أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
(Book# 610)
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
৩৮-৩৯ নং আয়াত:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 38-39
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ امَنُواْ مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انفِرُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ
হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের কি হলো যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহর পথে (জিহাদে) বের হতে বলা হয়,
O you who believe! What is the matter with you, that when you are asked to march forth in the cause of Allah,
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَا لَکُمۡ اِذَا قِیۡلَ لَکُمُ انۡفِرُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اثَّاقَلۡتُمۡ اِلَی الۡاَرۡضِ ؕ اَرَضِیۡتُمۡ بِالۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا مِنَ الۡاٰخِرَۃِ ۚ فَمَا مَتَاعُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا فِی الۡاٰخِرَۃِ اِلَّا قَلِیۡلٌ ﴿۳۸﴾
হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের কি হলো যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহর পথে (জিহাদে) বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা ভারাক্রান্ত হয়ে মাটিতে বসে পড়। তবে কি তোমরা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন নিয়ে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? বস্তুতঃ পার্থিব জীবনের ভোগবিলাস তো পরকালের তুলনায় অতি সামান্য।
O you who have believed, what is [the matter] with you that, when you are told to go forth in the cause of Allah, you adhere heavily to the earth? Are you satisfied with the life of this world rather than the Hereafter? But what is the enjoyment of worldly life compared to the Hereafter except a [very] little.
اِلَّا تَنۡفِرُوۡا یُعَذِّبۡکُمۡ عَذَابًا اَلِیۡمًا ۬ۙ وَّ یَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَیۡرَکُمۡ وَ لَا تَضُرُّوۡہُ شَیۡئًا ؕ وَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۳۹﴾
যদি তোমরা (জিহাদে) বের না হও, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রদান করবেন এবং তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক জাতি সৃষ্টি করবেন, আর তোমরা তাঁর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।
If you do not go forth, He will punish you with a painful punishment and will replace you with another people, and you will not harm Him at all. And Allah is over all things competent.
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৩৮-৩৯ নং আয়াতের তাফসীর:
ঘটনা এই যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বহু দূরের সফর তাবুকের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করার জন্যে সাহাবীদেরকে এমন সময়ে নির্দেশ দেন যখন প্রচন্ড গরম পড়েছিল, গাছের ফল পেকে উঠেছিল এবং গাছের ছায়া বেড়ে গিয়েছিল। কিছু লোক রয়ে গিয়েছিল, তাদেরকেই তিরস্কার করে বলা হচ্ছে-যখন তোমাদেরকে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করার জন্যে ডাক দেয়া হচ্ছে তখন তোমরা মাটি আঁকড়ে বসে থাকছে। কেন? তোমরা কি দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী ভোগ্য বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আখিরাতের চিরস্থায়ী নিয়ামতকে ভুলে বসেছো? জেনে রেখো যে, পরকালের তুলনায় দুনিয়ার কোন মূল্যই নেই।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় তর্জনীর দিকে ইশারা করে বলেনঃ “এ অঙ্গুলিটি কেউ সমুদ্রে ডুবিয়ে উঠালে তাতে যতটুকু পানি উঠবে, ঐ পানিটুকু সমুদ্রের তুলনায় যেমন, আখিরাতের তুলনায় দুনিয়াও তেমন। (এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) তাঁর সহীহ গ্রন্থে এবং ইমাম আহমাদ (রঃ) তার মুসনাদ গ্রন্থে তাখরীজ করেছেন)
আবু হুরাইরা (রাঃ)-কে কেউ জিজ্ঞেস করেন- আমি শুনেছি যে, আপনি নাকি হাদীস বর্ণনা করে থাকেনঃ “আল্লাহ তা’আলা একটি পুণ্যের বিনিময়ে এক লাখ সওয়াব দিয়ে থাকেন।” এটা কি সত্য? তিনি উত্তরে বলেনঃ “হ্যা, এটা তো সত্যই, তাছাড়া আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে এ কথাও বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা’আলা একটা পুণ্যের বিনিময়ে দু’লাখ সওয়াব দান করবেন।” অতঃপর তিনি (আরবী)-এ বাক্যটি পাঠ করে বলেনঃ “দুনিয়ার যা অতীত হয়েছে এবং যা বাকী আছে সমস্তই আখিরাতের তুলনায় অতি অল্প। আবদুল আযীয ইবনে আবি হাসিম (রঃ) তার পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, আবদুল আযীয ইবনে মারওয়ান (রঃ)-এর যখন মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসলো তখন তিনি বললেনঃ “যে কাপড়ে আমাকে কাফন পরানো হবে ওটা আমার কাছে নিয়ে এসো তো, আমি একটু দেখে নিই।” কাপড়টি তার সামনে রাখা হলে তিনি ওটার দিকে তাকিয়ে বলেনঃ “দুনিয়ায় তো আমার অংশ এটাই ছিল। এটুকু দুনিয়া নিয়ে আমি যাচ্ছি!” অতঃপর তিনি পিঠ ফিরিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেনঃ “হায় দুনিয়া! তোমার অধিকও অল্প এবং তোমার অল্পতো খুবই ছোট! আফসোস! আমরা ধোকার মধ্যেই পড়ে রয়েছি!”
আল্লাহ তা’আলা জিহাদ পরিত্যাগ করার উপর ভীতি প্রদর্শন করে বলছেন-যদি তোমরা (যুদ্ধের জন্যে) বের না হও তবে আল্লাহ তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রদান করবেন। একটি গোত্রকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) জিহাদের জন্যে আহ্বান করেন। কিন্তু তারা তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তখন আল্লাহ তাদের থেকে বৃষ্টি বন্ধ করে দেন।
আল্লাহ পাক বলেন-“তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক জাতি সৃষ্টি করে দিবেন। অর্থাৎ তোমরা গর্বে ফুলে ওঠো না যে, তোমরাই তো রাসূল (সঃ)-এর সাহায্যকারী। জেনে রেখো যে, তোমরা যদি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাহায্যকারীরূপে না থাকো তবে আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিয়ে অন্যদেরকে তাঁর সাথী ও সাহায্যকারী বানিয়ে দেবেন যারা তোমাদের মত হবে না। তোমরা আল্লাহর দ্বীনের কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। এটা মনে করো না যে, তোমরা জিহাদ না করলে মুজাহিদরা জিহাদ করতেই পারবে না। আল্লাহ সব কিছুর উপরই পূর্ণ ক্ষমতাবান। তোমাদের ছাড়াই তিনি তাঁর মুজাহিদ বান্দাদেরকে শত্রুদের উপর বিজয় দান করতে পারেন।
বলা হয়েছে যে, এই আয়াতটি ও (আরবী) (৯:৪১) এই আয়াতটি এবং (৯:১২০) এই আয়াতটি (আরবী) (৯:১২২) এ আয়াত দ্বারা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে। কিন্তু ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) এর প্রতিবাদ করে বলেন যে, এই আয়াতগুলো মানসূখ হয়নি, বরং এগুলোর ভাবার্থ এই যে, যাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) জিহাদে বের হওয়ার জন্যে ডাক দেবেন তাদেরকে তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে যেতে হবে। যদি তারা তা পরিত্যাগ করে তবে তাদেরকে ঐ কারণে শাস্তি প্রদান করা হবে। এটাই খুব উত্তম ব্যাখ্যা বটে। আল্লাহ তা’আলাই সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
তাবুক যুদ্ধের প্রস্তুতি চলাকালে যে ভাষণটি নাযিল হয়েছিল এখান থেকে সেটিই শুরু হচ্ছে।
এর দুটো অর্থ হতে পারে।
এক, আখেরাতের অনন্ত জীবন ও সেখানকার সীমা-সংখ্যাহীন সাজ সরঞ্জাম দেখার পর তোমরা জানতে পারবে, দুনিয়ার সামান্য জীবনকালে সুখঐশ্বর্য ভোগের যে বড় বড় সম্ভাবনা তোমাদের করায়ত্ত ছিল এবং যে সর্বাধিক পরিমাণে বিলাস সামগ্রী তোমরা লাভ করতে পেরেছিলে তা আখেরাতের সেই সীমাহীন সম্ভাবনা এবং সেই অন্তহীন নিয়ামতে পরিপূর্ণ সুবিশাল রাজ্যের তুলনায় কিছুই নয়। তখন তোমরা নিজেদের সংকীর্ণ দৃষ্টি ও অদূরদর্শিতার জন্য এ মর্মে আফসোস করতে থাকবে, যে, আমরা হাজার বুঝানো সত্ত্বেও দুনিয়ার তুচ্ছ ও ক্ষণস্থায়ী লাভের মোহে তোমরা কেন নিজেদেরকে এ চিরন্তন ও বিপুল পরিমাণ লাভ থেকে বঞ্চিত রাখলে।
দুই, দুনিয়ার জীবনের সামগ্রী আখেরাতে কোন কাজে লাগবে না। এখানে যতই ঐশ্বর্য সম্পদ ও সাজ-সরঞ্জাম তোমরা সংগ্রহ করো না কেন, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার সাথে সাথেই সব কিছু থেকে হাত গুটিয়ে নিতে হবে। মৃত্যুর পরপারে যে জগত রয়েছে এখানকার কোন জিনিসই সেখানে তোমাদের সাথে স্থানান্তরিত হবে না। এখানকার জিনিসের যে অংশটুকু তোমরা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য কুরবানী করেছো এবং যে জিনিসকে ভালবাসার ওপর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর দ্বীনের প্রতি ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিয়েছো একমাত্র সেই অংশই তোমরা সেখানে পেতে পারো।
এ থেকেই শরীয়তের এ বিধি জানা যায় যে, যতক্ষণ পর্যন্ত কোন সাধারণ ঘোষণা (যুদ্ধ করার জন্য সর্বসাধারণ মুসলমানদেরকে আহবান জানানো) না দেয়া হবে কিংবা কোন এলাকার সকল মুসলিম অধিবাসীকে বা মুসলমানদের কোন দলকে জিহাদের জন্য বের হবার হুকুম দেয়া না হবে ততক্ষণ তো জিহাদ ফরযে কিফায়াই থাকে। অর্থাৎ যদি কিছু লোক জিহাদ করতে থাকে তাহলে বাদবাকি লোকদের ওপর থেকে ঐ ফরয রহিত হয়ে যাবে। কিন্তু যখন মুসলমানদের শাসকের পক্ষ থেকে মুসলমানদেরকে সর্বাত্মক জিহাদের জন্য আহবান জানানো হবে অথবা কোন বিশেষ দলকে বা বিশেষ এলাকার অধিবাসীদেরকে ডাকা হবে তখন যাদেরকে ডাকা হয়েছে তাদের ওপর জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যাবে এমনকি যে ব্যক্তি কোন যথার্থ অসুবিধা বা ওযর ছাড়া জিহাদে অংশগ্রহণ করবে না তার ঈমানই গ্রহণযোগ্য হবে না।
আল্লাহর কাজ তোমাদের উপর নির্ভরশীল নয়। তোমরা করলে তা হবে এবং তোমরা না করলে তা হবে না এমন নয়। আসলে আল্লাহ যে তোমাদের তাঁর দ্বীনের খেদমতের সুযোগ দিচ্ছেন, এটা তাঁর মেহেরবানী ও অনুগ্রহ। যদি তোমরা নিজেদের অজ্ঞতার কারণে এ সুযোগ হারাও, তাহলে তিনি অন্য কোন জাতিকে এ সুযোগ দেবেন এবং তোমরা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ বর্জন করে দুনিয়া ও তার সাচ্ছন্দ্য এবং আরাম-আয়েশে মগ্ন থাকাকে আল্লাহ তা‘আলা নিন্দা করে মু’মিনদেরকে বলছেন যে, তোমরা আখিরাতের চেয়ে পার্থিব সুখ সাচ্ছন্দকে প্রাধান্য দিচ্ছ? জেনে রেখ! পাথির্ব সুখ সাচ্ছন্দ অতি সামান্য। যদি জিহাদে বের না হও তাহলে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেব এবং এমন এক জাতিকে তোমাদের পরিবর্তে নিয়ে আসব যাদের তোমরা কোন ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম হবে না, তাদের দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের শাস্তি দেবেন, যতক্ষণ তোমরা জিহাদ না করবে ততক্ষণ এ জাতি দ্বারা লাঞ্ছিত হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইমাম যখন যুদ্ধ করার জন্য আহ্বান জানাবে তখন যুদ্ধ করা আবশ্যক।
২. পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে জিহাদ ত্যাগ করলে আল্লাহ তা‘আলা কঠিন শাস্তি দেবেন।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
[১] অলসতার যে কারণ ও প্রতিকারের উপায় এখানে বর্ণিত হয়েছে, তা এক বিশেষ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট হলেও চিন্তা করলে বোঝা যাবে যে, দ্বীনের ব্যাপারে সকল আলস্য, নিস্ক্রিয়তা ও সকল অপরাধ এবং গোনাহের মূলে রয়েছে দুনিয়া প্রীতি ও আখেরাতের প্রতি উদাসীনতা। সেজন্য আয়াতে বলা হয়ঃ “হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি হল, আল্লাহর পথে বের হওয়ার জন্য বলা হলে তোমরা মাটি জড়িয়ে ধর। আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবন নিয়েই কি পরিতুষ্ট হয়ে গেলে?” হাদীসে এসেছে, “বৃদ্ধ মানুষের মনও দুটি ব্যাপারে যুবক থেকে যায়, একটি হচ্ছে দুনিয়াপ্রতি অপরটি বেশী বেশী আশা-আকাঙ্খা” [বুখারী ৬৪২০] রোগ নির্ণয়ের পর তার প্রতিকার উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, পার্থিব জিন্দেগীর ভোগের উপকরণ আখেরাতের তুলনায় অতি নগণ্য। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মধ্যে ডুবায়, সুতরাং সে দেখুক, সে আঙ্গুল কি নিয়ে আসে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার শাহাদাত আঙ্গুলীর দিকে ইঙ্গিত করলেন। [মুসলিম: ২৮৫৮] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার কোন এক উচু স্থান দিয়ে বাজারে প্রবেশ করলেন। বাজার লোকে লোকারণ্য তিনি একটি কানকাটা মরা ছাগলের পাশ দিয়ে গেলেন। তিনি সেটির কানের বাকী অংশে ধরলেন। তারপর বললেন, কে এটিকে এক দিরহামের বিনিময়ে ক্রয় করতে রাজী আছ? লোকরা বলল, আমরা কেউ এটিকে কোন কিছুর বিনিময়ে গ্রহণ করব না। আর আমরা এটাকে নিয়ে কি করব? তিনি বললেন, তোমরা কি চাও যে এটা তোমাদের হোক? তারা বলল, যদি জীবিতও থাকত তারপরও সেটা দোষযুক্ত ছিল; কেননা তার কান নেই। তদুপরি সেটা মৃত। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ করে বলছি দুনিয়া আল্লাহর কাছে এর চেয়েও বেশী মূল্যহীন। [মুসলিম: ২৯৫৭] সারকথা হল, আখেরাতের স্থায়ী জীবনের চিন্তা- ভাবনাই মানুষের করা উচিত। বস্তুতঃ আখেরাতের চিন্তাই সকল রোগের একমাত্র প্রতিকার এবং অপরাধ দমনের সার্থক উপায়।
এ আয়াতে অলস ও নিস্ক্রিয় লোকদের ব্যাধি ও তার প্রতিকার উল্লেখ করে সর্বশেষ ফয়সালা জানিয়ে দেয়া হয় যে, তোমরা জিহাদে বের না হলে আল্লাহ তোমাদের মৰ্মম্ভদ শাস্তি দিবেন এবং তোমাদের স্থলে অন্য জাতির উত্থান ঘটাবেন। আর দ্বীনের আমল থেকে বিরত হয়ে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিন্দুমাত্র ক্ষতি করতে পারবে না। কেননা আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান। কাতাদা বলেন, এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা মুমিনদেরকে শামের দিকে তাবুকের যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বের হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি জানেন এ যুদ্ধে কত কষ্ট রয়েছে। তারপরও তিনি এ যুদ্ধে বের না হওয়ার ব্যাপারে সাবধান করেছেন। [তাবারী]
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] রোমের খ্রিষ্টান বাদশাহ হিরাক্লের ব্যাপারে খবর পাওয়া গেল যে, তিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ-প্রস্ত্ততি নিচ্ছেন। সুতরাং নবী (সাঃ) তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্ত্ততি নিতে আদেশ করলেন। এটা ছিল শওয়াল মাসের ৯ হিজরীর ঘটনা। সময়টা ছিল প্রখর গ্রীষ্মের সময় আর সফরও ছিল খুব লম্বা। কোন কোন মুসলিম ও মুনাফিকবদের উপর এটা বড় কষ্টকর মনে হল; যার প্রকাশ এই আয়াতের মধ্যে করা হয়েছে এবং তাদেরকে ভৎর্সনা করা ও ধমক দেওয়া হয়েছে। এটাকে তাবূক যুদ্ধ বলা হয়; যা আসলে ঘটেনি। ২০ দিন মুসলিমরা শাম দেশের নিকটবর্তী তাবূকে থেকে পুনরায় ফিরে এলেন। এ যুদ্ধের সৈন্যদেরকে ‘জাইশুল উসরাহ’ (সংকট-সৈন্য) বলা হয়। কেননা, এই দীর্ঘ সফরে সৈন্যদেরকে দীর্ঘ সময় বড় সংকটের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। اثَّاقَلتُم অর্থাৎ, অলস ভারাক্রান্ত হয়ে পিছনে থাকতে চাও। এর বহিঃপ্রকাশ কোন কোন লোকের মধ্যে হয়েছিল। কিন্তু এর সম্বন্ধ সকলের প্রতি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। (ফাতহুল ক্বাদীর)
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 38-39
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ امَنُواْ مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انفِرُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ
O you who believe! What is the matter with you, that when you are asked to march forth in the cause of Allah,
Admonishing clinging to Life rather than rushing to perform Jihad
Allah admonishes those who lagged behind the Messenger of Allah in the battle of Tabuk, at a time when fruits were ripe and shades tempting in the intense and terrible heat,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ امَنُواْ مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انفِرُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ
O you who believe! What is the matter with you, that when you are asked to march forth in the cause of Allah,
if you are called to perform Jihad in the cause of Allah,
اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الَارْضِ
you cling heavily to the earth,
reclining to remain in peace, shade and ripe fruits.
أَرَضِيتُم بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الاخِرَةِ
Are you pleased with the life of this world rather than the Hereafter,
why do you do this, is it because you prefer this life instead of the Hereafter Allah.
next diminishes the eagerness for this worldly life and increases it for the Hereafter,
فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الاخِرَةِ إِلاَّ قَلِيلٌ
But little is the enjoyment of the life of this world compared to the Hereafter.
Imam Ahmad recorded that Al-Mustawrid, a member of Bani Fihr, said that the Messenger of Allah said,
مَا الدُّنْيَا فِي الاْاخِرَةِ إِلاَّ كَمَا يَجْعَلُ أَحَدُكُمْ إِصْبَعَهُ هَذِهِ فِي الْيَمِّ فَلْيَنْظُرْ بِمَ تَرْجِعُ
The life of this world, compared to the Hereafter, is just like when one of you dips his finger in the sea, let him contemplate how much of it his finger would carry?
The Prophet pointed with his index finger. Muslim collected this Hadith.
Ath-Thawri narrated that Al-A`mash said about the Ayah,
فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الاخِرَةِ إِلاَّ قَلِيلٌ
(But little is the enjoyment of the life of this world compared to the Hereafter).
“What compares to the provision a traveler takes.”
Abdul-Aziz bin Abi Hazim narrated that his father said,
“When Abdul-Aziz bin Marwan was dying he said, `Bring the shroud I will be covered with so that I inspect it.’
When it was placed before him, he looked at it and said, `Is this what I will end up with from this life!’
He then turned his back and cried, while saying, `Woe to you, O life! Your abundance is truly little, your little is short lived, we were deceived by you.”‘
Allah warns those who do not join Jihad.
إِلاَّ تَنفِرُواْ يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
If you march not forth, He will punish you with a painful torment,
Ibn Abbas said,
“Allah’s Messenger called some Arabs to mobilize, but they lagged behind and Allah withheld rain from coming down on them, and this was their torment.”
Allah said,
وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ
and will replace you by another people,
who will give aid to His Prophet and establish his religion. Allah said in another Ayah,
الْفُقَرَاءُ وَإِن تَتَوَلَّوْاْ يَسْتَبْدِلْ قَوْماً غَيْرَكُمْ ثُمَّ لَا يَكُونُواْ
And if you turn away (from the obedience to Allah), He will exchange you for some other people and they will not be your likes. (47:38)
وَلَا تَضُرُّوهُ شَيْيًا
and you cannot harm Him at all,
you can never harm Allah when you lag behind and stay away from joining Jihad,
وَاللّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
and Allah is able to do all things.
He is able to destroy the enemies without your help.