أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 771)
সুরা: ইব্রাহিম
সুরা:১৪
৪৪-৪৬ নং আয়াত:-
[ وَأَنذِرِ النَّاسَ
তুমি মানুষকে সতর্ক কর।
Warn the people.]
www.motaher21.net
وَ اَنۡذِرِ النَّاسَ یَوۡمَ یَاۡتِیۡہِمُ الۡعَذَابُ فَیَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا رَبَّنَاۤ اَخِّرۡنَاۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ۙ نُّجِبۡ دَعۡوَتَکَ وَ نَتَّبِعِ الرُّسُلَ ؕ اَوَ لَمۡ تَکُوۡنُوۡۤا اَقۡسَمۡتُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ مَا لَکُمۡ مِّنۡ زَوَالٍ ﴿ۙ۴۴﴾
সেদিন সম্পর্কে তুমি মানুষকে সতর্ক কর যেদিন তাদের শাস্তি আসবে, যখন সীমালংঘনকারীরা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে কিছু কালের জন্য অবকাশ দাও; আমরা তোমার আহবানে সাড়া দিব এবং রসূলদের অনুসরণ করব।’ (তখন তাদেরকে বলা হবে,) ‘তোমরা কি পূর্বে শপথ করে বলতে না যে, তোমাদের কোন পতন নেই?
And, [O Muhammad], warn the people of a Day when the punishment will come to them and those who did wrong will say, “Our Lord, delay us for a short term; we will answer Your call and follow the messengers.” [But it will be said], “Had you not sworn, before, that for you there would be no cessation?
وَّ سَکَنۡتُمۡ فِیۡ مَسٰکِنِ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ وَ تَبَیَّنَ لَکُمۡ کَیۡفَ فَعَلۡنَا بِہِمۡ وَ ضَرَبۡنَا لَکُمُ الۡاَمۡثَالَ ﴿۴۵﴾
তোমরা বাস করতে তাদের বাসভূমিতে যারা নিজেদের প্রতি যুলম করেছিল এবং তাদের প্রতি আমি কি করেছিলাম, তাও তোমাদের নিকট সুবিদিত ছিল এবং তোমাদের নিকট আমি দৃষ্টান্তও উপস্থিত করেছিলাম।’
And you lived among the dwellings of those who wronged themselves, and it had become clear to you how We dealt with them. And We presented for you [many] examples.”
وَ قَدۡ مَکَرُوۡا مَکۡرَہُمۡ وَ عِنۡدَ اللّٰہِ مَکۡرُہُمۡ ؕ وَ اِنۡ کَانَ مَکۡرُہُمۡ لِتَزُوۡلَ مِنۡہُ الۡجِبَالُ ﴿۴۶﴾
তারা ভীষণ চক্রান্ত করেছিল, অথচ আল্লাহর নিকট তাদের চক্রান্ত (জানা) ছিল। তাদের চক্রান্ত এমন ছিল না যাতে পর্বত টলে যেত।
And they had planned their plan, but with Allah is [recorded] their plan, even if their plan had been [sufficient] to do away with the mountains.
৪৪-৪৬ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মানব জাতিকে সেদিন সম্পর্কে সতর্ক করার নির্দেশ দিচ্ছেন যেদিন আযাব অবলোকন করার পর অপরাধীরা আল্লাহ তা‘আলার দরবারে ফরিয়াদ করে বলবে: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে কিছু কালের জন্য অবকাশ দাও, আমরা তোমার আহ্বানে সাড়া দেব এবং রাসূলগণের অনুসরণ করব।’ সে দিনটি হল কিয়ামতের দিন। কিন্তু সেদিন তাদেরকে কোনই অবকাশ দেয়া হবেনা।
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন
(فَيَقُوْلَ رَبِّ لَوْلَآ أَخَّرْتَنِيْ إِلٰٓي أَجَلٍ قَرِيْبٍ لا فَأَصَّدَّقَ وَأَكُنْ مِّنَ الصّٰلِحِيْنَ)
“(অন্যথায় মৃত্যু আসলে সে বলবে,) হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আরো কিছু কালের জন্য কেন অবকাশ দাও না? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।” (সূরা মুনাফিক্বুন ৬৩:১০)
তখন তাদেরকে কোন প্রকার অবকাশ না দিয়ে তাদের পূর্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হবে যে, তোমাদের কাছে সতর্ককারী হিসেবে রাসূল প্রেরণ করেছিলাম, তোমরা তার কথা শুননি। রাসূলদের কথাকে কাল্পনিক কথা বলে উড়িয়ে দিয়েছ আর বলেছ আমাদের কোন পতন হবে না, হিসাব-নিকাশ বা পুনরুত্থান বলতে কিছু নেই। সুতরাং আজকের দিনে আর কোন অবকাশ দেয়া হবে না, বরং তাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে।
(وَضَرَبْنَا لَكُمُ الْأَمْثَالَ)
অর্থাৎ উপদেশ গ্রহণ করার জন্য আমি তো পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের ঘটনা বর্ণনা করে দিয়েছি, যাদের বাড়ি-ঘরে এখন তোমরা বসবাস করছ এবং তাদের জীর্ণ বাড়ি-ঘরও তোমাদেরকে চিন্তা-ভাবনা করতে উদ্ধুদ্ধ করছে। যদি তোমরা এ থেকে উপদেশ গ্রহণ না কর এবং তাদের পরিণতি থেকে বাঁচার জন্য চিন্তা-ভাবনা না কর, তাহলে তোমরাও অনুরূপ পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকো।
(وَعِنْدَ اللّٰهِ مَكْرُهُمْ)
এটা অবস্থার বর্ণনামূলক বাক্য। অর্থাৎ আমি তাদের সাথে যা করার তা করলাম, অথচ অবস্থা এই যে, তারা বাতিলকে সাব্যস্ত এবং সত্যকে খণ্ডন করার জন্য সর্বশক্তি ব্যয়পূর্বক কৌশল ও চক্রান্ত করল। আর আল্লাহ তা‘আলার কাছে এসব চক্রান্তের জ্ঞান আছে যার শাস্তি তিনি তাদেরকেই দেবেন।
(لِتَزُوْلَ مِنْهُ الْجِبَالُ)
কেননা যদি পাহাড় টলে যেত তাহলে স্বস্থানে থাকতো না, অথচ সমস্ত পাহাড় স্ব-স্ব স্থানে অটল রয়েছে। إِنْ নেতিবাচক ما এর অর্থ। দ্বিতীয় অর্থ إِنْ মূলত انّ ছিল। অর্থাৎ নিশ্চয়ই তাদের চক্রান্ত এত বড় ছিল যে, তার ফলে পাহাড়ও স্বস্থান থেকে সরে যেত। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তাদের চক্রান্তকে সফল হতে দেননি।
সুতরাং আখিরাতের শাস্তি দেখে দুনিয়াতে আসার আবেদন করে লাভ হবে না, দুনিয়াতে থাকতেই আখিরাতের পাথেয় সংগ্রহ করে নিতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মৃত্যুর পর কোন আবেদন ও ওজর গ্রহণযোগ্য হবে না।
২. সঠিক নিয়মের অনুসরণ করতে হবে, কোন পূর্ব-পুরুষের অনুসরণে বাতিল নিয়মনীতির অনুসরণ করা যাবে না।
৩. আল্লাহ তা‘আলা পূর্ববর্তী ঘটনাবলী বর্ণনা করেছেন তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করার জন্য।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৪৪-৪৬ নং আয়াতের তাফসীর
যারা নিজেদের নফসের উপর যুলুম করেছে তারা শাস্তি অবলোকন করার পর যা বলবে সে সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন। তারা ঐ সময় বলবেঃ “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে কিছুকালের জন্যে অবকাশ দিন, এবার আমরা আপনার ডাকে সাড়া দিবো এবং রাসূলদেরও অনুগত থাকবো।” যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “শেষ পর্যন্ত যখন তাদের কারো মৃত্যু এসে পড়ে তখন বলেঃ হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আবার ফিরিয়ে দিন।” (২৩:৯৯)
আল্লাহ তাআলা আর এক জায়গায় বলেনঃ “হে মুমিনগণ! তোমাদের ঐশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণে উদাসীন না করে-যারা উদাসীন হবে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।
আমি তোমাদেরকে যে রিস্ক দিয়েছি তোমরা তা হতে ব্যয় করবে তোমাদের কারো মৃত্যু আসার পূর্বে; অন্যথায় মৃত্যু আসলে সে বলবেঃ “হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আরো কিছুকালের জন্যে অবকাশ দিলে আমি সাকা দিতাম এবং সৎকর্মপরায়ণ হতাম।” কিন্তু নির্ধারিত কাল যখন উপস্থিত হবে, কখনো কাউকেও অবকাশ দিবেন। না; তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত।” তাদেরহাশরের মাঠের অবস্থার খবর দিতে গিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “হায়, তুমি যদি দেখতে! যখন অপরাধীরা তাদের প্রতিপালকের সামনে অধোবদনহয়ে বলবেঃ
“হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা দেখলাম ও শুনলাম; এখন আপনি আমাদেরকে পুনরায় প্রেরণ করুন। আমরা সৎকর্ম করবো, আমরা তো দৃঢ় বিশ্বাসী।” আর এক আয়াতে রয়েছেঃ “হায়, তুমি যদি দেখতে! যখন তাদেরকে জাহান্নামের উপর দাঁড় করানো হবে তখন তারা বলবেঃ “হায়! যদি আমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হতো তবে আমরা আমাদের প্রতিপালকের আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতাম না।” আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবি) (৩৫:৩৭) এই আয়াতেও এই ধরনেরই কথা রয়েছে। এখানে তাদের এই কথার জবাবে বলা হয়েছেঃ “তোমরা কি পূর্বে শপথ করে বলতে না যে, তোমাদের পতন নেই কিয়ামত বলতে কিছুই নেই, মৃত্যুর পরে আর পুনরুত্থান হবে না? এখন ওর স্বাদ গ্রহণ কর।” অন্যত্র রয়েছেঃ “তারা খুব দৃঢ় শপথ করে অন্যদেরকেও বিশ্বাস করাতো যে, মৃতদেরকে আল্লাহ তাআ’লা পুনরায় জীবিত করবেন না।”
এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ “তোমরা বসবাস করতে তাদের বাসভূমিতে যারা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছিল এবং তাদের প্রতি আমি কি করেছিলাম তাও তোমাদের নিকট অবিদিত ছিল না, আর তোমাদের নিকট আমি তাদের দৃষ্টান্তও উপস্থিত করেছিলাম। এতদসত্ত্বেও তোমরা তাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছো না এবং সতর্ক হচ্ছ না। তারা যতই চতুর হোক না কেন, আল্লাহর সামনে তাদের কোন চালাকী খাটবে না।। আবদুর রহমান ইবনু রাবার (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, (আরবি) এই আয়াত সম্পর্কে হযরত আলী (রাঃ) বলেনঃ “যে ব্যক্তি হযরত ইবরাহীমের (আঃ) সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিল সে গৃধিনীর দুটি বাচ্চা নিয়ে পুষতে থাকে। যখন ওদুটি বড় হয়ে শক্তিশালী হয় তখন ঐ ব্যক্তি ওদের একটিকে একটি ছোট চৌকির একটি পায়ার সাথে বেঁধে দেয় এবং অপরটিকে বাঁধে আর একটি পায়ার সাথে। ওদেরকে কিছুই খেতে দেয় না। অতঃপর সে তার এক সঙ্গীকে নিয়ে এ চৌকির উপর বসে যায় এবং একটি লাঠির মাথায় একখণ্ড গোশত বেধে দিয়ে উপরের দিকে উঠিয়ে রাখে। ক্ষুধার্ত গৃধিনী দুটি ঐ গোশত খণ্ড খাওয়ার লোভে উপরের দিকে উড়তে শুরু করে এবং এতো শক্তির সাথে উড়ে যে চৌকিটিও ওদের সাথে উপরে উঠে যায়। যখন তারা এতো উপরে উঠেছে যে, সেখান থেকে ঐ লোক দুটি নীচের জিনিসগুলিকে মাছির মত দেখে তখন তারা ঐ লাঠি নীচের দিকে ঝুকিয়ে দেয়। ফলে গৃধিনী দ্বয় গোশত খণ্ড নীচের দিকে দেখতে পায়। সুতরাং তারা পালক সামটে নিয়ে গোশত খণ্ড ধরার লোভে নীচের দিকে নামতে থাকে। কাজেই চৌকিও নামতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত যমীনে নেমে পড়ে। সুতরাং এটাই হচ্ছে সেই চক্রান্ত যার ফলে পাহাড়ও টলে যাওয়া সম্ভব। হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) কিরআতে (আরবি) রয়েছে। হযরত আলী (রাঃ) , হযরত উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) এবং হযরত উমারেরও (রাঃ) কিরআত এটাই। এই ঘটনা হচ্ছে নমরূদের, যে কিনআ’নের বাদশাহ ছিল। সে এই চক্রান্তের মাধ্যমে আকাশকে দখল করতে। চেয়েছিল। তার পর কির্তীদের বাদশাহ ফিরাউনও এই রূপ বোকামী করেছিল। সে একটি উঁচু স্তম্ভ তৈরী করেছিল। কিন্তু উভয়ের মধ্যেই দুর্বলতা ও অপারগতা প্রকাশ পেয়েছিল এবং তারা পরাজিত, লাঞ্ছিত ও ঘৃণিত হয়েছিল।”
কথিত আছে যে, বাখতে না এই কৌশলে যখন নিজের চৌকিটি অনেক উর্ধ্বে নিয়ে যায়, এমনকি যমীন ও যমীনের অধিবাসী তার দৃষ্টি হতে অদৃশ্য হয়ে যায় তখন তার কাছে এক কুদতরী শব্দ আসেঃ “ওরে অবাধ্য ও বিদ্রোহী! তোর ইচ্ছা কি?” এই শব্দ শুনেই তো তার আক্কেল গুড়ুম। কিছুক্ষণ পর পুনরায় ঐ একই শব্দ তার কানে ভেসে আসে। তখন তো তার অন্তরাত্মা শুকিয়ে যায় এবং তাড়াতাড়ি সে তার বর্শা ঝুকিয়ে দিয়ে নীচের দিকে নামতে শুরু করে দেয়।
হযরত মুজাহিদের (রঃ) কিরআতে (আরবি) এর স্থলে (আরবি) রয়েছে। হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) (আরবি) কে (আরবি) নেতিবাচক ধরতেন। অর্থাৎ তাদের চক্রান্ত পর্বত সমূহকে টলাতে পারে না। হযরত হাসান বসরী (রাঃ) এটাই বলেন। ইবনু জারীর (রাঃ) এর ব্যাখ্যা এই দিয়েছেন যে, তাদের শিরক ও কুফরী পর্বতরাজি ইত্যাদিকে সরাতে পারে না এবং কোন ক্ষতি করতে পারে না। এই অপকর্মের বোঝা তাদের নিজেদেরকে বহন করতে হবে। আমি (ইবনু কাসীর (রাঃ) বলি যে, এর সাথে সাদৃশ্য যুক্ত হচ্ছে আল্লাহ তাআলার নিম্নের উক্তিটিঃ (আরবি) অর্থাৎ “তুমি পৃথিবীতে উদ্যতভাবে বিচরণ করো না, না তুমি যমীনকে। ফেড়ে ওর মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে, পর্বত সমূহের চূড়ায় পৌঁছতে পারবে।” (১৭:৩৭) হযরত ইবনু আব্বাসের (রাঃ) দ্বিতীয় উক্তি এই যে, তাদের শিরক পর্বত সমূহকে টলিয়ে দেয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “তাতে আকাশ সমূহ বিদীর্ণ হওয়ার উপক্রম হয়।” (১৯:৯০)। যহাক (রঃ) এবং কাতাদা’র (রঃ) উক্তিও এটাই।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Ibrahim
Sura: 14
Verses :- 44-46
[ وَأَنذِرِ النَّاسَ
Warn the people.]
www.motaher21.net
There will be no Respite after the Coming of the Torment
Allah said next to His Messenger,
وَأَنذِرِ النَّاسَ يَوْمَ يَأْتِيهِمُ الْعَذَابُ فَيَقُولُ الَّذِينَ ظَلَمُواْ
And warn mankind of the Day when the torment will come unto them; then the wrongdoers will say:
Allah mentions what those who committed injustice against themselves will say when they witness the torment,
رَبَّنَا أَخِّرْنَا إِلَى أَجَلٍ قَرِيبٍ نُّجِبْ دَعْوَتَكَ وَنَتَّبِعِ الرُّسُلَ
Our Lord! Respite us for a little while, we will answer Your call and follow the Messengers!
Allah said in other Ayat,
حَتَّى إِذَا جَأءَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُونِ
Until, when death comes to one of them, he says:”My Lord! Send me back.” (23:99)
and,
يأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُواْ لاأَ تُلْهِكُمْ أَمْوَلُكُمْ
O you who believe! Let not your properties divert you. (63:9-10)
Allah described the condition of the wrongdoers on the Day of Gathering, when He said,
وَلَوْ تَرَى إِذِ الْمُجْرِمُونَ نَاكِسُواْ رُءُوسِهِمْ
And if you only could see when the criminals shall hang their heads. (32:12)
وَلَوْ تَرَى إِذْ وُقِفُواْ عَلَى النَّارِ فَقَالُواْ يلَيْتَنَا نُرَدُّ وَلَا نُكَذِّبَ بِـَايَـتِ رَبِّنَا
If you could but see when they will be held over the Fire! They will say:”Would that we were but sent back (to the world)! Then we would not deny the Ayat of Our Lord. ..”! (6:27)
and,
وَهُمْ يَصْطَرِخُونَ فِيهَا
Therein they will cry. (35:27)
Allah refuted their statement here,
أَوَلَمْ تَكُونُواْ أَقْسَمْتُم مِّن قَبْلُ مَا لَكُم مِّن زَوَالٍ
Had you not sworn aforetime that you would not leave.)
Allah says, `Had you not vowed before, that your previous state will not change, that there will be no Resurrection or Reckoning! Therefore, taste this torment because of what you vowed before.’
Mujahid commented that,
مَا لَكُم مِّن زَوَالٍ
(that you would not leave),
refers to leaving this worldly life to the Hereafter.
Allah also said,
وَأَقْسَمُواْ بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمَـنِهِمْ لَا يَبْعَثُ اللَّهُ مَن يَمُوتُ
And they swear by Allah with their strongest oaths, that Allah will not raise up him who dies. (16:38)
Allah said next,
وَسَكَنتُمْ فِي مَسَـاكِنِ الَّذِينَ ظَلَمُواْ أَنفُسَهُمْ وَتَبَيَّنَ لَكُمْ كَيْفَ فَعَلْنَا بِهِمْ وَضَرَبْنَا لَكُمُ الَامْثَالَ
And you dwelt in the dwellings of men who wronged themselves, and it was clear to you how We had dealt with them. And We put forth (many) parables for you.
Allah says, `you have witnessed or heard of the news of what happened to the earlier disbelieving nations, but you did not draw a lesson from their end, nor did what We punished them with provide an example for you,’
حِكْمَةٌ بَـلِغَةٌ فَمَا تُغْنِـى النُّذُرُ
Perfect wisdom but the warners benefit then not. (54:5)
وَقَدْ مَكَرُواْ مَكْرَهُمْ وَعِندَ اللّهِ مَكْرُهُمْ وَإِن كَانَ مَكْرُهُمْ لِتَزُولَ مِنْهُ الْجِبَالُ
Indeed, they planned their plot, and their plot was with Allah, though their plot was not such as to remove the mountains from their places.
Shu`bah narrated that Abu Ishaq said that Abdur-Rahman bin Dabil said that Ali bin Abi Talib commented on Allah’s statement,
وَإِن كَانَ مَكْرُهُمْ لِتَزُولَ مِنْهُ الْجِبَالُ
(though their plot was not such as to remove the mountains from their places),
“He who disputed with Ibrahim about his Lord, took two eaglets and raised them until they became adult eagles. Then he tied each eagle’s leg to a wooden box with ropes and left them go hungry. He and another man sat inside the wooden box and raised a staff with a piece of meat on its tip. So, the two eagles started flying. The king asked his companion to tell him what he was seeing, and he described the scenes to him, until he said that he saw the earth as a fly. So, the king brought the staff closer to the eagles and they started landing slowly. This is why Allah said,
وَإِن كَانَ مَكْرُهُمْ لِتَزُولَ مِنْهُ الْجِبَالُ
`though their plot was hardly one to remove the mountains from their places.”‘
Mujahid also mentioned that;
this story was about Nebuchadnezzar, and that when the king’s sight was far away from earth and its people, he was called, `O tyrant one! Where are you headed to!’ He became afraid and brought the staff closer to the eagles, which flew faster with such haste that the mountains almost shook from the noise they made. The mountains were almost moved from their places, so Allah said,
وَإِن كَانَ مَكْرُهُمْ لِتَزُولَ مِنْهُ الْجِبَالُ
(though their plot was not such as to remove the mountains from their places).”
Ibn Jurayj narrated that Mujahid recited this Ayah in a way that means,
“though their plot was such as to remove the mountains from their places.”
However, Al-Awfi reported that Ibn Abbas said that,
وَإِن كَانَ مَكْرُهُمْ لِتَزُولَ مِنْهُ الْجِبَالُ
(though their plot was not such as to remove the mountains from their places),
indicates that their plot was not such as to remove the mountains from their places.
Similar was said by Al-Hasan Al-Basri.
Ibn Jarir reasoned that,
“Associating others with Allah and disbelieving in Him, which they brought upon themselves, did not bother the mountains nor other creatures. Rather, the harm of their actions came to haunt them.”
I (Ibn Kathir) said, this meaning is similar to Allah’s statement,
وَلَا تَمْشِ فِى الاٌّرْضِ مَرَحًا إِنَّكَ لَن تَخْرِقَ الاٌّرْضَ وَلَن تَبْلُغَ الْجِبَالَ طُولاً
And walk not on the earth with conceit and arrogance. Verily, you can neither rend nor penetrate the earth, nor can you attain a stature like the mountains in height. (17:37)
There is another way of explaining this Ayah;
Ali bin Abi Talhah reported that Ibn Abbas said that,
وَإِن كَانَ مَكْرُهُمْ لِتَزُولَ مِنْهُ الْجِبَالُ
(though their plot was not such as to remove the mountains from their places),
refers to their Shirk, for Allah said in another Ayah,
تَكَادُ السَّمَـوَتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ
Whereby the heavens are almost torn. (19:90)
Ad-Dahhak and Qatadah said similarly.