أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/١٦٥)-৩৬৭
www.motaher21.net
يَسْأَلُكَ أَهْلُ الْكِتَابِ أَن تُنَزِّلَ عَلَيْهِمْ كِتَابًا مِّنَ السَّمَاء
কিতাবীগণ আপনার কাছে তাদের জন্য আসমান হতে একটি কিতাব নাযিল করতে বলে;
The People of the Scripture (Jews) ask you to cause a book to descend upon them from heaven.
সুরা: আন-নিসা
আয়াত নং :-১৫৩-১৫৪
یَسْــٴَـلُكَ اَهْلُ الْكِتٰبِ اَنْ تُنَزِّلَ عَلَیْهِمْ كِتٰبًا مِّنَ السَّمَآءِ فَقَدْ سَاَلُوْا مُوْسٰۤى اَكْبَرَ مِنْ ذٰلِكَ فَقَالُوْۤا اَرِنَا اللّٰهَ جَهْرَةً فَاَخَذَتْهُمُ الصّٰعِقَةُ بِظُلْمِهِمْۚ ثُمَّ اتَّخَذُوا الْعِجْلَ مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ الْبَیِّنٰتُ فَعَفَوْنَا عَنْ ذٰلِكَۚ وَ اٰتَیْنَا مُوْسٰى سُلْطٰنًا مُّبِیْنًا
এই আহ্লি কিতাবরা যদি আজ তোমার কাছে আকাশ থেকে তাদের জন্য কোন লিখন অবতীর্ণ করার দাবী করে থাকে, তাহলে ইতিপূর্বে তারা এর চাইতেও বড় ধৃষ্ঠতাপূর্ণ দাবী মূসার কাছে করেছিল। তারা তো তাঁকে বলেছিল, আল্লাহকে প্রকাশ্যে আমাদের দেখিয়ে দাও। তাদের এই সীমালংঘনের কারণে অকস্মাৎ তাদের ওপর বিদ্যুত আপতিত হয়েছিল। তারপর সুস্পষ্ট নিশানীসমূহ দেখার পরও তারা বাছুরকে উপাস্য রূপে গ্রহণ করেছিল। এরপরও আমি তাদেরকে ক্ষমা করেছি। আমি মূসাকে সুস্পষ্ট ফরমান দিয়েছি।
আয়াত নং :-১৫৪
وَ رَفَعْنَا فَوْقَهُمُ الطُّوْرَ بِمِیْثَاقِهِمْ وَ قُلْنَا لَهُمُ ادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَّ قُلْنَا لَهُمْ لَا تَعْدُوْا فِی السَّبْتِ وَ اَخَذْنَا مِنْهُمْ مِّیْثَاقًا غَلِیْظًا
এবং তূর পাহাড়ে তাদের ওপর উঠিয়ে তাদের থেকে (এই ফরমানে আনুগত্যের) অঙ্গীকার নিয়েছি। আমি তাদেরকে হুকুম দিয়েছি, সিজ্দানত হয়ে দরজার মধ্যে প্রবেশ করো। আমি তাদেরকে বলেছি, শনিবারের বিধান লংঘন করো না এবং এর সপক্ষে তাদের থেকে পাকাপোক্ত অঙ্গীকার নিয়েছি।
১৫৩-১৫৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
টিকা:১৮১) মদীনার ইহুদীরা নবী সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে অদ্ভুত রকমের দাবী দাওয়া পেশ করতো। তাদের এই দাবীগুলোর মধ্যে একটি ছিলঃ যতক্ষণ আমাদের চোখের সামনে একটি লিখিত কিতাব আকাশ থেকে নাযিল না হয় অথবা আমাদের প্রত্যেকর নামে ওপর থেকে এই মর্মে একটি লিখন না আসে যে, “মুহাম্মাদ আমার রসূল, তাঁর ওপর তোমরা ঈমান আনো” ততক্ষণ আমরা আপনার রিসালাত মেনে নিতে প্রস্তুত নই।
টিকা:১৮২) এখানে কোন ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ পেশ করা উদ্দেশ্য নয় বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইহুদীদের অপরাধের একটি সংক্ষিপ্ত ফিরিস্তি পেশ করা, তাই তাদের জাতীয় ইতিহাসের কতিপয় সুস্পষ্ট ঘটনার দিকে হালকাভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
২: আল-বাক্বারাহ,:আয়াত: ৫৫,
وَ اِذْ قُلْتُمْ یٰمُوْسٰى لَنْ نُّؤْمِنَ لَكَ حَتّٰى نَرَى اللّٰهَ جَهْرَةً فَاَخَذَتْكُمُ الصّٰعِقَةُ وَ اَنْتُمْ تَنْظُرُوْنَ
স্মরণ করো, যখন তোমরা মূসাকে বলেছিলে, “আমরা কখনো তোমার কথায় বিশ্বাস করবো না, যতক্ষণ না আমরা স্বচক্ষে আল্লাহকে তোমার সাথে প্রকাশ্যে (কথা বলতে) দেখবো।” সে সময় তোমাদের চোখের সামনে তোমাদের ওপর একটি ভয়াবহ বজ্রপাত হলো, তোমরা নিস্প্রাণ হয়ে পড়ে গেলে।
সুরা বাকারা
আয়াত নং :-56
ثُمَّ بَعَثْنٰكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَوْتِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ
কিন্তু আবার আমরা তোমাদের বাঁচিয়ে জীবিত করলাম, হয়তো এ অনুগ্রহের পর তোমরা কৃতজ্ঞ হবে।
টিকা: 71
এখানে যে ঘটনাটির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে সেটি হচ্ছেঃ চল্লিশ-রাতের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হযরত মূসা আলাইহিস সাল্লাম যখন তূর পাহাড়ে চলে গেলেন, আল্লাহ তাঁকে হুকুম দিলেন বনী ইসরাঈলের সত্তর জন প্রতিনিধিকেও তাঁর সাথে নিয়ে আসার। তারপর মহান আল্লাহ মূসা আলাইহিস সাল্লামকে কিতাব ও ফুরকান দান করলেন। তিনি তা ঐ প্রতিনিধিদের সামনে পেশ করলেন। কুরআন বলছে, ঠিক তখনই তাদের মধ্য থেকে কয়েক জন দুষ্ট প্রকৃতির লোক বলতে থাকলো, মহান আল্লাহ আপনার সাথে কথা বলেছেন একথাটি আমরা শুধুমাত্র আপনার কথায় কেমন করে মেনে নিতে পারি? তাদের একথায় আল্লাহর ক্রোধ উচ্ছ্বাসিত হয়ে উঠলো এবং তিনি তাদেরকে শাস্তি দিলেন। কিন্তু এ ব্যাপারে বাইবেল বলছেঃ“তারা ইসরাঈলের খোদাকে দেখেছে। তাঁর চরণ তলের স্থানটি ছিল নীলকান্তমণি খচিত পাথরের চত্বরের ন্যায়। আকাশের মতো ছিল তার স্বচ্ছতা ও ঔজ্জ্বল্য। তিনি বনী ইসরাঈলের সম্মানিত ব্যক্তিদের ওপর নিজের হাত প্রসারিত করেননি। কাজেই তারা খোদাকে দেখেছে, খেয়েছে এবং পান করেছে।” (নির্গমন পুস্তক, ২৪ অনুচ্ছেদ, ১০-১১ শ্লোক)।মজার ব্যাপার হচ্ছে এই যে, এই বাইবেলের আরো সামনের দিকে গিয়ে বলা হয়েছেঃ “যখন হযরত মূসা (আঃ) খোদার কাছে আরজ করলেন, আমাকে তোমার প্রতাপ ও জ্যোতি দেখাও। জবাবে তিনি বললেন, তুমি আমাকে দেখতে পারো না।” (নির্গমন পুস্তক, ৩৩ অনুচ্ছেদ, ১৮-২৩ শ্লোক)।
টিকা:১৮৩) ‘সুস্পষ্ট নিশানীসমূহ’ বলতে হযরত মূসা আলাইহিস সাল্লামের নবুওয়াত প্রাপ্তির পর থেকে নিয়ে ফেরাউনের সাগরে নিমজ্জিত হওয়া ও বনী ইসরাঈলদের মিসর ছেড়ে বের হয়ে আসা পর্যন্ত একের পর এক যেসব নিশানী তারা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছে সেগুলো বুঝানো হয়েছে। বলা বাহুল্য কোন গো-বৎস মিসর সাম্রাজ্যের বিপুল শক্তিশালী নখর থেকে বনী ইসরাঈলকে রক্ষা করেনি বরং তাদের রক্ষা করেছিলেন আল্লাহ রব্বুল আল্লামীন নিজেই। কিন্তু বনী ইসরাঈল জাতির বাতিল প্রীতি এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যার ফলে আল্লাহর কুদরাত ও তাঁর অনুগ্রহের সুস্পষ্ট নিশানীসমূহ বাস্তব অভিজ্ঞতা ও প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জেনে নেবার পরও তারা নিজেদের প্রতি অনুগ্রহশীল আল্লাহর সামনে শির নত না করে একটি কৃত্রিম হাতে গড়া গো-বৎসের মূর্তির সামনে মাথা নত করে।
টিকা:১৮৪) ‘সুস্পষ্ট ফরমান’ বলতে হযরত মূসা আলাইহিস সালামকে কাঠের তখতির ওপর যে বিধান লিখে দেয়া হয়েছিল তাই বুঝানো হয়েছে। সামনের দিকে সূরা আরাফের ১৭ রুকূ’তে এ সম্পর্কিত আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আর ‘প্রতিশ্রুতি’ বলতে সেই জোরদার শপথকে বুঝানো হয়েছে যা তূর পাহাড়ের পাদদেশে বনী ইসরাঈলদের প্রতিনিধিদের থেকে নেয়া হয়েছিল। সূরা বাকারার ৬৩ আয়াতে ইতিপূর্বে এ সম্পর্কে আলোচনা এসে গেছে এবং আরাফের ১৭১ আয়াতে আবার এর উল্লেখ আসবে।
সুরা: বাকারা
আয়াত নং :-১৪৫
وَ كَتَبْنَا لَهٗ فِی الْاَلْوَاحِ مِنْ كُلِّ شَیْءٍ مَّوْعِظَةً وَّ تَفْصِیْلًا لِّكُلِّ شَیْءٍۚ-فَخُذْهَا بِقُوَّةٍ وَّ اْمُرْ قَوْمَكَ یَاْخُذُوْا بِاَحْسَنِهَاؕ-سَاُورِیْكُمْ دَارَ الْفٰسِقِیْنَ
এরপর আমি মূসাকে কতকগুলো ফলকে জীবনের সকল বিভাগ সম্পর্কে উপদেশ এবং প্রত্যেকটি দিক সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশ লিখে দিলাম এবং তাকে বললামঃ “এগুলো শক্ত হাতে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো এবং তোমার জাতিকে এর উত্তম তাৎপর্যের অনুসরণ করার হুকুম দাও। শীঘ্রই আমি তোমাদের দেখাবো ফাসেকদের গৃহ।”
তাফসীর :
টিকা:১০১) বাইবেলে এ দু’টি ফলক সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এ দু’টি ছিল প্রস্তর ফলক। এ ফলকে লেখার কাজটিকে কুরআন ও বাইবেল উভয় কিতাবেই স্বয়ং আল্লাহর কীর্তি বলে অভিহিত করা হয়েছে। তবে আল্লাহ নিজের কুদরত তথা অসীম ক্ষমতা বলে নিজেই সরাসরি এ ফলকে লেখার কাজ সম্পাদন করেছিলেন, না কোন ফেরেশতাকে দিয়ে এ কাজ সম্পন্ন করেছিলেন অথবা এ কাজে হযরত মূসার হাত ব্যবহার করেছিলেন, এ ব্যাপারটি জানার কোন মাধ্যম আমাদের হাতে নেই। (তূলনামূলক অধ্যয়নের জন্য পড়ুনঃ বাইবেল, যাত্রা পুস্তক ৩১: ১৮, ৩২: ১৫-১৬ এবং দ্বিতীয় বিবরণ ৫: ৬-২২) ।
টিকা:১০২) অর্থাৎ আল্লাহর বিধানের সরল, সোজা ও সুস্পষ্ট মর্ম ও তাৎপর্য গ্রহণ করো। একজন সহজ-সরল বিবেক সম্পন্ন মানুষ, যার মনে কোন অসৎ উদ্দেশ্য ও বক্রতা নেই, সে সাধারণ বুদ্ধি দ্বারা যে অর্থ বোঝে, এখানে তার কথাই বলা হয়েছে। যারা আল্লাহর বিধানের সরল-সোজা অর্থবোধক শব্দগুলো থেকে জটিল আইনগত মার-প্যাঁচ এবং বিভ্রাট-বিভ্রান্তি ও কলহ-কোন্দল সৃষ্টির পথ খুঁজে বের করে, তাদের সেই সব কূটতর্ককে যাতে আল্লাহর কিতাবের অনুমোদিত বিষয় মনে না করা হয় তাই এ শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
টিকা:১০৩) অর্থাৎ সামনে অগ্রসর হয়ে তোমরা এমন সব জাতির প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ দেখবে যারা আল্লাহর বন্দেগী ও আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল এবং ভুল পথে চলার ব্যাপারে অবিচল ছিল। সেই ধ্বংসাবশেষ গুলো দেখে এ ধরনের কর্মনীতি অবলম্বনের পরিণাম কি হয় তা তোমরা নিজেরাই জানতে পারবে।
টিকা:১৮৫)
সুরা: আল-বাক্বারাহ
আয়াত নং :-৫৮
وَ اِذْ قُلْنَا ادْخُلُوْا هٰذِهِ الْقَرْیَةَ فَكُلُوْا مِنْهَا حَیْثُ شِئْتُمْ رَغَدًا وَّ ادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَّ قُوْلُوْا حِطَّةٌ نَّغْفِرْ لَكُمْ خَطٰیٰكُمْؕ وَ سَنَزِیْدُ الْمُحْسِنِیْنَ
আরো স্মরণ করো যখন আমরা বলেছিলাম, “তোমাদের সামনের এই জনপদে প্রবেশ করো এবং সেখানকার উৎপন্ন দ্রব্যাদি যেমন ইচ্ছা খাও মজা করে। কিন্তু জনপদের দুয়ারে সিজদাবনত হয়ে প্রবেশ করবে ‘হিত্তাতুন’ ‘হিত্তাতুন’ বলতে বলতে। আমরা তোমাদের ত্রুটিগুলো মাফ করে দেবো এবং সৎকর্মশীলদের প্রতি অত্যধিক অনুগ্রহ করবো।”
তাফসীর:-
টিকা: 74
এখনো পর্যন্ত যথার্থ অনুসন্ধানের মাধ্যমে এ জনপদটিকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। তবে যে ঘটনা পরস্পরায় এর উল্লেখ হয়েছে তা এমন এক যুগের সাথে সম্পর্কিত যখন বনী ইসরাঈল সাইনা উপদ্বীপেই অবস্থান করছিল। তাতেই মনে হয়, উল্লেখিত জনপদটির অবস্থান এ উপদ্বীপের কোথাও হবে। কিন্তু এ জনপদটি ‘সিত্তীম’ও হতে পারে। সিত্তীম শহরটি ‘ইয়ারীহো’ –এর ঠিক বিপরীত দিকে জর্দান নদীর পূর্বতীরে অবস্থিত ছিল। বাইবেলে উল্লেখিত হয়েছে, বনী ইসরাঈলরা মূসার (আ) জীবনের শেষ অধ্যায়ে এ শহরটি জয় করেছিল। সেখানে তারা ব্যাপক ব্যভিচার করে। ফলে আল্লাহ তাদেরকে ভয়াবহ মহামারীর শিকারে পরিণত করেন এবং এতে চব্বিশ হাজার লোকের মৃত্যু হয়। (গণনা, ২৫ অনুচ্ছেদ, ১-৮ শ্লোক)
টিকা: 75
অর্থাৎ তাদের প্রতি নির্দেশ ছিল। স্বেচ্ছাচারী যালেম বিজয়ীদের মতো অহংকার মদমত্ত হয়ে প্রবেশ করো না। বরং আল্লাহর প্রতি অনুগত ও তাঁর ভয়ে ভীত বান্দাদের মতো বিনম্রভাবে প্রবেশ করো। যেমন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের সময় বিনয়াবনত হয়ে মক্কায় প্রবেশ করেছিলেন। ‘হিত্তাতুন’ শব্দটির দুই অর্থ হতে পারে। এর একটি অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর কাছে নিজের গোনাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে করতে প্রবেশ করো। আর দ্বিতীয় অর্থটি হচ্ছে, ব্যাপক গণহত্যা ও লুটতরাজ করতে করতে প্রবেশ না করে বরং জনপদের অধিবাসীদের ভুল-ত্রুটি উপেক্ষা করে তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করতে করতে শহরে প্রবেশ করো।
টিকা:১৮৬)
সুরা: আল-বাক্বারাহ
আয়াত নং :-৬৫
وَ لَقَدْ عَلِمْتُمُ الَّذِیْنَ اعْتَدَوْا مِنْكُمْ فِی السَّبْتِ فَقُلْنَا لَهُمْ كُوْنُوْا قِرَدَةً خٰسِـٕیْنَۚ
নিজেদের জাতির সেইসব লোকের ঘটনা তো তোমাদের জানাই আছে যারা শনিবারের বিধান ভেঙেছিল। আমরা তাদের বলে দিলামঃ বানর হয়ে যাও এবং এমনভাবে অবস্থান করো যাতে তোমাদের সবদিক থেকে লাঞ্ছনা গঞ্জনা সইতে হয়।
তাফসীর :
টিকা: 82
বনী ইসরাঈলদের জন্য শনিবারের বিধান তৈরি করা হয়েছিল। অর্থাৎ আইনের মাধ্যমে শনিবার দিনটি তাদের বিশ্রাম ও ইবাদাত করার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। এদিনে তারা পার্থিব কোন কাজ এমন কি রান্না-বান্নার কাজ নিজেরা করতে পারবে না এবং চাকর-বাকরদের দ্বারাও এ কাজ করাতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে কড়া নির্দেশ জারী করে বলা হয়েছিল, যে ব্যক্তি এই পবিত্র দিনের নির্দেশ অমান্য করবে তাকে হত্যা করা অবশ্য কর্তব্য হয়ে পড়বে। (যাত্রা পুস্তক, ৩১ অধ্যায়, ১২-১৭ শ্লোক)।কিন্তু বনী ইসরাঈলরা নৈতিক ও ধর্মীয় পতনের শিকার হবার পর প্রকাশ্যে শনিবারের বিধানের অবমাননা করতে থাকে। এমনকি তাদের শহরগুলোতে প্রকাশ্যে শনিবার ব্যবসা-বানিজ্য, কাজ-কারবার চলতে থাকে।
টিকা: 83
সূরা আ’রাফের ২১ রুকু’ তে এ ঘটনাটির বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। তাদেরকে বানরে পরিণত করার ধরন সম্পর্কে মতবিরোধ রয়েছে। অনেকে মনে করেন, তাদের দৈহিক কাঠামো পরিবর্তন করে বানরে রূপান্তরিত করে দেয়া হয়েছিল। আবার অনেকে এর অর্থ এই গ্রহণ করে থাকে যে, তাদের মধ্যে বানরের স্বভাব ও বানরের গুণাবলী সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু কুরআনের শব্দাবলী ও বর্ণনাভংগী থেকে মনে হয়, তাদের মধ্যে নৈতিক নয়, দৈহিক বিকৃতি ঘটেছিল। আমার মতে, তাদের মস্তিষ্ক ও চিন্তাশক্তিকে পূর্ববৎ অবিকৃত রেখে শারীরিক বিকৃতি ঘটিয়ে বানরে রূপান্তরিত করা হয়েছিল এটিই যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হয়।
১৫৩-১৫৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলেছিল- হযরত মূসা (আঃ) যেমন তাওরাত একই সাথে লিখিত অবস্থায় আল্লাহ তা’আলার নিকট হতে এনেছিলেন, দ্রুপ আপনিও পূর্ণভাবে লিখিত কোন আসমানী কিতাব আনয়ন করুন। এও বর্ণিত আছে যে, তারা বলেছিল-আপনি আল্লাহ তা’আলার নিকট হতে আমাদের নামে এমন পত্র আনয়ন করুন যাতে আপনাকে নবীরূপে মেনে নেয়ার নির্দেশ থাকে। এরূপ প্রশ্ন তারা বিদ্রুপ, অবাধ্যতা এবং কুফরীর উদ্দেশ্যেই করেছিল। যেমন মক্কাবাসীও তাকে অনুরূপ এক প্রশ্ন করেছিল যা সূরা-ই-সুবহানে উল্লিখিত আছে। তারা বলেছিল-“যে পর্যন্ত আরব ভূমির উপর আপনি নদী প্রবাহিত করে তাকে সবুজ শ্যামল প্রান্তরে পরিণত না করবেন সে পর্যন্ত আমরা আপনার উপর বিশ্বাস স্থাপন করবো না।
সুতরাং আল্লাহ স্বীয় নবী (সঃ)-কে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন-তাদের এ অবাধ্যতা এবং বাজে প্রশ্নের কারণে আপনি মোটেই দুঃখিত হবেন না। তাদের এটা পুরাতন অভ্যাস। তারা হযরত মূসা (আঃ)-কে এর চেয়েও জঘন্যতর প্রশ্ন করেছিল। তারা তাকে বলেছিল-আল্লাহকে প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন কর। এ অহংকার, অবাধ্যতা এবং বাজে প্রশ্নের প্রতিফলও তাদেরকে ভোগ করতে হয়েছে। অর্থাৎ আকাশের বিদ্যুৎ তাদের উপর পতিত হয়েছিল। যেমন সূরা-ই-বাকারায় বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। তথায় আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “এবং যখন তোমরা বলেছিলে-হে মূসা, আমরা আল্লাহকে প্রকাশ্যভাবে দর্শন না করা পর্যন্ত তোমাকে বিশ্বাস করবো না। তখন বিদ্যুৎ তোমাদেরকে আক্রমণ করেছিল ও তোমরা তা প্রত্যক্ষ করেছিলে। তৎপর তোমাদের মৃত্যুর পর আমি তোমাদেরকে সঞ্জীবিত করেছিলাম-যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।” (২:৫৫-৫৬)
অতঃপর আল্লাহ তা’আলা বলেন-‘বড় বড় নিদর্শনাবলী প্রত্যক্ষ করার পরেও তারা গো বৎসের পূজো আরম্ভ করে দেয়। মিসরে তাদের শত্রু ফিরআউনের হযরত মূসা (আঃ)-এর মোকাবিলায় ডুবে মরা, তার সমস্ত সৈন্যের দুর্ভাগ্যের মৃত্যুবরণ করা, তাদের সমুদ্রে নিমজ্জিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়ে সমুদ্র অতিক্রম করে যাওয়া, এ সবগুলোই তাদের চোখের সামনে সংঘটিত হয়েছে। তথাপি সেখান হতে কিছু দূর গিয়েই তারা মূর্তি পূজকদেরকে মূর্তিপূজো করতে দেখে স্বীয় নবী (আঃ)-কে বলে-আমাদের জন্যও এরূপ একটি মা’রূদ বানিয়ে দাও।’ এর পূর্ণ বিবরণ সূরা-ই-আরাফ এবং সূরা-ই-ত্বাহার মধ্যেও রয়েছে।
অতঃপর হযরত মূসা (আঃ) আল্লাহ তাআলার নিকট প্রার্থনা করেন এবং তাদের তাওবা কবূল হওয়ার পন্থা এই বলে দেয়া হয় যে, যারা গো-বৎসের পূজো করেনি তারা পূজোকারীদেরকে হত্যা করবে। যখন হত্যাকার্য আরম্ভ হয়ে যায় তখন আল্লাহ পাক তাদের তাওবা কবুল করলেন এবং মৃতদেরকেও জীবিত করে দেন। তাই আল্লাহ তা’আলা এখানে বলেন-ওটাকেও আমি ক্ষমা করে দিয়েছি এবং এ মহা পাপকেও আমি মাফ করেছি। আর হযরত মূসা (আঃ)-কে প্রকাশ্য প্রভাব প্রদান করেছি।
যখন তারা তাওরাতের নির্দেশাবলী মান্য করতে অস্বীকার করে এবং হযরত মূসা (আঃ)-এর আনুগত্য স্বীকারে অসম্মত হয় তখন আল্লাহ তা’আলা তাদের মাথার উপর তুর পাহাড়কে সমুচ্চ করেন এবং তাদেরকে বলেন-“তোমরা এখন আমার আহকাম মানবে কি-না বল? নতুবা এ পর্বতকে আমি তোমাদের উপর নিক্ষেপ করবো। তখন তারা সবাই সিজদায় পড়ে গিয়ে কাঁদতে আরম্ভ করে এবং নির্দেশাবলী মেনে নিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়। তাদের অন্তরে এত ভয় হয়েছিল যে, সিজদার মধ্যেও তারা আড় চোখে উপরের দিকে দেখে যে, না জানি পর্বত তাদের উপর পড়ে যায় এবং তারা মৃত্যু মুখে পতিত হয়ে যায়। অতঃপর পর্বত সরিয়ে দেয়া হয়।
এরপর তাদের অন্য অবাধ্যতার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, তারা কথা ও কাজ দু’টোই পরিবর্তন করেছিল। তাদেরকে বলা হয়েছিল-“তোমরা সিজদা করতে করতে বায়তুল মুকাদ্দাসের দরজায় প্রবেশ কর এবং (আরবী) বল।’ অর্থাৎ তোমরা বল হে আল্লাহ! আপনি আমাদের পাপ মার্জনা করুন। আমরা আপনার পথে জিহাদ করা হতে বিরত রয়েছি, যার শাস্তি স্বরূপ আমরা ‘তিহ’ প্রান্তরে হতবুদ্ধি হয়ে চল্লিশ বছর পর্যন্ত ঘুরে বেরিয়েছি। কিন্তু এখানেও তাদের হঠকারিতা প্রকাশ পেয়েছে। তারা হাঁটুর ভরে চলতে চলতে বায়তুল মুকাদ্দাসের দরজায় পৌছে এবং (আরবী) বলে। অর্থাৎ আমাদেরকে চুলের মধ্যে গম দান। করুন। তাদের আরও দুষ্টামি এই যে, শনিবারের মর্যাদা রক্ষার জন্যে তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওর বিরুদ্ধাচরণেও তারা প্রস্তুত হয়ে যায় এবং কৌশল করে পাপকার্যে লিপ্ত হয়ে পড়ে। যেমন সূরা-ই-আ’রাফের (আরবী) (৭:১৬৩) -এ আয়াতের তাফসীরে বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে।
একটি হাদীসেও রয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা ইয়াহূদীদের নিকট বিশেষ করে শনিবারের মর্যাদা রক্ষার উপর অঙ্গীকার নিয়েছিলেন। এ পূর্ণ হাদীসটি সূরা-ই-সুবহানের (১৭:১০১)-এ আয়াতের তাফসীরে ইনশাআল্লাহ আসবে।
১৫৩-১৫৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা প্রদান করছেন এই বলে যে, যদিও আহলে কিতাবগণ তোমার কাছে আকাশ থেকে কিতাব নিয়ে আসার দাবী জানায়। জেনে রেখ! এতে মনোবল হারানোর কিছুই নেই; কেননা মূসা (আঃ)-কে এর চেয়েও বড় দাবীর কথা বলেছিল যে, আমাদেরকে প্রকাশ্যে আল্লাহ তা‘আলাকে দেখাও। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَإِذْ قُلْتُمْ يٰمُوْسٰي لَنْ نُّؤْمِنَ لَكَ حَتّٰي نَرَي اللّٰهَ جَهْرَةً)
“আর যখন তোমরা বলেছিলে, হে মূসা! আমরা আল্লাহকে প্রকাশ্যভাবে না দেখা পর্যন্ত তোমার প্রতি ঈমান আনব না।” (সূরা বাকারাহ ২:৫৫)
সুদ্দী ও কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট চেয়েছিল যে, যেন তিনি আকাশ থেকে একটি কিতাব নিয়ে আসেন। যেমন মূসা (আঃ) লিখিত কিতাব নিয়ে এসেছেন। তাদের এ ঘৃণিত আচরণের জন্য বজ্রধ্বনি তাদেরকে পাকড়াও করেছিল।
অতঃপর তারা গো-বৎসকে মা‘বূদ বানিয়ে নিয়েছিল। এত জুলুম করা সত্ত্বেও আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। এ সম্পর্কে সূরা বাকারায় আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানদের ঈমান না আনার অদ্ভুত দাবীর কথা জানলাম।
২. ইয়াহূদীদের জুলুম ও হঠকারিতা সম্পর্কে জানলাম।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
An Nisa:-
Verse:- 153-154
The Stubbornness of the Jews
Allah says;
يَسْأَلُكَ أَهْلُ الْكِتَابِ أَن تُنَزِّلَ عَلَيْهِمْ كِتَابًا مِّنَ السَّمَاء
The People of the Scripture (Jews) ask you to cause a book to descend upon them from heaven.
Muhammad bin Ka`b Al-Qurazi, As-Suddi and Qatadah said that;
the Jews asked the Messenger of Allah to cause a book to come down to them from heaven, just as the Tawrah was sent down to Musa.
Ibn Jurayj said that;
the Jews asked the Messenger to cause books to come down to them addressed to so-and-so among them, testifying to the truth of what he was sent with. The Jews only asked for this because of their stubbornness, defiance, rejection and disbelief.
The disbelievers of Quraysh also asked for similar things from the Prophet, as is mentioned in Surah Al-Isra’,
وَقَالُواْ لَن نُّوْمِنَ لَكَ حَتَّى تَفْجُرَ لَنَا مِنَ الاٌّرْضِ يَنْبُوعًا
And they say:”We shall not believe in you, until you cause a spring to gush forth from the earth for us; (17:90)
Allah said,
فَقَدْ سَأَلُواْ مُوسَى أَكْبَرَ مِن ذَلِكَ فَقَالُواْ أَرِنَا اللّهِ جَهْرَةً فَأَخَذَتْهُمُ الصَّاعِقَةُ بِظُلْمِهِمْ
Indeed, they asked Musa for even greater than that, when they said, “Show us Allah in public,” but they were struck with a bolt of lightning for their wickedness.
injustice, transgression, defiance and rebellion. This part was explained in Surah Al-Baqarah.
وَإِذْ قُلْتُمْ يَـمُوسَى لَن نُّوْمِنَ لَكَ حَتَّى نَرَى اللَّهَ جَهْرَةً فَأَخَذَتْكُمُ الصَّـعِقَةُ وَأَنتُمْ تَنظُرُونَ
ثُمَّ بَعَثْنَـكُم مِّن بَعْدِ مَوْتِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
And (remember) when you said:”O Musa! We shall never believe in you until we see Allah plainly.” But you were struck by a bolt of lightning while you were looking. Then We raised you up after your death, so that you might be grateful. (2:55,56)
Allah’s statement,
ثُمَّ اتَّخَذُواْ الْعِجْلَ مِن بَعْدِ مَا جَاءتْهُمُ الْبَيِّنَاتُ
Then they worshipped the calf even after Al-Bayyinat had come to them.
meaning, after they witnessed the tremendous miracles and unequivocal proofs at the hand of Musa in Egypt. They also witnessed the demise of their enemy, Fir`awn and his soldiers, when they all drowned in the sea. Yet soon after, when they passed by a people who were worshipping idols, they said to Musa,
اجْعَل لَّنَا إِلَـهًا كَمَا لَهُمْ الِهَةٌ
(Make for us a god as they have gods). (7:138)
Allah explains the story of the Jews worshipping the calf in Surah Al-A`raf (7) and Surah Ta Ha (20) after Musa went to meet with his Lord. When Musa returned, Allah decreed that in order for the Jews to earn accepted repentance, then those who did not worship the calf would have to kill those who worshipped it. They complied with this command, and Allah resurrected them afterwards.
Allah said here,
فَعَفَوْنَا عَن ذَلِكَ وَاتَيْنَا مُوسَى سُلْطَانًا مُّبِينًا
(Even) so We forgave them. And We gave Musa a clear proof of authority.
Allah then said
وَرَفَعْنَا فَوْقَهُمُ الطُّورَ بِمِيثَاقِهِمْ
And for their covenant, We raised over them the mount,
This was when they refrained from implementing the rulings of the Tawrah and refused what Musa brought them from Allah. So Allah raised the mountain above their heads and they were ordered to prostrate, which they did. Even so, they were looking above when they were prostrating for fear that the mountain might fall on them,
وَإِذ نَتَقْنَا الْجَبَلَ فَوْقَهُمْ كَأَنَّهُ ظُلَّةٌ وَظَنُّواْ أَنَّهُ وَاقِعٌ بِهِمْ خُذُواْ مَأ ءَاتَيْنَاكُم بِقُوَّةٍ
And (remember) when We raised the mountain over them as if it had been a canopy, and they thought that it was going to fall on them. (We said):”Hold firmly to what We have given you.” (7:171)
Allah then said,
وَقُلْنَا لَهُمُ ادْخُلُواْ الْبَابَ سُجَّدًا
and We said, “Enter the gate prostrating (or bowing) with humility;”
meaning that they also defied this command in word and action. They were commanded to enter Bayt Al-Quds (in Jerusalem) while bowing and saying “Hittah”, meaning:`O Allah! take from us our sin of abandoning Jihad.’
This was the cause of their wandering in the desert of Tih for forty years. Yet, they entered the House while crawling on their rear ends and saying `Hintah (a wheat grain) in Sha`rah (the hair)’.
وَقُلْنَا لَهُمْ لَا تَعْدُواْ فِي السَّبْتِ
and We commanded them, “Transgress not the Sabbath (Saturday).”
meaning, We commanded them to honor the Sabbath and honor what Allah prohibited them on that day.
وَأَخَذْنَا مِنْهُم مِّيثَاقًا غَلِيظًا
And We took from them a firm covenant.
meaning, strong covenant. They rebelled, transgressed and committed what Allah prohibited by using deceit and trickery, as is mentioned in Surah Al-A`raf.
وَسْيَلْهُمْ عَنِ الْقَرْيَةِ الَّتِى كَانَتْ حَاضِرَةَ الْبَحْرِ
And ask them about the town that was by the sea. (7:163)