أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/١٣٥)-৩৩৭
www.motaher21.net
وَمَا لَكُمْ لَا تُقٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ اللَّه
তোমাদের কী হল যে? তোমরা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করছ না!
What is wrong with you? You figh not in the cause of Allah!
সুরা: আন-নিসা
আয়াত নং :-৭৫-৭৬
وَ مَا لَكُمْ لَا تُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ الْمُسْتَضْعَفِیْنَ مِنَ الرِّجَالِ وَ النِّسَآءِ وَ الْوِلْدَانِ الَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَاۤ اَخْرِجْنَا مِنْ هٰذِهِ الْقَرْیَةِ الظَّالِمِ اَهْلُهَاۚ وَ اجْعَلْ لَّنَا مِنْ لَّدُنْكَ وَلِیًّا وَّ اجْعَلْ لَّنَا مِنْ لَّدُنْكَ نَصِیْرًاؕ
তোমাদের কী হলো, তোমরা আল্লাহর পথে অসহায় নরনারী ও শিশুদের জন্য লড়বে না, যারা দুর্বলতার কারণে নির্যাতিত হচ্ছে? তারা ফরিয়াদ করছে, হে আমাদের রব! এই জনপদ থেকে আমাদের বের করে নিয়ে যাও, যার অধিবাসীরা জালেম এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের কোন বন্ধু, অভিভাবক ও সাহায্যকারী তৈরী করে দাও।
আয়াত নং :-৭৬
اَلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِۚ وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ الطَّاغُوْتِ فَقَاتِلُوْۤا اَوْلِیَآءَ الشَّیْطٰنِۚ اِنَّ كَیْدَ الشَّیْطٰنِ كَانَ ضَعِیْفًا۠
যারা ঈমানের পথ অবলম্বন করেছে তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে। আর যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে তারা লড়াই করে তাগুতের পথে। কাজেই শয়তানের সহযোগীদের সাথে লড়ো এবং নিশ্চিত জেনে রাখো, শয়তানের কৌশল আসলে নিতান্তই দুর্বল।
৭৫-৭৬ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ তা’আলা মুমিনদেরকে তাঁর পথে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন। তিনি তাদেরকে বলছেন- ‘গুটি কয়েক দুর্বল ও অসহায় লোক মক্কায় রয়েগেছে। যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। মক্কায় অবস্থান তাদের জন্যে অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তাদের উপর কাফিরেরা নানা প্রকার উৎপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে মুক্ত করে আন। তারা আল্লাহ তা’আলার নিকট প্রার্থনা জানাচ্ছে- “হে আল্লাহ! আমাদেরকে আপনি এ অত্যাচারীদের গ্রাম হতে অর্থাৎ মক্কা হতে বহির্গত করুন। মক্কাকে নিম্নের আয়াতেও গ্রাম বলা হয়েছে- (আরবী) অর্থাৎ ‘বহু গ্রাম তোমার ঐ গ্রাম অপেক্ষা বেশী শক্তিশালী ছিল যে গ্রাম অর্থাৎ গ্রামবাসী তোমাকে বের করে দিয়েছে।'(৪৭:১৩) ঐ দুর্বল লোকেরা মক্কার কাফিরদের অত্যাচারের অভিযোগ পেশ করছে এবং সাথে সাথে স্বীয় প্রার্থনায় বলছে- “হে আমাদের প্রভু! আপনার পক্ষ হতে আপনি আমাদের জন্যে পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী নির্বাচন করুন।
সহীহ বুখারী শরীফে হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি এবং আমার আম্মাও ঐ দুর্বলদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) (আরবী)-এ অংশটুকু পাঠ করে বলেন, ‘আমি ও আমার আম্মা ঐ লোকদের অন্তর্গত ছিলাম যাদেরকে আল্লাহ তাআলা দুর্বল ও অসহায় করে রেখেছিলেন।
এরপর আল্লাহ পাক বলেনঃ ‘মুমিনগণ আল্লাহ তা’আলার আদেশ পালন ও তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে থাকে। পক্ষান্তরে কাফিরেরা শয়তানের আনুগত্যের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে। সুতরাং মুসলমানদের উচিত যে, তারা যেন আল্লাহ তা’আলার শত্রু ও শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে প্রাণপণে যুদ্ধ করে এবং বিশ্বাস রাখে যে, শয়তানের কলাকৌশল সম্পূর্ণরূপে বৃথায় পর্যবসিত হবে।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
টিকা:১:-
এখানে এমন সব মজলুম শিশু, নারী ও পুরুষদের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, যারা মক্কায় ও আরবের অন্যান্য গোত্রের মধ্যে ইসলাম গ্রহণ করেছিল কিন্তু তাদের হিজরত করার শক্তি ছিল না এবং নিজেদেরকে কাফেরদের জুলুম-নির্যাতন থেকে রক্ষা করার ক্ষমতাও ছিল না। এদের ওপর বিভিন্ন প্রকার জুলুম চালানো হচ্ছিল। কেউ এসে তাদেরকে এই জুলুমের সাগর থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবে, এই ছিল তাদের দোয়া ও প্রত্যাশা।
টিকা: ২:-
এটি আল্লাহর একটি দ্ব্যর্থহীন ফায়সালা। আল্লাহর পৃথিবীতে একমাত্র আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে লড়াই করা হচ্ছে ঈমানদারদের কাজ। যথার্থ ও সত্যিকার মু’মিন এই কাজ থেকে কখনো বিরত থাকবে না। আর আল্লাহর পৃথিবীতে আল্লাহ বিরোধী ও আল্লাহদ্রোহীদের রাজত্ব ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য তাগুতের পথে লড়াই করা হচ্ছে কাফেরদের কাজ। কোন ঈমানদার ব্যক্তি এ কাজ করতে পারে না।
টিকা: ৩:-
অর্থাৎ আপাত দৃষ্টিতে শয়তান ও তার সাথীরা বিরাট প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে আসে এবং জবরদস্ত কৌশল অবলম্বন করে কিন্তু তাদের প্রস্তুতি ও কৌশল দেখে ঈমানদারদের ভীত হওয়া উচিত নয়, অবশ্যি তাদের সকল প্রস্তুতি ও কৌশল ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
তাফসীরে আবুবকর যাকারিয়া বলেছেন:-
[১] মক্কা নগরীতে এমন কিছু দুর্বল মুসলিম রয়ে গিয়েছিলেন, যারা দৈহিক দুর্বলতা এবং আর্থিক দৈন্যের কারণে হিজরত করতে পারছিলেন না। পরে কাফেররাও তাদেরকে হিজরত করতে বাঁধাদান করেছিল এবং বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতে আরম্ভ করেছিল, যাতে তারা ইসলাম ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। যেমন ইবন আব্বাস ও তাঁর মাতা, সালামা ইবন হিশাম, ওলীদ ইবন ওলীদ, আবু জান্দাল ইবন সাহল্ প্রমূখ। এসব সাহাবী নিজেদের ঈমানী বলিষ্ঠতার দরুন কাফেরদের অসহনীয় উৎপীড়ন সহ্য করেও ঈমানের উপর স্থির থাকেন। অবশ্য তাঁরা এসব অত্যাচার উৎপীড়ন থেকে অব্যাহতি লাভের জন্য বরাবরই আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের দরবারে দো’আ করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ তা’আলা তাঁদের সে প্রার্থনা মঞ্জুর করে নেন এবং মুসলিমদেরকে নির্দেশ দেন যাতে তাঁরা জিহাদের মাধ্যমে সেই নিপীড়িতদেরকে কাফেরদের অত্যাচার থেকে মুক্ত করেন। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, ‘আমি ও আমার মা অসহায়দের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম’ [বুখারী ৪৫৮৭]
এ আয়াতে মুমিনরা আল্লাহ তা’আলার দরবারে দুটি বিষয়ে দোআ করেছিলেন। একটি হলো এই যে, আমাদিগকে এই(মক্কা) নগরী থেকে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করুন এবং দ্বিতীয়টি হলো, আমাদের জন্য কোন সহায় বা সাহায্যকারী পাঠান। আল্লাহ তাদের দু’টি প্রার্থনাই কবুল করে নিয়েছিলেন। তা এভাবে যে, কিছু লোককে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, যাতে তাঁদের প্রথম প্রার্থনাটি পূরণ হয়েছিল। অবশ্য কোন কোন লোক সেখানেই রয়ে যান এবং বিজয়ের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আত্তাব ইবন উসায়দ রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে সেসব লোকের মুতাওয়াল্লী নিযুক্ত করেন। অতঃপর তিনি এসব উৎপীড়িতদেরকে অত্যাচারীদের উৎপীড়ন-অত্যাচার থেকে মুক্ত করেন। আর এভাবেই পূর্ণ হয় তাদের দ্বিতীয় প্রার্থনাটি। আয়াতে বলা হয়েছে যে, জিহাদের নির্দেশ দানের পিছনে একটি কারণ ছিল সে সমস্ত অসহায় দুর্বল নারী-পুরুষের প্রার্থনা। মুসলিমগণকে জিহাদ করার নির্দেশ দানের মাধ্যমে সে প্রার্থনা মঞ্জুরীর কথাই ঘোষণা করা হয়েছে।
[২] আয়াতে বলা হয়েছে যে, যারা মুমিন বা ঈমানদার তারা জিহাদ করে আল্লাহর পথে। আর যারা কাফের তারা যুদ্ধ করে শয়তানের পথে। সুতরাং পরিপূর্ণ কোন মুমিন ব্যক্তি যখন যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়, তখন তার সামনেই এ উদ্দেশ্য বিদ্যমান থাকে যে, আমি আল্লাহর পথেই এ কাজ করছি। তার নির্দেশ ও নিষেধকে বাস্তবায়নই আমার জীবনের লক্ষ্য। কিন্তু এর বিপরীতে যারা কাফের তাদের বাসনা থাকে কুফরের প্রচলন, কুফরের বিজয় এবং পৈচাশিক শক্তির শাসন প্রতিষ্ঠা করা, যাতে করে বিশ্বময় কুফরী ও শির্কী বিস্তার লাভ করতে পারে। আর কুফরী ও শির্কী যেহেতু শয়তানের পথ, সুতরাং কাফেররা শয়তানের কাজেই সাহায্য করে থাকে।
[৩] আয়াতে বলা হয়েছে যে, শয়তানের চক্রান্ত ও কলাকৌশল হয় দুর্বল। ফলে তা মুমিনের সামান্যতমও ক্ষতি করতে পারে না। অতএব মুসলিমগণকে শয়তানের বন্ধুবৰ্গ অর্থাৎ কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে কোন রকম দ্বিধা করা উচিত নয়। তার কারণ, তাদের সাহায্যকারী হলেন স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা। পক্ষান্তরে শয়তানের কলাকৌশল কাফেরদের কিছুই মঙ্গল সাধন করবে না। এ আয়াতে শয়তানের কলাকৌশলকে যে দুর্বল বলে অভিহিত করা হয়েছে, সেজন্য আয়াতের মাধ্যমেই দু’টি শর্তের বিষয়ও প্রতীয়মান হয়। (এক) যে লোকের বিরুদ্ধে শয়তান কলাকৌশল অবলম্বন করবে, তাকে মুসলিম হতে হবে এবং (দুই) সে যে কাজে নিয়োজিত থাকবে, তা একান্তভাবেই আল্লাহর জন্য হতে হবে; কোন পার্থিব বস্তুর আকাঙ্ক্ষা কিংবা আত্মস্বার্থ প্রণোদিত হবে না। এ দু’টি শর্তের যেকোন একটির অবর্তমানে শয়তানের কলাকৌশল দুর্বল হয়ে পড়া অবশ্যম্ভাবী নয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] ‘অত্যাচারী অধিবাসীদের এই নগর’ বলতে (অবতীর্ণ হওয়ার দিক দিয়ে) মক্কাকে বুঝানো হয়েছে। হিজরতের পর সেখানে থেকে যাওয়া অবশিষ্ট মুসলিমগণ — বিশেষ করে বৃদ্ধ পুরুষ ও মহিলা এবং ছোট শিশুরা কাফেরদের যুলুম-অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্যের জন্য দু’আ করতেন। তাই মহান আল্লাহ মুসলিমদেরকে এই বলে সতর্ক করলেন যে, তোমরা ঐ অসহায়-দুর্বল মুসলিমদেরকে কাফেরদের হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জিহাদ কেন কর না? এই আয়াতকে দলীল হিসাবে গ্রহণ করে আলেমগণ বলেছেন, মুসলিমরা যদি এই ধরনের যুলুম-অত্যাচারের শিকার হয় এবং কাফেরদের বেষ্টনে অবরুদ্ধ থাকে, তাহলে তাদেরকে কাফেরদের যুলুম-অত্যাচার থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জিহাদ করা অন্য মুসলিমদের উপর ফরয হয়ে যায়। এটা হল জিহাদের দ্বিতীয় প্রকার। আর প্রথম প্রকার হল, আল্লাহর দ্বীনের প্রতিষ্ঠা, প্রচার-প্রসার এবং তাকে জয়যুক্ত করার জন্য জিহাদ করা। এর উল্লেখ পূর্বের আয়াতে এবং পরের আয়াতে রয়েছে।
[২] কাফের এবং মু’মিন উভয়েরই যুদ্ধের প্রয়োজন হয়। কিন্তু উভয়ের যুদ্ধের লক্ষ্যের মধ্যে বিরাট তফাৎ। মু’মিন তো জিহাদ করে আল্লাহর জন্য, কেবল দুনিয়ার স্বার্থে অথবা রাজ্য জয়ের প্রবৃত্তি নিয়ে নয়। পক্ষান্তরে কাফেরের লক্ষ্য হয় কেবল এই দুনিয়ার স্বার্থ অর্জন।
[৩] মু’মিনদেরকে অনুপ্রাণিত করা হচ্ছে যে, ‘তাগূতী’ বা শয়তানী স্বার্থ অর্জনের জন্য যে চক্রান্ত করা হয়, তা হয় একান্ত দুর্বল। তাদের বাহ্যিক উপকরণাদির প্রাচুর্য এবং সংখ্যাধিক্যকে ভয় করো না। তোমাদের ঈমানী শক্তি এবং জিহাদের উদ্যমের সামনে শয়তানের এই দুর্বল চক্রান্ত টিকবে না।
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে যুদ্ধের প্রতি অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন এবং দুর্বল অসহায় নারী-পুরুষ ও শিশুদেরকে মুক্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে বলছেন। এখানে অত্যাচারী নগরী বলতে মক্কার কাফির-মুশরিকদেরকে বুঝানো হয়েছে। এ আয়াতকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে আলিম সমাজ বলেন: মুসলিমরা যদি এরূপ অত্যাচার-অবিচারের শিকার হয় এবং কাফিরদের বেষ্টনে অবরুদ্ধ থাকে, তাহলে তাদেরকে কাফিরদের অত্যাচার থেকে মুক্ত করার জন্য জিহাদ করা মুসলিমদের ওপর ফরয। (ইবনু কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
যারা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদে বের হয় না তাদের তিরস্কার করে মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا مَا لَكُمْ إِذَا قِيْلَ لَكُمُ انْفِرُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَي الْأَرْضِ ط أَرَضِيْتُمْ بِالْحَيٰوةِ الدُّنْيَا مِنَ الْاٰخِرَةِ ج فَمَا مَتَاعُ الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا فِي الْاٰخِرَةِ إِلَّا قَلِيْلٌ)
“হে মু’মিনগণ! তোমাদের হল কী যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহর পথে (জিহাদে) বের হতে বলা হয় তখন তোমরা ভারাক্রান্ত হয়ে মাটিতে বসে পড়? তোমরা কি আখিরাতের পরিবর্তে পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিচ্ছ? আখিরাতের তুলনায় পার্থিব জীবনের ভোগের উপকরণ খুবই কম!” (সূরা তাওবাহ ৯:৩৮)
মু’মিনরাই মূলত আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করে আর কাফিররা তাগুতের পথে লড়াই করে। শয়তানের বন্ধু কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়ে মুসলিমদেরকে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন, জেনে রেখ! শয়তানের চক্রান্ত দুর্বল। সুতরাং যারা বাতিলপন্থী তারা সত্যের মোকাবেলায় সর্বদাই পরাভূত হবে। তাদের চক্রান্ত কোনই কাজে আসবে না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় ও মুসলিমদেরকে মুক্ত করার জন্য যুদ্ধ করা ওয়াজিব।
২. মু’মিনগণ শত্র“দের ভয়ে জিহাদ করা থেকে বিরত থাকবে না বরং ন্যায়ের পথে সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।
৩. কাফিররা যতই চন্ত্রান্ত ও কৌশল গ্রহণ করুক না কেন মু’মিনরা সঠিক ঈমান নিয়ে আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা করে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করলে জয়ী হবে।