أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
(Book# 616)
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
৪৯ নং আয়াত:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 49
أَلَا فِي الْفِتْنَةِ سَقَطُواْ
সাবধান! তারাই ফিৎনাতে পড়ে আছে,
Surely, they have fallen into trial,
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّقُوۡلُ ائۡذَنۡ لِّیۡ وَ لَا تَفۡتِنِّیۡ ؕ اَلَا فِی الۡفِتۡنَۃِ سَقَطُوۡا ؕ وَ اِنَّ جَہَنَّمَ لَمُحِیۡطَۃٌۢ بِالۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۴۹﴾
আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ এমন আছে, যে বলে, ‘আমাকে (যুদ্ধে না যাওয়ার) অনুমতি দাও এবং আমাকে ফিতনায় ফেলো না।’ সাবধান! তারা তো ফিতনায় পড়েই গেছে। আর নিশ্চয়ই জাহান্নাম অবিশ্বাসীদেরকে বেষ্টন করবে।
And among them is he who says, “Permit me [to remain at home] and do not put me to trial.” Unquestionably, into trial they have fallen. And indeed, Hell will encompass the disbelievers.
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
আল্লাহ তা’আলা বলেন, মুনাফিকদের মধ্যে এমন লোকও আছে, যে বলেহে মুহাম্মাদ (সঃ)! আমাকে (বাড়ীতেই) বসে থাকার অনুমতি দিন এবং আপনার সাথে যুদ্ধে গমনের নির্দেশ দিয়ে আমাকে বিপদে ফেলবেন না। কেননা, রোমক যুবতী নারীদের প্রেমে হয়তো আমি পড়ে যাব। আল্লাহ তাআলা বলেন যে, এ কথা বলার কারণে তারা তো বিপদে পড়েই গেছে। যেমন একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) যুদ্ধে গমনের প্রস্তুতি গ্রহণের অবস্থায় জাদ ইবনে কায়েসকে বলেনঃ “তুমি এ বছর কি বানী-আসফারকে দেশান্তর করার কাজে আমাদের সঙ্গী হবে?” সে উত্তরে বলেঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমাকে যুদ্ধে গমন না করার অনুমতি দিন এবং আমাকে বিপদে ফেলবেন না। আল্লাহর কসম! আমার কওম জানে যে, আমার চেয়ে স্ত্রীলোকদের প্রতি বেশী আকৃষ্ট আর কেউ নেই। আমি আশংকা করছি যে, আমি যদি বানী অসিফারের নারীদের দেখতে পাই তবে ধৈর্যধারণ করতে পারবো না।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন এবং বলেনঃ “আমি তোমাকে অনুমতি দিলাম।” এই জাদ ইবনে কায়েসের সম্পর্কেই এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (এ হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (রঃ) যুহরী (রঃ) হতে তাখরীজ করেছেন এবং এটা ইবনে আব্বাস (রাঃ), মুজাহিদ (রঃ) প্রমুখ একাধিক বর্ণনাকারী হতে বর্ণিত হয়েছে। আর জাদ ইবনে কায়েস ছিল বানু সালামা গোত্রের সম্ভ্রান্ত ও নেতৃস্থানীয় লোক) এ আয়াতে বলা হয়েছে- এই মুনাফিক এই বাহানা বানিয়ে নিয়েছে, অথচ সে তো ফিত্নার মধ্যে পড়েই রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সঙ্গ ছেড়ে দেয়া এবং জেহাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া কি কম ফিত্না? এই মুনাফিক বানু সালামা গোত্রের বড় নেতা ছিল। যখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) এই গোত্রের লোকদেরকে জিজ্ঞেস করেনঃ “তোমাদের নেতা কে?” তারা তখন উত্তরে বলেঃ “আমাদের নেতা হচ্ছে জাদ ইবনে কায়েস, সে বড়ই কৃপণ।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন বলেনঃ “কৃপণতা অপেক্ষা জঘন্য রোগ আর কি আছে? জেনে রেখো যে, তোমাদের নেতা হচ্ছে সাদা দেহ ও সুন্দর চুল বিশিষ্ট নব যুবক বিশর ইবনে বারা ইবনে মা’রূর।”
নিশ্চয়ই জাহান্নাম কাফিরদেরকে পরিবেষ্টনকারী। তারা জাহান্নাম থেকে রক্ষাও পাবে না, পালাতেও পারবে না এবং মুক্তি পাবে না।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
যেসব মুনাফিক মিথ্যা বানিয়ে পিছনে থেকে যাবার অনুমতি চাচ্ছিল, তাদের মধ্যে কেউ কেউ এতই বেপরোয়া ছিল যে, আল্লাহর পথ থেকে পেছনে সরে যাবার জন্য ধর্মীয় ও নৈতিক ধরনের বাহানাবাজীর আশ্রয় নিতো। জাদ্দ ইবনে কায়েস নামক তাদের একজনের সম্পর্কে হাদীসে বলা হয়েছেঃ সে নবী (সা.) এর খেদমতে হাযির হয়ে আরয করলো, আমি একজন সৌন্দর্য পিপাসু লোক আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা আমার এ দুর্বলতা জানে যে, মেয়েদের ব্যাপারে আমি সবর করতে পারি না। আমার ভয় হয়, রোমান মেয়েদের দেখে আমার পদস্খলন না হয়ে যায়। কাজেই আপনি আমাকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেবেন না এবং এ অক্ষমতার কারণে আমাকে এ জিহাদে অংশগ্রহণ করা থেকে রেহাই দিন।
* তারা তো ফিতনা বা পাপের ঝুঁকি থেকে রেহাই পাওয়ার দুহাই দিচ্ছে কিন্তু আসলে তারা আকণ্ঠ ডুবে আছে মুনাফিকী, মিথ্যাচার ও রিয়াকারীর মত জঘন্য পাপের মধ্যে। নিজেদের ধারণা মতে তারা মনে করেছে, ছোট ছোট ফিতনার সম্ভাবনার ব্যাপারে ভয় ও পেরেশানি প্রকাশ করে তারা নিজেদের বড় ধরনের মুত্তাকী হবার প্রমাণ পেশ করে যাচ্ছে। অথচ কুফর ও ইসলামের চূড়ান্ত ও সিদ্ধান্তকর সংঘর্ষকালে ইসলামের পক্ষ সমর্থনে ইতস্তত করে তারা আরো বড় পাপ এবং আরো বড় ফিতনার মধ্যে নিজেদের ফেলে দিচ্ছে যার চাইতে বড় কোন ফিতনার কথা কল্পনাই করা যায় না।
* তাকওয়ার এ প্রদর্শনী তাদের জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখেনি। বরং মুনাফিকী লানতই তাদেরকে জাহান্নামের করাল গ্রাসে নিক্ষেপ করেছে।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
[১] এ আয়াতে জদ বিন কায়স নামক জনৈক বিশিষ্ট মুনাফিকের এক বিশেষ বাহানার উল্লেখ করে তার গোমরাহীর বর্ণনা দেয়া হয়। সে জিহাদ থেকে অব্যাহতি লাভের জন্যে ওযর পেশ করে বলেছিল আমি এক পৌরুষদীপ্ত যুবক। রোমানদের সাথে যুদ্ধে লড়তে গিয়ে তাদের সুন্দরী যুবতীদের মোহগ্ৰস্ত হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। [সা’দী] আল্লাহ্ তা’আলা তার কথার উত্তরে বলেনঃ “ভাল করে শোন”, এই নির্বোধ এক সম্ভাব্য আশংকার বাহানা করে এক নিশ্চিত আশংকা অর্থাৎ রাসূলের অবাধ্যতা ও জিহাদ পরিত্যাগের অপরাধে এখনই দণ্ডযোগ্য হয়ে গেল। সে যদি মহিলাদের মোহে পড়ার ফিতনা থেকে বাঁচতে এ কথা বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে জিহাদে যাওয়া থেকে বিরত থাকে তবে জেনে নিক যে, সে আরও বড় ফিতনায় পড়েছে। আর সেটা হচ্ছে, দুনিয়াতে শির্ক ও কুফর, আর আখেরাতে তার শাস্তি। [ইবনুল কাইয়্যেম: ইগাসাতুল লাহফান ২/১৫৮-১৫৯]
[২] “আর নিঃসন্দেহে জাহান্নাম এই কাফেরদের পরিবেষ্টন করে আছে।” তা থেকে নিস্তার লাভের উপায় নেই। [ইবন কাসীর; সা’দী] পরিবেষ্টন করার অর্থ, যারাই আল্লাহর রাখবে, কিয়ামতের দিন তাদের সবাইকে একত্রিত করবে। [তাবারী]
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] ‘আমাকে ফিতনায় ফেলো না’ এর একটা অর্থ হল যে, যদি তুমি আমাকে অনুমতি না দাও, তাহলে বিনা অনুমতিতে থেকে গেলে আমার মহাপাপ হবে। এই হিসাবে ফিতনার অর্থে হবে পাপ। অর্থাৎ, ‘আমাকে পাপে ফেলো না।’ ফিতনার দ্বিতীয় অর্থ ধ্বংস। অর্থাৎ, আমাকে সাথে নিয়ে গিয়ে ধ্বংসে পতিত করো না। কথিত আছে যে, জাদ্দ্ বিন কাইস আরয করল যে, ‘(হে মুহাম্মাদ!) তুমি আমাকে সাথে নিয়ে গিয়ে ফিতনায় ফেলো না। কারণ রোমান মহিলাদেরকে দেখে আমি ধৈর্য ধারণ করতে পারব না।’ তার কথা শুনে নবী (সাঃ) মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং তাকে না যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দিলেন। পরক্ষণে এই আয়াত অবতীর্ণ হল। আল্লাহ তাআলা বললেন, “তারা তো ফিতনায় পড়েই রয়েছে।” অর্থাৎ, জিহাদ থেকে দূরে সরে থাকা এবং তা বর্জন করা তো স্বস্থানে একটা বড় ফিতনা ও মহাপাপ; যাতে তারা আলিপ্ত আছে। আর মরণের পর জাহান্নাম তাদেরকে বেষ্টন করবে; যেখান হতে পালিয়ে যাওয়ার কোন পথ পাবে না।
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
এখানে পূর্ববর্তী আয়াতে বর্ণিত মুনাফিকদের কথাই বলা হচ্ছে। তারা বলত: হে মুহাম্মাদ (সাঃ) আমাকে জিহাদে না যাওয়ার অনুমতি দেন, অনুমতি না দিয়ে আমাকে ফেতনায় ফেলবেন না।
যদি মু’মিনগণ কোন حسنة অর্থাৎ গনীমত বা বিজয় লাভ করত তাহলে তাদের খুব কষ্ট লাগত। আর মু’মিনরা পরাজিত হলে তারা বলত, আমরা পূর্বেই সতর্কতা অবলম্বন করেছিলাম।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 49
أَلَا فِي الْفِتْنَةِ سَقَطُواْ
Surely, they have fallen into trial,
Allah tells,
وَمِنْهُم مَّن يَقُولُ
And among them is he who says:
Allah says, some hypocrites say to you, O Muhammad,
ايْذَن لِّي
Grant me leave, (to stay behind),
وَلَا تَفْتِنِّي
and put me not into trial,
if I go with you and see the women of the Romans.
Allah, the Exalted, replied,
أَلَا فِي الْفِتْنَةِ سَقَطُواْ
Surely, they have fallen into trial,
because of the statement they uttered.
Muhammad bin Ishaq reported from Az-Zuhri, Yazid bin Ruwman, Abdullah bin Abi Bakr, Asim bin Qatadah and several others that they said,
“The Messenger of Allah said to Al-Jadd bin Qays from Bani Salimah,
هَلْ لَكَ يَا جَدُّ الْعَامَ فِي جَلَدِ بَنِي الاَْصْفَرِ
`Would you like to fight the yellow ones (Romans) this year?
He said, `O Allah’s Messenger! Give me permission (to remain behind) and do not cause Fitnah for me. By Allah! My people know that there is not a man who is more fond of women than I. I fear that if I see the women of the yellow ones, I would not be patient.’
The Messenger of Allah turned away from him and said,
قَدْ أَذِنْتُ لَك
I give you permission.
In Al-Jadd’s case, this Ayah was revealed,
وَمِنْهُم مَّن يَقُولُ ايْذَن لِّي
وَلَا تَفْتِنِّي
(And among them is he who says:”Grant me leave and put me not into trial).”
Therefore, Allah says that the Fitnah that he fell into because of not joining the Messenger of Allah (in Jihad) and preferring his safety to the safety of the Messenger is worse than the Fitnah that he falsely claimed to fear.”
It was reported from Ibn Abbas, Mujahid and several others that;
this Ayah was revealed in the case of Al-Jadd bin Qays, who was among the chiefs of Bani Salimah.
It is also recorded in the Sahih that the Messenger of Allah asked,
مَنْ سَيِّدُكُمْ يَا بَنِي سَلَمَةَ
Who is your chief, O Bani Salamah?
They said, “Al-Jadd bin Qays, although we consider him a miser.”
The Messenger of Allah said,
وَأَيُّ دَاءٍ أَدْوَأُ مِنَ الْبُخْلِ وَلَكِنْ سَيِّدُكُمْ الْفَتَى الْجَعْدُ الاْأَبْيَضُ بِشْرُ بْنُ الْبَرَاءِ بْنِ مَعْرُور
There is not a disease worse than stinginess! Therefore, your chief is the white young man with curly hair, Bishr bin Al-Bara’ bin Ma’rur.
Allah said next,
وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِيطَةٌ بِالْكَافِرِينَ
And verily, Hell is surrounding the disbelievers.
and they will never be able to avoid, avert, or escape from it.