أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 653)
[الشَّرَّ اسۡتِعۡجَالَہُمۡ بِالۡخَیۡرِ
যেভাবে তারা তাদের কল্যাণ তরান্বিত করতে আগ্রহী…
He does with the Requests for Good ….]
www.motaher21.net
সুরা: ইউনুস
সুরা:১০
১১ নং আয়াত:-
الشَّرَّ اسۡتِعۡجَالَہُمۡ بِالۡخَیۡرِ
যেভাবে তারা তাদের কল্যাণ তরান্বিত করতে আগ্রহী..
He does with the Requests for Good ….
وَ لَوۡ یُعَجِّلُ اللّٰہُ لِلنَّاسِ الشَّرَّ اسۡتِعۡجَالَہُمۡ بِالۡخَیۡرِ لَقُضِیَ اِلَیۡہِمۡ اَجَلُہُمۡ ؕ فَنَذَرُ الَّذِیۡنَ لَا یَرۡجُوۡنَ لِقَآءَنَا فِیۡ طُغۡیَانِہِمۡ یَعۡمَہُوۡنَ ﴿۱۱﴾
যদি আল্লাহ মানুষের অকল্যাণ তরান্বিত করতেন যেভাবে তারা তাদের কল্যাণ তরান্বিত করতে আগ্রহী, তাহলে অবশ্যই তারা ধ্বংস হয়ে যেত। সুতরাং যারা আমার সাক্ষাতের আশা রাখে না, আমি তাদেরকে তাদের অবাধ্যতার মধ্যে ঘুরপাক খেতে ছেড়ে দিই।
And if Allah was to hasten for the people the evil [they invoke] as He hastens for them the good, their term would have been ended for them. But We leave the ones who do not expect the meeting with Us, in their transgression, wandering blindly.
১১ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
ওপরের ভূমিকার পর এবার উপদেশ দেয়া ও বুঝাবার জন্য ভাষণ শুরু করা হচ্ছে। এ ভাষণটি পড়ার আগে এর পটভূমি সম্পর্কিত কিছু কথা সামনে রাখতে হবে।
একঃ এ ভাষণটি শুরু হওয়ার মাত্র কিছুকাল আগেই একটি দীর্ঘস্থায়ী ও কঠিন বিপজ্জনক দুর্ভিক্ষের অবসান ঘটেছিল। সেই বিপদের আবর্তে পড়ে মক্কাবাসীদের নাভিশ্বাস শুরু হয়ে গিয়েছিল। দুর্ভিক্ষের দিনগুলোতে কুরাইশ গোত্রের অহংকারী লোকদের উদ্ধত মাথাগুলো অনেক নীচু হয়ে গিয়েছিল। তারা প্রার্থনা ও আহাজারী করতো। মূর্তি পূজায় ভাটা পড়ে গিয়েছিল। এক লা-শরীক আল্লাহর প্রতি আকর্ষণ বেড়ে গিয়েছিল। অবস্থা এমন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছিল যে, শেষ পর্যন্ত আবু সুফিয়ান এসে নবী (সা.) এর কাছে এ বালা-মুসিবত দূর করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করার আবেদন জানালো। কিন্তু যখন দুর্ভিক্ষ দূর হয়ে গেলো, বৃষ্টি শুরু হলো এবং সমৃদ্ধির দিন এসে গেলো তখন আবার এ লোকদের সেই আগের বিদ্রোহাত্মক আচরণ, অসৎকর্ম ও সত্যবিরোধী তৎপরতা শুরু হয়ে গেলো। যাদের হৃদয় আল্লাহর দিকে ফিরতে শুরু করেছিল তারা আবার তাদের আগের ঘোর গাফলতিতে নিমজ্জিত হলো। (দেখুনঃ আল মু’মিনুন ৭৫-৭৭ আয়াত এবং আদ্ দুখান ১০-১৬ আয়াত )
সুরা: আল-মু’মিনূন
আয়াত নং :-৭৫
وَ لَوْ رَحِمْنٰهُمْ وَ كَشَفْنَا مَا بِهِمْ مِّنْ ضُرٍّ لَّلَجُّوْا فِیْ طُغْیَانِهِمْ یَعْمَهُوْنَ
যদি আমি তাদের প্রতি করুণা করি এবং বর্তমানে তারা যে দুঃখ-কষ্টে ভুগছে তা দূর করে দেই, তাহলে তারা নিজেদের অবাধ্যতার স্রোতে একেবারেই ভেসে যাবে।
তাফসীর :
টিকা:৭২) দুর্ভিক্ষের কারণে আরববাসী যে কষ্ট ও বিপদের মধ্যে অবস্থান করছিল সেদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ দুর্ভিক্ষ সংক্রান্ত হাদীস উদ্ধৃত করতে গিয়ে কেউ কেউ দু’টি দুর্ভিক্ষকে এক সাথে মিশিয়ে ফেলেছন। এর ফলে একটি হিজরতের আগের না পরের ঘটনা তা বুঝা মানুষের পক্ষা কঠিন হয়ে যায়। আসল ঘটনা হচ্ছ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে মক্কাবাসীরা দুবার দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়। একবার নবোয়াতের সূচনার কিছুদিন পর। দ্বিতীয়বার হিজরাতের কয়েক বছর পর যখন সামামাহ ইবনে উসাল ইয়ামামাহ থেকে মক্কার দিকে খাদ্য শস্য রফতানী করা বন্ধ করে দিয়েছিল। এখানে দ্বিতীয় দুর্ভিক্ষটির নয় প্রথমটির কথা বলা হয়েছে। এ সম্পর্কে বুখারী ও মুসলিমে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদের (রা.) এ বর্ণনা পাওয়া যায় যে, যখন কুরাইশরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াত অস্বীকার করতেই থাকলো এবং কঠোরভাবে বাধা দিতে শুরু করলো তখন তিনি দোয়া করলেনঃ
– “হে আল্লাহ! এদের মোকাবিলায় ইউসুফের আট বছরের দুর্ভিক্ষের মতো সাত বছরব্যাপী দুর্ভিক্ষ দিয়ে আমাকে সাহায্য করো।”
ফলে এমন ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেলো যে, মৃতের গোশ্ত খাওয়ার ঘটনাও ঘটলো। মক্কী সূরাগুলোতে বহু জায়গায় এ ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। দৃষ্টান্ত স্বরূপ দেখুন সূরা আল আন’আম ৪২ থেকে ৪৪ ; আল আ’রাফ ৯৪ থেকে ৯6 ; ইউনুস ১১, ১২, ২১ ; আন নহল ১১২, ১১৩ ও আদ্ দুখান ১০ থেকে ১৬ আয়াত এবং এ সঙ্গে সংশ্লিষ্ট টীকাগুলোও।
দুইঃ নবী (সা.) যখনই তাদেরকে সত্য অমান্য করার কারণে ভয় দেখাতেন তখনই তারা জবাবে বলতোঃ তুমি আল্লাহর যে আযাবের হুমকি দিচ্ছো তা আসছে না কেন? তার আসতে দেরি হচ্ছে কেন? এরি জবাবে বলা হচ্ছেঃ মানুষের প্রতি দয়া ও করুণা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে আল্লাহ যতটা দ্রুতগামী হন, তাদের সাজা দেবার ও পাপ কাজ করার দরুন তাদেরকে পাকড়াও করার ব্যাপারে ততটা ত্বড়িৎ গতি অবলম্বন করেন না। তোমরা চাও, তোমাদের দোয়া শুনে যেভাবে তিনি দুর্র্ভিক্ষের বিপদ দ্রুত অপসারণ করেছেন ঠিক তেমনি তোমাদের চ্যালেঞ্জ শুনে এবং তোমাদের বিদ্রোহ ও অবাধ্যতা দেখে সঙ্গে সঙ্গেই আযাবও পাঠিয়ে দেবেন। কিন্তু এটা আল্লাহর নিয়ম নয়। মানুষ যতই অবাধ্যতা ও বিদ্রোহ করুন না কেন, এ অপরাধে তাদেরকে পাকড়াও করার আগে তিনি তাদেরকে সংশোধিত হবার যথেষ্ট সুযোগ দেন। একের পর এক সতর্ক বাণী পাঠান এবং রশি ঢিলে করে ছেড়ে দেন। অবশেষে যখন সুবিধা ও অবকাশ শেষে সীমায় উপনীত হয়, তখনই কর্মফলের নীতি বলবত হয়। এ হচ্ছে আল্লাহর পদ্ধতি।….. অর্থাৎ বিপদ এলে আল্লাহর কথা মনে পড়তে থাকে। তখন হা-হুতাশ ও কান্নাকাটির রোল পড়ে যায়। আবার যেই বিপদমুক্ত স্বস্তির দিন আসে অমনি সবকিছু ভুলে যাও। এ ধরনের অভ্যাস ও নীতির বদৌলতেই বিভিন্ন জাতির জন্য আল্লাহর আযাব অনিবার্য ও অবধারিত হয়ে ওঠে।
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দার প্রতি অনুগ্রহ এবং দয়া যে, তারা যেভাবে নাবী-রাসূলগণের কাছে শাস্তির ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করত যদি আল্লাহ তা‘আলা ঐ অনুপাতে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দিতেন তাহলে তারা সকলেই ধ্বংস হয়ে যেত। বরং আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে কিছু সময়ের জন্য অবকাশ দেন। যদি আল্লাহ তা‘আলা তাদের অপরাধের কারণে পাকড়াও করেন তাহলে পৃথিবীর বুকে তাদের কোন অস্তিত্বই থাকবে না। বরং আল্লাহ তা‘আলা সহনশীল। আর আল্লাহ তা‘আলা অত্র আয়াতের মাধ্যমে তাদেরকে বদ্দু‘আ করতে নিষেধ করছেন যে, তোমরা তোমাদের স্ত্রী-পরিজনদের ওপর তাড়াতাড়ি শাস্তি আসার ব্যাপারে বদ্দু‘আ করিও না। কেননা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমরা নিজেদের ওপর, সন্তানের ওপর, সম্পদের ওপর বদ্দু‘আ কর না। কেননা তোমাদের বদদু‘আ এমন সময়ে যেন না হয় যে সময় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে দু‘আ কবূল করা হয়, অতঃপর তিনি তোমাদের সে বদ্দু‘আ কবূল করেন। (সহীহ মুসলিম হা: ৩০০৯, আবূ দাঊদ হা: ১৫৩২)
যেমন মানুষ অনেক সময় বিরক্তিবোধ করে স্ত্রী, সন্তান ও সম্পদকে বলে থাকে যে, তোমার ধ্বংস হোক বা তুমি মরে গেলেই ভাল হয় ইত্যাদি বদ্দু‘আ।
আয়াত হতে শিক্ষনীয় বিষয়:
১. বান্দার প্রতি আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ।
২. অপরাধ করার সাথে সাথেই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাকে শাস্তি প্রদান করেন না।
৩. শাস্তির ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা যাবে না।
৪. কারো জন্য রাগের বশবতী হয়ে বদদু‘আ করা যাবে না ইত্যাদি।
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ তাআলা স্বীয় বান্দাদের উপর নিজের স্নেহ ও সহনশীলতার সংবাদ দিচ্ছেন যে, মানুষ যদি তার সংকীর্ণমনা ও ক্রোধের কারণে নিজের জান, মাল ও সন্তানদের উপর বদ দুআ করে তবে তিনি তার সেই বদ দুআ কবূল করেন না। কেননা তিনি জানেন যে, এটা তার আন্তরিক ইচ্ছায় নয়। এটা হচ্ছে আল্লাহর বিশেষ দয়া ও মেহেরবানীর দাবী। কিন্তু যদি মানুষ তার নিজের জন্যে এবং তার ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির পক্ষে দুআ করে তবে আল্লাহ সেই দুআ ককূল করে থাকেন। এজন্যেই তিনি বলেন-মানুষ যেমন তার কল্যাণের জন্যে তাড়াহুড়ো করে তেমনি যদি আল্লাহ তা’আলা তার উপর বিপদ-আপদ পৌছানোর ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করতেন তবে তো তার অকাল মৃত্যু ঘটে যেতো। তবে মানুষের জন্যে এটা কখনই শোভনীয় নয় যে, সে বারবার এরূপ বলতে থাকে এবং বদ দুআ করার অভ্যাস করে ফেলে। যেমন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমরা নিজেদের উপর, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির উপর বদ দূআ’ করো না, কেননা কোন কোন সময় দুআ কবুল হয়ে থাকে। সুতরাং যদি সেই সময় বদ দুআ মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ে তবে তা কবূল হয়েই যাবে।” (এ হাদীসটি হাফিজ আবু বকর আল বাযযার (রঃ) স্বীয় মুসনাদে জাবির (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন)
মুজাহিদ (রঃ) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন যে, এই বদ দুআ’ মানুষের একটা উক্তি যা সে ক্রোধের সময় নিজের উপর, নিজের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির উপর করে থাকে। এই সময় উচিত যে, সে যেন তৎক্ষণাৎ বলে ওঠেঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে আল্লাহ! এ কথায় আপনি বরকত দান। করবেন না।” নচেৎ তার এই বদ দুআ কবুল হয়েই যাবে এবং এর ফলে তার সর্বনাশ হবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
এর এক অর্থ এই যে, যেমন মানুষ কোন উত্তম বস্তু অন্বেষণে তাড়াতাড়ি করে, অনুরূপ তারা শাস্তি অন্বেষণেও তাড়াতাড়ি করে, তারা পয়গম্বরদেরকে বলে যে, ‘যদি তোমরা সত্যই পয়গম্বর হও, তাহলে সেই শাস্তি আনয়ন কর, যা থেকে তোমরা আমাদেরকে ভীতিপ্রদর্শন করছ।’ আল্লাহ তাআলা বলেন যে, আমি যদি তাদের চাওয়া অনুযায়ী শীঘ্র শাস্তি প্রেরণ করতাম, তবে তারা অনেক পূর্বে মৃত্যু ও ধ্বংস কবলিত হয়ে যেত। কিন্তু আমি ঢিল দিয়ে তাদেরকে পূর্ণ সুযোগ দিই। দ্বিতীয় অর্থ এই যে, মানুষ যেমন নিজের জন্য ভালাই ও মঙ্গলের দু’আ করে, যা আমি মঞ্জুর করি। অনুরপ মানুষ যখন রাগান্বিত অবস্থায় বা কষ্টে থাকে, তখন নিজের জন্য ও আপন সন্তান-সন্ততি ইত্যাদির জন্য বদ্দুআ করে, তা আমি এই জন্য ছেড়ে দিই যে, সে তো মুখে ধ্বংস চাচ্ছে, কিন্তু তার অন্তরে সে ইচ্ছা নেই। কিন্তু যদি আমি মানুষের বদ্দুআ অনুযায়ী তাদেরকে সাথে সাথে ধ্বংস করতে আরম্ভ করতাম, তবে অতি সতত্ত্বর এরা মৃত্যু ও ধ্বংস কবলিত হয়ে যেত। এই জন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, “তোমরা নিজেদের উপর, নিজেদের সন্তানের উপর এবং নিজেদের সম্পদ ও কারবারের উপর বদ্দুআ করো না। এমন না হয়ে যায় যে, তোমাদের বদ্দুআ এমন সময়ে হয়ে যায়, যে সময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে দু’আ কবুল করা হয়, অতঃপর তিনি তোমাদের সে বদ্দুআ কবুল করে নেন।” (মুসলিম, আবু দাউদ)
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
এ আয়াতে (الشر) বা খারাপ বস্তু কি? এ নিয়ে মতভেদ আছে। এক. কোন কোন মুফাসসির বলেনঃ এখানে খারাপ বস্তু বলতে নদর ইবনে হারেস নামীয় কাফেরের বদদোআ বোঝানো হয়েছে। যাতে সে বলেছিলঃ হে আল্লাহ! যদি মুহাম্মাদের দ্বন সত্য হয়, তবে আমার উপর আকাশ থেকে পাথর বর্ষণ করে আমাকে ধ্বংস করে দিন [বাগভী] এর উত্তরে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ সর্ববিষয়েই ক্ষমতাশীল, প্রতিশ্রুত এ আযাব এক্ষণেই নাযিল করতে পারেন। কিন্তু তিনি তার মহান হেকমত ও দয়াকরুণার দরুন এ মূৰ্খরা নিজেদের জন্য যে বদদোআ করে এবং বিপদ ও অকল্যাণ কামনা করে তা নাযিল করেন না। যদি আল্লাহ তা’আলা তাদের বদদোআগুলোও তেমনিভাবে যথাশীঘ্ৰ কবুল করে নিতেন, যেভাবে তাদের ভাল দো’আগুলো কবুল করেন, তাহলে এরা সবাই ধ্বংস হয়ে যেত। দুই. অধিকাংশ মুফাসসিরীনের মতে এক্ষেত্রে বদদো-আর মর্ম এই যে, কোন কোন সময় কেউ কেউ রাগের বশবর্তী হয়ে নিজের সন্তান-সন্ততির কিংবা অর্থ-সম্পদ ধ্বংসের বদদো’আ করে বসে কিংবা বস্তুসামগ্রীর প্রতি অভিসম্পাত করতে আরম্ভ করে- আল্লাহ তা’আলা স্বীয় করুণা ও মহানুভবতাবশতঃ সহসাই এসব দোআ কবুল করেন না। [তাবারী; কুরতুবী; বাগভী; ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর] এতে প্রতীয়মান হয় যে, কল্যাণ ও মঙ্গলের শুভ দোআ-প্রার্থনার ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলার রীতি হচ্ছে যে, অধিকাংশ সময় তিনি সেগুলো শীঘ্ৰ কবুল করে নেন। অবশ্য কখনো কখনো হেকমত ও কল্যাণের কারণে কবুল না হওয়া এর পরিপন্থী নয়। কিন্তু মানুষ যে কখনো নিজেদের অজান্তে এবং কোন দুঃখ-কষ্ট ও রাগের বশে নিজের কিংবা নিজের পরিবার-পরিজনের জন্য বদদোআ করে বসে, অথবা আখেরাতের প্রতি অস্বীকৃতির দরুন আযাবকে প্রহসন মনে করে নিজের জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানাতে থাকে সেগুলো তিনি সঙ্গে সঙ্গে কবুল করেন না; বরং অবকাশ দেন, যাতে অস্বীকারকারীরা বিষয়টি চিন্তা-ভাবনা করে নিজেদের অস্বীকৃতি থেকে ফিরে আসার সুযোগ পায় এবং কোন সাময়িক দুঃখকষ্ট, রাগ-রোষ কিংবা যদি মনোবেদনার কারণে বদদোআ করে বসে, তাহলে সে যেন নিজের কল্যাণ-অকল্যাণ, ভাল-মন্দ লক্ষ্য করে, তার পরিণতি বিবেচনা করে তা থেকে বিরত হবার অবকাশ পেতে পারে। তারপরও কোন কোন সময় এমন কবৃলিয়ত বা মঞ্জুরীর সময় আসে, যখন মানুষের মুখ থেকে যে কোন কথা বের হয়, তা সঙ্গে সঙ্গে কবুল হয়ে যায়। সেজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “নিজের সন্তান-সন্ততি ও অর্থ-সম্পদের জন্য কখনো বদদো’আ করো না। এমন যেন না হয় যে, সে সময়টি হয় মঞ্জুরীর সময় এবং দোআ সাথে সাথে কবুল হয়ে যায়’ ! [আবু দাউদঃ ১৫৩২, মুসলিমঃ ৩০০৯]
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Yunus
Sura: 10
Verses :- 11
الشَّرَّ اسۡتِعۡجَالَہُمۡ بِالۡخَیۡرِ
He does with the Requests for Good ….
Allah does not respond to the Requests for Evil like He does with the Requests for Good
Allah tells;
وَلَوْ يُعَجِّلُ اللّهُ لِلنَّاسِ الشَّرَّ اسْتِعْجَالَهُم بِالْخَيْرِ لَقُضِيَ إِلَيْهِمْ أَجَلُهُمْ فَنَذَرُ الَّذِينَ لَا يَرْجُونَ لِقَاءنَا فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ
And were Allah to hasten for mankind the evil as He hastens for them the good then they would have been ruined. So We leave those who expect not their meeting with Us, in their trespasses, wandering blindly in distraction.
Allah tells us about His Forbearance and Benevolence with His servants. He does not respond to them when they pray with evil intentions against themselves, their wealth or their children during times of grief or anger. He knows that they do not truly intend evil for themselves so He doesn’t respond to them. This is in reality kindness and mercy. On the other hand, He responds to them when they pray for themselves, wealth and money, with good, blessing and growth.
Allah has said,
وَلَوْ يُعَجِّلُ اللّهُ لِلنَّاسِ الشَّرَّ اسْتِعْجَالَهُم بِالْخَيْرِ لَقُضِيَ إِلَيْهِمْ أَجَلُهُمْ
And were Allah to hasten for mankind the evil as He hastens for them the good then they would have been ruined.
This means that if He had responded to all of their evil requests, He would have destroyed them. However, people should avoid praying for evil as much as they can.
Abu Bakr Al-Bazzar recorded in his Musnad that Jabir said,
“Allah’s Messenger said:
لَاا تَدْعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ لَاا تَدْعُوا عَلَى أَوْلَاادِكُمْ لَاا تَدْعُوا عَلَى أَمْوَالِكُمْ لَاا تُوَافِقُوا مِنَ اللهِ سَاعَةً فِيهَا إِجَابَةٌ فَيَسْتَجِيبَ لَكُم
Do not pray against yourselves, do not pray against your children, do not pray against your wealth, for your prayer may coincide with a time of response from Allah and Allah will respond to you.”
This Hadith was also recorded by Abu Dawud.
This is similar to what is understood from the following Ayah:
وَيَدْعُ الاِنْسَـنُ بِالشَّرِّ دُعَأءَهُ بِالْخَيْرِ
And man invokes (Allah) for evil as he invokes (Allah) for good. (17:11)
In regard to the interpretation of this Ayah,
وَلَوْ يُعَجِّلُ اللّهُ لِلنَّاسِ الشَّرَّ اسْتِعْجَالَهُم بِالْخَيْرِ
(And were Allah to hasten for mankind the evil as He hastens for them the good), Mujahid said:
“It is the man saying to his son or money when he is angry, `O Allah don’t bless him (or it) and curse him (or it).’ Should Allah respond to this man in this request as He responds to him with good, He would destroy them.