(Book# 798) সুরা: আন- নহল সুরা:১৬ ৩৩-৩৪ নং আয়াত:- [ مَّا كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِوُونَ তাদেরকে পরিবেষ্টন করেছিল তাই, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত। By that which they used to mock.] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 798)
সুরা: আন- নহল
সুরা:১৬
৩৩-৩৪ নং আয়াত:-
[ مَّا كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِوُونَ
তাদেরকে পরিবেষ্টন করেছিল তাই, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত।
By that which they used to mock.]
www.motaher21.net
ہَلۡ یَنۡظُرُوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ تَاۡتِیَہُمُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ اَوۡ یَاۡتِیَ اَمۡرُ رَبِّکَ ؕ کَذٰلِکَ فَعَلَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ ؕ وَ مَا ظَلَمَہُمُ اللّٰہُ وَ لٰکِنۡ کَانُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۳۳﴾
তারা তো শুধু তাদের কাছে ফিরিশতা আসার প্রতীক্ষা করে অথবা আপনার রবের নির্দেশ আসার। তাদের পূর্ববর্তীরা এরূপই করত । আর আল্লাহ্‌ তাদের প্রতি কোন যুলুম করেননি, কিন্তু তারাই নিজেদের প্রতি যুলুম করত।
Do the disbelievers await [anything] except that the angels should come to them or there comes the command of your Lord? Thus did those do before them. And Allah wronged them not, but they had been wronging themselves.
فَاَصَابَہُمۡ سَیِّاٰتُ مَا عَمِلُوۡا وَ حَاقَ بِہِمۡ مَّا کَانُوۡا بِہٖ یَسۡتَہۡزِءُوۡنَ ﴿٪۳۴﴾
সুতরাং তাদের প্রতি আপতিত হয়েছিল তাদেরই মন্দ কর্মের শাস্তি এবং তাদেরকে পরিবেষ্টন করেছিল তাই, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত।
So they were struck by the evil consequences of what they did and were enveloped by what they used to ridicule.

সুরা: আন- নহল
সুরা:১৬
৩৩-৩৪ নং আয়াত:-
[ مَّا كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِوُونَ
তাদেরকে পরিবেষ্টন করেছিল তাই, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত।
By that which they used to mock.]
www.motaher21.net

৩৩-৩৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদেরকে ধমকের সুরে বলছেন: তারা কি শুধু ঐ ফেরেশতাদের অপেক্ষা করছে যারা তাদের রূহ কবয করার জন্য আগমন করবে অথবা তারা আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি বা কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থার অপেক্ষা করছে। এদের অবস্থাও এদের পূর্ববর্তী মুশরিকদের মতই, শেষ পর্যন্ত যাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি এসে পড়ে। আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় হুজ্জত পূর্ণ করত তাদের কাছে কিতাব এবং রাসূল প্রেরণ করেন। আর এভাবে তিনি তাদের ওযর শেষ করে দেন। এর পরেও যখন তারা অস্বীকৃতি ও হঠকারিতার ওপর রয়েই গেল তখন তিনি তাদের ওপর শাস্তি অবতীর্ণ করেন। রাসূলদের ভীতি প্রদর্শনকে তারা ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করে উড়িয়ে দেয়। যার ফলে এর শাস্তি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর জুলুম করেননি, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছিল। এ জন্যই কিয়ামতের দিন তাদেরকে বলা হবে: এটাই হচ্ছে ঐ আগুন যাকে তোমরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. পাপের কারণে শাস্তি প্রাপ্ত হলে তা জুলুম মনে করা যাবে না।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন‌ বলেছেন:-
উপদেশ ও সতর্কবাণী হিসেবে একথা কয়টি বলা হচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে, যতদূর বুঝাবার ব্যাপার ছিল তুমি তো প্রত্যেকটি সত্যকে উন্মুক্ত করে বুঝিয়ে দিয়েছো। যুক্তির সাহায্যে তার সত্যতা প্রমাণ করে দিয়েছো। বিশ্ব-জাহানের সমগ্র ব্যবস্থা থেকে এর পক্ষে সাক্ষ্য উপস্থাপন করেছো। কোন বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তির জন্য শিরকের ওপর অবিচল থাকার কোন অবকাশই রাখোনি। এখন এরাই একটি সরল সোজা কথা মেনে নেবার ব্যাপারে ইতস্তত করছে কেন? এরা কি মউতের ফেরেশতার অপেক্ষায় আছে? এ ফেরেশতা সামনে এসে গেলে তখন জীবনের শেষ মুহূর্তে কি এরা তা মেনে নেবে? অথবা আল্লাহর আযাব সামনে এসে গেলে তার প্রথম আঘাতের পর তা মেনে নেবে?

ফী জিলালিল কুরআন‌ বলেছেন:-

*আল্লাহ তায়ালা কারাে ওপর অবিচার করেন না : মৃত্যুকালীন অবস্থা ও পরকালীন অবস্থার উল্লেখিত বর্ণনার পটভূমিতে আল্লাহ কোরায়শ মােশরেকদের কাছে প্রশ্ন রাখছেন, তারা কিসের অপেক্ষায় আছে? ফেরেশতারা এসে তাদের প্রাণ সংহার করে নিয়ে যাক এটার অপেক্ষায়, না আল্লাহর হুকুম এসে কেয়ামত সংঘটিত করুক এবং তার হিসাব নিকাশের জন্যে পুনরুজ্জীবিত হােক, এর অপেক্ষায়? তারা মৃত্যুর অপেক্ষায়ই থাক বা কেয়ামতের অপেক্ষায়ই থাকুক, তাদের পূর্বে যারা ইসলামের দাওয়াত প্রত্যাখান করেছে, তারা কি সেই পরিণতির সম্মুখীন হয়নি? তারা তাে এ উভয় পরিণতি দেখেছে এবং তা শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে রয়েছে, ‘তারা কি ফেরেশতাদের আগমন অথবা তােমার প্রভুর হুকুমের আগমন ছাড়া আর কিছুর অপেক্ষায় আছে? তাদের পূর্ববর্তীরাও অনুরূপ অপেক্ষায় থাকতাে। আল্লাহ তাদের ওপর যুলুম করেননি। বরং তারাই নিজেদের ওপর যুলুম করতাে। অবশেষে তাদের অপকর্মগুলাে তাদেরকে আক্রান্ত করেছে এবং তারা যে জিনিসকে উপহাস করতাে, সেই জিনিসই তাদেরকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে।'(আয়াত ৩৩-৩৪) মানুষের আচরণ বড়ই বিস্ময়কর। অতীতে যারা তাদেরই মতাে আচরণ করেছে। তাদের অশুভ পরিণতি দেখেও তারা অসংযত আচরণ করে যেতে থাকে এবং একথা ভেবেও দেখে না যে, তাদের যে পরিণতি হয়েছে সে ধরনের পরিণতি তাদেরও হতে পারে। তারা বুঝতেই পারে না যে আল্লাহর পরিচালিত বিশ্ব ব্যবস্থা একটা শাশ্বত প্রাকৃতিক বিধি অনুসারেই চলে, একটা নির্দিষ্ট কর্মকারণের নির্দিষ্ট ফলই দেখা দিয়ে থাকে এবং নির্দিষ্ট কর্মের নির্দিষ্ট কর্মফল অবধারিত। আল্লাহর প্রাকৃতিক বিধি কখনো তাদের সাথে স্বজনপ্রীতি দেখাবে না এবং কখনাে তাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করবে না। ‘আল্লাহ তাদের ওপর যুলুম করেননি, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর যুলুম করতাে।’ অর্থাৎ আল্লাহ তাদেরকে চিন্তাশক্তি, বােধশক্তি ও ভালাে-মন্দ বাছ-বিচারের ক্ষমতা দিয়েছেন, তাদের সামনে প্রাকৃতিক জগতের ও তাদের নিজ সত্ত্বার নিদর্শনাবলী তুলে ধরেছেন, তাদেরকে কোন কাজের কী পরিণাম তা জানিয়ে দিয়েছেন এবং তাদেরকে তাদের কর্মফল ও প্রচলিত প্রাকৃতিক বিধির হাতে ছেড়ে দিয়েছেন। তাদের অবধারিত পরিণতির ব্যাপারে আল্লাহ তাদের ওপর যুলম করেননি, বরং তারা নিজেরাই সেই পরিণতি ডেকে আনার ব্যবস্থা করে নিজেদের ওপর যুলুম করেছে। আল্লাহ তায়ালা তাদের কর্মফল দিয়ে তাদের সাথে কোনাে নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেননি। তাদের ওপর যদি নিষ্ঠুরতা দেখানাে হয়েই থাকে, তবে তা দেখিয়েছে তাদেরই কু-কর্মগুলাে। কেননা তারা ওই সব অপকর্মেরই স্বাভাবিক ফল ভােগ করেছে। অবশেষে তাদের পাপাচার তাদেরকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে। এ ধরনের বক্তব্য গভীর তাৎপর্যবহ। এর মর্ম এই যে তাদের ব্যক্তিগত কাজের ফল ছাড়া অন্য কোনাে কারণেই তাদেরকে শাস্তি দেয়া হয় না। তাদের আচরণের স্বয়ংক্রিয় ফলই তারা ভােগ করে-অন্য কিছু নয়। নিজেদের অসৎকর্ম দ্বারা তারা নিজেরাই মানবেতর পর্যায়ে নেমে যায়। তাই মানবেতর পর্যায়ের অবমাননাকর ও কষ্টদায়ক শাস্তিও তাদের প্রাপ্য এবং সেটাই তারা ভােগ করে।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৩৩-৩৪ নং আয়াতের তাফসীর

আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের ধমকের সুরে বলছেনঃ “তারা তো শুধু ঐ ফেরেশতাদের অপেক্ষা করছে যারা তাদের রূহ কব্য করার জন্যে আগমন। করবে অথবা তারা কিয়ামতের অপেক্ষা করছে এবং অপেক্ষা করছে ওর ভয়াবহ অবস্থার। এদের মতই এদের পূর্ববর্তী মুশরিকদের অবস্থাও ছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের উপর আল্লাহর শাস্তি এসে পড়ে। আল্লাহ তাআলা স্বীয় হুজ্জত পূর্ণ করতঃ তাদের কাছে কিতাব এবং রাসূল প্রেরণ করেন। এইভাবে তিনি তাদের ওযর শেষ করে দেন। এর পরেও যখন তারা অস্বীকৃতি ও হঠকারিতার উপর রয়েই গেল তখন তিনি তাদের উপর শাস্তি অবতীর্ণ করেন। রাসুলদের ভীতি প্রদর্শনকে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে উড়িয়ে দেয়। সুতরাং এর শাস্তি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে। আল্লাহ তাদের উপর যুলুম করেন নাই, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের উপর যুলুম করেছিল। এজন্যেই কিয়ামতের দিন তাদেরকে বলা হবেঃ “এটাই হচ্ছে ঐ আগুন যাকে তোমরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে।”

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- An-Nahl
Sura: 16
Verses :- 33-34
مَّا كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِوُونَ ]
By that which they used to mock.]
www.motaher21.net
The Disbelievers’ Refrain from Faith means that They were simply awaiting Punishment

Allah says:

هَلْ يَنظُرُونَ إِلاَّ أَن تَأْتِيَهُمُ الْمَليِكَةُ أَوْ يَأْتِيَ أَمْرُ رَبِّكَ

Are they but waiting for the angels to come to them, or there comes the command of your Lord!

Threatening the idolators for their persistence in falsehood and their conceited delusions about this world, Allah says:Are these people waiting only for the angels to come and take their souls!

Qatadah said:
أَوْ يَأْتِيَ أَمْرُ رَبِّكَ
(Or there comes the command of your Lord),

“means the Day of Resurrection and the terror that they will go through.”

كَذَلِكَ فَعَلَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ

Thus did those before them.

means, thus did their predecessors and those who were like them among the idolators persist in their Shirk, until they tasted the wrath of Allah and experienced the punishment and torment that they suffered.

وَمَا ظَلَمَهُمُ اللّهُ

And Allah did not wrong them.

because by sending His Messengers and revealing His Books He gave them enough warning and clearly demonstrated His proofs to them.

وَلـكِن كَانُواْ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ

but they were wronging themselves.

meaning, by opposing the Messengers and denying what they brought.

فَأَصَابَهُمْ سَيِّيَاتُ مَا عَمِلُواْ

Then, they were afflicted by their evil deeds,

For this reason Allah’s punishment tormented them.

وَحَاقَ بِهِم

and they were surrounded,

meaning, they were overwhelmed by the painful torment.

مَّا كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِوُونَ

by that which they used to mock.

meaning, they used to make fun of the Messengers when they warned them Allah’s punishment, and for this it will be said to them on the Day of Resurrection:

هَـذِهِ النَّارُ الَّتِى كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ

This is the Fire which you used to belie. (52:14).

Leave a Reply