أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
(Book# 612)
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
৪১ নং আয়াত:-
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً
দুর্বল হও অথবা সবল, সর্বাবস্থাতেই তোমরা বের হও,
March forth, whether you are light or heavy,
اِنۡفِرُوۡا خِفَافًا وَّ ثِقَالًا وَّ جَاہِدُوۡا بِاَمۡوَالِکُمۡ وَ اَنۡفُسِکُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۱﴾
দুর্বল হও অথবা সবল, সর্বাবস্থাতেই তোমরা বের হও এবং আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দ্বারা জিহাদ কর। এটা তোমাদের জন্য অতি উত্তম, যদি তোমরা জানতে।
Go forth, whether light or heavy, and strive with your wealth and your lives in the cause of Allah . That is better for you, if you only knew.
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
৪১ নং আয়াতের তাফসীর:
একজন মু’মিন যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন ইমাম জিহাদের জন্য আহ্বান করলে সে তার জান ও মাল নিয়ে আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদে বের হয়ে পড়বে।
(اِنْفِرُوْا خِفَافًا وَّثِقَالًا)
‘অভিযানে বের হয়ে পড়, হালকা অবস্থায় হোক অথবা ভারি অবস্থায়’- এ আয়াতের অর্থ বিভিন্ন মুফাসসিরগণ বিভিন্ন রকম করেছেন- মুজাহিদ (রাঃ) বলেন: যুবক হোক, বৃদ্ধ হোক, ধনী হোক, গরীব হোক অভিযানের আহ্বান আসলে বেরিয়ে পড়।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: সন্তুষ্ট বা অসস্তুষ্ট অবস্থায়।
হাসান বসরী (রাঃ) বলেন: স্বচ্ছল অবস্থায় হোক বা অস্বচ্ছল অবস্থায় হোক।
এছাড়াও কেউ কেউ বলেছেন: পায়ে হেঁটে হোক বা সওয়ারীতে হোক, সন্তান থাকুক বা না থাকুক, সৈন্য দলের অগ্রে থাকুক বা পিছনে থাকুক ইত্যাদি।
ইমাম শাওকানী (রাঃ) বলেন: আয়াতটি সমস্ত অর্থেই ব্যাপক। যেহেতু আয়াতের অর্থ হল: তোমরা জিহাদে বের হও চাই তোমাদের ভারী মনে হোক অথবা হালকা মনে হোক। এ অর্থের মাঝে উল্লিখিত সমস্ত অর্থই চলে আসে। (ফাতহুল কাদীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ)
‘এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়’ অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করা দুনিয়া ও আখিরাতের চেয়েও উত্তম।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা মুজাহিদদের দায়িত্ব নিয়েছেন যে, যদি তাকে মৃত্যু দান করেন তাহলে জান্নাত দেবেন আর বাড়িতে ফিরিয়ে আনলে প্রতিদান বা গনীমতসহ ফিরাবেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩১২৩ ) এ জন্য আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ ج وَعَسٰٓي أَنْ تَكْرَهُوْا شَيْئًا وَّهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ ج وَعَسٰي أَنْ تُحِبُّوْا شَيْئًا وَّهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ ط وَاللّٰهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ)
“যুদ্ধ করা তোমাদের ওপর ফরয করে দেয়া হয়েছে। আর হয়ত এটা তোমাদের নিকট অপ্রিয়, তোমরা কোন বিষয়কে অপছন্দ কর যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, আবার হতে পারে তোমরা এমন বিষয়কে পছন্দ করছ যা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। মূলত আল্লাহই জানেন আর তোমরা জান না।”(বাকারাহ ২:২১৬)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইমাম যুদ্ধের জন্য আহ্বান করলে একজন মু’মিন যে অবস্থাতেই থাকুক জিহাদে বের হওয়া আবশ্যক, যদি শরীয়তসম্মত কোন কারণ না থাকে।
২. জিহাদ জান ও মাল উভয়টাই দ্বারা হয়।
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
সুফিয়ান সাওরী (রঃ) তাঁর পিতা হতে, তিনি আবুয যুহা মুসলিম ইবনে সাবীহ (রঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, সূরায়ে বারাআতের এ আয়াতটিই সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হয়। এতে রয়েছে যে, তাবূকের যুদ্ধের জন্যে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে সমস্ত মুসলিমের গমন করা উচিত। আহলে কিতাবদের কাফির রোমকদের সাথে জিহাদ করার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করা অবশ্য কর্তব্য। এতে তাদের মনের ইচ্ছা থাক আর নাই থাক এবং এটা তাদের কাছে সহজ কিংবা কঠিনই মনে হাক। বৃদ্ধেরা ও রুগ্ন ব্যক্তিরা বলছিলঃ “আমরা এ যুদ্ধে গমন না করলে পাপ হবে না। তখন আল্লাহ তাআলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন।
বৃদ্ধ ও যুবক সবারই জন্যে এ হুকুম সাধারণ হয়ে গেল। কারো কোন ওযর চললো না। আবু তালহা (রাঃ) এ আয়াতের এই তাফসীরই করেছেন। এই হুকুম পালনার্থে এই মনীষী সিরিয়ার ভূমিতে চলে যান এবং খ্রীষ্টানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জীবনদাতা আল্লাহর কাছে নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেন। আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন এবং তাঁকে সন্তুষ্ট রাখুন!
আর একটি রিওয়ায়াতে আছে যে, আবু তালহা (রাঃ) একদা (আরবী) -এই আয়াতটি পাঠ করে বলেনঃ “আমার ধারণায় তো আমাদের প্রতিপালক যুবক বৃদ্ধ সকলকেই জিহাদে অংশগ্রহণের দাওয়াত দিয়েছেন। হে আমার প্রিয় ছেলেরা! তোমরা আমার জন্যে যুদ্ধের সরঞ্জাম প্রস্তুত কর। আমি সিরিয়ার জিহাদে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে অবশ্যই যাত্রা শুরু করবো।” তার ছেলেরা তখন তাকে বললেনঃ “আব্বা! রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নেতৃত্বাধীন আপনি তার জীবদ্দশায় জিহাদ করেছেন। আবু বকর (রাঃ)-এর খিলাফতের আমলেও আপনি মুজাহিদদের সাথে থেকেছেন। উমার (রাঃ)-এর খিলাফত কালেও আপনি একজন বিখ্যাত বীর হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। এখন আপনার জিহাদ করার বয়স আর নেই। সুতরাং আপনি এখন বাড়ীতেই বিশ্রাম করুন। আমরাই আপনার পক্ষ থেকে জিহাদের ময়দানে যোগদান করছি।” কিন্তু তিনি তাদের কথা মানলেন না এবং ঐ মূহুর্তেই জিহাদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলেন। সমুদ্র পার হওয়ার জন্যে তিনি নৌকায় আরোহণ করলেন। গন্তব্যস্থানে পৌছাতে তখনও কয়েকদিনের পথ বাকী । সমুদ্রের মাঝপথেই তার প্রাণ পাখী উড়ে যায়। নয় দিন পর্যন্ত নৌকা চলতে থাকে, কিন্তু কোন দ্বীপ পাওয়া গেল না যে সেখানে তাকে দাফন করা যায়। নয় দিন পর যাত্রীরা স্থলভাগে অবতরণ করে এবং তাঁকে দাফন করা হয়। তখন পর্যন্ত মৃতদেহের কোনই পরিবর্তন ঘটেনি।
আরো বহু গুরুজন হতে (আরবী)-এর তাফসীর যুবক ও বৃদ্ধ বর্ণিত হয়েছে। মোটকথা যুবক হাক, বৃদ্ধ হাক, কাজ থেকে অবসর প্রাপ্ত হাক, কাজের মধ্যে নিয়োজিত থাক, ধনী হাক বা গরীব হাক, ভারী হাক বা হালকা হাক, অভাবী হাক, কারীগর হাক, সুখী হাক বা দুঃখী হাক, পেশাদার হাক বা ব্যবসায়ী হাক, শক্তিশালী হাক বা দুর্বল হাক, যে অবস্থাতেই থাকুক না। কেন, কোন ও্যর না করেই দাঁড়িয়ে যেতে হবে এবং জিহাদের জন্যে যাত্রা শুরু করতে হবে।
এই মাসআলার বিস্তারিত ব্যাখ্যা হিসেবে ইমাম আবু আমর আওযায়ী (রঃ) বলেন যে, যদি রোমের ভিতরে আক্রমণ হয় তবে মুসলিমরা হালকা ও সওয়ার অবস্থায় চলবে। আর যদি বন্দরের ধারে আক্রমণ হয় হবে হালকা, ভারী, সওয়ার ও পদব্রজ সব রকমভাবে বের হয়ে যাবে। কোন কোন গুরুজনের উক্তি এই যে, (আরবী) (৯:১২২) এ আয়াত দ্বারা এই আয়াতটি মানসূখ হয়ে গেছে। এর উপর আমরা ইনশাআল্লাহ পূর্ণভাবে আলোকপাত করবো।
বর্ণিত আছে যে, মিকদাদ (রাঃ) বড় ও মোটা দেহ বিশিষ্ট লোক ছিলেন। সুতরাং তিনি নিজের অবস্থা প্রকাশ করে যুদ্ধে না যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করেন। কিন্তু তাঁকে অনুমতি দেয়া হলো না এবং এ আয়াত অবতীর্ণ হলো। তখন এ হুকুম সাহাবীদের কাছে খুবই কঠিন ঠেকলো। আল্লাহ তা’আলা তখন (আরবী) (৯:৯১) এই আয়াতটি অবতীর্ণ করে উক্ত আয়াতটি মানসূখ করে দেন। অর্থাৎ “ দুর্বল, রুগ্ন, অভাবী, যাদের কাছে খরচ করার কিছুই নেই, তারা যদি আল্লাহর দ্বীন ও রাসূল (সঃ)-এর শরীয়তের পক্ষপাতী ও শুভাকাঙ্ক্ষী হয় তবে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত না হলেও কোন দোষ নেই।”
আবূ আইয়ুব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। অতঃপর তিনি একটি বছর ছাড়া কোন জিহাদেই অনুপস্থিত ছিলেন না। আর তিনি বলতেন যে, আল্লাহ তা’আলা ভারী ও হালকা উভয়কেই যুদ্ধে গমনের নির্দেশ দিয়েছেন। আর মানুষের অবস্থা তো এ দুটোই হয়ে থাকে।
আবু রাশিদ হিরানী (রঃ) বর্ণনা করেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর অশ্বারোহী মিকদাদ ইবনে আসওয়াদ (রাঃ)-কে হিমস -এ দেখতে পাই। তার হাড়ের জোড় ছুটে গিয়েছিল (তিনি অত্যন্ত বৃদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন)। তবুও দেখি যে, তিনি শিবিকার উপর সওয়ার হয়ে জিহাদের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারতো শরীয়তসম্মত ওযর রয়েছে। তবুও আপনি এতো কষ্ট করছেন কেন? তিনি উত্তরে আমাকে বললেনঃ “দেখো, সূরাতুল বাউস অর্থাৎ সূরায়ে বারাআত আমাদের সামনে অবতীর্ণ হয়েছে। তাতে হালকা, ভারী অর্থাৎ যুবক ও বৃদ্ধ সকলকেই যুদ্ধে গমনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”
হাইয়ান ইবনে যায়েদ শারআবী (রঃ) বলেন, আমি হিমসের শাসনকর্তা সাফওয়ান ইবনে আমরের সাথে জারাজিমা অভিমুখে জিহাদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। আমি দামেস্কের একজন অতি বয়স্ক বুযুর্গকে দেখলাম যিনি আক্রমণকারীদের সাথে নিজের উটের উপর সাওয়ার হয়ে আসছেন। তার জ্বগুলো চোখের উপর পড়ে রয়েছে। তিনি অত্যন্ত বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। আমি তার নিকটে গিয়ে বললাম, চাচাজান! আল্লাহ তা’আলার কাছে তো আপনার ওযর করার অবকাশ রয়েছে। একথা শুনে তিনি চোখের উপর থেকে জ্বগুলো সরালেন এবং বললেনঃ “দেখো, আল্লাহ তা’আলা হালকা ও ভারী উভয় অবস্থাতেই আমাদেরকে জিহাদে বের হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। জেনে রেখো, আল্লাহ তা’আলা যাকে ভালবাসেন তাকে তিনি পরীক্ষাও করে থাকেন। অতঃপর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তিনি তার উপর রহমত বর্ষণ করেন। দেখো, আল্লাহর পরীক্ষা শো, সবর, তাঁর যিক্র এবং খাটি তাওহীদের মাধ্যমেই হয়ে থাকে।”
জিহাদের হুকুম দেয়ার পর আল্লাহ তা’আলা তাঁর পথে ও রাসূল (সঃ)-এর সন্তুষ্টির কাজে মাল ও জান খরচ করার নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি বলছেন যে, এতেই দুনিয়া ও আখিরাতের মঙ্গল রয়েছে। পার্থিব মঙ্গল ও লাভ এই যে, সামান্য কিছু খরচ করে বহু গনীমতের মাল লাভ করা যাবে। আর আখিরাতের লাভ এই যে, এর চেয়ে বড় পুণ্য আর নেই। যেমন আল্লাহর নবী (সঃ) বলেনঃ “আল্লাহ তা’আলা তাঁর পথে জিহাদকারীর জন্যে এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন যে, হয় তাকে শহীদ করে তিনি তাকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করাবেন, না হয় গনীমতসহ নিরাপদে বাড়ীতে ফিরিয়ে আনবেন।” এই জন্যেই আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে এমতাবস্থায় যে, ওটা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়, আর তোমরা কোন কিছু হয়তো অপছন্দ করে থাকো অথচ ওটাই তোমাদের জন্যে কল্যাণকর। পক্ষান্তরে তোমরা হয়তো কোন জিনিস পছন্দ করে থাকো অথচ ওটাই তোমাদের জন্যে ক্ষতিকর, আর (কোটা তোমাদের জন্যে ভাল এবং কোন্টা খারাপ তা) আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।” আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একটি লোককে বলেনঃ “তুমি ইসলাম গ্রহণ কর।” লোকটি বললোঃ “আমার মন যে চায় না।” তখন তিনি তাকে বললেনঃ “মন না চাইলেও তুমি ইসলাম কবূল কর।”
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] এর নানা অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন, একাকী হও কিম্বা দলবদ্ধভাবে, খুশী হয়ে অথবা অখুশী হয়ে, গরীব হও অথবা আমীর, যুবক হও অথবা বৃদ্ধ, পায়ে হেঁটে হোক অথবা সওয়ার হয়ে, সন্তানবান হও অথবা সন্তানহীন, সৈন্যদলের অগ্রে থাকো অথবা পিছনে। ইমাম শওকানী (রঃ) বলেন, আয়াতটি এই সমস্ত অর্থের জন্য ব্যাপক হতে পারে। যেহেতু আয়াতের অর্থ এই যে, “তোমরা জিহাদে বের হও; চাহে তা তোমাদের জন্য ভারী মনে হোক অথবা হালকা।” আর এই অর্থে উল্লিখিত সমস্ত অর্থ এসে যায়।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
[১] এ আয়াতে তাগিদদানের উদ্দেশ্যে পুনরোল্লেখ করা হয়েছে যে, জিহাদে বের হবার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তোমাদের আদেশ করেন, তখন সর্বাবস্থায় তা তোমাদের জন্য ফরয হয়ে গেল। আর এ আদেশ পালনের জন্য জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করা তোমাদের জন্য বসে থাকা থেকে উত্তম। কেননা এ জিহাদেই রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর এর মাধ্যমেই আল্লাহর কাছে উচু মর্যাদা পেতে পারে। আল্লাহর দ্বীনকে সাহায্য করতে পারে। এভাবেই একজন আল্লাহর সৈন্যদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে [সা’দী] তাদের এ কল্যাণ দুনিয়া ও আখেরাত ব্যাপী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদে বের হবে, সে যদি কেবলমাত্র আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ এবং আল্লাহর বাণীতে ঈমানের কারণেই বের হয়ে থাকে, তবে আল্লাহ্ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর জিম্মাদারী নিলেন অথবা সে যে গনীমতের মাল গ্রহণ করেছে তা সহ তাকে তার পরিবারের কাছে ফেরৎ পাঠাবেন। [বুখারী: ৭৪৫৭]
তফসীরে তফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
কোন কোন মুনাফিক বানোয়াট ওযর পেশ করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যুদ্ধে যাওয়া থেকে অব্যাহতি চেয়েছিল। তিনিও নিজের স্বভাবগত কোমলতা ও উদারতার ভিত্তিতে তারা যে নিছক ভাওতাবাজী করেছে, তা জানা সত্ত্বেও তাদের অব্যাহতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আল্লাহ এটা পছন্দ করেননি। এ ধরনের উদার নীতি সঙ্গত নয় বলে তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছেন। অব্যাহতি দেবার কারণে এ মুনাফিকরা নিজেদের মুনাফিকী ও প্রতারণামূলক কার্যকলাপ গোপন করার সুযোগ পেয়ে গেলো। যদি তাদের অব্যাহতি না দেয়া হতো এবং তারপর তারা ঘরে বসে থাকতো তাহলে তখন তাদের মিথ্যা ঈমানের দাবী সর্বসম্মুখে প্রকাশ হয়ে পড়তো।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 41
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً
March forth, whether you are light or heavy,
Jihad is required in all Conditions
Allah says;
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً
March forth, whether you are light or heavy,
Sufyan Ath-Thawri narrated from his father from Abu Ad-Duha, Muslim bin Subayh, who said,
“This Ayah,
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً
(March forth, whether you are light or heavy), was the first part to be revealed from Surah Bara’ah.”
Mutamir bin Sulayman narrated that his father said,
“Hadrami claimed that he was told that some people used to declare that they will not gain sin (if they lag behind the forces of Jihad) because they are ill or old. This Ayah was revealed,
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً
(March forth, whether you are light or heavy).”
Allah commanded mass mobilization together with the Messenger of Allah for the battle of Tabuk, to fight the disbelieving, People of the Book, the Romans, Allah’s enemies. Allah ordained that the believers all march forth with the Messenger regardless whether they felt active, lazy, at ease or had difficult circumstances,
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً
(March forth, whether you are light or heavy).
Ali bin Zayd narrated that Anas said that Abu Talhah commented (on this Ayah),
“Whether you are old or young, Allah did not leave an excuse for anyone.”
Abu Talhah marched to Ash-Sham and fought until he was killed.
In another narration, Abu Talhah recited Surah Bara’ah until he reached this Ayah,
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً وَجَاهِدُواْ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ
March forth, whether you are light or heavy, and strive hard with your wealth and your lives in the cause of Allah.
He then said, “I see that Allah had called us to mobilize whether we are old or young. O my children! Prepare my supplies.”
His children said, `May Allah grant you His mercy! You conducted Jihad along with the Messenger of Allah until he died, then with Abu Bakr until he died, then with Umar until he died. Let us perform Jihad in your place.”
Abu Talhah refused and he went to the sea (under the command of Muawiyah) where he died. They could not find an island to bury him on until nine days later, during which his body did not deteriorate or change and they buried him on the island.
As-Suddi said,
”
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً
(March forth, whether you are light or heavy), whether you are rich, poor, strong, or weak.
A man came forward, and he was fat, complained, and asked for permission to stay behind (from Jihad), but the Prophet refused. Then this Ayah,
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً
(March forth, whether you are light or heavy) was revealed, and it became hard on the people. So Allah abrogated it with this Ayah,
لَّيْسَ عَلَى الضُّعَفَاء وَلَا عَلَى الْمَرْضَى وَلَا عَلَى الَّذِينَ لَا يَجِدُونَ مَا يُنفِقُونَ حَرَجٌ إِذَا نَصَحُواْ لِلّهِ وَرَسُولِهِ
There is no blame on those who are weak or ill or who find no resources to spend, if they are sincere and true (in duty) to Allah and His Messenger…” (9:91)
Ibn Jarir said that Hibban bin Zayd Ash-Sharabi narrated to him,
“We mobilized our forces with Safwan bin Amr, who was the governor of Hims towards the city of Ephsos appointed to the Jerajima Christian expatriates (in Syria). I saw among the army an old, yet active man, whose eyebrows had sunk over his eyes (from old age), from the residents of Damascus, riding on his animal. I said to him, `O uncle! Allah has given you an excuse (to lag behind).’
He said, `O my nephew! Allah has mobilized us whether we are light or heavy.
Verily, those whom Allah loves, He tests them. Then to Allah is their return and eternal dwelling. Allah tests from His servants whoever thanks (Him) and observes patience and remembrance of Him, all the while worshipping Allah, the Exalted and Most Honored, and worshipping none else.”‘
Next, Allah encourages spending in His cause and striving with one’s life in His pleasure and the pleasure of His Messenger,
وَجَاهِدُواْ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
and strive hard with your wealth and your lives in the cause of Allah. This is better for you, if you but knew.
Allah says, this is better for you in this life and the Hereafter. You might spend small amounts, but Allah will reward you the property of your enemy in this life, as well as, the honor that He will keep for you in the Hereafter.
The Prophet said,
تَكَفَّلَ اللهُ لِلْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِهِ إِنْ تَوَفَّاهُ أَنْ يُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ أَوْ يَرُدَّهُ إِلَى مَنْزِلِهِ بِمَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ أَوْ غَنِيمَة
Allah promised the Mujahid in His cause that if He brings death to him, He will enter him into Paradise. Or, He will return him to his house with whatever reward and war spoils he earns.
So Allah said;
كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْيًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تُحِبُّواْ شَيْيًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
Jihad is ordained for you (Muslims) though you dislike it, and it may be that you dislike a thing which is good for you and that you like a thing which is bad for you. Allah knows but you do not know. (2:216)
Imam Ahmad recorded that Anas said that the Messenger of Allah said to a man,
أَسْلِم
Embrace Islam,
but the man said, “I dislike doing so.”
The Messenger said,
أَسْلِمْ وَإِنْ كُنْتَ كَارِهًا
Embrace Islam even if you dislike it.