(Book# 618) [মুনাফিক কি? ৭ নং বই]

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

(Book# 618) [মুনাফিক কি? ৭ নং বই]
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
৫৬-৫৯ নং আয়াত:-
وَيَحْلِفُونَ بِاللّهِ إِنَّهُمْ لَمِنكُمْ
আর তারা আল্লাহ্‌র নামে শপথ করে যে, তারা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত,
They swear by Allah that they are truly of you,
وَ یَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰہِ اِنَّہُمۡ لَمِنۡکُمۡ ؕ وَ مَا ہُمۡ مِّنۡکُمۡ وَ لٰکِنَّہُمۡ قَوۡمٌ یَّفۡرَقُوۡنَ ﴿۵۶﴾
আর তারা আল্লাহ্‌র নামে শপথ করে যে, তারা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত, অথচ তারা তোমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়, বস্তুত তারা এমন এক সম্প্রদায়ের যারা ভয় করে থাকে।
And they swear by Allah that they are from among you while they are not from among you; but they are a people who are afraid.

لَوۡ یَجِدُوۡنَ مَلۡجَاً اَوۡ مَغٰرٰتٍ اَوۡ مُدَّخَلًا لَّوَلَّوۡا اِلَیۡہِ وَ ہُمۡ یَجۡمَحُوۡنَ ﴿۵۷﴾
তারা কোন আশ্রয়স্থল, কোন গিরিগুহা অথবা লুকিয়ে থাকার কোন প্রবেশস্থল পেলে সেদিকেই পালিয়ে যাবে দ্রুততার সাথে।
If they could find a refuge or some caves or any place to enter [and hide], they would turn to it while they run heedlessly.

وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّلۡمِزُکَ فِی الصَّدَقٰتِ ۚ فَاِنۡ اُعۡطُوۡا مِنۡہَا رَضُوۡا وَ اِنۡ لَّمۡ یُعۡطَوۡا مِنۡہَاۤ اِذَا ہُمۡ یَسۡخَطُوۡنَ ﴿۵۸﴾
আর তাদের মধ্যে এমন লোক আছে, যে সদকা বন্টন সম্পর্কে আপনাকে দোষারোপ করে, তারপর এর কিছু তাদেরকে দেয়া হলে তারা সন্তুষ্ট হয়, আর এর কিছু তাদেরকে না দেয়া হলে সাথে সাথেই তারা বিক্ষুদ্ধ হয়।
And among them are some who criticize you concerning the [distribution of] charities. If they are given from them, they approve; but if they are not given from them, at once they become angry.

وَ لَوۡ اَنَّہُمۡ رَضُوۡا مَاۤ اٰتٰىہُمُ اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗ ۙ وَ قَالُوۡا حَسۡبُنَا اللّٰہُ سَیُؤۡتِیۡنَا اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖ وَ رَسُوۡلُہٗۤ ۙ اِنَّاۤ اِلَی اللّٰہِ رٰغِبُوۡنَ ﴿٪۵۹﴾
আর ভাল হত যদি আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূল তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট হত এবং বলত, ‘ আল্লাহ্‌ই আমাদের জন্য যথেষ্ট, অচিরেই আল্লাহ্‌ আমাদেরকে দেবেন নিজ করুণায় ও তাঁর রাসূলও; নিশ্চয় আমরা আল্লাহ্‌রই প্রতি অনুরক্ত।

If only they had been satisfied with what Allah and His Messenger gave them and said, “Sufficient for us is Allah ; Allah will give us of His bounty, and [so will] His Messenger; indeed, we are desirous toward Allah,” [it would have been better for them].

৫৬-৫৯ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

এ আয়াতগুলোতেও মুনাফিকদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তারা শপথ করে বলে যে, তারা মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তারা মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত নয়। যদি কোন আশ্রয়স্থল বা গিরিগুহা কিংবা লুকানোর জায়গা খুঁজে পায় তাহলে সেখানে পালাবে।

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের একটি বড় ত্র“টির বিবরণ দিচ্ছেন তা হল: তারা বলে গনীমতের মাল বণ্টনে নাবী (সাঃ) ইনসাফ করেন না।

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি কিছু গনীমতের মাল বণ্টন করছিলেন। তখন বানু তামীম গোত্রের জুলখোয়াইসিরাহ্ নামে এক ব্যক্তি এসে হাযির হল এবং বলল, হে আল্লাহর রসূল! আপনি ইন্সাফ করুন। তিনি বললেন, তোমার দুর্ভাগ্য! আমি যদি ইন্সাফ না করি, তবে ইন্সাফ করবে কে? আমি তো নিষ্ফল ও ক্ষতিগ্রস্ত হব যদি আমি ইন্সাফ না করি। ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে অনুমতি দিন আমি এর গর্দান উড়িয়ে দিই। তিনি বললেন, একে ছেড়ে দাও। তার এমন কিছু সঙ্গী সাথী রয়েছে তোমাদের কেউ তাদের সলাতের তুলনায় নিজের সলাত এবং সিয়াম নগণ্য বলে মনে করবে। এরা কুরআন পাঠ করে, কিন্তু কুরআন তাদের কন্ঠনালীর নীচে প্রবেশ করে না। তারা দ্বীন হতে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর ধনুক হতে বেরিয়ে যায়। তীরের অগ্রভাগের লোহা দেখা যাবে কিন্তু কোন চিহ্ন পাওয়া যাবে না। কাঠের অংশ দেখলে তাতেও কিছু পাওয়া যাবে না। মাঝের অংশ দেখলে তাতেও কিছু পাওয়া যাবে না। তার পালক দেখলে তাতেও কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না। অথচ তীরটি শিকারী জন্তুর নাড়িভুঁড়ি ভেদ করে রক্তমাংস পার হয়ে বেরিয়ে গেছে। এদের নিদর্শন হল এমন একটি কাল মানুষ যার একটি বাহু নারীর স্তনের মত অথবা মাংস খণ্ডের মত নড়াচড়া করবে। তারা লোকদের মধ্যে বিরোধকালে আত্মপ্রকাশ করবে।

আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি স্বয়ং আল্লাহর রসূল (সাঃ)-এর নিকট হতে এ কথা শুনেছি। আমি এ-ও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, ‘আলী ইব্নু আবূ তালিব (রাঃ) এদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। আমিও তার সঙ্গে ছিলাম। তখন ‘আলী (রাঃ) ঐ লোককে খুঁজে বের করতে আদেশ দিলেন। খোঁজ করে যখন আনা হল আমি মনোযোগের সঙ্গে তাকিয়ে তার মধ্যে ঐ সব চিহ্নগুলো দেখতে পেলাম, যা নাবী (সাঃ) বলেছিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৬১০)

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) যা প্রদান করেছেন তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা ঈমানের পরিচয়। যদি কেউ ইসলামের কোন বিষয় অস্বীকার করে বা অন্যায় বলে প্রশ্ন তুলে তাহলে সে মু’মিন হতে পারে না।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. মিথ্যা শপথ মুনাফিকদের আলামত।
২. কাপুরুষতা, দুর্বলতা ও শত্রুদের ভয় করা মুনাফিকদের আলামাত।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর বিচার ফাসয়ালা না মানা কুফরীর নামান্তার।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
এখানে আল্লাহ তা’আলা মুনাফিকদের অস্থিরতা, হতবুদ্ধিতা, উদ্বেগ, সন্ত্রাস ও ব্যাকুলতার সংবাদ দিচ্ছেন। তিনি বলছেন- হে মুসলিমরা! এই মুনাফিকরা তোমাদের কাছে এসে তোমাদের মন জয় করার উদ্দেশ্যে এবং তোমাদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে লম্বা চওড়া কসম করে করে বলেঃ “আল্লাহর শপথ! আমরা তোমাদের সাথেই রয়েছি, আমরা মুসলিম।” অথচ প্রকৃত ব্যাপার এর বিপরীত। এটা শুধু ভয় ও সন্ত্রাস, যা তাদের পেটে ব্যথা সৃষ্টি করছে। আজ যদি তারা নিজেদের রক্ষার জন্যে কোন দুর্গ পেয়ে যায় বা অন্য কোন সুরক্ষিত স্থান দেখতে পায় অথবা কোন সুড়ঙ্গের সংবাদ পায় তবে তারা সবাই উন্নতশিরে ঊর্ধ্বশ্বাসে ঐ দিকে ধাবিত হবে। তাদের একজনকেও তোমার কাছে দেখা যাবে না। কেননা, প্রকতপক্ষে তোমার সাথে তাদের কোন ভালবাসা ও বন্ধুতুই নেই। তারা তো শুধু ভয়ে বাধ্য হয়ে তোমাদেরকে তোষামোদ করতে আসছে। একমাত্র এই কারণেই যতোই ইসলামের উন্নতি হচ্ছে ততোই তারা মনঃক্ষুন্ন হচ্ছে। মুসলিমদের কল্যাণে ও খুশীতে তারা জ্বলে পুড়ে মরছে। তোমাদের উন্নতি এদের সহ্য হচ্ছে না। সুযোগ পেলেই তারা আশ্রয়স্থলের দিকে দৌড়িয়ে পালাবে।

কোন কোন মুনাফিক রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে এই অপবাদ দিতো যে, তিনি যাকাতের মালের সঠিক বণ্টন করেন না ইত্যাদি। আর এর দ্বারা তার থেকে কিছু লাভ করা ছাড়া তাদের আর কিছুই উদ্দেশ্য ছিল না। তার থেকে কিছু পেলে তো তারা খুবই সন্তুষ্ট হয়, আর না পেলে মনঃক্ষুন্ন হয়।

রাসূলুল্লাহ (সঃ) যাকাতের মাল যখন এদিক ওদিক বণ্টন করে দেন, তখন আনসারদের একজন উচ্চৈঃস্বরে বলেঃ “এটা ইনসাফ নয়।” তখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয়।

অন্য একটি রিওয়ায়াতে আছে যে, একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) সোনা রূপা বণ্টন করছিলেন। এমতাবস্থায় একজন গ্রাম্য নওমুসলিম তার কাছে এসে বলেঃ “হে মুহাম্মাদ (সঃ)! আল্লাহর কসম! আল্লাহ যদি আপনাকে ইনসাফের নির্দেশ দিয়ে থাকেন তবে কিন্তু আপনি ইনসাফ করছেন না। তখন নবী (সঃ) বলেনঃ “তুমি ধ্বংস হও। আমিই যদি ইনসাফকারী না হই তবে যমীনে ইনসাফকারী আর কে হবে?” অতঃপর তিনি বলেনঃ “তোমরা এই ব্যক্তি থেকে এবং এর সাথে সাদৃশ্যযুক্ত লোক থেকে বেঁচে থাকো। আমার উম্মতের মধ্যে এর মত লোক হবে। তারা কুরআন পাঠ করবে বটে, কিন্তু তা তাদের কণ্ঠ থেকে নীচে নামবে না। তারা যখন বের হবে তখন তাদেরকে হত্যা করে ফেলবে। আবার যখন বের হবে তখন তাদেরকে মেরে ফেলো। পুনরায় যখন প্রকাশ পাবে তখন তাদের গর্দান উড়িয়ে দেবে।” এরপর তিনি বলেনঃ “আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে কিছু প্রদানও করবো না এবং তোমাদেরকে তা থেকে বাধাও দিবো না, আমি তো একজন খাজাঞ্চী মাত্র।”

আবু সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন হুনায়েনের গনীমতের মাল বণ্টন করছিলেন তখন যুলখুওয়াইসিরা হারকুস নামক একটি লোক আপত্তি করে বলেঃ “ইনসাফ করুন, কেননা আপনি ইনসাফ করছেন না।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃ “তুমি ধ্বংস হও, যদি না আমি ইনসাফ করে থাকি।” অতঃপর তিনি তাকে চলে যেতে দেখে বললেনঃ “এর বংশ থেকে এমন এক কওম বের হবে যাদের সালাতের তুলনায় তোমাদের সালাত নগণ্য মনে হবে এবং যাদের রামাদানের তুলনায় তোমাদের রামাদান তুচ্ছ মনে হবে। কিন্তু তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমনভাবে তীর নিক্ষেপকারীর নিকট থেকে তীর বেরিয়ে যায়। তাদেরকে তোমরা যেখানেই পাবে হত্যা করবে। আকাশের নীচে তাদের অপেক্ষা নিকৃষ্টতম হত্যাযযাগ্য আর কেউ নেই।” পরে অবশিষ্ট হাদীস বর্ণনা করেন।

ইরশাদ হচ্ছে- তাদেরকে আল্লাহ স্বীয় রাসূল (সঃ)-এর মাধ্যমে যা কিছু দান করেছেন, ওর উপর যদি তারা তুষ্ট থাকতো এবং ধৈর্যধারণ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলতো- “আল্লাহই আমাদের জন্যে যথেষ্ট। তিনি স্বীয় অনুগ্রহে তাঁর রাসূল (সঃ)-এর মাধ্যমে আমাদেরকে আরো দান করবেন। আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা আমাদের প্রতিপালকের সত্তার সাথেই জড়িত।” তাহলে এটা তাদের পক্ষে খুবই উত্তম হতো। সুতরাং মহান আল্লাহ এখানে এই শিক্ষা দিলেন যে, তিনি যা কিছু দান করবেন তার উপর মানুষের সবর ও শশার করা উচিত। সকল কাজে তাঁরই উপর ভরসা করতে হবে এবং তাঁকেই যথেষ্ট মনে করতে হবে। আগ্রহ, মনোযোগ, লোভ, আশা ইত্যাদির সম্পর্ক তাঁর সাথেই রাখা উচিত। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর আনুগত্যের ব্যাপারে চুল পরিমাণও যেন ক্রটি না হয়। আর আল্লাহ তা’আলার কাছে এই তাওফীক চাইতে হবে যে, তিনি যেন তাঁর হুকুম পালনের, নিষিদ্ধ কাজ বর্জনের, ভাল কথা মেনে নেয়ার এবং সঠিক আনুগত্যের দিকে পথ প্রদর্শন করেন!

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

মদীনার এ মুনাফিকদের বেশীরভাগই ধনী ও বয়স্ক। ইবনে কাসির তার আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া গ্রন্থে তাদের যে তালিকা দিয়েছেন তাতে শুধুমাত্র একজন যুবকের নাম পাওয়া যায়। তাদের একজনও গরীব নয়। এরা মদীনায় বিপুল-ভূ-সম্পত্তি ও চারদিকে ছড়িয়ে থাকা বিরাট কারবারের মালিক ছিল। সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও বহুদর্শিতা এদের সুযোগ-সন্ধানী ও সুবিধাবাদী বানিয়ে দিয়েছিল। ইসলাম যখন মদীনায় পৌঁছলো এবং জনবসতির একটি বড় অংশপূর্ণ আন্তরিকতা ও ঈমানী জোশের সাথে ইসলাম গ্রহণ করলো তখন এ শ্রেণীটি পড়লো উভয় সংকটে। তারা দেখলো এ নতুন দ্বীন একদিকে তাদের নিজেদের গোত্রের অধিকাংশ বরং তাদের ছেলেমেয়েদের পর্যন্ত ঈমানের নেশায় মাতিয়ে তুলেছে। তাদের বিপরীত সারিতে দাঁড়িয়ে তারা যদি এখন কুফরী ও অস্বীকারের ঝাণ্ডা উত্তোলিত করে রাখে, তাহলে তাদের নেতৃত্ব-সরদারী, প্রভাব-প্রতিপত্তি, মান-সম্মান, সুনাম-সুখ্যাতি, সবকিছুই হারিয়ে যাবে। এমনকি তাদের নিজেদের পারিবারিক পরিমণ্ডলেই তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণারআশঙ্কা দেখা দেবে। অন্যদিকে এ দ্বীনের সাথে সহযোগিতা করার অর্থ হবে, তাদেরকে সমগ্র আরবের এমনকি চারপাশের সমস্ত জাতি-গোত্র ও রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধের ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত থাকা। সত্য ও ন্যায় যে আসলেই একটি মূল্যবান জিনিস তার প্রেম সুধা পান করে যে মানুষ সব রকমের বিপদ আপদ মাথা পেতে নিতে পারে, এমনকি প্রয়োজনে নিজের জান-মালও পর্যন্ত কুরবানী করতে পারে। পার্থিব স্বার্থে মোহ ও প্রবৃত্তির গোলামীতে আকণ্ঠ ডুবে থাকার কারণে সে কথা উপলব্ধি করার যোগ্যতা তারা হারিয়ে ফেলেছিল। তারা দুনিয়ার যাবতীয় বিষয়কে শুধুমাত্র স্বার্থ ও সুবিধাবাদের দৃষ্টিতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল। তাই ঈমানের দাবী করার মধ্যই তারা নিজেদের বৈষয়িক স্বার্থ সংরক্ষণের সবচেয়ে অনুকূল ও উপযোগী পথ খুঁজে পেয়েছিল। কারণ তারা এভাবে একদিকে নিজেদের জাতি-সম্প্রদায়ের মধ্যে নিজেদের বাহ্যিক মান-সম্ভ্রম, সহায়-সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য যথাযথ ভাবে টিকিয়ে রাখতে পারবে। অন্যদিকে মু’মিন হওয়াটাও তাদের এড়িয়ে যাওয়া দরকার, যাতে আন্তরিকতার পথ অবলম্বন করার ফলে অনিবার্যভাবে যেসব বিপদ আপদ ও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়, তার হাত থেকে রেহাই পেতে পারে। তাদের এ মানসিক অবস্থাকে এখানে বর্ণনা করা হয়েছে যে, আসলে তারা তোমাদের সাথে নেই। বরং ক্ষতির ভয় তাদেরকে জবরদস্তি তোমাদের সাথে বেধে দিয়েছে। যে জিনিসটি তাদের নিজেদের কে মুসলমানদের মধ্যে গণ করাতে বাধ্য করেছে তা হচ্ছে এই ভীতি যে, মদীনায় থাকা অবস্থায় যদি তারা প্রকাশ্যে অমুসলিম হয়ে বাস করতে থাকে তাহলে তাদের সমস্ত মর্যাদা ও প্রতিপত্তি খতম হয়ে যাবে এমনকি স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের সাথেও তাদের সম্পর্কে ছেদ ঘটবে। আর যদি তারা মদীনা ত্যাগ করে তাহলে নিজেদের সম্পদ-সম্পত্তি ও ব্যবসা-বাণিজ্য ত্যাগ করতে হবে। আবার কুফরীর প্রতিও তাদের এতটা আন্তরিকতা ছিল না যে, তার জন্য তারা এসব ক্ষতি বরদাশত করতে পারতো। এ উভয় সংকটে পড়ে তারা বাধ্য হয়ে মদীনায় থেকে গিয়েছে। মন না চাইলেও অনিচ্ছা সত্ত্বেও নামায পড়তো এবং যাকাতকে জরিমানা ভেবে হলেও অগত্যা আদায় করতো। নয়তো প্রতিদান জিহাদ, প্রতিদান কোন না কোন ভয়াবহ দুশমনের সাথে পাঞ্জা কষাকষি এবং প্রতিদান জান-ও মাল কুরবানীর যে বিপদ ঘাড়ে চেপে আছে তার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য তারা এত বেশী অস্থির যে, যদি তারা সাধারণ কোন সুড়ঙ্গ তথা কোন গর্তও দেখতে পেতো এবং সেখানে গেলে নিরাপদ আশ্রয় লাভের সম্ভাবনা থাকতো তাহলে দৌড়ে গিয়ে তার মধ্যে ঢুকে পড়তো।

এ প্রথমবার আরবে একটি নির্দিষ্ট পরমাণের বেশী ধন-সম্পদের অধিকারী লোকদের উপর যথারীতি যাকাত ধার্য করা হয়েছিল। তাদের কৃষি উৎপাদন, গবাদিপশু ও ব্যবসায় পণ্য এবং খনিজ দ্রব্য ও সোনা রূপার সঞ্চয় থেকে আড়াই ভাগ, ৫ ভাগ, ১০ ভাগ ও ২০ ভাগ আদায় করা হতো। একটি বিধিবদ্ধ পদ্ধতিতে এসব যাকাতের সম্পদ সংগ্রহ করা হতো এবং একটি কেন্দ্রে জমা করে বিধিবদ্ধ পদ্ধতিতে খরচ করা হতো। এভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নবী (সা.) এর কাছে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ সংগৃহীত হয়ে আসতো এবং তার হাত দিয়ে তা লোকদের মধ্যে বিতরণ করা হতো, যা ইতিপূর্বে আরবের লোকেরা কখনো এক জন লোকের হাতে একই সঙ্গে সংগৃহীত হতে এবং তার হাত দিয়ে খরচ হতে দেখেনি। এ সম্পদ দেখে দুনিয়া পূজারী মুনাফিকদের জিভ দিয়ে লালা ঝরতো। তারা চাইতো, এ প্রবহমান নদী থেকে তারা যেন আশ মিটিয়ে পানি পান করতে পারে। কিন্তু এখানে তো ব্যাপার ছিল সম্পূর্ণ অন্য রকম। এখানে যিনি পানি পান করাচ্ছিলেন তিনি নিজের জন্য এবং নিজের সংশ্লিষ্টদের জন্য এ নদীর প্রতি বিন্দু পানি হারাম করে দিয়েছিলেন। কেউ আশা করতে পারে না, তার হাতের পানির পেয়ালা হকদার ছাড়া আর কারোর ঠোঁট স্পর্শ করতে পারে। এ কারণেই নবী (সা.) এর সদকা বিতরণের অবস্থা দেখে মুনাফিকরা চাপা আক্রোশে গুমরে মরছিল। বন্টনের সময় তারা নানা অভিযোগে, তাকে অভিযুক্ত করতো। তাদের আসল অভিযোগ ছিল এ সম্পদের ওপর কর্তৃত্ব করার সুযোগ আমাদের দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু এ আসল অভিযোগ গোপন করে তারা এ মর্মে অভিযোগ উত্থাপন করতো যে, ইনসাফের সাথে সম্পদ বণ্টন করা হচ্ছে না এবং এ ব্যাপারে পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে।

গণিমতের মাল থেকে যা কিছু নবী (সা.) তাদের দেন, তাই নিয়ে তারা সন্তুষ্ট থাকতো। অন্যদিকে আল্লাহর অনুগ্রহে তারা যা কিছু উপার্জন করে এবং অর্থ উপার্জনের আল্লাহ‌ প্রদত্ত উপকরণের মাধ্যমে যে ধরনের সচ্ছলতা ও সমৃদ্ধির তারা লাভ করছে তাকেই নিজেদের জন্য যথেষ্ট মনে করতো।

যাকাত ছাড়াও অন্য যে সমস্ত ধন-সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে আসবে তা থেকে নিজ নিজ প্রাপ্য অনুযায়ী আমরা অংশ লাভ করতে থাকবো, যেমন ইতিপূর্বে করে এসেছি।

দুনিয়া ও তার তুচ্ছ সম্পদের প্রতি আমাদের দৃষ্টি নেই। বরং আমাদের দৃষ্টি রয়েছে আল্লাহ‌ ও তাঁর অনুগ্রহের ওপর। তাঁরই সন্তুষ্টি আমরা চাই। আমাদের সমস্ত আশা আকাঙ্ক্ষা তাঁকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে। তিনি যা দেন তাতেই আমরা সন্তুষ্ট।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

এই ভীরুতার ফলেই তারা মিথ্যা কসম খেয়ে এটা প্রকাশ করতে চায় যে, আমরাও তোমাদের দলভুক্ত।

দ্রুত গতিতে পলায়ন করে নিজেদের আশ্রয়স্থলে চলে যাবে। যেহেতু তোমাদের সাথে তাদের যতটা সম্পর্ক আছে তা সম্প্রীতি ও আন্তরিকতার ভিত্তিতে নয়, বরং শত্রুতা, বিদ্বেষ ও ঘৃণার ভিত্তিতে।
এ হল তাদের আর একটি বড় ত্রুটির বিবরণ যে, তারা নবী (সাঃ)-এর ন্যায়পরায়ণ প্রশংসনীয় ব্যক্তিত্বকে (নাউযু বিল্লাহ) স্বাদক্বাহ-খয়রাত ও গনীমতের মাল বণ্টনে ইনসাফহীন বলত। যেমন হাদীসে এসেছে যে, তিনি একদা স্বাদক্বার মাল বণ্টন করছিলেন। ইত্যবসরে ইবনু যিল খুয়াইসিরা বলে উঠল, বণ্টনে ইনসাফ করুন। তিনি বললেন, “আফসোস তোমার প্রতি! আমি যদি ইনসাফ না করি, তাহলে আর কে করবে?” (বুখারীঃ মানাকিব অধ্যায়, মুসলিমঃ যাকাত অধ্যায়)

তার মানে, এই অপবাদ দেওয়ার আসল উদ্দেশ্য হল অর্থ লাভ করা। যাতে তাদেরকে ভয় করে তিনি বেশী দেন অথবা তারা এই মাল পাওয়ার উপযুক্ত হোক আর না-ই হোক, তাদেরকে যেন অবশ্যই তার ভাগ দেওয়া হয়।

তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
আবু সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পদ বন্টন করছিলেন, তখন যুল খুওয়াইসরা আত-তামীমী এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ইনসাফ করুন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, দুর্ভোগ তোমার, কে ইনসাফ করবে যদি আমি ইনসাফ না করি? উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমাকে ছাডুন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। রাসূল বললেন, তাকে ছেড়ে দাও; তার কিছু সঙ্গী-সাথী রয়েছে যাদের সালাতের কাছে তোমরা তোমাদের সালাতকে, তাদের সাওমের কাছে তোমাদের সাওমকে তুচ্ছ মনে করবে। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর তৃণীর থেকে বেরিয়ে যায়। … আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা বলেছেন এবং আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। [বুখারী: ৬৯৩৩] এ আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা তাদের কথাই বর্ণনা করছেন যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বন্টনের উপর আপত্তি উত্থাপন করত। তাদের এ আপত্তি বা সমালোচনা কোন সঠিক উদ্দেশ্য বা গ্রহণযোগ্য মতের উপর ভিত্তি করে ছিল না। বরং তাদের উদ্দেশ্য ছিল কিছু পাওয়া। কিছু দেওয়া হলে তারা সন্তুষ্ট হয়, আর কিছু না দেওয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়। এ অবস্থা বান্দার জন্য কাম্য হতে পারে না যে, তার সন্তুষ্টি ও ক্রোধ নির্ভর করবে তার দুনিয়ার চাহিদা বা খারাপ উদ্দেশ্য পূর্ণ হওয়ার উপর, বরং প্রত্যেকের উচিত তার চাহিদা হবে তার রবের সন্তুষ্টি অনুযায়ী। [সা’দী]

Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 56-59

وَيَحْلِفُونَ بِاللّهِ إِنَّهُمْ لَمِنكُمْ

They swear by Allah that they are truly of you,

Exposing Hypocrites’ Fright and Fear

Allah describes to His Prophet the fright, fear, anxiety and nervousness of the hypocrites,

وَيَحْلِفُونَ بِاللّهِ إِنَّهُمْ لَمِنكُمْ

They swear by Allah that they are truly of you,

swearing a sure oath,

وَمَا هُم مِّنكُمْ

while they are not of you,

in reality,

وَلَـكِنَّهُمْ قَوْمٌ يَفْرَقُونَ

but they are a people who are afraid,

and this is what made them swear.

لَوْ يَجِدُونَ مَلْجَأً

Should they find a refuge,

such as a fort in which they hide and fortify themselves,

أَوْ مَغَارَاتٍ

or caves, (in some mountains),

أَوْ مُدَّخَلً

or a place of concealment,

According to the explanation given by Ibn Abbas, Mujahid and Qatadah,

a tunnel or a hole in the ground,

لَّوَلَّوْاْ إِلَيْهِ وَهُمْ يَجْمَحُونَ

they would turn straightway thereto with a swift rush.

away from you because they associate with you unwillingly, not because they are fond of you. They prefer that they do not have to mix with you, but necessity has its rules! It is because of this that they feel grief, sadness and sorrow, seeing Islam and its people enjoying ever more might, triumph and glory. Therefore, whatever pleases Muslims brings them grief, and this is why they prefer to disassociate themselves from the believers. Hence Allah’s statement,

لَوْ يَجِدُونَ مَلْجَأً أَوْ مَغَارَاتٍ

أَوْ مُدَّخَلً

لَّوَلَّوْاْ إِلَيْهِ وَهُمْ يَجْمَحُونَ

Should they find a refuge, or caves, or a place of concealment, they would turn straightway thereto with a swift rush.

Hypocrites question the Integrity of the Messenger when distributing Alms

Allah said next,

وَمِنْهُم

And of them, (among the hypocrites),

مَّن يَلْمِزُكَ

who accuse you,

or question your integrity,

فِي

concerning, (division of),

الصَّدَقَاتِ

the alms,

when you divide them. They question your fairness, even though it is they who deserve that their integrity be questioned. The hypocrites do not do this in defense of the religion, but to gain more for themselves.

This is why,

فَإِنْ أُعْطُواْ مِنْهَا

If they are given part thereof,

meaning, from the Zakah,

رَضُواْ وَإِن لَّمْ يُعْطَوْاْ مِنهَا إِذَا هُمْ يَسْخَطُونَ

They are pleased, but if they are not given thereof, behold! They are enraged!

angry for themselves.

Qatadah commented on Allah’s statement,
وَمِنْهُم مَّن يَلْمِزُكَ فِي الصَّدَقَاتِ
. (And of them are some who accuse you concerning the alms),

“Allah says, `Some of them question your integrity in the matter of distribution of the alms.’

We were told that a Bedouin man, who had recently embraced Islam, came to the Prophet, when he was dividing some gold and silver, and said to him, `O Muhammad! Even though Allah commanded you to divide in fairness, you have not done so.’

The Prophet of Allah said,

وَيْلَكَ فَمَنْ ذَا الَّذِي يَعْدِلُ عَلَيْكَ بَعْدِي

Woe to you! Who would be fair to you after me then?

The Prophet of Allah said next,

احْذَرُوا هَذَا وَأَشْبَاهَهُ

فَإِنَّ فِي أُمَّتِي أَشْبَاهُ هَذَا يَقْرَءُونَ الْقُرانَ لَاإ يُجَاوِزُ تَرَاقِيهِمْ

فَإِذَا خَرَجُوا فَاْقْتُلُوهُمْ ثُمَّ إِذَا خَرَجُوا فَاقْتُلُوهُمْ ثُمَّ إِذَا خَرَجُوا فَاقْتُلُوهُم

Beware of this man and his likes!

There are similar persons in my Ummah who recite the Qur’an, but the Qur’an will not go beyond their throat.

If they rise (against Muslims rulers) then kill them, if they rise, kill them, then if they rise kill them.

We were also told that the Prophet of Allah used to say,

وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا أُعْطِيكُمْ شَيْيًا وَلَاا أَمْنَعُكُمُوهُ إِنَّمَا أَنَا خَازِن

By He in Whose Hand is my life! I do not give or withhold anything; I am only a keeper.”

This statement from Qatadah is similar to the Hadith that the Two Sheikhs narrated from Abu Sa`id about the story of Dhul-Khuwaysirah, whose name was Hurqus. Hurqus protested against the Prophet’s division of the war spoils of Hunayn, saying,

“Be fair, for you have not been fair!”

The Prophet said,

لَقَدْ خِبْتُ وَخَسِرْتُ إِنْ لَمْ أَكُنْ أَعْدِل

I would have become a loser and a failure if I was not fair!

The Messenger said after that man left,

إِنَّهُ يَخْرُجُ مِنْ ضِيْضِىءِ هَذَا قَوْمٌ يَحْقِرُ أَحَدُكُمْ صَلَتَهُ مَعَ صَلَتِهِمْ وَصِيَامَهُ مَعَ صِيَامِهِمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ مُرُوقَ السَّهْمِ مِنَ الرَّمِيَّةِ فَأَيْنَمَا لَقِيتُمُوهُمْ فَاقْتُلُوهُمْ فَإِنَّهْم شَرُّ قَتْلَى تَحْتَ أَدِيمِ السَّمَاء

Among the offspring of this man will be some with whose prayer, when one of you sees it, would belittle his prayer, and his fast as compared to their fast. They will be renegades from the religion, just like an arrow goes through the game’s body. Wherever you find them, kill them, for verily, they are the worst dead people under the cover of the sky.

Allah said next, while directing such people to what is more beneficial for them than their behavior,

وَلَوْ أَنَّهُمْ رَضُوْاْ مَا اتَاهُمُ اللّهُ وَرَسُولُهُ وَقَالُواْ حَسْبُنَا اللّهُ سَيُوْتِينَا اللّهُ مِن فَضْلِهِ وَرَسُولُهُ إِنَّا إِلَى اللّهِ رَاغِبُونَ
Would that they were content with what Allah and His Messenger gave them and had said:”Allah is sufficient for us. Allah will give us of His bounty, and so will His Messenger (from alms). We implore Allah (to enrich us).”

This honorable Ayah contains a gracious type of conduct and an honorable secret.

Allah listed; contentment with what He and His Messenger give, trusting in Allah alone — by saying;
وَقَالُواْ حَسْبُنَا اللّهُ
(and they had said:Allah is sufficient for us), and hoping in Allah alone, and He made these the indications of obedience to the Messenger, adhering to his commands, avoiding his prohibitions, believing his narrations and following his footsteps.

Leave a Reply