أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/١٤٨)-৩৫০
www.motaher21.net
ۚ إِنَّ الصَّلٰوةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتٰبًا مَّوْقُوتًا
নিশ্চয় সালাত (নামাজ) মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।
Verily, the Salah is Kitaban on the believers at fixed hours.
সুরা: আন-নিসা
আয়াত নং :-১০৩-১০৪
فَإِذَا قَضَيْتُمُ الصَّلٰوةَ فَاذْكُرُوا اللَّهَ قِيٰمًا وَقُعُودًا وَعَلٰى جُنُوبِكُمْ ۚ فَإِذَا اطْمَأْنَنتُمْ فَأَقِيمُوا الصَّلٰوةَ ۚ إِنَّ الصَّلٰوةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتٰبًا مَّوْقُوتًا
অতঃপর যখন তোমরা সালাত পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।
আয়াত নং :-১০৪
وَ لَا تَهِنُوْا فِی ابْتِغَآءِ الْقَوْمِؕ اِنْ تَكُوْنُوْا تَاْلَمُوْنَ فَاِنَّهُمْ یَاْلَمُوْنَ كَمَا تَاْلَمُوْنَۚ وَ تَرْجُوْنَ مِنَ اللّٰهِ مَا لَا یَرْجُوْنَؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَلِیْمًا حَكِیْمًا۠
এই দলের পশ্চাদ্ধাবনে তোমরা দুর্বলতা প্রদর্শন করো না। যদি তোমরা যন্ত্রণা ভোগ করে থাকো তাহলে তোমাদের মতো তারাও যন্ত্রণা ভোগ করেছে। আর তোমরা আল্লাহর কাছে এমন জিনিস আশা করো, যা তারা আশা করে না। আল্লাহ সবকিছু জানেন, তিনি জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান।
১০৩-১০৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা’আলা সালাতুল খাওফের পর বেশি বেশি যিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন।
যদিও তাঁর যিকিরের নির্দেশ ও গুরুত্ব অন্য সালাতের পরেও রয়েছে। কিন্তু এখানে বিশেষভাবে এজন্য বলা হয়েছে যে, এ সালাতের রুকন আরকান হালকাভাবে আদায় করা হয়। এখানে সালাতরত অবস্থায় সামনে ও পিছনে আসা এবং অন্যান্য কাজ বৈধ ছিল যা সাধারণ অবস্থার সালাতে বৈধ নয়।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যখন কোন ভয় থাকবে না তখন রুকন-আরকান ও অন্যান্য নিয়ম কানুন ঠিক রেখে সালাত আদায় করবে।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: كتابا موقوتا অর্থাৎ مفروضا বা অর্থ ফরয। সালাত নির্ধারিত সময়ে ফরয। নির্ধারিত সময় ছাড়া অন্য সময় আদায় করলে হবে না। বাড়িতে অবস্থানকালে সালাতের যে সময় সে সময়েই আদায় করতে হবে।
আবার সফরে থাকলে সালাতের যে সময় সে সময়েই আদায় করতে হবে। অর্থাৎ যোহর ও আসর একত্রে যোহরের সময়ে অথবা আসরের সময়ে একত্রে আদায় করা এটাই সালাতের সময়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উভয়ভাবে পড়ার প্রমাণ রয়েছে।
আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি যখন সফরে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বাহন দ্রুত বহন করে নিয়ে যেত তখন তিনি মাগরিবকে বিলম্ব করতেন এবং মাগরিব ও ঈশার সালাতকে একত্রে আদায় করতেন। (সহীহ বুখারী হা:১১০৯)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আ‘রাফার ময়দানে এক আজান ও দু’ ইকামতে জোহর ও আসরের সালাত আদায় করেছেন এবং এক আযান ও দু’ ইকামতে মাগরীব ও ঈশার সালাত আদায় করেছেন। (সহীহ ইবনু খুযাইমা হা:২৮১১)
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে সফরে থাকাকালীন জোহরের ওয়াক্তে আসর সালাত, অথবা আসরের ওয়াক্তে জোহরের সালাত ও অনুরূপ মাগরিব ও ঈশার ক্ষেত্রেও একত্রে আদায় করা বৈধ এবং এটা উপযুক্ত সময়। ====
(وَلَا تَھِنُوْا فِی ابْتِغَا۬ئِ الْقَوْمِ)
‘শত্রু সম্প্রদায়ের সন্ধানে তোমরা হতোদ্যম হয়ো না।’ অর্থাৎ শত্রুদের খুঁজতে দুর্বল হয়ে যেও না। বরং চেষ্টা চালাও, জিহাদ কর ও প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদেরকে ধরার জন্য বসে থাক। আর জেনে রেখ! তোমরা যেমন আঘাত পেলে ব্যথা পাও তারাও তেমন ব্যথা পায়। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنْ یَّمْسَسْکُمْ قَرْحٌ فَقَدْ مَسَّ الْقَوْمَ قَرْحٌ مِّثْلُھ۫ﺚ وَتِلْکَ الْاَیَّامُ نُدَاوِلُھَا بَیْنَ النَّاسِﺆ وَلِیَعْلَمَ اللہُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَیَتَّخِذَ مِنْکُمْ شُھَدَا۬ئَﺚ وَاللہُ لَا یُحِبُّ الظّٰلِمِیْنَﯛﺫ)
“যদি তোমাদের আঘাত লেগে থাকে, তবে নিশ্চয়ই সেই সম্প্রদায়েরও তদ্রƒপ আঘাত লেগেছে এবং এ (জয়-পরাজয়ের) দিবসসমূহকে আমি মানুষের মধ্যে পরিক্রমণ করাই; এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদেরকে যাতে আল্লাহ এরূপে জানতে পারেন এবং তোমাদের মধ্য হতে কতকগুলোকে শহীদরূপে গ্রহণ করতে পারেন আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেন না।” (সূরা আলি-ইমরান ৩:১৪০)
কিন্তু তোমরা এমন কিছু আশা কর যা তারা করে না। অর্থাৎ তোমরা আল্লাহ তা‘আলার কাছে নেকীর আশা কর তারা সে আশা করতে পারে না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সালাত শেষে আল্লাহ তা‘আলার যিকিরের অনেক গুরুত্ব ও ফযীলত রয়েছে।
২. যথা সময়ে সালাত আদায়ের গুরুত্ব জানলাম।
৩. শত্র“দের বিরুদ্ধে মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে নিরাশ হওয়া নিষেধ।
English Tafsir :- Ibn Kathir
Verses :- 103-104
The Order for Ample Remembrance After the Fear Prayer
Allah says;
فَإِذَا قَضَيْتُمُ الصَّلَةَ فَاذْكُرُواْ اللّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِكُمْ
When you have finished the Salah, remember Allah standing, sitting down, and on your sides,
Allah commands Dhikr after finishing the Fear prayer, in particular, even though such Dhikr is encouraged after finishing other types of prayer in general. In the case of Fear prayer, Dhikr is encouraged even more because the pillars of the prayer are diminished since they move about while performing it, etc., unlike other prayers.
Allah said about the Sacred Months,
فَلَ تَظْلِمُواْ فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ
(so wrong not yourselves therein), (9:36) even though injustice is prohibited all year long. However, injustice is particularly outlawed during the Sacred Months due to their sanctity and honor.
So Allah’s statement,
فَإِذَا قَضَيْتُمُ الصَّلَةَ فَاذْكُرُواْ اللّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِكُمْ
(When you have finished Salah, remember Allah standing, sitting down, and on your sides), means, in all conditions,
فَإِذَا اطْمَأْنَنتُمْ فَأَقِيمُواْ الصَّلَةَ
But when you are free from danger perform the Salah.
when you are safe, tranquil and fear subsides,
فَأَقِيمُواْ الصَّلَةَ
(perform the Salah),
by performing it as you were commanded; fulfilling its obligations, with humbleness, completing the bowing and prostration positions etc.
Allah’s statement,
إِنَّ الصَّلَةَ كَانَتْ عَلَى الْمُوْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا
Verily, the Salah is Kitaban on the believers at fixed hours.
means, enjoined, as Ibn Abbas stated.
Ibn Abbas also said,
“The prayer has a fixed time, just as the case with Hajj.”
Similar is reported from Mujahid, Salim bin Abdullah, Ali bin Al-Husayn, Muhammad bin Ali, Al-Hasan, Muqatil. As-Suddi and Atiyah Al-Awfi.
The Encouragement to Pursue the Enemy Despite Injuries .
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে নির্দেশ দিচ্ছেন-‘সলাতুল খাওফ’ বা ভয়ের সময়ের নামাযের পর তোমরা খুব বেশী করে আল্লাহ তা’আলা যিকির করবে, যদিও তাঁর যিকিরের নির্দেশ এবং ওর গুরুত্ব অন্য নামাযের পরেও এমন কি সব সময়ের জন্যেই রয়েছে। কিন্তু এখানে বিশেষভাবে এজন্যেই বর্ণনা করেছেন যে, এখানে তিনি বান্দাহকে খুব বড় অবকাশ দান করেছেন। তিনি নামায হালকা করে দিয়েছেন। তাছাড়া নামাযের অবস্থায় এদিক ওদিকে সরে যাওয়া এবং যাতায়াত করা উপযোগীতা অনুযায়ী বৈধ করেছেন। যেমন তিনি মর্যাদাসম্পন্ন। মাসগুলো সম্পর্কে বলেছেন- (আরবী) অর্থাৎ ‘তোমরা ঐ গুলোর ব্যাপারে তোমাদের নাফসের উপর অত্যাচার করো না।’ (৯:৩৬) যদিও অন্যান্য মাসেও অত্যাচার নিষিদ্ধ তথাপি এ পবিত্র মাসগুলোর মধ্যে ওর থেকে বিরত থাকার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই এখানে ঘোষণা করা হচ্ছে যে, সব সময়ই আল্লাহ তাআলার যিকির করতে থাক এবং যখন শান্তি এসে যাবে, কোন ভয় ও সন্ত্রাস থাকবে না তখন। নিয়মিতভাবে বিনয়ের সাথে নামাযের রুকনগুলো শরীয়ত মুতাবিক আদায় কর। এ নামায তোমাদের উপর নির্ধারিত সময়েই ফরযে আইন করে দেয়া হয়েছে।
হজ্বের সময় যেমন নির্ধারিত রয়েছে, তদ্রপ নামাযের সময়ও নির্ধারিত রয়েছে। প্রথম সময়ের পরে দ্বিতীয় সময় এবং দ্বিতীয় সময়ের পরে তৃতীয় সময়।
এরপর বলা হয়েছে যে, তোমরা শত্রুদের অনুসন্ধানের ব্যাপারে ভীরুতা প্রদর্শন করো না। চাতুরীর সাথে গোপনীয় জায়গায় বসে থেকে তাদের খবরাখরব নিতে থাকো। তোমরা যদি নিহত বা আহত হও অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাক তবে তোমাদের শত্রুগণও তো এরূপ হয়ে থাকে। এ বিষয়টিকেই নিম্নের শব্দগুলোর দ্বারাও বর্ণনা করা হয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ ‘তোমাদেরকে যদি কষ্ট পৌছে থাকে তবে ঐরূপ কষ্ট তো ঐ সম্প্রদায়কেও স্পর্শ করেছিল।’ (৩:১৪০) তাহলে বিপদ ও কষ্টে পতিত হওয়ার ব্যাপারে তোমরা ও কাফিরেরা সমান। তবে হ্যাঁ, তোমাদের এবং ওদের মধ্যে বিরাট পার্থক্য এই যে, আল্লাহ তা’আলার নিকট তোমরা ঐসব আশা করে থাকো যেসব আশা তারা করে না। তোমরা এর পুণ্য ও প্রতিদানও পাবে এবং তোমাদেরকে আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে সাহায্যও করা হবে। যেমন স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই এর অঙ্গীকার করেছেন। তার অঙ্গীকার টলতে পারে না। কাজেই এ ব্যাপারে তাদের তুলনায় তোমাদের মধ্যেই তো বেশী কর্মচাঞ্চল্য ও উদ্যোগ থাকা উচিত। তোমাদের অন্তরেই খুব বেশী জিহাদের উদ্যম থাকা দরকার। পূর্ণ উদ্দীপনার সাথে তোমাদেরকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ তা’আলার কালেমাকে প্রতিষ্ঠিত, ছড়ানো এবং সুউচ্চ করার ব্যাপারে তোমাদের অন্তরে সদা-সর্বদা শিহরণ ও উত্তেজনা জেগে উঠা উচিত। আল্লাহ তা’আলা যা কিছু ভাগ্যে লিখে দেন, যা কিছু ফায়সালা করেন, যত কিছু চালু করেন, যে শরীয়ত তিনি নির্ধারণ করেন এবং যে কাজই করেন সব কিছুর ব্যাপারেই তিনি মহাজ্ঞানী ও চরম বিজ্ঞানময়। সর্বাবস্থাতেই তিনি মহা প্রশংসিত।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
টিকা:১৩৮) অর্থাৎ কাফের দল। এ দলটি সে সময় ইসলামী দাওয়াত ও ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথে বাধা ও প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
টিকা:১৩৯) অর্থাৎ কাফেররা বাতিলের জন্য যে পরিমাণ কষ্ট স্বীকার করছে ঈমানদাররা যদি হকের জন্য অন্তত এতটুকু কষ্টও বরদাশ্ত করতে না পারে তাহলে তা হবে সত্যিই বিস্ময়কর। অথচ কাফেরদের সামনে কেবল দুনিয়া ও তার ক্ষণস্থায়ী স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই নেই। বিপরীতপক্ষে ঈমানদাররা আকাশ ও পৃথিবীর প্রভু পরওয়ারদিগারের সন্তুষ্টি, নৈকট্য ও তাঁর চিরন্তন পুরস্কার লাভের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে আসছে।
তাফসীরে আবুবকর যাকারিয়া বলেছেন:-
[১] ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, আল্লাহ্ তা’আলা যখনই কোন ফরয তার বান্দাদের উপর অবধারিত করে দিয়েছেন তখনই সেটার একটা সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তারপর যারা সেটা করতে সক্ষম হবে না তাদেরকে ভিন্ন পথ বাতলে দিয়েছেন। এর ব্যতিক্রম হচ্ছে, ‘আল্লাহর যিকর’। এই যিকর এর ব্যাপারে যতক্ষণ কেউ সুস্থ বিবেকসম্পন্ন থাকে, ততক্ষণ আল্লাহ তা’আলা কাউকে ওযর আপত্তি পেশ করার সুযোগ দেন নি । সর্বাবস্থায় তাকে যিকর করতে হবে। রাত-দিন, জল-স্থল, সফর-মুকীম, ধনী-দরিদ্র, সুস্থ-অসুস্থ, গোপন-প্রকাশ্য সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকর চালিয়ে যেতে হবে। এ আয়াতের এটাই ভাষ্য। [তাবারী, আত-তাফসীরুস সহীহ]
[২] মুজাহিদ বলেন, এর অর্থ যখন তোমরা নিরাপদ হবে এবং স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করবে, তখন পূর্ণরূপ সালাত আদায় করবে তাবারী অর্থাৎ কেউ যেন মনে না করে বসে যে, তাদের সালাত কমে গেছে বা কম পড়লেও চলবে।
[৩] এখানে নির্ধারিত সময় বলে, সালাতের জন্য আল্লাহ কর্তৃক প্রত্যেক সালাতের জন্য নির্ধারিত ওয়াক্তসমূহকে বোঝানো হয়েছে। এখানে সে ওয়াক্তসমূহ বলে দেয়া হয়নি। পক্ষান্তরে অন্য আয়াতে সেগুলোর বর্ণনা দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, “সূর্য হেলে পড়ার পর থেকে রাতের ঘন অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম করুন এবং ফজরের সালাত। নিশ্চয়ই ফজরের সালাত উপস্থিতির সময়”। [সূরা আল-ইসরা: ৭৮]
পাশাপাশি হাদীসে সালাতের ওয়াক্তের বিস্তারিত বর্ণনা এসেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সালাতের প্রথম ও শেষ সময় রয়েছে। যোহরের সালাতের প্রথম সময় হচ্ছে যখন সূর্য হেলে যাবে। আর শেষ সময় হচ্ছে, আসরের ওয়াক্ত প্রবেশ করা পর্যন্ত। অনুরূপভাবে আসরের প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে, যখন এর ওয়াক্ত হবে। আর তার শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে সূর্য হলুদ বর্ণ ধারণ করা পর্যন্ত। তদ্রূপ মাগরিবের প্রথম সময় হচ্ছে যখন সূর্য ডুবে যায়। তার শেষ সময় হচ্ছে, যখন দিগন্ত রেখা চলে যায়। আর এশার প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে, যখন দিগন্ত রেখা চলে যায়। আর শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে, মধ্য রাত পর্যন্ত। ফজরের প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে, যখন সুবহে সাদিক উদিত হয়। আর শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে, যখন সূর্য উদিত হয়। [তিরমিযী: ১৫১]
[৪] অর্থাৎ আল্লাহর কাছে তোমরা সওয়াব, রহমত ও উঁচু মর্যাদা আশা কর, যা তারা করে না। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “তোমরা হীনবল হয়ো না এবং চিন্তিতও হয়ো না; তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও”। [সূরা আলে ইমরান ১৩৯]
আরও বলেন, “কাজেই তোমরা হীনবল হয়ো না এবং সন্ধির প্রস্তাব করো না, যখন তোমরা প্রবল; আর আল্লাহ তোমাদের সংগে আছেন এবং তিনি তোমাদের কর্মফল কখনো ক্ষুন্ন করবেন না”। [সূরা মুহাম্মাদ: ৩৫]
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] উক্ত ভয়ের নামাযকেই বুঝানো হয়েছে। এ নামাযকে যেহেতু কমিয়ে হালকা করে দেওয়া হয়েছে তাই এই ঘাটতি পূরণের জন্য বলা হচ্ছে যে, দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহর যিকর করতে থেকো।
[২] অর্থাৎ, ভয় ও যুদ্ধ-অবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটলে, নামাযকে তার পূর্বের নিয়মে পড়বে যেভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় পড়া হয়।
[৩] এতে নামাযকে তার যথানির্ধারিত সময়ে পড়ার তাকীদ করা হয়েছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কোন শরয়ী ওজর ছাড়া দুই নামাযকে একত্রে (জমা করে) পড়া শুদ্ধ নয়। কেননা, (একত্রে পড়লে) কম-সে কম একটি নামাযকে তার সময় ছাড়াই পড়া হবে যা এই আয়াতের পরিপন্থী।
[৪] অর্থাৎ, নিজেদের শত্রুর পিছনে ধাওয়া করার ব্যাপারে দুর্বলতা না দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে পুরো দমে প্রচেষ্টা চালাও এবং তাদের অপেক্ষায় ওৎ পেতে বসে থাক।
[৫] অর্থাৎ, আহত তো তোমরাও হও এবং ওরাও হয়, কিন্তু তোমাদের সমূহ আঘাতের পরিবর্তে আল্লাহর নিকট নেকী পাওয়ার আশা আছে। তারা কিন্তু কোন কিছু পাওয়ার আশা রাখে না। ফলে আখেরাতে প্রতিদান পাওয়ার জন্য যে মেহনত ও পরিশ্রম তোমরা করতে পারবে তা কাফেররা পারবে না।