أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
(Book# 614)
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
৪৪-৪৫ নং আয়াত:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 44-45
لَا یَسۡتَاۡذِنُکَ الَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ اَنۡ یُّجَاہِدُوۡا بِاَمۡوَالِہِمۡ وَ اَنۡفُسِہِمۡ ؕ
যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে তারা নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা জিহাদে যেতে আপনার কাছে অব্যাহতি প্রার্থনা করে না।
Those who believe in Allah and the Last Day would not ask permission of you to be excused from striving with their wealth and their lives.
لَا یَسۡتَاۡذِنُکَ الَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ اَنۡ یُّجَاہِدُوۡا بِاَمۡوَالِہِمۡ وَ اَنۡفُسِہِمۡ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِالۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۴۴﴾
যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে তারা নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা জিহাদে যেতে আপনার কাছে অব্যাহতি প্রার্থনা করে না। আর আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত।
Those who believe in Allah and the Last Day would not ask permission of you to be excused from striving with their wealth and their lives. And Allah is Knowing of those who fear Him.
اِنَّمَا یَسۡتَاۡذِنُکَ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ ارۡتَابَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ فَہُمۡ فِیۡ رَیۡبِہِمۡ یَتَرَدَّدُوۡنَ ﴿۴۵﴾
আপনার কাছে অব্যাহতি প্রার্থনা করে শুধু তারাই যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে না। আর তাদের অন্তরসমূহ সংশয়গ্রস্ত হয়ে গেছে, সুতরাং তারা আপন সংশয়ে দ্বিধাগ্রস্ত।
Only those would ask permission of you who do not believe in Allah and the Last Day and whose hearts have doubted, and they, in their doubt, are hesitating.
৪৪-৪৫ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আউন (রাঃ) স্বীয় সাথীদেরকে জিজ্ঞেস করেন, আপনারা কি এর চেয়ে উত্তম তিরস্কারের কথা শুনেছেন? মহান আল্লাহ স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে তিরস্কারপূর্ণ কথা বলার পূর্বেই তাকে ক্ষমা করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেনঃ “(হে নবী!) আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বটে, কিন্তু কেন তুমি তাদেরকে যুদ্ধ হতে অব্যাহতির অনুমতি দিয়েছো?” (ইবনে জারীর (রঃ) তাখরীজ করেছেন যে, পূর্বে কোন নির্দেশ ছাড়াই নবী দু’টি কাজ করেছেন। একটি হলো মুনাফিকদের যুদ্ধ হতে অব্যাহতির অনুমতি দান এবং দ্বিতীয় হলো বদরের বন্দীদের নিকট থেকে ফিদিয়া গ্রহণ । তখন আল্লাহ তা’আলা ঐ আয়াত অবতীর্ণ করেন) এরপর তিনি সূরায়ে নূরে আয়াত অবতীর্ণ করে তাঁর রাসূল (সঃ)-কে অবকাশ দেন যে, তিনি ইচ্ছা করলে তাদেরকে অনুমতি দিতে পারেন। তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ তাদের কেউ যদি কোন কাজ ও ব্যস্ততার কারণে তোমার কাছে। যুদ্ধের অব্যাহতির অনুমতি প্রার্থনা করে তবে তুমি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুমতি দিতে পার।” (২৪:৬২)
মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, সূরায়ে তাওবার এ আয়াতটি ঐ লোকদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয় যারা পরস্পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, তারা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে যুদ্ধ হতে অব্যাহতির অনুমতি প্রার্থনা করবে। যদি অনুমতি মিলে যায় তবে তো ভাল কথা। আর যদি তিনি অনুমতি নাও দেন তবুও তারা যুদ্ধে গমন করবে না। এ জন্যেই আল্লাহ তা’আলা বলেন যে, যদি তারা অনুমতি লাভ না করতো তবে এটুকু লাভ তো অবশ্যই হতো যে, সত্য ওষরকারী ও মিথ্যা।
বাহানাকারীদের মধ্যে পার্থক্য প্রকাশ পেয়ে যেতো। ভাল ও মন্দ এবং সৎ ও অসতের মধ্যে প্রভেদ সৃষ্টি হতো। অনুগত লোকেরা তো হাযির হয়েই যেতো। আর অবাধ্য লোকেরা যুদ্ধ হতে অব্যাহতি লাভের অনুমতি না পেয়েও বের হতো না। কেননা, তারা তো এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েই ছিল যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদেরকে অনুমতি দিন আর নাই দিন, তারা যুদ্ধে গমন করবেই না। এ জন্যেই আল্লাহ তাআলা পরবর্তী আয়াতে ঘোষণা করেন- এটা সম্ভব নয় যে, খাঁটি ঈমানদার লোকেরা তোমার কাছে যুদ্ধ হতে অব্যাহতি লাভের অনুমতি প্রার্থনা করবে। তারা তো জিহাদকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় মনে করে নিজেদের জান ও মালকে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করতে সর্বদা আকাক্ষী। আল্লাহ তাআলা এই পরহেযগার লোকদেরকে ভালরূপেই অবগত আছেন। আর এ লোকগুলো, যাদের শরীয়ত সম্মত কোনই ওর নেই, যারা শুধু বাহানা করে যুদ্ধ হতে অব্যাহতি লাভের অনুমতি প্রার্থনা করছে তারা বেঈমান লোক। তারা আখিরাতের পুরস্কারের কোন আশা রাখে না। হে নবী! তারা এখনও তোমার শরীয়তের ব্যাপারে সন্দিহান রয়েছে এবং তারা সদা উদ্বিগ্ন হয়ে ফিরছে। তারা এক পা সামনের দিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে তো আর এক পা পিছনের দিকে সরাচ্ছে। তাদের কোন ধৈর্য ও মনের স্থিরতা নেই। তারা না আছে এদিকে, না আছে। ওদিকে। হে নবী! আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি কখনো তার জন্যে কোন পথ পাবে না।
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
৪৪-৪৫ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াত দুটিতে আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃত মু’মিন ও মুনাফিকদের পরিচয়ের একটি অন্যতম চিহ্ন উল্লেখ করেছেন। যারা প্রকৃত মু’মিন তারা কখনো জিহাদে না যাওয়ার অনুমতি চাইবে না কেবল যারা মুনাফিক তারাই জিহাদে না যাওয়ার জন্য নানা টালবাহানা করবে।
উল্লেখ্য যে, তাবুকের যুদ্ধে অংশগ্রহণের ব্যাপারে মুসলিমরা চার দলে বিভক্ত হয়েছিল। প্রথম দল: যারা নির্দ্বিধায় জিহাদের জন্য প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় দল: যাদের প্রথমে দ্বিধা ছিল এবং তাদের মনে কষ্ট ছিল। কিন্তু সত্বর সে দ্বিধা কাটিয়ে উঠতে পেরেছিল। তৃতীয় দল: যারা শারীরিক দুর্বলতা ও অসুস্থতার কারণে অথবা সাওয়ারী ও সফরের খরচ না থাকার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এদেরকে আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং অনুমতি দিয়েছিলেন। (এ ব্যাপারে ৯১-৯২ নং আয়াতে আসবে)। চতুর্থ দল: যারা কেবল অলসতার কারণে জিহাদে শরীক হয়নি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জিহাদ থেকে ফিরে আসলে তারা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করে তাওবাহ করে। এছাড়া বাকি যারা ছিল সব মুনাফিকের দল। এ আয়াতে প্রথম দল ও মুনাফিকদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বাকি তিন দলের আলোচনা সামনে আসবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. যারা ঈমান ও তাক্বওয়ার অধিকারী তারা কখনো জান ও মালের ভয়ে জিহাদ থেকে বিরত থাকবে না।
২. আক্বীদাহর ক্ষেত্রে সন্দেহের ভয়াবহতা এবং তা দীনের ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতার টালমাটালের একমাত্র কারণ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
এখানে খাঁটি মু’মিনদের আচরণ বর্ণনা করা হয়েছে। বরং তাদের অভ্যাসই তো এই যে, তারা বড়ই উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে অগ্রণী হয়ে জিহাদে অংশগ্রহণ করে থাকে।
এখানে সেই মুনাফিক্বদের কথা বর্ণনা হচ্ছে, যারা ছোট্ট ধরনের বাহানা বের করে রসূলের সাথে জিহাদে না যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিল। তাদের ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, তারা আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে না। আর তার অর্থ এই যে, সেই ঈমানহীনতাই তাদেরদেরকে জিহাদে না যেতে বাধ্য করেছিল। পক্ষান্তরে যদি ঈমান তাদের অন্তরে সুদৃঢ় হত, তাহলে তারা না জিহাদ থেকে গা বাঁচাতো, আর না-ই তাদের মনে কোন প্রকার সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি হতো।
জেনে রাখা দরকার যে, উক্ত জিহাদে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে মুসলিমরা চার দলে বিভক্ত ছিলেন। প্রথম দল হল তাঁরা, যাঁরা নির্দ্বিধায় প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় দল তাঁরা, যাঁদের প্রথম প্রথম দ্বিধা ছিল এবং তাঁদের মন ভ্রষ্ট ছিল। কিন্তু সত্বর তাঁরা সে দ্বিধাকে কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন। তৃতীয় দল তাঁরা, যাঁদের শারীরিক দুর্বলতা ও অসুস্থতার কারণে অথবা সওয়ারী ও সফরের খরচ না থাকার কারণে সত্যসত্যই ওজর ছিল। যাঁদেরকে স্বয়ং আল্লাহ অনুমতি দান করেছিলেন। (এ ব্যাপারে বর্ণনা ৯১-৯২নং আয়াতে এসেছে।) চতুর্থ দল তাঁরা, যাঁরা কেবল অলসতার কারণে শরীক হননি এবং যখন নবী (সাঃ) ফিরে এলেন তখন তাঁরা নিজেদের ত্রুটি ও গোনাহর কথা স্বীকার করে নিজেদেরকে তওবা ও শাস্তির জন্য পেশ করে দিলেন। এ ছাড়া বাকী লোকেরা মুনাফিক্বদল ও তাদের গুপ্তচর ছিল। এখানে মুসলিমদের প্রথম দল এবং মুনাফিক্বদের কথা উল্লেখ হয়েছে। বাকী তিন দল মুসলিমদের বর্ণনা পরবর্তীতে আসবে।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
এ থেকে জানা যায়, ইসলাম ও কুফরীর দ্বন্দ্ব একটি মাপকাঠি স্বরূপ। এর মাধ্যমে খাঁটি মুমিন ও নকল ঈমানের দাবীদারের পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে উঠে। এ দ্বন্দ্ব ও সংঘাতে যে ব্যক্তি মনপ্রাণ দিয়ে ইসলামকে সমর্থন করে এবং নিজের সমস্ত শক্তি সামর্থ্য ও উপায় উপকরণ তাকে বিজয়ী করার সংগ্রামে নিয়োজিত করে এবং এ পথে কোন প্রকার ত্যাগ স্বীকারে কুণ্ঠিত হয় না, সে-ই সাচ্চা মুমিন। পক্ষান্তরে এ দ্বন্দ্ব ও সংঘাতে যে ব্যক্তি ইসলামের সাথে সহযোগিতা করতে ইতস্তত করে এবং কুফরের শির উঁচু হবার বিপদ সামনে দেখেও ইসলামের বিজয়ের জন্য জান-মালের কুরবানী করতে কুণ্ঠিত হয়, তার এ মনোভাব ও কার্যকলাপ এ সত্যটিকে সুস্পষ্ট করে দেয় যে, তার অন্তরে ঈমান নেই।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 44-45
لَا یَسۡتَاۡذِنُکَ الَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ اَنۡ یُّجَاہِدُوۡا بِاَمۡوَالِہِمۡ وَ اَنۡفُسِہِمۡ ؕ
Those who believe in Allah and the Last Day would not ask permission of you to be excused from striving with their wealth and their lives.
لَا يَسْتَأْذِنُكَ
would not ask your leave,
to stay behind from Jihad,
الَّذِينَ يُوْمِنُونَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الاخِرِ أَن يُجَاهِدُواْ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ
Those who believe in Allah and the Last Day, to be exempted from fighting with their properties and their lives.
because they consider Jihad an act of worship. This is why when Allah called them to perform Jihad, they obeyed and hasten to act in His obedience,
وَاللّهُ عَلِيمٌ بِالْمُتَّقِينَ
إِنَّمَا يَسْتَأْذِنُكَ
and Allah is the All-Knower of those who have Taqwa.
Those who ask your leave,
to remain behind, without a valid excuse,
الَّذِينَ لَا يُوْمِنُونَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الاخِرِ
those who believe not in Allah and the Last Day,
they do not hope for Allah’s reward in the Hereafter for their good actions,
وَارْتَابَتْ قُلُوبُهُمْ
and whose hearts are in doubt,
about the validity of what you brought them,
فَهُمْ فِي رَيْبِهِمْ يَتَرَدَّدُونَ
so in their doubts they waver.
They waver in doubt, taking one step forward and one step back. They do not have a firm stance in anything, for they are unsure and destroyed, neither belonging to these nor to those.
Verily, those whom Allah misguides, will never find a way for themselves to guidance.