أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٣٦٧)-৫৭০
www.motaher21.net
সুরা: আল্ – আনফাল।
সুরা:৮
২৫ নং আয়াত:-
وَاتَّقُواْ فِتْنَة
তোমরা সেই ফিতনাকে ভয় কর,
Warning against an encompassing Fitnah
وَ اتَّقُوۡا فِتۡنَۃً لَّا تُصِیۡبَنَّ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا مِنۡکُمۡ خَآصَّۃً ۚ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ ﴿۲۵﴾
তোমরা সেই ফিতনাকে ভয় কর, যা বিশেষ করে তোমাদের মধ্যে যারা অত্যাচারী কেবল তাদেরই ক্লিষ্ট করবে না এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর।
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
এখানে মুমিনদেরকে পরীক্ষা থেকে ভয় প্রদর্শন করা হচ্ছে যে, আল্লাহর পরীক্ষা পাপী ও নেককার সবারই উপর পতিত হবে। এই পরীক্ষা শুধু পাপীদের উপর নির্দিষ্ট নয়। হযরত যুবাইর (রাঃ)-কে বলা হয়েছিল- “হে আবু আব্দিল্লাহ (রাঃ)! আমীরুল মুমিনীন হযরত উসমান (রাঃ)-কে হত্যা করা হয়েছে। এভাবে আপনারা তাঁকে হারিয়ে ফেলেছেন। অতঃপর এখন তার খুনের দাবীদার হচ্ছেন! খুনের যদি দাবীদারই হবেন তবে তাঁকে নিহত হতে দিলেন কেন?” হযরত যুবাইর (রাঃ) উত্তরে বলেছিলেনঃ “এটা ছিল আল্লাহর পরীক্ষা যার মধ্যে আমরা জড়িয়ে পড়েছি। আমরা নবী (সঃ), আবু বকর (রাঃ), উমার (রাঃ) এবং উসমান (রাঃ)-এর যমানায় কুরআন কারীমের (আরবী) -এ আয়াতটি পাঠ করতাম। কিন্তু তখন আমাদের ধারণাও ছিল না যে, আমরাও এর মধ্যে পতিত হবো। শেষ পর্যন্ত ঐ পরীক্ষা আমাদের উপর এসে পড়েছে এবং মুসলমানদের দু’টি দল পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। হযরত উসমান (রাঃ)-এর হত্যাকে কেন্দ্র করেই এই পরীক্ষার সূচনা হয়েছে।” (এটা ইমাম আহমাদ (রঃ) ও বাযযার (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
হযরত হাসান বসরী (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, এই আয়াতটি হযরত আলী (রাঃ), হযরত আম্মার (রাঃ), হযরত তালহা (রাঃ) এবং যুবাইর (রাঃ)-এর। ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। হযরত যুবাইর (রাঃ) বর্ণনা করেনঃ “আমরা সদা সর্বদা এ আয়াতটি পাঠ করতাম। কিন্তু এটা যে আমাদের উপরই সত্যরূপে প্রমাণিত হবে তা আমরা জানতাম না।” সুদ্দী (রঃ)-এর ধারণা এই যে, এ আয়াতটি বিশেষভাবে আহলে বদরের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। উষ্ট্রের যুদ্ধে তাদের উপরই এটা সত্যরূপে প্রমাণিত হয় এবং তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যায়। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর ধারণা মতে এর দ্বারা উদ্দেশ্য শুধু নবী (সঃ)-এর সাহাবীবর্গ। ইবনে আব্বাস (রাঃ) এই আয়াতের তাফসীরে বলেনঃ “মুমিনদের উপর নির্দেশ রয়েছে- পাপর্কে তোমরা নিজেদের মধ্যে আসতে দিয়ো না। যেখানেই কাউকেও কোন অসৎ কার্যে লিপ্ত দেখতে পাও, সত্বরই তাকে তা থেকে বিরত রাখো। নতুবা শাস্তি সবার উপরই আসবে।” এটাই উত্তম তাফসীর। মুজাহিদ (রঃ) বলেনঃ “এ হুকুম তোমাদের জন্যেও বটে।” হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ তোমাদের প্রত্যেকেই এই পরীক্ষায় পতিত হবে। কেননা আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই তোমাদের মালধন ও সন্তান সন্ততি হচ্ছে পরীক্ষা।” (৬৪:১৫) সুতরাং তোমাদের সকলেরই ফির বিভ্রান্তি থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত। কেননা, এই ভয় প্রদর্শন সাহাবা ও গায়ের সাহাবা সবার উপরই রয়েছে। তবে এটা সঠিক কথা যে, এর দ্বারা সাহাবীদেরকেই সম্বোধন করা হয়েছে। এই হাদীসটি ফিত্না ও পরীক্ষাকে ভয় করার কথাই প্রমাণ করছে। এগুলো ইনশাআল্লাহ পৃথক পুস্তকে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হবে, যেমন ইমামগণও পৃথক পুস্তকের আকারে এই কাজ আঞ্জাম দিয়েছেন। এখানে বিশেষভাবে যেটা আলোচনা করা হয়েছে তা এই যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলতেনঃ “মহামহিমান্বিত আল্লাহ বিশেষ বিশেষ লোকের আমলের কারণে সর্বসাধারণের উপর শাস্তি নাযিল করেন না। কিন্তু যখন বিশিষ্ট লোকগুলো কওমের মধ্যে গর্হিত কাজকর্ম ছড়ানো অবস্থায় দেখতে পায় এবং ওগুলো বন্ধ করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বন্ধ করে না এবং লোকদেরকে ঐসব কাজ করতে বাধা দেয় না তখন শাস্তি সাধারণভাবে এসে পড়ে এবং বিশিষ্ট ও সাধারণ সবাই ঐ শাস্তির শিকারে পরিণত হয়।” (এটা ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন। ইবনে কাসীর (রঃ) বলেন যে, সুনানের কিতাবগুলোতে কেউই এটাকে তাখরীজ করেননি)
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহর শপথ! যে পর্যন্ত তোমরা ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করতে থাকবে সেই পর্যন্ত তোমাদের উপর শাস্তি আসবে না। আর যখন তোমরা মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা ছেড়ে দেবে এবং ভাল কাজের প্রতি উৎসাহ প্রদান থেকে বিরত থাকবে তখন আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর কঠিনতম শাস্তি অবতীর্ণ করতে পারেন। অতঃপর তোমরা লক্ষবার দুআ করলেও সেই দুআ কবুল হবে না। অথবা আল্লাহ তোমাদের উপর অন্য কওমকে বিজয়ী করবেন। এরপর তোমাদের সমস্ত দুআ বিফল হয়ে যাবে।” (এ হাদীস দুটি হযরত হুযাইফা ইবনে ইয়ামান (রাঃ) এবং হযরত ইসমাঈল ইবনে জাফর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন)
আবু রাকাদ (রঃ) বলেন, আমি আমার এক গোলামকে হযরত হুযাইফা (রাঃ)-এর নিকট পাঠালাম। সেই সময় তিনি বলেছিলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর যুগে কেউ এ ধরনের একটি মাত্র কথা বললেও তাকে মুনাফিক মনে করা হতো। কিন্তু আজ এক মজলিসে তোমাদের কোন একজনের মুখ থেকে আমি এরূপ চারটি কপটতাপূর্ণ কথা শুনতে পাচ্ছি! তোমাদের পক্ষে উচিত এই যে, তোমরা ভাল কাজের আদেশ করবে, মন্দ কাজ থেকে সত্বর বাধা দিবে এবং মানুষকে ভাল কাজে উৎসাহিত করবে। নতুবা তোমরা সবাই শাস্তিতে গ্রেফতার হয়ে যাবে অথবা এই ধরনের শাস্তি হবে যে, দুষ্ট লোককে তোমাদের উপর শাসনকর্তা বানিয়ে দেয়া হবে। অতঃপর ভাল লোকেরা লাখবার দুআ করলেও তা বিফলে যাবে।
হযরত আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি নুমান ইবনে বাশীর (রাঃ)-কে ভাষণ দিতে শুনেছি, তিনি নিজের দু’টি অঙ্গলি দ্বারা নিজের কানের দিকে ইশারা করছিলেন এবং বলছিলেন- আল্লাহর হুদূদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি এবং আল্লাহর হুদূদকে লংঘনকারী অথবা তাতে অবহেলা প্রদর্শনকারী ব্যক্তির দৃষ্টান্ত এইরূপ যে, কতকগুলো তাক নৌকায় চড়ে আছে। উপরের লোকেরা নীচের লোকদের কষ্টের কারণ হয়ে গেছে এবং নীচের লোকেরা উপরের লোকদেরকে কষ্ট দিচ্ছে। অর্থাৎ নীচের লোকদের পানির প্রয়োজন হওয়ায় তারা পানি আনার জন্যে উপরে গেল। কিন্তু এর ফলে উপরের লোকদের কষ্ট হতে লাগলো। তাই ঐ নীচের লোকেরা বলাবলি করলো- যদি আমরা নৌকার নীচের দিক থেকেই কোন তক্তা সরিয়ে দিয়ে পানির পথ করে দেই তবে উপরের লোকদের কোন কষ্ট হবে না। এর ফল তো জানা কথা যে, নৌকায় পানি উঠার কারণে নৌকার আরোহীরা সবাই ডুবে মরবে। সুতরাং নৌকায় ছিদ্র করা থেকে তাদেরকে বাধা দেয়া উচিত। অনুরূপভাবে এই পাপীদেরকে যদি তোমরা পাপকাজে বাধা না দিয়ে ঐ অবস্থাতেই ছেড়ে দাও তবে নৌকায় আরোহীদের মত তোমরা সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে, যদিও নৌকার উপরের আরোহীদের মত তোমাদের কোন দোষ নেই। কিন্তু এটা এরই শাস্তি যে, তোমরা পাপ কাজ থেকে বাধা প্রদান করনি। (এটা ইমাম বুখারী (রঃ) ও ইমাম তিরমিযী (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহর রাসূল (সঃ)-কে বলতে শুনেছি- “আমার উম্মতের মধ্যে পাপ যখন সাধারণভাবে প্রকাশ পাবে তখন আল্লাহ সাধারণভাবে শাস্তি পাঠাবেন।” তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! তাদের মধ্যে সৎ লোক থাকলেও কি? তিনি উত্তরে বললেনঃ “হ্যা, তারাও শাস্তিতে জড়িয়ে পড়বে। কিন্তু (মৃত্যুর পর) তারা আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি লাভ করবে।” (এটা ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন) অন্য একটি বর্ণনায় আছে- “কোন কওম পাপ কাজ করতে রয়েছে, আর তাদের মধ্যে কতকগুলো এমন লোকও রয়েছে যারা সম্ভ্রান্ত, তারা নিজেরা সেই পাপকার্যে লিপ্ত নয় বটে, কিন্তু তারা সেই কাজে বাধা প্রদান করে না, তখন আল্লাহ তাদের উপর সাধারণভাবে শাস্তি দিয়ে থাকেন।”
হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন“যখন ভূ-পৃষ্ঠে পাপকার্য প্রকাশ পাবে তখন আল্লাহ দুনিয়াবাসীর উপর তার শাস্তি নাযিল করবেন।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, তাদের মধ্যে আল্লাহর অনুগত বান্দারাও থাকবে কি? তিনি উত্তরে বললেনঃ “হ্যা, তবে (মৃত্যুর পর) তারা আল্লাহর করুণা লাভ করবে।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) তাখরীজ করেছেন)।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Anfal
Sura:8
Verses :- 25
وَاتَّقُواْ فِتْنَة
Warning against an encompassing Fitnah
Allah warns;
وَاتَّقُواْ فِتْنَةً لاَّ تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُواْ مِنكُمْ خَأصَّةً وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
And fear the Fitnah (affliction and trial) which affects not in particular (only) those of you who do wrong, and know that Allah is severe in punishment.
Allah warns His believing servants of a Fitnah, trial and test, that encompasses the wicked and those around them. Therefore, such Fitnah will not be restricted to the sinners and evildoers. Rather, it will reach the others if the sins are not stopped and prevented.
Imam Ahmad recorded that Mutarrif said,
“We asked Az-Zubayr, `O Abu Abdullah! What brought you here (for the battle of Al-Jamal)! You abandoned the Khalifah who was assassinated (Uthman, may Allah be pleased with him) and then came asking for revenge for his blood!’
He said, `We recited at the time of the Messenger of Allah, and Abu Bakr, Umar and Uthman,
وَاتَّقُواْ فِتْنَةً لاَّ تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُواْ مِنكُمْ خَأصَّةً
And fear the Fitnah (affliction and trial) which affects not in particular (only) those of you who do wrong,
We did not think that this Ayah was about us too, until it reached us as it did.”‘
Ali bin Abi Talhah reported that Ibn Abbas said that;
the Ayah,
وَاتَّقُواْ فِتْنَةً لاَّ تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُواْ مِنكُمْ خَأصَّةً
(And fear the Fitnah (affliction and trial) which affects not in particular (only) those of you who do wrong), refers to the Companions of the Prophet in particular.
In another narration from Ibn Abbas, he said,
“Allah commanded the believers to stop evil from flourishing among them, so that Allah does not encompass them all in the torment (Fitnah).”
This, indeed, is a very good explanation, prompting Mujahid to comment about Allah’s statement,
وَاتَّقُواْ فِتْنَةً لاَّ تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُواْ مِنكُمْ خَأصَّةً
(And fear the Fitnah (affliction and trial) which affects not in particular (only) those of you who do wrong),
“Is for you too!”
Several said similarly, such as Ad-Dahhak and Yazid bin Abi Habib and several others.
Ibn Mas`ud said,
“There is none among you but there is something that represents a Fitnah for him, for Allah said,
إِنَّمَأ أَمْوَلُكُمْ وَأَوْلَـدُكُمْ فِتْنَةٌ
Your wealth and your children are only a trial (Fitnah)… (64:15)
Therefore, when you seek refuge, seek it with Allah from the Fitnah that causes misguidance.”
Ibn Jarir collected this Hadith.
The view that the warning in this Ayah addresses the Companions and all others is true, even though the speech in the Ayah was directed at the Companions.
There are Hadiths that warn against Fitnah in general, thus providing the correctness of this explanation. Similarly there will be a separate book in which this subject will be discussed, Allah willing, as also is the case with the Imams, there being a number of writings about this.
Of the most precise things that have been mentioned under this topic, is what was recorded by Imam Ahmad from Hudhayfah bin Al-Yaman that the Messenger of Allah said,
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَتَأْمُرُنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَلَتَنْهَوُنَّ عَنِ الْمُنْكَرِ أَوْ لَيُوشِكَنَّ اللهُ أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عِقَابًا مِنْ عِنْدِهِ ثُمَّ لَتَدْعُنَّهُ فَلَا يَسْتَجِيبُ لَكُم
By He in Whose Hand is my soul! You will enjoin righteousness and forbid evil, or Allah will send a punishment upon you from Him; you will supplicate then to Him, but He will not answer your supplication.
Imam Ahmad recorded that Abu Ar-Riqad said,
“I heard Hudhayfah saying,
`A person used to utter one word during the time of the Messenger of Allah and become a hypocrite on account of it. I now hear such words from one of you four times in the same sitting. Surely, you will enjoin good, forbid evil and encourage each other to do good or Allah will surround you all with torment, or make the wicked among you become your leaders. The righteous among you will then supplicate, but their supplication will not be accepted.”‘
Imam Ahmad recorded that An-Nu`man bin Bashir said that the Prophet gave a speech in which he said, while pointing to his ears with two of his fingers,
مَثَلُ الْقَايِمِ عَلَى حُدُودِ اللهِ وَالْوَاقِعِ فِيهَا وَالْمُدَاهِنِ فِيهَا كَمَثَلِ قَوْمٍ رَكِبُوا سَفِينَةً فَأَصَابَ بَعْضُهُمْ أَسْفَلَهَا وَأَوْعَرَهَا وَشَرَّهَا وَأَصَابَ بَعْضُهُمْ أَعْلَهَا فَكَانَ الَّذِينَ فِي أَسْفَلِهَا إِذَا اسْتَقَوُا الْمَاءَ مَرُّوا عَلَى مَنْ فَوقَهُمْ فَأذُوْهُمْ فَقَالُوا لَوْ خَرَقْنَا فِي نَصِيبِنَا خَرْقًا فَاسْتَقَيْنَا مِنْهُ وَلَمْ نُوْذِ مَنْ فَوْقَنَا فَإِنْ تَرَكُوهُمْ وَأَمْرَهُمْ هَلَكُوا جَمِيعًا وَإِنْ أَخَذُوا عَلَى أَيْدِيهِمْ نَجَوْا جَمِيعًا
The parable of the person abiding by Allah’s order and restrictions in comparison to those who violate them, or sit idle while they are being violated, is that of those who drew lots for their seats in a boat. Some of them got seats in the lower part, which is the most rough and worst part, and the others in the upper. When the former needed water, they had to go up to bring water and that troubled the others, so they said, `Let us make a hole in our share of the ship and get water, saving those who are above us from troubling them, so, if the people in the upper part let the others do what they suggested, all the people of the ship would be destroyed, but if they prevented them, both parties would be safe.
This was recorded by Al-Bukhari, but not Muslim, in the Book of Partnerships and the Book of Witnesses.
It was also recorded by At-Tirmidhi through a different route of narration.
Imam Ahmad recorded that Umm Salamah, the Prophet’s wife, said,
“I heard the Messenger of Allah saying,
إِذَا ظَهَرَتِ الْمَعَاصِي فِي أُمَّتِي عَمَّهُمُ اللهُ بِعَذَابٍ مِنْ عِنْدِه
If sins become apparent in my Ummah, Allah will surround them with punishment from Him.
I said, `O Allah’s Messenger! Will they have righteous people among them then?’
He said,
بَلَى
Yes.
I asked, `What will happen to them?’
He said,
يُصِيبُهُمْ مَا أَصَابَ النَّاسَ ثُمَّ يَصِيرُونَ إِلَى مَغْفِرَةٍ مِنَ اللهِ وَرِضْوَان
They will be stricken as the people, but they will end up with Allah’s forgiveness and pleasure.”
Imam Ahmad recorded that Jarir said that the Messenger of Allah said,
مَا مِنْ قَوْمٍ يُعْمَلُ فِيهِمْ بِالْمَعَاصِي هُمْ أَعَزُّ وَأَكْثَرُ مِمَّنْ يَعْمَلُونَ ثُمَّ لَمْ يُغَيِّرُوهُ إِلاَّ عَمَّهُمُ اللهُ بِعِقَاب
Every people among whom sins are being committed, while they are mightier and more numerous than those who do wrong, yet they did nothing to stop them, then Allah will surround them all with punishment.
Ibn Majah collected this Hadith.
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
অর্থাৎ, দোষী-নির্দোষ সকলকেই করবে। এই ফিতনা থেকে উদ্দেশ্য, মানুষের এক অপরের উপর ক্ষমতার অধিকারী হয়ে নির্বিচারে সকলের উপর অত্যাচার করে। অথবা ব্যাপক আযাব বা শাস্তি, যেমন অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, বন্যা ইত্যাদি, যা আকাশ ও পৃথিবী হতে প্রাকৃতিক দুর্যোগরূপে নেমে আসে, যাতে সৎ-অসৎ সবাই প্রভাবিত হয়। অথবা কিছু হাদীসে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজে বাধাদান ছেড়ে দিলে যে শাস্তির সতর্কবাণী শোনানো হয়েছে, এখানে তাকেই ‘ফিতনা’ বলে ব্যক্ত করা হয়েছে।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
এখানে ফিতনা দ্বারা একটি সর্বব্যাপী সামাজিক অনাচার বুঝানো হয়েছে। এ অনাচার মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ে মানুষের জীবনে দুর্ভাগ্য ও ধ্বংস ডেকে আনে। শুধুমাত্র যারা গোনাহ করে তারই এ দুর্ভাগ্য ও ধ্বংসের শিকার হয়না বরং এর শিকার তারাও হয় যারা, এ পাপাচারে জর্জরিত সমাজে বসবাস করা বরদাশত করে নেয়। উদাহরণস্বরূপ ধরে নেয়া যেতে পারে, যখন কোন শহরে ময়লা-আবর্জনা এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে জমে থাকে তখন তার প্রভাবও থাকে সীমাবদ্ধ। এ অবস্থায় শুধুমাত্র যেসব লোক নিজেদের শরীরে ও ঘরোয়া পরিবেশে ময়লা আবর্জনা ভরে রেখেছে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু যখন সেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ ব্যাপকভাবে জমে উঠতে থাকে এবং সারা শহরে ময়লা প্রতিরোধ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালাবার মতো একটি দলও থাকে না তখন মাটি, পানি ও বাতাসের সর্বত্রই বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে যে মহামারী দেখা দেয় তাতে যারা ময়লা-আবর্জনা ছড়ায়, যারা নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন থাকে এবং যারা ময়লা ও আবর্জনাময় পরিবেশে বসবাস করে তারা সবাই আক্রান্ত হয়। নৈতিক ময়লা ও আবর্জনার বেলায়ও ঠিক একই ব্যাপার ঘটে। যদি তা ব্যক্তিগত পর্যায়ে কিছু ব্যক্তির মধ্যে থাকে এবং সৎ ও সত্যনিষ্ঠ সমাজের প্রতিপত্তির চাপে কোণঠাসা ও নিস্তেজ অবস্থায় থাকে, তাহলে তার ক্ষতিকর প্রভাব সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু যখন সমাজের সামষ্টিক বিবেক দুর্বল হয়ে পড়ে, নৈতিক অনিষ্টগুলোকে দমিয়ে রাখার ক্ষমতা তার থাকে না। সমাজ অঙ্গনে অসৎ, নির্লজ্জ ও দুশ্চরিত্র লোকেরা নিজেদের ভেতরের ময়লাগুলো প্রকাশ্যে উৎক্ষিপ্ত করতে ও ছড়াতে থাকে। সৎলোকেরা নিষ্কর্মা হয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত সততা ও সদগুণাবলী নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে এবং সামাজিক ও সামষ্টিক দুষ্কৃতির ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করে। তখন সামগ্রিকভাবে গোটা সমাজের ওপর দুর্ভোগ নেমে আসে। এ সময় এমন ব্যাপক দুর্যোগের সৃষ্টি হয়, যার ফলে বড়-ছোট, সবল-দুর্বল সবাই সমানভাবে বিপর্যস্ত ও বিধ্বস্ত হয়।
কাজেই আল্লাহর বক্তব্যের মর্ম হচ্ছে, রসূল যে সংস্কার ও হেদায়াতের কর্মসূচী নিয়ে মাঠে নেমেছেন এবং যে কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য তোমাদের প্রতি আহবান জানাচ্ছেন, তার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত ও সামাজিক উভয় দিক দিয়ে তোমাদের জন্য যথার্থ জীবনের গ্যারান্টি। যদি সাচ্চা দিলে আন্তরিকতা সহকারে তাতে অংশ না নাও এবং সমাজের বুকে যেসব দুস্কৃতি ছড়িয়ে রয়েছে সেগুলোকে বরদাশত করতে থাকো তাহলে ব্যাপক বিপর্যয় দেখা দেবে। যদিও তোমাদের মধ্যে এমন অনেক লোক থেকে থাকে, যারা কার্যত দুস্কৃতিতে লিপ্ত হয় না এবং দুস্কৃতি ছড়াবার জন্য তাদেরকে দায়ীও করা যায় না বরং নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে তারা সুকৃতির অধিকারী হয়ে থাকে, তবুও এ ব্যাপক বিপদ তোমাদের আচ্ছন্ন করে ফেলবে। সূরা আরাফের ১৬৩-১৬৬ আয়াতে শনিবার ওয়ালাদের ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত পেশ করতে গিয়ে এ এক কথাই বলা হয়েছে। এ দৃষ্টিভঙ্গীকেই ইসলামের ব্যক্তিচরিত্র ও সমাজ সংস্কারমূলক কার্যক্রমের মৌলিক দৃষ্টিকোণ বলা যেতে পারে।
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
وَاتَّقُوا فِتْنَةً
‘তোমরা এমন ফেতনাকে ভয় কর’ অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ঐ ফেতনাকে ভয় করার নির্দেশ দিচ্ছেন যা সৎ ও অসৎ, জালেম ও ন্যায় ব্যক্তিসহ সকলকে পাকড়াও করবে। এ ফেতনা হল আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর আনুগত্য ছেড়ে দেয়া এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ থেকে বিরত থাকা। এসব কাজ না করলে সকলকে ফেতনা গ্রাস করবে। (আয়সারুত তাফাসীর, ২য় খ. পৃঃ ১৩১)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিদের খারাপ আমলের কারণে সকলকে শাস্তি দেবেন না। যতক্ষণ না মানুষ তোমাদের মাঝে খারাপ কাজ দেখে। এ খারাপ কাজে বাধা দিতে সক্ষম থাকা সত্ত্বেও বাধা না দিলে সকলকে আল্লাহ তা‘আলা শাস্তি দেবেন। (মুসনাদ আহমাদ: ১/১৯২, সহীহ) যয়নাব (রাঃ) বলেন: নাবী (সাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম: হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আমাদের মাঝে সৎ লোক থাকা সত্ত্বেও কি আমাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হবে? তিনি বললেন: হ্যাঁ, যখন খারাপ কাজ বৃদ্ধি পাবে। (সহীহ বুখারী হা: ৩৩৪৬)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের বাধা না দিলে ফেতনা আমাদেরকে গ্রাস করবে, তখন দু‘আ করেও কোন কাজে আসবে না।