(টপিক#১০৫৪) [মুহাম্মদ (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। ] www.motaher21.net সূরা:- ৩৩:আহযাব পারা:২২ ৩৯-৪০ নং আয়াত:-

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#১০৫৪)
[মুহাম্মদ (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। ]
www.motaher21.net
সূরা:- ৩৩:আহযাব
পারা:২২
৩৯-৪০ নং আয়াত:-
৩৩: ৩৯
الَّذِیۡنَ یُبَلِّغُوۡنَ رِسٰلٰتِ اللّٰہِ وَ یَخۡشَوۡنَہٗ وَ لَا یَخۡشَوۡنَ اَحَدًا اِلَّا اللّٰہَ ؕ وَ کَفٰی بِاللّٰہِ حَسِیۡبًا ﴿۳۹﴾
তারা আল্লাহ্‌র বাণী প্রচার করত, আর তাঁকে ভয় করত এবং আল্লাহ্‌কে ছাড়া অন্য কাউকেও ভয় করত না । আর হিসাব গ্রহণকারীরুপে আল্লাহ্ই যথেষ্ট।
৩৩:৪০
مَا کَانَ مُحَمَّدٌ اَبَاۤ اَحَدٍ مِّنۡ رِّجَالِکُمۡ وَ لٰکِنۡ رَّسُوۡلَ اللّٰہِ وَ خَاتَمَ النَّبِیّٖنَ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمًا ﴿٪۴۰﴾
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে কারোর পিতা নয় কিন্তু সে আল্লাহর রসূল এবং শেষ নবী আর আল্লাহ‌ সব জিনিসের জ্ঞান রাখেন।

তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

৩৯-৪০ নং আয়াতের তাফসীর:

প্রথমত আল্লাহ তা‘আলা নাবীদের প্রশংসা করেছেন যে, তারা আল্লাহ তা‘আলার রিসালাতকে পৃথিবীর সকল মানুষের নিকট পৌঁছিয়ে দিয়েছেন এবং একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকেই ভয় করতেন, অন্য কাউকে ভয় করতেন না। যার ফলে তারা নির্ভয়ে রিসালাতের দাওয়াত মানুষের নিকট প্রচার করতেন।

আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

(قُلْ يٰٓأَيُّهَا النَّاسُ إِنِّيْ رَسُوْلُ اللّٰهِ إِلَيْكُمْ جَمِيْعَا نِالَّذِيْ لَه۫ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ ج لَآ إِلٰهَ إِلَّا هُوَ يُحْي۪ وَيُمِيْتُ ص فَاٰمِنُوْا بِاللّٰهِ وَرَسُوْلِهِ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ الَّذِيْ يُؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَكَلِمٰتِه۪ وَاتَّبِعُوْهُ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ)‏

“বল ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহ্র প্রেরিত রাসূল, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের অধিকারী। তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্যিকারের মা‘বূদ নেই, তিনিই জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান। সুতরাং তোমরা ঈমান আন আল্লাহ্র প্রতি ও তাঁর বার্তাবাহক উম্মী নাবীর প্রতি, যে আল্লাহ্ ও তাঁর বাণীতে ঈমান আনে এবং তোমরা তারই অনুসরণ কর, যাতে তোমরা সঠিক পথ পাও।’’ (সূরা আ‘রাফ ৭:১৫৮)

হাদীসে এসেছে যে, আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্যকে ভয় করা যাবে না। আবূ সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তোমাদের কেউ যেন নিজেকে লাঞ্ছিত না করে যে, সে কাউকে শরীয়ত বিরোধী কাজ করতে দেখেও নীরব থাকে। আল্লাহ তা‘আলা তাকে বলবেন: এ ব্যাপারে কিছু বলতে তোমাকে কিসে বাধা দিয়েছিল? সে উত্তরে বলবে: হে আমার প্রতিপালক! আমি লোকদেরকে ভয় করতাম। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন: আমাকে সবচেয়ে বেশি ভয় করা উচিত ছিল। (মুসনাদ আহমাদ ৩/৩০)

এরপর আল্লাহ বলেন: মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কোন পুরুষ মানুষের পিতা নন। বরং তিনি আল্লাহ তা‘আলার রাসূল এবং শেষ নাবী। মানুষেরা যখন যায়েদ (رضي الله عنه)-কে যায়েদ বিন মুহাম্মাদ নামে সম্বোধন করতে লাগল তখন তাদের এ সম্বোধনকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এ আয়াতটি নাযিল করা হয় এবং এ কথা প্রমাণ করা হয় যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নাবী তাঁর পর আর কোন নাবী আসবে না।

মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নাবী এর প্রমাণ:

(১) ইতোপূর্বে আল্লাহ তা‘আলা যত নাবী প্রেরণ করেছেন কারো মাধ্যমে দীন পূর্ণ করে দেননি। কিন্তু মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাধ্যমে দীন পূর্ণ করে দিয়েছেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(اَلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِيْنًا)

“আজ (আরাফাহ দিবস) তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত করলাম।” (সূরা মায়িদা ৫:৮)

সুতরাং দীন পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর আর কোন নাবী আসার সুযোগ ও প্রয়োজন নেই।

(২) জাবের ইবনু আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমার এবং অন্যান্য নাবীদের দৃষ্টান্ত হল ঐ ব্যক্তির মত, যে একটি ঘর নির্মাণ করল, ঐ ঘরটিকে পরিপূর্ণ করল এবং সুন্দর করে নির্মাণ করল তবে একটি ইট বসানোর জায়গা ব্যতীত। যে ব্যক্তিই ঐ ঘরে প্রবেশ করে সে ব্যক্তিই ঘরের সৌন্দর্য দেখে আশ্চর্য হয়ে বলে: কতই না সুন্দর, তবে শুধুমাত্র ঐ স্থানটুকু ব্যতীত। ঐ ইটের যে জায়গা সেটুকু হলাম আমি। আমার দ্বারাই নাবী পাঠানো বন্ধ করা হয়েছে। অর্থাৎ আমিই শেষ নাবী। (সহীহ বুখারী হা: ৩৫৩৫, সহীহ মুসলিম হা: ২২৮৬)

(৩) জুবাইর বিন মুতইম (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন: নিশ্চয়ই আমার কয়েকটি নাম রয়েছে। আমি মুহাম্মাদ, আমি আহমাদ, আমি মাহী, আমার দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা কুফরীকে মিটিয়ে দেবেন। আমি হাশের, আমার পায়ের ওপর দিয়ে জনগণকে একত্রিত করা হবে। আমি আকেব, আর আকেব বলা হয় যার পরে আর কোন নাবী আসবে না। (সহীহ বুখারী হা: ৩৫৩২, ২৩৫৪)

(৪) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলী (رضي الله عنه)-কে লক্ষ্য করে বলেছেন: হে আলী! মূসার কাছে হারূনের মর্যাদা যেরূপ আমার কাছে তোমার মর্যাদা সেরূপ তবে আমার পর আর কোন নাবী আসবে না। এ ছাড়াও অনেক প্রমাণ রয়েছে যা প্রমাণ করে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নাবী।

তাই প্রত্যেক মু’মিন-মুসলিমকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নাবী, তার পর পৃথিবীতে আর কোন নাবী আসবে না। কারো এ বিশ্বাস না থাকলে তার ঈমান থাকবে না।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. নাবী-রাসূলদের প্রধান দায়িত্ব হল আল্লাহ তা‘আলার রিসালাত মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া।
২. মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বশেষ নাবী এবং তার পরে আর কোন নাবী আসবে না।
৩. মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কোন পুরুষ মানুষের পিতা নন অর্থাৎ তাঁর কোন জ্ঞানপ্রাপ্ত বয়ষ্ক ছেলে ছিল না।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৩৯-৪০ নং আয়াতের তাফসীর

এখানে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলা ঐ লোকদের (নবীদের) প্রশংসা করছেন যারা আল্লাহর সমগ্র সৃষ্টির কাছে তাঁর পয়গাম পৌঁছিয়ে দেন। তাঁরা আল্লাহকে ভয় করেন এবং তাঁকে ছাড়া আর কাউকেও ভয় করেন না। কোন ভীতি-বিহ্বল কাজে অথবা কারো প্রভাবে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আল্লাহর দাওয়াত পৌঁছিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠিত হন না। আল্লাহ তা’আলার সাহায্য-সহানুভূতিই যথেষ্ট।

এই পদ ও দায়িত্ব পালনে সবারই নেতা, এমন কি প্রত্যেক কাজে-কর্মে ও প্রতিটি বিষয়ে সবারই সর্দার বা নেতা হলেন হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)। একটু চিন্তা করলেই বুঝা যাবে যে, পূর্বে ও পশ্চিমে সমস্ত বানী আদমের কাছে আল্লাহর দ্বীনের প্রচার করেছেন তিনিই। যতদিন আল্লাহর এই দ্বীন চারদিকে ছড়িয়ে না পড়েছে ততদিন তিনি বরাবরই দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে গেছেন। তিনি আল্লাহর দ্বীনের প্রচারের ব্যাপারে সদা ব্যতিব্যস্ত থাকতেন। তাঁর পূর্বে যেসব নবী-রাসূল এসেছিলেন তাঁরা নিজ নিজ জাতির জন্যে এসেছিলেন। কিন্তু শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এসেছিলেন সারা দুনিয়ার জন্যে। মহান আল্লাহ ঘোষণা করেছেনঃ (আরবি)

অর্থাৎ “(হে নবী সঃ!) তুমি বলে দাও- হে লোক সকল! নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সকলের নিকট রাসূলরূপে প্রেরিত হয়েছি।” (৭:১৫৮)

তাঁর পরে এ দ্বীনের প্রচারের দায়িত্ব তাঁর উম্মতের স্কন্ধে অর্পিত হয়েছে। তাঁর পরে নেতৃত্বের দায়িত্ব তাঁর সাহাবীদের উপর ন্যস্ত হয়েছে। তাঁরা যা কিছু রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে শিখেছিলেন তা তাদের পরবর্তীদের শিখিয়ে দেন। তারা সমস্ত কাজ ও কথা, পরিস্থিতি, রাত-দিনের সফর, তাঁর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সবকিছু তুলে ধরেছেন। সুতরাং তিনি তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তাঁদেরকে সন্তুষ্ট করেছেন। পরবর্তী লোকেরা উত্তরাধিকার সূত্রে এগুলো প্রাপ্ত হয়েছে। এভাবেই পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের ওয়ারিশ হয়েছে। আল্লাহর দ্বীন এভাবেই ছড়াতে থাকে। কুরআন ও হাদীস জনগণের কাছে পৌঁছতে থাকে। হিদায়াত প্রাপ্তরা তাঁদের অনুসরণ করে জ্যোতির্ময় হয়ে ওঠেন। যাঁরা ভাল কাজ করার তাওফীক লাভ করেছেন তাঁরা তাঁদের মাসলাকের বা চলার পথের উপর চলতে থাকেন। করুণাময় আল্লাহর নিকট আমাদের প্রার্থনা এই যে, তিনি যেন আমাদেকে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেন।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ যেন নিজেকে লাঞ্ছিত না করে যে সে কাউকে শরীয়ত বিরোধী কাজ করতে দেখেও নীরব তাকে। (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ তাআলা তাকে বলবেনঃ “এ ব্যাপারে কিছু বলতে তোমাকে কিসে বাধা দিয়েছিল”? সে উত্তরে বলবেঃ “হে আমার প্রতিপালক! আমি লোকদেরকে ভয় করতাম।তখন আল্লাহ বলবেনঃ “আমাকে সবচেয়ে বেশী ভয় করা উচিত ছিল।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)

মহান আল্লাহ বলেনঃ মুহাম্মাদ (সঃ) তোমাদের কোন পুরুষের পিতা নয়। আল্লাহ তা’আলা নিষেধ করছেন যে, এরপরে যেন যায়েদ ইবনে মুহাম্মাদ (সঃ) বলা না হয়। অর্থাৎ তিনি যায়েদ (রাঃ)-এর পিতা নন। যদিও তিনি তাঁকে পুত্র বানিয়ে নিয়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কোন পুত্র সন্তান প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত জীবিত থাকেননি। কাসেম, তাইয়েব ও তাহের নামক তার তিনটি পুত্র সন্তান হযরত খাদীজা (রাঃ)-এর গর্ভজাত ছিলেন। কিন্তু তিনজনই শৈশবে ইন্তেকাল করেন। হযরত মারিয়াহ কিবতিয়াহ (রাঃ)-এর গর্ভজাত একটি পুত্র সন্তান ছিলেন, তাঁর নাম ছিল ইবরাহীম। তিনি দুগ্ধ পান অবস্থাতেই ইন্তেকাল করেন। হযরত খাদীজা (রাঃ)-এর গর্ভজাত রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর চার কন্যা সন্তান ছিলেন। তাঁরা হলেন হযরত যয়নাব (রাঃ), হযরত রুকাইয়া (রাঃ), হযরত উম্মে কুলসুম (রাঃ) ও হযরত ফাতিমা (রাঃ)। তাঁদের মধ্যে তিনজন তাঁর জীবদ্দশাতেই ইন্তেকাল করেছিলেন। শুধুমাত্র হযরত ফাতিমা (রাঃ) তাঁর ইন্তেকালের ছয় মাস পরে ইন্তেকাল করেছিলেন।

এরপর আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ বরং মুহাম্মাদ (সঃ) আল্লাহর রাসূল ও শেষ নবী। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেছেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “আল্লাহ্ তাঁর রিসালাত কোথায় রাখবেন তা তিনি খুব ভাল জানেন।” (৬:১২৫) সুতরাং এ আয়াতটি এটাই প্রমাণ করে যে, তার পরে কোন নবী নেই। আর তার পরে যখন কোন নবী নেই তখন তাঁর পরে কোন রাসূলও যে নেই তা বলাই বাহুল্য। রিসালাত তো নবুওয়াত হতে বিশিষ্ট। প্রত্যেক রাসূলই নবী, কিন্তু প্রত্যেক নবী রাসূল নন। তিনি যে খাতামুন নাবীঈন তা হাদীসে মুতাওয়াতির দ্বারাও প্রমাণিত।

হযরত কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “নবীদের মধ্যে আমার দৃষ্টান্ত হচ্ছে ঐ ব্যক্তির দৃষ্টান্তের মত যে একটি বাড়ী তৈরী করলো এবং ওটা পূর্ণরূপে ও উত্তমভাবে নির্মাণ করলো, কিন্তু তাতে একটা ইট পরিমাণ জায়গা ছেড়ে দিলো। সেখানে কিছুই করলো না। লোকেরা চারদিক থেকে তা দেখতে লাগলো এবং ওর নির্মাণকার্যে সবাই বিস্ময় প্রকাশ করলো। কিন্তু তারা বলতে লাগলো: ‘যদি এ স্থানটি খালি না থাকতো তবে আরো কত সুন্দর হতো!’ সুতরাং নবীদের মধ্যে আমি ঐ নবী যিনি ঐ স্থানটি পূর্ণ করে দিয়েছেন।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযীও (রঃ) এটা বর্ণনা করেছেন এবং একে হাসান সহীহ বলেছেন)

অপর একটি হাদীসঃ

হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “রিসালাত ও নবুওয়াত শেষ হয়ে গেছে। আমার পরে আর কোন রাসূল বা নবী আসবে না।” সাহাবীদের কাছে তাঁর “একথাটি খুবই কঠিন বোধ হলো। তখন তিনি বললেনঃ “কিন্তু সুসংবাদ দানকারীরা থাকবে।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! সুসংবাদদাতা কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “মুসলমানদের স্বপ্ন, যা নবুওয়াতের একটি অংশ বিশেষ।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) ও ইমাম তিরমিযী (রঃ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে সহীহ গারীব বলেছেন)

অন্য একটি হাদীসঃ

অন্য একটি হাদীসঃ হযরত জাবির ইবনে আবদিল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমার দৃষ্টান্ত ও নবীদের দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির দৃষ্টান্তের মত যে একটি ঘর বানালো এবং পূর্ণ ও সুন্দর করে বানালো। কিন্তু একটি ইট পরিমাণ জায়গা ফাঁকা রেখে দিলো। সুতরাং যেই সেখানে প্রবেশ করে ও ওর দিকে তাকায় সেই বলেঃ ‘এটা কতইনা সুন্দর! যদি এই ইট পরিমাণ জায়গাটি ফাঁকা না থাকতো!’ আমি ঐ খালি স্থানের ইট। আমার মাধ্যমে নবীদের ধারাবাহিকতা শেষ করা হয়েছে।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ), ইমাম বুখারী (রঃ), ইমাম মুসিলম (রঃ) ও ইমাম তিরমিযী (রঃ) বর্ণনা করেছেন)

অন্য একটি হাদীসঃ

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমার দৃষ্টান্ত ও নবীদের দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির দৃষ্টান্তের ন্যায় যে একটি ঘর নির্মাণ করলো এবং পূর্ণভাবে করলো, কিন্তু একটি ইট পরিমাণ জায়গা ফাঁকা রেখে দিলো। অতঃপর আমি আগমন করলাম ও ঐ ইট পরিমাণ খালি জায়গাটি পূর্ণ করে দিলাম।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) ও ইমাম মুসলিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)

আর একটি হাদীসঃ

হযরত আবূ তোফায়েল (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমার পরে কোন নবী নেই। তবে সুসংবাদ বহনকারী বিদ্যমান থাকবে।” জিজ্ঞেস করা হলো: “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! সুসংবাদ বহনকারী আবার কি?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “উত্তম ও ভাল স্বপ্ন।”

অন্য একটি হাদীসঃ

হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমার ও নবীদের দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির দৃষ্টান্তের ন্যায় যে একটি ঘর নির্মাণ করলো এবং তা পূর্ণরূপে ও উত্তমরূপে নির্মাণ করলো। কিন্তু একটি ইট পরিমাণ জায়গা ফাঁকা রেখে দিলো। তখন চতুর্দিক হতে লোকেরা এ ঘরটি দেখতে আসলো এবং তা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেল। অতঃপর লোকটিকে তারা জিজ্ঞেস করলো: ‘এখানে তুমি কেন ইট রাখখানি? এখানে ইট দিলে তো তোমার এ দালানটি পূর্ণ হতো? রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেন: আমিই ঐ ইট। (এ হাদীসটিও ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম বুখারী (রঃ) ও ইমাম মুসলিম (রঃ) এটা আবদুর রাযযাকের হাদীস হতে তাখরীজ করেছেন)

আর একটি হাদীসঃ

হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমাকে ছয়টি জিনিসের মাধ্যমে সমস্ত নবীর উপর ফযীলত দান করা হয়েছে। প্রথমঃ আমাকে জামে’ কালিমাত বা ব্যাপক ও সার্বজনীন কথা প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় প্রভাব বা গাম্ভীর্য দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। তৃতীয়ঃ আমার জন্যে গানীমাত বা যুদ্ধলব্ধ মাল হালাল করা হয়েছে। চতুর্থঃ আমার জন্যে সারা দুনিয়াকে মসজিদ ও অযুর স্থানরূপে নির্ধারণ করা হয়েছে। পঞ্চমঃ সমস্ত সৃষ্টির নিকট আমাকে নবী করে পাঠানো হয়েছে। ষষ্ঠঃ আমার দ্বারা নবী আগমনের ধারাবাহিকতা শেষ করা হয়েছে।” (এ হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (রঃ) ও ইমাম ইবনে মাজাহ বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) একে হাসান সহীহ বলেছেন)

আর একটি হাদীসঃ

হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। যে, নবী (সঃ) তাকে বলেছেনঃ “আল্লাহর নিকট আমি নবীদেরকে শেষকারীরূপে ছিলাম ঐ সময় যখন হযরত আদম (আঃ) পূর্ণরূপে সৃষ্ট হননি।”

আর একটি হাদীসঃ

হযরত মুতইম (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ “নিশ্চয়ই আমার কয়েকটি নাম রয়েছে। আমি মুহাম্মাদ (সঃ), আমি আহমাদ (সঃ), আমি মাহী। আমার কারণে আল্লাহ তাআলা কুফরীকে মিটিয়ে দিবেন। আমি হাশের। আমার পায়ের উপর দিয়ে জনগণকে উঠানো ও একত্রিত করা হবে। আমি আকেব। আমার পরে আর কোন নবী হবে না।”
(সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হাদীসটিকে তাখরীজ করা হয়েছে)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমাদের কাছে এমনভাবে আসলেন যেন তিনি আমাদের থেকে বিদায় গ্রহণকারী। তিনি তিনবার বললেনঃ “আমি মুহাম্মাদ (সঃ) নিরক্ষর নবী। আমার পরে কোন নবী নেই। আমাকে ব্যাপক ও সার্বজনীন কালেমা প্রদান করা হয়েছে। আমি সর্ববিজয়ী ও পরিপূর্ণ জ্ঞানী। জাহান্নামের দারোগা যত আছে, আরশ বহনকারী ফেরেশতা যতজন আছেন তাদেরকে আমার সমস্ত উম্মতের সাথে পরিচিত করা হয়েছে। আমি যতদিন তোমাদের সাথে আছি আমার কথা মেনে চলো। যখন আমি তোমাদের মধ্য থেকে বিদায় গ্রহণ করবো তখন তোমরা আল্লাহর কিতাবকে আঁকড়ে ধরে থাকবে। আল্লাহর কিতাব যা হালাল করেছে তাকে হালাল জানবে এবং যা হারাম করেছে তা হারাম বলে মেনে নেবে।” এ বিষয়ের উপর আরো বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলার এ ব্যাপক রহমতের জন্যে তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। তিনি তাঁর দয়া-দাক্ষিণ্যের কারণে আমাদের জন্যে শ্রেষ্ঠ নবী (সঃ)-কে পাঠিয়েছেন। তিনি তার হাতে সহজ ও সরল জীবন ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ স্বীয় কিতাবে এবং বিশ্ব শান্তির দূত হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) মুতাওয়াতির হাদীসে এ খবর জানিয়ে দিয়েছেন যে, তার পরে আর কোন নবী নেই। অতএব তাঁর পরে যদি কেউ নবুওয়াত ও রিসালাতের দাবী করে তবে নিঃসন্দেহে সে মিথ্যাবাদী, প্রতারক, দাজ্জাল, পথভ্রষ্ট এবং পথভ্রষ্টকারী। যদিও সে ফন্দী করে, যাদু করে, বড় বড় জ্ঞানীদের জ্ঞানকে বিভ্রান্ত করে, বিস্ময়কর বিষয়গুলো দেখিয়ে দেয়, বিভিন্ন প্রকারের ডিগবাজী প্রদর্শন করে, তবুও জ্ঞানীরা অবশ্যই জানে যে, এ সবই প্রতারণা ও চালাকী ছাড়া আর কিছুই নয়। ইয়ামনের নবুওয়াতের দাবীদার আনসী ও ইয়ামামার নবুওয়াতের দাবীদার মুসাইলামা কাযযাবকে দেখলেই বুঝা যাবে যে, তারা যা করেছিল তা দেখে দুনিয়াবাসী তাদেরকে ধরে ফেলেছিল। তাদের আসল রূপ জনগণের কাছে উদ্ভাসিত হয়ে পড়েছিল। কিয়ামত পর্যন্ত তাদেরও ঐ অবস্থাই হবে যারা এ ধরনের মিথ্যা দাবী নিয়ে আল্লাহর সৃষ্টির কাছে হাযির হবে। এমনকি সর্বশেষে আসবে মাসীহ্ দাজ্জাল। তার চিহ্নসমূহ দেখে প্রত্যেক আলেম এবং প্রত্যেক মুমিন সে যে মিথ্যাবাদী তা জেনে নেবে। এটাও আল্লাহ তা’আলার একটা অশেষ মেহেরবানী। এ ধরনের মিথ্যা দাবীদারদের এ নসীবই হয় না যে, তারা পুণ্যের আহকাম জারী করে এবং মন্দ কাজ থেকে লোকদেরকে ফিরিয়ে দেয়। অবশ্য যে কাজের তার উদ্দেশ্য হবে তাতে সে সিদ্ধিলাভ করবে। তার কথা ও কাজ ধোকা ও প্রতারণামূলকই হয়ে থাকে। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (আরবি)

অর্থাৎ “আমি তোমাদেরকে খবর দেবো কি যাদের কাছে শয়তানরা এসে থাকে? তারা প্রত্যেক ধোকাবাজ, পাপীর কাছে আসে।” (২৬:২২১-২২২)

সত্য নবীদের ঘটনা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। তাঁরা পুণ্যময় সঠিক হিদায়াত দানকারী। তাঁরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাঁদের কথা ও কাজ পুণ্য বিজড়িত। তাঁরা মানুষকে ভাল কাজের আদেশ করেন এবং মন্দ কাজ হতে বিরত রাখেন। তারা আল্লাহ তাআলার নিকট থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। মুজিযা বা অলৌকিক কাজের দ্বারা তাঁদের সত্যবাদিতা প্রকাশিত হয়। তাঁদের নবুওয়াতের উপর এমন সুস্পষ্ট ও উজ্জ্বল দলীল থাকে যে, সুস্থির মন তাঁদের নবুওয়াতকে মেনে নিতে বাধ্য হয়। আল্লাহ তাআলা তাঁর সমস্ত নবীর উপর কিয়ামত পর্যন্ত দরূদ ও সালাম নাযিল করতে থাকুন!

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# মূল শব্দগুলো হচ্ছে, وَكَفَى بِاللَّهِ حَسِيبًا এর দু’টি অর্থ। এক, প্রত্যেকটি ভয় ও বিপদের মোকাবিলায় আল্লাহই যথেষ্ট। দুই, হিসেব নেবার জন্য আল্লাহ‌ যথেষ্ট। তাঁর ছাড়া আর কারো কাছে জবাবদিহির ভয় করার কোন প্রয়োজন নেই।

# বিরোধীরা নবী ﷺ এর এ বিয়ের ব্যাপারে যেসব আপত্তি উঠাচ্ছিল এ একটি বাক্যের মাধ্যমে সেসবের মূলোচ্ছেদ করে দেয়া হয়েছে।

তাদের প্রথম অভিযোগ ছিল, তিনি নিজের পুত্রবধূকে বিয়ে করেন, অথচ তাঁর নিজের শরীয়াতেও পুত্রের স্ত্রী পিতার জন্য হারাম। এর জবাবে বলা হয়েছে, “মুহাম্মাদ তোমাদের পুরুষদের কারো পিতা নন।” অর্থাৎ যে ব্যক্তির তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে করা হয়েছে তিনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লামের পুত্রই ছিলেন না, কাজেই তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে করা হারাম হবে কেন? তোমরা নিজেরাই জানো মুহাম্মাদ ﷺ এর আদতে কোন পুত্র সন্তানই নেই। তাদের দ্বিতীয় আপত্তি ছিল, ঠিক আছে, পালক পুত্র যদি আসল পুত্র না হয়ে থাকে তাহলেও তার তালাক প্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে করা বড় জোর বৈধই হতে পারতো কিন্তু তাকে বিয়ে করার এমন কি প্রয়োজন ছিল? এর জবাবে বলা হয়েছে, “কিন্তু তিনি আল্লাহর রসূল।” অর্থাৎ রসূল হবার কারনে তাঁর ওপর এ দায়িত্ব ও কর্তব্য আরোপিত হয়েছিল যে তোমাদের রসম-রেওআজ যে হালাল জিনিসটিকে অযথা হারাম গণ্য করে রেখেছে সে ব্যাপারে সকল রকমের স্বার্থপ্রীতির তিনি অবসান ঘটিয়ে দেবেন এবং তার হালাল হবার ব্যাপারে কোনো প্রকার সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশই রাখবে না।

আবার অতিরিক্ত তাকিদ সহকারে বলা হয়েছে, “এবং তিনি শেষ নবী।” অর্থাৎ যদি কোন আইন ও সামাজিক সংস্কার তাঁর আমলে প্রবর্তিত না হয়ে থাকে তাহলে তাঁর পরে আগমনকারী নবী তার প্রবর্তন করতে পারতেন, কিন্তু তাঁর পরে আর কোন রসূল তো দূরের কথা কোন নবীই আসবেন না। কাজেই তিনি নিজেই জাহেলিয়াতের এ রসমটির মুলোচ্ছেদ করে যাবেন, এটা আরো অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল।

এরপর আরো বেশী জোর দিয়ে বলা হয়েছে, “আল্লাহ প্রত্যেটি বিষয়ের জ্ঞান রাখেন।” অর্থাৎ আল্লাহ‌ জানেন, এ সময় মুহাম্মাদ ﷺ এর মাধ্যমে জাহেলিয়াতের এ রসমটির মুলোচ্ছেদ করা কেন জরুরী ছিল এবং এমনটি না করলে কি মহা অনর্থ হতো। তিনি জানেন, এখন আর তাঁর পক্ষ থেকে কোন নবী আসবেন না, কাজেই নিজের শেষ নবীর মাধ্যমে এখন যদি তিনি এ রসমটিকে উৎখাত না করেন তাহলে এমন দ্বিতীয় আর কোন সত্তাই নেই যিনি এটি ভঙ্গ করলে সারা দুনিয়ার মুসলমানদের মধ্য থেকে চিরকালেন জন্য এটি মূলোৎপাটিত হয়ে যাবে। পরবর্তী সংস্কারকগণ যদি এটি ভাঙেন, তাহলে তাদের মধ্য থেকে আরো কর্মও তাঁর ইন্তিকালের পরে এমন কোন বিশ্বজনীন ও চিরন্তন কর্তৃত্বের অধিকারী হবে না যার ফলে প্রত্যেক দেশের প্রত্যেক যুগের লোকেরা তার অনুসরণ করতে থাকবে এবং তাদের মধ্য থেকে কারো ব্যক্তিত্ব ও তাঁর নিজের মধ্যে এমন কোন পবিত্রতার বাহন হবে না যার ফলে তাঁর কোনো কাজ নিছক তাঁর সুন্নাত হবার কারণে মানুষের মন থেকে অপছন্দনীয়তার সকল প্রকার ধারণার মূলোচ্ছেদ করতে সক্ষম হবে। দুঃখের বিষয়, বর্তমান যুগের একটি দল এ আয়াতটি ভুল ব্যাখ্যা করে একটি বড় ফিতনার দরোজা খুলে দিয়েছে, তাই খতমে নবুওয়াত বিষটির পূর্ণ ব্যাখ্যা এবং এ দলটির ছড়ানো বিভ্রান্তিগুলো নিরসনের জন্য আমি এ সূরার তাফসীরের শেষে একটি বিস্তারিত পরিশিষ্ট সংযোজন করে দিয়েছি।

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-

*নবীর সাথে উম্মতদের সম্পর্কের ধরণ : আয়াতে আল্লাহ রব্বুল আলামীন আরও উল্লেখ করেছেন যে, এ সবই হচ্ছে, আল্লাহর চিরন্তন রীতি ও পদ্ধতি। রসূলে করীম(স.)-এর আগেও এ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রেরিত অগণিত ও অসংখ্য নবী ও রাসূলরা এ একই পদ্ধতি ও বিধানের অনুসরণ করেছেন। আল্লাহর চিরন্তন বিধানকেই তারা কার্যকর করেছেন। পূর্ববর্তী নবী ও রাসূল কর্তৃক আল্লাহ প্রদত্ত বিধান ও পদ্ধতিকে সাহসিকতা ও দৃঢ়তার সাথে কার্যকর করার দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন, ‘সে সকল নবী ও রসূল যারা আল্লাহ প্রদত্ত রেসালাতের দায়িত্বে নিয়ােজিত থেকে তাবলীগ ও দাওয়াতের কার্য সম্পাদন করতেন তারা আল্লাহকেই ভয় করতেন। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুকেই তারা ভয় করতেন না।'(আয়াত ৩৯) আল্লাহ তায়ালা নবী ও রসূলদেরকে রেসালাতের যে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন এ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কোনাে সৃষ্টির প্রতি জবাবদিহিতার চিন্তা তারা করতেন না। আল্লাহর পয়গামের প্রচার-প্রসার, দাওয়াত তাবলীগ ও তাকে কার্যকর করার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও তারা একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত কোনাে শক্তির ভয় ও পরােয়া করতেন না। আয়াতে এরশাদ হচ্ছে, ‘হিসাব গ্রহণের জন্যে আল্লাহ তায়ালাই যথেষ্ট।’ আল্লাহ তায়ালাই একমাত্র সার্বভৌম শক্তিমান সত্ত্বা, হিসাব গ্রহণ ও জবাব দেয়ার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। নবী ও রসূলদের আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত পয়গামের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মানুষের কাছে হিসাব প্রদান ও জবাব দেয়ার কোনােই প্রয়ােজন নেই। এবার এ ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রেখেই বলা হচ্ছে, ‘মুহাম্মদ(সা.) তােমাদের মধ্য থেকে কোন পুরুষের পিতা নয়।’ মুহাম্মদ(সা.) তােমাদের কোনাে পুরুষের পিতা নন। তার যে কয়টি ছেলে সন্তান হয়েছে তারা সবাই পুরুষের স্তরে উপনীত হওয়ার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেছে। আরবী পরিভাষায় রাজুল (অর্থাৎ পুরুষ) শব্দটি আঠার থেকে পঁয়তাল্লিশ বছর পর্যন্ত বয়স্ক ব্যক্তিকে বলা হয়। মােহাম্মদ(স.)-এর সকল ছেলে সন্তান যেহেতু আঠার বছর বয়স হবার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেছেন, তাই মুহাম্মদ(সা.) এ জগতের কোনাে পুরুষের পিতা নন। তাই যয়নব(রা.) তার পুত্রবধূ নন। যায়েদ ইবনে হারেস তার পুত্র নন বরং তিনি হচ্ছেন হারেসার পুত্র। প্রকৃত ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ও বাস্তবতার প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে এ সত্যই এখানে উদ্ভাসিত হয়। অতএব, যায়েদ ইবনে হারেসা(রা.)-এর তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী যয়নাব বিনতে জাহশ(রা.)-কে বিয়ে করাটা কোনাে অপরাধ নয়। এর মধ্যে কোনাে ক্ষতি ও প্রতিবন্ধকতাও বিদ্যমান নেই। হযরত মুহাম্মদ(স.)-এর সাথে মুসলিম উম্মাহর সম্পর্কের বুনিয়াদ হচ্ছে, রসূল ও উম্মাতের সম্পর্ক। তিনি কোনাে অবস্থায়ই কোনাে সাহাবী এবং তার প্রতি ঈমান আনয়নকারী কোনাে উম্মাতের পিতা নন। এ সম্পর্কেই বলা হয়েছে, ‘বরং তিনি হচ্ছেন আল্লাহর রসূল এবং সর্বশেষ নবী।'(আয়াত ৪০) যেহেতু তিনি আল্লাহর সর্বশেষ রসূল, তাই তার মাধ্যমেই প্রয়ােজনীয় বিধানসমূহকে পরিপূর্ণতা লাভ করতে হবে, যাতে করে মানবকূলের জন্যে আল্লাহর পরিপূর্ণ বিধান অনুসারে জীবনযাত্রা পালন করা সহজ হয়। সর্বশেষ আসমানী রেসালাতের বিধান মােতাবেক যমীনের অধিবাসীদের জীবন প্রবাহ সুষ্ঠু ও কল্যাণময় ধারায় প্রবাহিত হবে। সর্বশেষ নবীর প্রতিষ্ঠিত আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত সর্বশেষ পূর্ণাংগ জীবন বিধানের পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও লংঘন করা যাবে না। বলা হচ্ছে, ‘আর আল্লাহ তায়ালাই তাে সকল বিষয় পরিজ্ঞাত।'(আয়াত ৪০) আল্লাহ তায়ালাই যেহেতু সকল বিষয়ে ভালভাবে পরিজ্ঞাত, তাই সৃষ্টিকূলের কিসে কল্যাণ নিহিত রয়েছে, তা তিনিই ভালােভাবে জানেন। তিনিই নবী করীম(স.)-এর জন্যে যা অবধারিতভাবে নির্ধারণ করার তা নির্ধারণ করেন, যা পছন্দ করার তা পছন্দ করে দেন। তিনি পালক পুত্রের স্ত্রীকে স্বামীর তালাক দেয়া ও তার যথার্থ ইদ্দত পূরণের পর বিয়ে করাকে কল্যাণকর বিবেচনা করেই তিনি তা বৈধ ঘােষণা করেন। তিনি তার সীমাহীন জ্ঞানের আলােকেই সকল সিদ্ধান্ত ও বিধান প্রদান করেন । তিনি তার অপার অনুগ্রহ ও অসীম জ্ঞানের ভিত্তিতে মানব কল্যাণের নিমিত্তেই মানুষের জন্যে সকল নিয়ম-শৃংখলা, নীতিমালা ও বিধি নির্ধারিত করেন।

 

 

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#1054)
[Muhammad (Peace be upon him) is the Messenger of Allah and last of the prophets.]
www.motaher21.net
Sura:33:Al-Ahzaab
Para:22
Ayat: – 35
33:39

الَّذِیۡنَ یُبَلِّغُوۡنَ رِسٰلٰتِ اللّٰہِ وَ یَخۡشَوۡنَہٗ وَ لَا یَخۡشَوۡنَ اَحَدًا اِلَّا اللّٰہَ ؕ وَ کَفٰی بِاللّٰہِ حَسِیۡبًا ﴿۳۹﴾

[ Allah praises] those who convey the messages of Allah and fear Him and do not fear anyone but Allah . And sufficient is Allah as Accountant.

 

Praise for Those Who convey the Message

Allah says:

الَّذِينَ يُبَلِّغُونَ رِسَالَاتِ اللَّهِ

Those who convey the Message of Allah,

meaning, to His creation, and fulfill that with which they have been entrusted.

وَيَخْشَوْنَهُ

and fear Him,

means, they fear Him and they do not fear any besides Him, so no threats on the part of anyone can prevent them from conveying the Message of Allah.

وَلَا يَخْشَوْنَ أَحَدًا إِلاَّ اللَّهَ

and fear none save Allah.

وَكَفَى بِاللَّهِ حَسِيبًا

And sufficient is Allah as a Reckoner.

means, sufficient is Allah as a Helper and Supporter.

The leader of all people in this regard and in all regards is Muhammad the Messenger of Allah, for he undertook to convey the Message to the people of the east and of the west, to all kinds of the sons of Adam, so Allah caused his word, his religion and his law to prevail over all other religions and laws. The Prophets before him were sent only to their own peoples, but he was sent to all of mankind, Arabs and non-Arabs alike.

قُلْ يَأَيُّهَا النَّاسُ إِنِّى رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا

Say:”O mankind! Verily, I am sent to you all as the Messenger of Allah.” (7:158)

Then his Ummah inherited the task of conveying from him, and the greatest of those who undertook this task after him were his Companions, may Allah be pleased with them, who conveyed from him as he had commanded them, describing all his words, deeds and circumstances, night and day, when he was settled and when he was traveling, in private and in public, may Allah be pleased with them. Thereafter each generation inherited from their predecessors until our own time, so those who are guided, follow their example and their way. We ask Allah, the Most Generous Bestower, to make us among their heirs.
The Messenger is not the Father of any Man

Allah states

33:40

مَا کَانَ مُحَمَّدٌ اَبَاۤ اَحَدٍ مِّنۡ رِّجَالِکُمۡ وَ لٰکِنۡ رَّسُوۡلَ اللّٰہِ وَ خَاتَمَ النَّبِیّٖنَ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمًا ﴿٪۴۰﴾

Muhammad is not the father of [any] one of your men, but [he is] the Messenger of Allah and last of the prophets. And ever is Allah, of all things, Knowing.

 

مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ

Muhammad is not the father of any of your men,

After this it was not permitted to say Zayd bin Muhammad, i.e., he was not his father even though he had adopted him.

No male child of the Prophet lived until puberty.

Khadijah, may Allah be pleased with her, bore him Al-Qasim, At-Tayyib and At-Tahir, but they died in childhood.

Mariyah Al-Qibtiyyah bore him Ibrahim, but he also died in infancy.

He also had four daughters from Khadijah:Zaynab, Ruqayyah, Umm Kulthum and Fatima, may Allah be pleased with them all. Three of them died during his lifetime, Fatima lived long enough to be bereaved of him, then she died six months later.
He is the Last of the Prophets

Allah says:

وَلَكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا

but he is the Messenger of Allah and the last of the Prophets. And Allah is Ever All-Aware of everything.

This is like the Ayah:

اللَّهُ أَعْلَمُ حَيْثُ يَجْعَلُ رِسَالَتَهُ

Allah knows best with whom to place His Message. (6:124)

This Ayah clearly states that there will be no Prophet after him. If there will be no Prophet after him then there will surely be no Messenger after him either, because the status of a Messenger is higher than that of a Prophet, for every Messenger is a Prophet but the reverse is not the case.

This was reported in many Mutawatir Hadiths narrated from the Messenger of Allah via a group of his Companions, may Allah be pleased with them.

Imam Ahmad recorded a narration from Ubayy bin Ka`b, from his father that the Prophet said:

مَثَلِي فِي النَّبِيِّينَ كَمَثَلِ رَجُلٍ بَنَى دَارًا فَأَحْسَنَهَا وَأَكْمَلَهَا وَتَرَكَ فِيهَا مَوْضِعَ لَبِنَةٍ لَمْ يَضَعْهَا فَجَعَلَ النَّاسُ يَطُوفُونَ بِالْبُنْيَانِ وَيَعْجَبُونَ مِنْهُ وَيَقُولُونَ لَوْ تَمَّ مَوْضِعُ هَذِهِ اللَّبِنَةِ فَأَنَا فِي النَّبِيِّينَ مَوْضِعُ تِلْكَ اللَّبِنَة

My parable among the Prophets is that of a man who built a house and did a good and complete job, apart from the space of one brick which he did not put in its place. The people started to walk around the building, admiring it and saying, “If only that brick were put in its place.”

Among the Prophets, I am like that brick.

It was also recorded by At-Tirmidhi, who said “Hasan Sahih.”
Another Hadith

Imam Ahmad recorded that Anas bin Malik, may Allah be pleased with him, said that the Messenger of Allah said:

إِنَّ الرِّسَالَةَ وَالنُّبُوَّةَ قَدِ انْقَطَعَتْ فَلَ رَسُولَ بَعْدِي وَلَا نَبِي

Messengership and Prophethood have come to an end, and there will be no more Messengers or Prophets.

This worried the people, then he said:

وَلَكِنِ الْمُبَشِّرَات

But there will be Al-Mubashshirat.

They said, `O Messenger of Allah, what are Al-Mubashshirat?’

He said,

رُوْيَا الرَّجُلِ الْمُسْلِمِ وَهِيَ جُزْءٌ مِنْ أَجْزَاءِ النُّبُوَّة

The dreams of a Muslim man, and they are one of the parts of Prophethood.

This was also recorded by At-Tirmidhi, who said, “Sahih Gharib.”
Another Hadith

Abu Dawud At-Tayalisi recorded that Jabir bin Abdullah, may Allah be pleased with him, said that the Messenger of Allah said:

مَثَلِي وَمَثَلُ الاَْنْبِيَاءِ كَمَثَلِ رَجُلٍ بَنَى دَارًا فَأَكْمَلَهَا وَأَحْسَنَهَا إِلاَّ مَوْضِعَ لَبِنَةٍ فَكَانَ مَنْ دَخَلَهَا فَنَظَرَ إِلَيْهَا قَالَ مَا أَحْسَنَهَا إِلاَّ مَوْضِعَ هَذِهِ اللَّبِنَةِ فَأَنَا مَوْضِعُ اللَّبِنَةِ خُتِمَ بِي الاَْنْبِيَاءُ عَلَيْهِمُ الصَّلَةُ وَالسَّلَم

The parable of myself and the Prophets is that of a man who built a house and did a complete and good job, except for the space of one brick. Whoever entered it would look at that space and say, how good it is, apart from the space of that brick. My position is like that of that brick, and the Prophets — blessings and peace be upon them — end with me.

It was also recorded by Al-Bukhari, Muslim and At-Tirmidhi, who said, “It is Sahih Gharib with this chain of narrators.”
Another Hadith

Imam Ahmad recorded that Abu Sa`id Al-Khudri, may Allah be pleased with him, said that the Messenger of Allah said:

مَثَلِي وَمَثَلُ النَّــبِيينَ كَمَثَلِ رَجُلٍ بَنَى دَارًا فَأَتَمَّهَا إِلاَّ لَبِنَةً وَاحِدَةً فَجِيْتُ أَنَا فَأَتْمَمْتُ تِلْكَ اللَّبِنَة

The parable of myself and the Prophets is that of a man who built a house and completed it apart from the space of one brick. I have come and completed that brick.

This was also recorded by Muslim.
Another Hadith

Imam Ahmad recorded that Abu Hurayrah, may Allah be pleased with him, said that the Messenger of Allah said:

إِنَّ مَثَلِي وَمَثَلَ الاَْنْبِيَاءِ مِنْ قَبْلِي كَمَثَلِ رَجُلٍ ابْتَنَى بُيُوتًا فَأَكْمَلَهَا وَأَحْسَنَهَا وَأَجْمَلَهَا إِلاَّ مَوْضِعَ لَبِنَةٍ مِنْ زَاوِيَةٍ مِنْ زَوَايَاهَا فَجَعَلَ النَّاسُ يَطُوفُونَ وَيُعْجِبُهُمُ الْبُنْيَانُ وَيَقُولُونَ أَلاَّ وَضَعْتَ ههُنَا لَبِنَةً فَيَتِمُّ بُنْيَانُك

The parable of myself and the Prophets who came before me is that of a man who built houses and made them complete and beautiful apart from the space of a brick in one of the corners. The people started to walk around, admiring the construction and saying, If only you put a brick here, your construction will be complete.

The Messenger of Allah said:

فَكُنْتُ أَنَا اللَّبِنَة

And I am that brick.

It was also recorded by Al-Bukhari and Muslim.
Another Hadith

Imam Ahmad recorded that Abu Hurayrah, may Allah be pleased with him, said that the Messenger of Allah said:

فُضِّلْتُ عَلَى الاَْنْبِيَاءِ بِسِتَ

أُعْطِيتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ

وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ

وَأُحِلَّتْ لِيَ الْغَنَايِمُ

وَجُعِلَتْ لِيَ الاَْرْضُ مَسْجِدًا وَطَهُورًا

وَأُرْسِلْتُ إِلَى الْخَلْقِ كَافَّةً

وَخُتِمَ بِي النَّبِيُّون

I have been given preference over the other Prophets in six ways:

I have been given the ability to speak concisely;

I have been aided by fear (cast into the hearts of my enemies);

the spoils of war have been made permissible for me;

the entire earth has been made a Masjid and a means of purification for me;

I have been sent to all of mankind; and

the Prophets end with me.

This was also recorded by At-Tirmidhi and Ibn Majah; At-Tirmidhi said, “It is Hasan Sahih.”
Another Hadith

Imam Ahmad recorded that Abu Sa`id Al-Khudri, may Allah be pleased with him, said that the Messenger of Allah said:

مَثَلِي وَمَثَلُ الاَْنْبِيَاءِ مِنْ قَبْلِي كَمَثَلِ رَجُلٍ بَنَى دَارًا فَأَتَمَّهَا إِلاَّ مَوْضِعَ لَبِنَةٍ وَاحِدَةٍ فَجِيْتُ أَنَا فَأَتْمَمْتُ تِلْكَ اللَّبِنَة

The parable of myself and the Prophets who came before me is that of a man who built a house and completed it apart from the space of one brick. I have come and completed that brick.

It was also recorded by Muslim.
Another Hadith

Jubayr bin Mut`im, may Allah be pleased with him, said that he heard the Messenger of Allah say:

إِنَّ لِي أَسْمَاءَ

أَنَا مُحَمَّدٌ

وَأَنَا أَحْمَدُ

وَأَنَا الْمَاحِي الَّذِي يَمْحُو اللهُ تَعَالَى بِيَ الْكُفْرَ

وَأَنَا الْحَاشِرُ الَّذِي يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى قَدَمَيَّ

وَأَنَا الْعَاقِبُ الَّذِي لَيْسَ بَعْدَهُ نَبِي

I have several names:

I am Muhammad, and

I am Ahmad;

I am Al-Mahi (the eradicator) through whom Allah will erase disbelief;

I am Al-Hashir (the gatherer) at whose feet mankind will gather; and

I am Al-`Aqib (the final one) after whom there will be no Prophet.

It was also recorded in the Two Sahihs.

And there are many other Hadiths on this topic.

Allah has told us in His Book, and His Messenger has told us in the Mutawatir Sunnah, that there will be no Prophet after him, so that it may be known that everyone who claims this status after him is a liar and fabricator who is misguided and is misguiding others. Even if he twists meanings, comes up with false claims and uses tricks and vagaries, all of this is false and is misguidance as will be clear to those who have understanding.

This is what Allah caused to happen in the case of Al-Aswad Al-`Ansi in the Yemen and Musaylimah the Liar in Al-Yamamah, whose false miracles and nonsensical words showed everyone who was possessed of understanding that they were liars who were leading people astray; may the curse of Allah be upon them both.

This is the case with every false prophet until the Day of Resurrection, until they end with Al-Masih Ad-Dajjal (the Antichrist). Each of these liars is given by Allah signs which show the people of knowledge and the believers that his message is false — which is part of the perfect kindness of Allah towards His creation. These liars do not enjoin what is good, nor forbid what is evil, unless they do so by coincidence or because it serves an ulterior purpose. They are the utmost in falsehood and immorality, in all that they say and do, as Allah says:

هَلْ أُنَبِّيُكُمْ عَلَى مَن تَنَزَّلُ الشَّيَـطِينُ تَنَزَّلُ عَلَى كُلِّ أَفَّاكٍ أَثِيمٍ

Shall I inform you (O people!) upon whom the Shayatin descend! They descend on every lying, sinful person. (26:221-222)

This is in contrast to the Prophets — may blessings and peace be upon them — for they are the utmost in righteousness, truthfulness, wisdom, uprightness and justice in all that they say and do, command and forbid.

In addition to this they are supported with miracles and clear and obvious proof. May the blessings and peace of Allah be upon them always, as long as heaven and earth remain

For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran

Leave a Reply