(Book# 114/١٥٨)-৩৬০ www.motaher21.net يَا أَيُّهَا الَّذِينَ امَنُواْ امِنُواْ بِاللّهِ وَرَسُولِهِ O you who believe! Believe in Allah, and His Messenger, হে মুমিনগণ, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসূলের প্রতি, সুরা: আন-নিসা আয়াত নং :-১৩৬

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/١٥٨)-৩৬০
www.motaher21.net

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ امَنُواْ امِنُواْ بِاللّهِ وَرَسُولِهِ

O you who believe! Believe in Allah, and His Messenger,

হে মুমিনগণ, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসূলের প্রতি,

সুরা: আন-নিসা
আয়াত নং :-১৩৬

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
An Nisa:-

4:136

يٰٓأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوٓا ءَامِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَالْكِتٰبِ الَّذِى نَزَّلَ عَلٰى رَسُولِهِۦ وَالْكِتٰبِ الَّذِىٓ أَنزَلَ مِن قَبْلُ ۚ وَمَن يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلٰٓئِكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ وَالْيَوْمِ الْءَاخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلٰلًۢا بَعِيدًا

হে মুমিনগণ, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসূলের প্রতি এবং সে কিতাবের প্রতি যা তিনি তাঁর রাসূলের উপর নাযিল করেছেন এবং সে কিতাবের প্রতি যা তিনি পূর্বে নাযিল করেছেন। আর যে আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং শেষ দিনকে অস্বীকার করবে, সে ঘোর বিভ্রান্তিতে বিভ্রান্ত হবে।

The Order to Have Faith after Believing

Allah says;

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ امَنُواْ امِنُواْ بِاللّهِ وَرَسُولِهِ

O you who believe! Believe in Allah, and His Messenger,

Allah commands His faithful servants to adhere to all the elements of faith, its branches, pillars and cornerstones. This is not stated as mere redundancy, but from the view of completing faith and the continual maintenance of it.

For instance, the believer proclaims in every prayer,
اهدِنَــــا الصِّرَاطَ المُستَقِيم
(Guide us to the straight way) which means, make us aware of the straight path and increase us in guidance and strengthen us on it.

In this Ayah Allah commands the believers to believe in Him and in His Messenger, just as He said elsewhere,

يأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُواْ اتَّقُواْ اللَّهَ وَءَامِنُواْ بِرَسُولِهِ

O you who believe! Have Taqwa of Allah, and believe in His Messenger. (57:28)

Allah’s statement,

وَالْكِتَابِ الَّذِي نَزَّلَ عَلَى رَسُولِهِ

and the Book which He has sent down to His Messenger,

refers to the Qur’an,

while,

وَالْكِتَابِ الَّذِيَ أَنزَلَ مِن قَبْلُ

and the Scripture which He sent down to those before (him);

refers to the previously revealed divine Books.

Allah then said,

وَمَن يَكْفُرْ بِاللّهِ وَمَلَيِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الاخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَلاً بَعِيدًا

and whosoever disbelieves in Allah, His Angels, His Books, His Messengers, and the Last Day, then indeed he has strayed far away.

meaning, he will have deviated from the correct guidance and strayed far away from its path.

সুরা: আন-নিসা
আয়াত নং :-১৩৬

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اٰمِنُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ الْكِتٰبِ الَّذِیْ نَزَّلَ عَلٰى رَسُوْلِهٖ وَ الْكِتٰبِ الَّذِیْۤ اَنْزَلَ مِنْ قَبْلُؕ وَ مَنْ یَّكْفُرْ بِاللّٰهِ وَ مَلٰٓئِكَتِهٖ وَ كُتُبِهٖ وَ رُسُلِهٖ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلٰلًۢا بَعِیْدًا

হে ঈমানদারগণ! ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি, তাঁর রসূলের প্রতি, আল্লাহ‌ তাঁর রসূলের ওপর যে কিতাব নাযিল করেছেন তার প্রতি এবং পূর্বে তিনি যে কিতাব নাযিল করেছেন তার প্রতি। যে ব্যক্তি আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাবর্গ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রসূলগণ ও পরকালের প্রতি কুফরী করলো সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহুদূর চলে গেলো।

১৩৬ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে তাফহীমুল‌ কুরআন বলেছেন:-

টিকা:১৬৬) যারা পূর্বেই ঈমান এনেছে তাদেরকে আবার বলা, ‘তোমরা ঈমান আনো’-কথাটা আপাত দৃষ্টিতে অদ্ভুত মনে হয়। কিন্তু আসলে এখানে ‘ঈমান’ শব্দটি দু’টি আলাদা আলাদা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ঈমান আনার একটি অর্থ হচ্ছে অস্বীকৃতির পরিবর্তে স্বীকৃতির পথ অবলম্বন করা। অস্বীকারকারীদের থেকে আলাদা হয়ে স্বীকৃতিদানকারীদের দলে শামিল হয়ে যাওয়া। এর দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছেঃ কোন জিনিসকে সাচ্চা দিলে, সরল অন্তঃকরণে এবং পূর্ণ দায়িত্ব সচেতনতা সহকারে মেনে নেয়া। নিজের চিন্তা, রুচি, পছন্দ, দৃষ্টিভংগী, মনোভাব, চাল-চলন এবং নিজের বন্ধুতা, শত্রুতা ওপ্রচেষ্টা-সংগ্রামের সকল ক্ষেত্রকে সে যে আকীদার ওপর ঈমান এনেছে পুরোপুরি সেই অনুযায়ী ঢেলে সাজানো। প্রথম অর্থের দিক দিয়ে যেসব মুসলমান স্বীকারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয় এ আয়াতে তাদেরকেই সম্বোধন করা হয়েছে। তাদের কাছে দাবী করা হয়েছে। দ্বিতীয় অর্থটির প্রেক্ষিতে তোমরা সাচ্চা মু’মিনে পরিণত হও।

টিকা:১৬৭) কুফরী করারও দু’টি অর্থ হয়। এর একটি অর্থ হচ্ছে, সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় অস্বীকার করা। দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, মুখে মেনে নেয়া কিন্তু মনে মনে অস্বীকার করা। অথবা নিজের মনোভাবের মাধ্যমে একথা প্রমাণ করা যে, সে যে জিনিসটি মেনে নেয়ার দাবী করছে আসল সেটিকে মানে না। এখানে কুফরী শব্দটি এই দু’টি অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। ইসলামের এই বুনিয়াদী আকীদাগুলোর ব্যাপারে উপরোল্লিখিত দুই ধরনের কুফরীর মধ্য থেকে যে কোনটি অবলম্বন করা হবে তার ফল হবে কেবল হক থেকে দূরে সরে যাওয়া এবং বাতিলের পথে নিষ্ফল প্রয়াসে মাথা খুঁড়ে মরা। এ বিষয়টি সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করে দেয়াই এই আয়াতটির উদ্দেশ্য।

তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-

এখানে আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে পরিপূর্ণভাবে ঈমানে প্রবেশ করার নির্দেশ দিচ্ছেন। এর অর্থ এ নয় যে, ঈমান আনয়নকারীদেরকে পুনরায় ঈমান আনতে হবে বরং ঈমান আনয়নকারী ঈমানকে পরিপূর্ণ করে নেবে। আর যারা ঈমান আনবে না তারাই পথভ্রষ্ট।

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: ঈমানের সত্তরের অধিক শাখা রয়েছে অথবা (বলেছেন) ষাটের কিছু বেশি শাখা আছে। এর সর্বোত্তম শাখা হচ্ছে: লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ ‘আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোন সত্যিকার ইলাহ নেই’ বলা এবং সাধারণ অর্থাৎ নিম্নস্তরের শাখা হচ্ছে চলার পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেয়া। আর লজ্জা হচ্ছে ঈমানের একটি বিশেষ শাখা। (সহীহ মুসলিম হা: ৩৫)

তাফসীরে আবুবকর ‌যাকারিয়া‌ বলেছেন:-

কুফরী করার দুটি অর্থ হয়। (এক) সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় অস্বীকার করা। (দুই) মুখে মেনে নেয়া কিন্তু মনে মনে অস্বীকার করা। অথবা নিজের মনের ভাবের মাধ্যমে একথা প্রমাণ করা যে, সে যে জিনিষটি মেনে নেয়ার দাবী করছে আসলে সেটিকে মানে না। এখানে কুফরী শব্দটি দু’টি অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

বিশ্বাসীদেরকে বিশ্বাস করা ও ঈমানদারদেরকে ঈমান আনার প্রতি তাকীদ করা, অর্জিত জিনিস অর্জন করার ব্যাপার নয়; বরং এই তাকীদের মাধ্যমে ঈমানকে পরিপূর্ণ করার এবং তার উপর সুদৃঢ় ও অবিচল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন [اِهْدِنَا الصِّراطَ المُسْتَقِيْمَ] এর ভাবার্থ। (এ ছাড়া হাদীসে এসেছে যে, ঈমান পুরাতন হয় এবং তার নবায়নের জন্য দু’আ করতে হয়। সিলসিলাহ সহীহাহ

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-

মুমিনদেরকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে, তারা যেন ঈমানের মধ্যে পূর্ণরূপে প্রবেশ করে। সমস্ত আদেশ ও নিষেধ, সমস্ত শরীয়ত এবং ঈমানের সমুদয় শাখাকে যেন মেনে নেয়। এতে তাহসীলে হাসিল নেই, বরং রয়েছে তাকমীলে কামেল। অর্থাৎ যদি তারা ঈমান এনে থাকে তবে তার উপরেই যেন প্রতিষ্ঠিত থাকে। যদি তারা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে থাকে তবে তিনি তাদেরকে আরও যত কিছুর উপর বিশ্বাস রাখতে বলেছেন ঐ সব কিছুর উপর যেন বিশ্বাস রাখে। প্রত্যেক মুসলমানের (আরবী) “আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করুন”-এ প্রার্থনার ভাবার্থ এটাই। অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাদেরকে আপনি সরল সঠিক পথে চিরস্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত রাখুন, ওর উপরেই আমাদেরকে অটল রাখুন এবং আমাদের হিদায়াতকে দিনের পর দিন বৃদ্ধি করতে থাকুন। অনুরূপভাবে এখানেও আল্লাহ তা’আলা মুমিনদেরকে স্বীয় সত্তার উপর এবং স্বীয় রাসূলের উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে বলেছেন। যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর।’ (৫৭:২৮)

(আরবী) এ কিতাবের ভাবার্থ হচ্ছে কুরআন এবং (আরবী) এ কিতাবের ভাবার্থ হচ্ছে পূর্ববর্তী নবীদের উপর অবতারিত কিতাবসমূহ। কুরআন কারীমের জন্য নালা এবং অন্যান্য কিতাবের জন্যে ‘আন্যালা’ ক্রিয়া ব্যবহার করার কারণ এই যে, কুরআন কারীম মাঝে মাঝে অল্প অল্প করে অবতীর্ণ হয়। পক্ষান্তরে অন্যান্য কিতাবসমূহ সমস্তই একই সাথে অবতীর্ণ হয়।

অতঃপর আল্লাহ তা’আলা বলেন-যে কেউ আল্লাহকে, তাঁর ফেরেশতাগণকে, তার কিতাবসমূহকে, তাঁর রাসূলগণকে এবং পরকালকে অস্বীকার করেছে সে সুদূর বিপথে বিভ্রান্ত হয়েছে। অর্থাৎ হিদায়াতের পথ হতে সরে বহু দূরে গিয়ে পড়েছে। সুতরাং তাদের সুপথ প্রাপ্তির আশা সুদূর পরাহত।

Leave a Reply