মত তেমন কোন অস্ত্র তাদের নেই। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছা তিনি সত্যকে প্রতিষ্ঠা করবেন। আল্লাহ তা‘আলা এখানে সে কথাই বলছেন:
(وَإِذْ يَعِدُكُمُ اللّٰهُ إِحْدَي الطَّا۬ئِفَتَيْنِ أَنَّهَا لَكُمْ وَتَوَدُّوْنَ أَنَّ غَيْرَ ذَاتِ الشَّوْكَةِ تَكُوْنُ لَكُمْ وَيُرِيْدُ اللّٰهُ أَنْ يُّحِقَّ الْحَقَّ بِكَلِمٰتِه۪ وَيَقْطَعَ دَابِرَ الْكٰفِرِيْنَ)
“স্মরণ কর! যখন আল্লাহ তোমাদেরকে প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন যে, দু’ দলের একদল তোমাদের আয়ত্তাধীন হবে; অথচ তোমরা চাচ্ছিলে যে, নিরস্ত্র দলটি তোমাদের আয়ত্তাধীন হোক। আর আল্লাহ চাচ্ছিলেন যে, তিনি সত্যকে তাঁর বাণী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত করবেন এবং কাফিরদেরকে নির্মূল করবেন;
(إِحْدَي الطَّا۬ئِفَتَيْنِ)
‘দু’ দলের একদল’ দু’দল বলতে একটি হল আবূ সুফিয়ানের কাফেলা অন্যটি হল মক্কার কাফির বাহিনী।
আব্দুল্লাহ বিন কা‘ব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি কা‘ব বিন মালেক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যেসব যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন তার মধ্যে তাবুকের যুদ্ধ ব্যতীত অন্য কোন যুদ্ধে আমি অনুপস্থিত ছিলাম না। তবে বদরের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে পারিনি । কিন্তু বদরের যুদ্ধে যারা যোগ দেয়নি তাদেরকে কোন তিরস্কার করা হয়নি। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কুরাইশ কাফেলার উদ্দেশ্যেই যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু পূর্ব নির্ধারিত পরিকল্পনা ব্যতীতই আল্লাহ তা‘আলা তাদের (মুসলিমদের) সঙ্গে তাদের দুশমনদের মোকাবেলা করিয়ে দেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৯৫১, সহীহ মুসলিম হা: ২৭৬৯)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] যেমন গনীমতের মাল বণ্টনের ব্যাপারে মুসলিমদের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয় এবং তা আল্লাহ তাঁর রসূলের ফায়সালার উপর সোপর্দ করা হয়। সুতরাং তার মধ্যেই মুসলিমদের কল্যাণ নিহিত ছিল। অনুরূপ নবী (সাঃ)-এর মদীনা হতে বের হওয়া ও পরে বাণিজ্যিক কাফেলার পরিবর্তে সেনাদলের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যাওয়া। যদিও কিছু সাহাবীদের নিকট তা ছিল অপছন্দনীয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লাভ মুসলিমদেরই হয়েছে।
[২] এই অপছন্দনীয়তা শুধু মাত্র সেনাদলের সাথে যুদ্ধের ব্যাপারে ছিল। যার প্রকাশ কিছু সাহাবী করেও ছিলেন। আর এর কারণও ছিল যুদ্ধাস্ত্র না থাকা। মদীনা হতে বের হওয়ার সাথে এর কোন সম্পর্ক ছিল না।
[৩] এ কথা প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল যে, বাণিজ্য কাফেলা নিজেকে বাঁচাতে সক্ষম হয়ে প্রস্থান করেছে। আর এখন কুরাইশ সেনা সম্মুখে আছে, যাদের মুকাবিলা ছাড়া কোন গতি নেই।
[৪] যোদ্ধা ও যুদ্ধাস্ত্রের স্বল্পতা হেতু মুসলিমদের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে তাদের যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, এখানে তা প্রকাশ করা হয়েছে।
[৫] অর্থাৎ, হয়তো বা বাণিজ্য কাফেলার সাথে তোমাদের সাক্ষাৎ ঘটবে আর বিনা যুদ্ধে তোমরা প্রচুর ধন-সম্পদ পেয়ে যাবে। অন্যথা কুরাইশ সেনাদের সাথে তোমাদের সংঘর্ষ হবে এবং তোমাদেরই জয় হবে ও গনীমতের মাল লাভ করবে।
[৬] অর্থাৎ, বাণিজ্য কাফেলা, যাতে বিনা যুদ্ধে মাল পাওয়া যেতে পারে।
[৭] কিন্তু আল্লাহ এর বিপরীত চাচ্ছিলেন যে, তোমাদের মুকাবিলা কুরাইশ সেনাদের সাথে হোক, যাতে কুফরের শক্তি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাক; যদিও এটি মুশরিকদের নিকট ছিল অপছন্দনীয়।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
তারা সে সময় বিপদের মোকাবিলা করতে ভয় পাচ্ছিল, অথচ বিপদের মুখে এগিয়ে যাওয়াই তখন ছিল সত্যের দাবী। ঠিক তেমনি গনীমতের মাল হাতছাড়া করতে আজ তাদের কষ্ট হচ্ছে, অথচ তা পরিহার করে হুকুমের প্রতীক্ষা করাই আজ সত্যের দাবী। এর দ্বিতীয় অর্থ এ হতে পারে, যদি আল্লাহর আনুগত্য করো এবং নিজের নফসের খাহেশের পরিবর্তে রসূলের কথা মেনে নাও, তাহলে ঠিক তেমনি ভাল ফল দেখতে পারে, যেমন এখনি বদর যুদ্ধের সময় দেখেছো। কুরাইশদের সেনাদলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যাওয়া তোমাদের কাছে বড়ই দুঃসহনীয় মনে হয়েছিল এবং তাকে তোমরা ধ্বংসের বার্তাবহ মনে করেছিলে। কিন্তু যখন তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ পালন করলে তখন এ বিপজ্জনক কাজটিই তোমাদের জন্য জীবনের সাফল্যের বার্তা বহন করে আনলো।
সাধারণভাবে সীরাত ও যুদ্ধের বর্ণনা সংক্রান্ত ইতিহাস গ্রন্থসমূহে বদর যুদ্ধ প্রসঙ্গে যেসব বর্ণনা এসেছে, কুরআনের এ বক্তব্য পরোক্ষভাবে তার প্রতিবাদ করেছে। অর্থাৎ এসব গ্রন্থে বলা হয়েছে নবী ﷺ মু’মিনদের নিয়ে প্রথমে কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলা লুট করার উদ্দেশ্যে মদীনা থেকে রওয়ানা হয়েছিলেন। তারপর কয়েক মনযিল পথ অতিক্রম করার পর যখন জানা গেলো মক্কা থেকে কুরাইশদের সেনাবাহিনী কাফেলার হেফাজত করার জন্য এগিয়ে আসছে তখন পরামর্শ করা হলো, কাফেলার ওপর আক্রমণ করা হবে না সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করা হবে? কিন্তু কুরআন এর সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বলছে। কুরআন বলছে, নবী ﷺ যখন ঘর থেকে বের হয়েছিলেন, তখনই কুরাইশ সেনাদলের সাথে চূড়ান্ত যুদ্ধ করার বিষয়টি তাঁর সামনে ছিল। আর কাফেলা ও সেনাদল কোনটিকে আক্রমণ করা হবে, এ পরামর্শও তখনি করা হয়েছিল। সেনাদলের মোকাবিলা করা অপরিহার্য, এ সত্যটি মু’মিনদের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে গেলেও তাদের মধ্য থেকে একদল লোক যুদ্ধের হাত থেকে রেহাই পাবার জন্য বিতর্ক করে চলছিল। তারপর সবশেষে যখন সেনাদলের দিকে অগ্রসর হবার বিষয়টি চূড়ান্তভাবে স্থিরীকৃত হয়ে গেলো তখন, এ দলটি মদীনা থেকে একথা মনে করেই বের হলো যে, তাদেরকে সোজা মৃত্যুর দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
* বাণিজ্য কাফেলা বা কুরাইশ সেনাদল।
* বাণিজ্য কাফেলা। তাদের সাথে মাত্র তিরিশ চল্লিশ জন রক্ষী ছিল।
*এ থেকে অনুমান করা যায়, সে সময় কোন ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল। এ সূরার ভূমিকায় আমি উল্লেখ করেছি, কুরাইশ সেনাদল অগ্রসর হবার পর মূলত প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল, ইসলামী দাওয়াত ও জাহেলী ব্যবস্থা এ দুয়ের মধ্যে আরব ভূখণ্ডে কার বেঁচে থাকার অধিকার আছে? যদি মুসলমানরা সে সময় সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে এগিয়ে না আসতো, তাহলে এরপর ইসলামের জন্য আর বেঁচে থাকার কোন সুযোগ থাকতো না। পক্ষান্তরে, মুসলমানদের ঘর থেকে বের হয়ে পড়ার এবং প্রথম পদক্ষেপেই কুরাইশ শক্তির ওপর চূড়ান্ত আঘাত হানার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে ইসলাম মজবুতভাবে পা রাখার জায়গা পেয়ে গিয়েছিল এবং এর পরের সমস্ত মোকাবিলায় জাহেলিয়াত একের পর এক পরাজয়বরণ করেছিল।