(Book# 819) সুরা: আন- নহল সুরা:১৬ ৯৩-৯৬নং আয়াত:- [ لَتُسۡـَٔلُنَّ عَمَّا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۳﴾ তোমরা যা কর, সে বিষয়ে অবশ্যই তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে। You will surely be questioned about what you used to do] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 819)
সুরা: আন- নহল
সুরা:১৬
৯৩-৯৬নং আয়াত:-
[ لَتُسۡـَٔلُنَّ عَمَّا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۳﴾
তোমরা যা কর, সে বিষয়ে অবশ্যই তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে।
You will surely be questioned about what you used to do]
www.motaher21.net
وَ لَوۡ شَآءَ اللّٰہُ لَجَعَلَکُمۡ اُمَّۃً وَّاحِدَۃً وَّ لٰکِنۡ یُّضِلُّ مَنۡ یَّشَآءُ وَ یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ لَتُسۡـَٔلُنَّ عَمَّا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۳﴾
যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন তাহলে তোমাদেরকে এক জাতি করতে পারতেন; কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন। আর তোমরা যা কর, সে বিষয়ে অবশ্যই তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে।
And if Allah had willed, He could have made you [of] one religion, but He causes to stray whom He wills and guides whom He wills. And you will surely be questioned about what you used to do.
وَ لَا تَتَّخِذُوۡۤا اَیۡمَانَکُمۡ دَخَلًۢا بَیۡنَکُمۡ فَتَزِلَّ قَدَمٌۢ بَعۡدَ ثُبُوۡتِہَا وَ تَذُوۡقُوا السُّوۡٓءَ بِمَا صَدَدۡتُّمۡ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ۚ وَ لَکُمۡ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ ﴿۹۴﴾
তোমরা পরস্পরের মাঝে ধোঁকা স্বরূপ তোমাদের শপথকে ব্যবহার করো না; করলে পা স্থির হওয়ার পর পিছলিয়ে যাবে এবং আল্লাহর পথে বাধা দেওয়ার কারণে তোমরা শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ করবে। আর তোমাদের জন্য থাকবে মহাশাস্তি।
And do not take your oaths as [means of] deceit between you, lest a foot slip after it was [once] firm, and you would taste evil [in this world] for what [people] you diverted from the way of Allah, and you would have [in the Hereafter] a great punishment.
وَ لَا تَشۡتَرُوۡا بِعَہۡدِ اللّٰہِ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ؕ اِنَّمَا عِنۡدَ اللّٰہِ ہُوَ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۹۵﴾
তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করো না। আল্লাহর কাছে তা উত্তম; যদি তোমরা জানতে।
And do not exchange the covenant of Allah for a small price. Indeed, what is with Allah is best for you, if only you could know.
مَا عِنۡدَکُمۡ یَنۡفَدُ وَ مَا عِنۡدَ اللّٰہِ بَاقٍ ؕ وَ لَنَجۡزِیَنَّ الَّذِیۡنَ صَبَرُوۡۤا اَجۡرَہُمۡ بِاَحۡسَنِ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۶﴾
তোমাদের কাছে যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহর কাছে যা আছে তা চিরস্থায়ী থাকবে। যারা ধৈর্য ধারণ করে, আমি নিশ্চয়ই তাদেরকে তাদের কর্ম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।
Whatever you have will end, but what Allah has is lasting. And We will surely give those who were patient their reward according to the best of what they used to do.

সুরা: আন- নহল
সুরা:১৬
৯৩-৯৬নং আয়াত:-
[ لَتُسۡـَٔلُنَّ عَمَّا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۳﴾
তোমরা যা কর, সে বিষয়ে অবশ্যই তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে।
You will surely be questioned about what you used to do]
www.motaher21.net

৯৩-৯৬ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলে সকলকে একই উম্মত তথা সকলকে হিদায়াত দান করে ঈমানদার ও মুসলিম বানাতে পারতেন। কিন্তু তা করেননি, কারণ তিনি তাকেই হিদায়াত দান করেন যার মাঝে হিদায়াত গ্রহণ করার মানসিকতা ও প্রবণতা দেখতে পান। আর যার মাঝে পথভ্রষ্টতা ও গোমরাহী প্রাধান্য পেয়েছে তাকে পথভ্রষ্ট করেন। এ সম্পর্কে পূর্বে কয়েক স্থানে আলোচনা করা হয়েছে।

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে আবার নিষেধ করলেন তারা যেন মানুষকে ধোঁকা দেয়ার উদ্দেশ্যে শপথ না করে। যাতে চারিত্রিক দুর্বলতার কারণে কারো পা পিছলে না যায়। আর তোমাদের এ পরিস্থিতি দেখে যেন কোন কাফির ইসলাম গ্রহণ করা থেকে বিরত না হয়। আর তার ফলে তোমরা মানুষকে আল্লাহ তা‘আলার পথে বাধা দেয়ার পাপের শাস্তির উপযুক্ত হয়ে যাবে। কোন কোন মুফাসসির বলেন: أَيْمَانَكُمْ শব্দটি يمين এর বহুবচন, যার অর্থ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বাইয়াত করা। অর্থাৎ বাইয়াত করার পর যেন কেউ মুরতাদ না হয়ে যায়। কারণ তোমাদের মুরতাদ হওয়া দেখে অমুসলিমরা ইসলাম গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। আর এভাবে তোমরা দ্বিগুণ শাস্তির উপযুক্ত হয়ে যাবে। (ফাতহুল কাদীর)

আর আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদেরকে নিষেধ করলেন তারা যেন পার্থিব ব্যাপারে তাদের কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ না করে। কারণ তাদের এই পার্থিব জিনিস থেকে আল্লাহ তা‘আলার নিকট যা আছে তা অতি উত্তম। সুতরাং ওয়াদা ও শপথ ভঙ্গ করে যদি কেউ পার্থিব জিনিসের লোভ করে তাহলে সে নিশ্চিত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

(مَا عِنْدَكُمْ يَنْفَدُ….)

অর্থাৎ মানুষ পার্থিব জীবনে যা কিছু উপার্জন করে তা সবই শেষ হয়ে যাবে। বরং আল্লাহ তা‘আলার নিকট জান্নাতের যে সকল নেয়ামত রয়েছে তা অতি উত্তম এবং চিরস্থায়ী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(إِنَّ هٰذَا لَرِزْقُنَا مَا لَه۫ مِنْ نَّفَادٍ)

“নিশ্চয়ই এটা হল আমার দেয়া রিয্ক, যা শেষ হবে না।” ( স্ব-দ ৩৮:৫৪)

আর আল্লাহ তা‘আলা ধৈর্য ধারণকারীদেরকে তাদের কৃতকর্ম থেকে অতি উত্তম প্রতিদান দান করবেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(إِنَّمَا يُوَفَّي الصّٰبِرُوْنَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ)

“ধৈর্যশীলদেরকে বে-হিসাব পুরস্কার দেয়া হবে।” (সূরা যুমার ৩৯:১০)

সুতরাং আল্লাহ তা‘আলার কাছে যে উত্তম ও চিরস্থায়ী প্রতিদান রয়েছে তার আশায় দীনের পথে অটল থাকতে হবে এবং ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. হাসি-তামাসা করে শপথ করা যাবে না।
২. দুনিয়ার সকল জিনিস ক্ষণস্থায়ী। আর আল্লাহ তা‘আলার নিকট যা আছে তা চিরস্থায়ী।
৩. ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহ তা‘আলা উত্তম প্রতিদান দান করবেন।
৪. আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করেন এ গুণের প্রমাণ পেলাম।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

# এটা পূর্ববর্তী বক্তব্যের আরো একটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা। এর অর্থ হচ্ছে, যদি কেউ নিজেকে আল্লাহর পক্ষের লোক মনে করে ভাল-মন্দ উভয় পদ্ধতিতে নিজের ধর্মের (যাকে সে আল্লাহর প্রেরিত ধর্ম মনে করছে) প্রসার এবং অন্যের ধর্মকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালায়, তাহলে তার এ প্রচেষ্টা হবে সরাসরি আল্লাহর ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য বিরোধী। কারণ মানুষের ধর্মীয় মতবিরোধের ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে যদি সমস্ত মানুষকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় একটি ধর্মের অনুসারী বানানোই আল্লাহর উদ্দেশ্য হাতো তাহলে এজন্য আল্লাহর নিজের “তথাকথিত” পক্ষের লোকের লেলিয়ে দেয়ার এবং তাদের নিকৃষ্ট অস্ত্রের সাহায্য নেবার কোন প্রয়োজন ছিল না। এ কাজ তো তিনি নিজের সৃজনী ক্ষমতার মাধ্যমে করতে পারতেন। তিনি সবাইকে মু’মিন ও অনুগত হিসেবে সৃষ্টি করতেন এবং তাদের থেকে কুফরী ও গোনাহ করার ক্ষমতা ছিনিয়ে নিতেন। এরপর ঈমান ও আনুগত্যের পথ থেকে একচুল পরিমাণ সরে আসার ক্ষমতা কারো থাকতো না।

# আল্লাহ‌ নিজেই মানুষকে নির্বাচন ও গ্রহণ করার স্বাধীনতা দিয়েছেন। তাই দুনিয়ায় মানুষদের পথ বিভিন্ন। কেউ গোমরাহীর দিকে যেতে চায় এবং আল্লাহ‌ গোমরাহীর সমস্ত উপকরণ তার জন্য তৈরী করে দেন। কেউ সত্য-সঠিক পথের সন্ধানে ব্যাপৃত থাকে এবং আল্লাহ‌ তাকে সঠিক পথনির্দেশনা দানের ব্যবস্থা করেন।
# কোন ব্যক্তি একবার ইসলামের সত্যতা মেনে নেবার পর নিছক তোমাদের অসৎ আচরণের কারণে এ দ্বীন থেকে সরে যাবে এবং মু’মিনের দলের অন্তর্ভুক্ত হতে সে শুধুমাত্র এজন্য বিরত থাকবে যে, যাদের সাথে তার ওঠাবসা হয়েছে তাদেরকে সে আচার-আচরণ ও লেনদেনের ক্ষেত্রে কাফেরদের থেকে কিছুটা ভিন্নতর পায়নি।
# যে অঙ্গীকার তোমরা করেছো আল্লাহর নামে অথবা আল্লাহর দ্বীনের প্রতিনিধি হিসেবে।

# এর অর্থ এ নয় যে, বড় লাভের বিনিময়ে তা বিক্রি করতে পারো। বরং এর অর্থ হচ্ছে দুনিয়ার যে কোন লাভ বা স্বার্থ আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকারের তুলনায় সামান্যতম মূল্যের অধিকারী। তাই ঐ তুচ্ছ জিনিসের বিনিময়ে এ মূল্যবান সম্পদটি বিক্রি করা যে কোন অবস্থায়ই ক্ষতির ব্যবসায় ছাড়া আর কিছুই নয়।
# “সবরের পথ অবলম্বন কারীদেরকে” অর্থাৎ এমন সব লোকদেরকে যারা সকল প্রকার লোভ-লালসা ও কামনা-বাসনার মোকাবিলায় সত্য ও সততার ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকে। এ দুনিয়ায় সত্য ও ন্যায়ের পথ অবলম্বন করলে যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় তা সবই যারা বরদাশ্ত করে নেয়। দুনিয়ায় অবৈধ পন্থা অবলম্বন করলে যেসব লাভ পাওয়া যেতে পারে তা সবই যারা দূরে নিক্ষেপ করে। যারা ভাল কাজের সুফল লাভ করার জন্য সে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে প্রস্তুত থাকে, যে সময়টি বর্তমান পার্থিব জীবনের অবসান ঘটার পর অন্য জগতে আসবে।

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-

এরশাদ হচ্ছে, ‘আর আল্লাহ তায়ালা যদি চাইতেন তাহলে সবাইকে একটি মাত্র উম্মতে পরিণত করতে পারতেন, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে পথহারা করেন এবং যাকে ইচ্ছা তাকে হেদায়াত করেন, আর অবশ্যই তােমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে ঐসব বিষয়ে যা তােমরা (দুনিয়ার বুকে) করতে থেকেছে)…’ আর এটা তাে অবশ্যই সত্য কথা যে, আল্লাহ তায়ালা চাইলে সকল মানুষকে একই ধরনের যােগ্যতা দান করতে পারতেন, কিন্তু তা তিনি না করে তাদেরকে পৃথক পৃথক যােগ্যতা ও গুণাবলীতে ভূষিত করেছেন, কেউ কাউকে পুরােপুরি অনুসরণ করতে পারে না, একই যােগ্যতার সম্পূর্ণ পুনরাবৃত্তি হয় না এবং যে গুণাবলী নিয়ে একজন আসে, অবিকল সেই একই গুণাবলী নিয়ে আর কেউ আসে না।
# আল্লাহ তায়ালা হেদায়াত ও গোমরাহীর বিভিন্ন উদাহরণ দিয়েছেন, সকল মানুষের মধ্যে তাঁরই ইচ্ছা কাজ করে চলেছে এবং প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ কাজ কর্মের জন্যে আল্লাহর কাছে দায়ী হবে কিন্তু ওয়াদা ভংগের ব্যাপারে কারাে মধ্যে কোনাে আকীদাগত কোনাে মতভেদ নেই, অর্থাৎ ওয়াদা ভংগ করা যে একটি সামাজিক অপরাধ-এ বিষয়ে কেউ কোনাে দ্বিমত পােষণ করে না। মতভেদ রয়েছে শুধু এ কদর্য অভ্যাসের কারণসমূহ নিয়ে, যার সম্পর্ক রয়েছে আল্লাহর ইচ্ছার সাথে অর্থাৎ যেসব ওজুহাতের কারণে ওয়াদা ভংগ করা যায় সেগুলাে আল্লাহর ইচ্ছাতেই আসে বলে মনে করা হয়। অবশ্যই এটা ঠিক, আর যে বিশ্বাসই থাকুক না কেন, যে কোনো ওয়াদা করা হয় আল্লাহর জ্ঞানের মধ্যে তা এসে যায় এবং তিনি সে ওয়াদার সাক্ষী বা দায়িত্বশীল হয়ে যান, আর মানুষের লেনদেনের ক্ষেত্রে এই ওয়াদাই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং মৌলিক বিষয়, যার ওপর নির্ভর করে সামাজিক শান্তি। আর এই ওয়াদা পূরণের ওপরেই নির্ভর করে দ্বীন ইসলামের সৌন্দর্য ও মর্যাদা, বাস্তব জীবনে ওয়াদা পূরণ করা যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আচরণ এ শিক্ষা একমাত্র আল ইসলামই দিয়েছে যার বিশদ বর্ণনা আল কোরআনের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে দেয়া হয়েছে।

# *ওয়াদা পালনের গুরুত্ব : এভাবে আলােচনা এগিয়ে চলেছে ওয়াদা পূরণ করার প্রতি গুরুত্ব আরােপ করে, পাশাপাশি নিষেধ করা হয়েছে বা প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে কসম খেয়ে এবং এই নশ্বর দুনিয়ার নগদ ও সাময়িক নিশ্চিয়তা হাসিলের জন্যে আত্ম-নিয়ােগ করতে; আরও সতর্ক করা হয়েছে অতীতের বহুজাতির অথবা বহু ব্যক্তির অধপতনের নযিরকে তুলে ধরে, তাদের নড়বড়ে বিশ্বাস, সম্পর্ক স্থাপন ও লেনদেনের মধ্যে গােলমালের পরিণতিতে যে ভােগান্তি হয়েছে সেই সব দৃষ্টান্তকে তুলে ধরে সময় থাকতেই সাবধান হতে বলা হয়েছে, আর সবশেষে আখেরাতের ভীষণ আযাবের কথা জানিয়ে তাদেরকে এখনই নিজ নিজ কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে বলা হয়েছে। এ আলোচনায় স্পষ্টভাবে আরও জানা যাচ্ছে যে, ওয়াদা-পূরণে যে সামান্য ক্ষতি স্বীকার করতে হয় তার বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা এতাে মহামূল্যবান পুরস্কার দেবেন যার কল্পনাও কোনাে মানুষ করতে পারে না, আর বলা হচ্ছে যে, তাদের হাতে যা কিছু আছে তা অবশ্যই একদিন শেষ হয়ে যাবে, বাকি থাকবে একমাত্র তাই যা আল্লাহর কাছে আছে, যে ডান্ডার কখনও শেষ হবার নয় এবং যে রিযিক তিনি সবার জন্যে বরাদ্দ করেছেন তা কখনও বন্ধ হবে না। এরশাদ হচ্ছে, ‘আর তােমাদের কসমগুলােকে তােমরা কাউকে ধোকা দেয়ার মাধ্যম বানিয়ে নিয়ােনা, যার ফলে তােমাদের কদম জমে যাওয়ার পর পিছলে যাবে। আর আমি মহান আল্লাহ, প্রতিদান দেব ওই সব লােকদেরকে যারা সবর করেছে; সমুচিত প্রতিদান দেব তাদের উত্তম কর্মগুলাের যা তারা পৃথিবীর বুকে করেছে।'(আয়াত ৯৬-৯৭) কাউকে অপদস্ত করার উদ্দেশ্যে বা ধােকা দেয়ার জন্যে যে কসম খাওয়া হয় তার ফলে অন্তরের মধ্যস্থিত আকীদা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় এবং অপরের অন্তরের মধ্যে আকীদার বিকৃত রূপটি ফুটে উঠে। এটা অবশ্যই সত্য কথা, যে ধােকা দেয় সেও জেনে বুঝেই দেয়, কাজেই নিজের বিবেকের কাছে সে ধোকাবাজ বলে পরিচিত হয়ে যায়, সে কিছুতেই তার আকীদার দৃঢ়তাকে ফুটিয়ে তুলতে পারে না এবং ঈমানী যিন্দেগীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে সে ব্যর্থ হয়-বরং ইসলাম যে মানুষকে সৎ ন্যায়নিষ্ঠ, বিবেচক ও অপরের জন্যে উপকারী বন্ধু বানানাের জন্যে এসেছে-এই ওয়াদা খেলাফ ও ধােকাবাজ ব্যক্তি তার ব্যবহার দ্বারা ইসলাম সম্পর্কে এ মহান ধারণাকে অপ্রমাণিত করে আছে। প্রকৃতপক্ষে ওয়াদা ভংগের কারণে না নিজে ন্যায় পথে থাকতে পারে, না অপরকে ন্যায়ের দিকে আকৃষ্ট করতে পারে বরং এ এমন এক সংক্রামক ব্যাধি যা অপরের ন্যায় নিষ্ঠা ও ইসলাম সম্পর্কে উচু ধারণাকে ধূলিসাৎ করে দেয়। শুধু তাই নয়, ওয়াদা-খেলাফকারী এই ব্যক্তি নিজের অপরাধ ঢাকার জন্য নানা প্রকার বাহানা তালাশ করে এবং মানুষকে ধােকা দিতে থাকে। এর ফলে, তার আনুষ্ঠানিক এবাদাতসমূহের মর্যাদা বিনষ্ট হয়ে যায় ও মানুষ ইসলামের সৌন্দর্য বুঝা থেকে বহু বহু চলে যায়-এভাবেই সে মানুষকে ইসলাম থেকে দুরে সরিয়ে দেয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং প্রকারান্তরে আল্লাহর ওপর ঈমান আনয়নকারীদের ঈমানের ওপর সে মারাত্মক আঘাত হানে। ইসলামের প্রচার ও প্রসার যেখানে ঘটেছে সেখানে দেখা গেছে জনগণ মুসলমানদের লেনদেনের স্বচ্ছতা চুক্তি রক্ষা ও ওয়াদা পূরণ দেখে মুগ্ধ হয়েছে। তারা মুসলমানদের ঈমানের প্রতি ঐকান্তিকতা ও নিষ্ঠা দেখে, তাদের পারস্পরিক অর্থনৈতিক আদান প্রদানের পরিচ্ছন্নতা দেখে ইসলাম গ্রহণ করেছে গােত্রের পর গোত্র দলে দলে। এর ফলে, দেখা গেছে, ওয়াদা পূরণ করতে গিয়ে তারা সাময়িকভাবে কিছু কষ্ট পেলেও বা কিছু সময়ের জন্যে একটু ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অবশেষে তারাই লাভবান হয়েছে। পাক পবিত্র এ গ্ৰন্থ আল কোরআন এবং রসূলুল্লাহ(স.)-এর সুন্নত মুসলমানদের অন্তরে গভীরভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে এবং সাধারণভাবে বাস্তব জীবনের লেনদেনের ক্ষেত্রে এ শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে মানুষকে স্বস্তি ও শান্তির নিশ্বাস ফেলার সুযােগ করে দিয়েছে। তাদের লেনদেনের এই পরিচ্ছন্নতা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন এসেছে। এ ব্যবস্থা ব্যক্তিগত জীবন থেকে আন্তর্জাতিক জীবন পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত। বর্ণিত আছে যে, মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান ও রোমান বাদশার মধ্যে বিরােধ দেখা দিলে তাদের মধ্যে নির্দিষ্ট একটি সময় পর্যন্ত চুক্তি হয়, অতপর এই চুক্তির মেয়াদের শেষের দিকে আমীর মােয়াবিয়া(রা.) রােমান সাম্রাজ্যের দিকে এক সেনাবাহিনী নিয়ে রওয়ানা হন। এভাবে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে যখন সে এলাকায় আক্রমণ করে বসেন তখন প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেদের অজান্তেই আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এসময়, মুয়াবিয়া(রা.)-এর একজন সাথী ওমর এবনে ওৎবা বলে উঠলেন, ‘আল্লাহ আকবার, হে মুয়াবিয়া, চুক্তির মেয়াদ পূরণ করাে, বিশ্বাসঘাতকতা করাে না, আমি রসূলুল্লাহ(স.) কে বলতে শুনেছি কোনাে জাতির সাথে কেউ চুক্তিতে আবদ্ধ হলে তারা চুক্তি ভংগ না করা পর্যন্ত, খবরদার! যেন চুক্তি ভংগ না করা হয়। আমীর মােয়াবিয়া(রা.) এ কথা শােনার সাথে সাথে তার সৈন্য প্রত্যাহার করে ফিরে আসলেন। অবশ্য চুক্তি ভংগ করা সম্পর্কিত বহু মশহুর ও মোতাওয়াতের হাদীসে পাওয়া যায়। এভাবে আল কোরআনও মানুষের অন্তরের মধ্যে ওয়াদা গুরুত্ব অনুভূত করানাের জন্যে বিভিন্ন প্রসংগে মুসলমানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, কখনও এর গুরুত্ব সম্পর্কে জানিয়ে চুক্তি রক্ষা করতে উৎসাহিত করেছে। কখনও এর কঠিন পরিণতি জানিয়ে ভয় দেখিয়েছে এবং জানিয়েছে যে, যখনই কারাে সাথে কোনাে চুক্তি করা হয়, প্রকৃতপক্ষে সে চুক্তি করা হয় আল্লাহর সাথে, এ পাক কালাম আরাে জানিয়েছে চুক্তিরক্ষার সুফল সম্পর্কে এবং চুক্তিভংগ করলে কি কি ক্ষতি হয় তাও একে একে বর্ণনা করেছে, জানিয়েছে যে আল্লাহর কাছে চুক্তি রক্ষা এক মহা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। এরশাদ হচ্ছে, ‘খবরদার, আল্লাহর নামে শপথ করে বা আল্লাহকে সাক্ষী রেখে যখনই কোনাে চুক্তি করবে তখন তা অল্প মূল্যে বিক্রি করোনা চুক্তি ভংগ করো না’। যে কোনাে উদ্দেশ্য হাসিল করার চেষ্টা হবে তা সবই হবে অল্প মূল্যের জিনিস। এরপর, আল কোরআন জানাচ্ছে ‘আল্লাহর কাছে (চুক্তিরক্ষার ফলে) যে প্রতিদান পাওয়া যাবে তাই হবে তােমাদের জন্যে ভাল, (তােমরা বুঝবে) যদি তােমরা তােমাদের জ্ঞানকে কাজে লাগাও।’ আল কোরআন স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে মানুষের কাছে যা কিছু আছে, এমনকি তার গােটা সাম্রাজ্যও যদি হয়-তাও অতি অল্প জিনিস। কারণ এসবই তাে একদিন শেষ হয়ে যাবে, অপরদিকে যা কিছু আল্লাহর কাছে আছে তাই বাকি থাকবে এবং তাই স্থায়ী হবে। এরশাদ হচ্ছে, ‘তােমাদের কাছে যা কিছু আছে তা শেষ হয়ে যাবে, আর আল্লাহর যা আছে তাই-ই অবশিষ্ট থাকবে।’  এভাবে আল কোরআন চুক্তি রক্ষার জন্যে মােমেনদের মনােবল গড়ে তুলছে এবং ওয়াদা পূরণ ও চুক্তি রক্ষার জন্যে যে বেগ পেতে হয় এবং যে সব কঠিন অবস্থা অতিক্রম করতে হয় তাতে সবর করার জন্যে নির্দেশ দিয়েছে ওয়াদা করছে যে চুক্তি রক্ষার জন্যে রয়েছে মহা প্রতিদান।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৯৩-৯৬ নং আয়াতের তাফসীর

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “আল্লাহ ইচ্ছা করলে দুনিয়ার মাযহাব ও চলার পথ একটাই হতো।” যেমন তিনি বলেছেনঃ “যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন তবে হে মানুষ! তোমাদেরকে তিনি একই জাতি করতেন।” অর্থাৎ তিনি চাইলে তোমরা সবাই একই দলভূক্ত হতে। অন্য আয়াতে রয়েছেঃ “তোমার প্রতিপালক যদি ইচ্ছা করতেন তবে যমীনে যত মানুষ আছে সবাই মুমিনহয়ে যেতো।” অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে প্রেম-প্রীতি ও মিল-মহব্বত থাকতো, পরস্পরের মধ্যে কোন হিংসা-বিদ্বেষ থাকতো না।

মহান আল্লাহ বলেনঃ “তোমার প্রতিপালক এতই ক্ষমতাবান যে, তিনি ইচ্ছা করলে সমস্ত মানুষকে একই জাতি করে দিতে পারেন। কিন্তু তোমার প্রতিপালকের যার উপর দয়া হবে সে ছাড়া সবারই মধ্যে এই মতানৈক্য ও মতবিরোধ থেকেই যাবে। এ জন্যেই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।” অনুরূপভাবেই এখানে তিনি বলেছেনঃ “কিন্তু যাকে ইচ্ছা, তিনি পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা, হিদায়াত দান করেন। অতঃপর তিনি কিয়ামতের দিন তোমাদের আমল সম্পর্কে তোমাদের সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করবেন এবং ছোট, বড়, ভাল ও মন্দ সমস্ত আমলের বিনিময় প্রদান করবেন।

এরপর তিনি মুসলমানদেরকে হিদায়াত করছেনঃ “তোমরা তোমাদের শপথ ও প্রতিশ্রুতিকে প্রবঞ্চনার মাধ্যম বানিয়ে নিয়ো না। অন্যথায় ধর্মে অটল থাকার পরেও তোমাদের পদস্খলন ঘটে যাবে। যেমন কেউ সরল সোজা পথ। থেকে ভ্রষ্ট হয়ে পড়ে। আর তোমাদের এই কাজ অন্যদেরকে আল্লাহর পথ হতে বিরত রাখার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ফলে এর দুর্ভোগ তোমাদেরকেই পোহাতে হবে। কেননা, কাফিররা যখন দেখবে যে, মুসলমানরা চুক্তি করে তা ভঙ্গ করে থাকে, তখন তাদের দ্বীনের উপর কোন আস্থা থাকবে না। সুতরাং তারা ইসলাম গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। আর যেহেতু এর কারণ হবে। তোমরাই, সেই হেতু তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।”

মহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ “আল্লাহকে সামনে রেখে যে ওয়াদা অঙ্গীকার তোমরা কর এবং তাঁর শপথ করে যে চুক্তি তোমরা করে থাকো, পার্থিব লোভের বশবর্তী হয়ে তা ভঙ্গ করা তোমাদের জন্যে হারাম। যদিও এর বিনিময়ে সারা দুনিয়াও তোমাদের লাভ হয়, তথাপি ওর নিকটেও যেয়ো না। কেননা, দুনিয়া অতি নগণ্য ও তুচ্ছ। আল্লাহর নিকট যা রয়েছে তা অতি উত্তম। তার প্রতিদান ও পুরস্কারের আশা রাখো। যে ব্যক্তি আল্লাহর কথার উপর বিশ্বাস রাখবে, তাঁর কাছেই যা কিছু চাইবে এবং তাঁর আদেশ ও নিষেধ পালনার্থে নিজেরা ওয়াদা- অঙ্গীকারের হিফাযত করবে, তার জন্যে আল্লাহর কাছে যে পুরস্কার ও প্রতিদান রয়েছে তা সমস্ত দুনিয়া হতেও বহুগুণে বেশী ও উত্তম। সুতরাং এটাকে ভালরূপে জেনে নাও। অজ্ঞতা বশতঃ এমন কাজ করো না যে, তার কারণে আখেরাতের পুরস্কার নষ্ট হয়ে যায়। জেনে রেখো যে, দুনিয়ার নিয়ামত ধ্বংসশীল এবং আখেরাতের নিয়ামত অবিনশ্বর। তা কখনো শেষ হবার নয়।

আল্লাহপাক বলেনঃ “আমি শপথ করে বলেছি যে, যারা ধৈর্য ধারণ করবে, কিয়ামতের দিন আমি তাদেরকে সৎ আমলের অতি উত্তম প্রতিদান প্রদান করবো এবং তাদেরকে ক্ষমা করে দেবো।”

 

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- An-Nahl
Sura: 16
Verses :- 93-96
[ لَتُسۡـَٔلُنَّ عَمَّا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۳﴾
You will surely be questioned about what you used to do]
If Allah had willed, He would have made all of Humanity one Nation

Allah says:

وَلَوْ شَاء اللّهُ لَجَعَلَكُمْ

And had Allah willed, He would have made you,

meaning – O mankind,

أُمَّةً وَاحِدَةً

(all) one nation,

This is like the Ayah:

وَلَوْ شَأءَ رَبُّكَ لامَنَ مَن فِى الاٌّرْضِ كُلُّهُمْ جَمِيعًا

And had your Lord willed, all of those on earth would have believed together. (10:99),

meaning, He could have created harmony among them, and there would not be any differences, conflicts or hatred between them.

وَلَوْ شَأءَ رَبُّكَ لَجَعَلَ النَّاسَ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلَا يَزَالُونَ مُخْتَلِفِينَ

إِلاَّ مَن رَّحِمَ رَبُّكَ وَلِذلِكَ خَلَقَهُمْ

And if your Lord had so willed, He would surely, have made mankind one Ummah (nation or community), but they will not cease to disagree. Except him on whom your Lord has bestowed His mercy, and for that did He create them. (11:118-119)

Similarly, Allah says here:

وَلكِن يُضِلُّ مَن يَشَاء وَيَهْدِي مَن يَشَاء

but He allows whom He wills to stray and He guides whom He wills.

وَلَتُسْأَلُنَّ عَمَّا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ

But you shall certainly be called to account for what you used to do.

i.e. on the Day of Resurrection, He will ask them all about their deeds, and will reward or punish them even equal to a scalish thread in the long slit of a date stone or the size of a speck on the back of a date stone, or even a thin membrane of the date stone.
The Prohibition on taking an Oath for Purposes of Treachery

Allah says.
وَلَا تَتَّخِذُواْ أَيْمَانَكُمْ دَخَلً بَيْنَكُمْ فَتَزِلَّ قَدَمٌ بَعْدَ ثُبُوتِهَا

And do not make your oaths a means of deception among yourselves, resulting in the slip of a foot after it was firmly planted,

Allah warns His servant against taking oaths as means of deception, i.e., using them for treacherous purposes, lest a foot should slip after being firmly planted.

This is an analogy describing one who was on the right path but then deviated and slipped from the path of guidance because of an unfulfilled oath that involved hindering people from the path of Allah. This is because if a disbeliever were to find that after having agreed to a covenant, then the believer betrayed him, then the believer will have hindered him from entering Islam.

Thus Allah says:

وَتَذُوقُواْ الْسُّوءَ بِمَا صَدَدتُّمْ عَن سَبِيلِ اللّهِ وَلَكُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ

and you taste the evil of having hindered from the path of Allah, and you will suffer a terrible punishment.
Do not break Oaths for the sake of Worldly Gain

Then Allah says.

وَلَا تَشْتَرُواْ بِعَهْدِ اللّهِ ثَمَنًا قَلِيلً

And do not use an oath by Allah for the purchase of little value.

meaning, do not neglect an oath sworn in the Name of Allah for the sake of this world and its attractions, for they are few, and even if the son of Adam were to gain this world and all that is in it, that which is with Allah is better for him,

إِنَّمَا عِندَ اللّهِ هُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ

what is with Allah is better for you if you only knew.

i.e., the reward of Allah is better for the one who puts his hope in Him, believes in Him, seeks Him and fulfills his oaths in the hope of that which Allah has promised.

This is why Allah says:

إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ

 

مَا عِندَكُمْ يَنفَدُ

if you only knew. Whatever you have will be exhausted,

meaning, it will come to an end and will vanish, because it is only there for a certain, limited time.

وَمَا عِندَ اللّهِ بَاقٍ

and what is with Allah will remain.

meaning, His reward for you in Paradise will remain, without interruption or end, because it is eternal and will never change nor disappear.

وَلَنَجْزِيَنَّ الَّذِينَ صَبَرُواْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ

And to those who are patient, We will certainly grant them their rewards in proportion to the best of what they used to do.

Here the Lord swears, with the Lam of affirmation, that He will reward the patient for the best of their deeds, i.e., He will forgive them for their bad deeds.

Leave a Reply