أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#১০৩৪)
[ *বিপর্যয়ের সময় মুমিনের করণীয় :-]
www.motaher21.net
সূরা:- ৩০:আর্-রূম
পারা:২১
৪১-৪৫ নং আয়াত:-
৩০:৪১
ظَہَرَ الۡفَسَادُ فِی الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ بِمَا کَسَبَتۡ اَیۡدِی النَّاسِ لِیُذِیۡقَہُمۡ بَعۡضَ الَّذِیۡ عَمِلُوۡا لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۴۱﴾
মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সাগরে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে; ফলে তিনি তাদেরকে তাদের কোন কোন কাজের শাস্তি আস্বাদন করান , যাতে তারা ফিরে আসে।
৩০:৪২
قُلۡ سِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَانۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلُ ؕ کَانَ اَکۡثَرُہُمۡ مُّشۡرِکِیۡنَ ﴿۴۲﴾
বলুন, ‘তোমরা যমীনে ভ্রমন কর অতঃপর দেখ পূর্ববর্তীদের পরিণাম কী হয়েছে!’ তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক।
৩০:৪৩
فَاَقِمۡ وَجۡہَکَ لِلدِّیۡنِ الۡقَیِّمِ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ یَوۡمٌ لَّا مَرَدَّ لَہٗ مِنَ اللّٰہِ یَوۡمَئِذٍ یَّصَّدَّعُوۡنَ ﴿۴۳﴾
সুতরাং আপনি সরল-সঠিক দ্বীনে নিজকে প্রতিষ্ঠিত করুন, আল্লাহর পক্ষ থেকে যে দিন অনিবার্য তা উপস্থিত হওয়ার আগে, সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে ।
৩০:৪৪
مَنۡ کَفَرَ فَعَلَیۡہِ کُفۡرُہٗ ۚ وَ مَنۡ عَمِلَ صَالِحًا فَلِاَنۡفُسِہِمۡ یَمۡہَدُوۡنَ ﴿ۙ۴۴﴾
যে কুফরী করেছে তাঁর কুফরীর শাস্তি সেই ভোগ করবে। আর যারা সৎকাজ করেছে তারা নিজেদেরই জন্য সাফল্যের পথ পরিষ্কার করছে,
৩০:৪৫
لِیَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ مِنۡ فَضۡلِہٖ ؕ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۴۵﴾
যাতে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদেরকে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে পুরষ্কৃত করেন। অবশ্যই তিনি কাফেরদেরকে পছন্দ করেন না।
ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-
*বিপর্যয়ের সময় মুমিনের করণীয় : তারপর তিনি তাদের সামনে তুলে ধরছেন জীবনে বেঁচে থাকার কাজ কর্ম ও আয় রােজগার করার নিয়ম কানুনগুলাে। তাদের অন্তরের মধ্যে আগত বিশৃংখলা এবং তাদের আকীদাসমূহের ভ্রান্তি সম্পর্কে জানাচ্ছেন, জানাচ্ছেন তাদেরকে তাদের সেসব কাজ সম্পর্কে যা পৃথিবীতে অশান্তি ডেকে আনে এবং পৃথিবীর স্থল ও পানি ভাগের সর্বত্র অশান্তি বিশৃংখলায় ভরে দেয়, তারা মানুষকে সার্বভৌম ক্ষমতা ও অন্যান্য বিষয়ের ক্ষমতার অধিকারী বানায়। তাই এরশাদ হচ্ছে, ‘ছড়িয়ে পড়বে পৃথিবীর স্থলভাগ ও পানিভাগের সবখানে অশান্তি বিশৃংখলা তখন, যখন মানুষ নিজেকে তার ভালাে মন্দের মালিক বানিয়ে নেবে এবং নিজের হাতেই নিজের সকল কল্যাণের ব্যবস্থা করে নিতে চাইবে। অতপর এসব বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে এবং এ অশান্তি হঠাৎ করে আসবে তা নয়, বরং এটা তাে… যাতে করে তিনি তাদের স্বাদ গ্রহণ করান ওই সব অপকর্মের যা ওরা করেছে।’ তখন তারা সে অশান্তি ও বিশৃংখলা ঠেকানাের চেষ্টা করবে, কিন্তু তখন তাদের আগুনের সেঁক দেয়া হতে থাকবে এবং এই আগুনের আযাবের কঠিন কষ্টের মধ্যে তারা থাকবে যেন তারা ফিরে আসে।’ অর্থাৎ, তখন তারা আযাব ঠেকানাের জন্যে দৃঢ়ভাবে মনস্থ করবে ভালাে কাজের দিকে এবং মযবুত পথের দিকে। ফিরে যেতে চাইবে আল্লাহর কাছে। এ ভাষণের শেষের দিকে সে নাফরমানদের সতর্ক করতে গিয়ে বলা হচ্ছে, তাদের সেই একই বিপদ-আপদ স্পর্শ করবে যা মােশরেকদেরও তাদের পূর্বে স্পর্শ করেছে, আর তারা তাদের। অনেকের বাড়ীঘরের ভগ্নাবশেষ এখনও দেখে থাকে। এরশাদ হচ্ছে, ‘বলাে, ভ্রমণ করাে পৃথিবীর বুকে, তারপর দেখাে পূর্ববর্তীদের পরিণতি কি হয়েছিলাে, তাদের অধিকাংশই মােশরেক ছিলাে।’ পৃথিবীর বুকে ভ্রমণ করার সময় পূর্ববর্তীদের ওপর শাস্তির এতােসব চিহ্ন তাদের নযরে পড়ে। যা দেখে আবার সে পথে চলার মতো আর তাদের কোনাে সাহস থাকে না। এই অধ্যায়ের মধ্যে আর একটি পথের দিকে ইংগিত করা হয়েছে, যে পথটি তার পথিকদের কখনও বিভ্রান্ত করে না, সে পথ দেখায় এমন একটি দিগন্ত, যা তার আকাংখীকে কখনও বিমুখ করে না। এরশাদ হচ্ছে, ‘সুতরাং সেই মযবুত দ্বীনের ওপর দাঁড়িয়ে যাও সে কঠিন দিনটি আসার আগে, যা এসে গেলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকে আর কেউ ফেরাতে পারবে না। সেদিন মানুষ সবাই বিভক্ত হয়ে (ছুটোছুটি করতে) থাকবে। যে কুফরী করবে তার ফল তাকেই ভােগ করতে হবে। আর যে ভালাে কাজ করবে সে তার নিজের জন্যে আরামের বিছানাই তৈরী করে নেবে।’ মহান আল্লাহর সরল সঠিক দ্বীনের আনুগত্য অনুসরণের বিষয়টা প্রকাশ করার জন্যে এখানে যে ভাষা ও ভংগি অবলম্বন করা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে যে, এই আনুগত্য হতে হবে পূর্ণাংগ ও সর্বাত্মক, একনিষ্ঠ ও আপােষহীন, স্থায়ী ও টেকসই। বলা হয়েছে, ‘অতপর তুমি নিজেকে সরল সত্য দ্বীনের ওপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত রাখাে।’ আল্লাহর এই উক্তিতে পরিপূর্ণ আনুগত্যকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, আনুগত্য যাতে অসম্পূর্ণ বা ত্রুটিপূর্ণ না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে এবং সর্বাত্মক ও সঠিক আনুগত্যের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠতর সম্পর্ক গড়ার জন্যে অভিলাষী হতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। আলোচ্য সূরায় এ নির্দেশ ইতিপূর্বেও একবার এসেছে। সেখানে মানুষের রকমারি খেয়ালখুশী এবং রকমারি দল ও শ্ৰেণী সম্পর্কে আলােচনা করতে গিয়ে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মােশরেকরা আল্লাহর সাথে যাদের শরীক করে তাদের জীবিকা ও তার বহুগুণ বৃদ্ধি প্রসংগে, শিরকের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয় ও বিকৃতি প্রসংগে, পৃথিবীতে মােশরেকদের শােচনীয় পরিণতি প্রসংগে এবং পৃথিবীতে মানুষ যে তার নিজ কর্মদোষেই বিপর্যয়ের শিকার হয় সেই প্রসংগে এখানে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সাথে সাথে আখেরাতে মােমেন ও কাফেররা কি ধরনের কর্মফল ভােগ করবে সে কথাও আলােচিত হয়েছে। আর তাদের কেয়ামতের দিন সম্পর্কেও সাবধান করে বলা হয়েছে যে, সমগ্র মানব জাতি সেদিন দুই শ্রেণীতে বিভক্ত হবে এবং সেদিন আল্লাহর প্রদেয় কর্মফল থেকে কেউ রেহাই পাবে না। বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কুফরী করবে তার দায় দায়িত্ব তার ওপরই পড়বে, আর যে ব্যক্তি সৎকাজ করবে সে নিজের কল্যাণের পথই সুগম করবে।'(আয়াত ৪৪) এখানে ‘ইয়ামহাদু’ শব্দটা মাহদুন’ থেকে এসেছে। মাহদুন অর্থ বিছানা। তাই আয়াতের অর্থ দাঁড়ায় এ রকম, যে ব্যক্তি সৎকাজ করবে সে নিজের শাস্তির পথ সুগম করবে, যে বিছানায় সে আরামে শয়ন করতে পারবে, তার পথই উন্মুক্ত করবে। এভাবে সৎকাজের প্রকৃতি ও তার ভূমিকা সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়েছে। বস্তৃত যে ব্যক্তি সৎকাজ করে সে ঠিক সৎকাজ করার মুহূর্তেই নিজের সুখ শান্তির পথ প্রশস্ত করে, তার পরে নয়। আয়াতের মর্মার্থও এটাই। আর এর উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে পরবর্তী ৪৫ নং আয়াতে। ‘যাতে আল্লাহ তায়ালা নিজ অনুগ্রহ বলে সৎকর্মশীল মােমেনদের প্রতিদান দেন… নিজ অনুগ্রহ বলে’- এ কথা দ্বারা বুঝানাে হয়েছে যে, কোনাে মানুষ নিছক নিজের সৎকর্মের জোরে বেহেশতের অধিকারী হতে পারবে না। সে যতাে সৎকাজই করুক না কেন, তাতে আল্লাহর অনুগ্রহের একটা অংশেরও শােকর আদায় হবে না।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# এখানে আবার রোম ও ইরানের মধ্যে যে যুদ্ধ চলছিল এবং যার আগুন সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। “লোকদের স্বহস্তের উপার্জন” বাক্যাংশের অর্থ হচ্ছে, ফাসেকী, অশ্লীলতা, জুলুম ও নিপীড়নের এমন একটি ধারা যা শিরক ও নাস্তিক্যবাদের আকীদা-বিশ্বাস অবলম্বন ও আখেরাতকে উপেক্ষা করার ফলে অনিবার্যভাবে মানবিক নৈতিক গুণাবলী ও চরিত্রের মধ্যে সৃষ্টি হয়ে থাকে। “হয়তো তারা বিরত হবে” এর অর্থ হচ্ছে, আখেরাতে শাস্তি লাভ করার পূর্বে আল্লাহ এ দুনিয়ায় মানুষের সমস্ত নয় বরং কিছু খারাপ কাজের ফল এজন্য ভোগ করান যে, এর ফলে সে প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করবে এবং নিজের চিন্তাধারার ভ্রান্তি অনুধাবন করে নবীগণ সবসময় মানুষের সামনে যে সঠিক বিশ্বাস উপস্থাপন করে এসেছেন এবং যা গ্রহণ না করলে মানুষের কর্মধারাকে সঠিক বুনিয়াদের ওপর প্রতিষ্ঠিত করার দ্বিতীয় কোন পথ নেই সেদিকে ফিরে আসবে। কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে, এ বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন দেখুন, আত তাওবা, ১২৬ ; আর রা’আদ ২১ ; আস সাজদাহ, ২১ এবং আত তূর, ৪৭ আয়াত।
# রোম ও ইরানের ধ্বংসকর যুদ্ধ আজ কোন নতুন দুর্ঘটনা নয়। বড় বড় জাতিসমূহের ধ্বংসের কাহিনী অতীত ইতিহাসের বিরাট অংশ জুড়ে আছে। আর যে দোষগুলো সেসব জাতির ধ্বংসের মূলে কাজ করেছে সেগুলোর মূলে ছিল এ শিরক এবং আজ এ শিরক থেকে দূরে থাকার জন্য তোমাদের বলা হচ্ছে।
# আল্লাহ নিজে যাকে হটাবেন না এবং তিনি কারো জন্য এমন কিছু করার অবকাশও রাখেননি যার ফলে তা হটে যেতে পারে।
# এটি একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। একজন কাফের নিজের কুফরীর কারণে যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে এ বাক্যের মধ্যে তাঁর সবগুলোরই সমাবেশ ঘটেছে। ক্ষতিকারক বস্তুর অন্য কোন বিস্তারিত তালিকাই এতটা ব্যাপক হতে পারে না।
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
৪১-৪২ নং আয়াতের তাফসীর:
জল ও স্থলের বিপর্যয় দ্বারা উদ্দেশ্য হলন অনাবৃষ্টি, ফসল ও ফলমূল উৎপন্ন না হওয়া, দুর্ভিক্ষ হওয়া, বেশি বেশি বালা-মুসিবত, বিপদ-আপদ হওয়া, অনাকাক্সিক্ষত রোগ-মহামারি, মানব হত্যা, অগ্নিকাণ্ড, পানিতে নিমজ্জিত হওয়া, সব কিছু থেকে বরকত উঠে যাওয়া ইত্যাদি আপদ-বিপদ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এসব আপদ-বিপদ মানুষের কর্মের ফসল অর্থাৎ অন্যায়-অশ্লীল কাজে জড়িত হওয়া, মানুষের ওপর জুলুম করা, মন্দ কাজ থেকে বাধা না দেয়া, অপরাধের শরয়ী শাস্তি প্রদান না করা ইত্যাদিও দুনিয়াতে বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার কারণ।
হাদীসে এসেছে, জমিনে একটি হদ কায়েম হওয়া জমিনবাসীর জন্য চল্লিশ দিন বৃষ্টিপাত হওয়া অপেক্ষা উত্তম। (নাসায়ী হা: ৪৯২০, মুসনাদ আহমাদ ২/৩৬২ সহীহ)
কারণ হদ কায়েম হলে পাপীরা পাপকার্য হতে বিরত থাকবে, নিরীহ মানুষ নির্যাতন মুক্ত থাকবে। আর দুনিয়ায় যখন পাপকার্য বন্ধ হয়ে যাবে তখন দুনিয়াবাসী আসমান ও জমিনের বরকত লাভ করবে। তাদের এ সকল পাপকার্যের জন্য আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে বিভিন্ন মঙ্গল-অমঙ্গল দ্বারা পরীক্ষা করেন যাতে তারা অপকর্ম থেকে ফিরে আসে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَبَلَوْنٰهُمْ بِالْحَسَنٰتِ وَالسَّيِّاٰتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُوْنَ)
“এবং কল্যাণ ও অকল্যাণ দ্বারা আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম, যাতে তারা প্রত্যাবর্তন করে।” (সূরা আ‘রাফ ৭:১৬৮)
পাপীদের সম্পর্কে হাদীসে বলা হয়েছে যে, “যখন কোন পাপী ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে তখন লোকজন, শহর, গাছপালা, জীবজন্তু সবাই শান্তি লাভ করে। (সহীহ বুখারী হা: ৬৫১২, সহীহ মুসলিম হা: ৬১)
তবে সব পাপ কাজের শাস্তি আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়াতে দেন না। অধিকাংশ পাপই ক্ষমা করে দেন। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
وَمَآ (أَصَابَكُمْ مِّنْ مُّصِيْبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيْكُمْ وَيَعْفُوْا عَنْ كَثِيْرٍ )
“তোমাদের যে বিপদ-আপদ ঘটে তা তো তোমাদেরই হাতের কামাইয়ের ফল এবং তোমাদের অনেক অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দেন।” (সূরা শুরা ৪২:৩০)
পূর্বযুগের অপরাধীদের কিরূপ শাস্তি হয়েছিল তাদের অবস্থা দেখে শিক্ষা নেয়ার জন্য জমিনে সফর করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক, তাই তাদের অবস্থা এরূপ হয়েছে। সুতরাং প্রত্যেক মুশরিককে আল্লাহ তা‘আলা এ বাণীর মাধ্যমে সতর্ক করছেনন খবরদার কখনো আমার সাথে শির্ক করবে না। যদি শির্ক কর তোমাদের দুনিয়া-আখেরাত উভয়টি বাতিল হয়ে যাবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সর্বপ্রকার পাপাচার হতে বিরত থাকতে হবে। কেননা একজনের পাপের কারণে সমস্ত দুনিয়ার সৃষ্টিজীব কষ্ট পেতে পারে।
২. দুনিয়াতে ফেতনা-ফাসাদ ও দুর্ভিক্ষ ইত্যাদি মানুষের পাপের কারণে হয়ে থাকে।
৩. আরাম-আয়েশ ও অবসর যাপনের জন্য ভ্রমণ না করে শিক্ষা গ্রহণ করার উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা উচিত।
৪৩-৪৫ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ প্রদান করছেন: তোমার অন্তর, চেহারা ও শরীর সব কিছু দিয়ে মজবুত দীন তথা ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রতি অভিমুখী হও। ইসলামের নির্দেশাবলী পালন কর, নিষেধাজ্ঞাসম্বলিত বিষয় থেকে বিরত থাক। সেদিন আসার পূর্বে যেদিন আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে পালাবার কোন পথ থাকবে না, কোথাও আশ্রয় নেয়া যাবে না এবং দুনিয়াতে ফেরত আসা যাবে না। এখানে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে সকল মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে। সুতরাং আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত যে, আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচার পথ দেখিয়ে দিচ্ছেন তারপরেও কি আমরা তা গ্রহণ করব না? এ সম্পর্কে এ সূরার ৩০ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
এ সব বিধি-বিধান সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দেয়ার পর আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে সতর্ক করে বলছেন যে, এরপরেও যারা কুফরী করবে, তাদের কুফরীর খারাপ পরিণতি তাদের ওপরই বর্তাবে আর যারা ভাল আমল করবে তার প্রতিদান তারাই পাবে। এতে আল্লাহ তা‘আলার কোনই লাভ বা ক্ষতি হবে না। তাতে শুধু তাদের নিজেদেরই লাভ বা ক্ষতি নিহীত। হাদীসে এসেছে:
আবূ যার (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
يَا عِبَادِي إِنَّكُمْ لَنْ تَبْلُغُوا ضَرِّي فَتَضُرُّونِي وَلَنْ تَبْلُغُوا نَفْعِي، فَتَنْفَعُونِي، يَا عِبَادِي لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَي أَتْقَي قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مِنْكُمْ، مَا زَادَ ذَلِكَ فِي مُلْكِي شَيْئًا، يَا عِبَادِي لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَي أَفْجَرِ قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ، مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِنْ مُلْكِي شَيْئًا
হে আমার বান্দা! আমার ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ পর্যন্ত তোমরা পৌঁছতে পারবে না, ফলে আমার ক্ষতি হবে। আমার উপকার হয় এমন কোন কাজ পর্যন্ত তোমরা পৌঁছতে পারবে না, ফলে আমার উপকার হবে। তোমাদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সকল মানুষ ও জিন যদি একজন আল্লাহ তা‘আলাভীরু বান্দার অন্তরে পরিণত হয়ে যায় তাহলে আমার রাজত্বের কোন কিছু বৃদ্ধি পাবে না। আর যদি তোমাদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সকল মানুষ ও জিন একজন খারাপ মানুষের অন্তরে পরিণত হয়ে যায় তাহলেও আমার রাজত্বের কোন কমতি হবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৭)
সুতরাং আমরা ইবাদত করে আল্লাহ তা‘আলার কোন উপকার করছি কি? না; বরং ইবাদত করে আমি আমার নিজের উপকার করছি। এতে আল্লাহর কোন উপকার নেই। আমরা ইবাদত করলেও আল্লাহ তা‘আলার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে না, আর ইবাদত না করলেও আল্লাহ তা‘আলার মর্যাদা কমবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার পর আর কোন আমল করার সুযোগ থাকবে না।
২. কিয়ামত দিবসে সৎ ও অসৎ মানুষ আলাদা আলাদা হয়ে যাবে।
৩. প্রত্যেকে যা আমল করে তা সেই পাবে, তাতে কারো প্রতি কোন জুলুম করা হবে না।
৪. কেউ ভাল আমল করলে নিজের উপকার হবে আর অসৎ আমল করলে নিজেরই ক্ষতি হবে।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৪১-৪২ নং আয়াতের তাফসীর
ইবনে আব্বাস (রাঃ), ইকরামা (রঃ), যহহাক (রঃ), সুদ্দী (রঃ) প্রমুখ। গুরুজন বলেন যে, এখানে (আরবি) দ্বারা জঙ্গল ও মরু প্রান্তরকে বুঝানো হয়েছে। আর (আরবি) দ্বারা বুঝানো হয়েছে শহর ও গ্রামকে। অন্যেরা বলেন যে, দ্বারা মানুষের সুপরিচিত স্থল ভাগকে বুঝানো হয়েছে এবং (আরবি) দ্বারা বুঝানো হয়েছে। সমুদ্রকে যা মানুষের নিকট পরিচিত।
স্থল ভাগের বিপর্যয় দ্বারা উদ্দেশ্য হলো বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাওয়া, ফসল ও ফল-মূল পয়দা না হওয়া এবং দুর্ভিক্ষ হওয়া। আর সমুদ্রের বিপর্যয় দ্বারা উদ্দেশ্য হলো বৃষ্টি না হওয়া, জলজন্তুগুলো অন্ধ হয়ে যাওয়া। মানব হত্যা এবং জলযান জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়া হচ্ছে জল ও স্থলভাগের বিপর্যয়। এখানে (আরবি) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো দ্বীপসমূহ এবং (আরবি) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো শহর, লোকালয় ইত্যাদি। কিন্তু প্রথম বর্ণিত ব্যাখ্যাটি বেশী প্রকাশমান। মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (রঃ)-এর এ বর্ণনাটিও এর পৃষ্ঠপোষকতা করে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) আয়লার বাদশাহর সাথে সন্ধি করেন, তাতে তিনি তার বাহর অর্থাৎ শহরের নাম উল্লেখ করলেন।।
ফল বা খাদ্যশস্যের ক্ষতি মানুষের পাপের কারণে হয়ে থাকে। যারা আল্লাহর অবাধ্য তারাই পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। আসমান ও যমীনের শুদ্ধি আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের দ্বারা হয়ে থাকে। সুনানে আবি দাউদে হাদীস আছেঃ “যমীনে একটি হদ (পাপের শাস্তি) কায়েম হওয়া যমীনবাসীর পক্ষে চল্লিশ দিনের বৃষ্টি অপেক্ষা উত্তম।” এটা এই কারণে যে, “হদ কায়েম হলে পাপীরা পাপকার্য হতে বিরত থাকবে। আর দুনিয়ায় যখন পাপকার্য বন্ধ হয়ে যাবে তখন দুনিয়াবাসী আসমান ও যমীনের বরকত লাভ করবে।
শেষ যুগে যখন হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ) পৃথিবীতে নাযিল হবেন। ও পবিত্র শরীয়ত মুতাবেক ফায়সালা দিতে থাকবেন, যেমন শূকরের হত্যা, ক্রুসের পরাজয়, জিযিয়া বন্ধ অর্থাৎ হয় ইসলামের কবুলিয়ত, না হয় যুদ্ধ। তারপর তাঁর সময় দাজ্জাল ও তার অনুসারীদের পতন ও ইয়াজুজ-মাজুজের ধ্বংস সাধন হয়ে যাবে, তখন যমীনকে বলা হবেঃ “তোমার বরকত ফিরিয়ে আন।” সেই দিন একটি ডালিম ফল একটি বড় দলের (খাদ্য হিসেবে) যথেষ্ট হবে। এ ডালিম এতো বড় হবে যে, ওর ছালের নীচে এসব লোক ছায়া গ্রহণ করতে পারবে। একটি উষ্ট্রীর দুগ্ধ একটি গোত্রের জন্যে যথেষ্ট হবে। এসব বরকত রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর শরীয়ত জারীকরণের ফলে হবে। তার দেয়া শরীয়ত বিধি যেমন বাড়তে থাকবে এ বরকতের পরিমাণও তেমন বৃদ্ধি পেতে থাকবে। অপরপক্ষে, ফাজের বা পাপাচারী লোকের ব্যাপারে হাদীস শরীফে উল্লিখিত হয়েছে যে, তার মৃত্যুর কারণে শহরের লোকজন, গাছপালা, জীবজন্তু ইত্যাদি সবাই শান্তিলাভ করে থাকে।
মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত আছে যে, যিয়াদের আমলে একটি থলে পাওয়া গিয়েছিল যাতে খেজুরের বড় আঁটির মত গমের দানা ছিল। তাতে লিখা ছিলঃ “এটা ঐ সময় উৎপন্ন হতো যখন ন্যায়-নীতিকে কাজে লাগানো হতো।”
যায়েদ ইবনে আসলাম (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, এখানে ফাসাদ দ্বারা শিরক উদ্দেশ্য। কিন্তু এ উক্তিটির ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনার অবকাশ রয়েছে।
এরপর মহাপ্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ এর ফলে তাদেরকে তাদের কোন কোন কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান যাতে তারা ফিরে আসে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবি)
অর্থাৎ “আমি তাদেরকে মঙ্গল ও অমঙ্গল দ্বারা পরীক্ষা করি যাতে তারা ফিরে আসে।” (৭:১৬৮) মহান আল্লাহ বলেনঃ তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং দেখো, তোমাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছে! তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক। সেগুলো দেখে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করো।
৪৩-৪৫ নং আয়াতের তাফসীর
এখানে আল্লাহ তা’আলা স্বীয় বান্দাদেরকে সরল সঠিক দ্বীনের উপর দৃঢ় থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁর ইবাদত করার হিদায়াত করছেন। তিনি বলেনঃ জান-মাল দিয়ে দৃঢ়ভাবে আল্লাহর ইবাদতের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড় কিয়ামত আসার পূর্বে। যখন কিয়ামত সংঘটনের আদেশ হয়ে যাবে তখন ঐ সময়কে কেউই বন্ধ করতে পারবে না। সেদিন ভাল ও মন্দ পৃথক হয়ে যাবে। একদল তো যাবে এবং আর একদল জাহান্নামের জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে। কাফির তার কুফরীর বোঝার নীচে চাপা পড়ে যাবে। সৎলোকেরা তাদের কৃত সক্কর্মের কারণে উত্তম ও সুখময় স্থানে অবস্থান করবে। আল্লাহ তা’আলা তাদের পুণ্য। অনেকগুণে বাড়িয়ে দিবেন এবং এভাবে তাদেরকে উত্তম বিনিময় প্রদান করবেন। তাদের এক একটি পুণ্য দশগুণ হতে বাড়াতে বাড়াতে সাতশ গুণ পর্যন্ত পৌছিয়ে দেয়া হবে। এভাবে আল্লাহ পাক তাদেরকে পুরস্কৃত করবেন। কাফিরদেরকে আল্লাহ তা’আলা ভালবাসেন না। তা সত্ত্বেও তাদের উপর কোন যুলুম করা হবে।
أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#1034)
[The Effects of Sin in this World :-]
www.motaher21.net
Sura:30
Para:21
Sura: Ar-Roum
Ayat: – 41-45
30:41
ظَہَرَ الۡفَسَادُ فِی الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ بِمَا کَسَبَتۡ اَیۡدِی النَّاسِ لِیُذِیۡقَہُمۡ بَعۡضَ الَّذِیۡ عَمِلُوۡا لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۴۱﴾
Corruption has appeared throughout the land and sea by [reason of] what the hands of people have earned so He may let them taste part of [the consequence of] what they have done that perhaps they will return [to righteousness].
The Effects of Sin in this World
Allah says:
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ
Evil has appeared in Al-Barr and Al-Bahr because of what the hands of men have earned, that He may make them taste a part of that which they have done, in order that they may return.
Ibn Abbas, Ikrimah, Ad-Dahhak, As-Suddi and others said:
“What is meant by Al-Barr here is the empty land or wilderness, and by Al-Bahr is towns and cities.”
According to a report narrated from Ibn Abbas and Ikrimah,
Al-Bahrrefers to towns and cities which are on the banks of rivers.
Others said that what was meant was the usual meaning of the words, i.e., land and sea.
Zayd bin Rafi` said:
ظَهَرَ الْفَسَادُ
(Evil has appeared),
“The rain is withheld from the land and this is followed by famine, and it is withheld from the sea, adversely affecting the animals which live in it.”
This was recorded by Ibn Abi Hatim, who said:”Muhammad bin Abdullah bin Yazid Al-Muqri’ told us, from Sufyan from Humayd bin Qays Al-A`raj from Mujahid:
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ
(Evil has appeared on land and sea),
“Evil on land means the killing of the son of Adam, and evil on the sea means piracy.”
According to the first opinion, the phrase,
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ
(Evil has appeared on land and sea because of what the hands of men have earned),
means the shortfall in the crops and fruits is because of sins.
Abu Al-Aliyah said:
“Whoever disobeys Allah in the earth has corrupted it, because the good condition of the earth and the heavens depends on obedience to Allah.”
Hence it says in the Hadith which was recorded by Abu Dawud:
لَحَدٌّ يُقَامُ فِي الاَْرْضِ أَحَبُّ إِلَى أَهْلِهَا مِنْ أَنْ يُمْطَرُوا أَرْبَعِينَ صَبَاحًا
Any prescribed punishment which is carried out in the land is better for its people than if it were to rain for forty days.
The reason for that is that if the prescribed punishments are carried out, this will deter the people — most or many of them — from violating the prohibitions of Allah. If they give up sin, this will be a cause of blessings in the skies and on the earth. So, when `Isa bin Maryam, peace be upon him, comes down at the end of time, he will judge according to this Shariah at that time, and will kill the pigs and break the cross and abolish the Jizyah. He will accept nothing except Islam or the sword. When Allah destroys the Dajjal and his followers, and Ya’juj and Ma’juj during his time, it will be said to the earth, bring forth your blessing. Then groups of people will eat from one pomegranate, and will seek shade beneath its skin, and the milk of one pregnant camel will be sufficient for a group of people. This will only be because of the blessings that will result from application of the Shariah of Muhammad. The more justice is established, the more the blessings and good things will increase. It was reported in the Sahih:
إِنَّ الْفَاجِرَ إِذَا مَاتَ تَسْتَرِيحُ مِنْهُ الْعِبَادُ وَالْبِلَدُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَاب
When the evildoer dies, it is a relief for the people, the land, the trees and the animals.
Imam Ahmad bin Hanbal recorded that Abu Qahdham said:
“At the time of Ziyad or Ibn Ziyad, a man found a cloth in which were wrapped grains of wheat which were as big as date stones; on it was written:`This grew at a time when justice prevailed.”‘
لِيُذِيقَهُم بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا
that He may make them taste a part of that which they have done,
means, He tries them with the loss of wealth, souls and fruits as a test and as a punishment for what they have done.
لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
in order that they may return.
means, from disobedience.
This is like the Ayah,
وَبَلَوْنَـهُمْ بِالْحَسَنَـتِ وَالسَّيِّيَاتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
And We tried them with good and evil in order that they might turn. (7:168)
Then Allah says
30:42
قُلۡ سِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَانۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلُ ؕ کَانَ اَکۡثَرُہُمۡ مُّشۡرِکِیۡنَ ﴿۴۲﴾
Say, [O Muhammad], “Travel through the land and observe how was the end of those before. Most of them were associators [of others with Allah ].
قُلْ سِيرُوا فِي الاَْرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِن قَبْلُ
Say:”Travel in the land and see what was the end of those before (you)!”
meaning, those who came before you.
كَانَ أَكْثَرُهُم مُّشْرِكِينَ
Most of them were idolators.
means, so see what happened to them when they rejected the Messengers and were ungrateful for the blessings
30:43
فَاَقِمۡ وَجۡہَکَ لِلدِّیۡنِ الۡقَیِّمِ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ یَوۡمٌ لَّا مَرَدَّ لَہٗ مِنَ اللّٰہِ یَوۡمَئِذٍ یَّصَّدَّعُوۡنَ ﴿۴۳﴾
So direct your face toward the correct religion before a Day comes from Allah of which there is no repelling. That Day, they will be divided.
The Command to follow the Straight Path before the Day of Resurrection
Here Allah commands His servants to hasten to obedience to Him and to hasten to do good deeds.
فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ الْقَيِّمِ مِن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ يَوْمٌ لاَّ مَرَدَّ لَهُ مِنَ اللَّهِ
So, set you your face to the straight and right religion, before there comes from Allah a Day which none can avert.
The Day of Resurrection, for when Allah wants it to happen, no one will be able to avert it.
يَوْمَيِذٍ يَصَّدَّعُونَ
On that Day men shall be divided.
means, they will be separated, with one group in Paradise and another in Hell.
Allah says:
مَن كَفَرَ فَعَلَيْهِ كُفْرُهُ وَمَنْ عَمِلَ صَالِحًا فَلَِنفُسِهِمْ يَمْهَدُونَ
30:44
مَنۡ کَفَرَ فَعَلَیۡہِ کُفۡرُہٗ ۚ وَ مَنۡ عَمِلَ صَالِحًا فَلِاَنۡفُسِہِمۡ یَمۡہَدُوۡنَ ﴿ۙ۴۴﴾
Whoever disbelieves – upon him is [the consequence of] his disbelief. And whoever does righteousness – they are for themselves preparing,
30:45
لِیَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ مِنۡ فَضۡلِہٖ ؕ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۴۵﴾
That He may reward those who have believed and done righteous deeds out of His bounty. Indeed, He does not like the disbelievers.
لِيَجْزِيَ الَّذِينَ امَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِن فَضْلِهِ
Whosoever disbelieves will suffer from his disbelief, and whosoever does righteous good deeds, then such will prepare a good place for themselves. That He may reward those who believe. and do righteous good deeds, out of His bounty.
meaning that He may reward them from His bounty, in return for one good deed, he will get the reward for ten, up to seven hundred like it, as much as Allah wills.
إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْكَافِرِينَ
Verily, He likes not the disbelievers.
yet He is still just with them and does not oppress them
For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran