أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/١٨١)-৩৮৩
www.motaher21.net
ْ إِذْ هَمَّ قَوْمٌ أَن يَبْسُطُواْ إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ
কিন্তু তিনি তাদের হাতকে তোমাদের থেকে নিবৃত্ত রাখলেন। When some people desired (made a plan) to stretch out their hands against you…
সুরা: আল্ মায়িদাহ
আয়াত নং :-৯-১১
5:9
وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ ءَامَنُوا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ ۙ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ
যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে আল্লাহ ওয়াদা দিয়েছেন, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
5:10
وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِـَٔايٰتِنَآ أُولٰٓئِكَ أَصْحٰبُ الْجَحِيمِ
আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, তারাই প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী।
5:11
يٰٓأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوا اذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ هَمَّ قَوْمٌ أَن يَبْسُطُوٓا إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ فَكَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنكُمْ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ
হে মুমিনগণ, তোমরা স্মরণ কর তোমাদের উপর আল্লাহর নিআমত, যখন একটি কওম তোমাদের প্রতি তাদের হাত প্রসারিত করতে মনস্থ করল; কিন্তু তিনি তাদের হাতকে তোমাদের থেকে নিবৃত্ত রাখলেন। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আল্লাহর উপরই মুমিনরা যেন তাওয়াক্কুল করে।
৯-১১ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
(يأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اذْكُرُوْا نِعْمَتَ اللّٰهِ…. )
আয়াতের শানে নুযূল:
এ আয়াত নাযিলের ব্যাপারে কয়েকটি বর্ণনা পাওয়া যায়:
১. জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত। (কোন এক সফর থেকে ফেরার পথে) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক স্থানে অবতরণ করলেন। আর সাহাবাগণ বিভিন্ন গাছের ছায়ায় আরাম করছিলেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর তরবারী গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। এমন সময় হঠাৎ একজন বেদুঈন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তরবারী নিয়ে কোষমুক্ত করে ফেলল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিকে অগ্রসর হয়ে বলল: আমার হাত থেকে তোমাকে কে রক্ষা করবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: আল্লাহ। এভাবে বেদুঈন কয়েক বার বলল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেকবার একই জবাব দিলেন। তখন লোকটির হাত থেকে তরবারী পড়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের ডেকে এ সংবাদ জানালেন। লোকটি পাশে বসা ছিল, কিন্তু কেউ তাকে ভর্ৎসনা করেনি। (সহীহ বুখারী হা: ৪১৩৫)
২. আবূ মালিক (রহঃ) বলেন: আয়াতটি কাব বিন আশরাফের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। যখন কাব ও তার অনুসারীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবাদের ব্যাপারে ষড়যন্ত্র করছিল। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অবগত করে তাদের এ ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেন। এ ব্যাপারে উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়। এছাড়াও আরো বর্ণনা পাওয়া যায়। (ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
সুতরাং যে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের দুর্বলতা দূর করে শক্তি সামর্থ দান করেছেন এবং ভয় দূর করে দিয়েছেন সে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় কর এবং সর্বক্ষেত্রে তাঁরই ওপর ভরসা কর। কারণ তিনি দুর্বলদেরকে সাহায্য করেন এবং যারা তাঁর ওপর ভরসা করে তাকে পূর্ণতা দান করেন।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১.আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করাতে বারংবার গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।
২. মু’মিনদের সর্বদা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা করা উচিত।
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ পাক নিজের আর একটি নিয়ামতের কথা মুমিনদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যার বিস্তারিত বিবরণ নিম্নরূপঃ
হযরত জাবির (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, কোন এক সফরে নবী (সঃ) একটি মনযিলে অবতরণ করেন। জনগণ ছায়াযুক্ত বৃক্ষরাজির খোঁজে বিচ্ছিন্নভাবে এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় হাতিয়ার একটি গাছে লটকিয়ে রাখেন। এমন সময় এক বেদুঈন এসে তাঁর তরবারীখানা হাতে টেনে নিয়ে বলে, আপনাকে এখন আমার হাত থেকে কে বাঁচাতে পারে? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “মহামহিমান্বিত আল্লাহ (আমাকে বাঁচাবেন)।” সে দ্বিতীয়বার এ প্রশ্নই করলো। রাসূলুল্লাহ (সঃ) পুনরায় এ উত্তরই দিলেন। বেদুঈন তৃতীয়বার বললো, “আপনাকে আমা থেকে রক্ষা করবে কে?” তিনি উত্তরে বললেনঃ আল্লাহ। বর্ণনাকারী বলেন যে, এ কথা বলার সাথে সাথে বেদুঈনের হাত থেকে তরবারী পড়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (সঃ) সাহাবীদেরকে ডাক দিলেন। তাঁরা এসে গেলে তিনি তাঁদের কাছে বেদুঈনের ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। সে তখনও তার পার্শ্বে উপবিষ্ট ছিল। কিন্তু তিনি তার কোন প্রতিশোধ নিলেন না। কাতাদাহ (রঃ) বলেন যে, কতগুলো তোক প্রতারণা করে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে হত্যা করতে চেয়েছিল এবং তারাই ঐ বেদুঈনকে গুপ্তঘাতক হিসেবে তাঁর নিকট পাঠিয়েছিল। কিন্তু মহান আল্লাহ তাদের পরিকল্পনা এভাবে ব্যর্থ করে দেন। সহীহ হাদীস দ্বারা জানা যায় যে, ঐ বেদুঈনের নাম ছিল গাওরাস ইবনে হারিস। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও তাঁর সাহাবীদেরকে হত্য করার উদ্দেশ্যে খাদ্যে বিষ মিশিয়ে তাদেরকে দাওয়াত করে। কিন্তু মহান আল্লাহ এ সংবাদ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে জানিয়ে দেন। সুতরাং তারা বেঁচে যান। একথাও বলা হয়েছে যে, কা’ব ইবনে আশরাফ এবং তার ইয়াহূদী সঙ্গীরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে কষ্ট দিতে চেয়েছিল। এটা ঐ সময়ের ঘটনা, যখন নবী (সঃ) আমেরী লোকদের দিয়াত গ্রহণের জন্যে তাদের নিকট গিয়েছিলেন। ঐ সময় দুষ্টেরা আমর ইবনে জাহাশ ইবনে কা’বকে উত্তেজিত করতঃ বলেছিল- “আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে নীচে দাঁড় করিয়ে রেখে আলোচনায় লিপ্ত করিয়ে রাখবো, এ সুযোগে তুমি উপর থেকে তার উপর পাথর ফেলে দিয়ে তাঁকে দুনিয়া হতে বিদায় করে দেবে।” কিন্তু মহান আল্লাহ স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে পথেই তাদের দুষ্টামির কথা জানিয়ে দেন। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (সঃ) সাহাবীগণসহ সেখান হতে ফিরে আসেন। এ আয়াতে ঐ ঘটনারই উল্লেখ রয়েছে।
ইরশাদ হচ্ছে-মুমিনদের আল্লাহর উপর ভরসা করা উচিত। বিপদ আপদ থেকে রক্ষাকারী একমাত্র তিনিই। এরপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) মহান আল্লাহর নির্দেশক্রমে বানূ নাযীরের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী নিয়ে অগ্রসর হন। তাদের কিছু সংখ্যক লোককে হত্যা করেন এবং কতক লোককে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেন।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
এ সম্পর্কে রেওয়ায়াত করেছেনঃ ইহুদীদের একটি দল নবী করীম ﷺ ও তাঁর বিশেষ বিশেষ সাহাবীদেরকে একটি ভোজ আমন্ত্রণ করেছিল। এই সঙ্গে তারা গোপনে চক্রান্ত করেছিল যে, নবী করীম ﷺ ও সাহাবীগণ এসে গেলে একযোগে তাদের ওপর আকস্মিকভাবে আক্রমণ চালিয়ে তাদেরকে শেষ করে দেবে এবং এভাবে তারা ইসলামের মূলোৎপাটনে সক্ষম হবে। কিন্তু আল্লাহর অনুগ্রহে ঠিক সময়ে নবী করীম ﷺ এ ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পারলেন। তিনি দাওয়াতে অংশ গ্রহণ করলেন না। যেহেতু এখান থেকে বনী ইসরাঈলদেরকে সম্বোধন করে বক্তব্য পেশ করা শুরু হয়েছে, তাই ভূমিকা হিসেবে এ ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়েছে। এখান থেকে যে ভাষণ শুরু হচ্ছে তার উদ্দেশ্য হচ্ছে দু’টো। প্রথম উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুসলমানদের পূর্বসূরী আহলী কিতাবরা যে পথে চলছিল সে পথে চলা থেকে তাদেরকে বিরত রাখা। কাজেই তাদেরকে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে, যেভাবে আজ তোমাদের থেকে অঙ্গীকার নেয়া হয়েছে ঠিক তেমনিভাবে ইতিপূর্বে বনী ইসরাঈল ও ঈসা আলাইহিস সালামের উম্মতদের থেকেও এ একই অঙ্গীকার নেয়া হয়েছিল। তারা যেভাবে নিজেদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে পথভ্রষ্ট হয়েছে তোমরাও যেন তেমনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করে পথভ্রষ্ট হয়ে না যাও। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইহুদী ও খৃস্টান উভয় সম্প্রদায়কে তাদের ভুলের জন্য সতর্ক করে দেয়া এবং তাদেরকে সত্য দ্বীন তথা ইসলামের দাওয়াত দেয়া।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Al Mayadah
Verse:- 9-11
ْ إِذْ هَمَّ قَوْمٌ أَن يَبْسُطُواْ إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ
When some people desired (made a plan) to stretch out their hands against you…
وَعَدَ اللّهُ الَّذِينَ امَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ
Allah has promised those who believe and do deeds of righteousness, that for them there is forgiveness (for their sins),
وَأَجْرٌ عَظِيمٌ
and a great reward.
which is Paradise, that is part of Allah’s mercy for His servants.
They will not earn Paradise on account of their good actions, but rather on account of His mercy and favor, even though they will qualify to earn this mercy on account of their good actions. Allah has made these actions the cause and path that lead to His mercy, favor, pardon and acceptance. Therefore, all this is from Allah Alone and all thanks are due to Him.
Allah said next,
وَالَّذِينَ كَفَرُواْ وَكَذَّبُواْ بِأيَاتِنَا أُوْلَـيِكَ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ
And they who disbelieve and deny our Ayat are those who will be the dwellers of the Hell-fire.
This only demonstrates Allah’s perfect justice, wisdom and judgment, He is never wrong, for He is the Most Wise, Most Just and Most Able.
Among Allah’s Favors is that He Prevented the Disbelievers from Fighting the Muslims
Allah said
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ امَنُواْ اذْكُرُواْ نِعْمَتَ اللّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ هَمَّ قَوْمٌ أَن يَبْسُطُواْ إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ فَكَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنكُمْ
O you who believe! Remember the favor of Allah unto you when some people desired (made a plan) to stretch out their hands against you, but (Allah) withheld their hands from you.
Abdur-Razzaq recorded that Jabir said,
“The Prophet once stayed at an area and the people spread out seeking shade under various trees. The Prophet hung his weapon on a tree, and a Bedouin man came and took possession of the Prophet’s weapon and held it aloft. He came towards the Prophet and said, `Who can protect you from me?’
He replied, `Allah, the Exalted, Most Honored.’
The Bedouin man repeated his question twice or thrice, each time the Prophet answering him by saying, `Allah.’
The Bedouin man then lowered the sword, and the Prophet called his Companions and told them what had happened while the Bedouin was sitting next to him, for the Prophet did not punish him.’
Ma`mar said that Qatadah used to mention that some Arabs wanted to have the Prophet killed, so they sent that Bedouin. Qatadah would then mention this Ayah,
اذْكُرُواْ نِعْمَتَ اللّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ هَمَّ قَوْمٌ أَن يَبْسُطُواْ إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ
(Remember the favor of Allah unto you when some people desired (made a plan) to stretch out their hands against you…).
The story of this Bedouin man, whose name is Ghawrath bin Al-Harith, is mentioned in the Sahih.
Muhammad bin Ishaq bin Yasar, Mujahid and Ikrimah said that;
this Ayah was revealed about Bani An-Nadir, who plotted to drop a stone on the head of the Messenger when he came to them for help to pay the blood money of two persons whom Muslims killed. The Jews left the execution of this plot to `Amr bin Jihash bin Ka`b and ordered him to throw a stone on the Prophet from above, when he came to them and sat under the wall. Allah told His Prophet about their plot, and he went back to Al-Madinah and his Companions followed him later on. Allah sent down this Ayah concerning this matter.
Allah’s statement,
وَاتَّقُواْ اللّهَ
So have Taqwa of Allah.
وَعَلَى اللّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُوْمِنُونَ
And in Allah let the believers put their trust.
and those who do so, then Allah shall suffice for them and shall protect them from the evil plots of the people. Thereafter, Allah commanded His Messenger to expel Bani An-Nadir, and he laid siege to their area and forced them to evacuate Al-Madinah.