أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 724)
[ لَیُوَفِّیَنَّہُمۡ رَبُّکَ اَعۡمَالَہُمۡ
অবশ্যই তোমার প্রতিপালক তাদেরকে তাদের কর্মফল পূর্ণরূপে প্রদান করবেন;
Your Lord will fully compensate them for their deeds.]
www.motaher21.net
وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ فَاخۡتُلِفَ فِیۡہِ ؕ وَ لَوۡ لَا کَلِمَۃٌ سَبَقَتۡ مِنۡ رَّبِّکَ لَقُضِیَ بَیۡنَہُمۡ ؕ وَ اِنَّہُمۡ لَفِیۡ شَکٍّ مِّنۡہُ مُرِیۡبٍ ﴿۱۱۰﴾
আর অবশ্যই আমরা মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম, অতঃপর এতে মতভেদ ঘটেছিল। আর আপনার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের মিমাংসা তো হয়েই যেত । আর নিশ্চয় তারা এ ব্যাপারে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে নিপতিত।
And We had certainly given Moses the Scripture, but it came under disagreement. And if not for a word that preceded from your Lord, it would have been judged between them. And indeed they are, concerning the Qur’an, in disquieting doubt.
وَ اِنَّ کُلًّا لَّمَّا لَیُوَفِّیَنَّہُمۡ رَبُّکَ اَعۡمَالَہُمۡ ؕ اِنَّہٗ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرٌ ﴿۱۱۱﴾
আর নিশ্চিতরূপে তাদের প্রত্যেকের (সময় যখন এসে যাবে, তখন) অবশ্যই তোমার প্রতিপালক তাদেরকে তাদের কর্মফল পূর্ণরূপে প্রদান করবেন; নিশ্চয়ই তিনি তাদের কার্যকলাপের পূর্ণ খবর রাখেন।
And indeed, each [of the believers and disbelievers] – your Lord will fully compensate them for their deeds. Indeed, He is Acquainted with what they do.
সুরা: হুদ।
সুরা:১১
১১০-১১১ নং আয়াত:-
لَیُوَفِّیَنَّہُمۡ رَبُّکَ اَعۡمَالَہُمۡ
অবশ্যই তোমার প্রতিপালক তাদেরকে তাদের কর্মফল পূর্ণরূপে প্রদান করবেন;
Your Lord will fully compensate them for their deeds.
১১০-১১১ নং আয়াতের তাফসীর :-
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, হে রাসূল! আমি মূসার প্রতি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছিলাম তাতেও ইখতিলাফ করা হয়েছে। একদল তা মেনে নিয়েছে আর অন্যদল তা প্রত্যাখান করেছে। তোমার অবস্থাও তোমার পূর্ববর্তী নাবীদের মতই হবে। কেউ মানবে আবার কেউ মানবে না। সুতরাং তুমি এতে মন খারাপ কর না। যদি তাদের ব্যাপারে পূর্ব থেকে সিদ্ধান্ত না থাকত তাহলে এতদিনে তাদের ওপর শাস্তি এসে পড়ত এবং তারা ধ্বংস হয়ে যেত। তাদেরকে তাদের মেয়াদকাল পূর্ণ হলেই শাস্তি দেয়া হবে এবং তাতে তাদের কৃতকর্মের ফলাফল বিন্দু পরিমাণও কম দেয়া হবে না। তিনি তাদের সম্পূর্ণ অবস্থা সম্পর্কে অবগত চাই তা ছোট হোক বা বড় হোক, গুরুত্বপূর্ণ হোক বা নগণ্যই হোক।
এ আয়াতের অর্থ সাধারণত এদিকেই নির্দেশ করে যে:
(وَإِنْ كُلٌّ لَّمَّا جَمِيْعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُوْنَ)
“আর তাদের সবাইকে অবশ্যই একত্রে আমার নিকট উপস্থিত করা হবে।” (সূরা ইয়াসীন ৩৬:৩২)
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা কাউকে কমও দেবেন না এবং কাউকে বেশিও দেবেন না। আর তখন সবাই আল্লাহ তা‘আলার সম্মুখেই উপস্থিত থাকবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নাবীদের সম্পর্কে ও তাদের প্রতি অবতীর্ণ কিতাব সম্পর্কে দোষারোপ করা এটা কাফিরদের একটি চিরাচরিত নিয়ম।
২. প্রত্যেক মানুষকে তার কৃতকর্মের পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি মূসাকে (আঃ) কিতাব দিয়েছিলাম। অনন্তর তাতে মতভেদ সৃষ্টি করা হয়। কেউ স্বীকার করে নেয় এবং কেউ অস্বীকার করে। সুতরাং হে নবী (সঃ)! তোমার অবস্থাও তোমার পুর্ববর্তী নবীদের মতই হবে। কেউ মানবে এবং কেউ প্রত্যাখ্যান করবে। যেহেতু আমি সময় নির্দিষ্ট করে রেখেছি এবং দলীল প্রমাণাদি পূর্ণ করার পূর্বে আমি শাস্তি প্রদান করি না, সেহেতু আমি এদেরকে শাস্তি প্রদানে বিলম্ব করছি। অন্যথায় এখনই এদেরকে আমি শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাতাম। কাফিরদের কাছে আল্লাহ ও তার রাসূলের কথা ভুলই মনে হয়। তাদের সন্দেহ-সংশয় দূর হয় না।
আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ নিশ্চিতরূপে সকলেই এইরূপ যে, তোমার প্রতিপালক তাদেরকে তাদের কর্মের পূর্ণ অংশ প্রদান করবেন; নিশ্চয়ই তিনি তাদের কার্যকলাপের পূর্ণ খবর রাখেন। অর্থাৎ তিনি তাদের সমুদয় আমল সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল, তা গুরুত্বপূর্ণই হোক বা নগণ্যই হোক এবং ছোটই হোক বা বড়ই হোক। এই আয়াতে বহু পঠন রয়েছে, যে গুলির অর্থ এই দিকেই ফিরে আসে যা আমরা উল্লেখ করেছি। যেমন আল্লাহ তাআ’লার নিম্নের উক্তিতে রয়েছেঃ (আরবি)।
অর্থাৎ “ (পর লোকে) তাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যাকে সমবেত ভাবে আমার সামনে হাযির করা হবে না।” (৩৬:৩২)।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# এ কুরআন সম্পর্কে আজ বিভিন্ন লোক বিভিন্ন কথা বলছে, নান রকম সন্দেহ-সংশয় পোষণ করছে, এটা কোন নতুন কথা নয়। বরং এর আগে মূসাকে যখন কিতাব দেয়া হয়েছিল তখন তাঁর ব্যাপারেও এ ধরনের বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করা হয়েছিল। কাজেই হে মুহাম্মাদ! এমন সোজা, সরল ও পরিষ্কার কথা কুরআনে বলা হচ্ছে এবং তারপরও লোকেরা তা গ্রহণ করছে না এ অবস্থা দেখে তোমার মন খারাপ করা ও হতাশ হওয়া উচিত নয়।
# এ বাক্যটিতে নবী ﷺ ও ঈমানদারদেরকে নিশ্চিন্ত ও তাদের মনে স্থৈর্য করার জন্য বলা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, যারা এ কুরআনের ব্যাপারে মতবিরোধ সৃষ্টি করছে তাদের ফায়সালা শিগ্গির চুকিয়ে দেবার ব্যাপারটি নিয়ে তোমরা অস্থির হয়ো না। আল্লাহ প্রথমেই স্থির করে নিয়েছেন যে, ফায়সালা নির্দিষ্ট সময়ের আগে করা যাবে না এবং দুনিয়ার লোকেরা ফায়সালা চাওয়ার ব্যাপারে যে তাড়াহুড়া করে থাকে আল্লাহ ফায়সালা করে দেয়ার ব্যাপারে সে ধরনের তাড়াহুড়ো করবেন না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] অর্থাৎ, কিছু লোক সেই কিতাব মেনে নিল, আর কিছু লোক তা মেনে নিল না। এই কথা বলে নবী (সাঃ)-কে সান্তনা দেওয়া হচ্ছে যে, পূর্ব নবীগণের সাথেও এই ব্যবহার হতে থেকেছে, কিছু সংখ্যক মানুষ তাঁর প্রতি ঈমান আনত এবং অন্যরা মিথ্যাজ্ঞান করত। অতএব তোমাকে মিথ্যাজ্ঞান করা হলে ঘাবড়ে যাবে না।
[২] এর অর্থ এই যে, যদি আল্লাহ তাআলা তাদের শাস্তির জন্য একটি সময় নির্ধারিত করে না রাখতেন, তাহলে তিনি তাদেরকে অবিলম্বে ধ্বংস করে দিতেন।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
[১] এ পূর্ব সিদ্ধান্ত বা বাক্য সম্পর্কে দুটি মত প্রসিদ্ধ। এক. পূর্ব থেকেই তাদেরকে শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে অবকাশ প্রদানের সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের উপর আযাব এসে যেতো। দুই. অথবা পূর্ব থেকেই যদি আল্লাহর সিদ্ধান্ত না থাকত যে, তিনি নবী-রাসূল প্রেরণ না করে কাউকে শাস্তি দিবেন না, তাহলে অবশ্যই তাদের উপর শাস্তি আপতিত হতো। যেমন আল্লাহ্ অন্য আয়াতে বলেছেন, “আর আমরা রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত শাস্তি প্রদানকারী নই” [সূরা আল-ইসরা: ১৫] [ইবন কাসীর]
[২] অর্থাৎ এ কুরআন সম্পর্কে আজ বিভিন্ন লোক বিভিন্ন কথা বলছে, নানা রকম সন্দেহ সংশয় পোষণ করছে, এটা কোন নতুন কথা নয়। বরং এর আগে মূসাকে যখন কিতাব দেয়া হয়েছিল তখন তার ব্যাপারেও এ ধরনের বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করা হয়েছিল। [কুরতুবী; সাদী] কাজেই হে নবী! এমন সহজ, সরল ও পরিষ্কার কথা কুরআনে বলা হচ্ছে এবং তারপরও লোকেরা তা গ্রহণ করছে না-এ অবস্থা দেখে আপনার মন খারাপ করা ও হতাশ হওয়া উচিত নয়।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- HUD.
Sura: 11
Verses :- 110-111
لَیُوَفِّیَنَّہُمۡ رَبُّکَ اَعۡمَالَہُمۡ
Your Lord will fully compensate them for their deeds.
وَلَقَدْ اتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ فَاخْتُلِفَ فِيهِ
Indeed, We gave the Book to Musa, but differences arose therein,
Allah mentions that He gave Musa the Book, but the people differed concerning it. Some believed in it and some disbelieved in it. Therefore, you, Muhammad, have an example in the Prophets who came before you. So do not grieve or be upset by their denial of you.
وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَقُضِيَ بَيْنَهُمْ
and had it not been for a Word (Kalimah) that had gone forth before from your Lord, the case would have been judged between them,
Ibn Jarir said,
“If it were not that the punishment had already been delayed until an appointed time, then Allah would have decided the matter between you now.
The word Kalimah carries the meaning that Allah will not punish anyone until the proof has been established against him and a Messenger has been sent to him.”
This is similar to Allah’s statement,
وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولاً
And We never punish until We have sent a Messenger (to give warning). (17:15)
For verily, Allah says in other verse,
وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَكَانَ لِزَاماً وَأَجَلٌ مُّسَمًّى
فَاصْبِرْ عَلَى مَا يَقُولُونَ
And had it not been for a Word that went forth before from your Lord, and a term determined, (their punishment) must necessarily have come (in this world). So bear patiently what they say. (20:129-130)
وَإِنَّهُمْ لَفِي شَكٍّ مِّنْهُ مُرِيبٍ
and indeed they are in grave doubt concerning it (this Qur’an).
Then, Allah informs that He will gather the early generations and the later generations from all of the nations. He will then reward them based upon their deeds. If they did good deeds, their reward will be good, and if they did evil deeds, their reward will be bad.
Allah says,
وَإِنَّ كُـلًّ لَّمَّا لَيُوَفِّيَنَّهُمْ رَبُّكَ أَعْمَالَهُمْ
إِنَّهُ بِمَا يَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
And verily, to each of them your Lord will repay their works in full. Surely, He is All-Aware of what they do.
This means that He is All-Knower of all of their deeds. This includes their honorable deeds and their despicable deeds, their small deeds and their great deeds. There are many different modes of recitation for this verse, yet all of their meanings agree with what we have mentioned.
This is similar to Allah’s statement,
وَإِن كُلٌّ لَّمَّا جَمِيعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُونَ
And surely, all – everyone of them will be brought before Us. (36:32).