Motaher21.net
أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
( বই # ১২১৪)
[# কী সেই মহাদুর্ঘটনা?]
সুরা: ১০১:আল্ -ক্বারিয়াহ
পারা:৩০
১-১১ নং আয়াতের বেখ্যা :-
#তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন:-
#তাফসীরে ফী জিলালিল কুরআন:-
# তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ:-
# তাফসীরে ইবনে কাছীর:-
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#1214)
[ # What is the Striking Calamity?:-]
Surah.101: Al-Quaari’a
Para:30 Ayat:- 1-11
www.motaher21.net
Motaher21.net
أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
( বই # ১২১৪)
[# কী সেই মহাদুর্ঘটনা?]
সুরা: ১০১:আল্ -ক্বারিয়াহ
পারা:৩০
১-১১ নং আয়াতের বেখ্যা :-
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
* ভূমিকা:১০১
#তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন:-
#তাফসীরে ফী জিলালিল কুরআন:-
(১০১-ক্বারিয়াহ) : নামকরণ:
প্রথম শব্দ ( َلۡقَارِعَةُ ) –কে এর নাম গণ্য করা হয়েছে। এটা কেবল নামই নয় বরং এর বক্তব্য বিষয়ের শিরোনামও। কারণ এর মধ্যে শুধু কিয়ামতের কথাই বলা হয়েছে।
(১০১-ক্বারিয়াহ) : নাযিল হওয়ার সময়-কাল :
এর মক্কী হবার ব্যাপারে সবাই একমত। বরং এর বক্তব্য বিষয় থেকে প্রকাশ হয়, এটিও মক্কা মু’আযযমার প্রথম যুগে নাযিল হয়।
(১০১-ক্বারিয়াহ) : বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য:
এর বিষয়বস্তু হচ্ছে কিয়ামত ও আখেরাত। সর্বপ্রথম লোকদেরকে একটি মহাদুর্ঘটনা! বলে আতংকিত করে দেয়া হয়েছে, কি সেই মহাদুর্ঘটনা? তুমি কী জানো সেই মহাদুর্ঘটনাটি কী? এভাবে শ্রোতাদেরকে একটি ভয়াবহ ঘটনা অনুষ্ঠিত হবার খবর শোনার জন্য প্রস্তুত করার পর দু’টি বাক্যে তাদের সামনে কিয়ামতের নকশা এঁকে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সেদিন লোকেরা আতংকগ্রস্ত হয়ে এমনভাবে চারদিকে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকবে যেমন প্রদীপের আলোর চারদিকে পতঙ্গরা নির্লিপ্তভাবে ছুটাছুটি করতে থাকে। পাহাড়গুলো সমূলে উৎপাটিত হয়ে স্থানচ্যূত হবে। তাদের বাঁধন থাকবে না। তারা তখন হয়ে যাবে ধূনা পশমের মতো। তারপর বলা হয়েছে, আখেরাতে লোকদের কাজের হিসেব-নিকেশ করার জন্য যখন আল্লাহর আদালত কায়েম হবে তখন কার সৎ কাজ তার অসৎকাজের চাইতে ওজনে ভারী এবং কার সৎকাজ তার অসৎকাজের চাইতে ওজনে হালকা, এরই ভিত্তিতে সেখানে ফায়সালা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধরনের লোকেরা আরামের ও সুখের জীবন লাভ করে আনন্দিত হবে। আর দ্বিতীয় ধরনের লোকদেরকে এমন গভীর গর্তের মধ্যে ফেলে দেয়া হবে যেগুলো থাকবে শুধু আগুনে ভরা।
ফী জিলালিল কুরআন:
সংক্ষিপ্ত আলোচনা : ‘আল কারিয়া’ মানে কেয়ামত ৷ কোরআনে ব্যবহৃত এর আরও কয়েকটি সমার্থক শব্দ হচ্ছে আত য়া্তা’স্মাহ, আস সফফাহ, আল হাক্কাহ ও আল্ গাশিয়াহ । ‘আল কারিয়া’ শব্দটির ভেতরে আঘাত ও থাপ্পড়ের মর্ম নিহিত। কেননা এ ঘটনা স্বীয় ভয়াবহতা দ্বারা মানব হৃদয়কে আঘাত করে। সমগ্র সূরাটি এই কেয়ামত তথা তার স্বরূপ, তার ঘটনাবলী ও শেষ পরিণতির বিষয়ে কেন্দ্রীভূত ৷ গোটা সূরা কেয়ামতের একটি দৃশ্য উপস্থাপন করে। এখানে যে দৃশ্যটির অবতারণা করা হয়েছে, তা একটা ভয়াল দৃশ্য । তার লক্ষণ ও প্রতিক্রিয়া মানুষ ও পাহাড়-পর্বতের ওপর বিস্তৃত ৷ মানুষ সংখ্যায় যতোই বেশী হোক, এ ঘটনার পটভূমিতে তাদেরকে ক্ষুদ্র ও নগণ্য মনে হয়৷ তারা ‘বিক্ষিপ্ত পতংগের’ ন্যায়। পতংগ যেমন দায়িত্বহীন ও কান্ডজ্ঞানহীনভাবে ভয়ে দিশাহারা হয়ে নিজের ধ্বংসের পথে ধাবিত হয়, কোন্ দিকে সে যাবে এবং কোথায় তার গন্তব্য, তা সে জানে না, তেমনি কেয়ামতের দিন মানুষের অবস্থাও তদ্রুপ হবে । আর যে পাহাড়-পর্বত একদিন সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলো, তা হবে ধুনা পশমের ন্যায় । বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে বেড়াবে এবং তাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে । সুতরাং কেয়ামতের সুসমন্বিত দৃশ্য তুলে ধরার জন্যে তাকে ‘কারিয়া’ নাম দেয়াই সংগত ৷ এ শব্দ থেকে তা মানুষ ও পাহাড়ে বিস্তৃত কেয়ামতের ঘটনার প্রতিক্রিয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর এর অন্তর্নিহিত মর্ম মানুষের মন ও ভাবাবেগকে আলোড়িত করে। হিসাব গ্রহণ ও কর্মফল প্রদানের মধ্য দিয়ে দৃশ্যটির যে পরিণতি হয়, এটা তারই ভূমিকা ‘কারিয়া! কারিয়া কি?’ তুমি কি জানো যে ‘কারিয়া’ কি? সূরার শুরুতে কোনো বাক্য নয়, শুধু একটি শব্দ ‘আল’ সম্পূর্ণ না করে শুধু ‘আল্ কারিয়াহ’ বলার উদ্দেশ্য হলো, এর ভীতি সঞ্চারকারী ও বিভীষিকাময় বিকট ধ্বনি ঝংকৃত করা!
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-1
টিকা নং:1,
اَلْقَارِعَةُۙ
মহাদুর্ঘটনা!১
তাফসীর :
তাফহীমুল কুরআন:
টিকা:১) কুরআনের মূল শব্দ হচ্ছে “কা-রিআহ” (اَلۡقَارِعَةُۙ ) এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, “যে ঠোকে”। কারা’আ (قرع ) মানে কোন জিনিসকে কোন জিনিসের ওপর এমন জোরে মারা যার ফলে তা থেকে প্রচণ্ড আওয়াজ হয়। এই শাব্দিক অর্থের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও বড় রকমের মারাত্মক বিপদের ক্ষেত্রে “কারি’আহ” শব্দ বলা হয়ে থাকে। যেমন আরবরা বলে, (قَرَعَتهُمُ الْقَا رِعَةُ ) অর্থাৎ উমুক উমুক পরিবার ও গোত্রের লোকদের ওপর ভয়াবহ বিপদ নেমে এসেছে। কুরআন মজীদের এসব জায়গায়ও এই শব্দটি কোন জাতির ওপর বড় ধরনের মুসিবত নাযিল হবার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। সূরা রা’আদে বলা হয়েছেঃ
(وَلاَيَزَ الُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْ اتُصِيْبُهُمْ بِمَا صَنَعُُواقَارِعَةٌ )
“যারা কুফরী করেছে তাদের ওপর তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে কোন না কোন বিপদ নাযিল হতে থাকে।” ( ৩১ আয়াত ) কিন্তু এখানে “আল কারি’আহ” শব্দটি কিয়ামতের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। আবার সূরা আল হা-ক্কায় কিয়ামতকে এই শব্দটি দিয়েই চিহ্নিত করা হয়েছে। ( আয়াত ৪ ) এখানে একথাটিও সামনে রাখতে হবে যে, এখানে কিয়ামতের প্রথম পর্যায় থেকে নিয়ে শেষ পর্যায় পর্যন্ত পুরো আখেরাতের আলোচনা একসাথে করা হচ্ছে।
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-2
مَا الْقَارِعَةُۚ
কী সেই মহাদুর্ঘটনা?
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-3
وَ مَاۤ اَدْرٰىكَ مَا الْقَارِعَةُؕ
তুমি কি জানো সেই মহাদুর্ঘটনাটি কি?
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-4
یَوْمَ یَكُوْنُ النَّاسُ كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوْثِۙ
সেদিন যখন লোকেরা ছড়িয়ে থাকা পতঙ্গের মতো
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-5
টিকা নং:2,
وَ تَكُوْنُ الْجِبَالُ كَالْعِهْنِ الْمَنْفُوْشِؕ
এবং পাহাড়গুলো রং বেরঙের ধূনা পশমের মতো হবে।২
তাফসীর :
তাফহীমুল কুরআন:
টিকা:২) এ পর্যন্ত কিয়ামতের প্রথম পর্যায়ের আলোচনা চলেছে। অর্থাৎ যখন মহাদুর্ঘটনা ঘটে যাবে। আর এর ফলে সারা দুনিয়ার ব্যবস্থাপনা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে, লোকেরা আতংকগ্রস্ত হয়ে এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতে থাকবে যেমন আলোর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া পতঙ্গরা চারদিকে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। পাহাড়গুলো রং বেরঙের ধূনা পশমের মতো উড়তে থাকবে। পাহাড়গুলোর রং বিভিন্ন হওয়ার কারণে আসলে তাদেরকে রং বেরঙের পশমের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-6
টিকা নং:3,
فَاَمَّا مَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِیْنُهٗۙ
তারপর৩ যার পাল্লা ভারী হবে
তাফসীর :
তাফহীমুল কুরআন:
টিকা:৩) এখান থেকে কেয়ামতের দ্বিতীয় পর্যায় আলোচনা শুরু হয়েছে। লোকেরা পুনর্বার জীবিত হয়ে আল্লাহর আদালতে হাযির হবার পর থেকে এই পর্যায়টি শুরু।
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-7
فَهُوَ فِیْ عِیْشَةٍ رَّاضِیَةٍؕ
সে মনের মতো সুখী জীবন লাভ করবে
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-8
টিকা নং:4,
وَ اَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَازِیْنُهٗۙ
আর যার পাল্লা হালকা হবে৪
তাফসীর :
তাফহীমুল কুরআন:
টিকা:৪) মূলে মাওয়াযীন (مَوَازِيۡن ) ব্যবহার করা হয়েছে। এ শব্দটি মাওযূন (مَوْزُوْنَ ) এর বহুবচন হতে পারে। আবার মীযান (مِيْزَانَ ) এরও বহুবচন হতে পারে। যদি এটি মাওযুনের বহুবচন হয় তাহলে “মাওয়াযীন” অর্থ হবে এমন ধরনের কর্মকাণ্ড, আল্লাহর দৃষ্টিতে যার কোন ওজন আছে এবং যা তাঁর কাছে কোন ধরনের মর্যাদা লাভের যোগ্যতা রাখে। আর যদি একে মীযানের বহুবচন গণ্য করা হয় তাহলে মাওয়াযীন অর্থ হবে দাঁড়িপাল্লার পাল্লা। প্রথম অবস্থায় মাওয়াযীনের ভারী বা হালকা হবার মানে হবে অসৎকর্মের মোকাবিলায় সৎকর্মের ভারী বা হালকা হওয়া। কারণ আল্লাহর দৃষ্টিতে কেবলমাত্র সৎকাজই ভারী ও মূল্যবান। দ্বিতীয় অবস্থায় মাওয়াযীনের ভারী হবার মানে হয় মহান আল্লাহর আদালতে নেকীর পাল্লা পাপের পাল্লার তুলনায় বেশী ভারী হওয়া। আর এর হালকা হবার মানে হয় নেকীর পাল্লা পাপের পাল্লার তুলনায় হালকা হওয়া। এছাড়া আরবী ভাষায় মীযান শব্দ ওজন অর্থেও ব্যবহৃত হয়। আর এই অর্থের দৃষ্টিতে ওজনের ভারী ও হালকা হবার মানে হয় নেকীর ওজন ভারী বা হালকা হওয়া। যাহোক মাওয়াযীন শব্দটি মাওযূন, মীযান বা ওজন যে কোন অর্থেই ব্যবহার করা হোক না কেন সব অবস্থায় প্রতিপাদ্য একই থাকে এবং সেটি হচ্ছেঃ মানুষ আমলের যে পুঁজি নিয়ে আল্লাহর আদালতে আসবে তা ভারী না হালকা অথবা মানুষের নেকী তার পাপের চেয়ে ওজনে বেশী না কম এরই ভিত্তিতে সেখানে ফায়সালা অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়টি কুরআনের বিভিন্ন স্থানে উল্লেখিত হয়েছে। সেগুলো সব সামনে রাখলে এর অর্থ পুরোপুরি অনুধাবন করা সম্ভব হবে। সূরা আ’রাফে বলা হয়েছেঃ “আর ওজন হবে সেদিন সত্য। তারপর যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে। আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।” ( ৮-৯ আয়াত ) সূরা কাহাফে বলা হয়েছেঃ “হে নবী! এই লোকদেরকে বলে দাও, আমি কি তোমাদের জানাবো নিজেদের আমলের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী ব্যর্থ কারা? তারাই ব্যর্থ যাদের দুনিয়ার জীবনে সমস্ত কর্মকাণ্ড সত্য সঠিক পথ থেকে বিচ্যূত থেকেছে এবং যারা মনে করতে থেকেছে, তারা সবকিছু ঠিক করে যাচ্ছে। এই লোকেরাই তাদের রবের আয়াত মানতে অস্বীকার করেছে এবং তাঁর সামনে হাযির হওয়ার বিষয়টি বিশ্বাস করেনি। তাই তাদের সমস্ত আমল নষ্ট হয়ে গেছে। কিয়ামতের দিন আমি তাদের কোন ওজন দেবো না।” ( ১০৪-১০৫ আয়াত) সূরা আম্বিয়ায় বলা হয়েছেঃ “কিয়ামতের দিন আমি যথাযথ ওজন করার দাঁড়িপাল্লা রেখে দেবো। তারপর কারো ওপর অণু পরিমাণও জুলুম হবে না। যার সরিষার দানার পরিমাণও কোন কাজ থাকবে তাও আমি সামনে আনবো এবং হিসেব করার জন্য আমি যথেষ্ট।” ( ৪৭ আয়াত ) এই আয়াতগুলো থেকে জানা যায়, কুফরী করা এবং সত্যকে অস্বীকার করা বৃহত্তম অসৎকাজের অন্তর্ভুক্ত। গুনাহের পাল্লা তাতে অনিবার্যভাবে ভারী হয়ে যায়। আর কাফেরের এমন কোন নেকী হবে না নেকীর পাল্লায় যার কোন ওজন ধরা পড়ে এবং তার ফলে পাল্লা ঝুঁকে পড়তে পারে। তবে মু’মিনের পাল্লায় ঈমানের ওজনও হবে এবং এই সঙ্গে সে দুনিয়ায় যেসব নেকী করেছে সেগুলোর ওজনও হবে। অন্যদিকে তার সমস্ত গোনাহ গোনাহর পাল্লায় রেখে দেয়া হবে। তারপর নেকীর পাল্লা ঝুঁকে আছে না গোনাহর পাল্লা ঝুঁকে আছে, তা দেখা হবে।
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-9
টিকা নং:5,
فَاُمُّهٗ هَاوِیَةٌؕ
তার আবাস হবে গভীর খাদ।৫
তাফসীর :
তাফহীমুল কুরআন:
টিকা:৫) মূল শব্দ হচ্ছে (اُمُّهٗ هَاوِيَةٌؕ ) “তার মা হবে হাবিয়া।” হাবিয়া (اويَةٌؕ ) শব্দটি এসেছে হাওয়া (هَاوىْ ) থেকে। এর অর্থ হচ্ছে উঁচু জায়গা থেকে নীচুতে পড়ে যাওয়া। আর যে গভীর গর্তে কোন জিনিস পড়ে যায় তাকে হাবিয়া বলে। জাহান্নামকে হাবিয়া বলার কারণ হচ্ছে এই যে, জাহান্নাম হবে অত্যন্ত গভীর এবং জাহান্নামবাসীদেরকে তার মধ্যে ওপর থেকে নিক্ষেপ করা হবে। আর তার মা হবে জাহান্নাম একথা বলার অর্থ হচ্ছে এই যে, মায়ের কোল যেমন শিশুর অবস্থান হয় তেমনি জাহান্নামবাসীদের জন্য জাহান্নাম ছাড়া আর কোন অবস্থান হবে না।
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-10
وَ مَاۤ اَدْرٰىكَ مَاهِیَهْؕ
আর তুমি কি জানো সেটি কি?
সুরা: আল-ক্বারিয়াহ
আয়াত নং :-11
টিকা নং:6,
نَارٌ حَامِیَةٌ۠
(সেটি) জ্বলন্ত আগুন। ৬
তাফসীর :
তাফহীমুল কুরআন:
টিকা:৬) অর্থাৎ সেটি শুধুমাত্র একটি গভীর খাদ হবে না বরং জ্বলন্ত আগুনেও পরিপূর্ণ হবে।
ফী জিলালিল কুরআন:
ভীতির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করা হয়েছে ‘কারিয়া’ কি? কেননা ব্যাপারটি এখানে ভীতিময়, রহস্যময় ও কৌতুহলোদ্দীপক । পুনরায় জবাব দেয়া হয়েছে অজ্ঞতা মিশ্রিত প্রশ্ন দ্বারা । ‘কারিয়া’ কি জিনিস, তা কি তুমি জানো । ‘ বস্তুত, তা কল্পনারও উর্ধে, বোধশক্তিরও আয়ত্তের বাইরে । এরপর জবাব দেয়া হয়েছে কেয়ামতে যা ঘটবে তার বর্ণনা দিয়ে, কেয়ামতের প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করে নয়। কেননা আগেই বলেছি যে, তার প্রকৃত রহস্য কল্পনা ও বোধশক্তি উভয়েরই আওতার বাইরে । ‘যেদিন মানুষ বিক্ষিপ্ত পতংগের ন্যায় এবং পাহাড় পর্বত ধুনা পশমের ন্যায় হয়ে যাবে। এটা হচ্ছে কারিয়া, তথা কেয়ামতের প্রথম দৃশ্য । এ দৃশ্য মনে আলোর ঝলকানি দেয় এবং স্নায়ুগুলোতে শিহরণ জাগায়। এ দৃশ্যটি দেখে শ্রোতার মনে হতে থাকে যেন পৃথিবীতে এ যাবত সে যতগুলো জিনিসকে আঁকড়ে ধরেছিলো, তা সব ধুলোবালির মতো উড়ে যাচ্ছে। এরপর উপসংহারে সকল মানুষের প্রতি ইংগিত করে বলা হয়েছে, ‘যার দাড়িপাল্লা ভারী হবে, সে সন্তোষজনক জীবনে থাকবে, আর যার দাড়িপাল্লা হালকা হবে, তার মা হবে ‘হাবিয়া’। তুমি জি জানো হাবিয়া কি? তা তো জ্বলন্ত আগুন ।’দাড়িপাল্লা ভারী হওয়া ও হালকা হওয়া এমন কতক মূল্যবোধের সন্ধান দেয়, যা আল্লাহর কাছে গুরুত্বপূর্ণ এবং যা তার কাছে গুরুত্বহীন । আর এটাই এর মোটামুটি অর্থ । আর সম্ভবত আল্লাহও এটাই বুঝিয়েছেন প্রকৃত ব্যাপার অবশ্য তিনিই ভালো জানেন । যাহোক, এইসব শব্দের অর্থ সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া কোরআনের প্রতি যুলুমের শামিল ৷ এটা এমন এক অর্থহীন কাজ, যা পবিত্র কোরআন ও ইসলামকে যথাযথ গুরুত্ব না দেয়া থেকেই উদ্ভুত । ‘যার দাড়িপাল্লা ভারী হবে’ অর্থাৎ আল্লাহর বিবেচনায় ও মূল্যায়নে ভারী হবে, ‘সে থাকবে আনন্দিত জীবনে ।’ এর কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। এ দ্বারা চেতনায় সন্তুষ্টির ভাবমূর্তি অংকিত করা হচ্ছে সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক নিয়ামত। ‘আর যার দাড়িপাল্লা হালকা হবে,’ অর্থাৎ আল্লাহর বিবেচনায় হালকা হবে, ‘তার মা হবে হাবিয়া’, মা হয়ে থাকে শিশুর আশ্রয়স্থল। আর কেয়ামতের দিন কাফেরদের আশ্রয়স্থল হবে হাবিয়া নামক দোযখ । বস্তুত, বাচনভংগিতে সুস্পষ্ট অভিনবত্ব ও চমৎকার সমন্বয় বিদ্যমান । অবশ্য এতে কিছু অস্পষ্টতাও আছে, যা এর ব্যাপকতাকে হৃদয়ংগম করার পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং ঈপ্সিত প্রভাবের গভীরতাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। ‘তুমি কি জানো হাবিয়া কি?’ অজ্ঞতাসূচক ও ভীতি সঞ্চারক প্রশ্ন । কোরআনে এ ধরনের প্রশ্ন সুপরিচিত । এর উদ্দেশ্য হলো, সংশ্লিষ্ট বিষয়ক কল্পনা ও বোধগম্যতার সীমানা থেকে বের করে আনা । এরপর সমাপনী সূচক জবাব আসে -‘জ্বলন্ত আগুন ।’ এই হচ্ছে সেই ব্যক্তির মা, যার দাড়িপাল্লা হালকা হয়ে যাবে। এরই কোলে তাকে আশ্রয় নিতে হবে। মায়ের কাছে সাধারণত, আরাম ও নিরাপত্তা পাওয়া যায়। কিন্তু এই মায়ের কাছে কী পাওয়া যাবে? কী আশা করা যায় এই জ্বলন্ত আগুন হাবিয়ার কাছে? – এটা আসলে নির্মম সত্যকে বুঝানোর জন্যে ব্যবহৃত এক ধরনের নাটকীয় বাচনভংগী মাত্র ।
# তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ:-
নামকরণ :
(اَلْقَارِعَةُ) আল কারি‘আহ কিয়ামতের অন্যতম একটি নাম। যেমন এর পূর্বে কিয়ামতের বিভিন্ন নাম উল্লেখ করা হয়েছে
الواقعة ، الساعة ، الطامة ، الحاقة
ইত্যাদি। সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত শব্দ থেকেই এ নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে।
اَلْقَارِعَةُ শব্দের অর্থ: করাঘাতকারী, ঠনঠনকারী ও মহাপ্রলয় ইত্যাদি। কিয়ামতকে এ নামে নামকরণ করার কারণ হলো: কিয়ামত মানুষের হৃদয়কে জাগ্রত করে তুলবে এবং আল্লাহ তা‘আলার দুশমনদেরকে আযাব সম্পর্কে অবহিত করবে। যেমন দরজায় করাঘাত করে গৃহবাসীকে সতর্ক করা হয়। সূরায় কিয়ামতের কঠিন অবস্থা বর্ণনার পাশাপাশি ভাল ও মন্দ আমল ওজন করে তদানুযায়ী প্রতিদান প্রদান করা হবে, সে সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।
শব্দটি একাধিকবার উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হলো : এ সম্পর্কে গুরুত্ব প্রদান করা। কেননা কিয়ামতের দিন ভয়ংকর কম্পন ও প্রচণ্ড শব্দ প্রাণীজগতের কানে ও হৃদয়ে তীব্র আঘাত করবে ও ভয়ে হৃৎকম্পন শুরু হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَيَوْمَ يُنْفَخُ فِي الصُّوْرِ فَفَزِعَ مَنْ فِي السَّمٰوٰتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ إِلَّا مَنْ شَا۬ءَ اللّٰهُ ط وَكُلٌّ أَتَوْهُ دٰخِرِيْنَ)
“এবং সেদিন শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেওয়া হবে, সেদিন আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সকলেই ভীত-বিহ্বল হয়ে পড়বে, তবে আল্লাহ যাদেরকে চাইবেন তারা ব্যতীত এবং সকলেই তার নিকট আসবে বিনীত অবস্থায়।” (সূরা নামল ২৭: ৮৭)
الْفَرَاشِ বলতে ঐসব কীট-পতঙ্গকে বুঝানো হয়েছে যা আগুনের চারপাশে ছুটাছুটি করে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(خُشَّعًا أَبْصَارُهُمْ يَخْرُجُوْنَ مِنَ الْأَجْدَاثِ كَأَنَّهُمْ جَرَادٌ مُّنْتَشِرٌ)
“অপমানে শঙ্কিত নয়নে সেদিন তারা কবরসমূহ হতে বের হবে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের ন্যায়” (সূরা কামার ৫৪: ৭)
مَبْثُوْثِ অর্থ : বিক্ষিপ্ত, অর্থাৎ কিয়ামতের দিন মানুষ বিক্ষিপ্ত কীটপতঙ্গের ন্যায় ছুটাছুটি করতে থাকবে।
عِهْنِ এ সম্পর্কে সূরা হাক্কাতে আলোচনা করা হয়েছে।
(ثَقُلَتْ مَوَازِيْنُه)
অর্থাৎ যার নেকীর পাল্লা পাপের পাল্লার ওপর ভারী হবে তার জন্য থাকবে আড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাপন। আর যার নেকীর পাল্লা পাপের পাল্লার তুলনায় হালকা হবে তার জন্য উত্তপ্ত আগুন বা জাহান্নাম যা হাবিয়াহ নামে পরিচিত। মানুষের আমল কিয়ামতের দিন ওজন করা হবেÑএটা সত্য। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَالْوَزْنُ يَوْمَئِذِنِ الْحَقُّ ج فَمَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِيْنُه۫ فَأُولٰ۬ئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ وَمَنْ خَفَّتْ مَوَازِيْنُه۫ فَأُولٰ۬ئِكَ الَّذِيْنَ خَسِرُوْآ أَنْفُسَهُمْ بِمَا كَانُوْا بِاٰيٰتِنَا يَظْلِمُوْنَ)
“সেদিন সঠিক ওজন করা হবে। যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে। আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই তাদের নিজেদের ক্ষতি করেছে, যেহেতু তারা আমার নিদর্শসনমূহকে প্রত্যাখ্যান করত।” (সূরা আ‘রাফ ৭: ৮-৯) কিন্তু কিভাবে হবে তা আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন। এটা সম্পূর্ণ গায়েবী বিষয়, এর প্রতি আমাদের ঈমান রাখতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. পুনরুত্থান ও আমলের প্রতিদানের প্রমাণ পেলাম।
২. কিয়ামতের ভয়াবহতা বর্ণনা করে মানুষকে আমলের ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে।
৩. আমল ওজন করা হবে। এমনকি আমলকারীকেও ওজন করা হবে।
৪. কিয়ামতের দিন মানুষ দুটি দলে বিভক্ত হবে। এক দল জান্নাতী আর অন্য দল জাহান্নামী।
# তাফসীরে ইবনে কাছীর:-
১-১১ নং আয়াতের তাফসীর
(আরবি) শব্দটিও কিয়ামতের একটি নাম। যেমন (আরবি) এবং (আরবি) এগুলোও কিয়ামতের নাম। কিয়ামতের বিভীষিকা এবং ভয়াবহতা বুঝানোর জন্যেই আল্লাহ তা’আলা প্রশ্ন করেছেন যে, সেটা কি? আল্লাহ তা’আলার জানিয়ে দেয়া ছাড়া সেটা জানা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তারপর আল্লাহ তা’আলা নিজেই বলেনঃ সেদিন মানুষ বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের ন্যায় হয়ে যাবে এবং এদিক ওদিক ছুটাছুটি করবে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “তারা যেন ছড়িয়ে থাকা পঙ্গপাল।” (৫৪:৭)
তারপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলা বলেনঃ পাহাড়সমূহ ধূণিত রঙিন পশমের ন্যায় হয়ে যাবে। অনন্তর যার ঈমান ও আমলের পাল্লা ভারী হবে সে তো বাসনারূপ সুখে অবস্থান করবে। আর যার ঈমান ও আমলের পাল্লা হালকা হবে সে জাহান্নামের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তাকে উল্টোমুখে জাহান্নামে। নিক্ষেপ করা হবে।
(আরবি) এর অর্থ হলো দেমাগ অর্থাৎ সে মুখ থুবড়ে হাবিয়াহ্ জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। এ অর্থও হতে পারে যে, ফেরেশতা জাহান্নামে তার মাথায় আযাবের বৃষ্টি বর্ষণ করবে। আবার অর্থ এটাও হতে পারে যে, তার আসল ঠিকানা ঐ জায়গা যেখানে তার অবস্থানস্থল নির্ধারণ করা হয়েছে ঐ জায়গা হলো জাহান্নাম।
হাবিয়াহ্ জাহান্নামের একটি নাম। এ জন্যেই এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আল্লাহ পাক স্বীয় নবী (সঃ) কে বলেনঃ সেটা কি তা তোমার জানা আছে? সেটা এক জ্বলন্ত অগ্নি।
হযরত আশ’আস ইবনে আবদিল্লাহ (রঃ) বলেন যে, মুমিনের মৃত্যুর পর তার রূহ ঈমানদারদের রূহের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ফেরেশতা ঐ সব রূহকে বলেনঃ তোমাদের ভাই এর মনোরঞ্জন ও শান্তির ব্যবস্থা করো। পৃথিবীতে সে অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করেছে।” ঐ সন্ধ্রহসমূহ তখন জিজ্ঞেস করেঃ “অমুকের খবর কি?” সে কেমন আছে?” নবাগত রূহ তখন উত্তর দেয়ঃ সে তো মারা গেছে। তোমাদের কাছে সে আসেনি? তখন রূহসমূহ বুঝে নেয় এবং বলেঃ রাখো তার কথা, সে তার মা হাবিয়ায় পৌঁছেছে।”
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ সেটা এক জ্বলন্ত অগ্নি। ঐ আগুন খুবই দাউদাউ করে জ্বলে ক্ষণিকের মধ্যে ভস্মীভূত করে দেয়।
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের এ আগুনের তেজ জাহান্নামের আগুনের তেজের মাত্র সত্তর ভাগের এক ভাগ।” জনগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ“হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! ধ্বংস করার জন্যে তো এ আগুনই যথেষ্ট?” উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “তা ঠিক কিন্তু জাহান্নামের আগুন এর চেয়ে উনসত্তর গুণ বেশী তেজস্বী।” সহীহ বুখারীতে এ হাদীস রয়েছে এবং তাতে আরো রয়েছেঃ “ওর প্রত্যেক অংশ এই আগুনের মত।” মুসনাদে আহমাদেও এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। মুসনাদের একটি হাদীসে এটাও রয়েছে যে, দুনিয়ার এ আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের এক ভাগ হওয়া সত্ত্বেও সমুদ্রের পানিতে দু’বার ধুয়ে দুনিয়ায় পাঠানো হয়েছে। এরূপ না করা হলে দুনিয়ার আগুন দ্বারা উপকার গ্রহণ করা সম্ভব হতো না। অন এক হাদীসে রয়েছে যে, দুনিয়ার এ আগুনের তেজ জাহান্নামের আগুনের তেজের একশ’ ভাগের এক ভাগ মাত্র।
ইমাম আবুল কাসিম তিবরানীর (রঃ) হাদীস গ্রন্থে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের এ আগুন এবং জাহান্নামের আগুনের মধ্যে কি পার্থক্য আছে তা কি তোমরা জান? তোমাদের এ আগুনের ধোঁয়ার চেয়েও সত্তর গুণ বেশী কালো জাহান্নামের আগুন!” হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “জাহান্নামের আগুনকে এক হাজার বছর পর্যন্ত প্রজ্জ্বলিত করা হয়। ফলে ঐ আগুন লাল হয়ে যায়। তারপর আরো এক হাজার বছর ধরে জ্বাল দেয়া হয়। এতে ঐ আগুন সাদা বর্ণ ধারন করে। তারপর আরো এক হাজার বছর পর্যন্ত জ্বাল দেয়ায় ঐ আগুন কালো হয়ে যায়। বর্তমানে ঐ আগুন অত্যন্ত কালো ও অন্ধকারাচ্ছন্ন।” (এ হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (রঃ) ও ইমাম ইবনে মাজাহ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
মুসনাদে আহমাদে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যাকে সবচেয়ে সহজ ও হালকা শাস্তি দেয়া হবে তাকে এক জোড়া আগুনের জুতা পরিয়ে দেয়া হবে। এর ফলে তার মাথার মগজ টগবগ করে ফুটতে থাকবে।”
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “জাহান্নাম তার প্রতিপালকের নিকট অভিযোগ করলোঃ “হে আমার প্রতিপালক। আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলছে।” আল্লাহ তাআলা তখন তাকে দুটি নিঃশ্বাস ছাড়ার অনুমতি দিলেন। একটি শীতকালে এবং অন্যটি গ্রীষ্মকালে। প্রচণ্ড শীত যে তোমরা অনুভব কর তা হলো জাহান্নামের শীতল নিঃশ্বাস, আর গ্রীষ্মের যে প্রচণ্ড গরম তোমরা অনুভব কর সেটা জাহান্নামের গরম নিঃশ্বাসের প্রতিক্রিয়া।” অন্য একটি হাদীসে রয়েছেঃ “প্রচণ্ড গরম পড়া শুরু হলে (গরমের প্রখরতা) কিছুটা ঠাণ্ডা হওয়ার পর নামায পড়ো। কেননা, গরমের প্রখরতা জাহান্নামের তেজস্বিতার কারণে হয়ে থাকে।”
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#1214)
[ # What is the Striking Calamity?:-]
Surah.101: Al-Quaari’a
Para:30 Ayat:- 1-11
www.motaher21.net
101:1
اَلۡقَارِعَۃُ ۙ﴿۱﴾
The Striking Calamity –
Allah says:
الْقَارِعَةُ
مَا الْقَارِعَةُ
101:2
مَا الۡقَارِعَۃُ ۚ﴿۲﴾
What is the Striking Calamity?
Al-Qari`ah.
What is Al-Qari`ah?
Al-Qari`ah is one of the names of the Day of Judgement, like Al-Haqqah, At-Tammah, As-Sakhkhah, Al-Ghashiyah and other names.
Then Allah intensifies concern and fright for it by saying,
وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْقَارِعَةُ
101:3
وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا الۡقَارِعَۃُ ؕ﴿۳﴾
And what can make you know what is the Striking Calamity?
And what will make you know what Al-Qariah is?
Then He explains this by saying,
يَوْمَ يَكُونُ النَّاسُ كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوثِ
101:4
یَوۡمَ یَکُوۡنُ النَّاسُ کَالۡفَرَاشِ الۡمَبۡثُوۡثِ ۙ﴿۴﴾
It is the Day when people will be like moths, dispersed,
It is a Day whereon mankind will be like moths scattered about.
meaning, in their scattering, their dividing, their coming and their going, all due to being bewildered at what is happening to them, they will be like scattered moths.
This is like Allah’s statement,
كَأَنَّهُمْ جَرَادٌ مُّنتَشِرٌ
As if they were locusts spread abroad. (54:7)
Allah said,
وَتَكُونُ الْجِبَالُ كَالْعِهْنِ الْمَنفُوشِ
101:5
وَ تَکُوۡنُ الۡجِبَالُ کَالۡعِہۡنِ الۡمَنۡفُوۡشِ ؕ﴿۵﴾
And the mountains will be like wool, fluffed up.
And the mountains will be like wool, carded.
meaning, they will become like carded wool that has began to wear out (fade away) and be torn apart.
Mujahid, Ikrimah, Sa`id bin Jubayr, Al-Hasan, Qatadah, Ata’ Al-Khurasani, Ad-Dahhak and As-Suddi have all said,
كَالْعِهْنِ
(like wool (`Ihn). “Woolen.”
Then Allah informs about the results received by those who performed the deeds, and the honor and disgrace they will experience based upon their deeds. He says,
فَأَمَّا مَن ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ
101:6
فَاَمَّا مَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُہٗ ۙ﴿۶﴾
Then as for one whose scales are heavy [with good deeds],
Then as for him whose Balance will be heavy.
meaning, his good deeds are more than his bad deeds.
فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَّاضِيَةٍ
101:7
فَہُوَ فِیۡ عِیۡشَۃٍ رَّاضِیَۃٍ ؕ﴿۷﴾
He will be in a pleasant life.
He will live a pleasant life.
meaning, in Paradise.
وَأَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَازِينُهُ
101:8
وَ اَمَّا مَنۡ خَفَّتۡ مَوَازِیۡنُہٗ ۙ﴿۸﴾
But as for one whose scales are light,
But as for him whose Balance will be light.
meaning, his bad deeds are more than his good deeds.
Then Allah says,
فَأُمُّهُ هَاوِيَةٌ
101:9
فَاُمُّہٗ ہَاوِیَۃٌ ؕ﴿۹﴾
His refuge will be an abyss.
His mother will be Hawiyah.
It has been said that this means he will be falling and tumbling headfirst into the fire of Hell, and the expression `his mother’ has been used to refer to his brain (as it is the mother of his head).
A statement similar to this has been reported from Ibn Abbas, Ikrimah, Abu Salih and Qatadah.
Qatadah said,
“He will fall into the Hellfire on his head.”
Abu Salih made a similar statement when he said,
“They will fall into the Fire on their heads.”
It has also been said that it means his mother that he will return to and end up with in the Hereafter will be Hawiyah, which is one of the names of the Hellfire.
Ibn Jarir said,
“Al-Hawiyah is only called his mother because he will have no other abode except for it.”
Ibn Zayd said,
“Al-Hawiyah is the Fire, and it will be his mother and his abode to which he will return, and where he will be settled.”
Then he recited the Ayah,
وَمَأْوَاهُمُ النَّار
(Their abode will be the Fire.) (3:151)
Ibn Abi Hatim said that it has been narrated from Qatadah that he said,
“It is the Fire, and it is their abode.”
Thus, Allah says in explaining the meaning of Al-Hawiyah,
وَمَا أَدْرَاكَ مَا هِيَهْ
101:10
وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا ہِیَہۡ ﴿ؕ۱۰﴾
And what can make you know what that is?
And what will make you know what it is.
Allah’s statement:
نَارٌ حَامِيَةٌ
101:11
نَارٌ حَامِیَۃٌ ﴿٪۱۱﴾
It is a Fire, intensely hot.
A fire Hamiyah!
meaning, extreme heat. It is a heat that is accompanied by a strong flame and fire.
It is narrated from Abu Hurayrah that the Prophet said,
نَارُ بَنِي ادَمَ الَّتِي تُوقِدُونَ جُزْءٌ مِنْ سَبْعِينَ جُزْءًا مِنْ نَارِ جَهَنَّم
The fire of the Children of Adam that you all kindle is one part of the seventy parts of the fire of Hell.
They (the Companions) said, “O Messenger of Allah! Isn’t it sufficient”
He replied,
إِنَّهَا فُضِّلَتْ عَلَيْهَا بِتِسْعَةٍ وَسِتِّينَ جُزْءًا
It is more than it by sixty-nine times.
This has been recorded by Al-Bukhari and Muslim. In some of the wordings he stated,
إِنَّهَا فُضِّلَتْ عَلَيْهَا بِتِسْعَةٍ وَسِتِّينَ جُزْءًا كُلُّهُنَّ مِثْلُ حَرِّهَا
It is more than it by sixty-nine times, each of them is like the heat of it.
It has been narrated in a Hadith that Imam Ahmad recorded from Abu Hurayrah that the Prophet said,
إِنَّ أَهْوَنَ أَهْلِ النَّارِ عَذَابًا مَنْ لَهُ نَعْلَنِ يَغْلِي مِنْهُمَا دِمَاغُه
Verily, the person who will receive the lightest torment of the people of the Hellfire will be a man who will have two sandals that will cause his brain to boil.’
It has been confirmed in the Two Sahihs that the Messenger of Allah said,
اشْتَكَتِ النَّارُ إِلَى رَبِّهَا فَقَالَتْ
يَا رَبِّ أَكَلَ بَعْضِي بَعْضًا
فَأَذِنَ لَهَا بِنَفَسَيْنِ
نَفَسٍ فِي الشِّتَاءِ وَنَفَسٍ فِي الصَّيْفِ
فَأَشَدُّ مَا تَجِدُونَ فِي الشِّتَاءِ مِنْ بَرْدِهَا وَأَشَدُّ مَا تَجِدُونَ فِي الصَّيْفِ مِنْ حَرِّهَا
The Hellfire complained to its Lord and said,
“O Lord! Some parts of me devour other parts of me.”
So He (Allah) permitted it to take two breaths:
– one breath in the winter and
– one breath in the summer.
Thus, the most severe cold that you experience in the winter is from its cold, and the most severe heat that you experience in the summer is from its heat.
In the Two Sahihs it is recorded that he said,
إِذَا اشْتَدَّ الْحَرُّ فَأَبْرِدُوا عَنِ الصَّلَةِ فَإِنَّ شِدَّةَ الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّم
When the heat becomes intense pray the prayer when it cools down, for indeed the intense heat is from the breath of Hell.
This is the end of the Tafsir of Surah Al-Qari`ah, and all praise and thanks are due to Allah
For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran