Book#571

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٣٦٨)-৫৭১
www.motaher21.net
সুরা: আল্‌ – আনফাল।
সুরা:৮
২৬ নং আয়াত:-
اذۡکُرُوۡۤا اِذۡ اَنۡتُمۡ قَلِیۡلٌ
স্মরণ কর, যখন তোমরা ছিলে স্বল্পসংখ্যক,
Reminding Muslims of Their previous State of Weakness.

وَ اذۡکُرُوۡۤا اِذۡ اَنۡتُمۡ قَلِیۡلٌ مُّسۡتَضۡعَفُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ تَخَافُوۡنَ اَنۡ یَّتَخَطَّفَکُمُ النَّاسُ فَاٰوٰىکُمۡ وَ اَیَّدَکُمۡ بِنَصۡرِہٖ وَ رَزَقَکُمۡ مِّنَ الطَّیِّبٰتِ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۲۶﴾
স্মরণ কর, যখন তোমরা ছিলে স্বল্পসংখ্যক, পৃথিবীতে তোমরা দুর্বলরূপে পরিগণিত হতে। তোমরা আশংকা করতে যে লোকেরা তোমাদেরকে অপহরণ করবে, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে আশ্রয় দেন, স্বীয় সাহায্য দ্বারা তোমাদেরকে শক্তিশালী করেন এবং তোমাদেরকে উত্তম বস্তুসমূহ দান করেন; যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
এখানে শোকরগুজার শব্দটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ওপরের ধারাবাহিক বক্তব্যগুলো সামনে রাখলে একটা কথা পরিষ্কার হয়ে যায়। আল্লাহ‌ মুসলমানদের দুর্বলতার অবস্থা থেকে বের করে এনেছেন এবং মক্কার বিপদসংকুল জীবন থেকে উদ্ধার করে তাদেরকে এমন শান্তি ও নিরাপত্তার ভূমিতে আশ্রয় দিয়েছিলেন, যেখানে তারা উত্তম রিযিক লাভ করছে। শুধুমাত্র এতটুকু কথা মেনে নেয়াই শোকরগুজারী অর্থ প্রকাশের জন্য যথেষ্ট নয়। বরং সেই সাথে একথাও অনুধাবন করা শোকরগুজারীর অন্তর্ভুক্ত যে, যে মহান আল্লাহ‌ মুসলমানদের প্রতি এত সব অনুগ্রহ করেছেন সেই আল্লাহ‌ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করা তাদের কর্তব্য। আর রসূল যে আন্দোলনের সূচনা করেছেন, তাকে সফল করার সাধনায় তাদেরকে আন্তরিকতা ও উৎসর্গিত মনোভাব নিয়ে আত্মনিয়োগ করতে হবে। এ কাজে যেসব বাধা-বিপত্তি, বিপদ-আপদ ও ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দেবে, আল্লাহর ওপর নির্ভর করে তারা সাহসের সাথে তার মোকাবিলা করে যাবে। কারণ এ আল্লাহই ইতিপূর্বে বিপদ-আপদ থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে এনেছিলেন। তারা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস-রাখবে, যখন তারা আন্তরিকতা সহকারে আল্লাহর কাজ করবে, তখন আল্লাহ‌ নিশ্চয়ই তাদের পক্ষ সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা করবেন-এসবই শোকরগুজারীর অর্থে অন্তর্ভুক্ত। কাজেই শুধুমাত্র মুখে স্বীকৃতি দান পর্যায়ের শোকরগুজারী এখানে উদ্দেশ্য নয়। বরং এ শোকরগুজারী বাস্তবে কাজের মাধ্যমে প্রকাশিত হবে। অনুগ্রহের কথা স্বীকার করা সত্ত্বেও অনুগ্রহকারীর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রচেষ্টা না চালানো, তার খিদমত করার ব্যাপারে আন্তরিক না হওয়া এবং না জানি আগামীতেও তিনি অনুগ্রহ করবেন কিনা এ ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করা-এসব কোন ক্রমেই শোকরগুজারী নয় বরং উল্টো অকৃতজ্ঞতারই আলামত।

তাফসীরে‌ ইবনে কাসীর বলেছেন:-

আল্লাহ তা’আলা ঐ নিয়ামতরাজির কথা বলেছেন যা মুমিনদের উপর করা হয়েছে যে, তারা সংখ্যায় কম ছিল, তাদের সংখ্যা তিনি বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা দুর্বল ছিল ও ভীত সন্ত্রস্ত ছিল, তিনি তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন। তাদের ভয়ের কারণগুলো দূর করে দিয়েছেন। তারা গরীব ও ফকির ছিল, তিনি তাদেরকে পবিত্র জীবিকা দান করেছেন। তাদেরকে তিনি কৃতজ্ঞ বান্দা বানিয়েছেন। তারা অনুগত বান্দারূপে পরিগণিত হয়েছে। প্রতিটি কাজে তারা বাধ্য ও অনুগত হয়ে গেছে। এই ছিল মুমিনদের অবস্থা, যখন তারা মক্কায় ছিল এবং সংখ্যায় খুবই কম ছিল। তারা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। মুশরিক, মাজুসী, রুমী সবাই তাদেরকে তাদের সংখ্যার স্বল্পতা ও শক্তিহীনতার কারণে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছিল। সব সময় তাদের এই ভয় ছিল যে, আকস্মিকভাবে তাদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে। কিছুকাল পর্যন্ত তাদের এই অবস্থাই ছিল। অতঃপর তাদেরকে মদীনায় হিজরত করার নির্দেশ দেন। সেখানে তারা আশ্রয় লাভ করে । মদীনার ললাকেরা তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। বদর ও অন্যান্য যুদ্ধে তাদের সাথে অংশগ্রহণ করে। জান ও মাল তাদের উপর কুরবান করে দেয়। কেননা, তারা চাচ্ছিল আল্লাহ ও তার রাসূল (সঃ)-এর আনুগত্য করতে।

(আরবী) -এ সম্পর্কে কাতাদা (রঃ) বলেন যে, আরবে এই লোকগুলো অত্যন্ত লাঞ্ছিত অবস্থায় ছিল। তাদের জীবন ছিল অত্যন্ত দুর্বিসহ। তাদের পেটে খাবার ছিল না, পরনে কাপড় ছিল না। সুপথ থেকেও তারা ছিল ভ্রষ্ট। তারা ছিল খুবই হতভাগা। তারা খাবার পেতো না, বরং তাদেরকেই খেয়ে নেয়া হচ্ছিল। দুনিয়ায় যে তাদের অপেক্ষা বেশী লাঞ্ছিত ও অপমানিত আর কেউ ছিল তা আমাদের জানা নেই। কিন্তু ইসলাম আনয়নের পর এই লাঞ্ছিত লোকেরাই দেশের পর দেশ দখল করে নেয় এবং আমীর ও বাদশাহ বনে যায়। রাজা বাদশাহদের উপরও হুকুম চালাতে থাকে। ঢেরি ঢেরি খাবার তারা পেতে শুরু করে। আল্লাহ তাদেরকে সব কিছুই দান করেন যা তোমরা আজ স্বচক্ষে দেখছো। সুতরাং এখন তোমরা নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। তিনিই হচ্ছেন প্রকৃত নিয়ামত দাতা। কৃতজ্ঞ বান্দাদেরকে তিনি ভালবাসেন এবং তাদের ধন-সম্পদ আরো বাড়িয়ে দেন।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Anfal
Sura:8
Verses :- 26
اذۡکُرُوۡۤا اِذۡ اَنۡتُمۡ قَلِیۡلٌ
Reminding Muslims of Their previous State of Weakness.

Reminding Muslims of Their previous State of Weakness and Subjugation which changed into Might and Triumph

Allah reminds;

وَاذْكُرُواْ إِذْ أَنتُمْ قَلِيلٌ مُّسْتَضْعَفُونَ فِي الَارْضِ تَخَافُونَ أَن يَتَخَطَّفَكُمُ النَّاسُ فَأوَاكُمْ وَأَيَّدَكُم بِنَصْرِهِ وَرَزَقَكُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

And remember when you were few and were reckoned weak in the land, and were afraid that men might kidnap you, but He provided a safe place for you, strengthened you with His help, and provided you with good things (for livelihood) so that you might be grateful.

Allah, the Exalted, reminds His believing servants of His blessings and favors on them. They were few and He made them many, weak and fearful and He provided them with strength and victory. They were meek and poor, and He granted them sustenance and livelihood. He ordered them to be grateful to Him, and they obeyed Him and implemented what He commanded.

When the believers were still in Makkah they were few, practicing their religion in secret, oppressed, fearing that pagans, fire worshippers or Romans might kidnap them from the various parts of Allah’s earth, for they were all enemies of the Muslims, especially since Muslims were few and weak. Later on, Allah permitted the believers to migrate to Al-Madinah, where He allowed them to settle in a safe resort.

Allah made the people of Al-Madinah their allies, giving them refuge and support during Badr and other battles. They helped the Migrants with their wealth and gave up their lives in obedience of Allah and His Messenger.

Qatadah commented,
وَاذْكُرُواْ إِذْ أَنتُمْ قَلِيلٌ مُّسْتَضْعَفُونَ فِي الَارْضِ
(And remember when you were few and were reckoned weak in the land),

“Arabs were the weakest of the weak, had the toughest life, the emptiest stomachs, the barest skin and the most obvious misguidance. Those who lived among them lived in misery; those who died went to the Fire. They were being eaten up, but unable to eat up others! By Allah! We do not know of a people on the face of the earth at that time who had a worse life than them. When Allah brought Islam, He made it dominant on the earth, thus bringing provisions and leadership for them over the necks of people. It is through Islam that Allah granted all what you see, so thank Him for His favors, for your Lord is One Who bestows favors and likes praise. Verily, those who thank Allah enjoy even more bounties from Him.

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

আলোচ্য আয়াতে মক্কী জীবনের কষ্ট ও বিপদের বর্ণনা এবং তারপরে মাদানী জীবনে আল্লাহর অনুগ্রহে যে সুখ-শান্তি ও সচ্ছলতা মুসলিমগণ লাভ করেছিলেন তার বর্ণনা রয়েছে।

তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন সে সময়ের কথা যখন তোমরা সংখ্যায় স্বল্প ছিলে তোমাদেরকে জমিনে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল। ইচ্ছা করলে মানুষ তোমাদেরকে ছুঁ মেরে নিতে পারত। তখন আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে তাঁর সাহায্য দ্বারা শক্তিশালী করেছেন। তোমাদেরকে পবিত্র বস্তু রিযিকস্বরূপ দিয়েছেন যাতে তোমরা তাঁর শুকরিয়া কর।

অতএব প্রতিটি মু’মিনের ঈমানী দায়িত্ব হল: যথাসম্ভব সৎ কাজের আদেশ প্রদান করা ও অসৎ কাজে বাধা দেয়া এবং আল্লাহ ও রাসূলের একচ্ছত্র আনুগত্য করা।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:

নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা উচিত।

Leave a Reply