(বই#৮৭৭) সুরা: আল্ বনি‌ ইসরাইল সুরা:১৭ ১০১-১০৪ নং আয়াত:- [ وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا مُوۡسٰی تِسۡعَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ অবশ্যই আমি মূসাকে ন’টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম। ] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৮৭৭)
সুরা: আল্ বনি‌ ইসরাইল
সুরা:১৭
১০১-১০৪ নং আয়াত:-
[ وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا مُوۡسٰی تِسۡعَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ
অবশ্যই আমি মূসাকে ন’টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম। ]
www.motaher21.net

সুরা: বনী ইসরাঈল
আয়াত নং :-১০১
وَ لَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسٰى تِسْعَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ فَسْئَلْ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اِذْ جَآءَهُمْ فَقَالَ لَهٗ فِرْعَوْنُ اِنِّیْ لَاَظُنُّكَ یٰمُوْسٰى مَسْحُوْرًا

আমি মূসাকে নয়টি নিদর্শন দিয়েছিলাম, সেগুলো সুস্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। এখন নিজেরাই তোমরা বনী ইসরাঈলকে জিজ্ঞেস করে দেখে নাও যখন সেগুলো তাদের সামনে এলো তখন ফেরাউন তো একথাই বলেছিল, “হে মূসা! আমার মতে তুমি অবশ্যই একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি।”

সুরা: বনী ইসরাঈল
আয়াত নং :-১০২

قَالَ لَقَدْ عَلِمْتَ مَاۤ اَنْزَلَ هٰۤؤُلَآءِ اِلَّا رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ بَصَآئِرَ١ۚ وَ اِنِّیْ لَاَظُنُّكَ یٰفِرْعَوْنُ مَثْبُوْرًا

মূসা এর জবাবে বললো, “তুমি খুব ভাল করেই জানো এ প্রজ্ঞাময় নিদর্শনগুলো আকাশ ও পৃথিবীর রব ছাড়া আর কেউ নাযিল করেননি আর আমার মনে হয় হে ফেরাউন! তুমি নিশ্চয়ই একজন হতভাগা ব্যক্তি।

সুরা: বনী ইসরাঈল
আয়াত নং :-১০৩

فَاَرَادَ اَنْ یَّسْتَفِزَّهُمْ مِّنَ الْاَرْضِ فَاَغْرَقْنٰهُ وَ مَنْ مَّعَهٗ جَمِیْعًاۙ

শেষ পর্যন্ত ফেরাউন মূসা ও বনী ইস্রাঈলকে দুনিয়ার বুক থেকে উৎখাত করার সংকল্প করলো। কিন্তু আমি তাকে ও তার সঙ্গী-সাথীদেরকে এক সাথে ডুবিয়ে দিলাম।

সুরা: বনী ইসরাঈল
আয়াত নং :-১০৪

وَّ قُلْنَا مِنْۢ بَعْدِهٖ لِبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اسْكُنُوا الْاَرْضَ فَاِذَا جَآءَ وَعْدُ الْاٰخِرَةِ جِئْنَا بِكُمْ لَفِیْفًاؕ

এবং এরপর বনী ইস্রাঈলকে বললাম, এখন তোমরা পৃথিবীতে বসবাস করো, তারপর যখন আখেরাতের প্রতিশ্রুতির সময় এসে যাবে তখন আমি তোমাদের সবাইকে এক সাথে হাযির করবো।

১০১-১০৪ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন‌্য বলেছেন :-

# এখানে আবার মক্কার কাফেরদের মু’জিযা পেশ করার দাবীর জাবাব দেয়া হয়েছে এবং এটি তৃতীয় জবাব। কাফেররা বলতো, আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনবো না যতক্ষণ না তুমি অমুক অমুক কাজগুলো করে দেখাবে। জবাবে তাদেরকে বলা হচ্ছে, তোমাদের পূর্বে ফেরাউনকে এমনিতর সুস্পষ্ট মু’জিযা এক দু’টি নয় পরপর ৯টি দেখানো হয়েছিল। তারপর তোমরা জানো মেনে নেবার প্রবণতাই যার ছিল না সে এগুলো দেখে কি বললো? আর এটাও জানো যে, মু’জিযা দেখার পরও যখন সে নবীকে অস্বীকার করলো তখন তার পরিণতি কি হলো?

এখানে যে ন’টি নিদর্শনের কথা বলা হয়েছে এর আগে সূরা আ’রাফেও সেগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ (১) লাঠি, যা সাপে পরিণতি হতো। (২) সাদা হাত, যা বগলের ভেতর থেকে বের করার পর সূর্যের মতো চমকাতে থাকতো। (৩) যাদুকরদের যাদুকে প্রকাশ্য জনসম্মুখে পরাভূত করা। (৪) এক ঘোষণা অনুযায়ী সারা দেশ দুর্ভিক্ষ কবলিত হওয়া এবং তারপর একের পর এক (৫) তুফান, (৬) পংগপাল, (৭) শস্যকীট, (৮) ব্যাং এবং (৯) রক্তের আপদ নাযিল হওয়া।

# মক্কার মুশরিকরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে উপাধি দিতো এটি সেই একই উপাধি। এ সূরার ৫ রুকূ’তে এদের এ উক্তিও এসেছেঃ (আরবী———————–) (তোমরা তো একজন যাদুগ্রস্ত লোকের পেছনে ছুটে চলছো।) এখন এদেরকে বলা হচ্ছে, ঠিক এ একই উপাধিতে ফেরাউন মূসা আলাইহিস সালামকে ভূষিত করেছিল। এখানে আর একটি আনুসঙ্গিক বিষয়ও রয়েছে। সেদিকে ইঙ্গিত করে দেয়া আমি জরুরী মনে করি। বর্তমান যুগে হাদীস অস্বীকারকারী গোষ্ঠী হাদীসের বিরুদ্ধে যেসব আপত্তি উঠিয়েছে তার মধ্যে একটি আপত্তি হচ্ছে এই যে, হাদীসের বক্তব্য মতে একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর যাদুর প্রভাব পড়েছিল। অথচ কুরআনের দৃষ্টিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযা সাল্লাম যে, একজন যাদু প্রভাবিত ব্যক্তি এটা ছিল কাফেরদের একটি মিথ্যা অপবাদ। হাদীস অস্বীকারকারীরা বলেন, এভাবে হাদীস বর্ণনাকারীগণ কুরআনকে মিথ্যুক এবং মক্কার কাফেরদেরকে সত্যবাদী প্রতিপন্ন করেছেন। কিন্তু এখানে দেখুন কুরআনের দৃষ্টিতে হযরত মূসার ওপরও ফেরাউনের এ একই মিথ্যা দোষারোপ ছিল যে, আপনি একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি। আবার কুরআন নিজেই সূরা ত্ব-হা’য় বলছেঃ আরবী——————————— “যখন যাদুকররা নিজেদের দড়াদড়ি ছুঁড়ে দিল তখন অকস্মাৎ তাদের যাদুর ফলে মূসার মনে হতে লাগলো যে তাদের লাঠি ও দড়িগুলো দৌড়ে চলেছে। কাজেই মূসা মনে মনে ভয় পেয়ে গেলো।” এ শব্দগুলো কি সুস্পষ্টভাবে একথা প্রকাশ করছে না যে, হযরত মূসা সে সময় যদিও প্রভাবিত হয়ে পড়েছিলেন? হাদীস অস্বীকারকারীগণ কি এ প্রসঙ্গেও বলতে প্রস্তুত আছেন যে, কুরআন নিজেই মিথ্যা এবং ফেরাউনের মিথ্যা অপবাদকে সত্য প্রতিপন্ন করেছে?

আসলে এ ধরনের আপত্তি উত্থাপনকারীরা জানেন না যে, মক্কার কাফেররা ও ফেরাউন কোন্ অর্থে মুহাম্মাদ ﷺ ও হযরত মূসাকে ‘যাদুগ্রস্ত’ বলতো। তাদের বক্তব্য ছিল, কোন শত্রু যাদু করে তাঁদেরকে পাগল বানিয়ে দিয়েছে এবং এ পাগলামির প্রভাবে তারা নবুওয়াতের দাবী করছেন এবং একটি সম্পূর্ণ অভিনব বাণী শুনাচ্ছেন। কুরআন তাদের এ অপবাদকে মিথ্যা গণ্য করেছে। তাবে সাময়িকভাবে কোন ব্যক্তির শরীরে বা শরীরের কোন অনুভূতিতে যাদুর প্রভাবে পড়ার ব্যাপারটি স্বতন্ত্র। এটা ঠিক এ রকম ব্যাপার যেমন কারোর গায়ে পাথর মারলে সে আহত হয়। কাফেরদের অপবাদ এ ধরনের ছিল না। কুরআনও এ ধরনের অপবাদের প্রতিবাদ করেনি। এ ধরনের কোন সাময়িক প্রতিক্রিয়ায় নবীর মর্যাদা প্রভাবিত হয় না। নবীর ওপর যদি বিষের প্রভাব পড়তে পারে, নবী যদি আহত হতে পারেন, তাহলে তাঁর ওপর যাদুর প্রভাবও পড়তে পারে। এর ফলে নবুওয়াতের মর্যাদা বিনষ্ট হতে পারে কি কারণে? নবীর মন-মস্তিষ্ক যদি যাদুর প্রভাবে নিস্তেজ হয়ে পড়ে, এমনকি তিনি যাদুর প্রভাবাধীনেই কথা বলতে ও কাজ করতে থাকেন তাহলেই এর ফলে নবুওয়াতের মর্যাদা বিনষ্ট হতে পারে। সত্য বিরোধীরা হযরত মূসা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে এ অপবাদ দিতো এবং কুরআন এরই প্রতিবাদ করেছে।

# একথা হযরত মূসা (আ) এজন্য বলেন যে, কোন দেশে দুর্ভিক্ষ লাগা বা লাখো বর্গকিলোমিটার বিস্তৃতি এলাকায় ধ্বংসের বিভীষিকা নিয়ে পংগপালের মতো ব্যাঙ বের হয়ে আসা অথবা শস্য গুদামগুলোর ব্যাপকভাবে পোকা লেগে যাওয়া এবং এ ধরনের অন্যান্য জাতীয় দুর্যোগ দেখা দেয়া কোন যাদুকরের যাদুর বলে বা কোন মানুষের ক্ষমতায় সম্ভবপর ছিল না। তারপর যখন প্রত্যেকটি দুর্যোগ শুরু হওয়ার পূর্বে হযরত মূসা ফেরাউনকে এ বলে নোটিশ দিতেন যে, তোমার হঠকারিতা থেকে বিরত না হলে এ দুর্যোগটি তোমার রাজ্যে চেপে বসবে এবং ঠিক তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী সেই দুর্যোগটি সমগ্র রাজ্যকে গ্রাস করে ফেলতো, তখন এ অবস্থায় কেবলমাত্র একজন পাগল ও চরম হঠকারী ব্যক্তিই একথা বলতে পারতো যে, এ বিপদ ও দুর্যোগগুলো পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলীর একচ্ছত্র অধিপতি ছাড়া অন্য কেউ নাযিল করেছে।

# আমি তো যাদুগ্রস্ত নই, তবে তোমার ওপর নিশ্চয়ই দুর্ভাগ্যের পদাঘাত হয়েছে। আল্লাহর এ নিদর্শনগুলো একের পর এক দেখার পরও তোমার নিজের হঠকারিতার ওপর ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা একথা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেয় যে, তোমার কপাল পুড়েছে।

#এটিই হচ্ছে এ কাহিনীটি বর্ণনা করার মূল উদ্দেশ্য। মক্কার মুশরিকরা মুসলমানদেরকে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আরবের মাটি থেকে উৎখাত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছিল। তাই তাদেরকে শুনানো হচ্ছে, ফেরাউন এসব কিছু করতে চেয়েছিল মূসা ও বনী ইসরাঈলের সাথে। কিন্তু কার্যত হয়েছে যে, ফেরাউন ও তার সাথীদেরকে নির্মূল ও নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে এবং পৃথিবীতে মূসা ও তাঁর অনুসারীদেরকে বসবাস করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন তোমরাও যদি এ একই পথ অবলম্বন করো তাহলে তোমাদের পরিণামও এর থেকে ভিন্ন কিছু হবে না।

 

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-
# মােট কথা, অসংখ্য অলৌকিক ঘটনা প্রদর্শন করলেই যে, কঠিন হৃদয়ের লােকগুলাে ঈমান গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হবে, এমনটি মনে করার কোনাে কারণ নেই। এই তাে মূসা(আ.) নয় নয়টি প্রকাশ্য ও জাজুল্যমান নিদর্শন উপস্থাপন করেও ফেরাউন ও তার দলবলের আস্থা অর্জন করতে পারেননি। তারা তাকে নবী হিসাবে বিশ্বাস করেনি। ফলে তাদের সকলের ওপর আল্লাহর গযব নেমে আসে, তারা ধ্বংস হয়ে যায়। সেই ঘটনার বর্ণনাই নিচের আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে, ‘আমি মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম অতএব (হে নবী) তুমি… অতপর আমি বনি ইসরাঈলীদের বললাম, (এবার) তােমরা এ যমীনে (নির্বিবাদে) বসবাস করাে এরপর যখন আখেরাতের প্রতিশ্রুতি (বাস্তবায়নের সময় আসবে তখন আমি তােমাদের সবাইকে সংকুচিত করে (আমার সামনে) নিয়ে দাঁড় করাবাে। (আয়াত ১০১-১০৪) আলােচ্য আয়াতে মূসা(আ.)-এর ঘটনা এবং বনী ইসরাঈলের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, প্রসঙ্গক্রমে কারণ আলােচ্য সূরার মূল ঘটনার সাথে এর সংগতি রয়েছে। সূরার সূচনায় মাসজিদে আকসা ও বনী ইসরাঈলের ঘটনার আংশিক বর্ণনা এসেছে। সাথে সাথে মূসা(আ.)-এর প্রসংগও স্থান পেয়েছে। পরিশেষে কেয়ামতের ও কাফেরদের পরিণতির বর্ণনা দিতে গিয়ে ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের প্রসংগও এসেছে। কারণ, কেয়ামতের বর্ণনার সাথে এটি সংগতি পূর্ণ। আলােচ্য আয়াতে যে নয়টি নিদর্শনের কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে, শ্বেত হস্ত, লাঠি, ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের জীবনে ঘটে যাওয়া দুর্ভিক্ষ, ফসলহানি, ঝড়-তুফান, পংগপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত। এসব ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হচ্ছে স্বয়ং বনি ইসরাঈল। কাজেই তাদেরকে জিজ্ঞেস করে এর সত্যতা যাচাই করে নাও। ফেরাউন হযরত মূসা(আ.)-কে জাদুগ্রস্ত বলে প্রত্যাখ্যান করে দেয়। আসলে আল্লাহর একত্ববাদের কথা যারা বলেন, যুলুম, অত্যাচার ত্যাগ করার আহ্বান যাঁরা জানান, তারা যুলুম বাজ ও স্বেচ্ছাচারী শাসকদের চোখে জাদুগ্রন্তই। কারণ, ফেরাউন এবং তার মতাে অন্যান্য অত্যাচারী শাসকদের পক্ষে এসব নিগুঢ় তথ্যপূর্ণ বিষয়াদির তাৎপর্য অনুধাবন করা কখনােই সম্ভব নয়। জ্ঞান থাকা অবস্থায় মাথা উচু করে এ জাতীয় কোনাে বিষয় নিয়ে আলােচনা করার মতাে ক্ষমতা ওদের নেই। কিন্তু, মুসা(আ.)-এর ব্যাপার হচ্ছে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি স্বয়ং আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও মদদপ্রাপ্ত। তিনি সত্যের বাহক। তিনি সঠিক পথের দিশারী। তিনি আল্লাহর সাহায্যের ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি অত্যাচারী শাসকদের ধ্বংসের ব্যাপারে পূর্ণ আস্থাশীল। তাই তিনি ফেরাউনের সামনে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে উত্তর দিতে গিয়ে বলতে পেরেছেন। (আয়াত ১০২) অর্থাৎ হে ফেরাউন তুমি এসকল সুস্পষ্ট খােদায়ী নিদর্শনগুলাে অস্বীকার করে নিজের ধ্বংসই ডেকে এনেছে। কারণ, তােমার ভালাে করেই জানা আছে, এসব অলৌকিক ঘটনা জন্ম দেয়ার ক্ষমতা আল্লাহ ব্যতীত আর কারাে নেই। এগুলাে এতােই স্পষ্ট ও প্রকাশ্য যে, তা চোখকে কখনও ফাকি দিতে পারে না। বরং এগুলাে যেন স্বয়ং দৃষ্টিশক্তি যা অদৃশ্যকে দৃশ্যমান করে তােলে, অজানা সত্যকে উদ্যাটন করে দেয়। যুক্তি ও সত্যের সামনে হেরে গিয়ে যুলুমবাজরা সব সময়ই তাদের বস্তুনির্ভর শক্তির আশ্রয় নেয় এবং সত্যের ধারক ও বাহকদেরকে পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করার জন্যে উঠে পড়ে লেগে যায়। সত্যের বাণীকে ওরা এভাবেই দমিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু আল্লাহর চূড়ান্ত ফয়সালা ওদের বিরুদ্ধে চলে যায়। ফলে ওরাই এই ধরাপৃষ্ঠ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ে, ধ্বংস হয়ে পড়ে। আর যারা সত্যের ধারক অথচ ওদের সামনে ছিলাে দূর্বল ও অসহায় সেই দৃঢ়চিত্তের লােকদেরই বিজয় ঘটে। ওরাই পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ কথাই উপরের আয়াতে বলা হয়েছে। (আয়াত ১০৩ -১০৪) যারা আল্লাহর সত্য নিদর্শনগুলাে অস্বীকার করে তাদের পরিণতি এমনই হয়ে থাকে। আর এভাবেই আল্লাহ তায়ালা দুর্বল ও অসহায় লােকদেরকে পৃথিবীর মালিকানা দান করেন, তাদেরকে বিজয়ী ও প্রতিষ্ঠিত করেন। এর পেছনে ওদের কর্মকান্ড ও আচার-আচরণই দায়ী । ইতিপূর্বে আলােচ্য সূরার গোড়াতে ওদের অবস্থা কী ছিলাে তা আমরা দেখেছি। আর এখন উভয় দলকেই পরকালের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে বলে জানতে পারছি। (আয়াত ১০৪)

 

তাফসীরে‌ হাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
১০১-১০৪ নং আয়াতের তাফসীর:

শুরুতেই আল্লাহ তা‘আলা মূসা (عليه السلام)-এর মু‘জিযার কথা উল্লেখ করে বলেন: তিনি তাকে নয়টি মু‘জিযাহ দান করেছিলেন। এ নয়টি মু’জিযাহ হল শুভ্র হাত, লাঠি, অনাবৃষ্টি, সাগর পারাপার, তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত। এ সম্পর্কে সূরা আ‘রাফের ১০৭-১০৮, ১৩০, ১৩৩ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।

যখন মূসা (عليه السلام) এসব নিদর্শন নিয়ে ফির‘আউনকে এক আল্লাহ তা‘আলার দিকে দাওয়াত দেন তখন ফিরআউন বলল: হে মূসা (عليه السلام) আমি তো তোমাকে জাদুগ্রস্থ ব্যক্তিদের মত দেখছি। তখন মূসা (عليه السلام) পরের আয়াতে বর্ণিত কথাগুলো বললেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘‘এবং তুমি তোমার হাত তোমার বগলে রাখ, এগুলো বের হয়ে আসবে শুভ্র নির্মল অবস্থায়। এটা ফির‘আউন ও তার সম্প্রদায়ের নিকট আনীত নয়টি নিদর্শনের অন্তর্গত। নিশ্চয়ই‎ তারা ছিল সত্যত্যাগী সম্প্রদায়।’ অতঃপর যখন তাদের নিকট আমার স্পষ্ট নিদর্শন আসল, তারা বলল:‎ ‘এটা সুস্পষ্ট জাদু।’ তারা অন্যায় ও উদ্ধতভাবে নিদর্শনগুলো প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্ত‎র এগুলোকে সত্য বলে গ্রহণ করেছিল।” (সূরা নামল ২৭:১২-৪৪)

এই সকল নিদর্শন দেখার পরও ফির‘আউন ঈমান আনেনি, এমনকি সে মূসা (عليه السلام)-সহ বাণী ইসরাঈলকে দেশ থেকে বের করে দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করল। যার ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নীল নদে ডুবিয়ে মারলেন। সুতরাং এখনো যারা সৎ ব্যক্তিদের সাথে মন্দ আচরণ করবে তাদের অবস্থা এর চেয়ে ভাল হবে বলে আশা করা যায় না।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. নিদর্শন দেখার পর আর অস্বীকার করার কোনই সুযোগ নেই। করলে সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি এসে যাবে।
২. কোন এলাকা থেকে সৎ ব্যক্তিদেরকে বের করে দিলে সে এলাকার পরিণতি ভয়াবহ হয়।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
১০১-১০৪ নং আয়াতের তাফসীর

হযরত মূসা (আঃ) ন’টি মু’জিযা লাভ করেছিলেন যেগুলি তাঁর নবুওয়াতের সত্যতার স্পষ্ট দলীল ছিল। নয় টি মু’জিযা হচ্ছেঃ লাঠি, হাত (এর ঔজ্জ্বল্য), দুর্ভিক্ষ, সমুদ্র, তুফান, ফড়িং, উকুণ, ব্যাঙ এবং রক্ত। এইগুলি বিস্তারিত বিবরণযুক্ত আয়াত সমূহ। মুহাম্মদ ইবনু কাবের (রঃ) উক্তি এই যে, মু’জিযাগুলি হলোঃ হাত উজ্জ্বল হওয়া, লাঠি সাপ হওয়া এবং পাঁচটি মু’জিযা যা সূরায়ে আ’রাফে বর্ণিত আছে, আর মাল কমে যাওয়া এবং পাথর। হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) প্রভৃতি হতে বর্ণিত আছে যে, মুজিযাগুলি ছিল তাঁর হাত, তাঁর লাঠি, দুর্ভিক্ষ, ফল হ্রাস পাওয়া, তুফান, ফড়িং, উকুণ, ব্যাঙ এবং রক্ত । এই উক্তিটিই সবচেয়ে বেশী প্রকাশমান ও স্পষ্ট, উত্তম ও দৃঢ়। হাসান বসরী (রঃ) এগুলির মধ্যে দুর্ভিক্ষ এবং ফলেরহ্রাস পাওয়াকে একটি ধরে লাঠির যাদুকরদের সাপগুলি খেয়ে ফেলাকে নবম মুজিযা বলেছেন।

এই সমুদয় মু’জিযা দেখা সত্ত্বেও ফিরাউন এবং তার লোকেরা অহংকার করে এবং তাদের পাপ কার্যের উপরই প্রতিষ্ঠিত থাকে। তাদের অন্তরে বিশ্বাস জমে গেলেও তারা যুলুম ও বাড়াবাড়ি করে কুফরী ও ইনকারের উপরই কায়েম থেকে যায়। পূর্ববর্তী আয়াতগুলির সাথে এই আয়াতগুলির সহযোগ এই যে, যেমন রাসূলুল্লাহর (সঃ) কওম তার কাছে মু’জিযা দেখতে চেয়েছিল, অনুরূপভাবে ফিরাউনও মূসার (আঃ) কাছে মু’জিযা দেখতে চেয়েছিল এবং তার সামনে সেগুলি প্রকাশিতও হয়েছিল, তবুও ঈমান তার ভাগ্যে জুটে নাই। শেষ পর্যন্ত তাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়। তদ্রুপই তাঁর কওমও যদি মু’জিযা। আসার পরেও কাফিরই থেকে যায় তবে তাদেরকে আর অবকাশ দেয়া হবে না এবং তারাও সমূলে ধ্বংস হয়ে যাবে। স্বয়ং ফিরাউন মু’জিযাগুলি দেখার পর হযরত মূসাকে (আঃ) যাদুকর বলে নিজেকে তাঁর থেকে ছাড়িয়ে নেয়।

এখানে যে নয়টি মু’জিযা’র বর্ণনা রয়েছে তা এইগুলিই এবং ঐগুলির বর্ণনা হতে (আরবি) (২৭:১০-১২) পর্যন্ত এর মধ্যে রয়েছে। এই আয়াতগুলির মধ্যে লাঠি ও হাতের বর্ণনা বিদ্যমান রয়েছে। বাকীগুলোর বর্ণনা সূরায়ে আ’রাফে রয়েছে। এইগুলো ছাড়াও আল্লাহ তাআলা হযরত মূসাকে (আঃ) আরো বহু মু’জিযা দিয়েছিলেন। যেমন তাঁর লাঠির আঘাতে একটি পাথরের মধ্য হতে বারোটি প্রস্রবণ বের হওয়া, মেঘ দ্বারা ছায়া করা, মান্ন ও সালওয়া অবতীর্ণ হওয়া ইত্যাদি। এসব নিয়ামত বাণী ইসরাঈলকে মিসর শহর ছেড়ে দেয়ার পর দেয়া হয়েছিল। এই মু’জিযা গুলির বর্ণনা এখানে না দেয়ার কারণ এই যে, ফিরাউন ও তার লোকেরা এগুলো দেখে নাই। এখানে শুধু ঐ মু’জিযাগুলির বর্ণনা দেয়া হয়েছে যে গুলি ফিরাউন ও তার লোকেরা দেখেছিল। তারপর অবিশ্বাস করেছিল।

মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, একজন ইয়াহূদী তার সঙ্গীকে বলেঃ “চল, আমরা এই নবীর (সঃ) কাছে গিয়ে তাঁকে কুরআনের এই আয়াতটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি যে, হযরত মূসার (আঃ) নয়টি মু’জিযা কি ছিল?” অপরজন তাকে বললোঃ “নবী বলো না। অন্যথায় তাঁর চারটি চোখ হয়ে যাবে। (অর্থাৎ তিনি এতে গর্ববোধ করবেন।” অতঃপর তারা দুজন এসে তাঁকে প্রশ্ন করে।” তিনি উত্তরে বলেনঃ “আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না, চুরি করো না, ব্যভিচার করো না, কাউকেও অন্যায়ভাবে হত্যা করো না, জাদু করো না, সুদ খেয়ো না, নিস্পাপ লোকদেরকে ধরে বাদশাহর কাছে নিয়ে গিয়ে হত্যা করিয়ে, সতী ও পবিত্র মহিলাদেরকে ব্যভিচারের অপবাদ দিয়ো না অথবা বলেছেনঃ জিহাদ হতে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো না। আর হে ইয়াহূদীগণ! তোমাদের উপর শেষ হুকুম ছিল এই যে, তোমরা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লংঘন করো না।” একথা শোনা মাত্রই তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাসূলুল্লাহর (সঃ) হাত পা চুমতে শুরু করে। এরপর বলেঃ “আমাদের সাক্ষ্য রইলো যে, আপনি আল্লাহর নবী।” তখন নবী (সঃ) বললেনঃ “তাহলে তোমরা আমার অনুসরণ করছো না কেন?” তারা উত্তরে বললোঃ “হযরত দাউদ (আঃ) প্রার্থনা করেছিলেন যে, তাঁর বংশে যেন নবী অবশ্যই হন। আমরা ভয় করছি যে, আমরা আপনার অনুসরণ করলে ইয়াহূদীরা আমাদেরকে জীবিত রাখবে না। (এ হাদীসটি জামে তিরমিযী, সুনানে নাসায়ী ও সুনানে ইবনু মাজাতেও রয়েছে। ইমাম তিরমীযী (রঃ) এটাকে হাসান সহীহও বলেছেন। কিন্তু এতে কিছুটা সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। কেননা এর বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইবনু সালমার স্মরণ শক্তিতে ত্রুটি রয়েছে। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে ভাল জানেন)

হযরত মূসা (আঃ) ফিরাউনকে বলেনঃ “হে ফেরাউন! তোমার তো ভালরূপেই জানা আছে যে, এসব মুজিযা সত্য। এগুলোর এক একটি আমার সত্যতার উপর উজ্জ্বল দলীল। আমার ধারণা হচ্ছে যে, তুমি ধ্বংস হতে চাচ্ছ। তোমার উপর আল্লাহর লা’নত বর্ষিত হোক-এটা তুমি কামনা করছে; তুমি পরাস্ত হবে এবং ধ্বংস হয়ে যাবে।”

(আরবি) শব্দের অর্থ হলো ধ্বংস হওয়া। যেমন নিম্নের কবিতাংশে রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “যখন শয়তান পথ ভ্রষ্টতার পন্থায় যুলুম করে থাকে, তখন যে তার প্রতি আকৃষ্ট হয় সে ধ্বংস প্রাপ্ত হয় (অর্থাৎ) শয়তানের বন্ধু ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে থাকে।”

(আরবি) দ্বিতীয় কিরআতে (আরবি) রয়েছে। কিন্তু জামহূরের কিরআতে (আরবি) অর্থাৎ অক্ষরের উপর যবর দিয়েও রয়েছে। এই অর্থকেই নিম্নের আয়াতে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “যখন তাদের কাছে আমার প্রকাশ্য ও প্রত্যক্ষ নিদর্শনসমূহ পৌঁছে যায়, তখন তারা বলে ওঠেঃ এটা তো স্পষ্ট যাদু, একথা বলে তারা অস্বীকার করে বসে, অথচ তাদের অন্তর তা বিশ্বাস করে নিয়ে ছিল, কিন্তু যুলুম ও সীমালংঘনের কারণেই তারা মানে না।” (২৭:১৩-১৪) মোট কথা, যে নিদর্শনগুলির বর্ণনা দেয়া হয়েছে সেগুলি হলোঃ লাঠি, হাত, দুর্ভিক্ষ, ফলের হ্রাস প্রাপ্তি, ফড়িং, উকুণ, ব্যাঙ এবং রক্ত। এগুলো ফিরাউন ও তার কওমের জন্যে আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে দলীল ছিল এবং এগুলো ছিল হযরত মূসার (আঃ) মু’জিযা যা তার সত্যতা এবং আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ স্বরূপ ছিল এই নতুন নিদর্শনগুলির দ্বারা উদ্দেশ্য এ আহকাম নয় যা উপরের হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। কেননা, ওগুলো ফিরাউন ও তার কওমের উপর হজ্জত ছিল না। কেননা, তাদের উপর হুজ্জত হওয়া এবং এই আহকামের বর্ণনার মধ্যে কোন সম্পর্কই নেই। শুধু বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইবনু সালমার বর্ণনার কারণেই এই ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। আসলে তার কতকগুলি কথা অস্বীকার যোগ্য। এসব ব্যাপারে সঠিক জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ। খুব সম্ভব ঐ ইয়াহূদী দু’জন দশটি কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন, আর বর্ণনাকারীর ধারণা হয়েছিল যে, সেগুলি ঐ নয়টি নিদর্শন।

ফিরাউন হযরত মূসাকে (আঃ) দেশান্তর করার ইচ্ছা করেছিল। কিন্তু মহান আল্লাহ স্বয়ং তাকেই মাছের গ্রাস বানিয়েছিল। আর তার সমস্ত সঙ্গীকেও পানিতে নিমজ্জিত করেছিলেন। এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বাণী ইসরাঈলকে বলেছিলেনঃ এখন যমীন তোমাদেরই অধিকারভুক্ত হয়ে গেল। তোমরা এখন সুখে শান্তিতে বসবাস কর এবং পানাহার করতে থাকো। এই আয়াতে রাসূলুল্লাহকেও (সঃ) চরমভাবে সুসংবাদ দেয়া হয়েছে যে, মক্কা তাঁর হাতেই বিজিত হবে। অথচ এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিল। তখনতো তিনি মদীনায় হিজরতই করেন নাই। বাস্তবে হয়েছিলও এটাই যে, মক্কাবাসী তাকে মক্কা থেকে বের করে দেয়ার ইচ্ছা করে। যেমন কুরআন কারীমের (আরবি) (১৭:৭৬) এই আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবীকে (সঃ) জয়যুক্ত করেন এবং মক্কার মালিক বানিয়ে দেন। আর বিজয়ীর বেশে তিনি মক্কায় আগমন করেন এবং এখানে স্বীয় অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেন। তারপর ধৈর্য ও করুণা প্রদর্শন করতঃ স্বীয় প্রাণের শত্রুদেরকে সাধারণভাবে ক্ষমা করে দেন।

আল্লাহ তাআলা বাণী ইসরাঈলের ন্যায় দুর্বল জাতিকে যমীনের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেন এবং তাদেরকে ফিরাউনের ন্যায় কঠোর ও অহংকারী বাদশাহর ধন দৌলত, যমীন, ফল, জমিজমা এবং ধন-ভাণ্ডারের মালিক করে দেন। যেমন মহান আল্লাহ বলেছেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “বাণী ইসরাঈলকে আমি ওগুলির উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিলাম।” (২৬:৫৯)

এখানেও আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ফিরাউনের ধ্বংসের পর আমি বাণী ইসরাঈলকে বললামঃ “এখন তোমরা এখানে বসবাস কর। কিয়ামতের প্রতিশ্রুতির দিন তোমরা ও তোমাদের শত্রুরা সবাই আমার সামনে হাযির হবে। আমি তোমাদের সবকেই আমার কাছে একত্রিত করবো।

Leave a Reply