(Book# 698) [ اَنُلۡزِمُکُمُوۡہَا তাহলে কি আমি ওটা তোমাদেরকে মেনে নিতে বাধ্য করব? Should we force it upon you?] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 698)
[ اَنُلۡزِمُکُمُوۡہَا
তাহলে কি আমি ওটা তোমাদেরকে মেনে নিতে বাধ্য করব?
Should we force it upon you?]
www.motaher21.net

قَالَ یٰقَوۡمِ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ کُنۡتُ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّیۡ وَ اٰتٰىنِیۡ رَحۡمَۃً مِّنۡ عِنۡدِہٖ فَعُمِّیَتۡ عَلَیۡکُمۡ ؕ اَنُلۡزِمُکُمُوۡہَا وَ اَنۡتُمۡ لَہَا کٰرِہُوۡنَ ﴿۲۸﴾
তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায় তোমরা আমাকে বল, আমি যদি আমার রব প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত থাকি এবং তিনি যদি আমাকে তাঁর নিজের পক্ষ থেকে অনুগ্রহ দান করে থাকেন, অতঃপর সেটা তোমাদের কাছে গোপন রাখা হয়, আমরা কি এ বিষয়ে তোমাদেরকে বাধ্য করতে পারি, যখন তোমার এটা অপছন্দ কর?’
He said, “O my people have you considered: if I should be upon clear evidence from my Lord while He has given me mercy from Himself but it has been made unapparent to you, should we force it upon you while you are averse to it?
وَ یٰقَوۡمِ لَاۤ اَسۡئَلُکُمۡ عَلَیۡہِ مَالًا ؕ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ وَ مَاۤ اَنَا بِطَارِدِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ؕ اِنَّہُمۡ مُّلٰقُوۡا رَبِّہِمۡ وَ لٰکِنِّیۡۤ اَرٰىکُمۡ قَوۡمًا تَجۡہَلُوۡنَ ﴿۲۹﴾
আর হে আমার সম্প্রদায়! আমি এতে তোমাদের কাছে কোন ধন-সম্পদ চাচ্ছি না; আমার বিনিময় তো শুধু আল্লাহর দায়িত্বে রয়েছে। আর আমি তো বিশ্বাসীদেরকে তাড়িয়ে দিতে পারি না। নিশ্চয় তারা নিজেদের প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করবে। পরন্তু আমি দেখছি, তোমরা এক নির্বোধ সম্প্রদায়।
And O my people, I ask not of you for it any wealth. My reward is not but from Allah . And I am not one to drive away those who have believed. Indeed, they will meet their Lord, but I see that you are a people behaving ignorantly.

وَ یٰقَوۡمِ مَنۡ یَّنۡصُرُنِیۡ مِنَ اللّٰہِ اِنۡ طَرَدۡتُّہُمۡ ؕ اَفَلَا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۳۰﴾
‘হে আমার সম্প্রদায় ! আমি যদি তাদেরকে তাড়িয়ে দেই, তবে আল্লাহ্‌র পাকড়াও থেকে আমাকে কে রক্ষা করবে? তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহন করবে না?’
And O my people, who would protect me from Allah if I drove them away? Then will you not be reminded?

সুরা: হুদ।
সুরা:১১
২৮-৩০ নং আয়াত:-
اَنُلۡزِمُکُمُوۡہَا
তাহলে কি আমি ওটা তোমাদেরকে মেনে নিতে বাধ্য করব?
Should we force it upon you?

২৮-৩০ নং আয়াতের তাফসীর :-

তাফসীরে‌ ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
তাদের কথার জবাবে নূহ (عليه السلام) বললেন: যদি আমি আমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকি এবং তিনি আমাকে নিজ রহমত (নবুওয়াত) দান করেন, আর তোমরা যদি তা বিশ্বাস না কর তাহলে তোমাদের অন্তরে তা গেঁথে দেয়া বা তোমাদেরকে দীনের অনুসারী বানানো সম্ভব নয়। আর আমি যতই তোমাদের উপকার করতে চাই না কেন যদি তোমরা উপদেশ গ্রহণ না কর এবং আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে পথভ্রষ্টতা থেকে সঠিক পথে না নিয়ে আসেন তাহলে কোনই কাজে আসবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَلَا يَنْفَعُكُمْ نُصْحِيْٓ إِنْ أَرَدْتُّ أَنْ أَنْصَحَ لَكُمْ إِنْ كَانَ اللّٰهُ يُرِيْدُ أَنْ يُّغْوِيَكُمْ ط هُوَ رَبُّكُمْ)

‘‘আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিতে চাইলেও আমার উপদেশ তোমাদের উপকারে আসবে না, যদি আল্লাহ তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে চান। তিনিই তোমাদের প্রতিপালক।” (সূরা হূদ ১১:৩৪)

আর আমি আমার রবের দিকে দাওয়াতের বিনিময়ে তোমাদের কাছে কিছুই চাই না। হয়তো তোমরা বলতে পারো যে, নবুওয়াতের দাবী করার উদ্দেশ্য হল অর্থ উপার্জন করা। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার কাফিরদেরকেও একথা বলেছিলেন। (সূরা সাবা ৩৪:৪৭) আর যারা আমার প্রতি ঈমান এনেছে তাদেরকে আমি তোমাদের কথা অনুপাতে তাড়িয়ে দিতে পারি না। যদি আমি তাদেরকে তাড়িয়ে দেই তাহলে আল্লাহ তা‘আলা আমাকে যে শাস্তি দেবেন তা থেকে কে আমাকে রক্ষা করবে? অথচ আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে তাড়িয়ে দিতে নিষেধ করেছেন। মক্কার কাফিররা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অনুরূপ দাবী করেছিল ফলে আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেছিলেন

(وَلَا تَطْرُدِ الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَدٰوةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيْدُوْنَ وَجْهَه۫)

“যারা তাদের প্রতিপালককে সকালে ও সন্ধ্যায় তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ডাকে তাদেরকে তুমি বিতাড়িত কর না।” (সূরা আনয়াম ৬:৫২)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:

(وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَدٰوةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيْدُوْنَ وَجْهَه۫ وَلَا تَعْدُ عَيْنٰكَ عَنْهُمْ )

“তুমি নিজকে ধৈর্য সহকারে রাখবে তাদেরই সাথে যারা সকাল ও সন্ধ্যায় আহ্বান করে তাদের প্রতিপালককে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা সৌন্দর্য কামনা করে তাদের হতে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিও না।” (সূরা কাহ্ফ ১৮:২৮) সুতরাং তাদেরকে পৃথক করে দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আর আমি তোমাদেরকে এ কথাও বলিনি যে, আমার নিকট আল্লাহ তা‘আলার ধন-ভাণ্ডার রয়েছে এবং এ কথাও বলি না, আমি গায়েব জানি আর আমি কোন ফেরেশতাও নই। সুতরাং তোমাদের কোন কিছু করার ক্ষমতাই আমার নেই। যাবতীয় ক্ষমতা আল্লাহ তা‘আলার হাতে। আমি শুধু তোমাদেরকে তাঁর দিকে আহ্বান করছি। তবে যারা ঈমান আনবে তারা এই ঈমান আনয়নের কারণে আখিরাতে জান্নাতের চির সুখ লাভ করবে। আল্লাহ তা‘আলা চাইলে তাদেরকে দুনিয়াতেও মর্যাদাবান করতে পারেন।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-

হযরত নূহ (আঃ) তাঁর কওমকে বললেন- “হে আমার কওম! আমি তোমাদেরকে যে উপদেশ দিচ্ছি, অর্থাৎ তোমাদের যে মঙ্গল কামনা করছি, এর বিনিময়ে তোমাদের কাছে কিছুই চাচ্ছি না। আমার এ কাজের বিনিময় আল্লাহ তাআ’লার যিম্মায় রয়েছে। তোমাদের কথামত আমি যে দরিদ্র মু’মিনদেরকে আমার নিকট থেকে তাড়িয়ে দেবো এটা আমার দ্বারা সম্ভব নয়। রাসূলুল্লাহকেও (সঃ) এ কথাই বলা হয়েছিল, যার উত্তরে নিম্নের আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিলঃ (আরবি)

অর্থাৎ “(হে নবী (সঃ)! সকাল-সন্ধ্যায় যারা তাদের প্রতিপালককে ডেকে থাকে ঐসব (দরিদ্র মু’মিন) লোকদেরকে তুমি তোমার নিকট থেকে তাড়িয়ে দিয়ো না।” (৬: ৎ৫২) অন্য জায়গায় আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ (আরবি)

অর্থাৎ “এভাবেই আমি তাদের এককে অপরের দ্বারা পরীক্ষা করেছি, যেন তারা বলে- এদের উপরই কি আল্লাহ আমাদের মধ্য থেকে অনুগ্রহ করেছেন? আল্লাহ কি কৃতজ্ঞদের সম্পর্কে অবহিত নন?” (৬:৫৩)

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# আগের রুকু’তে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখ দিয়ে যে কথা উচ্চারিত হয়েছে এখানে তারই পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রথমে আমি বিশ্ব-জাহান ও মানুষের মধ্যে আল্লাহর নিদর্শনাবলী দেখে তাওহীদের মূল তত্ত্বে পৌঁছে গিয়েছিলাম। তারপর আল্লাহ তাঁর নিজের রহমতের (অর্থাৎ অহী) মাধ্যমে আমাকে সরাসরি এ সত্যগুলোর জ্ঞান দান করেছেন। আমার মন ইতিপূর্বেই এগুলোর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে আসছিল। এ থেকে এও জানা যায় যে, নবুওয়াত লাভ করার আগেই সকল নবী অনুসন্ধান ও চিন্তা-গবেষণার মাধ্যমে ঈমান বিল গাইব তথা অদৃশ্যে বিশ্বাস লাভ করে থাকেন। তারপর মহান আল্লাহ নবুওয়াতের মর্যাদা দান করার সময় তাঁদেরকে ঈমান বিশ্ শাহাদাত অর্থাৎ প্রত্যক্ষ দর্শন লব্ধ বিশ্বাস দান করে থাকেন।
# আমি একজন নিঃস্বার্থ উপদেশদাতা। নিজের কোন লাভের জন্য নয় বরং তোমাদেরই ভালোর জন্য এত কঠোর পরিশ্রম ও দুঃখ-কষ্ট সহ্য করছি। এ সত্যের দাওয়াত দেবার, এর জন্য প্রাণান্ত পরিশ্রম করার ও বিপদ-মুসিবতের সম্মুখীন হবার পেছনে আমার কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ সক্রিয় আছে এমন কথা তোমরা প্রমাণ করতে পারবে না। (দেখুন আল মু’মিনূন ৭০ টীকা , ইয়াসীন ১৭ টীকা , আশ শূরা ৪১ টীকা )।

# তাদের রবই তাদের মর্যাদা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন। তাঁর সামনে যাবার পরই তাদের সবকিছু প্রকাশিত হবে। তারা যদি সত্যিকার মহামূল্যবান রত্ন হয়ে থাকে তাহলে তোমাদের ছুঁড়ে ফেলার কারণে তারা তুচ্ছ মূল্যহীন পাথরে পরিণত হয়ে যাবে না। আর যদি তারা মূল্যহীন পাথরই হয়ে থাকে তাহলে তাদের মালিকের ইচ্ছা, তিনি তাদেরকে যেখানে চান ছুঁড়ে ফেলতে পারেন। (দেখুন সূরা আন’আম ৫২ আয়াত এবং সূরা কাহাফ ২৮ আয়াত)।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

# [১] بينة (প্রমাণ) দ্বারা ঈমান ও একীন আর رحمة (করুণা) দ্বারা নবুঅত বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ তাআলা তা নূহ (আঃ)-কে প্রদান করেছিলেন।

[২] অর্থাৎ, তোমরা তা দেখা থেকে অন্ধ হয়ে যাও। সুতরাং না তোমরা তার গুরুত্ব বুঝতে পার, আর না তা মানার জন্য প্রস্ত্তত হও। বরং তা মিথ্যাজ্ঞান করার জন্য ও তাঁর বিরোধিতা করার জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠ তাহলে—।

[৩] যখন ব্যাপার এই, তখন এই হিদায়াত ও রহমত তোমাদের ভাগে কিভাবে আসতে পারে?

# [১] যাতে তোমাদের মনে এই সন্দেহ না এসে যায় যে, এই নবুঅতের দাওয়াত দ্বারা আমার উদ্দেশ্য পার্থিব ধন-সম্পদ অর্জন করা। আমি এই কর্ম একমাত্র আল্লাহর আদেশে এবং তারই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করছি, তিনিই আমাকে এর প্রতিদান দেবেন।

[২] এতে বুঝা যাচ্ছে যে, নূহ (আঃ)-এর সম্প্রদায়ের নেতারাও, সমাজে দুর্বল ভাবা হতো এমন মু’মিনদেরকে নূহ (আঃ)-এর মজলিস বা তাঁর নিকট থেকে দূরে রাখার দাবী করেছিল। যেমন মক্কার নেতারা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট অনুরূপ দাবী করেছিল, যার ফলে আল্লাহ তাআলা কুরআন কারীমের এই আয়াতটি অবতীর্ণ করেছিলেন, (وَلا تَطْرُدِ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ) অর্থাৎ, আর যে সব লোক সকাল-সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপালককে আহবান করে এবং তাঁর সন্তুষ্টিই কামনা করে, তাদেরকে তুমি দূরে সরিয়ে দিয়ো না। (সূরা আনআম ৬:৫২)(وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ وَلاَ تَعْدُ عَيْنَاكَ عَنْهُمْ) অর্থাৎ, তুমি নিজেকে তাদেরই সংসর্গে রাখ, যারা সকাল ও সন্ধ্যায় আহবান করে তাদের প্রতিপালককে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা করে, তাদের দিক হতে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ো না। (সূরা কাহ্ফ ১৮:২৮)

[৩] অর্থাৎ, আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্যকারীদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং তাদেরকে নবীর নিকট থেকে দূর করার দাবী করাটা তোমাদের নির্বুদ্ধিতার পরিচয়। তারা তো মাথার উপর বসিয়ে রাখার উপযুক্ত, দূরে ছুঁড়ে ফেলার মত নয়।

# বুঝা যায় যে, এমন লোকদেরকে নিজের কাছ হতে দূর করে দেওয়া, আল্লাহর ক্রোধ ও অসন্তুষ্টির কারণ।

তাফসীরে‌ আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
[১] আমি একজন নিঃস্বার্থ উপদেশদাতা নিজের কোন লাভের জন্য নয় বরং তোমাদেরই ভালোর জন্য এত কঠোর পরিশ্রম ও দুঃখ-কষ্ট সহ্য করছি। এ সত্যের দাওয়াত দেওয়ার, এর জন্য প্রাণান্ত পরিশ্রম করার ও বিপদ-মুসিবতের সম্মুখীন হবার পেছনে আমার কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ সক্রিয় আছে এমন কথা তোমরা প্রমাণ করতে পারবে না।

[২] অর্থাৎ তাদের রবই তাদের মর্যাদা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন। তাঁর সামনে যাবার পরই তাদের সবকিছু প্রকাশিত হবে। তারা যদি সত্যিকার মহামূল্যবান রত্ন হয়ে থাকে তাহলে তোমাদের ছুড়ে ফেলার কারণে তারা তুচ্ছ মূল্যহীন পাথরে পরিণত হয়ে যাবে না। আর যদি তারা মূল্যহীন পাথরই হয়ে থাকে তাহলে তাদের মালিকের ইচ্ছা, তিনি তাদেরকে যেখানে চান ছুড়ে ফেলতে পারেন। মোটকথা, এ আয়াতে কওমের লোকদের মূর্খতা প্রসূত ধ্যান ধারণা খণ্ডন করার জন্য প্রথমতঃ বলা হয়েছে যে, কারো ধন-সম্পদের প্রতি নবী রাসূলগণ দৃষ্টিপাত করেন না। তারা নিজেদের খেদমত ও তালীমের বিনিময়ে কারো থেকে কোন পারিশ্রমিক গ্রহন করেন না। তাদের প্রতিদান একমাত্র আল্লাহ তা’আলারই দায়িত্বে। কাজেই, তাদের দৃষ্টিতে ধনী-দরিদ্র এক সমান। তোমরা এমন অহেতুক আশংকা পোষণ করো না যে, আমরা ধন-সম্পদশালীরা যদি ঈমান আনয়ন করি তবে হয়ত আমাদের বিত্ত সম্পদে ভাগ বসানো হবে। দ্বিতীয়তঃ তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, তোমরা ঈমান আনার পূর্বশর্ত হিসাবে চাপ সৃষ্টি করছ যেন আমি দরিদ্র ঈমানদারগণকে তাড়িয়ে দেই। কিন্তু আমার দ্বারা তা কখনো সম্ভবপর নয়। কারণ, আর্থিক দিক দিয়ে তারা দরিদ্র হলেও আল্লাহর দরবারে তাদের প্রবেশাধিকার ও উচ্চমর্যাদা রয়েছে। এমন লোকদেরকে তাড়িয়ে দেয়া অন্যায় ও অসঙ্গত। আল্লাহ তা’আলা তাঁর সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও একই ধরনের নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, আপনি অবশ্যই এ সমস্ত দরিদ্র মুমিনদের তাড়িয়ে দিবেন না। তাদের সঙ্গ ত্যাগ করার চিন্তাও করবেন না। [দেখুনঃ সূরা আল-আনআমঃ ৫২, আল-কাহাফঃ ২৮] আল্লাহ্ তা’আলা মূলতঃ দরিদ্র মুমিনদেরকে ঈমান আনার তাওফীক দেয়ার মাধ্যমে পরীক্ষা করতে চেয়েছেন যে, কারা তাদের আত্মম্ভরিতা ও অহংকার ত্যাগ করে হক্ক কবুল করতে পারে আর কারা তা না পেরে বলতে থাকে যে, আল্লাহ কি তাদের মত লোকদের ছাড়া আর কাউকে দেখতে পেলেন না? মহান আল্লাহ বলেনঃ “আমি এভাবে তাদের একদলকে অন্যদল দ্বারা পরীক্ষা করেছি যেন তারা বলে, “আমাদের মধ্যে কি এদের প্রতিই আল্লাহ অনুগ্রহ করলেন? আল্লাহ কি কৃতজ্ঞ লোকদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত নন?” [সূরা আল-আনআমঃ ৫৩]

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- HUD.
Sura: 11
Verses :- 28-30
اَنُلۡزِمُکُمُوۡہَا

Should we force it upon you?

The Response of Nuh

Allah says, informing about the response of Nuh to his people,

قَالَ يَا قَوْمِ أَرَأَيْتُمْ إِن كُنتُ عَلَى بَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّيَ وَاتَانِي رَحْمَةً مِّنْ عِندِهِ فَعُمِّيَتْ عَلَيْكُمْ

أَنُلْزِمُكُمُوهَا وَأَنتُمْ لَهَا كَارِهُونَ

He said:”O my people! Tell me, if I have a clear proof from my Lord, and a mercy (Prophethood) has come to me from Him, but that (mercy) has been obscured from your sight. Shall we compel you (to accept) it when you have a strong hatred for it!

Allah says, informing about the response of Nuh to his people,

أَرَأَيْتُمْ إِن كُنتُ عَلَى بَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّيَ

Tell me, if I have a clear proof from my Lord,
Bayyinah means certainty, a clear matter, and truthful Prophethood. That is the greatest mercy from Allah upon him (Nuh) and them (his people).

فَعُمِّيَتْ عَلَيْكُمْ
(but that (mercy) has been obscured from your sight),

“Obscured from your sight” in this verse means, `it was hidden from you and you are not guided to it. Thus, you (people) did not know its importance so you hastily rejected and denied it.’

أَنُلْزِمُكُمُوهَا
(Shall we compel you (to accept) it),

This means, “Should we force you to accept it, while you actually detest it.
Allah tells;

وَيَا قَوْمِ لا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مَالاً إِنْ أَجْرِيَ إِلاَّ عَلَى اللّهِ

And O my people! I ask of you no wealth for it, my reward is from none but Allah.

Nuh says to his people, “I do not ask you for any wealth in return for my sincere advice to you.”

Wealth (Mal) here means, “payment that I take from you.”

Nuh means, “I am only seeking the reward from Allah, the Mighty and Sublime.”

Concerning the statement,

وَمَأ أَنَاْ بِطَارِدِ الَّذِينَ امَنُواْ

I am not going to drive away those who have believed.

This alludes to the fact that they (the disbelievers) requested Nuh to disassociate himself from the believers, because they were averse to them and felt themselves too important to sit with them.

This is similar to the request of disbelievers to the seal of the Messengers to disassociate himself from a group of the people who were considered weak in their social status. They wanted the Prophet to sit with them in a special gathering of the elite.

Therefore, Allah revealed,

وَلَا تَطْرُدِ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِىِّ

And turn not away those who invoke their Lord, morning and afternoon. (6:52)

Allah also says,

وَكَذلِكَ فَتَنَّا بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لِّيَقُولواْ أَهَـوُلاءِ مَنَّ اللَّهُ عَلَيْهِم مِّن بَيْنِنَأ أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِالشَّـكِرِينَ

Thus We have tried some of them with others, that they might say:”Is it these (poor believers) whom Allah has favored from among us!” Does not Allah know best those who are grateful! (6:53)

And Nuh says here,

إِنَّهُم مُّلَقُو رَبِّهِمْ وَلَـكِنِّيَ أَرَاكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُونَ

وَيَا قَوْمِ مَن يَنصُرُنِي مِنَ اللّهِ إِن طَرَدتُّهُمْ

أَفَلَ تَذَكَّرُونَ
Surely, they are going to meet their Lord, but I see that you are a people that are ignorant.

And O my people! Who will help me against Allah, if I drove them away! Will you not then give a thought!

Leave a Reply