(বই#৯৪০) [ قَالَ رَبِّ احْكُم بِالْحَقِّ বলেছিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করে দাও।] সূরা:- আল্ আম্বিয়া। সুরা:২১ ১০৮-১১২ নং আয়াত:- www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৯৪০)
[ قَالَ رَبِّ احْكُم بِالْحَقِّ
বলেছিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করে দাও।]
সূরা:- আল্ আম্বিয়া।
সুরা:২১
১০৮-১১২ নং আয়াত:-
www.motaher21.net
২১:১০৮
قُلْ اِنَّمَا یُوْحٰۤى اِلَیَّ اَنَّمَاۤ اِلٰهُكُمْ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ١ۚ فَهَلْ اَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ

এদেরকে বলো, “আমার কাছে যে অহী আসে তা হচ্ছে এই যে, কেবলমাত্র এক ইলাহই তোমাদের ইলাহ, তারপর কি তোমরা আনুগত্যের শির নত করছো?”
২১:১০৯
فَاِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ اٰذَنْتُكُمْ عَلٰى سَوَآءٍ١ؕ وَ اِنْ اَدْرِیْۤ اَقَرِیْبٌ اَمْ بَعِیْدٌ مَّا تُوْعَدُوْنَ

যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে বলে দাও, “আমি সোচ্চার কণ্ঠে তোমাদের জানিয়ে দিয়েছি। এখন আমি জানি না, তোমাদের সাথে যে বিষয়ের ওয়াদা করা হচ্ছে তা আসন্ন, না দূরবর্তী।
২১:১১০
اِنَّهٗ یَعْلَمُ الْجَهْرَ مِنَ الْقَوْلِ وَ یَعْلَمُ مَا تَكْتُمُوْنَ

আল্লাহ সে কথাও জানেন যা সোচ্চার কণ্ঠে বলা হয় এবং তাও যা তোমরা গোপনে করো।
২১:১১১
وَ اِنْ اَدْرِیْ لَعَلَّهٗ فِتْنَةٌ لَّكُمْ وَ مَتَاعٌ اِلٰى حِیْنٍ

আমিতো মনে করি, হয়তো এটা (বিলম্ব) তোমাদের জন্য এটা পরীক্ষা এবং একটা বিশেষ সময় পর্যন্ত তোমাদের জীবন উপভোগ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
২১:১১২
قٰلَ رَبِّ احْكُمْ بِالْحَقِّ١ؕ وَ رَبُّنَا الرَّحْمٰنُ الْمُسْتَعَانُ عَلٰى مَا تَصِفُوْنَ۠

(শেষে) রসূল বললোঃ হে আমার রব! তুমি ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করে দাও। আর হে লোকেরা! তোমরা যেসব কথা তৈরি করছো তার মুকাবিলায় আমাদের দয়াময় রবই আমাদের সাহায্যকারী সহায়ক।”

১০৮-১১২ নং আয়াতের তাফসীর:

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-

*মানুষের প্রকৃতি ও একজন দায়ীর কর্তব্য : রহমত ও দয়ার তাৎপর্য বর্ণনার পর এখন রসূলুল্লাহ(স.)-কে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে, তিনি যেন কাফের মােশরেকদের সামনে তার রিসালাতের মূল বক্তব্য তুলে ধরে ঘােষণা করেন, ‘আল্লাহ তায়ালাই তােমাদের একমাত্র উপাস্য। সুতরাং তােমরা কি আজ্ঞাবহ হবে?’ অর্থাৎ নিরংকুশ একত্ববাদ বা তাওহীদই হচ্ছে এই রিসালাতের মূল্য বক্তব্য। আর এটাই হচ্ছে খােদায়ী রহমতের মূল উপাদান। কারণ, এই একত্ববাদ বা তাওহীদের বিশ্বাসই মানুষকে জাহেলী ধ্যান-ধারণা থেকে রক্ষা করে, পৌত্তলিকতার শৃংখল থেকে মুক্ত করে এবং কুসংস্কার ও অলীক বিশ্বাসের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে। এই বিশ্বাস মানব জীবনকে তার মযবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করায়, গােটা সৃষ্টি জগতের সাথে তাকে সম্পৃক্ত করে এবং তাকে সুস্পষ্ট ও বলিষ্ঠ নিয়ম নীতির মাধ্যমে পরিচালিত করে। এতে ব্যক্তিগত খেয়াল-খুশী, ধ্যান-ধারণা ও কামনা বাসনার কোনাে দখল নেই। এই বিশ্বাস মানুষকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখায়, একমাত্র আল্লাহর সামনেই মাথা নত করতে শেখায়, অন্য কারাে সামনে নয়। আর এটাই হচ্ছে আল্লাহর রহমত লাভের একমাত্র পন্থা। কাজেই প্রশ্ন করা হচ্ছে, ‘তােমরা কি আজ্ঞাবহ হবে?’ এই প্রশ্নই কাফের মােশরেকদেরকে করার জন্যে রসূলুল্লাহ(স.)-কে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। সাথে সাথে তাকে আরাে বলা হচ্ছে, ‘অতপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলে দিন আমি তোমাদেরকে পরিস্কারভাবে সতর্ক করেছি।'(আয়াত ১০৯) অর্থাৎ আমার যা বলার ছিলাে, তা তােমাদেরকে সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি। তােমাদেরকে আমার আর বলার কিছুই নেই। এখন তােমাদের পথ তােমরাই বেছে নেবে। তােমাদের পরিণতি তােমরাই ভােগ করবে। আমি তােমাদেরকে সতর্ক করে দিচ্ছি। এরপর তোমাদের আর কোনাে ওযর-আপত্তিই কাজে আসবে না। জেনে শুনেই তোমরা তোমাদের প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবে। তবে কি নাগাদ তােমাদেরকে এই প্রায়শ্চিত্ত ভােগ করতে হবে তা অবশ্য আমার জানা নেই কারণ, এটা অদৃশ্যের ব্যাপার। তা একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই ভাল জানবেন। তােমাদের শাস্তি কি এই দুনিয়াতেই হবে, না আখেরাতে হবে-তা আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কারাে জানার কথা নয়। তিনিই তােমাদের জানা ও অজানা, গােপন ও প্রকাশ্য সকল বিষয়ই খবর রাখেন। তার কাছে তোমাদের কোনাে বিষয়ই গােপন নেই। ‘তিনি জানেন, যে কথা সশব্দে বলাে এবং যে কথা তােমরা গােপন করাে'(আয়াত ১১০) অর্থাৎ তােমাদের সব কিছুই তার সামনে উন্মুক্ত। তিনি তােমাদের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সব কিছু জেনে-শুনেই শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। কখনও তিনি বিশেষ কারণে এই শাস্তি মুলতবীও করতে পারেন। এই মুলতবীর পেছনে সে বিশেষ কারণটা কি তা আমার জানার কথা নয়। হয়তাে তােমাদের পরীক্ষার জন্যেই আল্লাহ তায়ালা কিছুদিনের জন্যে তােমাদের শাস্তি মুলতবী করবেন। এর ফলে তােমরা আরাে কিছুদিনের জন্যে পার্থিব সুখ শান্তি ও আরাম আয়েশ ভােগ করার সুযােগ পাবে। এরপর আল্লাহ তায়ালা তােমাদেকে পুনরায় কঠোর হস্তে পাকড়াও করবেন এবং তােমাদের অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করবেন। কাফের মােশরেকদের চূড়ান্ত পরিণতি ও শাস্তির নির্ধারিত সময়ের ব্যাপারে রসূলুল্লাহ(স.)-এর পক্ষ থেকে অজ্ঞতা প্রকাশের ফলে ওদের হৃদয়ে কঠিন আঁচড় কেটে যায়। এখন ওরা নানা ধরনের সংশয় সন্দেহের মাঝে পড়ে থাকবে। অজানা ভয় ও আতংক ওদেরকে সারাক্ষণ তাড়া করে বেড়াবে। অতর্কিতভাবে তাদের ওপর আল্লাহর গযব চেপে বসে কিনা সে চিন্তা তাদেরকে সারাক্ষণ পীড়া দিতে থাকে। এর ফলে তাদের মন মস্তিষ্ক সদা সজাগ থাকে। ভােগ বিলাসিতার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকে পাছে কোনাে পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে পড়ে কিনা এই ভয়ে। অতর্কিত হঠাৎ কোনাে আযাব পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে সারাক্ষণ মনের মাঝে এক প্রকার দুশ্চিন্তা দানা বেঁধে উঠে । এই দুশ্চিন্তার ফলে মানুষের স্নায়ুর ওপর চাপ বৃদ্ধি পায়। সারাক্ষণ আশংকায় ভােগে, না জানি কখন এই অনিশ্চয়তার পর্দা ভেদ করে গায়েবী আযাব সমূর্তিতে আবির্ভূত হয়। মানুষের স্বভাব হলাে, সে অদৃশ্যের ব্যাপারে উদাসীন থাকে। তার ভাগ্যে আল্লাহ কি শাস্তি নির্ধারণ করে রেখেছেন, সে ব্যাপারে সে গাফেল থাকে। এই গাফলতির কারণ হচ্ছে পার্থিব আরাম আয়েশ। ফলে সে ভুলে যায় যে, পর্দার আড়ালে তার জন্যে কি অপেক্ষা করছে। যা অপেক্ষা করছে তার সঠিক জ্ঞান এক মাত্র আল্লাহর কাছেই রয়েছে। তিনিই জানেন এ অদৃশ্য ও লুকায়িত পরিণতি সঠিক সময় ও মুহূর্ত। তাই বলা যায় যে, রসূলের পক্ষ থেকে এই অজ্ঞতা প্রকাশ এক ধরনের সাবধানবাণী। এর মাধ্যমে তিনি গাফেল ও উদাসীন লােকদেরকে সজাগ করছেন এবং সুযােগ হারানাের আগেই তাদেরকে আল্লাহর পথে ফিরে আসতে উদ্বুদ্ধ করছেন। এখন রসূলুল্লাহ(স.) নিজের প্রভু ও মালিকের প্রতি মনােনিবেশ করছেন। কারণ, তিনি রিসালাতের দায়িত্ব পরিপূর্ণভাবে পালন করেছেন। লােকদেরকে সতর্ক করেছেন। তাদেরকে অশুভ পরিণতির ব্যাপারে সাবধান করে দিয়েছেন। কাজেই এখন তিনি দয়াময় আল্লাহর প্রতি মনােনিবেশ করছেন। ঠাট্টা ও বিদ্রুপকারী গাফিল লোকদের ব্যাপারে তার সঠিক ফয়সালা কামনা করছেন। তাদের ষড়যন্ত্র, কূটচাল ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের মােকাবেলায় তার সাহায্য কামনা করছেন। কারণ তিনিই তাে একমাত্র সাহায্যকারী। তাই তাকে উদ্দেশ্য করেই বলা হচ্ছে, ‘তিনি বললেন, হে আমার প্রভূ…'(আয়াত ১১২)। রহমত ও দয়া একটা বড়াে গুণ। আয়াতে শব্দটির ব্যবহার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অর্থাৎ দয়াময় আল্লাহ তায়ালা গােটা জগতের জন্যে দয়া ও রহমত স্বরূপ রসূলকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। অথচ কাফের মােশরেকরা তাঁর সাথে ঠাট্টা বিদ্রুপ করেছে, তাকে অস্বীকার করেছে। কাজেই ওদের এই মােকাবেলায় আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই তাঁর রসূলের প্রতি দয়া করবেন, রহমত করবেন এবং ওদের বিরুদ্ধে রসূলকে সাহায্য করবেন, সমর্থন করবেন। আর এই বলিষ্ঠ বক্তব্যের মধ্য দিয়েই সূরাটির সমাপ্তি ঘটে। শুরুতেও বলিষ্ঠ বক্তব্য ছিলাে। এবং শেষেও বলিষ্ঠ বক্তব্য এসেছে। ফলে উভয় প্রান্তেই এক ও অভিন্ন সুর ধ্বনিত হয়েছে যার আবেদন অত্যন্ত বলিষ্ঠ, প্রখর, হৃদয়গ্রাহী ও গভীর।

 

তাফসীরে‌ ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

১০৮-১১২ নং আয়াতের তাফসীর:

সূরার শেষে আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিচ্ছেন যে, বলে দাও! আমার কাছে এ মর্মে ওয়াহী আসে আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই। অতএব তোমরা কি সকল কিছুর পূজা, আরাধনা ও ইবাদত বাদ দিয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছে আত্মসমর্পণ করে একমাত্র তাঁর ইবাদত করবে? যদি সব কিছু বর্জন করে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত কর তাহলে ভাল, অন্যথায় জেনে রাখো তাওহীদ ও ইসলামের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে তোমরা যেমন আমার শত্র“ হয়েছো তেমনি আমিও তোমাদের শত্র“তে পরিণত হলাম। তোমাদের থেকে এবং তোমাদের মা‘বূদ থেকে আমি সম্পূর্ণ মুক্ত। তোমাদের সাথে প্রকাশ্য যুদ্ধ চলবে। তোমাদেরকে শাস্তির যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা কি খুব কাছে, না দূরে তা আমি জানি না। কারণ এ ক্ষমতা আল্লাহ তা‘আলার কাছে। এটাও জানিনা, তোমরা যে শাস্তি দ্রুত কামনা করছ সেটা বিলম্ব করে দিয়ে তোমাদের জন্য কিছুকাল দুুনিয়াতে উপভোগ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। কারণ, হতে পারে তা বিলম্ব করে তোমাদেরকে বড় শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।

সর্বশেষ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করলেন হে আল্লাহ তা‘আলা! আমাদের মাঝে ও কাফিরদের মাঝে সঠিক ফায়সালা করে দিন। আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ কবূল করলেন, আখিরাতের পূর্বেই দুনিয়াতে কাফিরদেরকে যথোপযোগী শাস্তি দিলেন। যেমন বদর যুদ্ধে ও অন্যান্য যুদ্ধে তাদেরকে নিপাত করে দিয়েছেন। সুতরাং হে কাফির সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে যে বিভিন্নমুখী কথা বলছ, এসব কথার বিরুদ্ধে তিনিই দয়াময় ও তিনিই সহায়ক।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. সত্যের দাওয়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া মানেই হলো, নিজেকে ধবংসের দিকে ঠেলে দেয়া।
২. এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করা ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করা যাবে না।
৩. আল্লাহ তা‘আলা প্রকাশ্য-অপকাশ্য সব কিছু জানেন, অতএব যা কিছু বলব সে সম্পর্কে পূর্বেই সতর্ক হওয়া উচিত।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-

১০৮-১১২ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তাআলা স্বীয় রাসূলকে (সঃ) নির্দেশ দিচ্ছেনঃ তুমি মুশরিকদেরকে বলে দাওঃ আমার কাছে এই ওয়াহী করা হচ্ছে যে, সত্য ও প্রকৃত মাবুদ শুধু আল্লাহ তাআলাই। তোমরা সবাই এটা মেনে নাও। যদি তোমরা আমার কথা না মানে তবে আমরা ও তোমরা পৃথক। তোমরা আমাদের শত্রু এবং আমরা তোমাদের শত্রু। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ তাআলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যদি তারা তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তবে বলে দাও আমার আমল আমার জন্যে এবং তোমাদের আমল তোমাদের জন্যে, আমি যে আমল করি তা হতে তোমরা মুক্ত এবং তোমরা যে আমল কর তা হতে আমি মুক্ত।” (১০:৪১) আরো বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তুমি যদি কোন কওমের বিশ্বাসঘাতকতা ও চুক্তি ভঙ্গের আশংকা কর তবে তৎক্ষণাৎ তাদেরকে চুক্তি ভঙ্গের খবর দিয়ে দাও।” (৮:৫৮)। অনুরূপভাবে আল্লাহ তাআলা এখানেও বলেনঃ যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তুমি বলে দাওঃ তোমাদের আমাদের মধ্যকার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। তোমরা নিশ্চিতরূপে জেনে রেখো যে, তোমাদের সঙ্গে যে ওয়াদা করা হচ্ছে। তা অবশ্য অবশ্যই পূর্ণ হবে, তা এখনই হোক অথবা বিলম্বেই হোক। আল্লাহ তাআলা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবগত। তোমরা যা কিছু প্রকাশ কর এবং যা কিছু গোপন রাখো আল্লাহ তা সবই জানেন। বান্দাদের সমস্ত প্রকাশ্য ও গোপনীয় সংবাদ তার নিকট প্রকাশমান। ছোট, বড়, প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য সবই তিনি জানতে পারেন। খুব সঙ্ঘ ওয়াদা পূরণে বিলম্ব করার মধ্যেও তোমাদের জন্যে একটা পরীক্ষা রয়েছে এবং কিছু কালের জন্যে তোমরা জীবনোপভোগ করবে।

রাসূলদেরকে (আঃ) যে দুআ শিক্ষা দেয়া হয়েছিল তা হলো : হে আল্লাহ! আপনি আমাদের মধ্যে ও আমাদের কওমের মধ্যে ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করুন এবং উত্তম ফায়সালাকারী একমাত্র আপনিই। রাসূলুল্লাহকেও (সঃ) এই প্রকারেরই দুআ’র নির্দেশ দেয়া হয়। রাসূলুল্লাহ (সঃ) যে কোন যুদ্ধে গিয়েই দুআ করতেনঃ হে আমার প্রতিপালক! আপনি ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করে দিন। আমরা আমাদের দয়াময় আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। হে কাফির ও মুশরিকদের দল! তোমরা যা কিছু মিথ্যা আরোপ করছে সে বিষয়ে আমাদের একমাত্র সহায়স্থল তিনিই। তিনিই আমাদের সাহায্যকারী।

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#940)
[ قَالَ رَبِّ احْكُم بِالْحَقِّ

He said:”My Lord! Judge You in truth!]

Sura:21
Sura: Al-Anbiyaa
Ayat: 108-112
www.motaher21.net

21:108

قُلۡ اِنَّمَا یُوۡحٰۤی اِلَیَّ اَنَّمَاۤ اِلٰـہُکُمۡ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ ۚ فَہَلۡ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ ﴿۱۰۸﴾

Say, “It is only revealed to me that your god is but one God; so will you be Muslims [in submission to Him]?”

 

The main Objective of Revelation is that Allah be worshipped

Allah commands His Messenger:

قُلْ

Say:i.e. say to the idolators:

إِنَّمَا يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَهَلْ أَنتُم مُّسْلِمُونَ

“It is revealed to me that your God is only one God. Will you then be Muslims!”

meaning, will you then follow that and submit to it!

21:109

فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَقُلۡ اٰذَنۡتُکُمۡ عَلٰی سَوَآءٍ ؕ وَ اِنۡ اَدۡرِیۡۤ اَقَرِیۡبٌ اَمۡ بَعِیۡدٌ مَّا تُوۡعَدُوۡنَ ﴿۱۰۹﴾

But if they turn away, then say, “I have announced to [all of] you equally. And I know not whether near or far is that which you are promised.

 

فَإِن تَوَلَّوْا

But if they turn away,

means, if they ignore that to which you call them.

فَقُلْ اذَنتُكُمْ عَلَى سَوَاء

say:”I give you a notice to be known to us all alike…”

meaning, `I declare that I am in a state of war with you as you are in a state of war with me. I have nothing to do with you just as you have nothing to do with me.’

This is like the Ayah:

وَإِن كَذَّبُوكَ فَقُل لِّى عَمَلِى وَلَكُمْ عَمَلُكُمْ أَنتُمْ بَرِييُونَ مِمَّأ أَعْمَلُ وَأَنَاْ بَرِىءٌ مِّمَّا تَعْمَلُونَ

And if they belie you, say:”For me are my deeds and for you are your deeds! You are innocent of what I do, and I am innocent of what you do!” (10:41)

وَإِمَّا تَخَافَنَّ مِن قَوْمٍ خِيَانَةً فَانبِذْ إِلَيْهِمْ عَلَى سَوَاءٍ

If you fear treachery from any people, throw back (their covenant) to them (so as to be) on equal terms (that there will be no more covenant between you and them). (8:58)

which means:so that both you and they will know that the treaty is null and void.

Similarly, Allah says here:

فَإِن تَوَلَّوْا فَقُلْ اذَنتُكُمْ عَلَى سَوَاء

But if they turn away say:”I give you a notice to be known to us all alike…”

meaning, `I have already informed you that I have nothing to do with you and you have nothing to do with me.’
No one knows when the Hour will come

And He (Muhammad) says:

وَإِنْ أَدْرِي أَقَرِيبٌ أَم بَعِيدٌ مَّا تُوعَدُونَ

And I know not whether that which you are promised (i.e., the Day of Resurrection) is near or far.

meaning:`it will inevitably come to pass, but I have no knowledge of whether it is near or far.’

إِنَّهُ يَعْلَمُ الْجَهْرَ مِنَ الْقَوْلِ وَيَعْلَمُ مَا تَكْتُمُونَ

21:110

اِنَّہٗ یَعۡلَمُ الۡجَہۡرَ مِنَ الۡقَوۡلِ وَ یَعۡلَمُ مَا تَکۡتُمُوۡنَ ﴿۱۱۰﴾

Indeed, He knows what is declared of speech, and He knows what you conceal.

 

Verily, He (Allah) knows that which is spoken aloud (openly) and He knows that which you conceal.

Allah knows the Unseen in its entirety; He knows what His creatures do openly and what they do secretly. He knows what is visible and what is concealed; He knows what is secret and hidden. He knows what His creatures do openly and in secret, and He will requite them for that, for both minor and major actions.

وَإِنْ أَدْرِي لَعَلَّهُ فِتْنَةٌ لَّكُمْ وَمَتَاعٌ إِلَى حِينٍ

21:111

وَ اِنۡ اَدۡرِیۡ لَعَلَّہٗ فِتۡنَۃٌ لَّکُمۡ وَ مَتَاعٌ اِلٰی حِیۡنٍ ﴿۱۱۱﴾

And I know not; perhaps it is a trial for you and enjoyment for a time.”

 

And I know not, perhaps it may be a trial for you, and an enjoyment for a while.

meaning, `I do not know, perhaps it is a trial for you, and an enjoyment for a while.’

Ibn Jarir said:

`perhaps that is being delayed for you as a test for you, and enjoyment for an allotted time.’

This was narrated by `Awn from Ibn Abbas.

And Allah knows best.

21:112

قٰلَ رَبِّ احۡکُمۡ بِالۡحَقِّ ؕ وَ رَبُّنَا الرَّحۡمٰنُ الۡمُسۡتَعَانُ عَلٰی مَا تَصِفُوۡنَ ﴿۱۱۲﴾٪

[The Prophet] has said, “My Lord, judge [between us] in truth. And our Lord is the Most Merciful, the one whose help is sought against that which you describe.”

 

قَالَ رَبِّ احْكُم بِالْحَقِّ

He said:”My Lord! Judge You in truth!

means, judge between us and our people who disbelieve in the truth.

Qatadah said:

“The Prophets (peace be upon them) used to say:

رَبَّنَا افْتَحْ بَيْنَنَا وَبَيْنَ قَوْمِنَا بِالْحَقِّ وَأَنتَ خَيْرُ الْفَـتِحِينَ

“Our Lord! Judge between us and our people in truth, for You are the Best of those who give judgment.” (7:89),

and the Messenger of Allah was commanded to say this too.”

It was reported from Malik from Zayd bin Aslam that;

when the Messenger of Allah witnessed any fighting, he would say:
رَبِّ احْكُم بِالْحَقِّ
“My Lord! Judge You in truth!”

وَرَبُّنَا الرَّحْمَنُ الْمُسْتَعَانُ عَلَى مَا تَصِفُونَ

Our Lord is the Most Gracious, Whose help is to be sought against that which you attribute!

means, `against the various lies and fabrications that you utter, some of which are worse than others;

Allah is the One Whose Help we seek against that.’

This is the end of the Tafsir of Surah Al-Anbiya’. To Allah be praise and blessings

For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran

Leave a Reply