أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 807)
সুরা: আন- নহল
সুরা:১৬
৬১-৬২ নং আয়াত:-
[ وَ لَوۡ یُؤَاخِذُ اللّٰہُ النَّاسَ بِظُلۡمِہِمۡ
আল্লাহ যদি মানুষকে তাদের সীমালংঘনের জন্য শাস্তি দিতেন,
If Allah were to impose blame on the people for their wrongdoing, ]
www.motaher21.net
وَ لَوۡ یُؤَاخِذُ اللّٰہُ النَّاسَ بِظُلۡمِہِمۡ مَّا تَرَکَ عَلَیۡہَا مِنۡ دَآبَّۃٍ وَّ لٰکِنۡ یُّؤَخِّرُہُمۡ اِلٰۤی اَجَلٍ مُّسَمًّی ۚ فَاِذَا جَآءَ اَجَلُہُمۡ لَا یَسۡتَاۡخِرُوۡنَ سَاعَۃً وَّ لَا یَسۡتَقۡدِمُوۡنَ ﴿۶۱﴾
আল্লাহ যদি মানুষকে তাদের সীমালংঘনের জন্য শাস্তি দিতেন, তাহলে ভূপৃষ্ঠে কোন জীব-জন্তুকেই রেহাই দিতেন না, কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন; অতঃপর যখন তাদের সময় আসে, তখন তারা মুহূর্তকালও বিলম্ব অথবা অগ্রগামী করতে পারে না।
And if Allah were to impose blame on the people for their wrongdoing, He would not have left upon the earth any creature, but He defers them for a specified term. And when their term has come, they will not remain behind an hour, nor will they precede [it].
وَ یَجۡعَلُوۡنَ لِلّٰہِ مَا یَکۡرَہُوۡنَ وَ تَصِفُ اَلۡسِنَتُہُمُ الۡکَذِبَ اَنَّ لَہُمُ الۡحُسۡنٰی ؕ لَا جَرَمَ اَنَّ لَہُمُ النَّارَ وَ اَنَّہُمۡ مُّفۡرَطُوۡنَ ﴿۶۲﴾
আর যা তারা অপছন্দ করে তা-ই তারা আল্লাহ্র প্রতি আরোপ করে। তাদের জিহ্বা মিথ্যা বর্ণনা করে যে, মঙ্গল তো তাদেরই জন্য । নিঃসন্দেহে তাদের জন্য আছে আগুন, আর নিশ্চয় তাদেরকেই সবার আগে তাতে নিক্ষেপ করা হবে।
And they attribute to Allah that which they dislike, and their tongues assert the lie that they will have the best [from Him]. Assuredly, they will have the Fire, and they will be [therein] neglected.
সুরা: আন- নহল
সুরা:১৬
৬১-৬২ নং আয়াত:-
[ وَ لَوۡ یُؤَاخِذُ اللّٰہُ النَّاسَ بِظُلۡمِہِمۡ
আল্লাহ যদি মানুষকে তাদের সীমালংঘনের জন্য শাস্তি দিতেন,
If Allah were to impose blame on the people for their wrongdoing, ]
www.motaher21.net
৬১-৬২ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দয়া, অনুগ্রহ ও ধৈর্য সম্পর্কে অবগত করছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা মানুষের অপরাধের কারণে তাদেরকে সাথে সাথে শাস্তি প্রদান করেন না। যদি তাদের অপরাধের কারণে সাথে সাথে শাস্তি প্রদান করতেন তবে জমিনে কোন একটি প্রাণী জীবিত থাকত না। সকল বস্তুই ধ্বংস হয়ে যেত। কারণ যখন পাপ কাজ ব্যাপক হয়ে পড়ে, তখন আযাবে সৎ লোকদেরও ধ্বংস করে দেয়া হয়। তবে আখিরাতে সৎ লোকেরা আল্লাহ তা‘আলার নিকট পুরস্কারপ্রাপ্ত হবে। যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ২১১৮, সহীহ মুসলিম হা: ২২০৬)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَوْ یُؤَاخِذُ اللہُ النَّاسَ بِمَا کَسَبُوْا مَا تَرَکَ عَلٰی ظَھْرِھَا مِنْ دَا۬بَّةٍ وَّلٰکِنْ یُّؤَخِّرُھُمْ اِلٰٓی اَجَلٍ مُّسَمًّیﺆ فَاِذَا جَا۬ئَ اَجَلُھُمْ فَاِنَّ اللہَ کَانَ بِعِبَادِھ۪ بَصِیْرًاﭼﺟ)
“আর যদি আল্লাহ মানুষকে তাদের কাজ-কর্মের দরুণ পাকড়াও করতেন তবে দুনিয়ার বুকে একটি প্রাণীকেও রেহাই দিতেন না। কিন্তু তিনি তাদেরকে এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দেন। অতঃপর যখন এসে পড়বে তাদের সেই নির্র্দিষ্ট সময়, (তখন তিনি তাদের কর্মের প্রতিফল দেবেন) আল্লাহ তো তাঁর বান্দাদের (বিষয়ে) সর্বদ্রষ্টা।” (সূরা ফাতির ৩৫:৪৫)
বরং আল্লাহ তা‘আলার হিকমত ও যৌক্তিকতার কারণে এক বিশেষ সময় পর্যন্ত অপরাধীকে অবকাশ দেয়া হয়, প্রথমতঃ যাতে তারা কোন ওযর-আপত্তি করতে না পারে। আর দ্বিতীয়তঃ যাতে তাদের সন্তানদের মধ্যে কিছু ঈমানদার ও সৎ হতে পারে। সুতরাং যখন সময় চলে আসবে তখন একটু অগ্র-পশ্চাত করা হবে না। এ সম্পর্কে সূরা ইউনুসে ও হিজর এ আলোচনা করা হয়েছে।
আর তারা আল্লাহ তা‘আলার জন্য এমন সব জিনিস সাব্যস্ত করে যা তাদের নিজেদের জন্যও পছন্দ করে না। তা হল তারা আল্লাহ তা‘আলার জন্য কন্যা সন্তান সাব্যস্ত করে, অথচ তাদেরকে সে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দিলে চেহারা মলিন হয়ে যায়।
আর তারা মুখ দিয়ে মিথ্যা কথা বলে, মিথ্যা কথাটি হল: দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম পরিণাম আমাদের জন্যই। অথচ তারা আল্লাহর সাথে শিরক করছে, আল্লাহ তা‘আলার সন্তান সাব্যস্ত করছে।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(وَّلَئِنْ رُّدِدْتُّ إِلٰي رَبِّيْ لَأَجِدَنَّ خَيْرًا مِّنْهَا مُنْقَلَبًا)
“আর আমাকে যদি আমার প্রতিপালকের নিকট ফিরিয়ে নেয়া হয়ই তবে আমি নিশ্চয়ই এটা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট স্থান পাব।’’ (সূরা কাহ্ফ ১৮:৩৬) তারা আরো বলে যে, আমরা শাস্তি প্রাপ্ত হব না।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(وَقَالُوْا نَحْنُ أَكْثَرُ أَمْوَالًا وَّأَوْلَادًا لا وَّمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِيْنَ)
“তারা বলত: আমরা ধনে-জনে সমৃদ্ধশালী; সুতরাং আমাদেরকে কিছুতেই শাস্তি দেয়া হবে না।” (সূরা সাবা ৩৪:৩৫)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হ্যাঁ, তাদের পরিণাম ভাল হবে, তবে সে পরিণাম হল জাহান্নামের আগুন। জাহান্নামে তারাই হবে অগ্রগামী। مُّفْرَطُوْنَ অর্থ অগ্রগামী হওয়া, আগে আগে চলা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আমি হাওযে কাউসারে তোমাদের অগ্রগামী হব। (সহীহ বুখারী হা: ৬৫৮৪, সহীহ মুসলিম হা: ১৭৯৩)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقِيْلَ الْيَوْمَ نَنْسٰكُمْ كَمَا نَسِيْتُمْ لِقَا۬ءَ يَوْمِكُمْ هٰذَا وَمَأْوَاكُمُ النَّارُ)
“আর বলা হবেঃ আজ আমি তোমাদেরকে ভুলে যাব যেমন তোমরা এই দিবসের সাক্ষাতকে ভুলে গিয়েছিলে। তোমাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম।” (সূরা জাসিয়া ৪৫:৩৪)
অতএব মানুষের প্রতি আল্লাহর দয়া যে, তিনি তাদের অপরাধের কারণে তাড়াতাড়ি শাস্তি দেন না। তাই মানুষের উচিত আল্লাহ তা‘আলার এ দয়াকে কাজে লাগিয়ে নিজের গুনাহ ক্ষমা করিয়ে নেয়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মানুষের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার দয়া যে, তিনি অপরাধের কারণে সাথে সাথে শাস্তি দেন না।
২. মানুষ অপরাধ করেও আল্লাহ তা‘আলার কাছে ভাল প্রতিদানের আশা করে।
ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-
ওরা আল্লাহর রহমত ও হেকমত বুঝতে চায়না, যার কারণে অবশেষে তাঁর সুবিচারের দাবী অনুসারে তিনি তাদেরকে পাকড়াও করেন এবং তার শক্তি তাদেরকে বশীভূত করে ফেলে; তাদেরকে সেই নির্দিষ্ট মুহূর্তেই পাকড়াও করেন, যা তার হেকমতের দাবী হিসাবে পূর্ব থেকে তিনি নির্ধারিত করে দিয়েছেন এবং তার বিশেষ রহমতের কারণেই তাদেরকে তিনি সময় দিয়ে রেখেছেন ‘কিন্তু যখন সুনির্দিষ্ট ওই সময় এসে যাবে তখন তিনি তাদেরকে এক মুহূর্ত বিলম্বিত করবেন বা এক মুহূর্ত আগেও তাদেরকে মৃত্যু দেবেন না।'(আয়াত ৬১) আর এ বিষয়ে সব থেকে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে যে মােশরেকরা আল্লাহর জন্যে সন্তান রাখার কথা বলতে গিয়ে এমন কন্যা সন্তানকেই নির্বাচন করে যাদেরকে তারা নিজেরা পছন্দ করে না । কন্যাসন্তান-ছাড়াও তারা আল্লাহর জন্যে আরও এমন কিছু বস্তুকে পছন্দ করে যা তারা নিজেদের জন্যে পছন্দ করে না, আল্লাহর প্রতি তাদের এ কেমন শ্রদ্ধাবােধ? এতদসত্তেও মিথ্যামিথ্যি তারা মনে করে, যে আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে তারা যা (ভাল কাজ) করছে বা (ভাল?) চিন্তা করছে তার বিনিময়ে শীঘ্রই তাঁর কৃপাদৃষ্টি লাভ করবে। আল কোরআনও তাদের জন্যে তাই ঠিক করে রাখার ঘােষণা দিয়েছে যার ইন্তেযার তারা করে যাচ্ছে, কিন্তু এর পরিণতি তাই হবে যার কল্পনাও তারা করেনি।
# ওদের নির্বুদ্ধিতা ও যুক্তিহীনতার আরও উদাহরণ দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, ‘আর আল্লাহর জন্যে ওরা সেই জিনিসটাই পছন্দ করে যা তারা নিজেদের জন্যে পছন্দ করে এবং তাদের জিহ্বা মিথ্যা কথা উচ্চারণ করতে গিয়ে বলে যে, তাদেরই জন্যে নির্ধারিত রয়েছে সকল কল্যাণ বরং অবশ্যই তাদের রয়েছে জন্যে আগুন যেহেতু তারা অপরিনামদর্শী ও অপচয়কারী।'(আয়াত ৬২) আর জিহ্বাতে যে কথা উচ্চারিত হচ্ছে তাতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, তাদের কথাটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং জেনে বুঝেই তারা মিথ্যা কথা বলছে। তাদের কথার ব্যাখ্যায় মিথ্যাটা এমনভাবে বুঝা যাচ্ছে যেন কথাটা মিথ্যার বাস্তব প্রতিমূর্তি হয়ে জিহ্বাতে ফুটে উঠেছে, জিহ্বা-দ্বারা মিথ্যা কথাটা মিথ্যার বাস্তব প্রতিমূর্তি হয়ে ফুটে উঠেছে এবং তার চোখটা শুভ্রতার বর্ণনা দিচ্ছে, কারণ ওই অবয়বটা নিজেই স্বচ্ছতা ও স্পষ্টতার ব্যাখ্যা হয়ে ফুটে উঠেছে। ঠিক এমনিভাবে, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘ওদের জিহবাগুলাে মিথ্যা বলছে’ এভাবে জিহ্বার ওপর মিথ্যা বাস্তব মূর্তি নিয়ে যেন হাযির হয়ে গেছে। অর্থাৎ জেনে বুঝে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে যখন মানুষ মিথ্যা বলে তখন তার জিহ্বা অন্তরের অসদিচ্ছার প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে মিথ্যা উচ্চারণ করে এবং এভাবে সে নিজেই যেন মিথ্যা বলে। আর ওদের কথা। ‘কল্যাণ তাদেরই জন্যে’-একথা বলে তারা আল্লাহর জন্যে সেই জিনিসটাই পছন্দ করছে যা তারা নিজেদের জন্যে অপছন্দ করে এটাই হচ্ছে সেই মিথ্যা যা তাদের জিহ্বা উচ্চারণ করছে এ প্রসংগটি বর্ণনা করতে গিয়ে এ কথাটিকেই আল কোরআনের আয়াত তুলে ধরেছে। আর সেই শেষ কথাটিই হচ্ছে যে তাদের জন্যে নিঃসন্দেহে নির্ধারিত রয়েছে আগুন, এটারই হকদার তারা এবং এটাই তাদের উপযুক্ত প্রতিদান। এরশাদ হচ্ছে, ‘অবশ্য অবশ্যই তাদের জন্যেই নির্ধারিত রয়েছে আগুন।’ আর তারা জলদী করেই সেদিকে এগিয়ে যাবে। নির্দিষ্ট সে সময়টি ঘনিয়ে এলে তারা মােটেই বিলম্ব করবে না। আর তারা চরমভাবে সীমালংঘনকারী’। জীবনে তারাতাে সীমালংঘন করেছেই, আর সীমালংঘনকারী তো সেই ব্যক্তি যে সীমালংঘন করে কোনাে অযৌক্তিক ও অসত্য পদক্ষেপ নেয়; সুতরাং তার জন্যে নির্ধারিত আযাবের নির্দিষ্ট সময় যখন এসে যাবে তখন একটুও বিলম্ব করা হবে না।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৬১-৬২ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআলা নিজের ধৈর্য, দয়া, স্নেহ এবং করুণা সম্পর্কে এখানে খবর দিচ্ছেন যে, তিনি বান্দাদের পাপকার্য দেখার পরেও তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন, সাথে সাথে পাকড়াও করেন না। যদি তিনি সাথে সাথেই ধরে ফেলতেন তবে আজ ভূ-পৃষ্ঠে কাউকেও চলতে-ফিরতে দেখা যেতো না। মানুষের পাপের কারণে জীব-জন্তুও ধ্বংস হয়ে যেতো, দুষ্টদের সাথে শিষ্টেরাও ধরা পড়ে যেতো। কিন্তু মহামহিমান্বিত আল্লাহ নিজের সহনশিলতা, দয়া, স্নেহ এবং মহানুভবতার গুণে বান্দাদের পাপ ঢেকে একটা নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত তিনি অবকাশ দিয়ে রেখেছেন, অন্যথায় একটা পোকা মাকড়ও বাঁচতো না। আদম সন্তানের পাপের আধিক্যের কারণে আল্লাহর শাস্তি এমনভাবে আসতো যে, সবকেই ধ্বংস করে দিতো।
হযরত আবু সালমা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) একটি লোককে বলতে শুনেনঃ “অত্যাচারী ব্যক্তি নিজেরই ক্ষতি সাধন করে।” তখন হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ “না, না। বরং তার অত্যাচারের কারণে পাখী তার বাসায় ধ্বংস হয়ে যায়।” (এ হাদীসটি ইমাম ইবনু জারীর (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
হযরত আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ “একদা আমরা রাসূলুল্লাহর (সঃ) নিকট কিছু আলোচনা করছিলাম। তিনি বলেনঃ “আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেন না যখন তার নির্ধারিত সময় এসে পড়ে। বয়স বৃদ্ধি সৎ সন্তানের মাধ্যমে হয়ে থাকে। যে সন্তান তিনি বান্দাকে দান করেন ঐ সন্তানের দুআ’ তার কবরে পৌঁছে থাকে এবং এটাই হচ্ছে তার বয়স বৃদ্ধি।” (এ হাদীসটি ইবনু আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
মহান আল্লাহ বলেনঃ “তারা নিজেরা যা অপছন্দ করে তা-ই আল্লাহর প্রতি তারা আরোপ করে, আর তারা ধারণা করে যে, এই দুনিয়াতেও তারা কল্যাণ লাভ করছে আর যদি কিয়ামত সংঘটিত হয় তবে সেখানেও রয়েছে তাদের জন্যে কল্যাণ।” যেমন তিনি অন্য জায়গায় বলেনঃ “যদি আমি মানুষকে আমার পক্ষ হতে করুণার স্বাদ গ্রহণ করাই, অতঃপর তা টেনে নিই তবে সে নিরাশ ও অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়। আর যাকে যে কষ্ট স্পর্শ করেছিল তা দূর করার পরে যদি আমি তাকে নিয়ামতের স্বাদ গ্রহণ করাই তবে সে অবশ্যই বলে ওঠেঃ আমার উপর থেকে কষ্ট দূর হয়ে গেছে, আর সে তখন খুশী ও অহংকারী হয়ে যায়।”
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “তাকে কষ্ট স্পর্শ করার পর যদি আমি তাকে আমার রহমতের স্বাদ গ্রহণ করাই তবে অবশ্যই সে বলেঃ এটা আমারই জন্যে, আর আমি ধারণা করি না যে,কিয়ামত সংঘটিত হবে। আর যদি আমি আমার প্রতিপালকের কাছে ফিরেও যাই, তবে অবশ্যই তাঁর কাছে আমার জন্যে কল্যাণই রয়েছে। সুতরাং অবশ্যই আমি কাফিরদেরকে তাদের কৃতকর্মের খবর দিয়ে দেবো এবং অবশ্যই তাদেরকে ভীষণ শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাবো।”
সূরায়ে কাহাফে দু’জন সঙ্গীর বর্ণনা দিতে গিয়ে কুরআন কারীমে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “নিজের প্রতি জুলুম করা অবস্থায় সে তার উদ্যানে প্রবেশ। করলো এবং (তার সৎ সঙ্গীকে) বললোঃ আমি মনে করি না যে, এটা কখনো ধ্বংস হয়ে যাবে। আর আমি মনে করি না যে, কিয়ামত সংঘটিত হবে, আর যদি আমি আমার প্রতিপালকের কাছে প্রত্যাবর্তিত হই-ই তবে আমি তো নিশ্চয় এটা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট স্থান পাবো।” (কি জঘন্য কথা!) কাজ করবে মন্দ আর আশা রাখবে ভাল! বপন করবে কাঁটা আর আশা করবে ফলের! কথিত আছে যে, কাবা ঘরের ইমারত নতুন ভাবে বানাবার জন্যে যখন ওটাকে ভেঙ্গে ফেলা হয়, তখন ওর ভিত্তির মধ্য হতে একটি পাথর বের হয় যার উপর কতকগুলি উপদেশমূলক কথা লিখিত ছিল। তন্মধ্যে নিম্নলিখিত কথাগুলিও ছিলঃ
“তোমরা অসৎকাজ করছে অথচ পূণ্যের আশা করছে। এটা হচ্ছে কাঁটা বপন করে আঙ্গুরের আশা করার মত।” সুতরাং তাদের আশা তো ছিল যে, দুনিয়াতেও মাল-ধন, জমি-জায়গা, দাস-দাসী, ইত্যাদি লাভ করবে এবং আখেরাতেও কল্যাণ লাভ করবে। কিন্তু আল্লাহপাক বলেনঃ “প্রকৃতপক্ষে
তাদের জন্যে তৈরী হয়ে আছে জাহান্নামের আগুন। সেখানে তারা আল্লাহর রহমত থেকে দূরে থাকবে এবং ধ্বংস হয়ে যাবে। আজ তারা আমার আহকাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কাজেই কাল (কিয়ামতের দিন) আমিও তাদেরকে আমার নিয়ামত হতে বিমুখ করে দেবো। সত্বরই তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- An-Nahl
Sura: 16
Verses :- 61-62
[ وَ لَوۡ یُؤَاخِذُ اللّٰہُ النَّاسَ بِظُلۡمِہِمۡ
If Allah were to impose blame on the people for their wrongdoing, ]
Allah does not immediately punish for Disobedience
Allah tells:
وَلَوْ يُوَاخِذُ اللّهُ النَّاسَ بِظُلْمِهِم مَّا تَرَكَ عَلَيْهَا مِن دَابَّةٍ وَلَكِن يُوَخِّرُهُمْ إلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى فَإِذَا جَاء أَجَلُهُمْ لَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلَا يَسْتَقْدِمُونَ
And if Allah were to punish (all) mankind for their wrongdoing, He would not leave on it (the earth) a single moving creature, but He defers them to an appointed term; and when their term comes, they can neither delay nor advance it an hour (or a moment).
Allah tells us about His patience with His creatures, even though they do wrong. If He were to punish them for what they have done, there would be no living creature left on the face of the earth, i.e., He would have destroyed every animal on earth after destroying the sons of Adam. But the Lord – magnificent is His glory – is forbearing and He covers people’s faults. He waits until the appointed time, i.e., He does not rush to punish them. If He did, then there would be no one left.
Ibn Jarir reported that Abu Salamah said:
“Abu Hurayrah heard a man saying, `The wrongdoer harms no one but himself.’
He turned to him and said,
`That is not true, by Allah! Even the buzzard dies in its nest because of the sins of the wrongdoer.”‘
They attribute to Allah what They Themselves dislike
Allah tells
وَيَجْعَلُونَ لِلّهِ مَا يَكْرَهُونَ
They assign to Allah that which they dislike (for themselves),
meaning, daughters, and partners, who are merely His servants, yet none of them would like to have someone sharing in his wealth.
وَتَصِفُ أَلْسِنَتُهُمُ الْكَذِبَ أَنَّ لَهُمُ الْحُسْنَى
and their tongues assert the lie that the better things will be theirs.
This is a denunciation of their claims that better things will be theirs in this world, and in the Hereafter.
Allah tells us about what some of them said, as in the Ayat:
وَلَيِنْ أَذَقْنَا الاِنْسَـنَ مِنَّا رَحْمَةً ثُمَّ نَزَعْنَاهَا مِنْهُ إِنَّهُ لَيَيُوسٌ كَفُورٌ
وَلَيِنْ أَذَقْنَاهُ نَعْمَأءَ بَعْدَ ضَرَّاءَ مَسَّتْهُ لَيَقُولَنَّ ذَهَبَ السَّيِّيَاتُ عَنِّي إِنَّهُ لَفَرِحٌ فَخُورٌ
And if We give man a taste of mercy from Us, and then take it from him, verily! He is hopelessly, ungrateful. But if We let him taste of goodness after harm has touched him, he is sure to say:”Ills have departed from me.” Surely, he is cheerful, and boastful (ungrateful to Allah). (11:9-10)
وَلَيِنْ أَذَقْنَـهُ رَحْمَةً مِّنَّا مِن بَعْدِ ضَرَّاءَ مَسَّتْهُ لَيَقُولَنَّ هَـذَا لِى وَمَأ أَظُنُّ السَّاعَةَ قَأيِمَةً وَلَيِن رُّجِّعْتُ إِلَى رَبِّى إِنَّ لِى عِندَهُ لَلْحُسْنَى فَلَنُنَبِّيَنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ بِمَا عَمِلُواْ وَلَنُذِيقَنَّهُمْ مِّنْ عَذَابٍ غَلِيظٍ
And if We give him a taste of mercy from Us, after some adversity has touched him, he is sure to say:”This is due to me; I do not think that the Hour will occur. But if I am brought back to my Lord, then, with Him, there will surely be the best for me.”
Then, We will certainly show the disbelievers what they have done, and We shall make them taste severe torment. (41:50)
أَفَرَأَيْتَ الَّذِى كَفَرَ بِـَايَـتِنَا وَقَالَ لاوتَيَنَّ مَالاً وَوَلَداً
Have you seen the one who disbelieved in Our Ayat and said:”I shall certainly be given wealth and children (if I came back to life).” (19:77)
Allah tells us about one of the two men:
دَخَلَجَنَّتَهُ وَهُوَ ظَالِمٌ لِّنَفْسِهِ قَالَ مَأ أَظُنُّ أَن تَبِيدَ هَـذِهِ أَبَداً
وَمَأ أَظُنُّ السَّاعَةَ قَايِمَةً وَلَيِن رُّدِدتُّ إِلَى رَبِّى لَاجِدَنَّ خَيْراً مِّنْهَا مُنْقَلَباً
He went into his garden while wronging himself. He said:”I do not think that this will ever perish. And I do not think that the Hour will ever come, and if indeed I am brought back to my Lord, (on the Day of Resurrection), then surely, I shall find better than this when I return to Him.” (18:35-36)
These people combined bad deeds with the false hopes of being rewarded with good for those bad deeds, which is impossible.
Thus Allah refuted their false hopes, when He said:
لَا جَرَمَ
No doubt,
meaning, truly it is inevitable that,
أَنَّ لَهُمُ الْنَّارَ
for them is the Fire,
meaning, on the Day of Resurrection.
وَأَنَّهُم مُّفْرَطُونَ
and they will be forsaken.
Mujahid, Sa`id bin Jubayr, Qatadah and others said:
“This means they will be forgotten and neglected there.”
This is like the Ayah:
فَالْيَوْمَ نَنسَـهُمْ كَمَا نَسُواْ لِقَأءَ يَوْمِهِمْ هَـذَا
So today We forget them just as they forgot meeting on this day of theirs. (7:51)
It was also reported from Qatadah that,
مُّفْرَطُونَ
(they will be forsaken) means,
`they are hastened into the Fire.’
There is no contradiction between the two, because they will be hastened into the Fire on the Day of Resurrection, then they will be forgotten there, i.e., left to dwell there for eternity.