أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৯৪৮)
[ اَلَّذِیۡنَ اِنۡ مَّکَّنّٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ
আমি তাদেরকে পৃথিবীতে (রাজ)ক্ষমতা দান করলে।]
সূরা:- আল্ – হাজ্জ।
সুরা:২২
৪১ নং আয়াত:-
www.motaher21.net
২২:৪১
اَلَّذِیۡنَ اِنۡ مَّکَّنّٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَوُا الزَّکٰوۃَ وَ اَمَرُوۡا بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ نَہَوۡا عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ لِلّٰہِ عَاقِبَۃُ الۡاُمُوۡرِ ﴿۴۱﴾
আমি তাদেরকে পৃথিবীতে (রাজ)ক্ষমতা দান করলে তারা নামায কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং সৎ কাজের আদেশ দেয় ও অসৎকার্য হতে নিষেধ করে। আর সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর আয়ত্তে।
৪১ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
৪১ নং আয়াতের তাফসীর:
মু’মিনদেরকে পৃথিবীতে আল্লাহ তা‘আলা প্রতিষ্ঠিত করলে তাদের ইসলামী রাষ্ট্রের যে মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হবে তা উক্ত আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। মু’মিনরা খেলাফতের দায়িত্ব পেলে সর্ব প্রথম সালাত কায়েম করবে এবং সকল মুসলিমদেরকে সালাত আদায় করতে বাধ্য করবে। রাষ্ট্রের মধ্যে যাদের যাকাতের নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকবে তাদের থেকে যাকাত আদায় করে নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করবে এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও আল্লাহ তা‘আলার সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সৎ কাজের নির্দেশ করবে এবং অসৎ কাজ থেকে বাধা দিবে। এ যদি হয় একটি রাষ্ট্রের মূলমন্ত্র এবং দায়িত্বশীলদের প্রধান কর্তব্য তাহলে সে রাষ্ট্রে কোন অন্যায়-অবিচার, খুন-গুম, অশ্লীলতা-বেহায়াপনা, চুরি-ডাকাতি এবং দুর্নীতি থাকবেনা। কারণ সালাত মানুষকে অশ্লীলতা, অন্যায় কাজসহ যাবতীয় শরীয়ত গর্হিত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার শিক্ষা দেয়। কোন নামাযী ব্যক্তি অন্যায় কাজে জড়িত হয় না, দুর্নীতি করে না, রাষ্ট্রের মাল আত্মসাৎ করে না। যাকাত আদায় হলে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধ উঠে যাবে।
আর এসব কাজে রাষ্ট্রীয় নির্দেশ না থাকলে অসৎ কাজে জড়িত হওয়া কার দুঃসাহস হবে? এরূপ শান্তিপূর্ণ ও আদর্শ রাষ্ট্র খেলাফতে রাশেদা ও প্রথম শতাব্দীর ইসলামী রাষ্ট্রগুলোতে লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তাঁরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ঐ সমস্ত উদ্দেশ্য সাধন করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। সে কারণে তাদের রাষ্ট্রে কোন অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতি লক্ষ্য করা যায়নি। এ যুগগুলোকে বলা হয় স্বর্ণযুগ। মানুষগুলো সোনার মানুষে পরিণত হয়েছিল, তাদের দুর্নীতি ধরার জন্য কমিশন গঠন করতে হয়নি, বিচার-ফায়সালার জন্য আলাদা কোন ট্র্যাইবুনাল গঠন করা হয়নি। প্রত্যেকেই আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে স্বীয় দায়িত্ব পালন করেছেন। সুতরাং গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি যা কিছু রয়েছে কোন কিছ্ইু পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, অরাজকতা দূর করতে পারবে না, যদি ইসলামের বিধানের দিকে সকলে ফিরে না আসে।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرٰٓي اٰمَنُوْا وَاتَّقَوْا لَفَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَرَكٰتٍ مِّنَ السَّمَا۬ءِ وَالْأَرْضِ وَلٰكِنْ كَذَّبُوْا فَأَخَذْنٰهُمْ بِمَا كَانُوْا يَكْسِبُوْنَ)
“যদি সে সকল জনপদের অধিবাসী ঈমান আনত ও তাক্বওয়া অবলম্বন করত তবে আমি তাদের জন্য আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর কল্যাণ উন্মুক্ত করে দিতাম, কিন্তু তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল; সুতরাং তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদেরকে শাস্তি দিয়েছি।” (সূরা আ‘রাফ ৭:৯৬)
অতএব প্রতিটি মুসলিম শাসকের উচিত হবে ইসলামের অনুশাসন মেনে রাষ্ট্র পরিচালনা করা, এতে দুনিয়াতে যেমন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, তেমনি সে শাসক নাগরিকের সৎ আমলের নেকীর অংশ পাবেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুসলিম শাসকদের রাষ্ট্র পরিচালনার প্রধান দায়িত্বগুলো জানতে পারলাম।
২. যে দেশ বা এলাকার লোক ঈমান ও তাক্বওয়া অবলম্বন করবে তাদেরকে আকাশ ও জমিনের বরকত দেয়া হবে।
৩. দেশে সালাত কায়েম ও যাকাত প্রদান এবং ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ হতে বাধা দিলে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন্য বলেছেন :-
# আল্লাহকে সাহায্যকারী এবং তাঁর সাহায্য ও সহায়তা লাভের অধিকারী লোকদের গুণাবলী হচ্ছে এই যে, যদি দুনিয়ায় তাদেরকে রাষ্ট্র ও শাসন ক্ষমতা দান করা হয় তাহলে তারা ব্যক্তিগত জীবনে ফাসেকী, দুষ্কৃতি, অহংকার ও আত্মম্ভরিতার শিকার হবার পরিবর্তে নামায কায়েম করবে। তাদের ধন-সম্পদ, বিলাসিতা ও প্রবৃত্তি পূজার পরিবর্তে যাকাত দানে ব্যয়িত হবে। তাদের রাষ্ট্রযন্ত্র সৎকাজকে দাবিয়ে দেবার পরিবর্তে তাকে বিকশিত ও সম্প্রসারিত করার দায়িত্ব সম্পন্ন করবে। তাদের শক্তি অসৎকাজকে ছড়াবার পরিবর্তে দমন করার কাছে ব্যবহৃত হবে। এ একটি বাক্যের মধ্যে ইসলামী রাষ্ট্রের লক্ষ্য এবং তার কর্মী ও কর্মকর্তাদের বৈশিষ্ট্যের নির্যাস বের করে দেয়া হয়েছে। কেউ যদি বুঝতে চায় ইসলামী রাষ্ট্র আসলে কোন জিনিসের নাম তাহলে এ একটি বাক্য থেকেই তা বুঝে নিতে পারে।
# পৃথিবীর ব্যবস্থাপনা কোন সময় কার হাতে সোপর্দ করতে হবে এ ব্যাপারটির সিদ্ধান্ত আল্লাহ নিজেই নেন। অহংকারী বান্দারা এ ভুল ধারণা করে যে, পৃথিবীতে বসবাসকারীদের ভাগ্যের ফায়সালা তারা নিজেরাই করে। কিন্তু যে শক্তি একটি ছোট্ট বীজকে বিশাল বৃক্ষে এবং একটি বিশাল বৃক্ষকে শুষ্ক কাষ্ঠখণ্ডে পরিণত করে তার মধ্যেই এমন ক্ষমতা রয়েছে যে, যাদের প্রতাপ ও প্রতিপত্তি দেখে লোকেরা মনে করে এদেরকে নাড়াবার সাধ্য কারো নেই। তাদেরকে তিনি এমনিভাবে ভূপাতিত করেন যে, সারা দুনিয়াবাসীর জন্য শিক্ষণীয় হয় এবং যাদেরকে দেখে কেউ কোনদিন ধারণাই করতে পারে না যে, এরাও কোনদিন উঠে দাঁড়াবে। তাদের মাথা তিনি এমনভাবে উঁচু করে দেন যে, দুনিয়ায় তাদের মহত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের ডংকা বাজতে থাকে।
ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-
নিশ্চয়ই তারা হচ্ছে, এসব মানুষ যাদেরকে আমি, যদি পৃথিবীতে ক্ষমতা দান করি’ অর্থাৎ আমি তাদেরকে সাহায্যের নিশ্চয়তা দিয়ে দিয়েছি এবং তাদের সকল বিষয়কে আমি স্থির করে দিয়েছি যখন আমার সাহায্যক্রমে তারা পৃথিবীতে ক্ষমতাসীন হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও যখন হবে তখন তাদের জীবনের বাস্তব কাজের মধ্যে দেখা যাবে যে ‘তারা নামায কায়েম করেছে’ অর্থাৎ পাঁচবার নামায কায়েম করার দ্বারা তারা ইসলাম গ্রহণ করার বাস্তব প্রমাণ পেশ করেছে- অর্থাৎ প্রকাশ্য ও দলবদ্ধভাবে এই আনুষ্ঠানিক এবাদাত কায়েমের মাধ্যমে তারা তাদের ঈমানের বহিপ্রকাশ ঘটিয়েছে এবং অমুসলমানদের সামনে তারা মুসলমান হওয়ার সাক্ষ্য পেশ করেছে। এই প্রকাশ্য ও অনাড়ম্বর আনুগত্য প্রকাশের মাধ্যমে তারা শারীরিক দিক দিয়ে আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত থাকার কথা ঘোষণা দিয়েছে এবং এই এবাদাতের মাধ্যমে তারা আনুগত্যভরা হৃদয় নিয়ে এবং বিনয়াবনতভাবে নিজেদেরকে আল্লাহমুখী হওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে। এরপর দ্বিতীয় যে কাজটি তারা করে বলে আল্লাহ তায়ালা জানাচ্ছেন তা হচ্ছে, ‘তারা যাকাত দান করে’ অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে যে অর্থ দিয়েছেন তার হক আদায় করে এবং অর্থ খরচ করার ব্যাপারে অন্তরের মধ্যে যে সংকীর্ণতা আসতে থাকে তার ওপর বিজয়ী হয়েছে। এভাবে তারা লােভ লালসাকে নিয়ন্ত্রিত পাক পবিত্র হতে পেরেছে এবং শয়তানের প্ররােচনাকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছে এভাবে যাকাত আদায়ের মাধ্যমে সমাজের গরীব ধনীর ব্যবধান কমিয়ে এনে তাদেরকে এক সুখী সমৃদ্ধ সমাজে পরিণত করতে পারে, দুর্বল ও প্রতিবন্ধীদের প্রয়ােজন মেটাতে পারে এবং তাদের জীবনের গতি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। যেমন হাদীসের ভাষায় জানা যায়, ‘মােমেনদের পারস্পরিক সৌহার্দ সম্প্রীতি ও দয়া মায়া মমতার উদাহরণ হচ্ছে একটি দেহের মতাে। সে দেহের কোনাে একটি অংগে যখন কোনাে কষ্ট দেখা দেয় তখন তার বেদনা গােটা দেহে ছড়িয়ে পড়ে ও গােটা শরীরই তখন নিদ্রাহীনতায় ভােগে ও জ্বরা-গ্রস্ত হয়ে যায়।’ এরপর কালামে পাকে এরশাদ হয়েছে, ‘তারা (পরস্পরকে) ভালাে কাজের নির্দেশ দেয়’ অর্থাৎ, ভালাে ও সংশােধনী প্রচেষ্টায় তারা পরস্পরকে আহ্বান জানাতে থাকে, অর্থাৎ তারা ভালোর দিকে অন্যান্যদেরকে এগিয়ে দেয়, ‘এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে’ তারা সম্মিলিতভাবে যে কোনাে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়; আর এভাবে এবং সম্ভাব্য আরাে অন্যান্য পন্থায় তারা মােমেনদের মধ্যে সুন্দর ও মধুর চরিত্র গঠনের উপযােগী গুণাবলী গড়ে তােলে, এসব গুণাবলী সেই সব অন্যায়কারীদের মধ্যে সৃষ্টি হতে পারে না যারা এগুলাে দূর করতে চাইলে দূর করতে পারে, কিন্তু তার জন্যে তেমন কোনাে চেষ্টা তাদের নেই এবং ইচ্ছা করলে ভালাে গুণাবলী গড়ে তুলতে পারে, কিন্তু সে ইচ্ছা তারা করে না। ওপরে বর্ণিত গুণাবলীর অধিকারী মানুষেরাই আল্লাহকে সাহায্য করে, তখন তারা এভাবে সাহায্য করে যে জীবনের চলার পথে সেইসব বিধান তারা অনুসরণ করে যা আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্যে নির্ধারণ করেছেন। একমাত্র আল্লাহকেই তারা সকল শক্তির উৎস মনে করে অন্য কাউকে নয়, এদেরকেই সাহায্য করবেন বলে আল্লাহ তায়ালা সুনিশ্চিতভাবে ওয়াদা করেছেন। এ সাহায্য কোনাে সাময়িক বিষয় নয়, বরং মােমেনদের জন্যে সর্বপ্রকার উপায়-উপকরণের মাধ্যমে এ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে স্থায়ী সাহায্যের ওয়াদা, তবে আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার জন্যে মােমেনদের মধ্যে সদা-সর্বদা ইচ্ছা আকাংখা ও আন্তরিক চেষ্টা থাকতে হবে। তারপর কখন কিভাবে সাহায্য করা হবে তা নির্ধারণ করা আল্লাহর নিজস্ব ব্যাপার। তিনি ইচ্ছা করলে সুনিশ্চিত পরাজয়কে বদলে দিয়ে বিজয়ের মালা পরান এবং চাইলে তিনি বিজয়ী অবস্থাকে পরিবর্তন করে পরাজয়ের গ্লানিতে তাদের ঢেকে দেন এটা সাধারণত তখনই হবে যখন তাদের দৃঢ়তা নষ্ট হয়ে যাবে অথবা তাদের দায়িতুসমূহ পালন করা থেকে তারা পিছিয়ে যাবে। আর আল্লাহরই হাতে রয়েছে সকল কাজের পরিণতি। আল্লাহর সাহায্য তখনই নেমে আসে যখন কালিমার শর্ত পূরণকারী মুসলিম দল তার দেয়া জীবন ব্যবস্থাকে পৃথিবীর বুকে কায়েম করার জন্যে রসূলের শেখানাে পদ্ধতি অনুযায়ী ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালায়। যখন মানুষ হক, ইনসাফ এবং কল্যাণ ও সংশােধনী আনার জন্যে প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালায় এবং আল্লাহর গােলামী ছাড়া অন্য সকল প্রকার গােলামী থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যে হয় আযাদী সংগ্রামে লিপ্ত তখনই আল্লাহর পক্ষ থেকে সম্মানজনক বিজয় নেমে আসে। এজন্যে প্রয়ােজন হচ্ছে আত্মসংযম, লােভ সংবরণ ও লাগাম ছাড়া আশা-আকাংখাকে যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণ করা। আল্লাহর এ সাহায্য লাভের জন্যে অবশ্যই মানুষকে কিছু করতে হবে, মূল্যবান কিছু ব্যয় করতে হবে, কিছু কষ্ট করতে হবে, কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহর সাহায্য কাউকে এলােমেলােভাবে বা বিনা যুক্তিতে দেয়া হয় না- এর জন্যে সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম নীতি আছে এবং কিছু শর্ত আছে। যারা এসব শর্ত পূরণ করে তাদের ওপরই আল্লাহ পাকের মােবারক সাহায্য।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
হযরত উছমান (রাঃ) বলেনঃ “এই আয়াতটি আমাদের ব্যাপারে অবতীর্ণ। হয়। আমাদেরকে বিনা কারণে আমাদের দেশ থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল। অতঃপর মহান আল্লাহ আমাদেরকে সাম্রাজ্য ও রাজত্ব দান করেন। আমরা নামায কায়েম করি, রোযা রাখি এবং মানুষকে ভাল কাজের আদেশ করি ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করি ও বিরত রাখি। সুতরাং এই আয়াত আমার এবং আমার সঙ্গীদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়।
আবুল আলিয়া (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা রাসূলুল্লাহর (সঃ) সাহাবীদেরকে বুঝানো হয়েছে।
রাসূলের (সঃ) খলীফা হযরত উমার ইবনু আবদিল আযীয (রঃ) স্বীয় খুৎবায় এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেন। অতঃপর বলেনঃ “এই আয়াতে শুধুমাত্র বাদশাহদের বর্ণনা নেই। বরং এতে বাদশাহ্ ও প্রজা উভয়েরই বর্ণনা রয়েছে। বাদশাহর উপর তো দায়িত্ব এই যে, তিনি রাবরই আল্লাহর হক তোমাদের নিকট থেকে আদায় করবেন। তার হকের ব্যাপারে তোমরা অবহেলা করলে তিনি তোমাদেরকে পাকড়াও করবেন। আর একজনের হক অপরের নিকট হতে আদায় করে দিবেন এবং সাধ্যমত তোমাদেরকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করবেন। তোমাদের উপর তার হক এই যে, প্রকাশ্যে ও গোপনে সন্তুষ্ট চিত্তেও তোমরা তাঁর আনুগত্য করবে।”
আতিয়্যাহ (রঃ) বলেনঃ “এই আয়াতেরই অনুরূপ ভাব নিম্নের আয়াতেও রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “যারা ঈমান আনে ও ভাল কাজ করে তাদের সাথে আল্লাহ ওয়াদা করেছেন যে, তিনি তাদেরকে যমীনে খলীফা বানিয়ে দিবেন।” (২৪:৫৫)
মহান আল্লাহ বলেনঃ সব কাজের পরিণাম আল্লাহরই ইখতিয়ারে। খোদাভীরু লোকদের পরিণাম ভাল হবে। তাদের প্রত্যেক পুণ্যের বিনিময় তাঁর কাছেই রয়েছে।
أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#948)
[ اَلَّذِیۡنَ اِنۡ مَّکَّنّٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ
The Duties of the Muslims when They attain Power .]
Sura:22
Sura: Al-Hajj
Ayat: 41
www.motaher21.net
22:41
اَلَّذِیۡنَ اِنۡ مَّکَّنّٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَوُا الزَّکٰوۃَ وَ اَمَرُوۡا بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ نَہَوۡا عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ لِلّٰہِ عَاقِبَۃُ الۡاُمُوۡرِ ﴿۴۱﴾
English – Sahih International
[And they are] those who, if We give them authority in the land, establish prayer and give zakah and enjoin what is right and forbid what is wrong. And to Allah belongs the outcome of [all] matters.
The Duties of the Muslims when They attain Power
Allah says:
الَّذِينَ إِن مَّكَّنَّاهُمْ فِي الاَْرْضِ أَقَامُوا الصَّلَةَ وَاتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنكَرِ
Those who, if We give them power in the land, (they) establish the Salah, enforce the Zakah, and they enjoin the good and forbid the evil.
Ibn Abi Hatim recorded that Uthman bin Affan said,
“The Ayah was revealed concerning us, for we had been expelled from our homes unjustly only because we said:`Our Lord is Allah.’ Then we were given power in the land, so we established regular prayer, paid the Zakah, enjoined what is good and forbade what is evil, and with Allah rests the end of (all) matters.
This is about my companions and I.”
Abu Al-Aliyah said,
“They were the Companions of Muhammad.”
As-Sabah bin Suwadah Al-Kindi said,
“I heard Umar bin Abdul-Aziz give a speech and say:
الَّذِينَ إِن مَّكَّنَّاهُمْ فِي الاَْرْضِ
(Those who, if We give them power in the land….), Then he said,
“This is not obligatory only for those who are in authority, it also applies to those who are governed by them. Shall I not tell you what you can expect from your governor, and what duties those who are ruled owe to him!
Your rights over your governor are that he should check on you with regard to your duties towards Allah and restore the rights that you have over one another, and that he should guide you to the straight path as much as possible.
Your duties towards him are that you should obey him without cheating and without resentment, and you should obey him both in secret and openly.”
Atiyah Al-Awfi said, This Ayah is like the Ayah:
وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ ءامَنُواْ مِنْكُمْ وَعَمِلُواْ الصَّـلِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِى الاْرْضِ
Allah has promised those among you who believe and do righteous good deeds, that He will certainly grant them succession to (the present rulers) in the land. (24:55)
وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الاُْمُورِ
And with Allah rests the end of (all) matters.
This is like the Ayah:
وَالْعَـقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ
And the good end is for those who have Taqwa. (28:83)
Zayd bin Aslam said:
وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الاُْمُورِ
(And with Allah rests the end of (all) matters).
“And with Allah will be the reward for what they did.
For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran