أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/١٥٧)-৩৫৯
www.motaher21.net
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كُوْنُوْا قَوّٰمِیْنَ بِالْقِسْطِ شُهَدَآءَ لِلّٰهِ
হে ঈমানদারগণ! ইনসাফের পতাকাবাহী ও আল্লাহর সাক্ষী হয়ে যাও,
O you who believe! Stand out firmly for justice, as witnesses to Allah,
সুরা: আন-নিসা
আয়াত নং :-১৩৫
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كُوْنُوْا قَوّٰمِیْنَ بِالْقِسْطِ شُهَدَآءَ لِلّٰهِ وَ لَوْ عَلٰۤى اَنْفُسِكُمْ اَوِ الْوَالِدَیْنِ وَ الْاَقْرَبِیْنَۚ اِنْ یَّكُنْ غَنِیًّا اَوْ فَقِیْرًا فَاللّٰهُ اَوْلٰى بِهِمَا فَلَا تَتَّبِعُوا الْهَوٰۤى اَنْ تَعْدِلُوْاۚ وَ اِنْ تَلْوٗۤا اَوْ تُعْرِضُوْا فَاِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرًا
হে ঈমানদারগণ! ইনসাফের পতাকাবাহী ও আল্লাহর সাক্ষী হয়ে যাও, তোমাদের ইনসাফ ও সাক্ষ্য তোমাদের নিজেদের ব্যক্তিসত্তার অথবা তোমাদের বাপ-মা ও আত্মীয়-স্বজনদের বিরুদ্ধে গেলেও। উভয় পক্ষ ধনী বা অভাবী যাই হোক না কেন আল্লাহ তাদের চাইতে অনেক বেশী কল্যাণকামী। কাজেই নিজেদের কামনার বশবর্তী হয়ে ইনসাফ থেকে বিরত থেকো না। আর যদি তোমরা পেঁচালো কথা বলো অথবা সত্যতাকে পাশ কাটিয়ে চলো, তাহলে জেনে রাখো, তোমরা যা কিছু করছো আল্লাহ তার খবর রাখেন।
১৩৫ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা এখানে মু’মিনদেরকে ন্যায়ের ওপর সর্বদা প্রতিষ্ঠিত থাকতে নির্দেশ দিচ্ছেন। কোন অবস্থাতেই যেন ন্যায় থেকে বিচ্যুত হয়ে ডান-বামে সরে না যায় এবং ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে যেন কোন ভর্ৎসনাকারীর ভর্ৎসনা প্রভাবিত না করে।
(شُھَدَا۬ئَ لِلہِ)
‘আল্লাহর সাক্ষীস্বরূপ’ অর্থাৎ ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকা ও ন্যায় সাক্ষ্য প্রদান করা যেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে খুশি করার জন্য হয়। যদিও এ ন্যায় সাক্ষ্য নিজের পিতা-মাতা ও আত্মীয় স্বজনের বিরুদ্ধে যায়।
(فَاللّٰهُ أَوْلٰي بِهِمَا)
‘আল্লাহ উভয়েরই ঘনিষ্ঠতর’অর্থাৎ কোন ধনভাণ্ডারের ধন ও কোন দরিদ্রের দারিদ্রতার ভয় যেন তোমাদেরকে সত্য কথা বলার পথে বাঁধা না দেয়। আল্লাহ তা‘আলা তাদের তত্ত্বাবধায়ক, তাদের কল্যাণের ব্যাপারে তিনি ভাল জানেন।
(فَلَا تَتَّبِعُوا الْهَوٰٓي)
‘সুতরাং তোমরা প্রবৃত্তির অনুসরণ কর না’প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না অর্থাৎ প্রবৃত্তির অনুসরণ যেন তোমাদেরকে পক্ষপাতিত্ব বা বিদ্বেষ করতে বাধ্য না করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(يیٰٓاَیُّھَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللہَ وَاٰمِنُوْا بِرَسُوْلِھ۪ یُؤْتِکُمْ کِفْلَیْنِ مِنْ رَّحْمَتِھ۪ وَیَجْعَلْ لَّکُمْ نُوْرًا تَمْشُوْنَ بِھ۪ وَیَغْفِرْ لَکُمْﺚ وَاللہُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌﭫ)
“হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন, তিনি তাঁর অনুগ্রহে তোমাদেরকে দ্বিগুণ পুরস্কার দেবেন এবং তিনি তোমাদেরকে দেবেন আলো, যার সাহায্যে তোমরা চলবে এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা হাদীদ ৫৭:২৮)
আর যদি প্রবৃত্তির অনুসরণ করে সাক্ষ্য বিকৃতি ও পরিবর্তন কর তাহলে জেনে রেখ তোমরা যা কর আল্লাহ তা‘আলা সব জানেন। অতএব সাক্ষ্য ও বিচারের ক্ষেত্রে ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকা সর্বস্তরের মু’মিনদের জন্যই আবশ্যক।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. বিচার ফায়সালা ও সাক্ষ্য দানে ন্যায়ের অনুসরণ করা ওয়াজিব।
২. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া হারাম।
৩. সাক্ষ্য নিজের বিপক্ষে গেলেও সত্য কথা বলা উচিত।
৪. কোন কিছুর লোভ বা ভয় যেন সত্য সাক্ষ্য প্রদান থেকে বিচ্যুত না করে।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
টিকা:১৬৪) আল্লাহ কেবল এতটুকু বলেই ক্ষান্ত হননি যে, তোমরা ইনসাফের দৃষ্টিভংগী অবলম্বন করো এবং ইনসাফের পথে চলো বরং বলেছেন তোমরা ইনসাফের পতাকাবাহী হয়ে যাও। কেবল ইনসাফ করাই তোমাদের কাজ হবে না বরং ইনসাফের ঝাণ্ডা নিয়ে এগিয়ে চলাই হবে তোমাদের কাজ। জুলুম খতম করে তার জায়গায় আদল ও সুবিচার প্রতিষ্ঠিত করতে তোমাদের দৃঢ় সংকল্প হতে হবে। আদল ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য যে সহায়ক শক্তির প্রয়োজন মু’মিন হিসেবে তোমাদের যোগান দিতে হবে সেই সহায়ক শক্তি।
টিকা:১৬৫) অর্থাৎ তোমাদের সাক্ষ্য একমাত্র আল্লাহর জন্য হওয়া উচিত। এতে কারো প্রতি দরদ ও সহানুভূতির কোন প্রশ্ন থাকবে না। কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ বা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টি অর্জন তোমাদের লক্ষ্য হবে না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] এই আয়াতে মহান আল্লাহ ঈমানদারকে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত করার এবং ন্যায় অনুযায়ী সাক্ষ্য দেওয়ার প্রতি তাকীদ করছেন, যদিও তার কারণে তাকে অথবা তার পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদেরকে ক্ষতির শিকার হতে হয় তবুও। কেননা, সব কিছুর উপর সত্যের থাকে কর্তৃত্ব ও প্রাধান্য।
[২] কোন ধনবানের ধন এবং কোন দরিদ্রের দরিদ্রতার ভয় যেন তোমাদেরকে সত্য কথা বলার পথে বাধা না দেয়। বরং আল্লাহ এদের তুলনায় তোমাদের অনেক কাছে এবং তাঁর সন্তুষ্টি সবার ঊর্ধ্বে।
[৩] অর্থাৎ, প্রবৃত্তির অনুসরণ, পক্ষপাতিত্ব অথবা বিদ্বেষ যেন তোমাদেরকে সুবিচার করতে বাধা না দেয়। যেমন, মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন,[وَلا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآنُ قَوْمٍ عَلَى أَلَّا تَعْدِلُوا اعْدِلُوا] অর্থাৎ, কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন কখনও সুবিচার না করাতে প্ররোচিত না করে। সুবিচার কর—। (সূরা মায়েদা ৫:৮)
[৪] تَلْوُوْا শব্দটি لَي ধাতু থেকে গঠিত, যার অর্থ পরিবর্তন করা এবং জেনে-শুনে মিথ্যা বলা। অর্থাৎ, পরিবর্তন-পরিবর্ধন এবং পাশ কাটিয়ে যাওয়া বলতে (সত্য) সাক্ষ্য গোপন করা ও তা পরিত্যাগ করা। এই দু’টি জিনিস থেকেও বাধা প্রদান করা হয়েছে। এই আয়াতে ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা করার প্রতি তাকীদ করা হয়েছে এবং এর জন্য যা যা প্রয়োজন তার প্রতি যত্ন নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমনঃ-
* সর্বাবস্থায় সুবিচার প্রতিষ্ঠা কর, তা থেকে পাশ কাটিয়ে যেয়ো না এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কার অথবা অন্য কোন চাপ বা প্রবর্তনা যেন এ পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। বরং এর প্রতিষ্ঠার জন্য তোমরা একে অপরের সাহায্যকারী হও।
* তোমাদের কেবল লক্ষ্য হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ। যেহেতু এ রকম হলে পরিবর্তন, হেরফের এবং গোপন করা থেকে তোমরা বিরত থাকবে। ফলে তোমাদের বিচার-ফায়সালা ন্যায়-নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে।
* ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষতি যদি তোমার অথবা তোমার পিতা-মাতার কিংবা তোমার আত্মীয়-স্বজনের উপর আসে, তবুও তুমি কোন পরোয়া না করে নিজের ও তাদের স্বার্থ রক্ষার তুলনায় সুবিচারের দাবীসমূহকে অধিক গুরুত্ব দাও।
* ধনের কারণে কোন ধনীর খাতির করো না এবং কোন দরিদ্রের প্রতি দরিদ্রতার ফলে মায়া প্রদর্শন করবে না। কেননা, আল্লাহই জানেন তাদের উভয়ের কল্যাণ কিসে আছে?
* সুবিচার কায়েম করার পথে প্রবৃত্তি, পক্ষপাতিত্ব এবং শত্রুতা যেন বাধা না হয়, বরং এ সব কিছুকে পরিহার করে বাধাহীন সুবিচার করো।
যে সমাজে এই সুবিচারের যত্ন নেওয়া হবে, সে সমাজ হবে নিরাপত্তা ও শান্তির আধার এবং আল্লাহর পক্ষ হতে সেখানে অজস্র রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হবে। সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এ বিষয়টিকে খুব ভালোভাবেই হৃদয়ঙ্গম করে নিয়েছিলেন। সুতরাং আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রাঃ) সম্পর্কে এসেছে যে, রসূল (সাঃ) তাঁকে খায়বারের ইয়াহুদীদের নিকট পাঠালেন, সেখানকার ফলসমূহ ও ফসলাদি অনুমান করে দেখে আসার জন্য। ইয়াহুদীরা তাঁকে ঘুষ পেশ করল; যাতে তিনি তাদের ব্যাপারে একটু শিথিলতা প্রদর্শন করেন। তিনি বললেন, ‘আল্লাহর কসম! আমি তাঁর পক্ষ হতে প্রতিনিধি হয়ে এসেছি যিনি দুনিয়ায় আমার কাছে সব থেকে বেশী প্রিয়তম এবং তোমরা আমার নিকট সর্বাধিক অপ্রিয়। কিন্তু স্বীয় প্রিয়তমের প্রতি আমার ভালোবাসা এবং তোমাদের প্রতি আমার শত্রুতা আমাকে তোমাদের ব্যাপারে সুবিচার না করার উপর উদ্বুদ্ধ করতে পারবে না।’ এ কথা শুনে তারা বলল, ‘এই সুবিচারের কারণেই আসমান ও যমীনের শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা সুপ্রতিষ্ঠিত রয়েছে।’ (ইবনে কাসীর)
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তারা যেন ন্যায়ের উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকে। সেটা থেকে যেন এক ইঞ্চি পরিমাণও এদিক ওদিক সরে না পড়ে। এরূপ যেন না হয় যে তারা কারও ভয়ে, কোন লোভে, কারও তোষামোদে, কারও প্রতি দয়া দেখিয়ে এবং কারও সুপারিশে ইনসাফকে ছেড়ে দেয়। তারা সম্মিলিতভাবে যেন ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত করে। এ ব্যাপারে যেন তারা। একে অপরের সহযোগিতা করতঃ আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টির মধ্যে ন্যায় বিচার কায়েম করে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছে (আরবী) অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমরা সাক্ষ্য প্রদান কর। (৬৫:২) সাক্ষ্য আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হলেই তা হবে সম্পূর্ণ সঠিক, ন্যায় ভিত্তিক ও সত্য। তাতে থাকবে না কোন পরিবর্তন ও গোপন করার প্রবণতা। এ জন্যেই আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ তোমরা স্পষ্ট ও সত্য সাক্ষ্য প্রদান কর যদিও তা তোমাদের নিজেদের প্রতিকূল হয়। তোমরা সত্য কথা বলা হতে বিরত হয়ো না এবং বিশ্বাস রেখো যে, আল্লাহ তা’আলা স্বীয় অনুগত দাসদের মুক্তির বহু উপায় বের করে থাকেন। তোমাদের মুক্তি যে মিথ্যা সাক্ষ্যের উপরই নির্ভর করে এমন কোন কথা নয়।
তারপর বলা হচ্ছে (আরবী) অর্থাৎ যদিও সত্য সাক্ষ্য পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের বিপক্ষে হয় তথাপি তোমরা সত্য সাক্ষ্য প্রদান হতে হাত মুখ ফিরিয়ে নিও না। কেননা, সত্য প্রত্যেকের উপর বিচারক। সাক্ষ্য প্রদানের সময় ধনীর প্রতি কোন লক্ষ্য রেখো না বা গরীবের উপরও দয়া প্রদর্শন করো না। তাদের মঙ্গলের বিবেচনা তোমাদের অপেক্ষা তাঁরই বেশী রয়েছে। তোমরা সর্বাবস্থায় সত্য সাক্ষ্যই প্রদান কর। চিন্তা করো, কারও ক্ষতি করতে গিয়ে নিজেরই ক্ষতি সাধন করো না, প্রবৃত্তির বশবর্তী হয়ে কারও প্রতি শত্রুতা করতঃ ন্যায় ও সাম্য হাত ছাড়া করো না। সদা-সর্বদা ন্যায়ের উপর অটল থাক। যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “কোন সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদেরকে অন্যায় করতে উত্তেজিত না করে, তোমরা সুবিচার করতে থাক, এটাই হচ্ছে মুত্তাকী হওয়ার খুবই নিকটবর্তী।” (৫:৮)
রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রাঃ)-কে যখন খাইবারবাসীদের ক্ষেত্র ও শস্য পরিমাপের জন্যে প্রেরণ করেন তখন খাইবারবাসী তাকে এ জন্যে ঘুষ প্রদান করতে চায় যে, তিনি যেন পরিমাণ কম বলেন। তখন তিনি তাদেরকে বলেনঃ “তোমরা জেনে রেখো যে, আল্লাহর শপথ! সমস্ত মাখলুকের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয়, পক্ষান্তরে তোমরা আমার নিকট কুকুর ও শূকর হতেও জঘন্য। কিন্তু এতদসত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর প্রেমে পড়ে বা তোমাদের শত্রুতাকে সামনে রেখে আমি যে সুবিচার হতে সরে পড়বো ও তোমাদের প্রতি অন্যায় করবো, এটা সম্ভব নয়।” একথা শুনে তারা বলে, “এর দ্বারাই তো আকাশ ও পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। এ পূর্ণ হাদীসটি সূরা-ই-মায়েদার তাফসীরে ইনশাআল্লাহ আসবে।
অতঃপর আল্লাহ পাক বলেন-তোমরা যদি সাক্ষ্যে পরিবর্তন আনয়ন কর, মিথ্যা কথা দ্বারা কার্য সাধন কর, প্রকৃত ঘটনার বিপরীত সাক্ষ্য দান কর, জিহ্বা বাঁকা করে পেঁচযুক্ত কথা বলে ঘটনা কম-বেশী কর, কিছু গোপন কর ও কিছু প্রকাশ কর তবে জেনে রেখো যে সর্বজ্ঞ মহাবিচারক আল্লাহ তাআলার সামনে কোন কৌশলে কাজ দেবে না। সেখানে গিয়ে এর প্রতিদান পাবে এবং শাস্তি ভোগ করবে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঘোষণা করেনঃ সর্বোত্তম সাক্ষী হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে জিজ্ঞাসার পূর্বেই সত্য সাক্ষ্য প্রদান করে।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Verse:- 135
Commanding Justice and Conveying the Witness for Allah
Allah commands;
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ امَنُواْ كُونُواْ قَوَّامِينَ بِالْقِسْطِ شُهَدَاء لِلّهِ
O you who believe! Stand out firmly for justice, as witnesses to Allah,
Allah commands His believing servants to stand up for justice and fairness and not to deviate from it, right or left. They should not fear the blame of anyone or allow anyone to prevent them from doing something for the sake of Allah. They are also required to help, support and aid each other for Allah’s sake.
Allah’s statement,
شُهَدَاء لِلّهِ
(as witnesses to Allah) is similar to His statement,
وَأَقِيمُواْ الشَّهَـدَةَ لِلَّهِ
And establish the testimony for Allah. (65:2)
Testimony should be delivered precisely, for the sake of Allah, thus making the testimony correct, truly just, and free of alterations, changes or deletions.
This is why Allah said,
وَلَوْ عَلَى أَنفُسِكُمْ
even though it be against yourselves,
meaning, give correct testimony, and say the truth when you are asked about it, even if harm will effect you as a consequence. Indeed, Allah shall make a way out and give relief for those who obey Him in every matter.
Allah’s statement,
أَوِ الْوَالِدَيْنِ وَالَاقْرَبِينَ
or your parents, or your kin,
means, even if you have to testify against your parents and kin, do not compromise for their sake. Rather, give the correct and just witness even if they are harmed in the process, for the truth presides above everyone and is preferred to everyone.
Allah’s statement,
إِن يَكُنْ غَنِيًّا أَوْ فَقَيرًا فَاللّهُ أَوْلَى بِهِمَا
be he rich or poor, Allah is a better Protector to both.
means, do not favor someone (in your testimony) because he is rich, or feel pity for him because he is poor, for Allah is their caretaker, a better Protector of them than you, and has better knowledge of what is good for them.
Allah’s statement,
فَلَ تَتَّبِعُواْ الْهَوَى أَن تَعْدِلُواْ
So follow not the lusts, lest you may avoid justice;
means, let not desire, lust or the hatred you have against others, lure you into injustice in your affairs. Rather, stand for justice in all situations.
Allah said;
وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَأنُ قَوْمٍ عَلَى أَلاَّ تَعْدِلُواْ اعْدِلُواْ هُوَ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَى
And let not the enmity and hatred of others make you avoid justice. Be just:that is nearer to piety. (5:8)
when the Prophet sent Abdullah bin Rawahah to collect the tax on the fruits and produce of the Jews of Khyber, they offered him a bribe so that he would go easy on them. He said; “By Allah! I have come to you from the dearest of the creation to me (Muhammad), and you are more hated by me than an equivalent number of apes and swine. However, my love for him (the Prophet) and hatred for you shall not prevent me from being just with you.” On that, they said, “This (justice) is the basis which the heavens and earth were created.”
We will mention this Hadith later in Surah Al-Ma’idah (Surah 5) Allah willing.
Allah’s statement afterwards,
وَإِن تَلْوُواْ أَوْ تُعْرِضُواْ
and if you Talwu or Tu`ridu.
According to Mujahid and several others among the Salaf,
means, “Distort your testimony and change it.”
Talwu, includes distortion and intentional lying.
For instance, Allah said,
وَإِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِيقًا يَلْوُونَ أَلْسِنَتَهُم بِالْكِتَـبِ
And verily, among them is a party who Yalwuna (distort) the Book with their tongues (as they read). (3:78)
Tu`ridu, includes hiding and withholding the testimony.
Allah said,
وَمَن يَكْتُمْهَا فَإِنَّهُ ءَاثِمٌ قَلْبُهُ
Who hides it, surely, his heart is sinful. (2:283)
The Prophet said,
خَيْرُ الشُّهَدَاءِ الَّذِي يَأْتِي بِشَهَادَتِهِ قَبْلَ أَنْ يُسْأَلَهَا
The best witness is he who discloses his testimony before being asked to do so.
Allah then warned,
فَإِنَّ اللّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا
Verily, Allah is Ever Well-Acquainted with what you do.
and will reward or punish you accordingly.