أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 768)
সুরা: ইব্রাহিম
সুরা:১৪
৩২-৩৪ নং আয়াত:-
[ وَ سَخَّرَ لَکُمُ الۡفُلۡکَ لِتَجۡرِیَ فِی الۡبَحۡرِ بِاَمۡرِہٖ ۚ
যিনি নৌযানকে তোমাদের অধীন করেছেন; যাতে তাঁর নির্দেশে তা সমুদ্রে বিচরণ করে।
Subjected for you the ships to sail through the sea by His command.]
www.motaher21.net
اَللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ اَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَخۡرَجَ بِہٖ مِنَ الثَّمَرٰتِ رِزۡقًا لَّکُمۡ ۚ وَ سَخَّرَ لَکُمُ الۡفُلۡکَ لِتَجۡرِیَ فِی الۡبَحۡرِ بِاَمۡرِہٖ ۚ وَ سَخَّرَ لَکُمُ الۡاَنۡہٰرَ ﴿ۚ۳۲﴾
আল্লাহ; যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, যিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করে তার দ্বারা তোমাদের জীবিকার জন্য ফল-মূল উৎপাদন করেছেন, যিনি নৌযানকে তোমাদের অধীন করেছেন; যাতে তাঁর নির্দেশে তা সমুদ্রে বিচরণ করে এবং যিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন নদীসমূহকে।
It is Allah who created the heavens and the earth and sent down rain from the sky and produced thereby some fruits as provision for you and subjected for you the ships to sail through the sea by His command and subjected for you the rivers.
وَ سَخَّرَ لَکُمُ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ دَآئِبَیۡنِ ۚ وَ سَخَّرَ لَکُمُ الَّیۡلَ وَ النَّہَارَ ﴿ۚ۳۳﴾
তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন সূর্য ও চন্দ্রকে; যারা অবিরাম একই নিয়মের অনুবর্তী এবং তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রাত্রি ও দিবসকে।
And He subjected for you the sun and the moon, continuous [in orbit], and subjected for you the night and the day.
وَ اٰتٰىکُمۡ مِّنۡ کُلِّ مَا سَاَلۡتُمُوۡہُ ؕ وَ اِنۡ تَعُدُّوۡا نِعۡمَتَ اللّٰہِ لَا تُحۡصُوۡہَا ؕ اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَظَلُوۡمٌ کَفَّارٌ ﴿٪۳۴﴾
আর তিনি তোমাদেরকে প্রত্যেকটি সেই জিনিস দিয়েছেন যা তোমরা তাঁর নিকট চেয়েছ। তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে ওর সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না; মানুষ অবশ্যই অতি মাত্রায় সীমালংঘনকারী অকৃতজ্ঞ।
And He gave you from all you ফasked of Him. And if you should count the favor of Allah, you could not enumerate them. Indeed, mankind is [generally] most unjust and ungrateful.
৩২-৩৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
উক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মানুষের প্রতি যে অগণিত নেয়ামত দান করেছেন তারই কয়েকটির বর্ণনা দিয়েছেন।
তিনি আকাশকে সৃষ্টি করে একটি সুরক্ষিত ছাদস্বরূপ বানিয়ে রেখেছেন, আকাশকে সুশোভিত করেছেন তারকা দ্বারা, জমিন সৃষ্টি করে বিছানার মত বিছিয়ে বসবাসের উপযোগী করে দিয়েছেন। আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করে জমিনে বিভিন্ন ফলফলাদি, শস্য ও ফসল উৎপন্ন করে জীবিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তিনি নৌযান ও নদীসমূহকে মানুষের অনুগত করে দিয়েছেন যাতে তারা সমুদ্রে বিচরণ করে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে পারে, তাঁর অনুগ্রহ অর্জন করতে পারে। এ ছাড়াও আরো বড় নেয়ামত চন্দ্র-সূর্য, দিবা-রাত্রি সকল জিনিসকে মানুষের কল্যাণার্থে নিয়োজিত রেখেছেন। তারা প্রত্যেকেই নিজ কক্ষ পথে অবিরাম বিচরণ করে, একে আপরকে অতিক্রম করে না, পরস্পর ধাক্কা খায় না।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(لَا الشَّمْسُ یَنْۭبَغِیْ لَھَآ اَنْ تُدْرِکَ الْقَمَرَ وَلَا الَّیْلُ سَابِقُ النَّھَارِﺚ وَکُلٌّ فِیْ فَلَکٍ یَّسْبَحُوْنَﭷ)
“সূর্যের সাধ্য নেই যে, সে চন্দ্রকে ধরে ফেলে এবং রাতও দিনের পূর্বে আসতে পারে না। প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষে চলছে।” (সূরা ইয়াসীন ৩৬:৪০)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُه۫ حَثِيْثًا لا وَّالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُوْمَ مُسَخَّرٰتٍۭ بِأَمْرِه۪ ط أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ط تَبٰرَكَ اللّٰهُ رَبُّ الْعٰلَمِيْنَ)
“তিনিই দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন যাতে তাদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে, আর সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি, যা তাঁরই আজ্ঞাধীন, জেনে রাখ যে, সৃষ্টি তাঁর, হুকুমও (চলবে) তাঁর। বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ, তিনি বরকতময়।” (সূরা আ’রাফ ৭:৫৪)
এ ছাড়াও সূর্যের আলোর অনেক উপকার রয়েছে। সূর্যের আলো না হলে কোন কিছু জন্মাবে না, দিন-রাতের পার্থক্য বুঝা যাবে না। মূলত প্রত্যেক বস্তু—কে আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টি করেছেন মানুষের উপকারার্থে।
এসব ছাড়াও মানুষ যা চায় আল্লাহ তা‘আলা সব দিয়েছেন। সুতরাং তিনি আমাদেরকে যে অফুরন্ত নেয়ামত দান করেছেন, তা গণনা করে শেষ করতে পারবো না। সুন্দর একটি শরীর দিয়েছেন, সুস্থতা দিয়েছেন, কাজ করার ক্ষমতা দিয়েছেন, এ ছাড়াও কত নেয়ামত দিয়েছেন যার হিসাব আমরা করতে পারব না।
ইমাম বুখারী (রহঃ) এ প্রসঙ্গে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন, “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সমস্ত প্রশংসা ও গুণগান আল্লাহ তা‘আলারই জন্য। আমাদের প্রশংসা মোটেই যথেষ্ট নয় এবং তা পূর্ণ ও বেপরোয়াকারীও নয়। সুতরাং হে আমাদের প্রতিপালক! (আমাদের অপারগতার জন্য আমাদেরকে ক্ষমা করুন)। (সহীহ বুখারী হা: ৫৪৫৮)
একদা দাঊদ (عليه السلام) বললেন: হে রব! আমি তোমার নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা কিভাবে প্রকাশ করব? অথচ স্বয়ং কৃতজ্ঞতা প্রকাশই তোমার পক্ষ থেকে আমার প্রতি নেয়ামত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে দাঊদ! তখন তুমি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে যখন তুমি স্বীকার করে বলবে যে, হে আল্লাহ তা‘আলা! আমি তোমার নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে অপারগ। (তাফসীর ইবনু কাসীর )
ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেন: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্যই, যার অসংখ্য নেয়ামতরাজির মধ্যে একটি হচ্ছে নেয়ামতের শুকরিয়া যা নতুন একটি নেয়ামত ছাড়া করা যায় না। ঐ নতুন নেয়ামতের ওপর আবার আরেকটি শুকরিয়া আদায় করা ওয়াজিব হয়ে যায়। এভাবে আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামত অসংখ্য যার পূর্ণ শুকরিয়া আদায় করা অসম্ভব।
সুতরাং মানুষের উচিত হবে না, আল্লাহ তা‘আলার অকৃতজ্ঞ হয়ে নিজের প্রতি জুলুম করা। বরং কর্তব্য হল তিনি যে নেয়ামত দান করেছেন সে জন্য তাঁর শুকরিয়া আদায় করা, শুকরিয়া আদায় করলে তিনি আরো নেয়ামত বৃদ্ধি করে দেবেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আকাশ থেকে পানি বর্ষণের মাধ্যমে জমিন থেকে খাদ্য দ্রব্য উৎপন্ন হয়।
২. পৃথিবীর সকল বস্তু মানুষের উপকারার্থে সৃষ্ট।
৩. আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে অগণিত নেয়ামত দান করেন।
৪. সকলের উচিত নেয়ামত পেয়ে শুকরিয়া আদায় করা।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৩২-৩৪ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআলা তাঁর অসংখ্য নিয়ামতের কথা বলছেন যা তাঁর মাখলুকাতের উপর রয়েছে। আকাশকে তিনি একটি সুরক্ষিত ছাদ বানিয়ে রেখেছেন। যমীনকে উত্তম বিছানারূপে বিছিয়ে রেখেছেন। আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করে যমীন থেকে সুস্বাদু ফল মূল, ফসলের ক্ষেত এবং বাগ-বাগিচা তৈরী করে দিয়েছেন। তাঁরই নির্দেশক্রমে নৌকাসমূহ পানির উপর ভাসমান অবস্থায় চলাফেরা করছে এবং মানুষকে নদীর এক পার থেকে আর এক পারে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে মানুষ এক দেশ হতে অন্য দেশে ভ্রমণ করছে। তারা এক জায়গার মাল অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে এবং এইভাবে বেশ লাভবানহচ্ছে। আর এইভাবে তাদের অভিজ্ঞতাও বাড়ছে। নদীগুলিকেও তিনি তাদের কাজে লাগিয়ে রেখেছেন। তারা এর পানি নিজেরা পান করছে, অপরকে পান করাচ্ছে, জমিতে সেচন করছে, গোসল করছে, কাপড় চোপড় ধৌত করছে। এবং এই ধরনের বিভিন্ন প্রকারের উপকার লাভ করছে।
মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবি) তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত রেখেছেন সূর্য ও চন্দ্রকে যারা অবিরাম একই নিয়মের অনুবর্তী। অর্থাৎ তারা দিন রাত্রি অবিরাম গতিতে চলতে রয়েছে, অথচ ক্লান্ত হচ্ছে না। আল্লাহ তাআলা আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চন্দ্রের নাগাল পাওয়া এবং রজনীর পক্ষে সম্ভব নয় দিবসকে অতিক্রম করা এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ কক্ষ পথে সন্তরণ করে।” (৩২:৪০)
আর এক জায়গায় আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “সূর্য, চন্দ্র ও তারকারাজি অধীন হয়েছে তাঁরই বিধানে, জেনে রেখো যে, সৃষ্টি ও বিধান তাঁরই, বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ কতই না মহান।” তিনি আরো বলেনঃ “তিনি রাতকে দিনের মধ্যে প্রবিষ্ট করেন এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবিষ্ট করেন, আর সূর্য ও চন্দ্রকে করেছেন তিনি নিয়মাধীন; প্রত্যেকেই পরিভ্রমণ করে এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত; জেনে রেখো, তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।”
মহান আল্লাহর উক্তিঃ তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন তোমরা তাঁর কাছে যা কিছু চেয়েছে তা হতে।’ অর্থাৎ হে মানবমণ্ডলী! তোমরা আল্লাহ তাআলার কাছে যে সব জিনিসের মুখাপেক্ষী ছিলে তিনি তোমাদেরকে তা সব কিছুই দিয়েছেন। তিনি চাইলেও দেন, না চাইলেও দেন। তাঁর দানের হাত কখনো বন্ধ থাকে না। সুতরাং তোমরা তাঁর কৃতজ্ঞতা পূর্ণরূপে প্রকাশ করতে পারবে কি? তোমরা যদি তার নিয়ামতগুলি এক এক করে গণনা করতে শুরু কর তবে। গুণে শেষ করতে পারবে না।
তালাক ইবনু হাবীব (রঃ) বলেন যে, আল্লাহ তাআলার হক এর চেয়ে অনেক বেশী যে, বান্দা তা আদায় করতে পারে। আর তাঁর নিয়ামত এর চেয়ে অনেক বেশী যে, বান্দা তা গণনা করতে পারে। সুতরাং হে লোক সকল! সকাল-সন্ধ্যায় তোমরা তার কাছে তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকো।
সহীহ বুখারীতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলতেনঃ “হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা ও গুণগান আপনারই জন্যে। আমাদের প্রশংসা মোটেই যথেষ্ট নয় এবং তা পূর্ণ ও বেপরোয়াকারীও নয়। সুতরাং হে আমাদের প্রতিপালক! (আমাদের অপারগতার জন্যে আমাদেরকে ক্ষমা করুন)”
হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “কিয়ামতের দিন আদম সন্তানের জন্যে তিনটি রেজিস্টার বই বের হবে। একটিতে লিখা থাকবে পুণ্য, একটিতে পাপ এবং তৃতীয়টিতে লিখিত থাকবে আল্লাহ তাআলার নিয়ামত সমূহ। আল্লাহ পাক স্বীয় নিয়ামত সমূহের মধ্য হতে সর্বাপেক্ষা ছোট নিয়ামতকে বলবেনঃ “ওঠো এবং তোমার প্রতিদান তার নেক আমল সমূহ হতে নিয়ে নাও।” এতে তার সমস্ত আমল শেষ হয়ে যাবে, অথচ ঐ ছোট নিয়ামতটি সেখান হতে সরে গিয়ে বলবেঃ “(হে আল্লাহ!) আপনার মর্যাদার শপথ! আমার পূণ্যমূল্য এখনো আমি পাইনি।”এখন পাপসমূহের রেজিস্টার বহি অবশিষ্ট থাকবে, আর ওদিকে নিয়ামতরাজির বহি বাকী থাকবে। অতঃপর যদি বান্দার উপর আল্লাহ তাআলার করুণা হয় তবে তিনি তার পূণ্য বাড়িয়ে দিবেন পাপরাশি ক্ষমা করে দিবেন। আর বলবেনঃ “আমি তোমাকে আমার নিয়ামতরাজির বিনিময় ছাড়াই দান করলাম।” (এ হাদীসটি হাফিয আবু বকর আল বাযার (রঃ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছে। কিন্তু এর সনদ দুর্বল)
বর্ণিত আছে যে, হযরত দাউদ (আঃ) বলেনঃ “হে আমার প্রতিপালক! আমি কি করে আপনার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবো? শুকর করাও তো আপনার একটা নিয়মিত।” উত্তরে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “হে দাউদ (আঃ) । এখন তো তুমি আমার শুকরিয়া করেই ফেললে। কেননা, তুমি জানতে পারলে এবং স্বীকার করলে যে, তুমি আমার নিয়ামতসমূহের শুকরিয়া আদায় করতে অপারগ।”
ইমাম শাফেয়ী (রঃ) বলেনঃ “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্যে, যার অসংখ্য নিয়ামতরাজির মধ্যে একটি নিয়ামতের শুকরও নতুন একটি নিয়ামত ছাড়া আমরা আদায় করতে পারি না। ঐ নতুন নিয়ামতের উপর আবার একটা শুকর ওয়াজিব হয়ে যায়। আবার ঐ নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার তাওফীক লাভের উপর আর একটি নিয়ামত লভি হয় যার উপর আবার শুকরিয়া আদায় করা ওয়াজিব হয়ে যায়। একজন কবি এই বিষয়টিকেই নিজের কবিতার মধ্যে প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “যদি আমার দেহের প্রতিটি লোমের ভাষা থাকতো এবং আপনার নিয়ামতরাজির শুকরিয়া আদায় করতো তবুও তা শেষ হতো না, বরং নিয়ামত আরো বেড়েই যেতো। আপনার ইহসান ও নিয়ামত অসংখ্য।”
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# সেই আল্লাহ, যাঁর নিয়ামত অস্বীকার করা হচ্ছে, যাঁর বন্দেগী ও আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে, যাঁর সাথে জোর করে অংশীদার বানিয়ে দেয়া হচ্ছে। তিনিই তো সেই আল্লাহ, এসব এবং ওসব যাঁর দান, যাঁর দানের কোন সীমা-পরিসীমা নেই।
# “তোমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন”কে সাধারণত লোকেরা ভুল করে “তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন”-এর অর্থে গ্রহণ করে থাকেন। তারপর এ বিষয়বস্তু সম্বলিত আয়াত থেকে বিভিন্ন অদ্ভূত ধরনের অর্থ বের করে থাকেন। এমন কি কোন কোন লোক এ থেকে এ ধারণা করে নিয়েছেন যে, পৃথিবী ও আকাশ জয় করা হচ্ছে মানুষের জীবনের মূল লক্ষ্য। অথচ মানুষের জন্য এসবকে অনুগত করে দেয়ার অর্থ এছাড়া আর কিছুই নয় যে, মহান আল্লাহ এদেরকে এমন সব আইনের অধীন করে রেখেছেন যেগুলোর বদৌলতে তারা মানুষের জন্য উপকারী হয়েছে। নৌযান যদি প্রকৃতির কতিপয় আইনের অনুসারী না হতো, তাহলে মানুষ কখনো সামূদ্রিক সফর করতে পারতো না। নদ-নদীগুলো যদি কতিপয় বিশেষ আইনের জালে আবদ্ধ না থাকতো, তাহলে কখনো তা থেকে খাল কাটা যেতো না। সূর্য, চন্দ্র এবং দিন ও রাত যদি বিশেষ নিয়ম কানুনের অধীনে শক্ত করে বাঁধা না থাকতো তাহলে এ বিকাশমান মানব সভ্যতা-সংস্কৃতির উদ্ভব তো দূরের কথা, এখানে জীবনের ষ্ফূরণই সম্ভবপর হতো না।
# তোমাদের প্রকৃতির সর্ববিধ চাহিদা পূরণ করেছেন। তোমাদের জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই সরবরাহ করেছেন। তোমাদের বেঁচে থাকা ও বিকাশ লাভ করার জন্য যেসব উপাদান ও উপকরণের প্রয়োজন ছিল তা সবই যোগাড় করে দিয়েছেন।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Ibrahim
Sura: 14
Verses :- 32-34
[ وَ سَخَّرَ لَکُمُ الۡفُلۡکَ لِتَجۡرِیَ فِی الۡبَحۡرِ بِاَمۡرِہٖ ۚ
Subjected for you the ships to sail through the
sea by His command.]
www.motaher21.net
Describing Some of Allah’s Tremendous Favors
Allah says;
اللّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالَارْضَ وَأَنزَلَ مِنَ السَّمَاء مَاء فَأَخْرَجَ بِهِ مِنَ الثَّمَرَاتِ رِزْقًا لَّكُمْ وَسَخَّرَ لَكُمُ الْفُلْكَ لِتَجْرِيَ فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ وَسَخَّرَ لَكُمُ الَانْهَارَ
Allah is He Who has created the heavens and the earth and sends down water (rain) from the sky, and thereby brought forth fruits as provision for you; and He has made the ships to be of service to you, that they may sail through the sea by His command; and He has made rivers (also) to be of service to you.
Allah mentions some of the favors He has done for His creatures, such as creating the heavens as a protective ceiling and the earth as a bed.
He also sends down rain from the sky and, in its aftermath brings forth a variety of vegetation, fruits and plants of different colors, shapes, tastes, scents and uses.
Allah also made the ships sail on the surface of the water by His command and He made the sea able to carry these ships in order that travelers can transfer from one area to another to transport goods.
Allah also created the rivers that flow through the earth from one area to another as provision for the servants which they use to drink and irrigate, and for other benefits.
وَسَخَّر لَكُمُ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ دَايِبَينَ
And He has made the sun and the moon, both constantly pursuing their courses, to be of service to you;
rotating by night and by day,
وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ
and He has made the night and the day to be of service to you.
Allah said in other Ayat,
لَا الشَّمْسُ يَنبَغِى لَهَأ أَن تدْرِكَ القَمَرَ وَلَا الَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِى فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
It is not for the sun to overtake the moon, nor does the night outstrip the day. They all float, each in an orbit. (36:40)
and,
يُغْشِى الَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَتٍ بِأَمْرِهِ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالاٌّمْرُ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَـلَمِينَ
He brings the night as a cover over the day, seeking it rapidly, and (He created) the sun, the moon, the stars subjected to His command. His is the creation and commandment. Blessed is Allah, the Lord of all that exists! (7:54)
The sun and the moon rotate in succession, and the night and the day are opposites, each taking from the length of the other or giving up some of its length,
يُولِجُ الَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِى الَّيْلِ
(Allah) merges the night into day, and merges the day into night. (35:13)
and,
وَسَخَّـرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُـلٌّ يَجْرِى لاًّجَـلٍ مُّسَـمًّى أَلا هُوَ الْعَزِيزُ الْغَفَّارُ
And He has subjected the sun and the moon. Each running (on a fixed course) for an appointed term. Verily, He is the Almighty, the Oft-Forgiving. (39:5)
Allah said next.
وَاتَاكُم مِّن كُلِّ مَا سَأَلْتُمُوهُ
And He gave you of all that you asked for,
He has prepared for you all that you need in all conditions, and what you ask Him to provide for you,
وَإِن تَعُدُّواْ نِعْمَتَ اللّهِ لَا تُحْصُوهَا
.
and if you (try to) count the blessings of Allah, never will you be able to count them.
Allah states that the servants are never able to count His blessings, let alone thank Him duly for them.
..
إِنَّ الاِنسَانَ لَظَلُومٌ كَفَّارٌ
Verily, man is indeed an extreme wrongdoer, ungrateful.
In Sahih Al-Bukhari it is recorded that the Messenger of Allah used to supplicate;
اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ غَيْرَ مَكْفِيَ وَلَا مُوَدَّعٍ وَلَا مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبَّنَا
O Allah! All praise is due to You, without being able to sufficiently thank You, nor ever wish to be cutoff from You, nor ever feeling rich from relying on You; our Lord!
It was reported that Prophet Dawud, peace be upon him, used to say in his supplication,
“O Lord! How can I ever duly thank You, when my thanking You is also a favor from You to me”
Allah the Exalted answered him, “Now, you have thanked Me sufficiently, O Dawud,”
meaning, `when you admitted that you will never be able to duly thank Me.