Book#596

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

(Book# 114/٣٢٢)-৫৯৬
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
০৯-১১ নং আয়াত:-

اشْتَرَوْاْ بِأيَاتِ اللّهِ ثَمَنًا قَلِيلً

তারা আল্লাহর আয়াতকে নগণ্য মূল্যে বিক্রয় করে,
They have purchased with the Ayat of Allah a little gain,

اِشۡتَرَوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ ثَمَنًا قَلِیۡلًا فَصَدُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ؕ اِنَّہُمۡ سَآءَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹﴾

لَا یَرۡقُبُوۡنَ فِیۡ مُؤۡمِنٍ اِلًّا وَّ لَا ذِمَّۃً ؕ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُعۡتَدُوۡنَ ﴿۱۰﴾
فَاِنۡ تَابُوۡا وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَوُا الزَّکٰوۃَ فَاِخۡوَانُکُمۡ فِی الدِّیۡنِ ؕ وَ نُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۱﴾
তারা আল্লাহর আয়াতকে নগণ্য মূল্যে বিক্রয় করে ও তারা লোকদেরকে তাঁর পথ হতে নিবৃত্ত করে। নিশ্চয় তারা যা করে থাকে, তা অতি জঘন্য।

তারা কোন বিশ্বাসীর সাথে আত্মীয়তা ও অঙ্গীকারের মর্যাদা রক্ষা করে না, তারাই সীমালংঘনকারী।

অতঃপর তারা যদি তওবা করে, যথাযথ নামায পড়ে ও যাকাত দেয়, তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই। আর জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আমি নিদর্শনসমূহ স্পষ্টরূপে বিবৃত করি।

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-

৯-১১ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের নিন্দার সাথে সাথে মুমিনদেরকে জিহাদের প্রতি উৎসাহিত করছেন। তিনি বলছেন যে, ঐ কাফিররা নগণ্য ও নশ্বর দুনিয়াকে মনোরম ও চিরস্থায়ী আখিরাতের বিনিময়ে পছন্দ করে নিয়েছে। তারা নিজেরাও আল্লাহর পথ থেকে সরে রয়েছে এবং মুমিনদেরকেও ঈমান থেকে ফিরিয়ে রেখেছে। তাদের আমল অতি জঘন্য। তারা মুমিনদের শুধু ক্ষতি করতেই চায় । তারা না কোন আত্মীয়তার খেয়াল রাখে, না চুক্তির কোন পরোয়া করে। তারা সীমালংঘন করেছে। হ্যা, তবে হে মুমিনগণ! এখনও যদি তারা তাওবা করে এবং সালাত আদায় করে ও যাকাত দেয় তবে তারা তোমাদেরই লোক হয়ে যেতে পারে। হাফিজ আবু বকর আল বাযযার (রঃ)-এর হাদীস গ্রন্থে আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি দুনিয়াকে এই অবস্থায় ছেড়েছে যে, সে আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর ইবাদত করেছে, তার সাথে কাউকে শরীক করেনি, সালাত প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং যাকাত দিয়েছে, সে দুনিয়া হতে এমন অবস্থায় বিচ্ছিন্ন হলো যে, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট রয়েছেন।” এটাই হচ্ছে আল্লাহর ঐ দ্বীন যা নিয়ে নবীগণ (আলাইহিমুসসালাম) এসেছিলেন এবং আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে ওরই তাবলীগ করতে থাকেন। তাদের এই প্রচারকার্য ছিল কথা ছড়িয়ে পড়ার এবং ইচ্ছা ও প্রবৃত্তি বেড়ে যাওয়ার পূর্বে। এর সত্যতা আল্লাহর কিতাবের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে।

যদি তারা তাওবা করে অর্থাৎ মূর্তিগুলো ও মূর্তিপূজা পরিত্যাগ করে এবং সালাতী ও যাকাতদাতা হয়ে যায় তবে (হে মুসলিমগণ!) তোমরা তাদের পথ ছেড়ে দাও। তারা তখন তোমাদেরই দ্বীনী ভাই। ইমাম বাযযার (রঃ) বলেনঃ “আমার ধারণায় (আরবী) (অর্থাৎ সে দুনিয়া হতে এমন অবস্থায় বিচ্ছিন্ন হলো যে, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট) এখান থেকেই মারফু হাদীস শেষ এবং বাকী অংশটুকু বর্ণনাকারী রাবী ইবনে আনাস (রঃ)-এর কথা। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 09-11

اشْتَرَوْاْ بِأيَاتِ اللّهِ ثَمَنًا قَلِيلً

They have purchased with the Ayat of Allah a little gain,

Allah admonishes the idolators and encourages the believers to fight against them because,

اشْتَرَوْاْ بِأيَاتِ اللّهِ ثَمَنًا قَلِيلً

They have purchased with the Ayat of Allah a little gain,

idolators exchanged following the Ayat of Allah with the lower affairs of life that they indulged in,

فَصَدُّواْ عَن سَبِيلِهِ

and they hindered men from His way,

trying to prevent the believers from following the truth,

إِنَّهُمْ سَاء مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ

لَا يَرْقُبُونَ فِي مُوْمِنٍ إِلااًّ وَلَا ذِمَّةً

evil indeed is that which they used to do, With regard to a believer, they respect not the ties, either of kinship or of covenant!

وَأُوْلَـيِكَ هُمُ الْمُعْتَدُونَ

It is they who are the transgressors.

We explained these meanings before, as well as, the meaning of,

فَإِن تَابُواْ وَأَقَامُواْ الصَّلَةَ وَاتَوُاْ الزَّكَاةَ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ وَنُفَصِّلُ الايَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
But if they repent, perform the Salah and give the Zakah, then they are your brethren in religion. (In this way) We explain the Ayat in detail for a people who know.

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

[১] বারবার এ কথা পুনরুক্তির উদ্দেশ্য হল, মুশরিক ও ইয়াহুদীদের হৃদয়ে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ এবং অন্তরের গোপন শত্রুতার জ্বালাকে মুসলিমদের জন্য প্রকাশ করে দেওয়া।

*নামায হল তাওহীদ ও রিসালতের উপর বিশ্বাস স্থাপন করার পর ইসলামের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ, যা আল্লাহর হক। তাতে আল্লাহর ইবাদতের বিভিন্ন দিক রয়েছে। এতে রয়েছে হাত বেঁধে কিয়াম, রুকূ ও সিজদা। এতে রয়েছে দু’আ ও মুনাজাত, আল্লাহর বড়ত্ব ও মহিমা এবং নিজের মিনতি ও অসহায়তার প্রকাশ। ইবাদতের এই সমস্ত প্রকার ও ধরন কেবল আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। নামাযের পর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও ফরযকৃত রুকন হল যাকাত। যাতে আল্লাহর ইবাদতের সাথে সাথে বান্দারও হক শামিল রয়েছে। যাকাতের অর্থ দ্বারা সমাজের ও বিশেষ করে যাকাতদাতার আত্মীয় গরীব-মিসকীন ও অক্ষম লোকদের প্রয়োজন মিটে থাকে। এই জন্য হাদীসে দুই সাক্ষ্য দানের পর উক্ত দু’টি বিষয়কে পরিষ্কার করে বর্ণনা করা হয়েছে। নবী (সাঃ) বলেছেন, “আমাকে আদেশ করা হয়েছে যে, লোকদের বিরুদ্ধে আমি যেন ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ করতে থাকি, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা সাক্ষী দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর রসূল। আর নামায কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে।” (বুখারী ঈমান অধ্যায়, মুসলিম ঈমান অধ্যায়) আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যাকাত প্রদান করে না, তার নামাযও গ্রহণযোগ্য নয়।’ (ঐ)

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

একদিকে আল্লাহর আয়াত তাদের সৎকাজ করার, সত্য পথে থাকার ও ন্যায়নিষ্ঠ আইন মেনে চলার আহবান জানাচ্ছিল এবং অন্য দিকে তাদের সামনে ছিল দুনিয়ার জীবনের মুষ্টিমেয় কয়েকদিনের সুখ-সুবিধা-আরাম ঐশ্বর্য। প্রবৃত্তির আশা-আকাংখার লাগামহীন আনুগত্যের দ্বারা এগুলো অর্জন করা যায়। তারা এ দু’টি জিনিসের মধ্যে তুলনা করে প্রথমটি বাদ দিয়ে দ্বিতীয় জিনিসটি নিজেদের জন্য বেছে নিল।

* জালেমরা শুধুমাত্র হেদায়াতের পরিবর্তে গোমরাহীকে নিজেদের জন্য বেছে নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি বরং আরো অগ্রসর হয়ে তারা যাতে সত্যের দাওয়াতের কাজ কোনক্রমেই না চলতে পারে এবং কল্যাণ ও সৎবৃত্তির এ আওয়াজ কেউ শুনতে পায়সে জন্যও অপচেষ্টা চালিয়েছে। বরং তারা চেয়েছে, যে মুখ থেকে ডাক দেয়া হয় সেই মুখই বন্ধ করে দিতে। মহান আল্লাহ‌ যে সত্যনিষ্ঠ ও কল্যাণময় জীবন বিধান পৃথিবীতে কায়েম করতে চাচ্ছিলেন তার পথ রোধ করার জন্য তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এ জন্য যারা এ বিধানকে সত্য জেনে এর অনুসারী হয়েছিল দুনিয়ার বুকে তাদের জীবন যাপনের দুর্বিসহ করে তুলেছিল।

এখানে আবার একথা স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে যে নামায পড়া ও যাকাত দেয়া ছাড়া নিছক তাওবা করে নিলেই তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই হয়ে যাবে না। আর এগুলো আদায় করলে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই হবে, একথা বলার মানে হচ্ছে, এইযে, এ শর্তগুলো পূরণ করার ফল কেবল এতটুকুই হবে না যে, তোমাদের জন্য তাদের ওপর হাত ওঠানো এবং তাদের ধন-প্রাণ নষ্ট করা হারাম হয়ে যাবে বরং এ সঙ্গে আরো একটি সুবিধা লাভ করা যাবে। অর্থাৎ এর ফলে ইসলামী সমাজে তারা সমান অধিকার লাভ করবে। সামাজিক, তামাদ্দুনিক ও আইনগত দিক দিয়ে তারা অন্যান্য সকল মুসলমানের মতই হবে। কোন পার্থক্য ও বিশেষ গুণাবলী তাদের উন্নতির পথে অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারবে না।

Leave a Reply