أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/١٥٦)-৩৫৮
www.motaher21.net
أَنِ اتَّقُواْ اللّهَ
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর।
The Necessity of Taqwa of Allah.
সুরা: আন-নিসা
আয়াত নং :-১৩১-১৩৪
وَلِلَّهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ ۗ وَلَقَدْ وَصَّيْنَا الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتٰبَ مِن قَبْلِكُمْ وَإِيَّاكُمْ أَنِ اتَّقُوا اللَّهَ ۚ وَإِن تَكْفُرُوا فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ ۚ وَكَانَ اللَّهُ غَنِيًّا حَمِيدًا
আল্লাহর জন্যই রয়েছে আসমানসমূহে যা আছে এবং যা আছে যমীনে। আর তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমি নির্দেশ দিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আর যদি কুফরী কর তাহলে আসমানসমূহে যা আছে এবং যা আছে যমীনে সব আল্লাহরই। আর আল্লাহ অভাবহীন, প্রশংসিত।
আয়াত:-১৩২
وَلِلَّهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ ۚ وَكَفٰى بِاللَّهِ وَكِيلًا
আর আল্লাহর জন্যই রয়েছে, যা আছে আসমানসমূহে এবং যা আছে যমীনে। আর কর্মবিধায়ক হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।
আয়াত:- ১৩৩
إِن يَشَأْ يُذْهِبْكُمْ أَيُّهَا النَّاسُ وَيَأْتِ بِـَٔاخَرِينَ ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَلٰى ذٰلِكَ قَدِيرًا
হে মানুষ, যদি আল্লাহ চান তোমাদেরকে সরিয়ে দেবেন এবং অপরকে আনবেন। আর আল্লাহ এর উপর সক্ষম।
আয়াত নং :-১৩৪
مَنْ كَانَ یُرِیْدُ ثَوَابَ الدُّنْیَا فَعِنْدَ اللّٰهِ ثَوَابُ الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِؕ وَ كَانَ اللّٰهُ سَمِیْعًۢا بَصِیْرًا۠
যে ব্যক্তি কেবলমাত্র ইহকালের পুরস্কার চায়, তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহর কাছে ইহকাল ও পরকাল উভয়স্থানের পুরস্কার আছে এবং আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও সবকিছু দেখেন।
১৩১-১৩৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রুবুবিয়্যার বিষয়ে বলেন যে, তিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর একচ্ছত্র মালিক, সবকিছুর কর্তৃত্ব তাঁর হাতে। তিনি ছাড়া অন্য কেউ সকল সৃষ্টির ক্ষেত্রে অংশীদার নেই। তারপর আল্লাহ তা‘আলা পূর্ববর্তী সকল আসমানী কিতাবধারীদেরকে যেরূপ তাকওয়া অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন আমাদেরকেও সে নির্দেশ প্রদান করছেন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কাউকে ওসিয়ত করতেন তখন তাকওয়ার ওসিয়ত করতেন এবং যখন যুদ্ধে কোন বাহিনী প্রেরণ করতেন তখন প্রথমে তাকওয়ার ওসিয়ত করতেন। আবূ যার (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমি তোমাকে তোমার প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল বিষয়ে তাকওয়ার ওসিয়ত করছি। (মুসনাদ আহমাদ হা:২১৫৭৩) এভাবে চার খলীফারাও ওসিয়ত করতেন। সুতরাং প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে চলা উচিত।
(إِنْ يَّشَأْ يُذْهِبْكُمْ)
‘তিনি (আল্লাহ) ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে অপসারিত করে অপরকে আনতে পারেন’ আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় না করে তাঁর সাথে কুফরী করলে আল্লাহ তা‘আলা এদেরকে পরিবর্তন করে অন্য জাতি নিয়ে আসবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَرَبُّکَ الْغَنِیُّ ذُو الرَّحْمَةِﺚ اِنْ یَّشَاْ یُذْھِبْکُمْ وَیَسْتَخْلِفْ مِنْۭ بَعْدِکُمْ مَّا یَشَا۬ئُ کَمَآ اَنْشَاَکُمْ مِّنْ ذُرِّیَّةِ قَوْمٍ اٰخَرِیْنَﯔﺚ)
“তোমার প্রতিপালক অভাবমুক্ত, দয়াশীল। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে অপসারিত করতে এবং তোমাদের পরে যাকে ইচ্ছা তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করতে পারেন, যেমন তোমাদেরকে তিনি অন্য এক সম্প্রদায়ের বংশ হতে সৃষ্টি করেছেন।”(সূরা আন‘আম ৬:১৩৩)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھٰٓاَنْتُمْ ھٰٓؤُلَا۬ئِ تُدْعَوْنَ لِتُنْفِقُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللہِﺆ فَمِنْکُمْ مَّنْ یَّبْخَلُﺆ وَمَنْ یَّبْخَلْ فَاِنَّمَا یَبْخَلُ عَنْ نَّفْسِھ۪ﺚ وَاللہُ الْغَنِیُّ وَاَنْتُمُ الْفُقَرَا۬ئُﺆ وَاِنْ تَتَوَلَّوْا یَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَیْرَکُمْﺫ ثُمَّ لَا یَکُوْنُوْٓا اَمْثَالَکُمْﭵ)
“দেখ, তোমাদেরকে বলা হচ্ছে যে, আল্লাহর পথে মাল খরচ কর। তখন তোমাদের মধ্যে কতক লোক কার্পণ্য করেছে। অথচ যে কার্পণ্য করেছে সে আসলে নিজের সাথে নিজেই কৃপণতা করছে। আল্লাহ অভাবমুক্ত আর তোমরাই অভাবগ্রস্ত । যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে রাখ তাহলে আল্লাহ তোমাদের বদলে অন্য কাওমকে নিয়ে আসবেন। আর তারা তোমাদের মত হবে না।”(সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৮)
তারপর আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীবাসীকে অবগত করেছেন, যে ব্যক্তি তার কৃত আমল দ্বারা কেবল দুনিয়াই কামনা করবে- জেনে রাখা দরকার যে, আল্লাহ তা‘আলার নিকট দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ের প্রতিদান রয়েছে। তাই সকল আমলের প্রতিদান উভয় জগতের জন্য কামনা করা উচিত।
আর যারা দুনিয়া কামনা করবে আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা দুনিয়াতে যতটুকু পরিমাণ প্রদান করবেন। কিন্তু আখিরাতে তার জাহান্নাম ছাড়া কোন উপায় নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَکَمْ اَھْلَکْنَا مِنَ الْقُرُوْنِ مِنْۭ بَعْدِ نُوْحٍﺚ وَکَفٰی بِرَبِّکَ بِذُنُوْبِ عِبَادِھ۪ خَبِیْرًۭا بَصِیْرًا)
“নূহের পর আমি কত মানবগোষ্ঠী ধ্বংস করেছি! তোমার প্রতিপালক তাঁর বান্দাদের পাপাচরণের সংবাদ রাখা ও পর্যবেক্ষণের জন্য যথেষ্ট।”(সূরা ইসরা ১৭:১৭) অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَنْ کَانَ یُرِیْدُ الْحَیٰوةَ الدُّنْیَا وَزِیْنَتَھَا نُوَفِّ اِلَیْھِمْ اَعْمَالَھُمْ فِیْھَا وَھُمْ فِیْھَا لَا یُبْخَسُوْنَﭞ اُولٰ۬ئِکَ الَّذِیْنَ لَیْسَ لَھُمْ فِی الْاٰخِرَةِ اِلَّا النَّارُﺘ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوْا فِیْھَا وَبٰطِلٌ مَّا کَانُوْا یَعْمَلُوْنَﭟ)
“যে ব্যক্তি পার্থিব জীবন ও তার সৌন্দর্য কামনা করে, দুনিয়াতে আমি তাদের কর্মের পূর্ণ ফল দান করি এবং সেথায় তাদেরকে কম দেয়া হবে না। তাদের জন্য আখিরাতে অগ্নি ব্যতীত অন্য কিছুই নেই এবং তারা যা করে আখিরাতে তা নিষ্ফল হবে এবং তারা যা করে থাকে তা নিরর্থক।”(সূরা হুদ ১১:১৫-১৬)
তাই তো ইমাম মুহাম্মাদ বিন সুলাইমান আত তামীমী কিতাবুত তাওহীদে অধ্যায় বেঁধেছেন।
باب من الشرك إرادة الإنسان بعمله الدنيا
অধ্যায়: আমল দ্বারা দুনিয়া উদ্দেশ্য করা শির্ক। অতএব যে তাক্বওয়ার অসীয়ত আল্লাহ তা‘আলা পূর্ববর্তীদের ন্যায় আমাদেরকেও করেছেন, সে তাক্বওয়া অবলম্বন করতঃ সকল আমল একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্যই করা উচিত।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলকেই আল্লাহ তা‘আলার তাক্বওয়ার অসীয়ত করেন।
২. আল্লাহ তা‘আলা সকল সৃষ্টি থেকে অমুখাপেক্ষী।
৩. আল্লাহ তা‘আলা সকল মানুষকে ধ্বংস করে নতুন প্রজন্ম নিয়ে আসতে সক্ষম।
৪. সকল ইবাদত একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্য করতে হবে।
৫. পার্থিব কোন সার্থের জন্য আমল করা শির্ক।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
টিকা:১৬৩) সাধারণভাবে আইন সংক্রান্ত বিধি-বিধান বর্ণনা করার পর এবং বিশেষভাবে সমাজ সভ্যতার যেসব অংশে মানুষ বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে অন্যায় ও জুলুম করে আসছে সেসব অংশের সংস্কার ও সংশোধনের ওপর জোর দেবার পর আল্লাহ তায়ালা অবশ্যি এ ধরনের কয়েকটি প্রভাবশালী ও আকর্ষণীয় বাক্যের মাধ্যমে একটি সংক্ষিপ্ত উপদেশমূলক ভাষণ দিয়ে থাকেন। মানুষকে ঐ বিধানগুলো পালনে উদ্বুদ্ধ করাই এ উদ্দেশ্য। ইতিপূর্বে যেহেতু মেয়েদের ও এতিম ছেলেমেয়েদের সাথে ইনসাফ ও সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাই এরপর ঈমানদারদের মনের মধ্যে কিছু কথা গেঁথে দেবার প্রয়োজন বোধ করা হয়েছে।
প্রথম কথা হচ্ছেঃ কারো ভাগ্য–গড়ার ক্ষমতা তোমার আছে এ ধরনের ভুল ধারণা কখনো পোষণ করো না। তোমার অনুগ্রহের হাত টেনে নিলেই দুনিয়ায় তার আর কোন আশ্রয়ই থাকবে না। এটা সম্পূর্ণ একটা অমূলক ধারণা। এ ধারণায় বিন্দু পরিমাণও সত্যতা নেই। কেননা তোমার, তার ও সবার ভাগ্য আল্লাহর হাতে। তোমার একার মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সাহায্য করেন না। আকাশ ও পৃথিবীর মালিক মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহর মাধ্যম ও উপায় উপকরণ অত্যন্ত ব্যাপক ও সীমা সংখ্যাহীন। নিজের উপায় উপকরণগুলোকে কাজে লাগাবার এবং সেগুলোর সাহায্যে কার্যোদ্ধার করার কৌশলও তার আয়ত্বাধীন।
দ্বিতীয় কথাটি হচ্ছেঃ তোমাদের এবং তোমাদের মতো পূর্ববর্তী সমস্ত নবীর উম্মাতদের হামেশা এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, তোমাদের যাবতীয় কাজে আল্লাহকে ভয় করো। এ নির্দেশ মেনে চললে তোমাদের লাভ, আল্লাহর কোন লাভ নেই। আর যদি তোমরা এর বিরুদ্ধাচরণ করো, তাহলে পূর্ববর্তী উম্মাতরা এ ধরনের নাফরমানী করে যেমন আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারেনি তেমনি তোমরাও পারবে না। এই বিশ্ব-জাহানের একচ্ছত্র অধিপতি পূর্বেও কারো পরোয়া করেননি এবং এখনো তোমাদের পরোয়া করে না। তার হুকুম অমান্য করলে তিনি তোমাদের সরিয়ে দিয়ে অন্য একটি জাতিকে সাফল্যের স্বর্ণচূড়ায় বসিয়ে দেবেন। আর এই ময়দান থেকে তোমাদের সরে যাওয়ার ফলে তার সাম্রাজের বিপুল বৈভবে ও রূপ সৌন্দর্যে একটুও পার্থক্য দেখা দেবে না।
তৃতীয়ত, আল্লাহর কাছে একদিকে যেমন দুনিয়ার স্বার্থ সুযোগ-সুবিধা আছে তেমনি অন্যদিকে আছে আখেরাতের কল্যাণও। এই স্বার্থ, সুযোগ-সুবিধা ও কল্যাণ সাময়িক আবার চিরন্তনও। এখন তোমরা তাঁর কাছ থেকে কোন্ ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও কল্যাণ লাভ করতে চাও তা তোমাদের নিজেদের সামর্থ্য, হিম্মত, সাহস ও আকাংখার ওপর নির্ভর করে। যদি তোমরা নিছক দুনিয়ার কয়েকদিনের স্বার্থলাভের জন্য পাগলপারা হয়ে গিয়ে থাকো এবং তার বিনিময়ে চিরন্তন স্বার্থসমূহ ত্যাগ করতে প্রস্তুত হও, তাহলে আল্লাহ এসব কিছু তোমাদের এখনই এখানেই দিয়ে দেবেন। কিন্তু এক্ষেত্রে আখেরাতের চিরন্তন স্বার্থ ও সুযোগ-সুবিধা লাভের কোন অংশই তোমরা পাবে না। নদী তোমাদের শস্যক্ষেতগুলোতে চিরকাল পানি সিঞ্চন করতে প্রস্তুত। কিন্তু তোমাদের নিজেদের মনের সংকীর্ণতা এবং সাহস, হিম্মত ও মনোবলের অভাবের কারণে তোমরা কেবলমাত্র একটি শস্য মওসূমের পানি সিঞ্চনকে চিরন্তন খরার বিনিময়ে ক্রয় করছো। কাজেই হৃদয় প্রশস্ত করে আনুগত্য ও বন্দেগীর এমন পথ অবলম্বন করো যার ফলে তোমরা দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ের স্বার্থ ও সুযোগ সুবিধা লাভ করতে পারবে।
সবশেষে বলা হয়েছে, আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও সবকিছু দেখেন। এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ অন্ধ ও বধির নন। কোন অজ্ঞ ও গাফেল রাজার মতো চোখ কান বন্ধ করে আন্দাজে কাজ করা এবং নিজের দান ও দয়া-দাক্ষিণ্যের ক্ষেত্রে ভালো-মন্দের পার্থক্য না করা তাঁর রীতি নয়। পূর্ণ সচেতনতার সাথে তিনি তাঁর এই বিশ্ব-জাহানের ওপর শাসন কর্তৃত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যেকের গ্রহণ ক্ষমতা, হিম্মত ও মনোবলের ওপর তিনি দৃষ্টি রেখেছেন। প্রত্যেকের গুণাবলী তিনি জানেন। তোমাদেরকে কোন্ পথে নিজের শ্রম ও প্রচেষ্টা নিয়োজিত করেছে, তাও তিনি ভালো করেই জানেন তিনি অনুগত বান্দাদের জন্য যেসব অনুগ্রহ নির্দিষ্ট করে রেখেছেন তোমরা তার নাফরমানীর পথ অবলম্বন করে সেগুলো লাভের আশা করতে পারো না।
তাফসীরে আবুবকর যাকারিয়া বলেছেন:-
[১] অর্থাৎ আসমান ও জমীনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহ তা’আলার। এখানে এই উক্তিটির তিনবার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। প্রথমবার বোঝানো হয়েছে, আল্লাহর সচ্ছলতা, প্রাচুর্য ও তাঁর দরবারে অভাবহীনতা। তিনি অভাবীর কথা শুনেন ও অভাব দুর করবেন। কারও অভাব তাঁর অজানা নয়। তিনিই সবাইকে তার আরাধ্য বিষয় দিতে সামর্থ। দ্বিতীয়বার বোঝানো হয়েছে যে, কারো অবাধ্যতায় আল্লাহ্ তা’আলার কোনই ক্ষতি-বৃদ্ধি হয় না। তৃতীয়বার আল্লাহ্ তা’আলার অপার রহমত ও সহায়তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, তোমরা যদি আল্লাহভীতি ও আনুগত্য কর, তবে তিনি তোমাদের সব কাজে সহযোগিতা করবেন, এবং অনায়াসে তা সু-সম্পন্ন করে দেবেন। তৃতীয় আয়াতে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহ তা’আলা অপরিসীম ক্ষমতাবান। তিনি ইচ্ছা করলে এক মুহুর্তে সবকিছু পরিবর্তন করে দিতে পারেন। তোমাদের সবাইকে ধরাপৃষ্ঠ থেকে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন করে তোমাদের স্থলে অন্যদেরকে অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম। অবাধ্যদের পরিবর্তে তিনি অনুগত ও বাধ্য লোক অনায়াসে সৃষ্টি করতে পারেন। এই আয়াত দ্বারা আল্লাহ্ তা’আলার স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও অনির্ভরতা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়েছে এবং অবাধ্যদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে।
[২] এ আয়াত মানবজাতির জন্য আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে এক গুরুত্বপূর্ণ ওসিয়্যত। আগের ও পরের যাবতীয় মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ওসিয়ত। যার বড় আর কোন অসিয়্যত হতে পারে না। বিভিন্ন নবী-রাসূলগণও যুগে যুগে তাদের উম্মতদেরকে এ ওসিয়ত করেছেন। এমনকি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও তার কাছে কেউ ওসিয়্যতের অনুরোধ জানালে এ ওসিয়্যতটি প্রথমে করতেন। হাদীসে এসেছে, এক লোক এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে ওসিয়্যত চাইলে তিনি বললেন, “তোমার কর্তব্য হবে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করা। আর তুমি প্রতিটি উঁচুস্থানে উঠা বা উল্লেখযোগ্য স্থানে তাকবীর বা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা। [তিরমিযী:৩৪৪৫; মুসনাদে আহমাদ ৩/৩৩৩]
তাছাড়া যখনই কোন সেনাদল পাঠাতেন, তাদেরকে তাকওয়ার ওসিয়্যত করতেন। [মুসলিম ১৭৩১; আবু দাউদ: ২৬১২]
[৩] এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, তিনি আল্লাহ ইচ্ছা করলে ওহী নাযিল হওয়ার সময়ে যারা ছিল তাদেরকে নিয়ে গিয়ে তাদের স্থলে অন্যদের স্থলাভিষিক্ত করতে পারেন। অন্য আয়াতে তিনি যে অন্য কাউকে এনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন সেটার প্রমাণও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, “তিনি ইচ্ছে করলে তোমাদেরকে অপসারিত করতে এবং তোমাদের পরে যাকে ইচ্ছে তোমাদের স্থানে আনতে পারেন, যেমন তোমাদেরকে তিনি অন্য এক সম্প্রদায়ের বংশ থেকে সৃষ্টি করেছেন”। [সূরা আল-আন’আমঃ ১৩৩]
অন্য আয়াতে এটাও বলা হয়েছে যে, যাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করা হবে, তারা তাদের মতো হবে না, বরং তাদের চেয়ে ভালো হবে। বলা হয়েছে, “আর যদি তোমরা বিমুখ হও, তবে তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন; তারপর তারা তোমাদের মত হবে না” [সূরা মুহাম্মাদ: ৩৮]
অন্য আয়াতে এ কাজটিকে তাঁর জন্য অত্যন্ত সহজ বলে ঘোষণাও করেছেন। তিনি বলেন, “তিনি ইচ্ছে করলে তোমাদেরকে অপসৃত করতে পারেন এবং এক নূতন সৃষ্টি নিয়ে আসতে পারেন। আর এটা আল্লাহর পক্ষে কঠিন নয়”। [সূরা ইবরাহীম: ১৯; সূরা ফাতির: ১৬]
[৪] এ আয়াতদৃষ্টে মনে হতে পারে যে, দুনিয়ার পুরস্কার চাইলেই তাকে তা দেয়া হবে। মূলত: অন্য আয়াতে সেটাকে শর্তযুক্ত করে বলা হয়েছে যে, “যে দুনিয়া চায়, তাকে আমি দুনিয়াতে যা ইচ্ছা করি যতটুকু ইচ্ছা করি প্রদান করি” [সূরা আল-ইসরা: ১৮] সুতরাং দুনিয়া চাইলেই পাবে, তা কিন্তু নয়। যাকে যতটুকু দেয়ার ইচ্ছা আল্লাহর হবে, ততটুকুই সে পাবে। এর বাইরে নয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] এ হল আল্লাহ তাআলার পূর্ণ পরাক্রমশালিতার বিকাশ। অন্যত্র বলেছেন, [وَإِنْ تَتَوَلَّوْا يَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ ثُمَّ لا يَكُونُوا أَمْثَالَكُمْ] (محمد: ৩৮) অর্থাৎ, যদি তোমরা বিমুখ হও তাহলে তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন; অতঃপর তারা তোমাদের মত হবে না।” (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৮)
[২] যেমন, কেউ যদি জিহাদ কেবল গনীমতের মাল লাভের জন্য করে তবে তা কতই না মূর্খতার কথা। যেহেতু মহান আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতের সওয়াব দেওয়ার উপর ক্ষমতাবান। অতএব তাঁর কাছে কেবল একটি জিনিসই কেন চাওয়া হয়? দুটোই কেন চাওয়া হয় না?
১৩১-১৩৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ তাআলা সংবাদ দিচ্ছেন যে, আকাশ ও পৃথিবীর একমাত্র অধিকারী তিনিই। তিনি বলেন-যে নির্দেশাবলী তোমাদেরকে দেয়া হচ্ছে যে, তোমরা আল্লাহকে ভয় করবে, তার একত্বে বিশ্বাস করবে, তার ইবাদত করবে এবং তিনি ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করবে না, এ নির্দেশাবলীই তোমাদের পূর্বে আহলে কিতাবকেও দেয়া হয়েছিল। আর যদি তোমরা অস্বীকার কর তবে তাঁর কি ক্ষতি করতে পারবে? তিনি তো একাই আকাশ ও পৃথিবীর মালিক। যেমন হযরত মূসা (আঃ) স্বীয় গোত্রের লোককে বলেছিলেনঃ যদি তোমরা ও সারা জগতের লোক আল্লাহকে অস্বীকার কর তবুও তিনি তোমাদের হতে সম্পূর্ণ অমুখাপেক্ষী এবং প্রশংসার যোগ্য। যেমন তিনি অন্য জায়গায় বলেন- (আরবী) অর্থাৎ তারা অস্বীকার করেছিল ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, আল্লাহ তাদের হতে অমুখাপেক্ষী হয়েছিলেন, তিনি বড়ই অমুখাপেক্ষী এবং প্রশংসিত। (৬৪:৬)
বলা হচ্ছে-তিনি আকাশ ও পৃথিবীর সমুদয় জিনিসের মালিক ও তিনি প্রত্যেকের সমস্ত কার্যের উপর সাক্ষী। কোন কিছুই তার অজানা নেই। তিনি এ ক্ষমতাও রাখেন যে, তোমরা যদি তার অবাধ্যাচরণ কর তবে তিনি তোমাদেরকে ধ্বংস করে তোমাদের স্থলে অন্য মাখলুক আনয়ন করবেন।
যেমন অন্য আয়াতে রয়েছে (আরবী) অর্থাৎ যদি তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন কর তবে তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য সম্প্রদায়কে আনয়ন করবেন যারা তোমাদের মত হবে না। (৪৭:৩৮)পূর্ব যুগের কোন একজন মনীষী বলেনঃ “তোমরা এ আয়াতটি সম্বন্ধে গবেষণা কর যে, পাপী বান্দারা আল্লাহ তা’আলার নিকট কত তুচ্ছ?’
এ আয়াতে এটাও বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তা’আলার নিকট এ কাজ মমাটেই কঠিন নয়! অতঃপর তিনি বলেন-হে ঐ ব্যক্তি! যার মনোবাসনা ও চেষ্টা একমাত্র দুনিয়ার জন্যে সে যেন জেনে নেয় যে, দুনিয়া ও আখিরাতের সমস্ত মঙ্গল আল্লাহ তা’আলার অধিকারেই রয়েছে। সুতরাং যখন তুমি তার নিকট দু’টোই যাজ্ঞা করবে তখন তিনি তোমাদেরকে দু’টোই দান করবেন। আর তিনি তোমাদেরকে অমুখাপেক্ষী করে দেবেন এবং পরিতৃপ্ত করবেন। অন্য জায়গায় আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ মানুষের মধ্যে এমনও রয়েছে যে বলে- হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে আপনি দুনিয়া দান করুন, তাদের জন্য পরকালের কোনই অংশ। নেই। আর তাদের মধ্যে এমনও রয়েছে যে বলে- হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে দুনিয়ায় মঙ্গল দান করুন এবং পরকালেও মঙ্গল দান করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করুন। এদের জন্যে ঐ অংশ রয়েছে। যা তারা অর্জন করেছে।’ (২:২০০-২০২) আর এক আয়াতে আছে (আরবী) অর্থাৎ যে ব্যক্তি পরকালের ক্ষেত্রের আকাঙ্খ করে আমি তার ক্ষেত্র বৃদ্ধি করে দেবো।’ (৪২৪ ২০) অন্য স্থানে রয়েছে (আরবী) অর্থাৎ যে ব্যক্তি দুনিয়া যাা করে, তখন আমি যাকে চাই ও যত চাই দুনিয়ায় প্রদান করে থাকি।’ (১৭:১৮)
ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) (আরবী) -এ আয়াতের ভাবার্থ। এই বর্ণনা করেছেন যে, মুনাফিকরা দুনিয়া অনুসন্ধানে ঈমান কবুল করেছিল, তারা দুনিয়া পেয়ে যায় বটে, অর্থাৎ মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধলব্ধ মালে অংশীদার হয়ে যায়, কিন্তু পরকালে তাদের জন্যে আল্লাহ তা’আলার নিকট যা তৈরী রয়েছে তা সেখানে তারা পেয়ে যাবে। অর্থাৎ জান্নামের অগ্নি ও তথাকার বিভিন্ন ধরনের শাস্তি। সুতরাং উক্ত ইমাম সাহেবের মতে এ আয়াতটি (আরবী) (১১:১৫) -এ আয়াতটির মতই। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, এ আয়াতের অর্থ তো বাহ্যতঃ এটাই, কিন্তু প্রথম আয়াতটিকেও এ অর্থে নেয়ার ব্যাপারে চিন্তার অবকাশ রয়েছে। কেননা, এ আয়াতের শব্দগুলো ততা স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছে যে, দুনিয়া ও আখিরাতের মঙ্গল দান আল্লাহর হাতেই রয়েছে, কাজেই প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত যে, সে যেন তার জীবনটা একটি জিনিসের অনুসন্ধানেই শেষ করে না দেয়। বরং সে যেন দুটো জিনিসই লাভ করার জন্যে সচেষ্ট হয়।
বলা হচ্ছে-যে তোমাদেরকে দুনিয়া দিচ্ছেন, আখিরাতের অধিকারীও তিনিই। এটা বড়ই কাপুরুষতার পরিচয় যে, তোমরা তোমাদের চক্ষু বন্ধ করে নেবে এবং অধিক প্রদানকারীর নিকট অল্প যাজ্ঞা করবে। না, না বরং তোমরা ইহকাল ও পরকালের বড় বড় কাজ ও উত্তম উদ্দেশ্য লাভের চেষ্টা কর। স্বীয় লক্ষ্যস্থল শুধু দুনিয়াকে বানিয়ে নিও না, বরং উচ্চাকাঙ্খর দ্বারা দৃষ্টি প্রসারিত করতঃ উভয় জগতে শান্তি লাভের চেষ্টা কর। মনে রেখ যে, উভয় জগতেরই মালিক তিনিই। প্রত্যেক লাভ ও ক্ষতি তারই হাতে রয়েছে। এমন কেউ নেই যে, তার অংশীদার হতে পারে কিংবা তাঁর কার্যে হস্তক্ষেপ করতে পারে। সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য তিনিই বন্টন করেছেন। ধন ভাণ্ডারের চাবিগুলো তিনি স্বীয় হস্তে রেখেছেন। তিনি প্রত্যেক হকদারকেই চেনেন এবং যে যার হকদার তিনি তাকে তাই পৌছিয়ে থাকেন। তোমাদের তো এটা চিন্তা করা উচিত যে, যিনি তোমাদেরকে দেখবার শুনবার ক্ষমতা দান করেছেন, তাঁর দর্শন ও শ্রবণ কেমন হতে পারে।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Verses Number:- 131-134
The Necessity of Taqwa of Allah
Allah says;
وَللّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الَارْضِ
And to Allah belongs all that is in the heavens and all that is in the earth.
Allah states that He is the Owner of the heavens and earth and that He is the Supreme Authority over them.
Hence Allah’s statement,
وَلَقَدْ وَصَّيْنَا الَّذِينَ أُوتُواْ الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ وَإِيَّاكُمْ
.
And verily, We have recommended to the People of the Scripture before you, and to you,
meaning, We have recommended to you what We recommended to the People of Scriptures;
أَنِ اتَّقُواْ اللّهَ
that you have Taqwa of Allah.
Taqwa of Allah, by worshipping Him Alone without partners.
Allah then said,
وَإِن تَكْفُرُواْ فَإِنَّ لِلّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الَارْضِ
But if you disbelieve, then unto Allah belongs all that is in the heavens and all that is in the earth.
In another Ayah, Allah said that Musa said to his people,
إِن تَكْفُرُواْ أَنتُمْ وَمَن فِى الاٌّرْضِ جَمِيعًا فَإِنَّ اللَّهَ لَغَنِىٌّ حَمِيدٌ
“If you disbelieve, you and all on the earth together, then verily, Allah is Rich (free of any need), Owner of all praise.” (14:8)
Allah said,
فَكَفَرُواْ وَتَوَلَّواْ وَّاسْتَغْنَى اللَّهُ وَاللَّهُ غَنِىٌّ حَمِيدٌ
So they disbelieved and turned away. But Allah was not in need (of them). And Allah is Rich (free of any need), Worthy of all praise. (64:6)
وَكَانَ اللّهُ غَنِيًّا حَمِيدًا
and Allah is Ever Rich (free of any needs), Worthy of all praise.
meaning, He is far too Rich than to need His servants, and worthy of all praise in all His decisions and commandments.
The meaning of Allah’s statement,
وَلِلّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الَارْضِ وَكَفَى بِاللّهِ وَكِيلً
And to Allah belongs all that is in the heavens and all that is in the earth. And Allah is Ever All-Sufficient as a Disposer of affairs.
He has perfect watch over every soul, knowing what it deserves, He is the Watcher, and Witness of all things
” Allah’s statement,
إِن يَشَأْ يُذْهِبْكُمْ أَيُّهَا النَّاسُ وَيَأْتِ بِأخَرِينَ وَكَانَ اللّهُ عَلَى ذَلِكَ قَدِيرًا
If He wills, He can take you away, O people, and bring others. And Allah is Ever All-Potent over that.
means, He is able to take you away and replace you with other people if you disobey Him.
In a similar Ayah, Allah said,
الْفُقَرَاءُ وَإِن تَتَوَلَّوْاْ يَسْتَبْدِلْ قَوْماً غَيْرَكُمْ ثُمَّ لَا يَكُونُوا
And if you turn away, He will exchange you for some other people and they will not be your likes. (47:38)
Allah’s statement
مَّن كَانَ يُرِيدُ ثَوَابَ الدُّنْيَا فَعِندَ اللّهِ ثَوَابُ الدُّنْيَا وَالاخِرَةِ
Whoever desires the rewards of this life, then with Allah is the reward of this worldly life and of the Hereafter.
means, O those whose ultimate desire is this life, know that Allah owns the rewards of this life and the Hereafter. Therefore, if you ask Allah for both, He will enrich you, award you and suffice for you.
As Allah said,
فَمِنَ النَّاسِ مَن يَقُولُ رَبَّنَأ ءَاتِنَا فِى الدُّنْيَا وَمَا لَهُ فِى الاٌّخِرَةِ مِنْ خَلَـقٍ
وِمِنْهُم مَّن يَقُولُ رَبَّنَأ ءَاتِنَا فِى الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الاٌّخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
أُولَـيِكَ لَهُمْ نَصِيبٌ مِّمَّا كَسَبُواْ
But of mankind there are some who say:”Our Lord! Give us in this world!” and for such there will be no portion in the Hereafter.
And of them there are some who say:”Our Lord! Give us in this world that which is good and in the Hereafter that which is good, and save us from the torment of the Fire!” For them there will be allotted a share for what they have earned), (2:200-202)
مَن كَانَ يُرِيدُ حَرْثَ الاٌّخِرَةِ نَزِدْ لَهُ فِى حَرْثِهِ
Whosoever desires (by his deeds) the reward of the Hereafter, We give him increase in his reward. (42:20)
and,
مَّن كَانَ يُرِيدُ الْعَاجِلَةَ عَجَّلْنَا لَهُ فِيهَا مَا نَشَاء لِمَن نُّرِيدُ
(Whoever desires the quick-passing (transitory enjoyment of this world), We readily grant him what We will for whom We like) until,
انظُرْ كَيْفَ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ
(See how We prefer one above another (in this world)). (17:18-21)
So Allah said here,
وَكَانَ اللّهُ سَمِيعًا بَصِيرًا
And Allah is Ever All-Hearer, All-Seer