أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/١٧٢)-৩৭৪
www.motaher21.net
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءكُم بُرْهَانٌ مِّن رَّبِّكُمْ
হে মানুষ, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট প্রমাণ এসেছে।
O mankind! Verily, there has come to you a convincing proof from your Allah.
সুরা: আন-নিসা
আয়াত নং :-১৭৪-১৭৫
يٰٓأَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَآءَكُم بُرْهٰنٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَأَنزَلْنَآ إِلَيْكُمْ نُورًا مُّبِينًا
হে মানুষ, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট প্রমাণ এসেছে এবং আমি তোমাদের নিকট স্পষ্ট আলো নাযিল করেছি।
4:175
فَأَمَّا الَّذِينَ ءَامَنُوا بِاللَّهِ وَاعْتَصَمُوا بِهِۦ فَسَيُدْخِلُهُمْ فِى رَحْمَةٍ مِّنْهُ وَفَضْلٍ وَيَهْدِيهِمْ إِلَيْهِ صِرٰطًا مُّسْتَقِيمًا
অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং তাকে আঁকড়ে ধরেছে তিনি অবশ্যই তাদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে দয়া ও অনুগ্রহে প্রবেশ করাবেন এবং তাঁর দিকে সরল পথ দেখাবেন।
১৭৪-১৭৫ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে সম্বোধন করে বলছেন যে, তোমাদের নিকট প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অকাট্য প্রমাণ এসেছে।
برهان ‘বুরহান’বলা হয় এমন অকাট্য প্রমাণ যার পরে আর কোন আপত্তি করার অবকাশ নেই এবং এমন অকাট্য প্রমাণ যার দ্বারা সন্দেহ নিরসন হয়। আর এ কারণেই পরবর্তীতে একে “নূর” বা জ্যোতির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আর نور বা জ্যোতি হল কুরআন যা সত্যের আলোকবর্তিকা। (তাফসীর সা‘দী পৃঃ ২০৪)
অতএব যারা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান আনবে এবং আল্লাহ তা‘আলার রজ্জুকে শক্ত করে ধরে রাখবে তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় রহমত ও অনুগ্রহে প্রবেশ করাবেন এবং সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত রাখবেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] برهان বলা হয় এমন অকাট্য ও স্পষ্ট প্রমাণকে যার পর আর কোন আপত্তি থাকার অবকাশ নেই এবং এমন অকাট্য প্রমাণ যার দ্বারা সন্দেহ নিরসন হয়। আর এই কারণেই পরবর্তীতে একে ‘নূর’ বা জ্যোতির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
[২] এই আয়াতে ‘নূর’ (জ্যোতি)র অর্থ ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, ‘কুরআন কারীম’ যা কুফর ও শিরকের অন্ধকারের মাঝে হিদায়াতের আলো এবং ভ্রষ্টতার ঘুরপাকে সরল ও সোজা পথ এবং আল্লাহর মজবুত ও শক্ত রজ্জু। সুতরাং এর প্রতি ঈমান আনয়নকারী আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর রহমতের হকদার হবে।
তাফসীরে আবুবকর যাকারিয়া বলেছেন:-
[১] ‘বুরহান’ শব্দের আভিধানিক অর্থ অকাট্য দলীল-প্রমাণ। এ আয়াতে এর দ্বারা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সত্তা ও মহান ব্যক্তিত্বকে বুঝানো হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহান ব্যক্তিত্বের জন্য ‘বুরহান’ শব্দ প্রয়োগ করার তাৎপর্য এই যে, তার বরকতময় সত্তা, অনুপম চরিত্র মাধুর্য, অপূর্ব মু’জিযাসমূহ, তার প্রতি বিস্ময়কর কিতাব আল-কুরআন নাযিল হওয়া ইত্যাদি তার রেসালাতের অকাট্য দলীল ও প্রকৃষ্ট প্রমাণ। যার পরে আর কোন সাক্ষ্য প্রমাণের আবশ্যক হয় না। অতএব, তার মহান ব্যক্তিত্বই তার সত্যতার অকাট্য প্রমাণ।
[২] আলোচ্য আয়াতে (نُوْر) (নূর) শব্দ দ্বারা কুরআন মাজীদকে বোঝানো হয়েছে। যেমন, সূরা আল-মায়েদার ১৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে,
(قَدْ جَاءَكُمْ مِّنَ اللّٰهِ نُوْرٌ وَّكِتٰبٌ مُّبِيْنٌ)
অর্থাৎ তোমাদের কাছে আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ থেকে এক উজ্জ্বল আলো তথা এক প্রকৃষ্ট কিতাব অর্থাৎ আল-কুরআন এসেছে। আবার নুর অর্থ রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আল-কুরআনও হতে পারে। তখন এর অর্থ হবে, হেদায়াতের নূর। যে আলোর ছোয়া লাগলে মানুষের হিদায়াত নসীব হয়। তবে তার অর্থ এই নয় যে, রাসূল স ল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানবীয় দৈহিকতা থেকে মুক্ত শুধু নূর ছিলেন, যেমনটি কোন কোন ভ্ৰষ্ট সম্প্রদায় বিশ্বাস করে থাকে।
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ তা’আলা সমস্ত মানব জাতিকে সম্বোধন করে বলেছেন-আমার পক্ষ হতে তোমাদের নিকট পূর্ণ দলীল, ওযর, আপত্তি ও সন্দেহ দূরকারী প্রমাণাদি অবতীর্ণ করা হয়েছে। আমি তোমাদের উপর স্পষ্ট জ্যোতি (কুরআন কারীম) অবতীর্ণ করেছি, যার দ্বারা সত্যের পথ স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
ইবনে জুরায়েজ প্রমুখ মনীষী বলেন যে, এর দ্বারা কুরআন কারীমকে বুঝান হয়েছে। এখন যারা আল্লাহ তা’আলার উপর ঈমান আনয়ন করবে, তার উপরই পূর্ণ নির্ভরশীল হবে, তাঁকেই দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে, তারই দাসত্ব করবে, সমস্ত কাজ তাঁকেই সমর্পণ করবে এবং এও হতে পারে যে, যারা আল্লাহ তাআলার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতঃ তাঁর কিতাবকে দৃঢ়রূপে ধারণ করবে তাদের উপর তিনি স্বীয় করুণা ও অনুগ্রহ বর্ষণ করবেন, তাদেরকে সুখময় জান্নাতে প্রবিষ্ট করবেন, তাদের প্রতিদান বৃদ্ধি করবেন, তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন এবং তাদেরকে এমন সরল সঠিক পথ-প্রদর্শন করবেন যা না কোন দিকে বাঁকা থাকবে, না কোন জায়গা সংকীর্ণ হবে। সুতরাং মুমিন ব্যক্তি পৃথিবীতে সরল ও সোজা পথের উপরে থাকে এবং ইসলামের পথে থাকে। আর পরকালে থাকে জান্নাতের পথে ও শান্তির পথে। তাফসীরের প্রারম্ভে একটি পূর্ণ হাদীস অতীত হয়েছে যাতে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর ঘোষণা রয়েছে– আল্লাহর সরল ও সোজা পথ এবং তার সুদৃঢ় রজ্জু হচ্ছে কুরআন কারীম।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
An Nisa:-
Verse:- 174-175
The Description of the Revelation that Came From Allah
Allah says;
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءكُم بُرْهَانٌ مِّن رَّبِّكُمْ
O mankind! Verily, there has come to you a convincing proof from your Lord;
Allah informs all people that a plain, unequivocal proof has come to them from Him. One that eradicates all possibility of having an excuse, or falling prey to evil doubts.
Allah said,
وَأَنزَلْنَا إِلَيْكُمْ نُورًا مُّبِينًا
and We sent down to you a manifest light.
that directs to the Truth.
Ibn Jurayj and others said,
“It is the Qur’an.
فَأَمَّا الَّذِينَ امَنُواْ بِاللّهِ وَاعْتَصَمُواْ بِهِ
So, as for those who believed in Allah and held fast to (depend on) Him,
by worshipping Him and relying on Him for each and every thing.
Ibn Jurayj said that this part of the Ayah means,
“They believe in Allah and hold fast to the Qur’an.”
فَسَيُدْخِلُهُمْ فِي رَحْمَةٍ مِّنْهُ وَفَضْلٍ
He will admit them to His mercy and grace,
meaning, He will grant them His mercy and admit them into Paradise, and will increase and multiply their rewards and their ranks, as a favor and bounty from Him.
وَيَهْدِيهِمْ إِلَيْهِ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا
and guide them to Himself by a straight path.
and a clear way that has no wickedness in it or deviation.
This, indeed, is the description of the believers in this life and the Hereafter, as they are on the straight and safe path in matters of action and creed. In the Hereafter, they are on the straight path of Allah that leads to the gardens of Paradise.