Book#595

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

(Book# 114/٣١)-৫৯৫
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
০৭–০৮ নং আয়াত:-
فَمَا اسْتَقَامُواْ لَكُمْ فَاسْتَقِيمُواْ لَهُمْ
তারা যতদিন তোমাদের চুক্তিতে স্থির থাকবে,
So long as they are true to you, stand you true to them,

کَیۡفَ یَکُوۡنُ لِلۡمُشۡرِکِیۡنَ عَہۡدٌ عِنۡدَ اللّٰہِ وَ عِنۡدَ رَسُوۡلِہٖۤ اِلَّا الَّذِیۡنَ عٰہَدۡتُّمۡ عِنۡدَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ۚ فَمَا اسۡتَقَامُوۡا لَکُمۡ فَاسۡتَقِیۡمُوۡا لَہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۷﴾
کَیۡفَ وَ اِنۡ یَّظۡہَرُوۡا عَلَیۡکُمۡ لَا یَرۡقُبُوۡا فِیۡکُمۡ اِلًّا وَّ لَا ذِمَّۃً ؕ یُرۡضُوۡنَکُمۡ بِاَفۡوَاہِہِمۡ وَ تَاۡبٰی قُلُوۡبُہُمۡ ۚ وَ اَکۡثَرُہُمۡ فٰسِقُوۡنَ ۚ﴿۸﴾

আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নিকট অংশীবাদীদের চুক্তি কিরূপে বলবৎ থাকবে? তবে যাদের সাথে তোমরা মাসজিদুল হারামের সন্নিকটে পারস্পরিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছ, তারা যতদিন তোমাদের চুক্তিতে স্থির থাকবে, তোমরা তাদের চুক্তিতে স্থির থাক। নিশ্চয় আল্লাহ সাবধানীদেরকে পছন্দ করেন।
কেমন করে (তাদের চুক্তি বলবৎ থাকবে)? অথচ অবস্থা এই যে, তারা যদি তোমাদের উপর বিজয় লাভ করে, তাহলে তোমাদের আত্মীয়তা ও অঙ্গীকারের কোন মর্যাদা দেবে না, তারা মুখে তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করে, কিন্তু তাদের হৃদয় তা অস্বীকার করে। বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই সত্যত্যাগী।

তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
৭-১৫ নং আয়াতের তাফসীর:

অত্র আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক ছিন্নের ও চার মাস অবকাশ দেয়ার হিকমত বর্ণনা করেছেন। অতঃপর চার মাস অতিবাহিত হলে যেখানেই মুশরিকদের পাবে সেখানেই হত্যা করবে। কারণ তারা শির্ক ও কুফরী ত্যাগ করবে না, ফলে সন্ধিচুক্তিও বহাল থাকবে না। তবে হ্যাঁ, যাদের সাথে মাসজিদে হারামের নিকট সন্ধিচুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছ অর্থাৎ হুদায়বিয়ার সন্ধি হয়েছে তারা যতদিন চুক্তিতে অটল থাকবে তোমরাও ততদিন চুক্তিতে অটল থাকবে।

৬ষ্ঠ হিজরীতে দশ বছর মেয়াদী হুদায়বিয়ার সন্ধি হয়। কিন্তু দশ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই মুশরিকরা সন্ধি ভঙ্গ করে, ফলে নাবী (সাঃ) ৮ম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

(كَيْفَ وَإِنْ يَظْهَرُوْا عَلَيْكُمْ لَا يَرْقُبُوْا فِيْكُمْ)

‘কেমন করে থাকবে? তারা যদি তোমাদের ওপর জয়ী হয়’অর্থাৎ মুশরিকদের সাথে চুক্তি কিভাবে বলবৎ থাকবে, অথবা তাদের অবস্থা এমন যে, যতক্ষণ তাদের ওপর অন্যরা বিজয়ী থাকে ততক্ষণ তারা যথাযথ অঙ্গীকার পূর্ণ করে। কিন্তু যদি তারা এটা অনুভব করতে পারে যে, আমরা এখন মু’মিনদের ওপর ক্ষমতাবান হয়েছি। তাদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়েছি, তখন তারা তোমাদের আত্মীয়তা ও অঙ্গীকারের কোন পরওয়া করবে না। অতএব তারা দুর্বল অবস্থায় তোমাদের সাথে যে ভাল ব্যবহার করে তাতে তোমরা ধোঁকায় পড়ে যেও না। কেননা তারা মুখে খুব ভাল ভাল কথা বলে যাতে তোমরা খুশি থাক। কিন্তু অন্তর সম্পূর্ণ বিপরীত। এদের অধিকাংশই অঙ্গীকার ভঙ্গকারী ফাসিক। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ১৮৮)

(لَا يَرْقُبُوْنَ فِيْ مُؤْمِنٍ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً)

‘তবে তারা তোমাদের আত্মীয়তার ও অঙ্গীকারের কোন মর্যাদা দেবে না অর্থাৎ বার বার আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদের অঙ্গীকার ভঙ্গ ও আত্মীয়তার মর্যাদা ক্ষুণœ করার কথা বলেছেন এ কারণে যে, তারা কতটুকু মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ ও হিংসা রাখে তা প্রকাশ করে দেয়া। তবে যদি তারা শির্ক থেকে তাওবাহ করে ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে তাহলে তারা মুসলিম ভাই বলে গণ্য হবে।

(وَإِنْ نَّكَثُوْا أَيْمَانَهُمْ)

‘তারা যদি তাদের প্রতিশ্র“তি ভঙ্গ করে’ অর্থাৎ যেসকল মুশরিকদের সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদে চুক্তিবদ্ধ হয়েছ তারা যদি চুক্তি ভঙ্গ করে এবং তোমাদের নাবী ও দীন নিয়ে ঠাট্টা করে তাহলে কাফিরদের নেতাদের হত্যা কর। আর তাদের জন্য তোমাদের পক্ষ থেকে কোন নিরাপত্তা নেই। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে কোন ব্যক্তি দীন নিয়ে ঠাট্টা করলে মুসলিম থাকে না, সে কাফির হয়ে যায়; অতএব তাকে হত্যা করা আবশ্যক। আর এ হত্যার বাস্তবায়ন করবে ইসলামী প্রশাসন, কোন একক ব্যক্তি নয়।

ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: এ আয়াতটি আবূ সূফিয়ান বিন হারব, হারেস বিন হিশাম, সুহাইল বিন আমর, ইকরিমা বিন আবূ জাহল এবং কুরাইশদের বড় বড় নেতাদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে যারা অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছিল এবং রাসূলকে মক্কা থেকে বের করে দেয়ার মনস্থ করেছিল। (ইবনু জারীর: ১০/৮৭-৮৮)

(أَلَا تُقَاتِلُوْنَ قَوْمًا نَكَثُوْا أَيْمَانَهُمْ)

‘তোমরা কি সে সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করবে না, যারা নিজেদের প্রতিশ্র“তি ভঙ্গ করেছে?’ অর্থাৎ যারা অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে মক্কা থেকে বের করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। যেমন দারুন নদওয়ায় বসে তারা শলা-পরামর্শ করেছিল।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَإِذْ يَمْكُرُ بِكَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لِيُثْبِتُوْكَ أَوْ يَقْتُلُوْكَ أَوْ يُخْرِجُوْكَ ط وَيَمْكُرُوْنَ وَيَمْكُرُ اللّٰهُ ط وَاللّٰهُ خَيْرُ الْمٰكِرِيْنَ)

“স্মরণ কর! যখন কাফিরগণ তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোমাকে বন্দী বা হত্যা অথবা নির্বাসিত করার জন্য। আর তারা ষড়যন্ত্র করে এবং আল্লাহও কৌশল করেন; আর আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।”(সূরা আনফাল ৮:৩০)

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَإِنْ كَادُوْا لَيَسْتَفِزُّوْنَكَ مِنَ الْأَرْضِ لِيُخْرِجُوْكَ مِنْهَا وَإِذًا لَّا يَلْبَثُوْنَ خِلَافَكَ إِلَّا قَلِيْلًا)‏

“তারা তোমাকে দেশ হতে উৎখাত করার চূড়ান্ত‎ চেষ্টা করেছিল তোমাকে সেখান হতে বহিষ্কার করার জন্য; যদি তা-ই করত তাহলে তোমার পর তারাও সেথায় অল্প সময়ই অবস্থান করত।”(সূরা ইসরা ১৭:৭৬)

(وَهُمْ بَدَءُوكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ)

‘তারাই প্রথম তোমাদের বিরুদ্ধাচরণ করেছে’এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল বদর যুদ্ধ যখন তারা বাণিজ্যিক কাফিলা রক্ষা করার জন্য বের হয়েছিল। কিন্তু কাফিলা সুরক্ষিত দেখেও তারা বদর প্রান্তরে মুসলিমদের সাথে লড়াই করার প্রস্তুতি নিতে লাগল এবং মুসলিমদেরকে উত্তেজিত করে যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটালো। কিংবা কুরাইশরা বানী বকরকে বানী খুযাআহ গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করেছিল অথচ তারা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাথে অঙ্গীকারাবদ্ধ মিত্র গোত্র ছিল।

সুতরাং মুসলিমরা সর্বদা ন্যায়-নীতির ওপর অবিচল এবং বাড়াবাড়ি হতে বিরত থাকবে, কারো সাথে গায়ে পড়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে না। তবে কেউ যদি প্রতিশ্র“তির বরখেলাফ করে এবং ইসলামের ওপর আঘাত হানে তাহলে তাকে উপয্ক্তু জবাব দিতে হবে।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. যেসকল মুশরিকরা চুক্তি যথাযথ রক্ষা করে কেবল তাদেরই নিরাপত্তা রয়েছে।
২. আত্মীয়তার সম্পর্ক ও অঙ্গীকার রক্ষা করা ওয়াজিব।
৩. কাফির-মুশরিকরা মুসলিমদের ক্ষতি করাতে সর্বদা সচেষ্ট থাকে।
৪. যারা ঈমান রাখে, সালাত কায়িম করে, যাকাত দেয় তারাই দীনী ভাই।
৫. দীনকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করলে তাদেরকে হত্যা করা আবশ্যক। কারণ তারা মুরতাদ।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 07-08

فَمَا اسْتَقَامُواْ لَكُمْ فَاسْتَقِيمُواْ لَهُمْ

So long as they are true to you, stand you true to them,

Affirming the Disavowal of the Idolators

Allah mentions the wisdom in dissolving all obligations to the idolators and giving them a four month period of safety, after which they will meet the sharp sword wherever they are found,

كَيْفَ يَكُونُ لِلْمُشْرِكِينَ عَهْدٌ

How can there be a covenant for the Mushrikin,

a safe resort and refuge, while they persist in Shirk with Allah, and disbelief in Him and His Messenger,

عِندَ اللّهِ وَعِندَ رَسُولِهِ

with Allah and with His Messenger

إِلاَّ الَّذِينَ عَاهَدتُّمْ عِندَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ

except those with whom you made a covenant near Al-Masjid Al-Haram,

on the day of Hudaybiyyah.

Allah said in another Ayah (concerning the day of Hudaybiyyah),

هُمُ الَّذِينَ كَفَرُواْ وَصَدُّوكُمْ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَالْهَدْىَ مَعْكُوفاً أَن يَبْلُغَ مَحِلَّهُ

They are the ones who disbelieved and hindered you from Al-Masjid Al-Haram and detained the sacrificial animals, from reaching their place of sacrifice. (48:25)

Allah said next,

فَمَا اسْتَقَامُواْ لَكُمْ فَاسْتَقِيمُواْ لَهُمْ

So long as they are true to you, stand you true to them,

if they keep the terms of the treaties you conducted with them, including peace between you and them for ten years,

فَاسْتَقِيمُواْ لَهُمْ

إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِينَ

then stand you true to them. Verily, Allah loves those who have Taqwa.

The Messenger of Allah and the Muslims preserved the terms of the treaty with the people of Makkah from the month of Dhul-Qa`dah in the sixth year (of Hijrah), until the Quraysh broke it and helped their allies, Banu Bakr, against Khuza`ah, the allies of Allah’s Messenger.

Aided by the Quraysh, Banu Bakr killed some of Bani Khuza`ah in the Sacred Area! The Messenger of Allah led an invasion army in the month of Ramadan, of the eighth year, and Allah opened the Sacred Area for him to rule over them, all thanks are due to Allah.
The Messenger of Allah freed the Quraysh who embraced Islam after they were overpowered and defeated. These numbered around two thousands, and they were referred to by the name `Tulaqa’ afterwards.
Those among them who remained in disbelief and ran away from Allah’s Messenger were sent promises of safe refuge for four months, during which they were allowed to move about freely. They included Safwan bin Umayyah, Ikrimah bin Abi Jahl and many others. Allah later on guided them to Islam, and they became excellent believers.

Surely, Allah is worthy of all praise for all His actions and decrees.

Allah says,

كَيْفَ وَإِن يَظْهَرُوا عَلَيْكُمْ لَا يَرْقُبُواْ فِيكُمْ إِلاًّ وَلَا ذِمَّةً يُرْضُونَكُم بِأَفْوَاهِهِمْ وَتَأْبَى قُلُوبُهُمْ وَأَكْثَرُهُمْ فَاسِقُونَ

How when if you are overpowered by them, they regard not the ties, either of kinship, (Ill) or of covenant (Dhimmah)! With their mouths they please you, but their hearts are averse to you, and most of them are rebellious.

Allah encourages the believers to show enmity to the idolators and to dissociate from them, affirming that they do not deserve to enjoy a covenant of peace, because of their Shirk in Allah and disbelief in Allah’s Messenger.

If these disbelievers have a chance to defeat Muslims, they will cause great mischief, leave nothing unharmed, disregard the ties of kinship and the sanctity of their vows.

Ali bin Abi Talhah, Ikrimah and Al-Awfi narrated that Ibn Abbas said,

“Ill means kinship, while, Dhimmah means covenant.”

Ad-Dahhak and As-Suddi said similarly.

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-

এখানে আল্লাহ তাআলা উপরোক্ত হুকুমের হিকমত বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, মুশরিকদেরকে চার মাস অবকাশ দেয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি দানের কারণ এই যে, তারা শিরক ও কুফরী পরিত্যাগ করবে না এবং সন্ধি ও চুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিতও থাকবে না। হ্যা, তবে হুদায়বিয়ার সন্ধি তাদের পক্ষ থেকে যে পর্যন্ত ভেঙ্গে না দেয়া হয় সেই পর্যন্ত তোমরাও তা ভেঙ্গে দেবে। হুদায়বিয়ায় দশ বছরের জন্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ষষ্ঠ হিজরীর যুলকাদা মাস হতে রাসূলুল্লাহ (সঃ) চুক্তির মেয়াদ অতিক্রম করে চলছিলেন। শেষ পর্যন্ত কুরায়েশদের পক্ষ থেকে এ চুক্তি ভেঙ্গে দেয়া হয়। তাদের মিত্র বানু বকর রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর মিত্র খুযাআ’র উপর আক্রমণ চালিয়ে দেয়। এমন কি হারাম শরীফের মধ্যেও তাদেরকে হত্যা করে। এটার উপর ভিত্তি করেই। রাসূলুল্লাহ (সঃ) অষ্টম হিজরীর রমযান মাসে কুরায়েশদের উপর আক্রমণ চালান। আল্লাহ রাব্বল আলামীন তাঁকে মক্কা মুকাররামার উপর বিজয় দান করেন এবং তাদের উপর তাকে ক্ষমতার অধিকারী করেন। কিন্তু তিনি বিজয় ও ক্ষমতা লাভ করা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে যারা ইসলাম কবূল করে তাদেরকে আযাদ করে দেন। (আরবী) তাদেরকেই বা মুক্ত বলা হয়। তারা সংখ্যায় প্রায় দুই হাজার ছিল। আর যারা কুফরীর উপরই ছিল এবং এদিক ওদিক পালিয়ে গিয়েছিল, বিশ্ব শান্তির দূত মুহাম্মাদ (সঃ) তাদেরকে সাধারণভাবে আশ্রয় প্রদান করেছিলেন এবং মক্কায় আগমনের ও সেখানে নিজ নিজ বাড়ীতে অবস্থানের অনুমতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, চার মাস পর্যন্ত তারা যেখানে ইচ্ছা সেখানেই আসা-যাওয়া করতে পারে। তাদের মধ্যেই ছিলেন সাফওয়ান ইবনে উমাইয়া (রাঃ) ও ইকরামা ইবনে আবি জেহেল (রাঃ) প্রমুখ। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দান করেন। আল্লাহ তা’আলা তাঁর প্রতিটি কাজে ও পরিমাপ করণে প্রশংসিত।

আল্লাহ তাআলা কাফিরদের প্রতারণা এবং তাদের অন্তরের শক্রতা থেকে মুসলিমদেরকে সতর্ক করেছেন, যেন তারা তাদের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব না রাখে। তারা যেন তাদের কথা ও অঙ্গীকারের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত না থাকে। তাদের কুফরী ও শিরুক তাদেরকে তাদের ওয়াদার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে দেবে না। তারা তো সময়ের অপেক্ষায় রয়েছে। ক্ষমতা পেলে তারা তোমাদেরকে জ্যান্তই চিবিয়ে খেয়ে নেবে। তারা আত্মীয়তার মর্যাদা রক্ষা করবে না এবং ওয়াদা। অঙ্গীকারেরও কোন পরওয়া করবে না। তারা তাদের সাধ্যমত তোমদেরকে কষ্ট দেবে এবং এতে তৃপ্তি লাভ করবে। (আরবী) শব্দের অর্থ হচ্ছে আত্মীয়তা। ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অর্থ বর্ণিত আছে। কবি তামীর ইবনে মুকবিল ও কবি হাসসান ইবনে সাবিতও (রাঃ) তাঁদের কবিতায় শব্দকে এই অর্থে প্রয়োগ করেছেন। আবার এর অর্থ এরূপও করা হয়েছে যে, যখন তারা বিজয় লাভ করবে তখন আল্লাহ তা’আলার প্রতিও লক্ষ্য রাখবে না এবং আর কারো প্রতিও না। এই (আরবী) শব্দটিই (আরবী) রূপ (আরবী) ও (আরবী) -এর মধ্যে এসেছে। অর্থাৎ এর অর্থ হচ্ছে “আল্লাহ।” কিন্তু প্রথম উক্তিটিই হচ্ছে বেশী স্পষ্ট ও প্রসিদ্ধ এবং অধিকাংশ মুফাসসিরেরও এটাই উক্তি। মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা অঙ্গীকার বুঝানো হয়েছে। আর কাতাদা (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে কসম বা শপথ।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

[১] এই প্রশ্নবাচক শব্দটি নেতিবাচক। অর্থাৎ, যে সকল মুশরিকদের সাথে তোমাদের চুক্তি আছে তাদের ছাড়া আর কারো চুক্তি বলবৎ থাকবে না।

[২] অর্থাৎ, চুক্তি বজায় রাখা আল্লাহর নিকট বড় পছন্দনীয় কাজ। অতএব তার প্রতি যত্ন রাখা জরুরী।

[৩] كَيف (কেমন করে?) শব্দটি পুনরায় তাকীদের জন্য নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার হয়েছে। إِلّ অর্থ হল আত্মীয়তা এবং ذِمَّة শব্দের অর্থ হল অঙ্গীকার। অর্থাৎ, সেই মুশরিকদের মুখের কথার কি দাম আছে, যাদের অবস্থা এই যে, যদি তারা তোমাদের উপর বিজয় লাভ করে, তাহলে কোন আত্মীয়তা ও অঙ্গীকার রক্ষা করবে না। কোন কোন মুফাসসিরগণের নিকট প্রথম كَيف (বাক্য) মুশরিকদের এবং দ্বিতীয় كَيف (বাক্য) ইয়াহুদীদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে। কেননা, পরবর্তী আয়াতে গুণ বর্ণনা করে বলা হয়েছে যে, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে সামান্য মূল্যের বিনিময়ে বিক্রি করে। আর এই অভ্যাস ইয়াহুদীদেরই ছিল।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
বাহ্যত তারা চুক্তির শর্তাবলী নির্ণয় করে কিন্তু মনে থাকে তাদের চুক্তি ভঙ্গ করার কুমতলব। অভিজ্ঞতা থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। অর্থাৎ দেখা গেছে, যখনই তারা কোন চুক্তি করেছে, ভঙ্গ করার জন্যই তা করেছে।

* তারা এমন লোক, যাদের নৈতিক দায়িত্বের কোন অনুভূতি নেই এবং নৈতিক বিধি-নিষেধ ভঙ্গ করতেও তারা কখনো কুণ্ঠিত বা শঙ্কিত হয় না।

Leave a Reply