أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৮৭৮)[*কোরআন নাযিলের পদ্ধতি ও তার তাৎপর্য ।]
সুরা: আল্ বনি ইসরাইল
সুরা:১৭
১০৫- ১০৬ নং আয়াত:-
[ وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ اِلَّا مُبَشِّرًا وَّ نَذِیۡرًا ﴿۱۰۵﴾ۘ
আমি তো তোমাকে শুধু সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি। ]
www.motaher21.net
সুরা: বনী ইসরাঈল
আয়াত নং :-১০৫
وَ بِالْحَقِّ اَنْزَلْنٰهُ وَ بِالْحَقِّ نَزَلَ١ؕ وَ مَاۤ اَرْسَلْنٰكَ اِلَّا مُبَشِّرًا وَّ نَذِیْرًاۘ
এ কুরআনকে আমি সত্য সহকারে নাযিল করেছি এবং সত্য সহকারেই এটি নাযিল হয়েছে। আর হে মুহাম্মাদ! তোমাকে আমি এছাড়া আর কোন কাজে পাঠাইনি যে, (যে মেনে নেবে তাকে) সুসংবাদ দিয়ে দেবে এবং (যে মেনে নেবে না তাকে) সাবধান করে দেবে।
সুরা: বনী ইসরাঈল
আয়াত নং :-১০৬
وَ قُرْاٰنًا فَرَقْنٰهُ لِتَقْرَاَهٗ عَلَى النَّاسِ عَلٰى مُكْثٍ وَّ نَزَّلْنٰهُ تَنْزِیْلًا
আর এ কুরআনকে আমি সামান্য সামান্য করে নাযিল করেছি, যাতে তুমি থেমে থেমে তা লোকদেরকে শুনিয়ে দাও এবং তাকে আমি (বিভিন্ন সময়) পর্যায়ক্রমে নাযিল করেছি।
১০৫-১০৬ নং আয়াতের তাফসীর:
ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-
*কোরআন নাযিলের পদ্ধতি ও তার তাৎপর্য : এই আলােচনা দ্বারা আমরা অলৌকিক ঘটনাবলীর ব্যাপারে কাফের সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে পরিচিত হলাম। সাথে সাথে জানতে পেলাম যে, ওই সকল কাফেরদের সাথে আল্লাহর আচরণ কি হয়। আমরা এটাও জানতে পেলাম যে, কোরআন হচ্ছে সত্যের বাহক। তাই এই পবিত্র বাণী চিরকালই সত্যের প্রতীক হিসাবে বিদ্যমান থাকবে। এই পবিত্রবাণী বিক্ষিপ্ত সময়ে পৃথক পৃথকভাবে অবতীর্ণ করা হয়েছে যেন দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে মানুষ তা ধীরস্থিরভাবে পাঠ করতে পারে এবং এর মর্ম অনুধাবন করতে পারে। এ সম্পর্কেই বলা হয়েছে, (আয়াত ১০৫) এই পবিত্র কোরআনের আগমন ঘটেছে একটি জাতিকে দীক্ষিত করার জন্যে, তাদেরকে গড়ে তােলার জন্যে এবং তাদের জন্যে একটা পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্যে। তারা পরবর্তীতে এই জীবন ব্যবস্থা ও শিক্ষার আলাে গােটা পৃথিবীর আনাচে-কানাচে বহন করে নিয়ে যাবে এবং মানব জাতিকে এর আলোকে আলােকিত করে তুলবে। একটা পূর্ণাঙ্গ ও বাস্তবমুখী পদ্ধতির মাধ্যমে এই জীবন ব্যবস্থার প্রচার ও প্রসার কাজে আত্মনিয়ােগ করবে। সে কারণেই তাদের বাস্তব প্রয়ােজনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিক্ষিপ্তভাবে এই কুরআন নাযিল করা হয়। কারণ, একটি জাতিকে গড়ে তুলতে হলে দীর্ঘ সময়ের প্রয়ােজন হয়, দীর্ঘ ও বাস্তবমুখী অভিজ্ঞতার প্রয়ােজন হয়। কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে একটি কার্যকর ও বাস্তবমুখী জীবন ব্যবস্থার গােড়া পত্তনের জন্যে। তাই এর প্রস্তুতি লগ্নে কোরআনের আগমন ঘটেছে বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হয়ে। এটা কোনাে আইন বিষয়ক তাত্ত্বিক আলােচনা বা বিমূর্ত কোনাে মতবাদের সমাহার নয় যে, তা কেবল চিন্তার খােরাক হিসাবে পাঠ করার জন্যে একই সময়ে এবং একই খন্ডে প্রকাশ করা হবে। বস্তু পবিত্র কোরআনকে একই সময় একটি পূর্ণাংগ গ্রন্থ আকারে নাযিল করার পরিবর্তে বিক্ষিপ্তভাবে নাযিল করার পেছনে এটাই হচ্ছে মূল কারণ ও রহস্য। প্রথম যুগের মুসলমানরা এই রহস্যটি অনুধাবন করতে সক্ষম হন। তারা পবিত্র কোরআনকে বাস্তব জীবনে প্রয়ােগের উদ্দেশ্যেই গ্রহণ করতেন। এর প্রতিটি বিধি নিষেধ, এর প্রতিটি শিক্ষা দীক্ষা এবং এর প্রতিটি আদেশ-নিষেধ তারা নিজেদের বাস্তব জীবনে প্রয়ােগ করতেন। কোনাে সাহিত্যধর্মী গ্রন্থের ন্যায় পবিত্র কোরআনকে তাঁরা নিছক মানসিক তৃপ্তি লাভের উপায় হিসাবে পাঠ করতেন না। কিসসা কাহিনী বা অতীত রূপকথার ন্যায় তারা কেবল চিত্তবিনােদনের মাধ্যম হিসাবেও পাঠ করতেন না। তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে কোরআনের প্রতিটি বিধি-বিধান ও আদেশ নিষেধ বাস্তবায়ন করার উদ্দেশ্যে তেলাওয়াত করতেন। ফলে তাদের চিন্তা চেতনায়, তাদের আচার আচরণ এবং তাদের জীবন যাপনে এর সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটে। মােট কথা, তারা পবিত্র কোরআনকে তাদের জীবন বিধান হিসাবে গ্রহণ করে নিয়েছিলেন। এ কারণেই তাদের পূর্বের সকল রীতি নীতি, প্রথা প্রচলন ও বিধি বিধানকে তারা সম্পূর্ণরূপে ত্যাগ করেন। বিশিষ্ট সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রা.) বলেন, আমাদের মধ্যে কেউ দশটি আয়াত শিখলে ততােক্ষণ পর্যন্ত আগে বাড়তো না যতােক্ষণ না সে এগুলাের অর্থ অনুধাবন করতাে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতাে। সত্যের বাহক হিসাবে এই পবিত্র কোরআনের অবতরণ ঘটেছে সত্যকে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং প্রমাণিত করতে। কাজেই, সত্যই হচ্ছে এর বিষয়বস্তু, সত্যই হচ্ছে এর উদ্দেশ্য, সত্যই হচ্ছে এর উপাদান এবং সত্যই হচ্ছে এর বিবেচ্য বিষয়। সেই মহাসত্য যা গােটা সৃষ্টি জগতের মাঝে কার্যকর ও বিদ্যমান। সেই মহাসত্য যার ওপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হয়েছে আসমান ও যমীন, যার ওপর ভিত্তি করে টিকে আছে এই বিশাল জগত। পবিত্র কোরআন তাে এই সৃষ্টি জগতের পেছনে কার্যকর অদৃশ্য সত্ত্বার সাথেই সম্পৃক্ত, সেই সত্তারই পরিচয়বাহক, সেই সত্ত্বারই ইংগিতবাহক, সেই সত্ত্বা থেকেই উৎসারিত। কাজেই গােটা কোরআনই হচ্ছে সত্যের আলােকবর্তিকা, সত্যের সন্ধানদাতা। রসূল এই সত্যের মাধ্যমেই মানুষকে সুসংবাদ দান করেন, তাদেরকে সতর্ক করেন। এখানে রসূল(স.) কে বলা হচ্ছে তিনি যেন এই সত্যের বাহক কোরআনকে তাঁর জাতির সামনে তুলে ধরেন এবং তাদেরকে নিজেদের পথ স্বাধীনভাবে বেছে নেয়ার সুযােগ দেন। যদি তাদের ইচ্ছা হয় তাহলে কোরআনকে বিশ্বাস করবে, আর যদি ইচ্ছা না হয় তাহলে করবে না। এরপর তাদের শেষ পরিণতি তাদের এই গ্রহণ বর্জন অনুসারেই হবে। এ ক্ষেত্রে রসূল(স.) অবশ্য ওদের সামনে পূর্ববর্তী সেসব আসমানী কিতাবপ্রাপ্ত ইহুদী ও খৃষ্টান সম্প্রদায়ের লােকদের দৃষ্টান্ত তুলে ধরবেন যারা এই কোরআনের প্রতি ঈমান এনেছে। ফলে ওই সব ঈমানপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা মক্কার নিরক্ষর লােকগুলাের জন্যে আদর্শ ও অনুসরণীয় নমুনা হিসাবে গণ্য হবে এবং এক সময় হয়তাে এরাও ঈমান গ্রহণ করতে উৎসাহিত হবে। এই বিষয়টিই এখানেই বলা হয়েছে।
তাফসীরে হাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
১০৫-১০৬ নং আয়াতের তাফসীর:
(وَبِالْحَقِّ أَنْزَلْنٰهُ)
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা সত্যসহ কুরআন নাযিল করেছেন। এতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। সুতরাং তাতে যা কিছু রয়েছে তা সত্য, যে সংবাদ এসেছে তা সঠিক, যে বিধান দেয়া হয়েছে তা ন্যায়সঙ্গত।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدْقًا وَّعَدْلًا)
“সত্য ও ন্যায়ের দিক দিয়ে তোমার প্রতিপালকের বাণী পরিপূর্ণ।” (সূরা আন‘আম ৬:১১৫)
(وَبِالْحَقِّ نَزَلَ)
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা যে সত্যসহ কুরআন নাযিল করেছেন সে সত্য নিয়েই কুরআন নাযিল হয়েছে। অন্য কারো কথা মিশ্রিত নেই, কোন কম-বেশি করা হয়নি, নাযিল হওয়ার পথে কোন পরিবর্তন হয়নি এবং শয়তানও তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। কারণ এ কুরআন নিয়ে এসেছেন এমন একজন রাসূল যিনি আমানতদার, শক্তিশালী ও আনুগত্যশীল।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ذِيْ قُوَّةٍ عِنْدَ ذِي الْعَرْشِ مَكِيْنٍ لا مُّطَاعٍ ثَمَّ أَمِيْنٍ)
“সে শক্তিশালী আরশের মালিকের নিকট মর্যাদাসম্পন্ন, সেখানে তাকে মান্য করা হয় এবং সে বিশ্বাসভাজন।” (সূরা তাকভীর ৮১:২০-২১)
সুতরাং যারা বলে জিবরীল (عليه السلام) ওয়াহী নাযিল নিয়ে আসার ক্ষেত্রে খিয়ানত করেছেন, যেমন ওয়াহী নিয়ে আসার নির্দেশ ছিল আলী (রাঃ)-এর কাছে ভুল করে মুহাম্মাদের কাছে নিয়ে গেছে তাদের এ সব কথা অনর্থক ও ভ্রান্ত ছাড়া কিছুই নয়।
আর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যারা ঈমান আনবে ও সৎ আমল করবে তাদের জন্য তিনি উত্তম প্রতিদানের সুসংবাদদাতা, আর যারা কুফরী করবে, আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য হবে তাদের জন্য জাহান্নামের সতর্ককারীরূপে পাঠিয়েছেন।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, তিনি এ কুরআনকে খণ্ড খণ্ড করে প্রেক্ষাপট অনুযায়ী অবতীর্ণ করেছেন। যাতে তিনি মানুষকে সহজে বুঝাতে পারেন। পূর্ববতী আসমানী কিতাব একত্রে নাযিল করা হয়েছিল, কুরআন প্রয়োজনানুপাতে খণ্ড খণ্ড আকারে নাযিল করলে মুশরিকরা বলল এ কেমন রাসূল যে, তার কাছে একত্রে কিতাব দেয়া হয় না। সে যদি সত্য রাসূল হয় তাহলে যেন পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবের ন্যায় একত্রে একটি কিতাব নিয়ে আসে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা তাদের কথা তুলে ধরে বলেন:
(وَقَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لَوْلَا نُزِّلَ عَلَيْهِ الْقُرْاٰنُ جُمْلَةً وَّاحِدَةً)
“কাফিররা বলে: ‘সমগ্র কুরআন তার নিকট একবারে অবতীর্ণ হল না কেন?’ (সূরা ফুরকান ২৫:৩২)
কিন্তু খণ্ড খণ্ড আকারে কুরআন নাযিল করার হিকমত রয়েছে, যা অত্র আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। তা হল, যাতে তিনি ক্রমে ক্রমে মানুষকে পাঠ করে শুনাতে পারেন। কারণ একত্রে এত বড় কুরআন নাযিল হলে মানুষ ধারণ করতে পারবে না। এ ছাড়া ক্রমে ক্রমে নাযিল করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অন্তরকে দীনের উপর অটল রাখেন। কাফিররা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে কষ্ট দিত, আল্লাহ তা‘আলা তখন কুরআন নাযিল করে সান্ত্বনা দিতেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(كَذٰلِكَ لِنُثَبِّتَ بِه۪ فُؤَادَكَ وَرَتَّلْنٰهُ تَرْتِيْلًا)
“এভাবেই আমি অবতীর্ণ করেছি তোমার হৃদয়কে তা দ্বারা মজবুত করার জন্য এবং তা ক্রমে ক্রমে স্পষ্টভাবে তেলাওয়াত করেছি।” (সূরা ফুরকান ২৫:৩২)
কুরআন খণ্ড খণ্ড আকারে নাযিল হওয়ার অন্যতম আরেকটি উদ্দেশ্য হল সহজেই মুখস্ত করা। কারণ একত্রে কুরআন নাযিল হলে মুখন্ত করা কঠিন হয়ে যাবে।
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা এই কুরআনকে সত্যসহকারে ধীরে ধীরে প্রয়োজন অনুযায়ী অবতীর্ণ করেছেন। যাতে মানুষের বুঝতে সহজ হয়, ধারণ করতে সহজ হয়।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কুরআন সত্যসহকারে অবতীর্ণ হয়েছে। এতে কোন প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন হয়নি।
২. কুরআন প্রয়োজন অনুপাতে অল্প অল্প করে অবতীর্ণ হয়েছে, একেবারে অবতীর্ণ হয়নি।
৩. কুরআন খণ্ড খণ্ড আকারে নাযিল হওয়ার অন্যতম একটি হিকমত হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা দেয়া।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন্য বলেছেন :-
# তোমাদের একথা বলা হয়নি যে, যারা কুরআনের শিক্ষাবলী যাচাই করে হক ও বাতিলের ফায়সালা করতে প্রস্তুত নয় তাদেরকে তোমরা ঝরণাধারা প্রবাহিত করে, বাগান তৈরী করে এবং আকাশ চিরে কোন না কোনভাবে মু’মিন বানাবার চেষ্টা করবে। বরং তোমাদের কাজ শুধুমাত্র এতটুকুইঃ তোমরা লোকদের সামনে হক কথা পেশ করে দাও, তারপর তাদেরকে পরিষ্কার জানিয়ে দাও, যে একথা মেনে নেবে সে ভাল কাজ করবে এবং যে মেনে নেবে না সে খারাপ পরিণতির সম্মুখীন হবে।
# এটি বিরোধীদের একটি সংশয়ের জবাব। তারা বলতো, আল্লাহর পয়গাম পাঠাবার দরকার হলে সম্পূর্ণ পয়গাম এক সঙ্গে পাঠান না কেন? এভাবে থেমে থেমে সামান্য সামান্য পয়গাম পাঠানো হচ্ছে কেন? আল্লাহকেও কি মানুষের মতো ভেবে-চিন্তে কথা বলতে হয়? এ সংশয়ী বক্তব্যের বিস্তারিত জবাব সূরা নাহলের ১৪ রুকূ’র প্রথম দিকের আয়াতগুলোতে দেয়া হয়েছে। সেখানে আমি এর ব্যাখ্যা করেছি। তাই এখানে এর পুনরাবৃত্তির প্রয়োজন বোধ করছি না।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
১০৫-১০৬ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবীকে (সঃ) বলেনঃ কুরআন সত্যসহ অবতীর্ণ হয়েছে। এটা সরাসরি সত্যই বটে। আল্লাহ তাআলা স্বীয় জ্ঞানের সাথে এটা অবতীর্ণ করেছেন। তিনি নিজেই এর সত্যতার সাক্ষী এবং ফেরেশতারাও সাক্ষী। এতে ঐ জিনিসই রয়েছে যা তিনি নিজের জ্ঞানে অবতীর্ণ করেছেন। এর সমস্ত হুকুম-আহকাম এবং নিষেধাজ্ঞা তার পক্ষ হতেই রয়েছে। সত্যের অধিকারী যিনি তিনিই সত্যসহ এটা অবতীর্ণ করেছেন এবং সত্যসহই তোমার কাছে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। না পথে কোন বাতিল এতে মিলিতহয়েছে, না বাতিলের এ ক্ষমতা আছে যে, এর সাথে মিশ্রিত হতে পারে। এসব হতে এই কুরআন সম্পূর্ণরূপে রক্ষিত। এটা পরিবর্তন ও পরিবর্ধনহতেও পাক ও পবিত্র। পূর্ণক্ষমতার অধিকারী বিশ্বস্ত ফেরেশতার মাধ্যমে এটা অবতীর্ণ হয়েছে। যে ফেরেশতা আকাশে উচ্চ মর্যাদার অধিকারী ও নেতা। হে নবী (সঃ)! তোমার কাজ হলো মু’মিনদেরকে সুসংবাদ দেয়া ও কাফিরদেরকে ভয় প্রদর্শন করা। এই কুরআনকে আমি লওহে মাহফুযের ‘বায়তুল ইয্যাহ’এর উপর অবতীর্ণ করেছি, যা প্রথম আকাশে রয়েছে। সেখান থেকে অল্প অল্প করে ঘটনা অনুযায়ী বিচ্ছিন্নভাবে তেইশ বছরে দুনিয়ায় অবতীর্ণ হয়েছে। এর দ্বিতীয় কিরআত । রয়েছে। অর্থাৎ এক একটি করে আয়াত তাফসীর ও বিশ্লেষণসহ অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে তুমি লোকদের কাছে সহজেই পৌঁছিয়ে দিতে পার এবং ধীরে ধীরে তাদেরকে শুনিয়ে দিতে সক্ষম হও। আমি এগুলিকে অল্প অল্প করে অবতীর্ণ করেছি।
أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#878)[The Revelation of the Qur’an in Stages .]
Sura:17
Sura: Bony Israyel.
Ayat: 105-
[ وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ اِلَّا مُبَشِّرًا وَّ نَذِیۡرًا ﴿۱۰۵﴾ۘ
We have not sent you, [O Muhammad], except as a bringer of good tidings and a warner;]
www.motaher21.net
17:105
وَ بِالۡحَقِّ اَنۡزَلۡنٰہُ وَ بِالۡحَقِّ نَزَلَ ؕ وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ اِلَّا مُبَشِّرًا وَّ نَذِیۡرًا ﴿۱۰۵﴾ۘ
And with the truth We have sent the Qur’an down, and with the truth it has descended. And We have not sent you, [O Muhammad], except as a bringer of good tidings and a warner.
17:106
وَ قُرۡاٰنًا فَرَقۡنٰہُ لِتَقۡرَاَہٗ عَلَی النَّاسِ عَلٰی مُکۡثٍ وَّ نَزَّلۡنٰہُ تَنۡزِیۡلًا ﴿۱۰۶﴾
And [it is] a Qur’an which We have separated [by intervals] that you might recite it to the people over a prolonged period. And We have sent it down progressively.
Tafsir Ibne Kasir Said:-
The Revelation of the Qur’an in Stages
Allah tells:
وَبِالْحَقِّ أَنزَلْنَاهُ
And with truth We have sent it down,
Allah tells us that His Book, the Glorious Qur’an, has been sent with truth, i.e., it contains the truth, as Allah says:
لَّـكِنِ اللَّهُ يَشْهَدُ بِمَأ أَنزَلَ إِلَيْكَ أَنزَلَهُ بِعِلْمِهِ وَالْمَلَـيِكَةُ يَشْهَدُونَ
But Allah bears witness to that which He has sent down unto you; He has sent it down with His knowledge, and the angels bear witness. (4:166)
meaning, it contains the knowledge which Allah wanted to teach to you, with His rulings, commands and prohibitions.
وَبِالْحَقِّ نَزَلَ
and with truth it has descended.
means, “It has been sent down to you, O Muhammad, preserved and protected, not contaminated or mixed with anything else, with nothing added or taken away. It has come to you with the truth, brought down by one mighty in power, trustworthy and strong, one who is obeyed by the higher group (angels).’
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ
And We have sent you, (O Muhammad),
إِلاَّ مُبَشِّرًا وَنَذِيرًا
as nothing but a bearer of glad tidings and a warner.
a bearer of glad tidings for the believers who obey you and a warner to the disbelievers who disobey you.
وَقُرْاناً فَرَقْنَاهُ
And (it is) a Qur’an which We have divided,
The word translated here as “We have divided” may be read in two ways.
If it is read as “Faraqnahu”, with no Shaddah, the meaning is:
`We have made it depart from Al-Lawh Al-Mahfuz to Bayt Al-`Izzah in the lowest heaven, then it was revealed in stages to the Messenger of Allah, according to events, over a period of twenty-three years.’
This was narrated by Ikrimah from Ibn Abbas.
It was also narrated that Ibn Abbas read it as “Farraqnahu”, with a Shaddah,
meaning, `We revealed it Ayah by Ayah, and have explained it and made it clear.’
Hence Allah says:
لِتَقْرَأَهُ عَلَى النَّاسِ
in order that you might recite it to men,
meaning, convey it to the people and recite it to them,
عَلَى مُكْثٍ
at intervals.
meaning slowly.
وَنَزَّلْنَاهُ تَنزِيلً
And We have revealed it by stages.
means, little by little
For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran