أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 776)
সুরা: হিজর
সুরা:১৫
১০-১৫ নং আয়াত:-
[ إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا
‘আমাদের দৃষ্টিভ্রম ঘটানো হয়েছে;
Our eyes have been (as if) dazzled.]
www.motaher21.net
وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ قَبۡلِکَ فِیۡ شِیَعِ الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۱۰﴾ অবশ্যই তোমার পূর্বে আমি অনেক সম্প্রদায়ের নিকট রসূল পাঠিয়েছিলাম।
And We had certainly sent [messengers] before you, [O Muhammad], among the sects of the former peoples.
وَ مَا یَاۡتِیۡہِمۡ مِّنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا کَانُوۡا بِہٖ یَسۡتَہۡزِءُوۡنَ ﴿۱۱﴾
তাদের নিকট এমন কোন রসূল আসেনি, যাকে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত না।
And no messenger would come to them except that they ridiculed him.
کَذٰلِکَ نَسۡلُکُہٗ فِیۡ قُلُوۡبِ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿ۙ۱۲﴾
এভাবে আমি অপরাধীদের অন্তরে তা সঞ্চার করি।
Thus do We insert denial into the hearts of the criminals.
لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِہٖ وَ قَدۡ خَلَتۡ سُنَّۃُ الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۱۳﴾
তারা কুরআনে বিশ্বাস করবে না। আর অবশ্যই পূর্ববর্তিগণের রীতি গত হয়েছে।
They will not believe in it, while there has already occurred the precedent of the former peoples.
وَ لَوۡ فَتَحۡنَا عَلَیۡہِمۡ بَابًا مِّنَ السَّمَآءِ فَظَلُّوۡا فِیۡہِ یَعۡرُجُوۡنَ ﴿ۙ۱۴﴾
যদি তাদের জন্য আমি আকাশের কোন দুয়ার খুলে দিই এবং তারা তাতে চড়তেও থাকে।
And [even] if We opened to them a gate from the heaven and they continued therein to ascend,
لَقَالُوۡۤا اِنَّمَا سُکِّرَتۡ اَبۡصَارُنَا بَلۡ نَحۡنُ قَوۡمٌ مَّسۡحُوۡرُوۡنَ ﴿٪۱۵﴾
তবুও তারা বলবে, ‘আমাদের দৃষ্টিভ্রম ঘটানো হয়েছে; বরং আমরা এক যাদুগ্রস্ত সম্প্রদায়।’
They would say, “Our eyes have only been dazzled. Rather, we are a people affected by magic.”
সুরা: হিজর
সুরা:১৫
১০-১৫ নং আয়াত:-
[ إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا
‘আমাদের দৃষ্টিভ্রম ঘটানো হয়েছে;
Our eyes have been (as if) dazzled.]
www.motaher21.net
১০-১৫ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
উক্ত আয়াতগুলোতে মূলত দুটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে ১. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা দেয়া হয়েছে, ২. প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল প্রেরণ করা হয়েছিল এবং সে জাতির অবাধ্য লোকেরা রাসূলদের সাথে যে আচরণ করেছে তার বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। মক্কার কাফির-মুশরিকরা যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, পাগল, কবি, জ্যোতিষী ও জিন আক্রান্ত ইত্যাদি বলে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করতে লাগল তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! মানুষ তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কারণ, তোমার পূর্ববর্তী নাবীদেরকেও অনুরূপভাবে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল এবং তাদেরকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করেছিল।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(يَا حَسْرَةً عَلَي الْعِبَادِ ج مَا يَأْتِيْهِمْ مِّنْ رَّسُوْلٍ إِلَّا كَانُوْا بِه۪ يَسْتَهْزِئُوْنَ)
“আফসোস বান্দাদের জন্য! তাদের কাছে কখনও এমন কোন রাসূল আসেনি, যাকে নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করেনি।” (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩০)
شِيَعِ শব্দটি شيعة এর বহুবচন। অর্থ দল, গোত্র, জাতি ইত্যাদি।
نَسْلُكُ অর্থ বদ্ধমূল করে দেয়া। অর্থাৎ এভাবেই আল্লাহ তা‘আলা অপরাধীদের অন্তরে আল্লাহ তা‘আলার সাথে কুফরী করা ও নাবীদের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করা বদ্ধমূল করে দিয়েছেন। এটা তাদের কর্মের ফল, কারণ তাদের কাছে কোন নাবী হিদায়াতের বাণী নিয়ে আগমন করলে তা গ্রহণ করার পরিবর্তে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করত। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: যেমন পূর্ববর্তী জাতির অন্তরে রাসূলদের সাথে বিদ্রƒপ করা ও তাদের নিয়ে ঠাট্টা করা বদ্ধমূল করে দিয়েছিলাম তেমনি মক্কার মুশরিকদের অন্তরে বদ্ধমূল করে দিয়েছি, ফলে তারা ঈমান আনবে না। সুতরাং পূর্ববর্তীদের ক্ষেত্রে যে রীতি অতীত হয়ে গেছে তথা অবাধ্যতার পরিণামে শাস্তি দেয়া তেমনি তাদের ক্ষেত্রেও সে রীতি প্রযোজ্য হবে।
মক্কার মুশরিকরা অসংখ্য নিদর্শন ও মুজিযাহ দেখার পরেও ঈমান আনবে না, তারই একটি উপমা দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমি যদি আকাশের দরজা খুলে দিয়ে তাদেরকে উপরে ওঠার সুযোগ করে দিই, তাহলে তারা বলবে আমাদেরকে জাদু করা হয়েছে, আমাদের দৃষ্টিভ্রম করা হয়েছে। আমরা যা দেখছি তা বাস্তব নয়, কল্পনার জগতে রয়েছি। তাই আল্লাহ তা‘আলা তাদের অন্তরকে পূর্ববর্তী অবাধ্য জাতির মত কুফরী, ভ্রষ্টতা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করা ইত্যাদি দিয়ে বদ্ধমূল করে দিয়েছেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সকল জাতির নিকটেই সতর্ককারীস্বরূপ রাসূল পাঠানো হয়েছে।
২. রাসূলদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করা এবং সত্য বর্জন করা কাফিরদের পুরাতন অভ্যাস।
৩. সঠিক জিনিস জানার পর তা গ্রহণ করার ব্যাপারে ওযর-আপত্তি পেশ করা যাবে না।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
#সাধারণত অনুবাদক ও তাফসীরকারগণ نَسْلُكُهُ (আমি তাকে প্রবেশ করাই বা চালাই) এর মধ্যকার সর্বনামটিকে يَسْتَهْزِئُونَ (বিদ্রূপ) এর সাথে এবং لَا يُؤْمِنُونَ بِهِ (তারা এর প্রতি ঈমান আনে না) এর মধ্যকার সর্বনামটিকে ذكر এর সাথে সংযুক্ত করেছেন। তারা এর অর্থ এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ “আমি এভাবে এ বিদ্রূপকে অপরাধীদের অন্তরে প্রবেশ করিয়ে দেই এবং তারা এ বাণীর প্রতি ঈমান আনে না।” যদিও ব্যাকরণের নিয়ম অনুযায়ী এতে কোন ত্রুটি নেই, তবুও ব্যাকরণের নিয়ম অনুযায়ী উভয় সর্বনামই “যিকির” বা বাণীর সাথে সংযুক্ত হওয়াই আমার কাছে বেশী নির্ভুল বলে মনে হয়।
আরবী ভাষায় سَلَكَ শব্দের অর্থ হচ্ছে কোন জিনিসকে অন্য জিনিসের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া, অনুপ্রবেশ করানো, চালিয়ে দেয়া বা গলিয়ে দেয়া। যেমন সুঁইয়ের ছিদ্রে সূতো গলিয়ে দেয়া হয়। কাজেই এ আয়াতের অর্থ হচ্ছে, ঈমানদারদের মধ্যে তো এই “বাণী” হৃদয়ের শীতলতা ও আত্মার খাদ্য হয়ে প্রবেশ করে। কিন্তু অপরাধীদের অন্তরে তা বারুদের মত আঘাত করে এবং তা শুনে তাদের মনে এমন আগুন জ্বলে ওঠে যেন মনে হয় একটি গরম শলাকা তাদের বুকে বিদ্ধ হয়ে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
১০-১৫ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবীকে (সঃ) সান্তনা দিয়ে বলছেনঃ “হে নবী (সঃ)! মানুষ তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে এতে বিস্ময়ের কিছুই নেই কারণ, তোমার পূর্ববর্তী নবীদেরকেও অনুরূপভাবে মিথ্যা প্রতিপন্ন করাহয়েছিল। প্রত্যেক রাসূলকেই তার উম্মতের লোক মিথ্যাবাদী বলেছিল এবং সে তাদের কাছে উপহাসের পাত্র হয়েছিল।
মহান আল্লাহ বলেনঃ হঠকারিতা ও অহংকারের কারণে আমি অপরাধ ও পাপীদের অন্তরে রাসূলদের অবিশ্বাস ও মিথ্যা প্রতিপন্ন করার খেয়াল জাগিয়ে তুলি। তাতেই তখন তারা মজা ও আনন্দ উপভোগ করে। এখানে মুজরিম বা অপরাধীদের দ্বারা মুশরিকদের বুঝানো হয়েছে। তারা সত্যকে বিশ্বাস করতেই চায় না। আল্লাহ পাক বলেন যে, পূর্ববর্তীদের আচরণ তাদের মধ্যে এসে গেছে। সুতরাং তাদের পরিণাম তাদের পূর্ববর্তীদের মতই হবে। যেমন তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল এবং তাদের নবীরা মুক্তি পেয়েছিলেন ও মু’মিনরা নিরাপত্তা লাভ করেছিল, তেমনই অবস্থা এদেরও হবে এটা তাদের স্মরণ রাখা উচিত। নবীর (সঃ) অনুসরণেই রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ, আর তাঁর বিরুদ্ধাচরণেই রয়েছে উভয় জগতে লাঞ্ছণা ও অপমান।
# আল্লাহ তাআলা তাদের অবাধ্যতা, হঠকারিতা এবং আত্মগর্বের খবর দিতে গিয়ে বলেন যে, যদি তাদের জন্যে আকাশের দরজা খুলে দেয়াও হয় এবং সেখানে তাদেরকে চড়িয়ে দেয়াও হয় তবুও তারা সত্যকে সত্য বলেস্বীকার করবে না। বরং তখনও তারা চীৎকার করে বলবে যে, তাদের ন্যরবন্দী করা হয়েছে, চক্ষুগুলি সম্মোহিত করা হয়েছে, যাদু করা হয়েছে, প্রতারিত করা হয়েছে এবং বোকা বানিয়ে দেয়া হয়েছে।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Al-Hijr
Sura: 15
Verses :- 10-15
[ إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا
Our eyes have been (as if) dazzled.]
The Idolators of Every Nation made a Mockery of their Messengers
Allah says,
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ فِي شِيَعِ الَاوَّلِينَ
وَمَا يَأْتِيهِم مِّن رَّسُولٍ إِلاَّ كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِوُونَ
Indeed, We sent (Messengers) before you (O Muhammad) amongst the earlier communities. And there never came a Messenger to them but that they mocked him.
Consoling His Messenger for the rejection of the disbelieving Quraysh, Allah says that He has sent Messengers before him to the nations of the past, and no Messenger came to a nation but they rejected him and mocked him.
Then He tells him that He lets disbelief enter the hearts of those sinners who are too stubborn and too arrogant to follow His guidance.
كَذَلِكَ نَسْلُكُهُ فِي قُلُوبِ الْمُجْرِمِينَ
Thus We allow it to enter the hearts of the guilty.
Anas and Al-Hasan Al-Basri said that this referred to Shirk.
لَا يُوْمِنُونَ بِهِ
They would not believe in it (the Qur’an);
وَقَدْ خَلَتْ سُنَّةُ الَاوَّلِينَ
and already the example of the ancients has gone forth.
meaning the destruction wrought by Allah on those who rejected His Messengers, and how He saved His Prophets and their followers in this world and in the Hereafter, is well known.
The Stubborn Disbelievers will never believe, no matter what Signs and Wonders They see
Allah says,
وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًا مِّنَ السَّمَاء فَظَلُّواْ فِيهِ يَعْرُجُونَ
لَقَالُواْ إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌ مَّسْحُورُونَ
And even if We opened to them a gate to the heavens and they were to continue ascending through it (all day long). They would surely say (in the evening):”Our eyes have been (as if) dazzled (we have not seen any angel or heaven). Nay, we are a people bewitched.”
Allah explains the extent of their disbelief and stubborn resistance to the truth by stating that even if a door to heaven were to be opened for them, and they were to be taken up through it, they would still not believe. Rather, they would say:
إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا
Our eyes have been (as if) dazzled.
Mujahid, Ibn Kathir and Ad-Dahhak said,
“this means our vision has been blocked.”
Qatadah narrated that Ibn Abbas said,
“this means our eyesight has been taken away.”
Al-Awfi reported that Ibn Abbas said,
“this means we were confused and put under a spell.”
سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا
Our eyes have been (as if) dazzled.
Ibn Zayd said:
“The one who is dazzled (lit. intoxicated) is the one who cannot reason.