أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٣٨٢)-৫৮৫
www.motaher21.net
সুরা: আল্ – আনফাল।
সুরা:৮
৫৮-৫৯ নং আয়াত:-
وَ اِمَّا تَخَافَنَّ مِنۡ قَوۡمٍ خِیَانَۃ
যদি তুমি কোন সম্প্রদায়ের বিশ্বাসঘাতকতার আশংকা কর,
If you fear from any people treachery,
وَ اِمَّا تَخَافَنَّ مِنۡ قَوۡمٍ خِیَانَۃً فَانۡۢبِذۡ اِلَیۡہِمۡ عَلٰی سَوَآءٍ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُحِبُّ الۡخَآئِنِیۡنَ ﴿٪۵۸﴾
وَ لَا یَحۡسَبَنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا سَبَقُوۡا ؕ اِنَّہُمۡ لَا یُعۡجِزُوۡنَ ﴿۵۹﴾
যদি তুমি কোন সম্প্রদায়ের বিশ্বাসঘাতকতার আশংকা কর, তাহলে তোমার চুক্তিও তুমি যথাযথভাবে বাতিল কর। নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদেরকে পছন্দ করেন না।
আর অবিশ্বাসিগণ যেন কখনো মনে না করে যে, তারা (আমার) আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে। তারা নিশ্চয়ই (আমাকে) হতবল করতে পারবে না।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
এ আয়াতের দৃষ্টিতে যদি কোন ব্যক্তি, দল বা দেশের সাথে আমাদের চুক্তি থাকে এবং তার কর্মনীতি আমাদের মনে তার বিরুদ্ধে চুক্তি মেনে চলার ব্যাপারে গড়িমসি করার অভিযোগ সৃষ্টি করে অথবা সুযোগ পেলেই সে আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে এ ধরনেরআশঙ্কা দেখা দেয়, তাহলে আমাদের পক্ষে একতরফাভাবে এমন সিদ্ধান্ত করা কোনক্রমেই বৈধ নয় যে, আমাদের ও তার মধ্যে কোন চুক্তি নেই। আর এই সঙ্গে হঠাৎ তার সাথে আমাদের এমন ব্যবহার করা উচিত নয় যা একমাত্র চুক্তি না থাকা অবস্থায় করা যেতে পারে। বরং এ ধরনের অবস্থার সৃষ্টি হলে, কোন বিরোধীতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করার আগে দ্বিতীয় পক্ষকে স্পষ্ট ভাষায় একথা জানিয়ে দেবার জন্য আমাদের তাগিদ দেয়া হয়েছে যে, আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এখন আর কোন চুক্তি নেই। এভাবে চুক্তি ভঙ্গ করার জ্ঞান আমরা যতটুকু অর্জন করেছি, তারাও ততটুকু অর্জন করতে পারবে এবং চুক্তি এখনো অপরিবর্তিত আছে, এ ধরনের ভুল ধারণা তারা পোষণ করবে না। আল্লাহর এ ফরমান অনুযায়ী নবী (সা.) ইসলামের আন্তর্জাতিক রাজনীতির নিম্নোক্ত স্থায়ী মূলনীতি ঘোষনা করছিলেনঃ
مَنْ كَانَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ قَوْمٍ عَهْدٌ فَلاَ يَحُلُّن عُقْدَةً حَتَّى يَنْقَضِىَ أَمَدُهَا أَوْ يَنْبِذَ إِلَيْهِمْ عَلَى سَوَاءٍ-
“কোন জাতির সাথে কারোর কোন চুক্তি থাকলে, চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার আগে তার চুক্তি লংঘন করা উচিত নয়। এক পক্ষ চুক্তি ভঙ্গ করলে, উভয় পক্ষের সমতার ভিত্তিতে অপর পক্ষ চুক্তি বাতিল করার কথা জানাতে পারে।”
তারপর এ নিয়মকে তিনি আরো একটু ব্যাপক ভিত্তিক করে সমস্ত ব্যাপারে এ সাধারণ নীতি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেনঃ لَاتَخُنَّ مَن خَانَكَ (যে ব্যক্তি তোমরা সাথে খেয়ানত ও বিশ্বাসঘাতকতা করে, তুমি তার সাথে খেয়ানত করো না)। এ নীতিটি শুধুমাত্র বক্তৃতা বিবৃতিতে বলার ও বইয়ের শোভা বর্ধনের জন্য ছিল না বরং বাস্তব জীবনে একে পুরোপুরি মেনে চলা হতো। আমীর মুআবীয়া (রা.) একবার নিজের রাজত্বকালে রোম সাম্রাজ্যের সীমান্তে সেনা সমাবেশ করতে শুরু করেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার সাথে সাথেই অতর্কিতে রোমান এলাকায় আক্রমণ চালাবেন। তাঁর এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রসূলের ﷺ সাহাবী আমর ইবনে আমবাসা (রা.) কঠোর প্রতিবাদ জানান। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদীসটি শুনিয়ে চুক্তির মেয়াদের মধ্যেই এ ধরনের শত্রুতামূলক কার্যকলাপকে বিশ্বাসঘাতকতা বলে অভিহিত করেন। অবশেষে আমীর মু’আবীয়াকে এ নীতির সামনে মাথা নোয়াতে হয় এবং তিনি সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ বন্ধ করে দেন।
একতরফাভাবে চুক্তি ভঙ্গ ও যুদ্ধ ঘোষনা করা ছাড়া আক্রমণ করার পদ্ধতি প্রাচীন জাহেলী যুগেও ছিল এবং বর্তমান যুগের সুসভ্য জাহিলিয়াতেও এর প্রচলন আছে। এর নতুনতম দৃষ্টান্ত হচ্ছে বিগত দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে রাশিয়ার ওপর জার্মানীর আক্রমণ এবং ইরানের বিরুদ্ধে রাশিয়া ও বৃটেনের সামরিক কার্যক্রম। সাধারণত এ ধরনের কার্যক্রমের স্বপক্ষে এ ওযর পেশ করা হয় যে, আক্রমণের পূর্বে জানিয়ে দিলে প্রতিপক্ষ সতর্ক হয়ে যায়। এ অবস্থায় কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে হয় অথবা যদি আমরা অগ্রসর হয়ে হস্তক্ষেপ না করতাম তাহলে আমাদের শত্রুরা সুবিধা লাভ করতো। কিন্তু নৈতিক দায়িত্ব পালন থেকে অব্যহতি লাভের জন্য এ ধরনের বাহানাকে যদি যথেষ্ট মনে করা হয় তাহলে দুনিয়ায় আর এমন কোন অপরাধ থাকে না যা কোন না কোন বাহানায় করা যেতে পারে না। প্রত্যেক চোর, ডাকাত, ব্যভিচারী, ঘাতক ও জালিয়াত নিজের অপরাধের জন্য এমনি ধরনের কোন না কোন কারণ দর্শাতে পারে। অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে, আন্তর্জাতিক পরিবেশে এরা একটি জাতির জন্য এমন অনেক কাজ বৈধ মনে করে যা জাতীয় পরিবেশে কোন ব্যক্তিবিশেষ করলে তাদের দৃষ্টিতে অবৈধ বলে গণ্য হয়।
এ প্রসঙ্গে একথা জেনে নেয়ারও প্রয়োজন যে, ইসলামী আইন শুধুমাত্র একটি অবস্থায় পূর্ব ঘোষণা ছাড়া আক্রমণ করা বৈধ গণ্য করে। সে অবস্থাটি হচ্ছে, দ্বিতীয় পক্ষ যখন ঘোষণা দিয়েই চুক্তি ভঙ্গ করে এবং আমাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে শত্রুতামূলক কাজ করে। এহেন অবস্থায় উল্লেখিত আয়াতের নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের পক্ষ থেকে তার কাছে চুক্তি ভঙ্গ করার নোটিশ দেবার প্রয়োজন হয় না। বরং আমরা অঘোষিতভাবে তার বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার অধিকার লাভ করি। বনী খুযাআর ব্যাপারে কুরাইশরা যখন হুদাইবিয়ার চুক্তি প্রকাশ্যে ভঙ্গ করে তখন নবী (সা.) তাদেরকে চুক্তি ভঙ্গ করার নোটিশ দেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি এবং কোন প্রকার ঘোষনা না দিয়েই মক্কা আক্রমণ করে বসেন। নবী (সা.) এর এ কার্যক্রম থেকেই মুসলিম ফকীহগণ এ ব্যতিক্রমধর্মী বিধি রচনা করেছেন। কিন্তু কোন অবস্থায় যদি আমরা এ ব্যতিক্রমধর্মী নিয়ম থেকে ফায়দা উঠাতে চাই, তাহলে অবশ্যি সেই সমস্ত অবস্থা আমাদের সামনে থাকতে হবে যে অবস্থায় নবী (সা.) এ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এভাবে তাঁর সমগ্র কার্যক্রমের একটি সুবিধাজনক অংশ মাত্রের অনুসরণ না করে তার সবটুকুর অনুসরণ করা হবে। হাদীস ও সীরাতের কিতাবগুলো থেকে যা কিছু প্রমাণিত হয় তা হচ্ছে নিম্নরূপঃ
একঃ কুরাইশদের চুক্তি ভঙ্গের ব্যাপারটি এত বেশী সুস্পষ্ট ছিল যে, তারা যে চুক্তি ভঙ্গ করেছে এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করার কোন সুযোগ ছিল না। কুরাইশরা এবং তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকেরা নিজেরাও চুক্তি যথার্থই ভেঙে গেছে বলে স্বীকার করতো। তারা নিজেরাই চুক্তি নবায়নের জন্য আবু সুফিয়ানকে মদীনায় পাঠিয়েছিল। এর পরিষ্কার অর্থ ছিল, তাদের দৃষ্টিতেও চুক্তি অক্ষুন্ন ছিল না। তবুও চুক্তি ভঙ্গকারী জাতি নিজেই চুক্তি ভঙ্গ করার কথা স্বীকার করবে, এটা জরুরী না। তবে চুক্তি ভঙ্গ করার ব্যাপারটি একেবারে সুস্পষ্ট ও সন্দেহাতীত হওয়া অবশ্যি জরুরী।
দুইঃ কুরাইশদের পক্ষ থেকে চুক্তি ভঙ্গ করার পরও নবী (সা.) নিজের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বা ইশারা ইঙ্গিতে এমন কোন কথা বলেননি যা থেকে এ ইশারা পাওয়া যায় যে, এ চুক্তি ভঙ্গ করা সত্ত্বেও তিনি এখনো তাদেরকে একটি চুক্তিবদ্ধ জাতি মনে করেন এবং এখনো তাদের সাথে তাঁর চুক্তিমূলক সম্পর্ক বজায় রয়েছে বলে মনে করেন। সমস্ত বর্ণনা একযোগে একথা প্রমাণ করে যে, আবু সুফিয়ান যখন মদীনায় এসে চুক্তি নবায়নের আবেদন করে, তখন তিনি তা গ্রহণ করেননি।
তিনঃ তিনি নিজে কুরাইশদের বিরুদ্ধে সামরিক কার্যক্রম গ্রহণ করেন এবং প্রকাশ্যে গ্রহণ করেন। তাঁর কার্যক্রমে কোন প্রকার প্রতারণার সামান্যমত গন্ধও পাওয়া যায় না। তিনি বাহ্যত সন্ধি এবং গোপনে যুদ্ধের পথ অবলম্বন করেননি।
এটিই এ ব্যাপারে নবী (সা.) এর উত্তম আদর্শ। কাজেই ওপরে উল্লেখিত আয়াতের সাধারণ বিধান থেকে সরে গিয়ে যদি কোন কার্যক্রম অবলম্বন করা যেতে পারে, তাহলে তা এমনি বিশেষ অবস্থায়ই করা যেতে পারে এবং নবী (সা.) যে ধরনের সরল-সহজ-ভদ্রজনোচিত পথে তা করেছিলেন তেমনি পথেই করা যেতে পারে।
তাছাড়া কোন চুক্তিবদ্ধ জাতির সাথে কোন বিষয়ে যদি আমাদের কোন বিবাদ সৃষ্টি হয়ে যায় এবং আমরা দেখি পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা বা আন্তর্জাতিক সালিশের মাধ্যমে এ বিবাদের মীমাংসা হচ্ছে না অথবা যদি আমরা দেখি, দ্বিতীয় পক্ষ বল প্রয়োগ করে এর মীমাংসা করতে উঠে পড়ে লেগেছে, তাহলে এক্ষেত্রে আমাদের জন্য বল প্রয়োগ করে এর মীমাংসায় পৌঁছানো সম্পূর্ণরূপে বৈধ হয়ে যাবে। কিন্তু উপরোক্ত আয়াত আমাদের ওপর এ নৈতিক দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে যে, আমাদের এ বল প্রয়োগ পরিষ্কার ও দ্ব্যর্থহীন ঘোষণার পর হতে হবে এবং তা হতে হবে প্রকাশ্যে। লুকিয়ে লুকিয়ে গোপনে এমন ধরনের সামরিক কার্যক্রম করা যার প্রকাশ্য ঘোষণা দিতে আমরা প্রস্তুত নই, একটি অসদাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। ইসলাম এর শিক্ষা আমাদের দেয়নি।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Anfal
Sura:8
Verses :- 58-59
وَ اِمَّا تَخَافَنَّ مِنۡ قَوۡمٍ خِیَانَۃ
If you fear from any people treachery,
Allah says to His Prophet,
وَإِمَّا تَخَافَنَّ مِن قَوْمٍ
If you fear from any people,
with whom you have a treaty of peace,
خِيَانَةً
treachery,
and betrayal of peace treaties and agreements that you have conducted with them,
فَانبِذْ إِلَيْهِمْ
then throw back (their covenant) to them,
meaning their treaty of peace.
عَلَى سَوَاء
on equal terms,
informing them that you are severing the treaty. This way, you will be on equal terms, in that, you and they will be aware that a state of war exists between you and that the bilateral peace treaty is null and void,
إِنَّ اللّهَ لَا يُحِبُّ الخَايِنِينَ
Certainly Allah likes not the treacherous.
This even includes treachery against the disbelievers.
Imam Ahmad recorded that Salim bin `Amir said,
“Mu`awiyah was leading an army in Roman lands, at a time the bilateral peace treaty was valid. He wanted to go closer to their forces so that when the treaty of peace ended, he could invade them. An old man riding on his animal said, `Allahu Akbar (Allah is the Great), Allahu Akbar! Be honest and stay away from betrayal.’ The Messenger of Allah said,
وَمَنْ كَانَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ قَوْمٍ عَهْدٌ فَلَ يَحُلَّنَّ عُقْدَةً وَلَا يَشُدَّهَا حَتَّى يَنْقَضِي أَمَدُهَا أَوْ يَنْبُذَ إِلَيْهِمْ عَلَى سَوَاء
Whoever has a treaty of peace with a people, then he should not untie any part of it or tie it harder until the treaty reaches its appointed term. Or, he should declare the treaty null and void so that they are both on equal terms.
When Mu`awiyah was informed of the Prophet’s statement, he retreated.
They found that man to be Amr bin Anbasah, may Allah be pleased with him.”
This Hadith was also collected by Abu Dawud At-Tayalisi, Abu Dawud, At-Tirmidhi, An-Nasa’i and Ibn Hibban in his Sahih. At-Tirmidhi said, “Hasan Sahih.
Making Preparations for War to strike Fear in the Hearts of the Enemies of Allah
Allah says to His Prophet,
وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ سَبَقُواْ إِنَّهُمْ لَا يُعْجِزُونَ
And let not those who disbelieve think that they can outstrip (escape from the punishment). Verily, they will never be able to save themselves (from Allah’s punishment).
And let not those who disbelieve think that they can outstrip, Do not think that such disbelievers have escaped Us or that We are unable to grasp them. Rather, they are under the power of Our ability and in the grasp of Our will; they will never escape Us.’
Allah also said,
أَمْ حَسِبَ الَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّيَاتِ أَن يَسْبِقُونَا سَأءَ مَا يَحْكُمُونَ
Or think those who do evil deeds that they can outstrip Us (escape Our punishment) Evil is that which they judge! (29:4)
لَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ مُعْجِزِينَ فِى الااٌّرْضِ وَمَأْوَاهُمُ النَّارُ وَلَبِيْسَ الْمَصِيرُ
Consider not that the disbelievers can escape in the land. Their abode shall be the Fire, and worst indeed is that destination. (24:57)
and,
لَا يَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ الَّذِينَ كَفَرُواْ فِى الْبِلَـدِ
مَتَـعٌ قَلِيلٌ ثُمَّ مَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَبِيْسَ الْمِهَادُ
Let not the free disposal (and affluence) of the disbelievers throughout the land deceive you. A brief enjoyment; then their ultimate abode is Hell; and worst indeed is that place for rest. (3:196-197)
Allah commands Muslims to prepare for war against disbelievers, as much as possible, according to affordability and availability.
Allah said.
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ তাআলা স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে সম্বোধন করে বলছেন- হে নবী! যদি কারো সাথে তোমার চুক্তি হয় এবং তোমার ভয় হয় যে, তারা এই চুক্তি ও অঙ্গীকার ভঙ্গ করবে তবে তোমাকে এ অধিকার দেয়া হচ্ছে যে, তুমি সমতা রক্ষা করে সেই চুক্তিনামা রদ করে দিবে। এ সংবাদ তাদের কানে পৌছিয়ে দিতে হবে, যেন তারাও সন্ধির ধারণা ত্যাগ করে। কিছুদিন পূর্বেই তাদেরকে এটা অবশ্যই জানাতে হবে। জেনে রেখো যে, আল্লাহ তা’আলা বিশ্বাস ভঙ্গ করা পছন্দ করেন না। সুতরাং কাফিরদের সাথেও তুমি খিয়ানত করো না।
মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, আমীর মুআবিয়া (রাঃ) স্বীয় সেনাবাহিনী রোম সীমান্তে পাঠাতে শুরু করেন, যেন সন্ধিকাল শেষ হওয়া মাত্রই আকস্মিকভাবে তাদের উপর আক্রমণ চালানো যায়। তখন একজন বৃদ্ধ স্বীয় সওয়ারীতে আরোহিত অবস্থায় বলতে বলতে আসলেন-আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়। ওয়াদা-অঙ্গীকার পুরো করুন, বিশ্বাস ভঙ্গ করা ঠিক নয়। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যখন কোন কওমের সাথে চুক্তি ও অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়ে যাবে তখন কোন গিরা খুলো না ও বেঁধো না যে পর্যন্ত না চুক্তিকাল শেষ হয় কিংবা তাদেরকে জানিয়ে দিয়ে অঙ্গীকার ও চুক্তিনামা ছিড়ে ফেলা হয়। এ খবর মুআবিয়া (রাঃ)-এর কানে পৌছা মাত্রই তিনি সেনাবাহিনীকে ফিরে আসার নির্দেশ দেন। এই বৃদ্ধ লোকটি ছিলেন আমর ইবনে আমবাসা (রাঃ)। (এটা ইমাম আহমাদ (রঃ), ইমাম আবু দাউদ (রঃ), ইমাম তিরমিযী (রঃ), ইমাম নাসাঈ (রঃ) ও ইবনে হিব্বান (রঃ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী (রঃ) এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন)
সালমান ফারসী (রাঃ) একটি শহরের দুর্গের নিকট পৌছে স্বীয় সঙ্গীদেরকে বলেনঃ “আপনারা আমাকে ছেড়ে দিন, আমি ওদেরকে (ইসলামের) দাওয়াত দেবো, যেমন আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে দাওয়াত দিতে দেখেছি। অতঃপর তিনি তাদেরকে বললেনঃ “দেখো, আমি তোমাদের মধ্যকারই একজন ছিলাম। অতঃপর মহা মহিমান্বিত আল্লাহ আমাকে ইসলামের পথ প্রদর্শন করেছেন। যদি তোমরাও মুসলমান হয়ে যাও তবে আমাদের যে হক রয়েছে তোমাদেরও সেই হক হয়ে যাবে এবং আমাদের উপর যা রয়েছে তোমাদের উপরও তাই থাকবে । আর যদি তোমরা এটা স্বীকার না কর তবে লাঞ্ছনার সাথে তোমাদেরকে জিযিয়া কর প্রদান করতে হবে। যদি তোমরা এটাও না মান তবে আমরা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করবো এ কথা তোমাদেরকে এখন থেকেই জানিয়ে দিচ্ছি। এখন আমরা ও তোমরা সমান অবস্থায় রয়েছি। আল্লাহ তা’আলা খিয়ানতকারীদেরকে পছন্দ করেন না।” তিন দিন পর্যন্ত তাদেরকে এভাবেই দাওয়াত দিতে থাকেন। অবশেষে চতুর্থ দিন সকাল হওয়া মাত্রই তাদের উপর আক্রমণ চালিয়ে দেন। আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে স্বীয় সাহায্যের মাধ্যমে জয়যুক্ত করেন।
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ কাফিররা আমার হাত ছাড়া হয়ে যাবে এবং আমি তাদেরকে ধরতে সক্ষম নই এরূপ ধারণা যেন তারা না করে। বরং তারা সব সময় আমার ক্ষমতা ও আয়ত্তের মধ্যে রয়েছে। তারা আমাকে হারাতে পারবে না। অন্য আয়াতে রয়েছে- “যারা দুস্কার্যে লিপ্ত রয়েছে তারা কি ধারণা করেছে যে, তারা আমাকে এড়িয়ে যাবে? তারা যা ধারণা করেছে তা কতই না জঘন্য!” আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “তুমি এ ধারণা করো না যে, কাফিররা ভূ-পৃষ্ঠে (লুকিয়ে থেকে) আমাকে পরাভূত করবে, তাদের ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম এবং এটা খুবই নিকৃষ্ট স্থান।” অন্য স্থানে আল্লাহ পাক বলেনঃ “কাফিরদের শহরে (জাকজমকের সাথে) ঘুরাফিরা যেন তোমাকে প্রতারিত না করে, এটা অল্প কয়েকদিনের উপভোগ মাত্র, অতঃপর তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম এবং ওটা অতি নিকৃষ্ট বিছানা।”
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলতে সন্ধিচুক্তিতে আবদ্ধ জাতির তরফ হতে চুক্তি ভঙ্গ করার আশঙ্কা। আর ‘যথাযথ বা সমভাবে’ বলতে তাদেরকে যথারীতি খবর করে দাও যে, আগামীতে আমাদের ও তোমাদের মাঝে কোন সন্ধিচুক্তি থাকবে না। যাতে উভয় দল নিজ নিজ সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করে এবং কোন দল অজানা অবস্থায় বা ভুলবশতঃ মারা না পড়ে।
[২] অর্থাৎ, এই চুক্তি ভঙ্গ করা যদি মুসলিমদের পক্ষ থেকেও হয় তবুও তা খিয়ানত; যা মহান আল্লাহ অপছন্দ করেন। মুআবিয়াহ (রাঃ) এবং রোমকদের মাঝে সন্ধিচুক্তি ছিল। যখন চুক্তির সময় শেষ হওয়ার নিকটবর্তী হয়ে এল, তখন মুআবিয়াহ (রাঃ) রোমকদের সীমান্ত এলাকার নিকট নিজের সৈন্যদল জমায়েত করতে শুরু করলেন। উদ্দেশ্য ছিল সন্ধিচুক্তি শেষ হওয়ার পরপরই রোমকদের উপর হামলা চালাবেন। এক সাহাবী আমর বিন আবাসাহ (রাঃ)-এর কানে মুআবিয়াহ (রাঃ)-এর এই প্রস্তুতির খবর পৌঁছলে তিনি এই আক্রমণকে প্রতারণা বলে আখ্যায়িত করলেন এবং রসূল (সাঃ)-এর একটি হাদীস উল্লেখ করে এই আক্রমণকে সন্ধিচুক্তির পরিপন্থী বলে মন্তব্য করলেন। এ কথা শুনে মুআবিয়াহ (রাঃ) তাঁর সৈন্য প্রত্যাহার করে নিলেন। (মুসনাদে আহমাদ ৫/১১১, আবু দাঊদঃ জিহাদ অধ্যায়, তিরমিযীঃ সিয়ার)
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
(خِيَانَةً فَانْۭبِذْ إِلَيْهِمْ)
‘তুমি তাদের দিকে সমানভাবে ছুঁড়ে মার (যাতে উভয়দল জানতে পারে তাদের মাঝে আজ থেকে কোন চুক্তি নেই); অর্থাৎ যদি সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ কোন জাতির পক্ষ থেকে চুক্তি ভঙ্গের আশঙ্কা কর তাহলে তাদের দিকে তাদের চুক্তি ছুঁড়ে মার। অর্থাৎ চুক্তি বাতিল করে দাও যাতে জেনে নেয়, আজ থেকে কোন চুক্তি নেই। কারণ তাদের সাথে চুক্তি নেই, এমনটি না জানিয়ে আক্রমণ করা বৈধ নয়। মুআবিয়াহ (রাঃ) এবং রোমকদের মাঝে একটি সন্ধিচুক্তি ছিল। যখন চুক্তির মেয়াদ শেষের দিকে তখন মুআবিয়াহ (রাঃ) রোমকদের সীমান্ত এলাকার নিকট নিজের সৈন্যদল একত্রিত করতে লাগলেন। উদ্দেশ্য ছিল সন্ধিচুক্তি শেষ হবার সাথে সাথে রোমকদের ওপর হামলা চালাবেন। আমর বিন আবাসাহ (রাঃ)-এর নিকট এ খবর পৌঁছলে তিনি এটাকে প্রতারণা বলে আখ্যায়িত করলেন। এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর হাদীস উল্লেখ করে এ আক্রমণকে সন্ধিচুক্তির পরিপন্থী বলে মন্তব্য করলেন। এ কথা শুনে মুআবিয়াহ (সাঃ) তার সৈন্য প্রত্যাহার করে নিলেন। (মুসনাদে ৪/১১১, আবূ দাঊদ হা: ২৭৫৯, তিরমিযী হা: ১৫৮০, সহীহ)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
কেউ অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।